#মনের_অরণ্যে_এলে_তুমি
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৩০
বালিশে বাঁকা ভাবে এলিয়ে মাথা। হাতে বই। স্বল্প এলোমেলো দোপাট্টা। নিদ্রায় তলিয়ে ইরহামের একান্ত নারী। ঘুমন্ত সে অবয়বে মোহাচ্ছন্ন হলো মানুষটি! প্রসারিত হলো অধর। ধীরপায়ে বিছানার ধারে অগ্রসর হতে লাগলো ইরহাম। ডান হাতে খুলছে পাঞ্জাবির বোতাম। পৌঁছালো অর্ধাঙ্গীর নৈকট্যে। ঝুঁকে গেল কিঞ্চিৎ। হাত বাড়িয়ে ঘুমন্ত রমণীর কাছ থেকে বই সরিয়ে নিলো। রাখলো বেড সাইড টেবিলে। কপালে পড়ে থাকা খুচরো চুল আস্তে ধীরে তর্জনীর স্পর্শে সরিয়ে দিলো। পুরুষালি স্পর্শে হালকা নড়ে উঠলো রমণী। তা অবলোকন করে মুচকি হাসলো ইরহাম। সোজা হয়ে দাঁড়ালো। পা বাড়ালো কাবার্ডের ধারে। স্মরণে এলো গতরাতের কিছু খুনসুটিময় মুহুর্ত!
____
বিছানার ধারে দাঁড়িয়ে ইরহাম। ভেজা চুলে চালনা করছে তোয়ালে। শুষে নিচ্ছে বিন্দু বিন্দু জল। লক্ষ্য করছে ডান পাশে দণ্ডায়মান স্ত্রীকে। উশখুশ করছে সে। কচলে চলেছে দু হাত। কিছু বলতে চায় কি!
” কিছু বলবে? ”
আকস্মিক স্বামীর কণ্ঠে ভাবনাচ্যুত হলো হৃদি। সাহস সঞ্চয় করে ইতিবাচক মাথা নাড়ল। অনুমতি প্রদান করলো মানুষটি,
” বলো। ”
” আসলে হয়েছে কি। আমি। না মানে আমরা। ”
” কি? ” প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ইরহাম।
মেকি হাসলো হৃদি। বুঝে উঠতে পারছে না কথাটা বলা কতটা যুক্তিসঙ্গত হবে। আদৌও রাজি হবে তো সে!
” কি হলো? বলো। ”
তোয়ালে যথাস্থানে রেখে শুধালো ইরহাম। শুকনো ঢোক গিলে একবুক সাহস সঞ্চয় করলো মেয়েটি। আমতা আমতা করে বললো,
” আসলে আ আমি প্লান করেছি যে। আমরা.. ঘুরতে যাবো। ”
চমকালো ইরহাম! ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা! বিবাহের চার মাস পূর্ণ হবার পর প্রথমবারের মতো স্ত্রীর এমন আবদার! এমন আবদার ফেলে দেবার মতো নয়। বিনা বাক্যে পূরণ করা উচিত। তবে তা এ মুহূর্তে সম্ভব নয়। সদ্য এমপি নির্বাচিত হয়েছে সে। নিরাপত্তা সহ পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে এ মুহূর্তে তাদের খোলামেলা ভাবে বাহিরে বের হওয়া অনুচিত। বিপদজনক হতে পারে। সুগভীর ভাবনা শেষে পিছু ঘুরে তাকালো ইরহাম। স্ত্রীকে কোমল স্বরে বললো,
” স্যরি। এ মুহূর্তে যেতে পারবো না। ”
চরম আশ্চর্যান্বিত হলো হৃদি! এমন ভাব যেন সদ্য আকাশ থেকে ছিটকে পড়লো!
