মিশেছো_আলো_ছায়াতে #Writer_Sintiha_Eva #part : 55

0
180

#মিশেছো_আলো_ছায়াতে
#Writer_Sintiha_Eva
#part : 55

🍁🍁🍁

ঘুমের মাঝে পাশে হাতড়ে সিমথিকে না পেয়ে আদি ধরফড়িয়ে উঠে বসে। চারপাশে চোখ বুলায়। না সিমথি কোথাও নেই। তবে কি আদি এতোক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলো। সিমথি এখনো সুস্থ হয়নি। কথাগুলো মাথায় আসতেই আদির বুক মুচড়ে উঠে। কিন্তু পরক্ষণেই ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলে উঠে নাহ ওর সিয়াজান ওর পাশেই ছিলো। এসব ভাবার মাঝেই সিমথি রুমে আসে। আদিকে বসে থাকতে সিমথি হেসে এগিয়ে যায়।

সিমথি : ঘুম ভাঙ্গলো তোমার।

আদি কথার জবার না দিয়ে বিছানা থেকে নেমে সিমথিকে ঝাপটে ধরে। আচমকা আদির এহেন আচরণে সিমথি থমকায়। আদির বুক উঠানামা করছে। সেটা সিমথি স্পষ্ট টের পাচ্ছে। কি হলো। ভয় পেলো নাকি।

সিমথি : কি হলো আদি।

আদি : কোথায় ছিলে তুমি। আমি উঠে পায়নি তোমায়।

সিমথি : নিচে গিয়েছিলাম। একটু পরই মায়েরা আসবে।

আদি : ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম জান।

সিমথি ভ্রু কুঁচকায়। খানিক পর আদির কথা সারমর্ম বুঝে হাসে তৃপ্তির হাসি। একটা সময় এই মানুষ টার মুখে একটু ভালোবাসার কথা শোনার জন্য সিমথি হাসফাস করতো আর এখন প্রতিক্ষণে মানুষ টা ওকে ভালোবাসে। এতোটা ভালো কবে বাসলো আদি ওকে৷

সিমথি : ভয়ের কি আছে। আমি বলেছি তো আর হারাবো না। উপরওয়ালা ব্যতিত আপনার কাছ থেকে কেউ আমাকে দূরে সরাতে পারবে না।

আদি : তোর আগে আমার শ্বাসরোধ হোক। তুই ব্যতিত আমি একদন্ড সুখ পায়না।

সিমথি : উফফস আদি। এবার ছাড়ো। ওয়াশরুমে যাও। নিচে যাবো। সবাই ব্রেকফাস্টের জন্য বসে আছে।

আদি সিমথিকে ছেড়ে সরে দাঁড়ায়। সিমথি হেঁসে আদি তাড়াতাড়ি নিচে আসতে বলে পাশ কাটিয়ে বিছানা ঘুচিয়ে নিচে যায়। আদি শিস বাজাতে বাজাতে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।

সিমথি ততক্ষণে নিচে এসে আদির মা-বাবার আওয়াজ শুনতে পায়। আহা কতদিন হুহু কতগুলো মাস পেরিয়ে গেলো মায়ের সেই ঘ্রাণ পাওয়া হলো না। সিমথি পা টিপে টিপে ধপাস করে আদির মায়ের পাশে বসে পড়ে। আচমকা এমন হওয়ায় আদির মাসহ সবাই হকচকিয়ে তাকায়। সিমথিকে দেখে আদির মায়েরা হতবাক হয়ে যায়। শাওনের মা হতভম্ব দৃষ্টিতে শাওনদের দিকে তাকায়। সবার মুখ হাসি হাসি।

আদির মা : সিমথি ( অস্পষ্ট সুরে)

সিমথি : হা আমি। সারপ্রাইজড্ কেনো খুশি হওনি। ( ভ্রু কুঁচকে)

