#মনের_অরণ্যে_এলে_তুমি
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_২৬
নিকষকৃষ্ণ রজনী। নগরীর বুকে চলছে আনন্দ উদযাপন। ফলাফল ঘোষণার পর বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস প্রকাশ পাচ্ছে যত্রতত্র। বিভিন্ন স্থানে সদ্য বিজয়ী এমপি ও তার দলবল বিজয় উদযাপন করছে। শুধুমাত্র কয়েকটি আসনের ফলাফল এখনো প্রকাশিত হয়নি। আশা করা যাচ্ছে সেগুলো খুব শীঘ্রই প্রকাশিত হতে চলেছে।
নগরীর অন্যতম বড় এক কেন্দ্রে উপস্থিত দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। চৌধুরী এবং আজগর সাহেব। উত্তেজনা, উৎকণ্ঠা বিরাজমান তাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। আজগর সাহেবের বিপি হাই। ওনার কয়েকজন চ্যা লা ওনাকে সামলাতে ব্যস্ত। অন্যদিকে ইরহাম? নির্বিকার অভিব্যক্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে। বেলাশেষে ক্লান্তি পরিলক্ষিত হচ্ছে চেহারায়। হালকা পবনে শিরশির করে উঠছে কায়া। দু হাত পেছনে বেঁধে ধীরপায়ে হেঁটে চলেছে সুঠামদেহী, সুশ্রী মানবটি। ওর সহচরেরা প্রচুর চিন্তিত। শেষ মুহূর্তের গণনা স্থির নয়। কখনো আজগর সাহেব কখনোবা এগিয়ে ইরহাম। শেষমেষ কে হতে চলেছে এই আসনের বিজয়ী?
অন্ধকার আকাশের দিকে মুখ করে পেছনে দু হাত বেঁধে দাঁড়িয়ে ইরহাম। বুকে বহুদিনের লালিত স্বপ্ন। চক্ষুতারায় ভেসে উঠছে এক দেশনায়ক। জনগণের মাঝে সে পরিচিত ‘বঙ্গবন্ধু’ নামে। হাঁ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাবনা উদিত হয়েছে মানসপটে। বঙ্গবন্ধু এবং তার স্বদেশ প্রেম। ওনার যুগান্তকারী সাত ই মার্চের সে-ই ভাষণ। যু”দ্ধ বিধ্ব-স্ত দেশে স্বাধীনতা পরবর্তী সোনার বাংলা গঠনের অসংখ্য পদক্ষেপ। ওই একটি মানুষ ই তো তার আদর্শ। যারে আইডল হিসেবে মেনে এসেছে শৈশব হতে। হতে চেয়েছে একজন পরোপকারী, দেশের সেবক। সে ‘এমপি’ নামক ট্যাগ নিয়ে ঘোরার জন্য নির্বাচনী লড়াইয়ে নামেনি। লড়াইয়ে নেমেছে একটি সুন্দর, ক”লুষতা বিহীন দেশ গঠনের স্বপ্নে। আমাদের দেশনায়কের অপূর্ণ সোনার বাংলা গঠনের উদ্দেশ্যে। সে কোনো মহামানব কিংবা ‘নেতা’ ট্যাগের অধিকারী হতে নয় বরং জনগণকে আঁধারে দিশারী হয়ে পথ দেখাতে এসেছে। মাতৃভূমির সেবায় সদা নিয়োজিত তার তনুমন। দেশমাতৃকার সেবা করতে সে কখনো কার্পন্য করবে না। সততার সঙ্গে সেবা করে যাবে। নিঃস্বার্থ ভালোবাসা দেবে দেশমাতৃকা রে। বিনিময়ে চাইবে না সোনা-রূপা কিংবা কোনো ক্ষ”মতাশালী গদি। সে এমপি নয় জনগণের বন্ধু রূপে বেঁচে থাকতে চায়। পূরণ করতে চায় বুকে থাকা অগণিত স্বপ্ন। এতটুকুই তার চাওয়া। আদৌও পূর্ণ হবে কি সে স্বপন!
.
