#মনের_অরণ্যে_এলে_তুমি
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_২৫ ( প্রথমাংশ )
” বাব্বাহ্! মায়ের আদুরে ধন এর পদধূলি পড়লো তবে?”
ব্যঙ্গাত্মক কণ্ঠে ভঙ্গ হলো মা ও ছেলের মধুর লগন। একরাশ ঘৃণা এসে অন্তরে স্থান করে নিলো। মায়ের ললাটে চুম্বন এঁকে উঠে দাঁড়ালো রাহিদ। ছেলেকে উঠতে দেখে পল্লবীও ভীতগ্ৰস্থ হয়ে উঠে দাঁড়ালেন। ওনার হৃদয়ে লুকায়িত আতঙ্কের ছাপ। রাহিদ মা’কে উষ্ণ আলিঙ্গন করে নম্র স্বরে বললো,
” আজ আসছি মা। নিজের খেয়াল রেখো। ”
” দাঁড়াও। ”
জহির সাহেবের কণ্ঠস্বরে অনিচ্ছা সত্ত্বেও দাঁড়ালো রাহিদ। এ লোকটার মুখ দর্শন করতে সে বিন্দুমাত্র ইচ্ছুক নয়। তাই তো ওনার অনুপস্থিতিতে মায়ের সঙ্গে একটু মধুরতম, স্নেহাতুর মুহূর্ত কাটাতে এসেছিল। এরমধ্যে যে এই লোকটা আকস্মিক হানা দেবে ভাবেনি। ওকে মুখ ফিরিয়ে দাঁড়াতে দেখে জহির সাহেবের অভিব্যক্তি পরিবর্তিত হলো। উনি নিঃশব্দে বসলেন সোফায়। পল্লবী ভয় ও সংকোচের মিশ্রণে দৃঢ় রূপে ছেলের বাম হাতটি আঁকড়ে ধরলেন। রাহিদ তা অনুধাবন করে মায়ের দিকে তাকালো। চোখের ইশারায় স্বাভাবিক থাকতে বললো। ছেলের কথামতো উনি স্বাভাবিক থাকতে পারছেন না। কেননা ওনার স্বামী নামক মানুষটির উপস্থিতি যে ওনাদের মা-ছেলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। রাহিদ কিঞ্চিৎ তাড়া দেখিয়ে বললো,
” কিছু বলতে চান? বলার থাকলে বলে ফেলুন। আমার হাতে অত ফ্রি টাইম নেই। ”
বিদ্রুপ করে হাসলেন জহির সাহেব।
” আচ্ছা? কি এমন রাজকার্য করবে শুনি? আছে তো শুধু ওই.. ”
রাহিদ ওনার দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। বাক্যটি অসমাপ্ত রেখে নিজেই বলে উঠলো,
” ইউজলেস কথাবার্তা রিপিটেডলি শুনতে ভালো লাগে না। আশা করি নতুন কিছু বলবেন। ”
রাশভারী কণ্ঠে জহির সাহেব বললেন,
” হ্যাডাম দেখাচ্ছো? ভুলে যেয়ো না এই মুহূর্তে তুমি কোথায় অবস্থান করছো। এটা আমার বাড়ি। ”
” আমার মায়েরও। আশা করি সেটা ভুলে যাননি। ”
অসন্তোষ প্রকাশ পেল ওনার চেহারায়,
” দিনদিন চরম বেয়াদব হয়ে যাচ্ছো। কার সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় ভুলে যাচ্ছো। ”
রাহিদ হাতঘড়িতে সময় দেখে নিলো। হাতে সময় কম। যেতে হবে। রাহিদ মায়ের দিকে একঝলক তাকিয়ে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো। জহির সাহেবের উদ্দেশ্যে বললো,
” আশা করি আপনার গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তা শেষ। আসছি। আই হোপ বুড়ো বয়সে ইবলি*শের রূপ ধারণ করা থেকে বিরত থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম। ”