” কিহ্! আপনাকে কে যেতে বলছে? ”
এবার আশ্চর্য হবার পালা এমপি সাহেবের! প্রশ্ন করে নিশ্চিত হতে চাইলো,
” তুমি আমাদের কথা বলছিলে না? ”
” না। আপনি ব্যস্ত মানুষ। কাজের শেষ নেই। কি করে যাবেন? এছাড়াও আমি আপনার সাথে ঘোরার কথা ভাবিইনি। আমি তো মা আর ইনুর কথা বলছিলাম। ”
সোজাসাপ্টা নেতিবাচক জবাবে কিছুটা আহত বোধ করলো ইরহাম। এভাবে মুখের ওপর না বলে দিলো! একটুও কি ইচ্ছে হয় না স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে! আজ অবধি ঘোরাঘুরির সুযোগ হয়নি বলে কোনো প্রত্যাশা ই নেই! মৃদু ব্যথিত কণ্ঠে শুধালো,
” আমার সঙ্গে ঘুরতে মন চায় না? ”
” অমন ইচ্ছে নেই বাপু। রষকষহীন লোক নিয়ে ঘোরা আর না ঘোরা সমান কথা। ”
আনমনে মনের ভাব প্রকাশ করে ফেললো মেয়েটি। ত্বরিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলো বিপরীতে দণ্ডায়মান বলিষ্ঠদেহী মানব। কাট-কাট কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
” আমি রষকষহীন? ”
কণ্ঠে পরিবর্তনের ছোঁয়া। কৌতুহলী দৃষ্টিতে স্বামীর পানে তাকালো হৃদি। তাতেই হলো অঘটন। মোহাচ্ছন্ন নয়নে তাকিয়ে মানুষটি। চোখেমুখে দুষ্টুমির আভাস। বক্র হাসির রেখা ফুটে ওষ্ঠপুটে। ভাবসাব সুবিধার ঠেকছে না। রষকষহীন বললেই মানুষটা অভ্যন্তরীণ রষের প্রেমাসক্ত প্রমাণ দিয়ে থাকে। বড় ম-রণঘাতী মধুরতম সে প্রমাণ। তৎক্ষণাৎ বক্তব্যে পরিবর্তন আনলো মেয়েটা। এক শ্বাসে বলে গেল,
” না না। আ আমি ভুল বলেছি। কিসের রষকষহীন? আপনি তো খুউব রসালো। ”
সরল মনে বলেছে মেয়েটি। কিন্তু স্বামী নামক মানুষটি যে তা সরল রূপে গ্রহণ করতে নারাজ। সে খুব রসালো! বক্র হেসে ধীরপায়ে এগিয়ে এলো ইরহাম। তার আগমনী পদধ্বনি’তে আন্দোলিত রমণীর হৃদয়। হৃৎপিণ্ডের গতিবেগ বর্ধিত হচ্ছে ক্রমবর্ধমান হারে। অর্ধাঙ্গীর পানে স্বল্প ঝুঁকে গেল মানুষটি। নে’শাতুর নয়নে তাকিয়ে। সে নে”শাক্ত নয়নে নয়ন মেলাতে ব্যর্থ হৃদি। দাঁড়িয়ে আনত নয়নে। ঘোর লাগানো স্বরে নিশ্চিত হতে শুধালো ইরহাম,
” সত্যিই রসালো আমি? হুঁ? ”
কম্পিত অক্ষিপুট বুঁজে গেল। ঘন ঘন পড়ছে শ্বাস। নিজেকে সামাল দিতে দ্রুততার সহিত মুখ ফিরিয়ে দাঁড়ালো মেয়েটি। ওর কম্পমান অবস্থা অনুধাবন করে আর দুষ্টুমি করলো না ইরহাম। ধীরপায়ে এগিয়ে গেল। বসলো বিছানায়। স্বাভাবিক কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলো,
” কোথায় ঘুরতে যেতে ইচ্ছুক? ”
কণ্ঠে স্বাভাবিক ছাপ। আস্তে ধীরে শান্ত হলো মেয়েটি। ওর সামান্যতেই নাজুক অবস্থা অবলোকন করে মানুষটি উপলব্ধি করতে পারলো, তাকে ভবিষ্যতে হতে হবে বেশ নাজেহাল। পিছু ঘুরে তাকালো হৃদি। উচ্ছ্বসিত বদনে বলতে লাগলো,
