আবার_প্রেম_হোক #নুসরাত_জাহান_মিম ১৭.

0
686

#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম

১৭.
“সমস্যা টা কি আপনাদের?ডেয়ার কমপ্লিটের মোহরা কি কেবল আমিই?”

বিরক্তির সহিতই কথাটা বলতে বাধ্য হলো চাঁদ।রোজ রোজ একই কাহিনী ভালো লাগছেনা তার।নিজেকে সার্কাসের কোনো জো!কারের থেকে কম মনে হচ্ছেনা আপাতত।কলেজে ঢুকে সবেমাত্রই ক্যাম্পাসে বান্ধবীদের সাথে দাড়িয়েছিলো।তার ঠিক গুটি কয়েক সেকেন্ড বাদেই একটা ছেলে তার সামনে এসে দাঁড়ায়।দাঁড়িয়ে থেকেই বলে,

“চাঁদ?”

চাঁদ ছেলেটার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে বলে,

“জ্বি?”

চাঁদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে ছেলেটা বললো,

“ইফাদ”

“সরি”

চাঁদের প্রত্যাখ্যানে ছেলেটা হাত সরিয়ে বললো,

“একটা কথা বলার ছিলো”

“বলুন”

ছেলেটা আমতা আমতা করে বললো,

“আ..আসলে…আসলে..আ…আই লাইক ইউ”

কুচকানো ভ্রু আরও কুচকিয়ে চাঁদ বললো,

“হোয়াট!”

ছেলেটা চোখ বন্ধ করে একটা গোলাপ তার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,

“দে…দেখুন আমি..আমি আসলে আপনাকে একটু বেশিই পছন্দ করে ফেলেছি।আমি জানিনা একদিনে কি করে কাউকে এতো ভালো লাগতে পারে।বাট আই হ্যাভ আ হিউজ ক্রাশ অন ইউ।কাল থেকে আপনাকে ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছিনা।আপনার নাম যেমন চাঁদ,আপনি আর আপনার মন দুটোই চাঁদের ন্যায় সুন্দর।আই রিয়েলি লাইক ইউ”

সকাল থেকে একের পর এক বিরক্তিকর পরিস্থিতির শিকার হওয়ায় চাঁদের মেজাজ এবার অতিরিক্ত পরিমাণে খারাপ হলো।তাই ঝা!ঝালো স্বরেই সে বললো,

“সমস্যা টা কি আপনাদের?ডেয়ার কমপ্লিটের মোহরা কি কেবল আমিই?”

চাঁদের ঝা!ঝালো স্বর শুনে ছেলেটা থতমত খেয়ে যায়।চাঁদকে ভয়ে ভয়ে সে বলে,

“সরি?”

চাঁদের বলার আগেই অবনী বলে,

“নাটক করে করে সরি বলা হচ্ছে না?বেয়াদব ছেলে।মেয়ে দেখিস নাই কোনোদিন?এই ছেলে তুই এই মেডিকেলে চান্সও পেয়েছিস ক্যাম্নে?নিশ্চয়ই নক!ল করেছিস?”

ছেলেটা অবনীর কথা শুনে রীতিমতো ভ!ড়কে যায়।ভ!ড়কায় চাঁদ আর ইপ্সিও।চাঁদ তাড়াহুড়ো করে বলে,

“এই অবনী চুপ।কিসব বলছো!”

“ঠিকই বলছি।তুই চুপ থাক”

চাঁদ ইপ্সিকে ইশারা করলো অবনীকে নিয়ে ক্লাসে যেতে।ইপ্সি তাই জো!র করে অবনীকে নিজের সাথে নিয়ে গেলো।অবনী আর ইপ্সি যেতেই চাঁদ ছেলেটাকে বললো,

“আমার বান্ধবীর হয়ে আমি সরি বলছি।আসলে ও একটু বেশি কথা বলে।আপনাকেও বলে ফেলেছে।কিছু মনে করবেন না।আর আপনি এমনটা না করলেও পারতেন।এখানে আরও অনেক মেয়ে আছে।আমার সাথেই কেনো আপনারা এমন করেন?”