মা’কে হালকা আলিঙ্গন করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল রাহিদ। পল্লবী অশ্রুসিক্ত নয়নে ছেলের গমন পথে তাকিয়ে। সাপের ন্যায় হিসহিস করে উঠলেন জহির সাহেব। বে!য়াদব ছেলে হয়েছে একটা।
•
পুব দিগন্তে উদিত হয়েছে দিনমণি। তার কিরণে আলোকিত বসুন্ধরা। মুক্ত বিহঙ্গের দল উড়ে বেড়াচ্ছে গগণে। আরশির সম্মুখে দাঁড়িয়ে হৃদি। হাতে তোয়ালে। সদ্য স্নাত রমণীর তনুয় লেপ্টে স্বল্প সিক্ত বসন। ভেজা চুল গড়িয়ে পড়ছে বিন্দু বিন্দু জলকণা। ভিজে যাচ্ছে মেঝে। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ আছে কি মেয়ের? সে তো ব্যস্ত ভেজা চুলে তোয়ালে চালনা করতে। ভেজা চুলের ভাঁজে ভাঁজে তোয়ালে ছুঁয়ে শুষে নিচ্ছে জল। গভীর চিন্তায় মগ্ন মেয়েটি। কি যেন এক তীক্ষ্ণ সূঁচ খুঁচিয়ে চলেছে অভ্যন্তরে। হিম হয়ে আসছে তনু। শুকিয়ে কাঠ গণ্ডস্থল। শুকনো ঢোক গিলে নিলো মেয়েটি। সে মুহূর্তে কক্ষে প্রবেশ করলো চৌধুরী সাহেব। তুষারের ন্যায় শুভ্রতা ছড়িয়ে পোশাকে। বাহিরে যাওয়ার জন্য পরিপাটি অবয়ব। ফোনালাপে লিপ্ত মানুষটি ব্যস্ত পায়ে কক্ষে প্রবেশ করলো। অগ্রসর হতে লাগলো ড্রেসিং টেবিলের ধারে। এখনো লক্ষ্য করেনি অর্ধাঙ্গীর শীতলতম আবেদনময়ী রূপ। ফোনালাপ সমাপ্ত করে পাঞ্জাবির পকেটে মোবাইল পুরে নিলো ইরহাম। ড্রেসিং টেবিলের সন্নিকটে পৌঁছাতেই ধক করে উঠলো বক্ষ পিঞ্জর। এ কেমন স্নিগ্ধ রূপে হাজির হয়েছে তার অর্ধাঙ্গিনী! যে স্নিগ্ধতা হৃদয়ের অলিগলি অনুভূতির বহ্নি শিখা প্রজ্বলিত করে চলেছে। বর্ধিত হচ্ছে হৃদস্পন্দন। পদযুগল থমকে গিয়েছে কিয়ৎক্ষণ পূর্বেই। স্নিগ্ধতায় মোড়ানো রমণীর স্নিগ্ধ শোভন রূপে সম্মোহিত হলো ইরহাম! ধীরপায়ে এগোতে লাগলো অমোঘ আকর্ষণে ব”শীভূত হয়ে। নৈঃশব্দ্যে উপস্থিত হলো স্ত্রীর পেছনে।
টুলের ওপর ভেজা তোয়ালে রেখে ভেজা চুলে একবার অঙ্গুলি চালনা করে নিলো হৃদি। ভাবনায় মশগুল মেয়েটি স্বামীর উপস্থিতি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ। তার এই অন্যমনস্ক আকর্ষণীয় রূপে বেসামাল হলো পৌরুষ চিত্ত। সিক্ত চুলের নে শা য় মত্ত হবার অভিলাষ জাগ্রত হলো অন্তরে। অন্যমনস্ক হৃদি আকস্মিক স্তব্ধ হলো! পুরুষালি দু’টো শক্তপোক্ত হাত পেছন হতে আঁকড়ে ধরেছে তার বাহুদ্বয়। থুতনি স্থাপিত হয়েছে ডান কাঁধে। স্তব্ধ নেত্র জোড়া আরশিতে নিবদ্ধ হয়ে চরম আশ্চর্যান্বিত হলো! উচ্চ স্বরে ধুকপুক ধুকপুক করে চলেছে হৃৎপিণ্ড। কাঁধে থুতনি ঠেকিয়ে রাখা মানুষটির নাসিকা ছুঁলো ভেজা চুলের একাংশ। কাঁধের ধারে ছড়িয়ে থাকা চুলের ভাঁজে ব”শীকরণ হলো প্রেমা”তাল চিত্ত! দৃঢ় রূপে আঁকড়ে ধরলো সঙ্গিনীর দু বাহু। আবেশিত রমণীর নেত্রযুগল নিমীলিত হলো। তার ভেজা চুলের সুবাসে মা”তাল প্রায় সঙ্গী। চশমা