আদির বাবা : তুই মানে কোথা থেকে আসলি মানে কবে ইয়ে মানে

আদির বাবার সব তালগোল পাকিয়ে যায়। তা দেখে সিমথি হাসে।

সিমথি : থামো বাবা। কালই আমি কোমা থেকে ফিরেছি।

শাওনের বাবা : আমাদের জানালি না যে। শাওন তোরা ও তো কিছু বলিস নি।

শাওন : তোমাদের আদরের মেয়ে না করেছে।

ইশানের মা : হাউ ফাজিল হয়েছে গার্লটা সী।

ইশানের মায়ের কথায় সবাই হেঁসে দেয়। আদির মা সিমথির গালে হাত দিয়ে শুকনো মুখটার দিকে তাকায়।

আদির মা : কতটা শুকিয়ে গেছিস, কালোও হয়ে গেছিস। বাড়ি চল শুধু বেশী বেশি খাবি।

সিমথি : কেনো কেনো কালো বউ পছন্দ হচ্ছে না। কি কপাল শ্বাশুড়ির আমার গায়ের রঙ নিয়ে সমস্যা।

সিমথির কথায় আরেক দফা হাসির রোল পড়ে যায়। আদির মা রেগে গিয়ে হেসে সিমথিকে জড়িয়ে ধরে। সিমথি ও আদির মায়ের বুকে মুখ গুঁজে মায়ের ঘ্রাণ নেয়।

সিড়ির পাশ থেকে আদি এসব দেখে প্রশান্তির হাসি দেয়। ওর জীবনটা আবারো রঙিন হবে। ওর জীবনে বসন্ত এসে গেছে। এখন চারদিকে কেবল রঙের খেলা।

রাত আটটা বাজে। আর কিছুক্ষণ পরেই গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হবে। ছেলেরা সবাই এসে গেলেও। মেয়েদের এখনো আসার সময় হয়নি। এদিকে আয়াশ বারংবার সিঁড়ির দিকে চোখ দিচ্ছে। কি আজব এতো সাজা লাগে। আয়াশ কি ওকে আজ নতুন দেখবে নাকি। কতবড় ফা/জি/ল। দুপুর থেকে ঘায়েব তারউপর এখনো আসার নাম নেই। আয়াশ বিরক্তির শ্বাস ফেলে পাশে তাকাতেই মাগো বলে চেঁচিয়ে দূরে সরে যায়। বুকে হাত চেপে জোরে জোরে শ্বাস নেই। আয়াশের অবস্থা দেখে আদিরা সবাই শব্দ করে হেসে দেয়। আয়াশ তেতে উঠে, ,

আয়াশ : এভাবে ভূতের মতো তাকিয়ে ছিলি কেনো।

সায়ন : না দেখছিলাম

আয়াশ : কি

রিক : আমার বউ পাগল বন্ধুকে।

রিকের কথায় আয়াশ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায়। রিক মাছি তাড়ানোর ভান করে পাশে সূর্যের কাধে হাত রেখে ভাবুক স্বরে বলে উঠে,,,,

রিক : আমি ভাবছি আমার বন্ধু সবগুলো এতো বউ পা/গ/ল কিভাবে।

রিকের কথায় ওর বন্ধুমহল তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায়।

আদি : মানে কি বলতে চাইছিস।

রিক : ভাই তুই আর মানে মানে করিস না। দেখলাম তো সাতমাসে তোর দেবদাস রূপ।

আদি : পিন্চ মারবি না। আমার জায়গায় থাকলে বুঝতি।

রাদিফ : ভাই আমাদের বুঝাবুঝি বাদ দেন। আগে নিজের টা বুঝে নেন

আদি : মানে

রাদিফ : ভাবী যদি জানে ভাবীর বারণ স্বত্বেও আপনি সিগারেট ছুঁয়েছেন তবে কি হবে এটা ভাবুন।

রাদিফের কথা আদি এবার শুকনো ঢোক গিলে। কথাটা ঠিক। তবে ও যদি না বলে কিংবা ওরা না বললে কিভাবে জানবে। ও তো আর সিমথির সামনে খাবেনা।