” রবীন্দ্র সরোবর। ওখানে যেতে চাই। আগামীকাল। আমি, মা আর ইনু। লেডিস গ্যাং। আশা করি বেশ মজা হবে। অপেক্ষা শুধু অনুমতির। আপনি জানেন ইনু কি বলছিল? ”
জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে ইরহাম। হৃদি হেসে উঠলো। বললো,
” ইনু বলছিল আমাদের ঘুরতে যেতে নাকি তিনটা অগ্নি পরীক্ষা দিতে হবে। আমি অবাক হয়ে প্রশ্ন করলাম কোন তিনটা? ও কি বললো জানেন? ”
হৃদি এবার ইনায়া রূপে আবির্ভূত হলো। কণ্ঠস্বর চিকন করে ইনায়ার মতো অভিনয় করে বলতে লাগলো,
” সর্বপ্রথম বাঁধা দেবে আব্বু। এরপর ভাইয়া। তিন নাম্বার কে জানো? ”
হৃদি উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে ‘হৃদি’ রূপে কিছুটা মোটা স্বরে জিজ্ঞেস করলো,
” কে? ”
দ্রুত পায়ে হৃদি আগের জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালো। ইনায়া রূপে বলতে লাগলো,
” আম্মু। আম্মু কোথাও যেতে চায় না। ঘরকুনো স্বভাবের। জানো ভাবি? ভাইয়ার বিয়েতে আম্মুর সঙ্গে একটা সেলফি তুলতে চেয়েছিলাম। তা-ও তুললো না। বলতে পারো আম্মু কিছুটা সেকেলে মাইন্ডের। ঘুরতে যেতে রাজি হবে না। ”
হৃদি নিজ অবস্থানে গিয়ে দাঁড়ালো। নিজের রূপে ফিরে এসে আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বললো,
” নো চিন্তা নন্দিনী। ম্যায় হু না? অল প্রবলেম সলভড্। ওকে?”
ইরহাম এতক্ষণ বসে বসে মনোযোগ সহকারে দুষ্টুমির সম্রাজ্ঞী, তার একমাত্র বউয়ের কাণ্ডকারখানা দেখছিল। মেয়েটা একা কিভাবে ননদ ভাবীর রোল প্লে করছে। তাকে অভিনয় করে দেখাচ্ছে। বেশ বিনোদনমূলক। হৃদির অভাবনীয় অভিনয়ে নিজেকে আর সামলাতে পারলো না এমপি সাহেব। কয়েক আঙ্গুল ঠেকে ওষ্ঠাধরে। তার অন্তরালে হেসে চলেছে মানুষটি। হাসির দমকে দুলে উঠছে সুঠাম দেহ। হৃদি তো তখনো নিজ অভিনয়ে মগ্ন। টেরও পেল না তার বোকা বোকা অভিনয়ে স্বামীর অভাবনীয় পরিবর্তন। ইরহাম নিজেও বোধহয় বলতে পারবে না, শেষ কবে এমন করে হেসেছে। যে হাসির দমকে কেঁপে উঠেছে কায়া।
____
সেদিন তার অমন আশ্চর্যজনক হাস্যরত রূপ হৃদি টের পায়নি। যথাসময়ে নিজেকে ধাতস্থ করতে সক্ষম হয়েছিল ইরহাম। আপত্তি করা সত্ত্বেও শুনলো না রমণী। ঠিক ঘুরে এলো রবীন্দ্র সরোবর। সে বিহীন। গতরাতের স্মৃতি স্মরণ করে মুচকি হাসলো ইরহাম। সদ্য ফ্রেশ হয়ে বেরিয়েছে সে। উদোম দেহে লেপ্টে জলকণা। বসে অর্ধাঙ্গীর শিয়রে। ঘুমন্ত কন্যার মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে ওষ্ঠ স্পর্শ করলো ললাটে। প্রগাঢ় এক স্পর্শ! মৃদু কম্পিত হলো কি কোমল কায়া!