প্রদত্ত বাঁধা পেরিয়ে অর্ধাঙ্গীর কেশরাশি’তে বিমোহিত ইরহাম! অনুভূতির নতুনত্বে জাগতিক হুঁশ হারালো দু’জনে। কতটা সময় অতিবাহিত হলো জানা নেই। সহসা বিপ বিপ শব্দে চেতনা ফিরলো দু’জনের। একপ্রকার ছিটকে দূরে সরে গেল হৃদি। বক্ষদেশে হাত রেখে অনুভব করতে পারলো হৃদস্পন্দনের বেহাল দশা। এখনো কম্পিত তনুমন। উফ্! কি এক মা;দকতায় আচ্ছন্ন মুহূর্ত! অনুভূতির সাগরে তলিয়ে যাচ্ছিল দুজনা।
আস্তে ধীরে আড়চোখে ডানে ঘুরে তাকালো হৃদি। স্বামী নামক মানুষটি মোবাইলে আলাপণ করতে করতে কক্ষ হতে বেরিয়ে যাচ্ছে। দরজা পাড় হবার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে পিছু ঘুরে তাকালো ইরহাম। নয়নে মিলিত হলো নয়ন। ভীতগ্ৰস্থ হলো কোমল হৃদয়। দা”নবীয় দং শ ন অনুভূত হলো অন্তঃস্থলে। অবচেতন মেয়েটির অক্ষিকোল হলো সিক্ত। কেমন দুর্বোধ্য চাহনিতে তাকিয়ে থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো মানুষটি। বড় বড় কদম ফেলে প্রস্থান করলো। রমণীর কপোল ছুঁয়ে গড়িয়ে পড়লো এক ফোঁটা নোনাজল। নিজেই চমকালো হৃদি! এ অশ্রুপাতের কারণ কি? কেন অর্ধাঙ্গের বিদায়ে কাঁদছে হৃদয়! এ কিসের পূর্বাভাস!
.
দীর্ঘদিনের জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামীকাল ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন।’ অন্তিম মুহূর্তের ব্যস্ততায় কাটছে দলবলের সময়। মনোনীত প্রার্থীরা সুবাহ হতে রাত্রি শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত। ভোটারদের সমর্থন কুড়োতে তাদের কৌশলের শেষ নেই। ভিন্নধর্মী বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে চলেছে তারা। জয় করতে চাইছে জনগণের মন। ইরহামও তাদের ব্যতিক্রম নয়। দিনভর ব্যস্ত সময় অতিবাহিত হলো। যথাসময়ে ভোজন অবধি সারেনি মানুষটা। এতটাই ব্যস্ত সময় কাটছে। শান্তিতে শ্বাস ফেলাও এখন দুষ্কর। অন্যদিকে আজগর সাহেব! উনি প্রবীণ এক রাজনীতিবিদ। দুইবারের মন্ত্রী। স্বাভাবিক ভাবেই এক তরুণের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উনি অতটাও চিন্তিত নন। তবুও মন যে মানে না। ওই দু’দিনের তরুণের একের পর এক ভিন্নধর্মী কৌশল, ব্যক্তিত্ব, সততা এবং বুদ্ধিদীপ্ত মানসিকতা ওনাকে বারংবার দুশ্চিন্তায় ফেলে দিচ্ছে। তন্মধ্যে ঘটেছে আরো দু’টো অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতিকর কাণ্ড। যা সম্পর্কে অজ্ঞাত সাধারণ জনগণ। ও-ই দু’টো কাণ্ডে প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন আজগর সাহেব। তাই তো দু’দিনের পথের কাঁটাকে পথ হতে উপড়ে ফেলতেও কালক্ষেপণ করতে চাইছেন না। পথের কাঁটা উপড়ে ফেলার সঠিক সময় তবে চলেই এলো!
.
.