” ভাই জিতে গেছে। আলহামদুলিল্লাহ্! ”
আঁধার দিগন্তে তাকিয়ে মনে মনে দোয়া পড়ছিল মানুষটি। স্মরণ করছিল সারা জাহানের মালিক, মহান স্রষ্টাকে। সে মুহূর্তে কোলাহলে মুখরিত পরিবেশে উচ্চ স্বরে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো সাহিলের উচ্ছ্বাস! থমকে গেল ইরহাম। কর্ণ গহ্বরে প্রবেশ করে চলেছে সমর্থকদের আনন্দমেলা। স্তব্ধ মানুষটির নেত্রজোড়া ধীরে ধীরে নিমীলিত হলো। একফোঁটা তপ্ত জল গড়িয়ে পড়লো নেত্র বেয়ে। মহান রব এর নিকটে অনবরত শুকরিয়া আদায় করলো মন। পেছন থেকে ছুটে এসে জাপ্টে ধরলো সাহিল। পিঠের যন্ত্রণা ভুলে মুচকি হেসে চক্ষু মেলে তাকালো ইরহাম। সমর্থকদের মাঝে চাপা পড়লো সদ্য জয়ী এমপি সাহেব! হাই প্রেশারের রোগী আজগর সাহেব হতভম্ব নয়নে এদিকে তাকিয়ে! অবিশ্বাস ছড়িয়ে ওনার শিরায় শিরায়। এ কি হয়ে গেল! তার এত বছরের সাজানো গোছানো ক্ষ”মতাশালী সিংহাসনে আজ নতুন রাজা! সব শেষ। সব।
.
আবেগতাড়িত হয়ে টিভির পর্দায় তাকিয়ে মালিহা। ওই তো ওনার পুত্রের হাসিমুখের দেখা মিলছে। মুচকি হাস্যরত মানুষটির গলায় বেশ কয়েকটি পুষ্পমালা জড়িয়ে দিলো সাহিল এবং দলীয় নেতা-কর্মী। মিষ্টি মুখ করালো একজন মাঝবয়সী সহচর। চলছে আনন্দ উদযাপন। এ দৃশ্য দেখে শাড়ির আঁচলে মুখ লুকিয়ে কেঁদে উঠলেন মালিহা। এজাজ সাহেবও কিঞ্চিৎ আবেগপ্রবণ হয়ে তাকিয়ে। শেষমেষ ওনার একমাত্র পুত্রের দেশসেবক হবার পথচলা শুরু হয়েই গেল! হৃদি বিমুগ্ধ চাহনিতে তাকিয়ে টিভির পর্দায় দৃশ্যমান স্বামীর অবয়বে! গলায় পুষ্পমালা জড়িয়ে তার। অধরে লেপ্টে মুগ্ধকর হাসি। আলিঙ্গন করে চলেছে সহচরদের। সমর্থকদের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছে বারংবার। গর্বিত হলো নারীমন। স্বামীর সফলতা, তার বিজয়ে শুকরিয়া আদায় করলো রবের। নোনাজলে ভরে গেল নয়ন জোড়া। সহসা থমকে গেল। ক্যামেরা বরাবর তাকিয়ে হৃদয়কাড়া হাসি উপহার দিলো সদ্য নির্বাচিত এমপি সাহেব। তার ও-ই মোহনীয় হাসির রেখা যেন অর্ধাঙ্গীর হৃদয় বরাবর সরাসরি ভালোবাসার তীর বি দ্ধ করলো। যেন তার উদ্দেশ্যে এই হাসিমুখ! লজ্জা মিশ্রিত হেসে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো হৃদি। ইশ্! মানুষটি এমন করে হাসি উপহার দিলো.. উচ্চ ধ্বনিতে ধুকপুকানি হচ্ছে হৃদযন্ত্রে। পাছে কেউ শুনে না নেয়! শুনলো না কেউই। ইনায়া তখন দাদি এবং রায়নাকে আলিঙ্গন করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে।
.