ছেলেটা চাঁদকে বললো,

“অন্য কোনো মেয়েতো আর আপনি হয়ে যাবে না তাইনা?আর এটা কোনো ডেয়ার না।আমার সত্যিই আপনাকে ভালোলেগেছে”

চাঁদ ছেলেটাকে বললো,

“ভালো সবারই কাউকে না কাউকে লাগতেই পারে।এতে কোনো বাধা নেই।”

“তবে?”

“আপনার বাম হাতটা এখানে দিন তো”

“কেনো?”

“আমি বলেছি তাই”

ছেলেটা তার বাম হাত চাঁদের সম্মুখে দিতেই চাঁদ বলে,

“ডান হাতের গোলাপটা বাম হাতে রাখুন”

চাঁদের কথামতো ছেলেটা গোলাপ এক হাত থেকে অন্য হাতে রাখতেই চাঁদ আবারও বলে,

“এবার বা’ হাত মুষ্টিবদ্ধ করুন”

ছেলেটা তাই করলো।অতঃপর চাঁদ বললো,

“এবার হাতটা পকেটে ঢুকিয়ে ফেলুন”

কথাটা শ্রবণ হতেই ছেলেটা চমকে তাকালো চাঁদের দিকে।অতঃপর তার হাত নামিয়ে গোলাপ পকেটে ঢুকিয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে ভ্রু উচিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,

“নীরব প্রত্যাখ্যান?”

চাঁদ প্রতিত্তোরে মৃদু হাসে।ছেলেটা অসহায় দৃষ্টিতে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলে,

“প্লিজ ডোন্ট ডু দিজ”

ছেলের এরূপ কান্ডে চাঁদ উচ্চশব্দেই হেসে উঠে।তা দেখে ছেলেটা বলে,

“আ!হত না হওয়ার জন্য আপনাকে হাসতে বারণ করলাম।আর আপনি নি!হত করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন?”

চাঁদ হাসি থামিয়ে বলে,

“ফ্লার্টিং লেভেল অ্যাট নাইন্টি নাইন পার্সেন্ট”

“নো।ক্রাশিং লেভেল অ্যাট নাইন্টি নাইন পয়েন্ট নাইন নাইন পার্সেন্ট”

“হয়েছে থামুন।ক্লাসে যাবো”

বলেই সেখান থেকে চলে যেতে নিলে পথ আটকে দাঁড়ায় মিরা,অরণ আর মির।তাদেরকে দেখে থেমে যায় চাঁদের পা জোড়া।অবাক দৃষ্টিতে তাকায় তাদের পানে।মিরা চাঁদের পাশের ছেলেটাকে আঙুল দিয়ে ইশারা করে বলে,

“লিভ”

ছেলেটা চাঁদকে কিছু বলতেই নিয়েছিলো এমন সময় মিরা আবারও বলে,

“যেতে বলেছি যাবে।ডোন্ট ট্রাই টু বি ওভারস্মার্ট জুনিয়র”

‘জুনিয়র’ শব্দটা শুনে ছেলেটা বুঝতে পারলো সামনে দাড়িয়ে থাকা ছেলে মেয়েগুলো তার সিনিয়র।তাই কোনো বাক্য ব্যয় না করে সে প্রস্থান করলো।ছেলেটা যেতেই মিরা চাঁদের সামনে এসে বলে,

“কেমন আছো চাঁদ?”

“আলহামদুলিল্লাহ।আপনি আপু?”

“আলহামদুলিল্লাহ।কাল তোমার সাথে দেখা করতে তোমার ক্লাসে গিয়েছিলাম পাইনি”

“কখন?”