•
দিবাবসুর দীপ্তিতে ঔজ্বল্য ছড়িয়ে ধরনীর বুকে। চঞ্চল বিহঙ্গের কলতানে মুখর ভার্সিটি প্রাঙ্গন। নিজেদের মতো করে সময় কাটাচ্ছে শিক্ষার্থীদের দল। হৃদি ও তার বন্ধুমহল এক প্রকাণ্ড বৃক্ষতলে দাঁড়িয়ে। রৌদ্রের উত্তাপ তাদের সরাসরি ছুঁতে ব্যর্থ। নাদিরা উৎফুল্ল কণ্ঠে বন্ধুদের উদ্দেশ্যে বললো,
” গাইজ। আগামীকাল তো হলিডে। ভার্সিটি অফ। চল না কোথাও ঘুরে আসি। কতদিন হলো আমরা ফ্রেন্ডরা মিলে ঘুরতে যাই না। ”
দিয়া সহমত পোষণ করে বললো,
” একদম ঠিক বলছিস। দোস্তগণ! চল হয়ে যাক আউটিং। ”
সাবিত ওষ্ঠাধর হাতের উল্টো পিঠে আড়াল করে হাই তুললো। নির্লিপ্ত স্বরে বললো,
” ট্যাকা দে। নিশ্চয়ই যামু। ”
দিয়া চোখমুখ খিঁচে বললো,
” শা* আইলসার ভা;তার! লজ্জা করে না মাইয়া মাইনষের কাছে টাকা চাইতে? ”
সাবিত কিছু বলার আগেই হৃদি দুষ্টুমি করে বলে উঠলো,
” এর আবার লজ্জা? জানিস না পুরুষ মানুষের লজ্জার থলি একেবারে পিচ্চি? ”
কথাটি বলে বোকাবনে গেল হৃদি। বন্ধুগণ ওর দিকে কেমন অদ্ভুত চাহনিতে তাকিয়ে। হকচকিয়ে গেল হৃদি। শুধালো,
” কি হইছে? এমন করে তাকিয়ে আছিস কেন তোরা? আমার রূপ কি খসে খসে পড়ছে? ”
নাবিল নির্বিকার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বললো,
” নো বাবেশ। ”
” তাইলে? ” হৃদি প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকিয়ে।
সাবিত অলস কণ্ঠে বললো, ” ভাবতাছি। ”
হৃদি এবার তেঁতে উঠলো,
” আরে ছাতা! কি ভাবতাছিস বলবি তো? এমন হাভা”তের মতো তাকিয়ে আছিস কেন? ”
নাদিরা এবার মুখ খুললো,
” এটাই ভাবতেছি দুলাভাইয়ের লজ্জার থলি ঠিক কতটুক? বেশিই পিচ্চি? তোরে খুব বেশিই জ্বা’লায় পো’ড়ায়? ”
কথাটার অন্তর্নিহিত অর্থ বোধগম্য হতেই হতবিহ্বল হৃদি! র’ক্তিম আভা ফুটে উঠলো কপোলের কোমল আবরণে। চোখমুখ কুঁচকে ফেললো মেয়েটি,
” ছিঃ! তোদের চিপ মাইন্ড এখন আমাকে নিয়ে পড়েছে? আমি কি একবারও ওনার কথা বলছি? ”
ইভা দুষ্টু হেসে বললো,
” না বেবি। তুমি ‘ওনার’ কথা বলো নাই। আর আমরাও ফিডার খাওয়া বেবি না। বুঝি সব বুঝি। দুলাভাই আমাদের উপরে উপরে সুফি। তলে তলে আশিকি থ্রি। তাই না? ”
ভ্রু নাচিয়ে চলেছে ইভা। লাজুকতার ন্যায় গুটিয়ে গেল মেয়েটি। তপ্ত দু কপোল। ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে শ্রবণেন্দ্রিয় হতে। ইশ্! কি বেশরম কথাবার্তা! মৃদু স্বরে ধমকে উঠলো হৃদি,
” চুপ করবি তোরা? ”
সাবিত নির্লজ্জের মতো দাঁত কেলিয়ে হাসলো। বন্ধুদের বললো,
” ওরে তোরা এবার থাম। বান্দুপি আমগো স্বামী সোহাগ কল্পনা কইরা কাশ্মীরি আপেল হইয়া যাইতাছে। থাম এবার। ”
আর সহ্য করা গেল না। বন্ধুদের ওপর মেকি বিরক্তি প্রকাশ করে দ্রুত পায়ে সেথা হতে প্রস্থান করলো লাজে রাঙা রমণী। সমস্বরে হেসে উঠলো বন্ধুগণ।
.
