অবাধ্য_বাঁধনে #পলি_আনান [পর্ব সংখ্যা ২৫খ]

0
816

#অবাধ্য_বাঁধনে
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ২৫খ]
_____________________
৫৫.
পরনিন্দা যার সর্বদা চর্চায় থাকতো সেই মানুষটা আজ বোবা হয়ে গেছে।ছেলে হারানোর শোকে স্তব্দ বাকরুদ্ধ।অয়ন নিখোঁজের আজ তিনদিন চলছে না চাইতেও পুলিশের আশ্র‍য় নেন রমিজ।পুলিশ অয়নকে হন্য হয়ে খুঁজছে কিন্তু সে কোথায় কোন তথ্য এখনো পেতে সক্ষম হয়নি তারা।ঈশা নিশ্চুপ চোখে সবার কার্যকলাপ দেখছে মনে মনে অপরাধবোধে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে।তার কারণে আজ অয়নের এই দশা এই গল্পের মূল কেন্দ্রবিন্দু তো সে নিজে।ঈশানকে কতবার হাত জোর করেছিলো কতবার বলেছিলো অয়ন ভাইকে ছেড়ে দিতে কিন্তু ছেলেটা জবাবে একটা কথাই বলেছে, “অয়নের সাহস বেড়েছে আমার গায়ে হাত দেওয়ার মতো স্পর্ধা দেখিয়েছে।যে আমার দিকে আঙুল তুলে তাকে পায়ের তলায় পিষে রাখি আর অয়ন তো আমার গায়ে হাত তুলেছে তাহলে তার সাথে কি করতাম আশা করি বুঝতে পারছো।কিন্তু তোমার কথা ভেবে আমি কিছুই করছি না ঈশা যতটুকু করছি ততটুকু আমার মনের শান্তির দায়ে করছি।”

এতবার করে বোঝানোর পরেও যখন ঈশানকে মানানো গেলো না তখন বাধ্য হয়ে ছেলেটার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে সে।ঈশানকে ভালোবাসা তার জীবনের চরম ভুল ছিলো।ঈশানের ভালোবাসা কোন ধরণের তা বুঝতে বাকি নেই ঈশার।খাচায় বন্দি পাখিকে মনিব যেমন ভালোবাসে ঈশান তেমনটা ঈশাকে বাসে।পাখিটার উড়ার ক্ষমতা রুদ্ধ করে ওই নিল আকাশটা ছিনিয়ে মনিব যেমন খাচায় রেখে আদর সোহাগ করে ঈশান ঠিক তেমন।এই ছেলেটার প্রতি কি করে যে ভালোবাসা জন্মালো ভেবে পেলো না ঈশা।অবশ্য এই ভালোবাসার সূচনাটা তখন থেকে শুরু হয় যখন অনুর মাঝে ব্যস্ততার রেশ পাওয়া যায় দুইজনের মাঝে আগের মতো আড্ডা সময় দেওয়া কম হতো হয়তো রাসেলের সাথে সময় কাটানো হতো অনুর।তখন না বুঝলেও এখন এই বিষয়টা বেশ ভালোভাবে বুঝতে পারছে ঈশা।আর এসবের মাঝে ঈশানের সাথে দেখা সাক্ষাৎ ঈশানের পাগলামি সব মিলিয়ে দূর্বল হয়ে পড়ে ঈশা আর মোড় নেয় ভালোবাসার।ঈশানের এসব কান্ড কীর্তি ঈশার কাছে ভালোবাসা নয় বরং যেন উন্মাদের উন্মাদনা।বুঝতে অনেকটা সময় লাগিয়েছে কিন্তু এখন আর না অনেক হয়েছে।নিজের মনকে শক্ত করবে ঈশা তাকে দূর্বল হলে চলবে না।ঈশান শাহরিয়ারের পথে আর সে হাটবে না যতটা পারা যায় এড়িয়ে চলবে সে।এমন ক্রিমিনাল মাইন্ডের মানুষের কাছ থেকে যতটা পারা যায় দূরে থাকাই শ্রেয়।এরা ভালোবাসার দোহাই দিয়ে আর কি কি করবে কে যানে।