“ক্লাস টাইম শেষেই”

“গতকাল আমি পাঁচ মিনিট আগেই বের হয়ে গিয়েছিলাম আপু।কিছু কাজ ছিলো তাই”

“ওহ আচ্ছা।তোমার কি এখন টাইম হবে?কথা বলতাম”

চাঁদ আমতা আমতা করছে দেখে অরণ বললো,

“ইতস্তত করোনা।এখন ফ্রি না থাকলে পরে কথা হবে।যদি তুমি ফ্রি থাকো তবেই”

“আসলে স্যার আজ ক্লাসে আগেই যেতে বলেছিলেন।উনিও আগে আসবেন নাকি।কি জরুরী আলোচনা ছিলো”

মিরা ভরসা দিয়ে বললো,

“সমস্যা নেই তুমি যাও।ক্লাস টাইম শেষে থেকো কথা বলবোনে?”

“আসলে আপু!”

“হ্যা বলো?”

“একটু এখানে আসবেন?”

মিরা অরণ আর মিরকে ইশারা করতেই তারা একটু দূরে সরে দাড়াতেই মিরা চাঁদের কাছে গিয়ে বলে,

“বলো?”

চাঁদ আস্তেসুরে বলে,

“ক্লাস টাইম শেষের একটু আগেই বের হই আমি। ডিউটি জয়েন করতে হয় আপু”

“ডিউটি?”

“হিম।আমি একটা হাসপাতালে জব করি।সেটা বিকালের ডিউটি”

“ওহ!তাহলে সমস্যা নেই।তুমি আমার নাম্বারটা রাখো ফোনে কথা বলবোনে?”

“আচ্ছা আপু।আমারটাও রাখুন।আর কাল সময় করে আমি আপনার সাথে দেখা করবো ইনশাআল্লাহ।আজ স্যার না ডাকলে দাড়াতাম সত্যিই”

“সমস্যা নেই।ফার্স্ট ইয়ারের ক্যাপ্টেন তুমি না?”

“হ্যা আপু”

“এজন্যই তোমায় ডেকেছে।আমাদের বেলা প্রণয় সবকিছু এরেঞ্জ করেছিলো”

“সবকিছু বলতে?”

“নবীনবরণ হবেনা?”

“নবীনবরণ!”

“হ্যা।অবাক হচ্ছো কেনো?সবারই তো হয়”

“না সেজন্য না।সব দায়িত্ব কি তবে আমায় দেবে?”

“না।ফার্স্ট ক্যাপ্টেন থেকে নিয়ে এইটথ পর্যন্ত নেয়।আমাদের বেলা প্রণয়,অরণ,মির আমি আর রিহা দায়িত্ব পেয়েছিলাম।আর বাকি তিনজন ক্লাসমেট ছিলো”

“আচ্ছা!মানে আটজন মিলে করতে হবে?”

“করবে আটজনই বাট প্ল্যানিং সব তোমায় করতে হবে।সবাইকে দায়িত্ব ভাগ করে দিতে হবে।নিখুঁত পরিকল্পনা বৈকি।”

“এতো প্রেশার!”

মিরা হেসে চাঁদের থুতনীতে হাত রেখে বলে,

“টেনশন নিওনা।তুমি পারবে।আর বেস্ট নবীনবরণ ইন ডিএমসি যেনো এটাই হয় ওকে?”

চাঁদ মৃদু হেসে বলে,

“চেষ্টা করবো আপু।”

“কোনো হেল্প লাগলে আমাকে অবশ্যই বলবে।আর কেউ করুক না করুক।আমি,অরণ আর মির অবশ্যই করবো”

চাঁদ মিরার দু’হাত নিজের হাতে নিয়ে বলে,

“থ্যাংক ইউ সো মাচ আপু।আপনি অনেক ভালো”

“তাহলে আপুকে আপনি বলে আর পর করবেনাতো?”

“একদমই না আপু!এখন আসি?”

“হ্যা আসো”

চাঁদ যেতে নিলেই মির দৌড়ে এসে একটু জোরেই বলে,

“এই বিড়ালিনী!কোথায় যাচ্ছো?দাড়াও”

চাঁদ থেমে গিয়ে বলে,

“জ্বি ভাইয়া?”

“মিরার সাথে কথা বলেই চলে যাচ্ছো?এখানে যে আমরা দুজন এতোক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি তার কোনো মূল্যই নেই দেখছি!”