সদর দরজা পেরিয়ে ‘ আনন্দাঙ্গন ‘ এর আনন্দমেলায় প্রবেশ করলো চৌধুরী। বরাবর সামনে দাঁড়িয়ে মমতাময়ী মা। মুচকি হেসে মায়ের পানে এগিয়ে আসছে ইরহাম। তুষারের ন্যায় শুভ্রতা ছড়িয়ে তার দেহে। শুভ্র পাঞ্জাবি পরিহিত একমাত্র পুত্র এগিয়ে আসছে মায়ের পানে। মালিহার চোখের সামনে ভেসে উঠলো পুরনো এক সোনালী স্মৃতি। নয় বছর বয়সী ইরহাম দু হাত ছড়িয়ে সদর দরজা দিয়ে ছুটে আসছে। নৈকট্যে এসে ঝাঁপিয়ে পড়লো মায়ের বুকে। উত্তেজনা প্রকাশ করে বললো,
” আম্মু আম্মু! আমিও বঙ্গবন্ধু হবো। নেতার মতো। ”
আজ আর নয় বছর বয়সী ইরহাম নেই। সময়ের পরিক্রমায় সে এখন ত্রিশের কোঠা পেরোনো এক দামাল ছেলে। সুঠামদেহী ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন পুরুষ। ছেলের মুখপানে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন মালিহা। ওনার চোখে অশ্রু, ঠোঁটে হাসির রেখা। মা’কে দৃঢ় রূপে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে নিলো ইরহাম। চূড়ান্ত রূপে আবেগের বাঁধ ভেঙে গেল। হুঁ হুঁ করে কেঁদে উঠলেন মালিহা। দু হাতে জাপটে ধরলেন ছেলেকে। কাঁদতে লাগলেন অবিরাম। মায়ের পিঠে হাত বুলিয়ে শান্ত করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে ইরহাম। এমন হৃদয়ছোঁয়া দৃশ্যে হৃদির চোখেও জমলো নোনাজল। ইনায়া খুশিমনে এই দৃশ্য মোবাইলে ক্যামেরা বন্দী করে নিলো। উপস্থিত সকলের চোখেমুখে খুশির ঝিলিক।
.
নিজ কক্ষে বিছানায় বসে হৃদি। নোনাজলে ঝাপসা প্রায় অক্ষি জোড়া। চোখেমুখে পরিতৃপ্তির ছাপ। মানসপটে বারংবার ভেসে উঠছে একান্ত জনের অবয়ব। তার হাসিমুখ, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব! এই তো ক’দিন পূর্বের কথা। ইরহাম পত্নী রূপে এ গৃহে প্রবেশ হলো তার। দেখতে দেখতে বিবাহিত জীবনের প্রায় চার মাস শেষের পথে। মাত্র চার মাসেই হৃদয়ের আপনজন হয়ে উঠলো মানুষটি। কবে কখন কি করে হৃদয়ের বদ্ধ দ্বার উন্মোচন করে প্রবেশ করলো জানা নেই। জানা আছে শুধু ‘ তারা দু’জনা একে অপরের ‘. অধর প্রসারিত হলো ভাবনায়। আসলেই তারা একে অপরের! ছেদ পড়লো ভাবনায়। দরজায় দৃষ্টি নিবদ্ধ হতেই বিমোহিত হলো নারীমন! অবশেষে স্বামীর আগমন হলো! মনে পড়লো তবে সহধর্মিণীকে! ইরহামের ঝলমলে চেহারা, পরিশ্রান্ত রূপ অবলোকন করে মুহুর্তের মধ্যেই সুপ্ত অভিমান পলায়ন করলো। হৃদয়ের অলিগলি উড়াল দিলো রঙবেরঙের প্রজাপতি। প্রজাপতি ভালোবাসার! সম্মোহিতের ন্যায় বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো হৃদি। একে অপরের পানে অনিমেষ নেত্রে তাকিয়ে তারা। ধীরপায়ে অগ্রসর হতে লাগলো। কমতে লাগলো মধ্যকার দূরত্ব। শ্রান্ত মানুষটি দিবারাত্রি ছোটাছুটি শেষে ফিরেছে আপন নীড়ে। একান্ত মানবীর এতটুকু ছোঁয়া পেতে তৃষ্ণার্ত অন্তর। অর্ধাঙ্গিনী কি একটুখানি কাছে আসবে! কোমল স্পর্শে দূরীকরণ করবে সকল অবসাদ! তার খুশিতে সামিল হয়ে আরো মধুরতম করবে এ লগন! করবে কি?
