দ্বিতীয়_ফাগুন #পর্ব_সংখ্যা_৫ #লেখিকা_Esrat_Ety

0
549

#দ্বিতীয়_ফাগুন
#পর্ব_সংখ্যা_৫
#লেখিকা_Esrat_Ety

১৫
“হ্যালো”
_এই তুই ফোন দিয়েছিস কেনো আমাকে? ফোন রাখ !

মাইনুলের ধমকে কেঁপে ওঠে মেঘলা। তার সমস্ত শরীর কাঁপছে। কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,”তুমি এভাবে কথা বলছো কেনো আমার সাথে? ”
_কিভাবে কথা বলবো তোর সাথে? বেয়াদব কোথাকার। তুই আমাকে আর ফোন দিবি না।
_আমি করেছি টা কি একটু বলবে তো ! তোমরা সবাই কেনো আমার সাথে এমন করছো। মাইনুল আমি তোমার বাচ্চার মা হতে যাচ্ছি,একটুও মায়া কি হচ্ছে না আমার উপর তোমার?
_হ্যা সেজন্যই তো তোকে এখনো রেখেছি নয়তো কবে তিন তালাক দিয়ে তোকে….
_মাইনুল…. এসব কি বলছো তুমি?
কান্নায় ভেঙে পরে মেঘলা।
মাইনুল বলে,”কেনো তোর বোন ও তো বললো বাচ্চাটা বের হলে তোকে আমার থেকে ছাড়িয়ে নেবে। আর তুই এখনো আমার মায়ের কাছে ক্ষমা চাসনি কেনো? এত্তো তেজ কেনো তোদের? ভালো শিক্ষা তো তোদের নেই। অবশ্য তোদের তো দোষ নেই,দোষ তোদের বাপ-মায়ের!”
মাইনুলের কথার পিঠে কোনো কথা বলে না মেঘলা, অঝোর ধারায় তার চোখ দিয়ে যন্ত্রনা ঝরে পরছে। হঠাৎ করেই পেটের মধ্যে চিনচিনে ব্যথা অনুভূত হয় তার। পেটে হাত দিয়ে বসে থাকে সে। মাইনুল আরো কিছুক্ষণ মেঘলাকে কথা শুনিয়ে ফোন কেটে দেয় । অশ্রুসিক্ত দুটি চোখ নিয়ে ঘরের এককোণে চুপ করে বসে থাকে মেঘলা।
আয়েশা সিদ্দিকা ঘরের দরজায় এসে দাঁড়ায়। তার ইচ্ছা করছে মেয়েটির মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দিতে। কিন্তু মেঘলা কখনোই সেই অধিকার তাকে দেয়নি। এই মেয়েটির জন্য তার আলাদা রকমের মায়া। প্রথম জীবনে,প্রথম স্বামীর সংসারে আয়েশা সিদ্দিকা ঠিক এভাবেই নিগৃহীত হতো। কোথাও যেনো তার সেই ফেলে আসা জীবনের সাথে সে মেঘলার বর্তমান জীবনের বেশ মিল খুঁজে পায়।

১৬

রাশেদুজ্জামান একবার তাশরিফের দিকে তাকাচ্ছে, একবার রোদেলাকে দেখছে। দুজনেই তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তারপর তাশরিফের দিকে দৃষ্টি স্থির রেখে কর্কশ কন্ঠে বলে ওঠে,”আপনি বলতে চাইছেন আপনি ইচ্ছা করে তাকে সাহায্য করেন নি? এর পেছনে কারন?”
_তেমন কিছুই না স্যার। একটু বিজি ছিলাম আমি, ইন্টারন্যাশনাল ব্র্যান্ড গুলোর ভাউচার দেখছিলাম। উনি আমার কাছে সাহায্য চেয়েছে সেটা আমার মাথা থেকেই বেরিয়ে গিয়েছিলো। নেক্সট টাইম থেকে এরকম হবে না। আই প্রমিস।