“না ভাইয়া।আসলে… ”

মিরা চাঁদকে বলে,

“তুমি যাও।আমি ওদের বুঝিয়ে বলছি”

মির বলে,

“যাবে মানে?ক্লাস শুরু হতে দেরি আছে”

মিরা মিরকে চোখ রা!ঙিয়ে বলে,

“চুপ থাক”

বলেই চাঁদকে ইশারায় যেতে বললে চাঁদ মৃদু হেসে প্রস্থান করে।

ক্লাসের সামনে আসতেই চাঁদ দেখে সেখানে অনেকেই উপস্থিত আছে।ভেতরে তাদের প্রফেসরও আছেন।তাই চাঁদ পার্মিশন নেয়,

“মে আই কাম ইন স্যার?” [আমি কি ভেতরে আসতে পারি স্যার?]

চাঁদের দিকে তাকিয়ে প্রফেসর বলেন,

“ইয়েস বাট হোয়াই আর ইউ সো মাচ লেইট ক্যাপ্টেন?হোয়াইল আই টোল্ড ইউ টু কাম ফাস্ট টুডায়?” [হ্যা কিন্তু তুমি এতো বিলম্ব করেছো কেনো ক্যাপ্টেন?যেখানে আমি তোমায় আজ জলদি আসতে বলেছিলাম?]

চাঁদ ভেতরে প্রবেশ করে বলে,

“এক্সট্রিমলি সরি স্যার।রাস্তায় একটু ঝামেলা হয়েছিলো।এরপর থেকে আর এমন হবেনা।ইট উইল বি মাই ফার্স্ট এন্ড লাস্ট মিসটেক”

“ওকে আই ট্রাস্ট ইউ।হোপ সো ইউ ওন্ট রিপিট ইট।নাও কাম এন্ড স্ট্যান্ড উইথ দেম।আই হ্যাভ ইমপর্ট্যান্ট ডিশকাশন উইথ অল অফ ইউ” [ঠিক আছে আমি তোমায় বিশ্বাস করলাম।আশা করছি তুমি পরবর্তীতে এটা আর করবেনা।এখন ওদের সাথে এসে দাড়াও।তোমাদের সাথে জরুরী কথা আছে আমার]

সবাই প্রফেসরের কথা শুনে সোজা হয়ে দাড়াতেই তিনি বলেন,

“চাঁদ এন্ড ফায়ান কাম বিসাইড মি” [আমার পাশে এসে দাড়াও চাঁদ এবং ফায়ান]

চাঁদ প্রফেসরের পাশে দু’হাত জায়গা রেখে অস্বস্তি নিয়ে দাড়াতেই ফায়ান শান্তভঙ্গিতে চাঁদের দিকে তাকায়।অতঃপর প্রফেসরের অপরপাশে গিয়ে দাঁড়ায় সে।

“অ্যাটেনশান এভ্রিওয়ান।মিট মুহাইমা বিনতে চাঁদ এন্ড আরফিদ ফায়ান।মেইবি ইউ গাইজ নিউ বাউট দেম।ইওর ফার্স্ট এন্ড সেকেন্ড ক্যাপ্টেন। [সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।এরা মুহাইমা বিনতে চাঁদ আর আরফিদ ফায়ান।তোমরা হয়তো ওদের সম্পর্কে জানো।তোমাদের প্রথম এবং দ্বিতীয় ক্যাপ্টেন]

অতঃপর সকলকে নবীনবরণ নিয়ে সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে।শেষ বক্তব্য দেন,