তার হৃদয়ে লুকানো অভিলাষ পূরণ হবার পথে। চঞ্চল পায়ে ছুটে এলো হৃদি। দু হাতে স্বামীকে উষ্ণ আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে ঠাঁই নিলো তার প্রশস্ত বক্ষপটে। পেলব দু’টো হাত আঁকড়ে ধরলো পিঠ। মৃদু আর্ত মানুষটির মুখনিঃসৃত হলো। ব্যান্ডেজের ওপর বিঁধে গেছে নখ।
র ক্ত বের হতে চলেছে কি! ভেতরকার যন্ত্রণা, অস্থিরতা গোপন করে এ মধুরতম মুহূর্তে মনোনিবেশ করলো ইরহাম। শক্তপোক্ত পেশিবহুল দু হাতের বেষ্টনীতে বন্দী হলো কোমল কায়া। নিমীলিত হলো দু’জনার আঁখি পল্লব। স্বামীর বুকের মধ্যিখানে মিশে মেয়েটি। ইরহামের মুখ লুকিয়ে সঙ্গিনীর কাঁধে। পিঠের মসৃণ ত্বকে ডেবে শক্তপোক্ত দু হাত। শিহরিত মেয়েটি আস্তে ধীরে সময় নিয়ে স্বামীর বুকের বাঁ পাশে ছোট্ট এক উষ্ণ পরশ এঁকে দিলো। মৃদু কেঁপে উঠলো কি পৌরুষ চিত্ত! বিড়াল ছানার ন্যায় বক্ষদেশে মিশে থাকা মেয়েটি মৃদু স্বরে জানান দিলো মনের কথা,
” আলহামদুলিল্লাহ্ ফর এভরিথিং! অভিনন্দন এমপি সাহেব! সফল হোক আপনার আগামীর পথচলা। ”
দৃঢ় হলো বাঁধন। আর কিচ্ছুটি বললো না কেউ। নৈঃশব্দ্যে অতিবাহিত হতে লাগলো এ মুহুর্ত। একে অপরের সংস্পর্শে খোঁজ পেল স্বর্গীয় সুখানুভূতির!
.
সমাপ্তির পথে রাত। নগরীর একপ্রান্তে যখন বিজয় উল্লাস তখন কোনো এক প্রান্তে ক্রো’ধের মারাত্মক বহিঃপ্রকাশ। হাতের নাগালে থাকা শোপিস, আসবাবপত্র সব লণ্ডভণ্ড করে ফেলছে ষাটোর্ধ্ব মানুষটি। ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে চ্যা”লারা। দেখছে তাদের নেতাজীর পরাজিত সিংহের ন্যায় আ ক্রো শ। চেঁচিয়ে চলেছে মানুষটি। উঁচু স্বরে জানান দিচ্ছে,
” না। নাহ্! এ হতে পারে না.. ”
আবারো জোরালো শব্দ। টেবিলের কাঁচ ঝনঝনানিতে ভেঙে গুঁড়িয়ে পড়লো মেঝেতে। কেটে গেল হাত। তবুও থেমে নেই আজগর। আজ রাতভর চলবে এই তা ণ্ড ব। হাতের নাগালে থাকা সব হবে ধ্বং-স। বিনষ্ট।
.