রোদেলা তাশরিফের দিকে তাকায়। মনে মনে সে বলতে থাকে,”আমাকে হেনস্থা করে এখন তার ভরপাই করতে এসেছে ! নাটকবাজ পুরুষ মানুষ।”

রাশেদুজ্জামান নিজের চেয়ারে বসতে বসতে বলে,”এটা কেমন কথা তাশরিফ হাসান। আপনি তো এতোটা আন প্রফেশনাল না। জুনিয়র কলিগদের শিখিয়ে পড়িয়ে না নিলে কোম্পানির কাজ এগোবে কি করে? ”
_সরি স্যার। আমাকে আমার ভুল শুধরে নেওয়ার একটা সুযোগ দিন
প্রমিজ করছি। নিজের বেস্ট দেবো।

রাশেদুজ্জামান একবার রোদেলাকে দেখে। তারপর বলে,”ঠিকাছে। কালকের মধ্যে কাজটা কম্প্লিট করে দিন দু’জনে মিলে। তারপর দেখছি।”

_ইয়েস স্যার!
বলেই তাশরিফ রোদেলার দিকে তাকায়। রোদেলা একপলক তার দিকে তাকিয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। তাশরিফ মনে মনে হাসে,” মিস মেজাজি এখন কি না আপনার সাথে কাজ করতে হবে আমার ! কি আশ্চর্য ব্যাপার।”

কেবিন থেকে আগে তাশরিফ বের হয়। তার হাতে কিছু ফাইল। তার পেছনে গুটি গুটি পায়ে বের হয় রোদেলা। কেবিনের বাইরে যারা মজা দেখবে বলে দাঁড়িয়ে ছিলো তারা ওদের আসতে দেখে দ্রুত নিজের ডেস্কে ফিরে যায়। রোদেলার ডেস্কের কাছে এসে দাড়িয়ে পরে তাশরিফ। তারপর মাথা ঘুরিয়ে পেছনে দাঁড়ানো রোদেলার মুখের দিকে তাকিয়ে বলে,”আপনার ডেস্কে না বসে চলুন আমার ডেস্কে গিয়ে বসি। আমার ডেস্কটপে সুনামগঞ্জের পুরনো সব ডিটেইলস রয়েছে। সুবিধা হবে আমাদের।”
কথাটি বলে তাশরিফ নিজের ডেস্কে ফিরে যায়। রোদেলা কয়েক মুহূর্ত চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে তাশরিফের পিছু পিছু তার ডেস্কের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। তাশরিফ একটা চেয়ার টেনে দিয়ে রোদেলাকে বলে,”বসুন।”

“এই জিএম স্যারের সাথে আপনার শত্রুতা আছে নাকি কোনো? এই অফিসের সব কাজ আপনাকে দিয়ে করাতে চাইছে আজকাল।”

রোদেলা ফাইল থেকে মাথা তুলে তাশরিফের দিকে তাকায়। তাশরিফ আগে থেকেই তার দিকে তাকিয়ে আছে। রোদেলা মাথা নামিয়ে নেয়। নিচু স্বরে বলে,”আমি জানি না।”

তাশরিফ আর কোনো কথা বাড়ায় না। রোদেলাকে হিসাব গুলো ভালো করে বুঝিয়ে দিতে থাকে। রোদেলা মাথা নিচু করে শুনছে। তাশরিফ একপলক রোদেলার দিকে তাকাতেই তার চোখ আটকে যায় রোদেলার গালের একটা তিলে। কাঠিন্যে ভরা চেহারায় ওই গালের তিলটা যেন একটা সরলতার চিহ্ন‌। চোখ সরিয়ে নিয়ে আবারো কথা বলতে থাকে সে। ডিটেইলস বোঝানো হয়ে গেলে তাশরিফ একটা ফাইল এগিয়ে দেয় রোদেলার দিকে,”এটা এখন দেখুন। আমি বাকি গুলো দেখছি। বিকেলের মধ্যেই হয়ে যাবে আশা করি।”

রোদেলা ফাইলটা দেখতে থাকে। কিছুক্ষণ পরে তাশরিফ বলে ওঠে,”একটা কথা বলবো?”
_বলুন।
_আপনি সবসময় এরকম মেজাজ নিয়েই থাকেন? মানে সবসময়ই?