লাজে রাঙা হৃদি মুখশ্রীর লালিমা লুকায়িত করতে ব্যস্ত। হেঁটে যাচ্ছে ক্যাম্পাসে। অধরে লেপ্টে লজ্জালু আভা। আঁকড়ে ধরে কাঁধের ব্যাগ। সহসা তার লজ্জালু আভা পলায়ন করলো। চেহারায় শোভা পেল চমক!
তৃতীয় বর্ষের সিনিয়র ভাই সজীব। হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এক জুনিয়রের। প্রথম বর্ষের নতুন স্টুডেন্ট ছেলেটি। এক দু বার চলতি পথে সাক্ষাৎ হয়েছিল। চোখেমুখে কেমন অস্বাভাবিক ছাপ ছেলেটির। ঘন শ্বাস পড়ছে। ঘামে জবজবে দেহ। সজীব ভাইয়া তাকে টেনেহিঁচড়ে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে! সন্দেহের উৎপত্তি হলো মনে। ইচ্ছা জাগ্রত হলো পিছু নেবার। সে-ই মোতাবেক পা বাড়াতেই বাঁধাপ্রাপ্ত হলো। পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ইভা। দুষ্টুমি করতে করতে ওকে নিয়ে সেথা হতে প্রস্থান করলো। ইচ্ছে সত্ত্বেও দেখা হলো না কোথায় হারিয়ে গেল সজীব ভাইয়া। আর কি হলো সে-ই জুনিয়র ছেলেটির। কেন করছিল অমন অস্বাভাবিক আচরণ!
.
তমস্র রজনী। স্টাডি টেবিলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বইপত্র। চেয়ারে বসে ইনায়া। বারংবার অন্যমনস্ক হয়ে পড়ছে মেয়েটি। বইয়ের কেমিস্ট্রি সলভ্ করতে গিয়ে তার মানসপটে উপস্থিত হচ্ছে জীবন্ত কেমিস্ট্রি। এক তরুণ অবয়ব। বহুরূপী সে তরুণ। কখনো মিশুকে কখনো গম্ভীর কখনোবা শা স ক! কখনো বাচ্চামো করে বিনোদন দেয় সকলকে। কখনোবা ধমকে উড়িয়ে দেয় আত্মা। যদিওবা তার সকল ধমক, শা স ক অবতার শুধুমাত্র একজনের তরে। ইনায়ার তরে। হাঁ। তাই তো ঘটে। সবার জন্য রাহিদ নামক তরুণ মিশুকে হলেও একমাত্র ইনায়ার নিকটে সে ভীতির আরেক নাম। এক জীবন্ত অ সু র। তবুও তার জন্যি আনচান করে প্রাণ। তারে একঝলক না দেখলে ধূ ধূ মরুর রূপ ধারণ করে অন্তঃস্থল। ঝড় ওঠে। তুফানি ঝড়। যে ঝড়ে তোলপাড় সবটুকু। দিশেহারা হয়ে ওঠে কায়া। অস্বস্তি জাপটে ধরে আষ্টেপৃষ্ঠে। এ কেমন অদ্ভুদ পী”ড়নে পু ড়ে অন্তর! বইয়ের পাতা হতে মনোযোগ বিচ্ছিন্ন করে উন্মুক্ত বাতায়নে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলো কিশোরী। আঁধারিয়া চাদরে মোড়ানো গগণে তাকিয়ে গুণগুণ করে আওড়ালো,
‘ আমার একলা আকাশ
থমকে গেছে রাতের স্রোতে ভেসে,
শুধু তোমায় ভালবেসে।
আমার দিনগুলো সব
রঙ চিনেছে তোমার কাছে এসে।
শুধু তোমায় ভালবেসে। ‘
ভালোবাসা! চার বর্ণের জা দুকরী শব্দ কর্ণপাত হতে শিউরে উঠলো হৃদয়। তরঙ্গ বয়ে গেল হৃদয়ের অলিগলি! আসলেই কি এ ভালোবাসা নাকি ক্ষণিকের মোহমায়া!
চলবে.
[ এমপি সাহেব কি আসলেই রসালো? হুঁ 😜 ]