লেকচারারের প্রতিটা বক্তব্য মন দিয়ে শুনছে ঈশা।পাশে বসে অনু কোলে মোবাইল রেখে টাইপিং করছে নিশ্চয়ই রাসেলের সাথে মেসেজে কথা বলছে।পড়াশোনার ক্ষেত্রে বড্ড ফাঁকিবাজ অনু একে নাচুনি বুড়ি তার উপর ঢোলের বারি হিসেবে রাসেল উদয় হয়েছে।ঈশার চাপে যা একটু পড়াশোনা করতো এখন সেটাও না।লেকচারের বক্তব্য থেমে যায় একজন ব্যক্তির আগমনে।

” আসবো?”

লেকচারার ঘুরে তাকান দরজার সম্মুখে ঈশানকে দেখে প্রশস্ত হয় তার ঠোঁট যুগল।

” শাহরিয়ার যে এসো এসো।”

ঈশান এগিয়ে গেলো হাতে হাত মেলালো লেকচারের।এতক্ষণ ক্লাসে যে নিস্তব্ধতা ছিলো মুহূর্তে সেটা গায়েব হয়ে গেলো।প্রতিটা ছেলে মেয়ের মাঝে চলছে কানাকানি।লেকচারার হাঁক ডাকলেন গাম্ভীর্য এঁটে বলেন,

” সাইলেন্ট সাইলেন্ট।”

ঈশানের দু’চোখ ভীড়ের মাঝে খুঁজে নিলো ঈশাকে।আতঙ্কে মেয়েটা কেমন ঘেমে যাচ্ছে চোখ দুটো অস্থির সেই চোখে কত শত প্রশ্নেরা খেলা করছে।”

” শাহরিয়ার কেমন আছো?তোমার বাবা কেমন আছেন?ইদানীং তাকে পাওয়া যাচ্ছে না ফোনে।”
” আমি আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় বেশ ভালো আছি আঙ্কেল।বাবার কথা জানতে চাইবেন না প্লিজ ওনার কোন খোঁজ আমি রাখি না।”
” এভাবে আর কতদিন চলবে?তোমার বাবা ভুল করেছেন তাতে তিনি অনুতপ্ত।”
” কিন্তু বাবাতো কোনদিনও বলেনি তার ভুল হয়েছে তিনি ভুল বুঝতে পেরেছেন যেদিন বলবে সেদিন আমি ফিরবো।”
” এখন কেনো এলে?ঈশার জন্য?”
” জি আঙ্কেল আমাকে চট্রগ্রামে যেতে হবে তাই যাওয়ার আগে দেখা করে যেতে চাই।”
” বিয়ে কবে করছো?”
” পরিস্থিতির উপর নির্ভর।”
” অল দা বেস্ট শাহরিয়ার যা হবে ভালোর জন্য হবে।”

লেকচারের কথা স্মিত হাসলো ঈশান।ঈশার দিকে তাকিয়ে লেকচারার নির্দেশ করেন বই খাতা ঘুছিয়ে উঠে আসতে।ঈশা উঠে আসতে ঈশান তাকে যেতে বলে সবার সামনে সিনক্রিয়েট করা বোকামি তাই চুপচাপ ক্লাস থেকে বেরিয়ে পড়লো সে।

ঈশান তাকে নিয়ে এসেছে কলেজের কাছে সেই ক্যাফেতে।তারা ছাড়া আশেপাশে মানুষজন নেই পুরোটা ক্যাফ ফাঁকা। নিশ্চয়ই এটা ঈশানের কারসাজি।ঈশার হাত টেনে বসালো ঈশান টুকটাক খাওয়ার অর্ডার দিয়ে বসলো ঈশার মুখোমুখি।

” আমাকে ইগ্নোর করে যাচ্ছো।সেদিন দুপুরের পর সবকিছু থেকে আমায় ব্লক করেছো কোন যোগাযোগ রাখনি।তোমার কি ধারনা আমি এসব মুখ বুঝে সহ্য করছি?আমি তোমায় সময় দিচ্ছি ঈশা।একমাত্র রাসেলের কথায় কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।”
” কিসের সময় দিচ্ছেন আমায়?আমি আপনার কাছে কোন সময় চেয়েছি?”
” আজ রাতে অয়নকে ফিরে আসবে।”
” ও বাঁচিয়ে রেখে ছিলেন আমি তো ভেবেছিলাম লাশটা এতদিনে পচেও গেছে।”