আদি : তোরা না বললে ও কিভাবে জানবে।

_ কি জানাজানির কথা বলছেন।

আচমকা সিমথির কন্ঠস্বরে সবাই চমকে যায়। আদি ঘাবড়ে পেছনে তাকায়। যতটা ভয় নিয়ে পেছনে তাকিয়েছিলো তার জায়গায় হানা দেয় একরাশ মুগ্ধতা। নীল শাড়িতে দারুণ লাগছে মেয়েটাকে। আদির থমকানো দৃষ্টি দেখে আয়াশ, তুহিনরা হাসে। কিন্তু সিমথির দৃষ্টি এখনো ওর কোলে থাকা তুরান ( তন্ময়ের ছেলে) এর দিকে। কারো আওয়াজ না পেয়ে সিমথি চোখ তুলে তাকায়। সবাই কে চুপ দেখে বিরক্তিকর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। হাতের ডায়পার টা তন্ময়ের হাতে ধরিয়ে দেয়। অতঃপর তুরানকে তুহিনের কোলে দিতে দিতে বলে,,,,

সিমথি : ওর ডায়পার চেঞ্জ করে দে। ড্রেস টা বদলে অন্য ড্রেস পড়িয়ে দিস। ভিজিয়ে ফেলেছে। দেরী করিস না যেনো ঠান্ডা লেগে যাবে।

তন্ময় : আমি কেনো সিনহা কোথায়।

তন্ময়ের কথায় সিমথি হালকা তেঁতে বলে,,

সিমথি : ছাঁদে নাচছে। নাচবি তুই তাহলে উপরে যা।

তন্ময় : আরে চেঁতে আছিস কেনো।

সিমথি : তোদের সবার কেনো মনে হচ্ছে আমি চেতে আছি। আশ্চর্য।

তুহিন : তো এভাবে কথা বলছিস কেনো।

সিমথি : তুই সিগারেট খেয়েছিস।

আচমকা সিমথির এহেন প্রশ্নে সবাই হকচকিয়ে যায়। সিমথি এখনো উত্তরের আশায় চেয়ে আছে। তুহিন হালকা কাশে। কে খেলো আর কে ফাঁসলো।

তুহিন : আ আমি কেনো এসব খাবো। আর তোর কেনো মনে হলো।

সিমথি : আরে আমি যখনই তোদের কাছে আসি তখনই সিগারেটের স্মেল পাচ্ছি। কে খায় এসব। সামনে পাই একবার থাপ্পড়ে সোজা করে দেবো।

সিমথির কথায় আদির হাত অটোমেটিক নিজের গালে চলে যায়। বাকিরা ও হালকা করে কেশে উঠে।

সায়ন : হতে পারে কোনো বৃদ্ধ লোক খাচ্ছে।

সিমথি : বৃদ্ধ রা সবাই উপরে বাট স্মেল টা আসছে নিচ থেকে। স্পেশালি তোদের কাছ থেকে।

তুহিন : তুই জানিস আমাদের মধ্যে কে খায়।

তুহিনের কথায় সিমথি এবার এমনভাবে তাকায় তা দেখে তুহিন তন্ময়ের পেছনে চলে যায়। সিমথি বিড়বিড়িয়ে গালি দেয়। পেছন ফিরে চলে আসতে নিলে আদিকে গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুঁচকায়।

সিমথি : আপনার আবার গালে কি হলো।

সিমথির কথায় আদি হকচকায়। গাল থেকে হাত নামিয়ে এলোমেলো দৃষ্টি নিক্ষেপ করে।

আদি : ক কই কিছু না তো।

সিমথি শব্দ করে শ্বাস ছেড়ে উপরে যাওয়ার জন্য উদ্যত হয়। যেতে যেতে চুড়ির রিনিঝিনি আওয়াজে আদি বুকে হাত দিয়ে সোফায় বসে পড়ে। বাকিরা হাফ ছেড়ে বাঁচে।

