অনুভূতিরা_শব্দহীন লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী অষ্টম পর্ব

0
256

#অনুভূতিরা_শব্দহীন
লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী

অষ্টম পর্ব

আজ শুক্রবার, ইংরেজিতে যাকে বলে ফ্রাইডে। মৃত্তিকা নিজের আশেপাশে এই শব্দটা শুনেই অভ্যস্ত। তার মামই তো শুক্রবার বলতো।

অফিসে আজ অর্ধদিবস কাজ করেছে সে। বাসায় চলে এসেছে তাড়াতাড়ি। ইতালির ঘড়িতে দুপুর একটা, গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে গেল মৃত্তিকা।

“শুক্রবারে সময় পেলে বেশি ইবাদত করবে। নফল নামাজ পড়বে, কোরআন পড়বে, দুরুদ পড়বে। এতে শ°য়°তা°ন তোমাকে সহজে কাবু করতে পারবে না।”
মামের কথাগুলো মেনে চলার চেষ্টায় আছে মৃত্তিকা। প্রায়ই শুক্রবারে অর্ধদিবস কাজ করে সে।

বারবার কলিং বেল বাজতে থাকায় বেশ বি°র°ক্ত হয় সে। নামাজের সালাম ফিরিয়েই উঠে যায়। দরজা খুলে অবাক হয় সে, তার বাবা এসেছে।

“কেমন আছো, মিউকো?”

মৃত্তিকা দরজা লাগাতে নিলেও শরীফ দরজা ঠেলে ভিতরে আসে। মৃত্তিকা রেগে একটু দূরে সরে যায়।

“আপনি এখানে কেন এসেছেন?”
“আমার মেয়েকে দেখতে আমি এসেছি।”

মৃত্তিকা কপাল কুঁচকে বলল,
“কে আপনার মেয়ে? আমি আপনার মেয়ে না। বের হন।”

শরীফ গিয়ে সোফায় বসলো,
“আমার পাশে এসে বসো।”

মৃত্তিকা অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো। শরীফ বলল,
“তুমি আমার সাথে থাকছো না কেন? চলো, দেশে ফিরে যাই।”
“যাবো না আমি কোথাও।”
রাগে কিড়মিড়িয়ে বলে মৃত্তিকা।

শরীফ আলতো হেসে বলে,
“তোমার মা আমাকে একা করে দিয়েছিল আর তুমিও আমাকে একা করে দিলে?”
“এটাই আপনার জন্য উচিত।”

মৃত্তিকার ঝটপট জবাবে শরীফ বেশ মন°ক্ষু°ন্ন হলো। কানের লতি চুলকাতে চুলকাতে বললেন,
“তোমরা মা-মেয়ে একা থাকার কষ্টটা বোঝো না।”

মৃত্তিকা দরজা খুলে দিয়ে বলল,
“এতোদিন যেহেতু মামকে ছাড়া একা থেকেছি তাই একা থাকতে কেমন লাগে আমি জানি। আপনি যেতে পারেন।”

শরীফ বেরিয়ে গেল। মৃত্তিকা মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দিলো। তারপর আবারো এসে জায়নামাজে বসে পড়ে। দুচোখের পানি ছেড়ে দিয়েছে।
______________________________________

টিকটিক করতে থাকা ঘড়িটা জানান দিচ্ছে সন্ধ্যা ৭ টা। কিছুক্ষণ আগেই আহনাফের সাথে সারাহ্-র বিয়েটা হয়ে গেছে, আহনাফ কোনো বাধা দেয়নি। সারাহ্ এখন নিজের রুমে এসে বসেছে। মেহমানরা খাওয়া দাওয়া করছে। তারপরই সারাহ্-র বিদায়ের সময় চলে আসবে।

এখনো আহনাফের বলা কথাটার সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত সারাহ্। সামিহা এসে ওর পাশে বসলো।

“কিছু বলবি?”
“আপু, আজকেই তোকে নিয়ে যাবে।”

সারাহ্ একটু হেসে বলল,
“কলেজে ক্লাসের জন্য তো যেতেই হবে।”

সামিহা গালে হাত দিয়ে মাথা বাঁ°কিয়ে বলে,
“মানে ভাইয়াকে তুই আগেই দেখেছিস?”
“হুম। কেন তোরা সিভি দেখিসনি?”