ঈশান ক্রূর হাসলো।সেই হাসিতে গায়ে জ্বলন ধরলো ঈশার।

” আমি আপনার সাথে কোন সম্পর্ক রাখতে চাই না ঈশান।আমাদের সম্পর্ক এখানে শেষ।”
” বললে আর মেনে নিলাম?”
” মানতে বাধ্য আপনি।”
” আমি আজ দুপুরে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হবো নিজের খেয়াল রাখবে উলটা পালটা এমন কোন কাজ করো না যাতে আমি হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়ি।”
” কথা ঘুরিয়ে লাভ নেই ঈশান আমি যখন বলেছি এই সম্পর্ক রাখবো না তখন… ”
” বার বার এক কথা কেন বলছো তুমি?মুখে মুখে বললে আর আমি ভেঙ্গে দিলাম এতই সহজ।”
” তাহলে কি আপনার সাথে যুদ্ধ করতে হবে?যুদ্ধ ঘোষণা করে এই সম্পর্ক ভাঙবো?”
” সেই যুদ্ধতে তুমি হেরে যাবে ঈশা।আমার সাথে লড়াই এত সহজ নয়।”

ঈশানের সাথে তর্কেও হেরে যাচ্ছে ঈশা।ওয়েটার দুই মগ কফি একটা পানির বোতল এবং স্যান্ডউইচ দিয়ে গেছে।ঈশা দ্রুত হাতে সামনে থাকা পানির বোতলটা নিয়ে অর্ধেক পানি পান করলো গলাটা ভিজেছে এবার একটু হলেও শান্তি শান্তি লাগছে।

” অয়নের হাত থেতলে দিয়েছেন আমি কিছু বলতে গিয়েও বলিনি।এখন তাকে গুম করেছেন মানলাম দোষ করলে অয়ন ভাই করেছেন তাহলে তার শাস্তি উনার পরিবার কেন পাবেন?মামা খালা সবার বাড়ির অবস্থা আপনি জানেন তারা কতটা চিন্তায় আছে?”
” আমার জেনে লাভ নেই আমি যেটা ঠিক সেটাই করেছি যে আমার দিকে আঙুল তুলে তাকে পিষে ফেলি আর ও তো গায়ে হাত দেওয়ার সাহস করেছে আমার ইগোতে লেগেছে তোমার কথা ভেবে বেশি কিছু করিনি শুধু..।”

গরম কফি মুখে,গলায়,বুকে পড়তে থমকে গেলো ঈশান।চামড়া কেমন জ্বলে যাচ্ছে কেউ যেন এ সি ড ছুড়েছে।কফির মগটা হাত থেকে টেবিলে সশব্দে রাখলো ঈশা ততক্ষনে ঈশান দাঁড়িয়ে গেছে।দুই হাত টেবিলে ভর রেখে ঈশানের দিকে ঝুঁকে আসে ঈশা এবং ক্রূর হেসে বলে,

“এবার আপনার ইগোতে লেগেছে তাই না ঈশান?কি করবেন আমায় মারবেন,গুম করবেন,নাকি খু ন?”

গায়ের শার্টটা আলগোছে খুলে নিলো ঈশান ঈশা এমন দুঃসাহস কাজ করবে স্বপ্নেও ভাবেনি।ঈশার কাছে এগিয়ে এসে ঈশার ওড়নার কোন ধরলো ধীরে ধীরে মুছলো মুখ,গলা,বুক।ফর্সা চমড়া কেমন লাল হয়ে গেছে সেদিকে তাকিয়ে ভড়কে গেলো ঈশা।ঈশানের হাত থেকে ওড়না ছাড়িয়ে সরে গেলো দ্রুত।ঈশানকে খালি গায়ে দেখে লজ্জা নিংড়ে গেল সুঠাম দেহের অধিকারী ছেলেটা বাইরে থেকে না ভেঙলেও ভেতরে ভেতরে গুড়িয়ে গেছে।

” এত ঘাবড়ে যাচ্ছো কেন ঈশা?”