তন্ময় : দুলাভাই বুকে ব্যথা করছে নাকি।

তন্ময়ের মুখে দুলাভাই শুনে আদি ধপ করে চোখ মেলে তাকায়। চোখের সামনে ভেসে আসে কয়েক জড়ো ফাজিল দৃষ্টি।

আদি : তোরা থাক আমি একটু আসছি।

ইফাজ : কোথায় যাচ্ছো।

আদি যেতে উত্তর করে,,,

আদি : আপাতত আমার তোমার বোনকে প্রয়োজন। প্রেম প্রেম পাচ্ছে। এখন সেটার জন্য বউ রূপী প্রেমিকার বড্ড প্রয়োজন।

সবাই হতবিহ্বল হয়ে যায় আদির স্পষ্ট জবাবে। সায়ন আড়ষ্ট স্বরে বলে,,,

সায়ন : শা/লার এই জন্যই আমি কোনো বন্ধু কে বোন জামাই বানাতে চাইনি। বোনের জামাই স্বরূপ বন্ধুর সাথে কেউ ফাজলামি করে কিভাবে। কিন্তু শালা আমার বোনকেই বিয়ে করলো। আবার আমার সামনে আমার বোনের সাথে ওর প্রেমের সঙ্গা দিচ্ছে।

রোদেলা : কি চাই দুলাভাই

আদি : আপাতত বউ চাই শ্যালিকা।

আদির কথায় সিমথি ভ্রু কুঁচকে তাকায়। পার্লারের মেয়েগুলো হেসে দেয় নিঃশব্দে।

মেঘা : এখন বউ পাবেন না। বউ ব্যস্ত আছে।

আদি : ভাবী হয়ে এমন করবেন না। তাহলে বাসর রাতে আর জামাই রুমে পাবেন না।

আদির কথায় মেঘা হকচকিয়ে যায়। আয়নার আদির প্রতিবিম্বের দিকে প্রশ্নবোধক চাহনি দেয়। তা দেখে আদি হাসে।

আদি : বন্ধুর বউ তো ভাবীই হয় তাই না। দেখেন না আয়াশ মাঝে মাঝে সিয়াকে বউমণি বলে।

মেঘা মিনমিনে স্বরে বলে,,

মেঘা : তাই বলে আপনি ভাবী বলবেন।

আদি : হ্যাঁ। আর শ্যালিকা, ভাবী, সমুন্দি বউ গণ দের বলছি সাজগোছ তাড়াতাড়ি করেন। বাইরে বেচারা বর এবার বউ না দেখার শোকে জ্ঞান হারাবে।

আদির কথায় মেঘা লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে যায়। বাকিরা মেঘাকে নিয়ে মজা উড়ায়। আদি এই ফাঁকে সিমথিকে টেনে বাইরে নিয়ে আসে। সিমথি মুখ খুলতে নিলে আদি সিমথির মুখ চেপে ধরে।