সামিহা উলটো প্রশ্ন করলো,
“পছন্দ ছিল বুঝি?”

সামিহার দুষ্টুমিতে একটু লজ্জায় পড়লো সারাহ্। ছোটবোনকে আর যাই হোক, নিজের প্রথম দেখার প্রেমের কথা বলা যায় না।

“আপু, বলো না। ভাইয়াও তোমাকে পছন্দ করতো?”

এবারে সারাহ্ অন্যকথা ভাবলো। আহনাফ ওর সাথে মজা করেনি তো? এমনও তো হতে পারে ও যেভাবে আহনাফকে ভালোবেসেছে, আহনাফও সেভাবেই ওকে ভালোবাসছে।

সামিহাকে ধ°ম°ক দিয়ে বলল,
“পাকনামি করিস না, ভাগ এখান থেকে।”

একপ্রকার তাড়িয়ে দিলো সামিহাকে। সামিহা রাগ করে হয়ে বেরিয়ে আসলো। মায়ের রুমে গিয়ে তানজিমের নাম্বারে ডায়াল করলো।

“হ্যালো?”
“তানজিম, আন্টি কেমন আছেন এখন?”
“ভালো না রে, কেমন যেন চুপচাপ আর গু°মো°ট ভাবে আছে।”

সামিহা একটু চুপ করে থেকে বলল,
“ডক্টর শেষ পর্যন্ত কি বলেছে।”
“উনার সাথে কথা বলতে বলেছে আর ওষুধ কন্টিনিউ করতে। কিন্তু আম্মু তো কারো কথা শুনেনই না।”
“হয়তো শুনে, আমাকে কালকে তোদের বাসায় নিয়ে যাবি।”
“আচ্ছা।”

তানজিম ফোন রেখে মায়ের দিকে তাকালো। সবকিছু সামলে মায়ের যত্ন সে কিভাবে নিবে?

তানজিমের বাসায় এসেছে ওর মামা শাফিন সাহেব ও মামী দেলোয়ারা। মমতাজ বেগমের অসুস্থতার কারণেই এখানে আসা তাদের। দুইবোনের একমাত্র ভাই শাফিন, যে মমতাজ বেগমের ছোট আর রিপা বেগমের বড় ভাই।

শাফিন সাহেব ডাইনিং এ বসে আছে। লুৎফর রহমান উনার পাশে বসা।

শাফিন সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
“ছোটবোনটা চলে গেল আর বড়বোনের এ অবস্থা, কিভাবে ঠিক থাকি বলুন দুলাভাই? মিউকো তো দেশেই আসে না।”

লুৎফর রহমান চুপ করে রইলেন। প্রিয়তমা স্ত্রীকে কোনো ভালোবাসি না বললেও সেই ভালোবাসার পরিমানটা তো কম কিছু নয়। বর্তমান যুগের ঠুনকো প্রেম তো তাদের মাঝে ছিল না।

“মমতাজকে বোঝানোর জন্য কাউকে প্রয়োজন। ইমতিয়াজ, তানজিম চেষ্টা তো করছে কিন্তু ওরা তো আর মেয়ের মতো করে বোঝাতে পারে না। (একটু থেমে) যদি মমতাজ আর ঠিক না হয়?”

লুৎফর রহমানের কথায় ভ°য়টুকুর দেখা গেল। শাফিন সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। কিছুই করার নেই যে তার। তানজিম এসে উনাদের পাশে দাঁড়ালো। শাফিন সাহেব ভাগ্নের দিকে তাকিয়ে জোরপূর্বক একটু হাসলেন।

ইমতিয়াজ ডাইনিং এ এসে বলল,
“আসসালামু আলাইকুম, মামা।”
“ওয়া আলাইকুমুস সালাম, ইমতিয়াজ। কেমন আছো?”
“এইতো আলহামদুলিল্লাহ।”
“কোথাও যাচ্ছো নাকি?”
“বাসায় যাচ্ছি।”
“আচ্ছা, সাবধানে যেও।”

ইমতিয়াজ সকলের থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেল। ওর বাসা খুব একটা দূরে নয়। রিকশা করেই চলে যাওয়া যায়।

বাসায় পৌঁছে দেখে বাসার সামনে বাড়িওয়ালা দাঁড়িয়ে আছে। ইমতিয়াজ কপাল কুঁচকে বলল,
“কোনো সমস্যা, চাচা?”