“তোমাদের দু’দিন বাদেই নবীনবরণ তাই আজ থেকেই সব শুরু করে দাও।আর এই তিনদিন তোমাদের আটজনের ক্লাস করতে হবেনা।যেহেতু তোমরা আমাদের বেস্ট স্টুডেন্ট আমরা কেউই চাইনা তোমাদের কোনো ক্লাস মিস যাক।সেজন্য এই তিনদিন কোনো ক্লাসই হবেনা।নবীনবরণের পর থেকেই হবে।সো ইউ গাইজ ক্যান অ্যাটেন্ড ইচ এন্ড এভ্রি ক্লাস।বাট ইউ গাইজ হ্যাভ টু কাম কলেজ ফর অল এরেঞ্জমেন্টস অফ দ্যা ফাংশন।চাঁদ তুমি সবাইকে সবটা বুঝিয়ে দেবে।ফায়ান তুমি আর চাঁদ একসাথে আলোচনা করে কাকে কি দায়িত্ব দিবে চিন্তা করে কিভাবে সবটা করবে দেখো।তোমাদের দুজনের উপরই পুরো দায়িত্ব দিলাম।তবে কোনো ত্রুটি হলে সম্পূর্ণ দায়ভার চাঁদেরই থাকবে।রিমেমবার ইট”

ফায়ান জবাব দিলো,

“সরি স্যার বাট দায়িত্ব দুজনকে দিলে দায়ভার একার তার কেনো হবে?”

“ফার্স্ট ক্যাপ্টেনেরই সব দায়িত্ব হয়”

“তাহলে কেনো বলছেন আমায়ও দায়িত্ব দিচ্ছেন?”

“যদি চাঁদ সবটা…”

“সরি ফর ইন্টারেপ্ট বাট আপনি একজন গণ্যমান্য ডাক্তার প্লাস প্রফেসর হয়ে এমন মনোভাব কি করে রাখতে পারেন স্যার?মেয়ে-ছেলে যেই হোক।রুল যেটা ওটাই আপনার ফলো করা উচিত।”

ফায়ানের কথায় প্রফেসরের মুখ থমথমে হয়ে যায়।তিনি গম্ভীরভাবে বলেন,

“তোমাদের যেভাবে মনে হয় করো।এন্ড ফাইনাল ডিসিশন চাঁদেরই থাকবে।কিছু করার আগে সকলে ওকে জিজ্ঞেস করে নেবে।”

বলেই তিনি প্রস্থান করেন।তিনি যেতেই ইফাদ ফায়ানের সামনে এসে বলে,

“মামা স্যারকেতো একদম ধু!য়ে দিলি”

ফায়ান ভ্রু কুচকে বলে,

“ধোয়ার মতো কী হলো এতে?আমার কাছে তার কথা অনুচিত লেগেছে তাই উচিতটা বলে দিয়েছি দ্যাটস ইট।ওখানে গিয়ে দাড়া আসছি আমি”

বলেই চাঁদের দিকে তাকায় ফায়ান।তাকিয়ে থেকে বলে,

“ক্যান….”

একইসাথে চাঁদও বলে,

“আম…”

ফায়ান থেমে গিয়ে বলে,

“বলুন”

চাঁদ জবাবে বলে,

“আপনিই বলুন”

ফায়ানের কথা পেচানো পছন্দ না।তাই সে কথা না বাড়িয়ে সোজাসুজিই বলে,

“নট দ্যাট মাচ ইমপর্ট্যান্ট।ক্যান উই টক?” [অতোটা জরুরী না।আমরা কি কথা বলতে পারি?]

“শিওর”

প্রণয়সহ তার সব ফ্রেন্ড ক্যান্টিনে বসে আছে।অরণ সবসময়কার মতো বইয়ে মগ্ন।মির মোবাইলে ব্যস্ত।বাকিরা খাচ্ছে আর টুকটাক কথা বলছে।আর প্রণয় গিটারের তার ঠিক করছে।রিহা বার্গার খেতে খেতে বললো,

“দোস্ত কতদিন হলো তোর গলায় গান শুনিনা”

মির মোবাইল লক করে টেবিলে আছ!রে স্প্রাইটে চুমুক দিয়ে বলে,

“মনটাও ভালো নেই।তানহার সাথে ব্রেকাপ হয়ে গেলো।একটা ছ্যাকা খাওয়া গান শোনাতো মামা”

সকলে ভ্রু কুচকে তাকায় মিরের দিকে।তাকাতেই সে বলে,

“কী?”