আদি : হুশশ কথা বলবে না।

আদি সিমথিকে নিজে সোজা রুমে যায়। দরজা লাগিয়ে সিমথির মুখ ছেড়ে দেয়।

সিমথি : এটা কি হলো।

আদি : কি হলো।

সিমথি : এভাবে টেনে আনলে কেনো।

আদি : মন চাইলো।

আদির উত্তরে সিমথি শ্বাস ছাড়ে। এমনিতেই ওকে রুমে আসতে হতো। কানে কোনো দোল পড়া হয়নি। মেঘা না খেয়াল করলে আর পড়া হতোও না। সিমথি আদিকে পাশ কাটিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। কানে ঝুমকো দিয়ে চেক করতে থাকে। আদি দেয়ালে হেলান দিয়ে সিমথির দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায়। গায়ে নীল শাড়ি জড়ানো। শাড়ির আঁচল হাতে রাখা, হাতে নীল চুড়ি। মুখে হালকা প্রসাধনী, ঠোঁটে গোলাপি লিপস্টিক। গলায় আদির দেওয়া একটা প্যানডেড। এতো হালকা সাজেও কাউকে এতটা সুন্দর লাগে বুঝি। সিমথি কাজের ফাঁকেই আদির দিকে তাকায়। আদির তাকানো দেখে সিমথির ভেতর নড়ে উঠে। তবুও তা বাইরে প্রকাশ না করে নিজেকে স্বাভাবিক রাখে। কানে ঝুমকো পড়ায় মনোনিবেশ করে। কিন্তু আদির নেশাগ্রস্ত চাহনিতে সিমথি ঝুমকো পড়তেও হাত কাঁপা আরম্ভ হয়। একপর্যায়ে হাত থেকে ঝুমকো পড়ে যায়। আদিকে এগিয়ে আসতে দেখে সিমথির শরীর অসার হয়ে আসে। আদির দৃষ্টি সিমথিকে বাধ্য করছে লোমকূপে শিহরণ জাগাতে। আদি সিমথি কিছুটা কাছে আসতেই সিমথি এলোমেলো পায়ে দরজার দিকে অগ্রসর হয়। হাতে হেঁচকা টানে সিমথি দেয়ালে আদির হাতের মাঝে আটকে যায়।

আদি : পালাচ্ছো।

সিমথি : প পা পালাবো কক কেনো। স সরো ন নিচচে যাবো।

আদি : কার জন্য এভাবে সেজেছো সিয়াজান।

সিমথি নিশ্চুপ। কার জন্য সেজেছে মানে কি। এই ছেলে নিজেও পা/গ/ল হবে আমাকে ও পাগল বানাবে।

আদি : তোমার জন্য সব রঙ বয়কট ঘোষণা করা উচিত। এতোটা মাতাল না করলে হয়না। শেষে আমার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এতোটা সুন্দর হওয়া তোমার উচিত হয়নি। যেই রঙ গায়ে জড়াও তাতেই আমি শেষ হয়ে যায়। আমার তো মনে হয় হাজারো ছেলে তোমার দিকে তাকায় মুগ্ধতা নিয়ে। আমার ভীষণ জেলাস হয়। আমি তোমাকে কারো সাথে শেয়ার করতে চাইনা। কিন্তু ছেলেগুলো মুগ্ধতা নিয়ে কেনো তোমায় দেখবে। তোমায় সর্বাবস্থায় কেবল আমি দেখবো। আমার সম্পত্তির উপর অন্যের হস্তক্ষেপ আমি বুকে পাথর চেপে সহ্য করি। তোমায় যদি লুকিয়ে রাখা যেতো তবে বুকের ভেতর একটা ঘর বানাতাম সেখানে সংগোপনে রেখে দিতাম। কিন্তু আমি হেল্পলেস। নিজেকে ভীষণ অসহায় লাগছে সিয়াজান। ইচ্ছে করছে শাড়িটা খুলে ফেলি। অন্যকোনো শাড়ি গায়ে জড়িয়ে দেয় বাট আই নো ভেরী ওয়েল সেই রঙে ও তোমায় নজরকারা সুন্দর লাগবে।

সিমথি চোখ খিঁচে বন্ধ করে আছে। আদির ঘোরলাগা কন্ঠে কথাগুলো সিমথির বুকের ভেতর ধপাস ধপাস করতে যথেষ্ট। সিমথির লাজুক মুখ টা দেখে আদি শুকনো ঢোক গিলে। গলার তিলে নজর পড়তেই নিয়ন্ত্রণ হারায় নিজের উপর। গলা শুকিয়ে আসে। মুখ ডুবায় সিমথির গলার তিলে। সিমথি শ্বাস থেমে যায়। আচমকা গলায় চিনচিনে ব্যথায় চোখের কার্নিশে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।

