যেদিন_আমি_থাকবো_না #লেখিকা_ইভা_আক্তার এবং #লেখিকা_তাসফিয়া_জামান #পর্ব_৩

0
188

#যেদিন_আমি_থাকবো_না
#লেখিকা_ইভা_আক্তার
এবং
#লেখিকা_তাসফিয়া_জামান
#পর্ব_৩

——————————-
সওদাগর পরিবারের সকলে রাতের খাবার খাচ্ছিল। নীল এবং নিতু কিছু একটা নিয়ে কথাকে বলছিল আর হাসাহাসি করছিলো। তখনি জিহাদ সওদাগর গলা খাঁকারি দিয়ে বলতে লাগলেন,

– তোমাদের জন্য একটা খুশির খবর আছে।

জিহাদ সওদাগরের কথায় সকলের মনে ভাবনা জাগে।
– কি খুশির খবর ড্যাড? (নিতু)
– সিঙ্গাপুর থেকে একজন আসছে (জিহাদ সওদাগর)

জিহাদ সওদাগরের কথায় নিতু লাফিয়ে উঠলো।
– আর ইউ সিরিয়াসলি ড্যাড? তারমানে আমার ভাবি আসছে?

নিতুর কথায় সকলে খুশি হলেও নীলের মুখ একদম চুপ হয়ে গেলো। নীল যে মনে মনে প্রচন্ড বিরক্ত হচ্ছে তা তার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
– জাইমার সাথে কিন্তু এখোনো আমার বিয়ে হয় নি মনে রাখিস নিতু (নীল)
– তো কি হয়েছে। একদিন না একদিন তো হবেই। আচ্ছা বাবা জাইমা আপু কখন আসছে? (নিতু)
– কাল সকাল ১০ টায় (জিহাদ সওদাগর)
– বাহ বেশ ভালোই (নিতু)
– আর নীল জাইমাকে ড্রপ করতে তুমি যাবে কিন্তু? (জিহাদ সওদাগর )
– সরি বাবা। আমি পারবো না। আমার কালকে ইউনিভার্সিটি আছে (নীল)
– কাল ভার্সিটি না গেলে কি হয় না নীল?(আফিফা সওদাগর)
– না মম। তুমি জানো আমি ভার্সিটি মিস দেই না। আমি পারবো না কালকে জাইমাকে আনতে যেতে (নীল)

জিহাদ সওদাগর খাবার টেবিল ছেড়ে উঠতে উঠতে বললেন,
– এটাই আমার শেষ কথা। জাইমাকে ড্রপ করে তারপর তুমি ভার্সিটিতে যাবে। এখানে আমাদের প্রেজটিজের ব্যাপার আছে।

জিহাদ সওদাগর চলে গেলে নীল টেবিলের উপর সজোরে বারি মেলে বলে,
– অসহ্য।

————————-
নিজের বেড রুমে বসে তানিশা টিভি দেখছিল আর ডিনার করছিলো। আর ঠিক সেই সময়ে তার মোবাইলে কল আসে তানিশা এবং তিশার বড় ভাই তুহিন। এই পরিবারে একমাত্র তুহিনই এমন যে কিনা তানিশা ওর এডপ্ট বোন এটা জানা সত্বেও ওকে প্রচন্ড ভালোবাসে। এমনকি তিশার থেকেও বেশি ভালোবাসে। তানিশা কলটা রিসিভ করে বললো,

– হ্যালো ভাইয়া কি খবর?
– গুড তোর?
– আমিও ভালো। ডিনার করছিস নাকি?
– হুম।
– নিজের বেড রুমে?
তানিশার এবার বেশ শান্ত স্বরে বললো,
-হু
তানিশার কথায় তুহিন আর কিছু বললো না। সে জানে আমেরিকা চলে আসার পর থেকে তানিশা আর ডাইনিং টেবিলে ওদের সাথে খেতে বসে না।
– আচ্ছা তো বল তোর কি লাগবে?
– হটাৎ এই প্রশ্ন করছো যে? ওয়েট তুমি কি তাহলে আসছো?
– আরে না বোকা। কাজের প্রচন্ড চাপ থাকায় আসতে পারছি না। এখন বল তোর কি লাগবে?
– যা চাইবো তা দিতে পারবে তো?
– আমার বোন চাইবে আর আমি দেব না এটা কি করে সম্ভব। জাস্ট বল তোর কি লাগবে?
– বাবা এবং মার ভালোবাসা।