রোদেলা ফাইল থেকে মাথা উঠিয়ে তাকায়। তাশরিফ বলতে থাকে,”রাগী মানুষ খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধ হয়ে যায় জানেন তো ? নিয়মিত একটু হাসবেন। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কিংবা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে। কারো সামনে হাসতে অসুবিধা হলে একা একা বাথরুমে ঢুকে একবার হেসে নিবেন। তবুও হাসবেন।”

১৭
কলিং বেল টেপার দুমিনিট পরে খট করে দরজা খোলার আওয়াজ হয়। রোদেলা মনে মনে বিড়বিড় করে বলতে থাকে,”সে যেনো না আসে,সে যেনো না আসে আল্লাহ। আমি তাকে দেখতে চাই না।”

কিন্তু রোদেলার প্রত্যাশা পূরণ হয়না। দরজা খুলে দেয় স্বয়ং নাজমুন্নেছা মলি। রোদেলা চমকে উঠে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। তার ইচ্ছা করছে এখান থেকে ছুটে পালিয়ে যেতে।
মলি রোদেলার দিকে তাকিয়ে অস্ফুট স্বরে বলে ওঠে,”ভেতরে এসো রোদেলা। বৃষ্টি খাচ্ছে। ওর দেড়ি হবে।”
রোদেলা কোনো কথা বলে না। শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
মলি বলে,” ঠিকাছে, আসতে হবে না। বাগানে চেয়ার পাতা আছে। ওখানে গিয়ে বসে থাকো। বৃষ্টির খাওয়া হলে ওকে পাঠিয়ে দেবো আমি।”
রোদেলা দ্রুত পায়ে বাগানের দিকে যায়। মলি তার মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। তার চোখ দুটো হঠাৎ ভিজে ওঠে। কত ছোটো মেয়েটা কত বড় হয়ে গিয়েছে। কি সুন্দর করে শাড়ি পরে আছে। তিনটা মেয়েই চমৎকার দেখতে হয়েছে তার। অথচ এই মেয়েগুলোর বড় হওয়াটা সে উপভোগ করতে পারলো না, স্বেচ্ছায় সে নিজেকে বঞ্চিত করেছে।

বৃষ্টি টের পাচ্ছে তার পাশে বসে থাকা মেজো আপুর কিছু একটা সমস্যা হচ্ছে। আড়চোখে তাকিয়ে সে বোঝার চেষ্টা করলো। অন্ধকারে কিছু বোঝা যাচ্ছে না। তার মেজো আপুকে এখন কোনো প্রশ্ন করার সাহস তার নেই। আজ তার জন্য মেজো আপু একঘন্টা ওই বাড়ির বাইরে বাগানে বসে তার জন্য অপেক্ষা করেছে। মেজো আপু এমনিতেই চটে আছে তার ওপর। বৃষ্টি সাথে থাকলে রোদেলা কখনোই বাসে ওঠে না। সিএনজি নেয়। তারা বাসায় ফিরছে। সিএনজি তে উঠেই আপু ড্রাইভারকে বলে দিয়েছে বাতি নিভিয়ে দিতে,তার মাথা ধরেছে। তাই আপুর মুখটা ভালো করে দেখতে পারছে না বৃষ্টি।
আচ্ছা মেজো আপু এমন নড়ছে কেনো ! মুখে রুমাল চেপে রেখেছে। আপুর কি বমি পাচ্ছে! কিন্তু আপুর তো বমি পাবার কথা নয়। তবে কি আপু কাঁদছে! বৃষ্টি চমকে উঠে রোদেলাকে ভালো করে লক্ষ্য করে, হ্যা তার মেজো আপু সত্যিই কাঁদছে।