সিমথি : ল লাগছে আ আদি।

বেশ খানিক পর আদি মুখ উঠিয়ে সিমথির দিকে তাকায়। চোখ খিঁচে রেখেছে। অধর জোড়া ছোঁয়ায় মুখের সর্বত্র। অতঃপর আবারো দৃষ্টি রাখে সিমথির মুখশ্রীতে। এবার দূরত্ব কম। সিমথির লাজুক ভাব গুরুতর হয়। এভাবে কেউ তাকায় নাকি। শত বউ হোক। লজ্জা লাগেনা বুঝি। লাজুক হেঁসে সরে আসতে নিলে শাড়ির আঁচলে টান লাগায় থেমে যায়। আদির শাড়ির আঁচল হাতে পেছিয়ে সিমথিকে নিজের দিকে টান দেয়। সিমথি হুমড়ি খেয়ে আদির সামনে দাড়ায়। মিনিট খানে পরও আদির কোনো কথা না শুনে সরে আসতে নিলে পেটের উন্মুক্ত স্থানে শীতল হাতের স্পর্শে সিমথি র সর্বাঙ্গ কেঁপে ওঠে। সিমথি চোখ বুঁজে নেয় শ্বাস গলায় পুনরায় আটকে যায়। পেটে চাপ অনুভূত হতেই সিমথি আদির বুকে পিঠ ঠেকায়। সিমথির কাঁপন আদি স্পষ্ট টের পাচ্ছে। চুলে নাক ডুবায়। আচমকা বাইরে সাউন্ড বক্সে বেজে ওঠে,,,

” তুমি ছুঁয়ে দিলে হা, আমার কি যে হয়ে যায়! ”

তৎক্ষনাৎ সিমথি ছিটকে সরে আসে। পেছন না ফিরে দরজা খুলে বেরিয়ে যায়। আদি সিমথির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হেঁসে দেয়। নিজেও নিচে পা বাড়ায়।

মেঘাকে এনে স্টেজে বসানো হয়। এতোক্ষণে বউকে দেখে আয়াশ বেচারা স্বস্তি পায়। বলা তো যায় যেমন অসুর নামক শ্বশুর কখন আবার মত ঘুরিয়ে দেয়। মেঘা বসতেই আয়াশ চাপা স্বরে বলে,,,

আয়াশ : এতোক্ষণ লাগে সাজতে। আমি কি নতুন দেখছি নাকি তোমায়।

মেঘা : কনে সাজে তো নতুনই

আয়াশ : তো কি। এতো সাজা লাগবে কেনো৷ আমি কতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছিলাম জানো।

আয়াশের অস্থিরতায় মেঘা লাজুক হাসে। ছেলেটা এমনই এই রাগ তো এই ঠিক। কিছুক্ষণের মাঝেই হলুদ ছোঁয়ার অনুষ্ঠান শুরু হয়। একে একে বড়রা হলুদ লাগিয়ে দেয়। তারপর শুরু হয় ছোটদের। মুহুর্তেই দুজনের শরীর হলুদে গোসল করে যাওয়ার যোগাড় হয়। আয়াশ, মেঘা অসহায় দৃষ্টিতে সবার দিকে তাকায়। ওদের এমন দৃষ্টি দেখে সবাই শব্দ করে হেসে দেয়।

আদি : মনে পড়ে ভাই আমার বিয়ে তে কি করেছিলি।

আয়াশ : শা/লা শোধ তুললি।

আদি : কিছুটা সেরকম।

হঠাৎ করেই অনুষ্ঠানের মাঝে আদি চারপাশে সিমথিকে খুঁজে। সেসময় যে রুম থেকে বের হলো এখনো কথা হয়নি দুজনের। আদি চারপাশে ভালোভাবে দেখে না কোথাও নেই। আশ্চর্য একটএ আগেই তো হলুদ ছোয়ালো কিছুক্ষণের মাঝে কোথায় গেলো।

চলবে,,,,,

( অনেকেই আদি-সিমথির রোমান্স দেখতে চেয়েছিলেন তাদের জন্য আজকের স্পেশাল পর্ব। ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here