তানিশার কথায় তুহিন এবার স্তব্ধ হয়ে গেলো। কি বলা উচিত এখন তার? এতো অপমানের পরও কেনো তানিশা এরকম নিকৃষ্ট পরিবারের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য ছুটছে?
– আচ্ছা বাদ দাও। আইসক্রিম লাগবে। দেবে নাকি?
– অবশ্যই দেব কেনো না। আমি তোর জন্য আইসক্রিম পাঠিয়ে দেব কেমন?
– তুমি কবে আসবে ভাইয়া? তোমাকে ছাড়া বড্ড একা লাগে এই পরিবারে।
-আসবো রে বোন। খুব শিগ্রই আসবো। এবার তাহলে রাখি কেমন? গুড নাইট।
– গুড নাইট ভাইয়া।

ফোনটা রেখে ব্যাগ গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো তুহিন। সে ঠিক করেছে সকল কাজ ঠিক করে রেখে সে একেবারেই বাংলাদেশ চলে আসবে।

———————
সকাল ১০ টা ৫। এয়ারপোর্টের সামনে দাঁড়িয়ে প্রচন্ড বিরক্তিকর মুখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে নীল। এই দুনিয়ার সবচেয়ে বিরক্তিকর মানুষটা হচ্ছে জাইমা। এসেই শুরু করবে তার ন্যাকা ন্যাকা কথা। আর সারাটাক্ষন গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকবে। কেনো যে বাবা ছোটো বেলায় এই রকম একটা মেয়ের সাথে আমার এনগেজমেন্ট করিয়ে রেখেছিলো কে জানে? পৃথিবীতে কি মানুষের এতোই অভাব ছিলো নাকি? যদি জানতাম আমার বিয়ে এরকম ন্যাকা মেয়ের সাথে হবে তাহলে পনেরো বছর বয়সেই আমেরিকা থেকে ওকে আংটি না পড়িয়েই পালিয়ে আসতাম।
একা একা এভাবে বকবক করার মাঝেই “নীল” নামে কারে মুখ থেকে ডাক দেবার শব্দ পেলো নীল। সামনে তাকাতেই নীল দেখতে পেলো হাটুর উপরে একটা শর্ট টপস পড়ে ওর দিকেই আসছে জাইমা। এই মেয়ের ড্রেসের মতোই তার ঢং। জাইমা এসেই হুট করে নীলকে জড়িয়ে ধরে গালে কিস করে বসলো। নীল তাড়াতাড়ি করে জাইমাকে সরিয়ে দিয়ে বললো,
– এই এই কি করছো কি তুমি হ্যা। এরকম পাব্লিক প্লেসে এসব করতে লজ্জা লাগলো না।
– লজ্জার কি হলো হানি। তোমাকে দেখলেই তে আমার নেশা ধরে যায়। অনেক বেশি হ্যান্ডসাম হয়ে গেছো তুমি। তোমার উপর যেনো কারো নজর না পড়ে।
– প্লিজ জাইমা। আমার এসব মোটেও পছন্দ না। তাই পরের বার থেকে আমাকে টাচ করার আগে দশবার ভেবে নেবে ।
– ঠিক আছে বুঝলাম । এখন না হয় টাচ করতে দিচ্ছ না । বিয়ের পর কি করবে দেখা যাবে ।

জাইমার কথায় নীল আর কিছু বললো না। নীলের সমস্ত চেহারায় বিরক্তিকর ভাব ফুটে উঠেছে । তাই সে জাইমাক বললো,
– সামনের কালো গাড়িতে গিয়ে বসো ।
– ঠিক আছে চলো।
জাইমা নীলের সামনে সামনে হাঁটছিলো আর তখনই নীল তার গাল ভালভাবে ঘষলো যেখানে জাইমা কিস করছিলো ।
– ওয়াক থু । বিরক্তিকর।