জনশূন্য কক্ষে নিশ্চিন্তে উদোম দেহে বেরিয়ে এলো ইরহাম। ওয়াশরুমে সাবধানতার সহিত ফ্রেশ হয়েছে। ব্যান্ডেজে পানি লাগানো নিষিদ্ধ। তাই বড় সাবধানে ফ্রেশ হতে হয়েছে। পানির সংস্পর্শে এখন সতেজতা রন্ধ্রে রন্ধ্রে। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে দ্রুত হস্তে ভেজা চুলে তোয়ালে চালাতে লাগলো ইরহাম। তার মনে লুকায়িত শঙ্কা শেষমেষ সত্যি হয়েই গেল। মিষ্টি মুখে কক্ষে প্রবেশ করলো হৃদি। অস্ফুট স্বরে মিষ্টি খাওয়ার ফাঁকে কিছু বলতে যাচ্ছিল মেয়েটি। তবে তা আর হলো না। থমকে গেল আকস্মিক! আতঙ্কিত নেত্র জোড়া নিবদ্ধ হলো পিঠের ক্ষতস্থানে।
” ই-রহাম! ”
ব্যস্ত পায়ে ছুটে এলো হৃদি। স্তব্ধ হয়ে গেল ইরহাম। দ্রুততার সহিত অর্ধ ভেজা তোয়ালে দিয়ে পিঠের ক্ষতস্থান লুকানোর বৃথা চেষ্টা চালালো। যা দেখার তা তো দেখা হয়েই গেছে। নৈকট্যে এসে দাঁড়ালো মেয়েটি। ইতিমধ্যে সিক্ত হয়ে উঠেছে আঁখি যুগল। পেশিবহুল ডান বাহুতে আলতো করে হাত রেখে ভেজা কণ্ঠে থেমে থেমে শুধালো,
” এস-ব কি করে হলো? ”
কণ্ঠ কেঁপে কেঁপে উঠছে। ভেতরকার ভয়, অস্থিরতা স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাচ্ছে। অনবরত শুকনো ঢোক গিলছে মেয়েটি। মিষ্টি আঁটকে পড়েছে খাদ্যনালীতে। দমবন্ধকর অবস্থা। কষ্ট হচ্ছে শ্বাস প্রশ্বাসে। সঙ্গিনীর এমন ভীতসন্ত্রস্ত, দুঃখী অবস্থা হৃদয় মানতে নারাজ। আলতো করে বাঁ হাত টেনে হৃদিকে কাছে আনলো ইরহাম। বুকের মাঝে মিশিয়ে নিলো বউপাখিটা’কে। স্বামীর ডান হাতে আলিঙ্গনে আবদ্ধ মেয়েটি। আস্তে ধীরে স্বাভাবিক হলো। অভিমানী হৃদি চুপটি করে মিশে রইলো বুকের ভেতর। তার স্বামীর এই দুরবস্থা, ক্ষত! আর সে কিনা এ বিষয়ে অজ্ঞাত! কেন? কেন বললো না তাকে? কেন চতুরতার সহিত লুকিয়ে গেল বিষয়টি? সে কি এতটুকু জানার অধিকার রাখে না! কেন লুকালো? ভীত রমণী আলতো করে সাবধানী ভঙ্গিতে স্বামীর পিঠের কার্নিশে হাত বুলাতে লাগলো। তার অশ্রু কণা লেপ্টে যাচ্ছে প্রশস্ত উদোম বক্ষে। ক্ষণে ক্ষণে কম্পিত হচ্ছে কায়া। সবটা অনুধাবন করছে ইরহাম। তবে কোনোরূপ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো না। হতে দিলো সবটুকু। অভিমানী কন্যার দীঘল কেশে হাত বুলিয়ে প্রশান্তি অনুভব করাতে লাগলো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শান্ত হয়ে এলো মেয়েটি। মুক্ত হলো স্বামীর বাহুবন্ধন হতে। দৃষ্টি নত করে সরে গেল। মনোনিবেশ করলো বিছানা ঠিক করতে। বড় শ্বাস ফেলল ইরহাম। অভিমানী পাখির অভিমান এখন ভাঙাবে কি করে? হুঁ?
চলবে.
[ বাব্বাহ্! অবশেষে সমাপ্ত হলো নির্বাচন। এই নির্বাচনী লড়াই লিখতে গেয়ে আমার তো অবস্থা কাহিল। রাজনৈতিক বিষয়ে অতি সংকীর্ণ জ্ঞান হলে যা হয় আর কি। কোনোরূপ ভুলত্রুটি হলে মার্জনা করবেন। আর হাঁ। এমপি সাহেবের বিজয়ে মিষ্টি পাঠাতে ভুলবেন না যেন। মিষ্টিমুখ করবো সকলে। ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য। আসসালামু আলাইকুম। ]