ভদ্র ভাষার কথাটা শুনে বাড়িওয়ালা পান চিবুতে চিবুতে বলল,
“না, সমস্যা তেমন কিছু না। তবে তোমাকে বাসা ছাড়ার নোটিশ দিতে আসলাম।”

সিঁড়ির রেলিং-এ হাত রেখে দাঁড়িয়ে ইমতিয়াজ বলল,
“কেন? হঠাৎ বাড়ি ছাড়ার নোটিশ কেন?”
“তুমি তো অন্য বাসার মহিলাকে ডিস্টার্ব করো। কমপেলেন পাইছি।”

ইমতিয়াজ পাশের ফ্ল্যাটের দরজার দিকে তাকালো। ওই বাসার মহিলার স্বামী দেশের বাইরে থাকে, বেশ কিছুদিন হলো ইমতিয়াজকে উনি নিজে এটা সেটা বলেছে। ইমতিয়াজ এসবে বরাবরই প্রশ্রয় দেয় না। অন্যের স্ত্রীর দিকে তাকানো তো বহু পরের বিষয়।

“কে বলেছে এসব আপনাকে?”
“যেই বলুক। তুমি বাসা ছাইড়া দেও।”

ইমতিয়াজ একটু জোরে বলল,
“ছেড়ে দাও বললেই কি ছাড়া যায় নাকি? সময় দিতে হয়।”
“বড়জোর এই মাসটা সময় দিতে পারি, এর বেশি সম্ভব না।”

বাড়িওয়ালা চলে গেল। পাশের বাসার মহিলা এসে দরজা খুললো। ইমতিয়াজ কিছু না বলে নিজের বাসায় চলে গেল।

এই মহিলা ওকে অনেক বি°র°ক্ত করেছে কিন্তু আজকের ঘটনা মাত্রাতিরিক্ত। এভাবে চরিত্রে আঙুল তুলে ইমতিয়াজের রাগটা আরো বাড়িয়েছে।
______________________________________

রাত ১১ টায় কুমিল্লা পৌঁছায় সবাই। সারাহ্কে মিষ্টিমুখ করিয়ে রুমে নিয়ে যাওয়া হলো। বাসর ঘর সাজানো থাকে, ফুলের সৌরভ থাকে। সারাহ্ তো এতোদিন তাই জেনে এসেছে। কিন্তু এখানে তেমনটা নেই। পুরো বাসায় একটা গুমোট ভাব বিরাজ করছে আর এ রুমটা যেন তারই কেন্দ্রবিন্দু।

হঠাৎ সারাহ্ একটা কন্ঠস্বর শুনলো।

“বিয়ে করেছি। ব্যস, আর কোনো আবদার আমি রাখতে পারবো না। এখন বউকে কিভাবে বোঝাবে বোঝাও।”

আহনাফের কন্ঠস্বর, তারমানে সত্যিই ওর অমতে বিয়ে হয়েছে। সারাহ্ দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।

আফরোজা আহনাফের কাছে এসে নিচুস্বরে বলল,
“মেয়েটা মাত্রই বাসায় এসেছে এভাবে চেঁ°চা°মে°চি করিস না আহনাফ।”

আহনাফ আফরোজার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে চলে গেল। সারাহ্ দরজায় কান পেতেও আর কিছুই শুনতে পাচ্ছে না। হঠাৎ আহনাফ এসে দরজা খুললে আহনাফের উপর পড়তে পড়তেও সরে এসেছে সে।