রবিন উইংস চিবাতে চিবাতে বলে,

“কোন তানহা?কলেজের টা নাকি তোর পাশের বাসার টা?”

এ কথা শুনতেই সকলে হেসে দেয়।আর মির টেবিলে হালকাভাবে ঘু!ষি দিয়ে বলে,

“ধ্যাত!”

প্রণয় তার বন্ধু-বান্ধবের কান্ড দেখে এক গালে হেসে সামনে তাকাতেই দেখতে পায় আবারও লাল-কালো মিশ্রিত ড্রেসাপে কাগজ কলম হাতে ভেতরে ঢুকছে চাঁদ,তবে আজ গতকাল থেকে কিছুটা ভিন্নই দেখাচ্ছে।একপাশে তার অবনী,ইফাদ অপরপাশে আরেকটা মেয়ে।কলম নাড়াতে নাড়াতে ভ্রু কুচকে চাঁদ বলছে,

“ফায়ান কোথায়?দেখছিনা কেনো?”

অবনী বিরক্ত হয়ে বলে,

“না ঢুকেই বলছিস দেখছিনা।ভেতরে গিয়েতো দেখ।এই ইফাদ যা আমার জন্য মিরিন্ডা নিয়ে আয় গরম লাগছে”

চাঁদ আড়চোখে অবনীর দিকে তাকিয়ে বলে,

“তোরা এখানেই থাক।আমিই ওকে নিয়ে আসছি”

বলেই সামনে এগোয় চাঁদ।এমন সময় একজন ওয়েটার একহাতে গ্লাসের ট্রে অপরহাতে চেয়ার নিয়ে তার দিকেই না দেখেই এগোয়।প্রণয় সেটা খেয়াল করে গিটার রেখে উঠতেই নেবে এমন সময় তার নজরে আসে দ্রুতগতিতে কেউ একজন চাঁদের হাত টেনে নেয়।চাঁদ টাল সামলাতে না পারায় তার মাথা ছেলেটার বুকে গিয়ে আছ!রে পড়ে।ছেলেটা দ্রুতগতিতেই চাঁদকে বুক থেকে তুলে নিয়ে এক হাত দিয়ে হাত ধরে রেখে অপর হাতের তর্জনী চাঁদের চোখ বরাবর নিয়ে শাসিয়ে বলে,

“চোখে চমশা থাকা সত্ত্বেও দু!র্ঘ!টনা চোখে পড়েনা?এখনইতো পেটে চেয়ারের আ!ঘাত লেগে কিছু একটা হয়ে যেতো”

চাঁদ চোখ খিচে বন্ধ করে ছিলো।ফায়ানের কন্ঠ শুনে পিটপিট করে চোখ মেলে তাকায় তার দিকে।

সেই একই বেশে চাঁদকে দেখে দ্বিতীয়বারের মতো চোখ আটকে গিয়েছিলো প্রণয়ের।তবে বর্তমানে ঘটা অল্পকিছুক্ষণের ঘটনার রেশ তার মস্তিষ্কে ভ!য়ঙ্ক!রভাবে ছাপ ফেলে দিলো।তার বিড়ালাক্ষীজোড়া সেদিকেই থমকে গেলো।সে গিটারে আঙুল চালিয়ে সে পানে তাকিয়েই শুধালো,

♪♪♪…আমি ভেবে নিলাম,
তুমি সেই লাল গোলাপ।
যারে নিরন্তর পাহারা দেয়,
এক কাটার বাগান!…♪♪♪

হঠাৎ করে কারো মন্ত্রমুগ্ধ কন্ঠস্বরে তার প্রিয় পঙক্তি শুনে উৎসের দিকে সে অবস্থায়ই চোখ বন্ধ করে মনোযোগ জ্ঞাপন করে চাঁদ।অতঃপর উৎস খুজে পেয়ে সেদিকে তাকাতেই দ্বিতীয়বারের ন্যায় দৃষ্টিমিলন ঘটে প্রণয় নামক বিড়ালাক্ষী মানবের সাথে।

To be continued….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here