তমসাচ্ছন্ন রজনী। ঘড়ির কাঁটা তখন এক এর কাছাকাছি। মধ্যরাত। চারিদিক নিস্তব্ধ। ভেসে ভেসে শ্রবণেন্দ্রিয়ে পৌঁছাচ্ছে নিশাচরের কলবর। উত্তপ্ত দিন শেষে রাতের ঠাণ্ডা হাওয়া শরীরের পশম দাঁড় করিয়ে দেবার মতন। নিরিবিলি পথ ধরে হেঁটে চলেছে ইরহাম, সাহিল এবং তিনজন দলীয় কর্মী। আগামীকালের নির্বাচনী আলাপচারিতায় লিপ্ত পাঁচজন। দু পাশে দণ্ডায়মান দালান যেন দা-নবীয় ভঙ্গিতে শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে। স্ট্রিট লাইটের মৃদুমন্দ আলো ওদের দেহে পড়ছে। রাস্তার বুকে দৃশ্যমান হচ্ছে পাঁচ মানবের চলন্ত কৃষ্ণবর্ণ ছায়া। ভূতুড়ে হিমশীতল পরিবেশ। নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ মানুষটি ওদের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করছে। আর মাত্র স্বল্প দূরত্ব। এরপরই ইরহামের গাড়ি এবং মূল সড়ক। বিচ্ছিন্ন হবে ওদের পথ। যে যার গন্তব্যে রওনা হবে। ওদের পরিকল্পনা মাফিক পথচলায় আকস্মিক বাঁধা পড়লো। পাঁচ মানবের পথরোধ করে উপস্থিত হলো একটি জিপ গাড়ি। গাড়ির ফ্রন্ট লাইট সরাসরি সম্মুখে দণ্ডায়মান ইরহামের চোখে পড়লো। আকস্মিক আলোকরশ্মিতে ধাঁধিয়ে গেল চক্ষু। ডান হাতের উল্টো পিঠ চোখের ওপর রেখে তীব্র আলো হতে চক্ষু বাঁচালো সে। আস্তে ধীরে চোখের সামনে হতে হাত সরিয়ে ফেললো। চক্ষুতারায় দৃশ্যমান হলো একটি জিপ গাড়ি। আর সাত আটজনের মতো মুখোশধারী আগন্তুক। কপালে চিন্তার বলিরেখা পড়লো। সাহিল আস্তে করে এগিয়ে এসে ইরহামের কানে ফিসফিসিয়ে বললো,
” ভাই সুবিধার লাগছে না। ”
ইরহাম চোখের ভাষায় ওকে কিছু বুঝিয়ে দিলো। শঙ্কিত সাহিল মাথা নেড়ে পূর্বের স্থানে দাঁড়ালো। সহচর তিনজন একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। চোখের সামনে জিপ গাড়ি হতে একে একে নেমে এলো অজ্ঞাত মুখোশধারী আগন্তুকের দল। কৃষ্ণবর্ণ পোশাক পড়নে তাদের। মুখে অদ্ভুত মুখোশ লেপ্টে। চেহারা চেনার সম্ভবনা অতীব ক্ষীণ। হাতে ওদের ধারালো
অ স্ত্র। এদের আগমনের মূল হেতু বুঝতে অসুবিধা হলো না ইরহামের। ভীতিকর পরিস্থিতি একটুও কাবু করলো না তাকে। বরং অকুতোভয় বীরের ন্যায় শত্রুর মোকাবেলায় প্রস্তুত সে। নেতা গোছের একজন দু পাশে থাকা সঙ্গীদের ইশারা করলো। ইশারা পাওয়া মাত্রই
ক্ষি প্র গতিতে ছুটতে আরম্ভ করলো দু’জন মুখোশধারী। ধারালো অ স্ত্র হাতে ইরহামকে নিশানা করে ছুটে আসছে তারা। স্ট্রিট লাইট এবং জিপ গাড়ির ফ্রন্ট লাইটের সংমিশ্রনে এক অদ্ভুত আলোকছটা ছড়িয়ে। আক্রমণকারীর পানে তীক্ষ্ণ চাহনিতে তাকিয়ে ইরহাম। চক্ষু হতে চশমা খুলে পাঞ্জাবির পকেটে পুরে নিলো। সুদক্ষ ভঙ্গিতে গুটিয়ে নিলো পাঞ্জাবির স্লিভ। প্রস্তুত সে।