১৮
“তুই তোর দুলাভাইয়ের সাথে বেয়াদবি করেছিস ! ওকে বলেছিস তুই আমাকে ওর থেকে ছাড়িয়ে নিবি?”
চেঁচিয়ে বলে মেঘলা। রোদেলা ব্যাগটা নামিয়ে টেবিলের উপর রাখতে রাখতে ঠান্ডা গলায় জবাব দেয়,”এতো চেচিও না। এই অবস্থায় একটা দূর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলবে। আর হ্যা,আমি দুলাভাইকে বলেছি ওই কথা।”
_কেনো বলেছিস? তোর মাথা কি খারাপ হয়ে গেছে? তুই কি আমাকে সংসার টা করতে দিবি না রোদেলা?

_দেবো না বলেই তো তাকে ওই কথা বলেছি।

মেঘলা আহত চোখে বোনের দিকে তাকায়। তারপর দৃঢ় কন্ঠে বলে,”সব যায়গায় এতো প্রতিবাদী হয়ে পারা যায় না রোদেলা। আমার জীবন,আমি যেভাবে পারি মানিয়ে নেবো। আমার সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে মানিয়ে নেবো। তুই এসবের মধ্যে ঢুকবি না।”

_ঠিকাছে, মানিয়ে নে যা। এখানে আসিস কেনো তবে? কাল সকালে শশুর বাড়ি চলে যাবি। ভালো করে মানিয়ে চল ওখানে গিয়ে। আমি দেখতে যাবো না।
কথাটি বলে রোদেলা ওয়াশ রুমে ঢোকে, মেঘলা কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে নিজের ঘরে যায়, তারপর সে তার জিনিসপত্র সব গোছাতে থাকে। কাল সকালেই সে তার শশুর বাড়ি চলে যাবে।

দরজার বাইরে থেকে দুইবোনের কথাবার্তা শুনছিলো রুহুল আমিন। জীবনের কঠিন বাস্তবতা গুলো তাকে ক্ষনে ক্ষনে বুঝিয়ে দিচ্ছে সে শুধু একজন ব্যর্থ স্বামীই নয় বরং একজন ব্যর্থ পিতাও।

১৯
“তোমার মন খারাপ কেনো বৃষ্টি?”

আদিলের প্রশ্নের কোনো উত্তর বৃষ্টি দেয়না। বিক্ষিপ্ত হৃদয়ে সে খানিকটা শান্তনা পায় এটা দেখে যে আদিল কিভাবে যেনো তার মন খারাপ খুব সহজেই ধরে ফেলে। সে না বুঝতে দিলেও। আদিল বৃষ্টির নীরবতা আবারো প্রশ্ন করে,”আজ তোমার মায়ের কাছে গেছিলে?”
আদিল ঠিক বুঝতে পেরেছে। বৃষ্টি ডুকরে কেঁদে ওঠে।
_কষ্ট পাও, তবু কেনো যাও‌ বুঝি না।
_যাই মাকে দেখতে, মা ডাকতে।
আদিল বলে,”কেঁদো না বৃষ্টি। তুমি কাঁদছো আর আমার খুব খারাপ লাগছে। কেঁদো না।”
_আদিল…
_কি বলো বৃষ্টি।
_তুমি কখনো আমায় ছেড়ে যেও না। আমার মায়ের মতো আমাকে তুমি ছুড়ে ফেলো না কখনো। আমার জন্য আজীবন থেকো তুমি..
আদিল চুপ করে শোনে। বৃষ্টি কেঁদেই যাচ্ছে। কাঁদতে কাঁদতে নিঃশ্বাস আটকে যাবার উপক্রম। আদিল স্বাভাবিক গলায় বলে,”ঘুমাও বৃষ্টি এখন। তুমি অসুস্থ হয়ে পরবে।”

ফোন কেটে দিয়ে ফোনটাকে বুকের কাছে কিছুক্ষণ শক্ত করে ধরে রাখে আদিল। তার খুব ইচ্ছে করছে এক্ষুনি বৃষ্টি নামের মেয়েটিকে গিয়ে তুলে এনে বিয়ে করে ফেলতে। খুব আদরে রাখবে সে সেই মেয়েটিকে। কিন্তু সময় তাকে সেই অনুমতি দিচ্ছে না। সময়কে বুড়ো আঙুল দেখানোর মতো সাহস তার মতো একটি বেকার ছেলের নেই !