গাড়িতে গিয়ে নীল বসলো ড্রাইভিং সিটে আর জাইমা বসলো ওর পাশে। জাইমা নীলের দিকে তাকিয়ে বললো,
– আচ্ছা নীল আমরা এখন কোথায় যাচ্ছি?
– তোমাকে বাড়িতে দিয়ে এসে আমি ভার্সিটিতে যাবো ।
– কি? আজকে আমি এসেছি আর আজকেও তুমি ভার্সিটি যাবে ?
– আমি ক্লাস মিস দেই না ।
– ঠিক আছে । তাহলে আমিও যাবো তোমার সাথে।
– একদমই না ।
– কিন্তু কেনো ?
– তুমি আমার সাথে ভার্সিটি যাবে না ।
– না প্লিজ এমন করো না । আমি না তোমার হবু বউ।
– জাস্ট সেটআপ ।

নীলের ধমকে জাইমা কান্নার ভান ধরলো । জাইমার এই নাটকগুলোর কারণেই মূলত নীল ওকে দুচোখে সহ্য করতে পারে না। নীল জানে এখন জাইমা বাড়তে গিয়ে নীলের বাবার কাছে হাজারটা বিচার করবে। তাই নীল বাধ্য হয়ে বললো,
– ঠিক আছে আমি তোমাকে আমার ভার্সিটি নিয়ে যাবো।

নীলের কথায় জাইমা খুশিতে হাত তালি দিতে শুরু করলো । মূলত জাইমার টার্গেট হচ্ছে ভার্সিটি গিয়ে তানিশাক জব্দ করার । প্রতিবার জাইমা বিদেশ থেকে এসে নীলের ভার্সিটি একবার হলেও যায় তানিশাকে জব্দ করার জন্য। কিন্তু প্রতিবারই তানিশা ওকে কোনো না কোনো ভাবে লজ্জা দেয় । তাই এবার জাইমা ফুল কোর্স নিয়ে এসেছে কি করে ওই তানিশাকে উচিত শিক্ষা দিবে ।
অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী জাইমা । বয়স নীল এবং তানিশার থেকে কম হলেও মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি ওদের থেকে দুই গুণ বেশি । জিহাদ সওদাগরের বন্ধু আহনাফ খানের একমাত্র মেয়ে জাইমা । মূলত আহনাফ খান তার মেয়েকে জিহাদ সওদাগরের টাকার জন্যই নীলের পেছনে লাগিয়ে দিয়েছে । ছোট বেলায় নীল ওর পরিবারের সাথে আমেরিকা থাকতো । আর তখনই আহমদ খান তার মেয়ের সাথে নীলের বিয়ে দেবার জন্য জিহাদ সওদাগরকে প্রস্তাব দেয় । জিহাদ সওদাগর নিজেও রাজি হয়ে যান এই প্রস্তাবে। আর তখনই পনেরো বছর বয়সের নীল এবং তেরো বছর বয়সী জাইমার এনগেজমেন্ট হয় । প্রায় জাইমা বাংলাদেশে আসতো নীলের বাড়িতে । আর তখন থেকেই জাইমার উপর নীলের বিরক্ত লাগা শুরু হয় । বিরক্তির কারণ জাইমার ঢং। নিজের নেকা কান্না দিয়ে জাইমা সবাইকে হাত করে নিয়েছে সেটা নীল ভালো করেই বুঝে গেছে । কিন্তু নীল এত সহজে গলবে না । আজ পর্যন্ত নীলের হাতে কেউই সেই এনগেজমেন্টের আংটি দেখে নি । নীলের বাবা নীলকে সেই প্রশ্ন করলে নীল সেটা এড়িয়ে চলে যায় । নিজের বাবার আত্মসম্মান রক্ষা করতে নীল তার অপছন্দের মানুষকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে । নীল মাঝে মাঝে ভাবে নেকা সভাব তো তানিশারও আছে । কিন্তু নীলের তানিশার এই বাচ্ছামো সোভাব কেনো ভালো লাগে ? কেনো তানিশার জন্য তার অন্যরকম ফিলিং কাজ করে ?