কথাটা বলে হাসলো ঈশান।এই হাসিতে কোন আনন্দের ছাপ নেই।কেমন থমথমে নিগূঢ় আনন্দহীন হাসি।ঈশার এত সাহস এত জেদ এক নিমিষে হাওয়া গেছে মনে মনে নিজের প্রতি রাগ লাগলো তার তবুও বাইরে থেকে অনুভূতি গুলো টলতে দিলো না।দৃঢ় সরে বলে,

” মা র বে ন?মে রে ফেলুন।”

” এখন থেকে শুধু তুমি আমার ভালোবাসা নও ঈশা তুমি আমার জেদে পরিনত হয়েছো।তোমায় অর্জনের জেদটা আমার এক জীবনের শেষ নিশ্বাস অবধি থাকবে।”

ঈশান হাসলো সেই হাসিতে গায়ে কাটা দিলো ঈশার।বড় বড় পা ফেলে বেরিয়ে গেলো সে।

সারাটা শরীর বিবশ হয়ে আসছে মস্তিষ্কের কার্য ক্ষমতা যেন লুপ্ত হয়েছে।এই সময়ের অনুভূতিটা কেমন ঈশান ভাষায় প্রকাশ করতে পারবে না।না অপমান না জেদ কোনটার রেশ তার মাঝে নেই গাড়ি চলছে ফুল স্প্রিডে।তার টলমলে অশ্রুসিক্ত দুচোখ রক্তিম।সরু দু’ফালি ঠোঁট কিছুক্ষণ পর পর উলটে যাচ্ছে বড় বড় ঢোক গিলে নিজেকে যথা সাধ্য সংযত রাখার চেষ্টা চালালো ঈশান তবে লাভ কী হলো সেই তো কেঁদে ফেললো।দুচোখ ভেসে গেছে জলে সেই জল চোখের কার্নিশ বেয়ে গড়িয়ে পড়লো দু’গালে।শেষ কবে কেঁদেছে ঈশান তার মনে নেই।হয়তো তখন যখন পরিবারের মানুষগুলোকে ছেড়ে একাই দেশে ফিরেছে সে চোখ ভরতি স্বপ্ন হাত ভরতি শূন্যের জোয়ার।সফল্য লাভের আশায় প্রতিটা রাতে সে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে কখনো কখনো নিজের সাথে নিজে না পেরে কেঁদেছে সেই কান্না কেউ দেখেনি এমনকি রাসেলও না।গাড়ি থামলো গেটের সামনে ধপধপ পা ফেলে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে ডানে বামে না তাকিয়ে নিজের কক্ষে চলে গেল।হাতে তোয়ালে নিয়ে ছুটে গেল ওয়াশরুমে।ঝরণার পানি ছেড়ে নিশ্চুপ ভিজতে থাকে।পোড়া স্থানে পানি লাগায় জ্বালাপোড়া বহুগুনে বেড়ে যায়।চামড়ার উপরেও জ্বলছে চামড়ার ভেতরে যে হৃদযন্ত্রটা আছে সেখানেও জ্বলছে।এত জ্বালা কী করে সহ্য করবে ঈশান।

৫৬.
সবার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ফিরে এলো অয়ন। ছেলেটা শারিরীক ভাবে খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে।অবশ্য এটাই চেয়েছিলো ঈশান।আসার পর থেকে সে চুপচাপ থম মেরে বসে আছে।তাকে যখন সবাই জিজ্ঞেস করছে সে কোথায় ছিলো, কি হয়েছিলো এসবের উত্তর দিতে পারেনি সে।সে শুধু জানে রাত দিন চব্বিশ ঘন্টা তাকে চেয়ারের সাথে বেধে রাখা হয়েছে চোখ বেঁধে।সন্তান ফিরে পেয়ে স্বস্তির শ্বাস ছাড়লো বাবা মা।ঈশার মা বেজায় খুশি অয়ন ফিরে এসেছে সবার বুক থেকে চাপা পাথরটা সরে গেছে।কিন্তু নিরব হয়ে রইলো ঈশা নিজের কান্ডে সে নিজেই হতবিহ্বল।রাগে জেদে অন্ধ হয়ে কি করে পারলো ঈশানকে আঘাত দিতে?কি করে পারলো সে?অনু তার সামনে বসে আছে সে পর্যবেক্ষণ করছে ঈশার চোখ দুটো।এই দুটি চোখ থেকে যে কোন সময়ে গড়িয়ে পড়বে বিন্দু বিন্দু জল।হলোও তাই কয়েক মিনিটের মাঝে কেঁদে ফেললো ঈশা সান্ত্বনা দিয়ে তার হাত জড়িয়ে ধরলো অনু।