ধারালো অ স্ত্র হাতে আঘাত করতে উদ্যত হলো একজন। শিরদাঁড়া সোজা করে অকুতোভয় দৃঢ় চিত্তে দাঁড়িয়ে ইরহাম। যেই না লোকটি অতি সন্নিকটে হাতের নাগালে এলো অমনি চতুরতার সহিত আক্রমণকারীর চোয়াল বরাবর ডান হাতে হুক পাঞ্চ করলো ইরহাম। চোয়ালে আকস্মিক আঘাতে খেই হারিয়ে ফেললো লোকটি। দুর্বল হলো স্নায়ু। সে সুযোগে তাকে প্রতিহত করে দ্বিতীয় আক্রমণকারীর পাঁজরের খাঁচা বরাবর শক্তপোক্ত লা থ চালালো ইরহাম। ছিটকে দূরে পড়লো লোকটি। আর হাতের নাগালে থাকা লোকটির নাকে পড়লো মুষ্ঠিমেয় এক ঘু ষি। অপ্রত্যাশিত প্রতিরোধে চমকে গেল শত্রুপক্ষ! আরো দু’জন ছুটে এলো আঘাত করবার উদ্দেশ্যে। একজনের ঘাড়ে আঘাত করে দ্বিতীয় জনের লিভার বরাবর আঘাত হানলো চৌধুরী সাহেব।দু’জনেই দুর্বল হয়ে পড়লো। চেষ্টা করতে লাগলো আক্রমণ করার। সাহিল এবং সঙ্গী তিনজন প্রসন্ন চিত্তে রাস্তার এক পাশে দাঁড়িয়ে লাইভ ফাইটিং দেখছে। তাদের ‘ ভাই ‘ একা হাতেই জাস্ট ফাটিয়ে দিচ্ছে।
আর একজন পাশ হতে আঘাত করতে উদ্যত হলো। ইরহাম তার সোলার প্লেক্সাসে বসিয়ে দিলো এক হাতুড়ি সম ঘু ষি। কঁকিয়ে উঠলো সে লোক। সুদক্ষ ভঙ্গিতে মারাত্মক ‘ ক্রভ মাগা ‘ কৌশল অবলম্বন করে শত্রুদের একাই ধরাশায়ী করে ফেলছে বলিষ্ঠদেহী মানব। মরণা*স্ত্র নিয়ে উপস্থিত শত্রুর দল এখন নিজেরাই চোখের সামনে ম র ণ দেখছে। বলশালী চৌধুরীর একেকটি আঘাত তাদের বিধ্ব-স্ত করে চলেছে। অসীম যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে আহত লোকেরা। কেউ কেউ আহত শরীর নিয়েই আঘাত করবার চেষ্টায় লিপ্ত। এমনই ভাবে ঘটলো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। কাপুরুষের ন্যায় পেছন হতে ছু-রিকাঘাত করলো এক দু*র্বৃত্ত। শুভ্র পাঞ্জাবি ভেদ করে পিঠের মসৃণ ত্বকে আঘাত হানলো ছু রি। চামড়া চিঁ’ড়ে বেরিয়ে এলো র-ক্তকণিকা। আঁতকে উঠলো সাহিল এবং তিন সহচর!
” ভাই! ”
সাহিল ছুটে এলো। ইরহামকে ধরার পূর্বেই ইরহাম পিছু ঘুরে আঘাতকারীর শ্রবণ অঞ্চল বরাবর শক্তিশালী
ঘু ষি বসিয়ে দিলো। অতঃপর পাঁজরের খাঁচায় এক
লা থ। ছিটকে দূরে গিয়ে ল্যাম্পপোস্টে আঘাত পেল লোকটি। ইরহাম বাঁ হাতে পিঠের ক্ষত স্পর্শ করার বৃথা চেষ্টা চালালো। যন্ত্রণায় বিকৃত হয়ে আসছে মুখশ্রী। সাহিল ত্বরিত এগিয়ে এসে পকেট হতে রুমাল বের করে ‘ভাই’ এর ক্ষতস্থানে চেপে ধরলো। তিন সহচর এবার কুপোকাত করতে লাগলো দুর্বল শত্রুদের। ঠিক সে মুহূর্তে…
চলবে.
[ কি হতে চলেছে ঠিক সে মুহূর্তে? আ হ ত আজ পাঠকদের ইরু সাহেব 🥺 ]