ভার্সিটিতে সকলে কেম্পাসে বসে নীলের অপেক্ষা করছিলো । আর তখনই নীলের গাড়ি ভার্সিটির ভেতরে ঢুকে । নীল গাড়ি থেকে নামার পর সকলে অবাক হয়ে যায় জাইমাকে দেখে । সকলের মুখেই বিরক্তিকর ভাব উঠে জাইমাকে দেখে । জাইমা প্রায় কয়েকবার ভার্সিটিতে আশায় সকলে জাইমা ভালো করেই চেনে । নীল সোজা এসে তানিশার পাশে বসলো । আইরিন অভিকে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলো ,
– এই মেয়ে এখানে কি করছে ?
– আমি কি করবে জানবো?

অভির কথায় আইরিন ওকে কনুই দিয়ে আঘাত করলো । জাইমা নীলের পিছে এসে দাড়িয়ে বললো,
– আচ্ছা আমি কথায় বসবো ?
– এখানে চেয়ারের অভাব নেই । যেটা ভালো লাগে সেটা নিয়ে এসে বসো (আইরিন)

আইরিনের কথায় জাইমা রেগে গেলেও নিজেকে শান্ত করলো । তখনই জাইমার নজর পড়ে অভির দিকে । জাইমা জানে যে অভি হচ্ছে আইরিনের বয়ফ্রেন্ড। জাইমা অভির দিকে তাকিয়ে বললো ,
– অভি ভাই প্লিজ একটা চেয়ার নিয়ে আসেন না ।

জাইমার কথায় অভি উঠতে তানিশার ওর পায়ে লাথি দেয় যেটা আইরিন এবং অভি দুজনই বুঝতে পারে । ফলে অভি খানিকটা জোরে “আ ” করে উঠে ।
– কি হয়েছে অভি ভাই ?(জাইমা)
– কিছু না । পা মচকে গেছে (অভি)
– ইসস কি বলো অভি । তাহলে তো অভি চেয়ার আনতে পারবে না ।একটা কাজ করো জাইমা । তুমি নিজে গিয়ে তোমার চেয়ারটা আনো (তানিশা)

তানিশা এবং বাকি সবার চাল জাইমা বেশ ভালো করে বুঝতে পেলেও নিজেকে কন্ট্রোল করে একটা চেয়ার নিয়ে এসে নীল এবং তানিশার মাঝখানে চেপে বসলো । এতে তানিশা প্রচন্ড বিরক্ত হলেও মুখ ফুটে কিছু বললো না ।
– কি হচ্ছে জাইমা (নীল)
– কি হবে ?
– এত জায়গায় থাকতে এখানে কেনো বসেছো ?
– আমার হবু হাসব্যান্ড এর পাশে আমি বসবো না তো কি অন্য কোনো মেয়ে বসবে ?

জাইমার কথায় নীল আর কিছু বললো না । যতই যাচ্ছে জাইমার কথা নীলকে ততই বিরক্তটিতে ফেলছে । জাইমা বসেছে নীল এবং তানিশার একদম মাঝখানে । তানিশা বুদ্ধি করে চেয়ার নিয়ে ঠেলে জাইমার একদম কাছে চলে আসে । যায় ফলে জাইমা বিরক্ত হয়ে চেয়ারটা ঠেলে নিয়ে নীলের কাছে যায় । তানিশা আবারও চেয়ার ঠেলে যাইমার কাছে যায় । তারপর জাইমাও চেয়ার নিয়ে নীলের কাছে যায় । এভাবে তানিশা চেয়ার ঠেলার সময় জাইমাও সাথে সাথে চেয়ার উঠাতে গিয়ে ঠাস করে নিচে পড়ে যায় । জাইমার কান্ডে সকলে হো হো করে হাসতে শুরু করে । তানিশা যে ইচ্ছে করে কাজটা করেছে সেটা সকলেই বুঝে গেছে । ব্যাপারটা নীলও বুঝে যাওয়ার পরেও ও নিজেও হাসতে শুরু করলো । আর তানিশা নিজের হাসি আটকে জাইমাকে বললো ,

– সরি সরি । এসো উঠো।

তানিশা কথাটা বলেই জাইমার দিকে হাত বাড়ালে জাইমা বলে ,
– তুমি এটা ইচ্ছে করে করেছো তাই না ?
– বারে আমি কেনো ইচ্ছে করে করবো ?তোমার দোষ । আমি শুধু তোমার সাথে গল্প করার জন্য তোমার দিকে এগোচ্ছিলাম । কিন্তু তুমি তো আমার থেকে দূরে সরে যেতে যেতে পড়ে গেলে । এখানে আমি ইচ্ছে করে কিভাবে এমনটা করলাম তুমিই বলো?