” এখন কান্না করে কি হবে?যা করার করে ফেলেছিস।”

” উনি কষ্ট পেয়েছেন অনু, খুব কষ্ট পেয়েছেন।”

” তুই ছেড়ে যেতে চাইছিলি এখন ঈশান ভাই তোকে ছেড়ে যাবে তাহলে কাঁদছিস কেন?”

” জানি না আমি শুধু জানি আমার খারাপ লাগছে।”

” তুই ঈশান ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক রাখবি?”

” একদমি না।প্রয়োজনে এই শহর ছাড়বো তবুও উনার কাছে ফিরবো না।”

” তাহলে এত কাঁদছিস কেন?মানসিক ভাবে এই কয়েকদিন চাপে ছিলি এবার ঘুম দে।আয় তোর মাথায় হাত বুলিয়ে দি।”

ঈশার যখন চোখ লেগে এলো ঠিক তখনি ফোন করলো ঈশান।একবার দুইবার তিনবার চারবার এভাবে একেরপর এক ছয়টা ফোন আসে।কিন্তু একবারেও ফোন রিসিভ করেনি ঈশা।অনু মন থেকে চেয়েছিলো ঈশা ফোন ধরুক সব মিটে যাক কিন্তু মেয়েটা ফোন ধরলো না সে জেদে অনড় রইলো।দেয়াল ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলো সময়টা রাত একটা নিজের মনকে বুঝিয়ে পুণরায় ঘুমানোর চেষ্টা চালায় কিন্তু ঘুম আর ধরা দেয় না।কয়েক মিনিট পর ফোনে একটি মেসেজ আসে ঈশানের নাম্বার থেকে।দ্রুত হাতে মেসেজটি ওপেন করে ঈশা।

” তুমি আকাশের বুকে বিশালতার উপমা,তুমি আমার চোখতে সরলতার প্রতিমা।
আমি তোমাকে গড়ি ভেঙ্গে চুরে শতবার,রয়েছো তুমি বহুদূরে ..
আমাকে রেখে ছলনায়,
এ হৃদয় ভেঙ্গে গেলে জানো কি তা
লাগে না, লাগে না জোড়া…..

আমি এখন আছি খোলা বিস্তৃত একটা ছাদে।ছাদে বসে আছি আমি সহ আরো বেশ কয়েকজন তাদের মাঝে কয়েকজনের গানের গলা দুর্দান্ত একজন ভালো গিটার বাজায়।
নিস্তব্ধ নিগূঢ় পরিবেশটায় তারা বারবার এই একটা গানটা গাইছে।এই গানটা আমি কখনো বিশেষ ভাবে শুনি নাই।তবে এখন কেন জানি গানের প্রতিটা শব্দে আমি তোমায় খুঁজে পাই ঈশা।আমাকে ছলনায় রেখে তুমি কী শান্তি পাও মেয়ে?এই লাইনটা মাথায় রেখো, এ হৃদয় ভেঙ্গে গেলে জানো কি তা
লাগে না, লাগে না জোড়া..!”

প্রচন্ড মনখারাপ হতাশার মাঝেও হেসে ফেললো ঈশা।তার মনের কালো মেঘ কেটে গেছে যেখানে যেন অনুভূতির বৃষ্টি ঝরছে। ঈশার হাসি দেখে মোবাইল টেনে নিলো অনু পুরো মেসেজটি পড়ে সে নিজেও স্তব্ধ।
#চলবে____

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here