২০
বাস থেকে নেমে পরতেই মেইনরোডের অপজিটে তাদের অফিস দেখা যাচ্ছে। বারো তলা ভবনের পুরোটাই তাদের কোম্পানির অফিস। রোদেলা দ্রুত পায়ে ফ্লাইওভারে উঠতে থাকে। আজ রাস্তায় প্রচুর জ্যাম থাকার কারনে তার অফিসে পৌঁছাতে পৌঁছাতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে, আজ থেকে অফিসে অডিট শুরু হবে। এমতাবস্থায় যদি অফিসে যেতে দেড়ি হয় তাহলে তাদের ডিপার্টমেন্টের হেড স্বয়ং জিএম এর কানে কথাটি তুলে তাকে হেনস্থা ঠিকই করবে। রোদেলা বুঝতে পারে না,সে তো কখনো কারো পাকা ধানে মই দিতে যায়না,কারো সাথে তার কোনো দেনা পাওনা নেই। সে শুধু নিজের আশেপাশে শক্ত প্রাচীর তুলে রাখতে পছন্দ করে,অফিসে সবার সাথে একটু কম বন্ধুসুলভ সে সেজন্য সবাই তার সাথে এরকম আচরণ করবে? যেন সে একজন রিফিউজি।
রাস্তা পার হয়ে মেইন গেট দিয়ে অফিস এরিয়ায় ঢুকে পরে। দ্রুত হেঁটে সে লিফটের কাছে যায়। এমন সময় তার ফোন বাজতে শুরু করে,ফোন দিয়েছেন রুহুল আমিন। রোদেলা ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে সে বলে,”রোদেলা মেঘলা চলে গেছে।”

রোদেলা কয়েক মূহুর্ত চুপ করে থাকে। হঠাৎ করে তার মনে হচ্ছে তার বুকটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে,কাল রাতে সেই তো আপুকে চলে যেতে বলেছিল।
ওপাশ থেকে রুহুল আমিন বলে,”মেয়েটা একটু অসুস্থ ছিলো। যাওয়ার পরে একটাও ফোন দেয়নি। আমি দিলেও ধরছে না,তুই একটু দেখবি?”
_আচ্ছা দেখবো, আমি এখন অফিসে ঢুকবো। পরে দেখি বাবা?

রোদেলা ফোন কেটে দিয়ে একটা গভীর নিঃশ্বাস ফেলে। তারপর বাটন টিপে লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। লিফটের দরজা খুলে গেলে সে দ্রুত লিফটে পা রাখে। মাথা ঘুরিয়ে দেখে তার পিছু পিছু লিফটে ঢুকে পরেছে তাশরিফ হাসান নামের লোকটি। তাশরিফ ঢুকতেই লিফটের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। লিফটে আপাতত তারা দুজন ব্যাতীত অন্য কেউ নেই। রোদেলা এক পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। তাশরিফ মাথা ঘুরিয়ে তাকে একবার দেখে নেয়, তারপর মনে মনে বলে,”এমনিতেই তো মুখটাকে সারাদিন অমাবস্যার রাতের মতো অন্ধকার বানিয়ে ঘোরেন। আজ তো পুরো মুখটা পেঁচার মতো লাগছে। আপনাকে আমি মিস মেজাজী না ডেকে পেঁচা মুখী ডাকবো এখন থেকে।”
কথাটি ভেবেই তাশরিফ হেসে ফেলে। তারপর নিজেই নিজেকে মনে মনে শাসায়,” তাশরিফ হাসান! এসব কি হচ্ছে! তুমি শুধু শুধু একজন ভদ্রমহিলার পেছনে লেগেছো, এটা তো কোনো ভদ্রলোকের কাজ নয় !!”

চলমান….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here