তানিশার কথায় জাইমা কিছু না বলে ধীরে ধীরে উঠলো । সকলে যখন দেখলো জাইমা জামায় কাদা লেগে গেছে । তখন ওরা না চাইতেও আরো জোড়ে জোড়ে হাসতে লাগলো । জাইমা এবার প্রচন্ড রেগে বললো,
– সেটআপ ।

জাইমার চিৎকারে তানিশা বললো,
– আচ্ছা বায় ক্লাস শুরু হয়ে যাবে যেতে হবে ।
বলেই তানিশা দ্রুত সেখান থেকে চলে যায় ।

তানিশার দেখাদেখি নীল ওর পিছে চলে যায় । একসময় আইরিন এবং অভি দুজনে সেখান থেকে চলে গেলে জাইমা সেখানে একা বসে থেকে সজোরে টেবিলে আঘাত করে বলে,
– তোমাকে আমি ছাড়বো না তানিশা । সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগে তোমার একটা ব্যবস্থা করে তবেই আমি যাবো ।

ক্লাস শেষ হতেই তানিশা নীলকে না বলেই উঠে যেতে নিলে নীল বলে,
– কথায় যাচ্ছিস তানিশা? আজকে সারাটা ক্লাস একবারও আমার সাথে কথা বলি না । তুই কি রাগ করে আছিস আমার উপর ? বিশ্বাস কর জাইমাকে আমি ইচ্ছে করে ভার্সিটি নিয়ে আসি নি ।
– তুই ভুল বুঝছিস নীল । আমি তোর উপর রাগ করে নি। আর জাইমাকে নিয়ে আমি কেনো রাগ করবো ? তাছাড়া ও তোর হবু ওয়াইফ । ওকে তুই ভার্সিটি নিয়ে আসবি নাকি না সেটা তোর পার্সোনাল ব্যাপার । আর এখন আমি গণিত ক্লাসে যাবো । আমার মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট ক্লাস । নাও বায় ।

তানিশা সেখান থেকে চলে গেলে নীল সেই ক্লাসেই বসে থাকে । জাইমাকে যে ওর ফ্রেন্ড সার্কেলের কেউ পছন্দ পছন্দ করে না সেটা ওর ভালো করেই জানা আছে । নীল মাথায় হাত দিয়ে বসে ছিল আর তখনই ক্লাসে ঢুকে তিশা । তিশাকে দেখে নীলের মেজাজ আরো গরম হয়ে যায় ।
– হেই নীল ? তোমাকেই খুঁজছিলাম সারা ভার্সিটিতে । আর তুমি এখানে একা বসে ?
নীল কিছু না বলে উঠে দাড়িয়ে বলে,
– বায় । মুড ভালো নেই ।

তিশা নীলকে আটকানোর জন্য ক্লাসের বাইরে যেতেই জাইমার সাথে ওর ধাক্কা লাগে ।
– এই মেয়ে চোখে দেখতে পাও না নাকি ? (তিশা)
– আমি চোখে দেখতে পাই না নাকি তুমি পাও না হে ? দেখছো যে ক্লাসে ঢুকছিলাম আর তুমি অমনি ধাক্কা দিলে । যত্তসব (জাইমা)

কথাটা বলেই জাইমা ক্লাসে ঢুকে যায় । আর এদিকে তিশা জাইমার দিকে তাকিয়ে জাইমার পোশাক দেখছিল । বাংলাদেশের মতো একটা দেশে এরকম পোশাকের মেয়ে খুব কমই দেখা যায় যার কিনা হাঁটু পর্যন্ত জামা আর প্যান্ট।

চলবে,,,,,💙

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here