ভ°য়ে ভ°য়ে আহনাফের দিকে তাকাতেই আহনাফ বলল,
“বাসায় এসেই আড়িপাতা শুরু হয়ে গেছে? (একটু থেমে) শখের বশে ছোটখাটো কাজ করা ভালো, তবে বিয়ে না।”

সারাহ্ কিছুই বলল না। চুপ করে গিয়ে বসলো বিছানায়। আহনাফ ফ্রেশ হয়ে এসে রুমে একটা এয়ার ফ্রেশনার দিলো। তারপর সারাহ্-র স্বপ্ন, ইচ্ছাকে সমাধী দিয়ে এসে ঘুমাতে শুয়ে পড়লো।

কিছুক্ষণ পর চোখ খুলে সারাহ্কে ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আহনাফ উঠে বসে। আয়নায় ওর প্রতিবিম্ব দেখে সারাহ্।

আহনাফ দাঁত খিঁ°চি°য়ে বলল,
“ঐশী, আপনাকে সুন্দর লাগছে।”

সারাহ্ ফিরে তাকালো। বাবা-মা তো সারাহ্ বলেই ডাকে, ঐশী নামটা রাখা হলেও সহজে কেউ ডাকে না। আহনাফের থেকে এই নামটা শুনতে সারাহ্-র ভালোই লাগলো।

আহনাফ ঠোঁট বাঁ°কিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,
“এটাই তো শুনতে চাচ্ছিলেন? শুনেছেন? এখন ঘুমাতে আসুন আর না ঘুমালেও লাইটটা অফ করুন।”

সারাহ্ ওয়াশরুমে চলে গেল। আহনাফের খোঁটা দেয়া কথাটা ভালোই বুঝেছে সে। একপ্রকার ঘ°ষে ঘ°ষে মুখের মেকআপ তুলতে থাকলো। কান্না চেপে রেখে নাক টে°নে মুখ ধুয়ে বেরিয়ে এলো সে।

আহনাফ বিছানায় শুয়ে ফোন টি°প°ছে৷ সারাহ্ এসে অন্যপাশে বসে পড়লো। আহনাফ ওর দিকে একবার তাকিয়ে বামহাতের কনুইয়ে ভর দিয়ে আধশোয়া হয়ে বলল,
“কিছু বলবেন?”

সারাহ্ মাথা নাড়িয়ে বোঝালো সে কিছুই বলতে চায় না। আহনাফ নিজে থেকেই লাইট অফ করে দিয়ে বলল,
“আমি টায়ার্ড, ঘুমাবো।”
“আপনি কি আমার কথাগুলো একটু শুনবেন?”

আহনাফ সোজা হয়ে শুয়ে বলল,
“এইতো বললেন কিছুই বলবেন না। (একটু থেমে) ওকে, বলেন।”
“অন্য কাউকে ভালোবাসেন তবে আমাকে..”

সারাহ্-র কথার মাঝেই বলল,
“তবে আপনাকে কেন বিয়ে করেছি? এটাই তো বলবেন?”
“হুম।”

আহনাফ সারাহ্-র হাত ধরে টে°নে কাছে নিয়ে আসলো। আচমকা টানে আহনাফের উপরে এসে পড়লো সে, আহনাফের নিশ্বাস পড়লো ওর মুখের উপর। সারাহ্ সরতে চাইলো না, বাধা দিলো না। বরং লজ্জাবতী গাছের মতো নুইয়ে পড়লো।

“আমার ইচ্ছা হয়েছে বিয়ে করেছি, এখন ইচ্ছা হলে আরো অনেক কিছুই হবে। সো, আমার মেজাজ ভালো থাকতে দেন, এতেই আপনার ভালো।”

সারাহ্ কিছুই বলতে পারলো না, স্বরযন্ত্রটা যেন শক্ত হয়ে গেছে। শাড়ির ভাঁজ পেরিয়ে কোমড়ের কাছে আহনাফের হাতের স্পর্শ পেল। হালকা কেঁ°পে উঠতেই আহনাফ ওকে সরিয়ে দিয়ে অন্যদিকে ফিরে গেল। সারাহ্ উঠে বসে, নিশ্বাসের হার বেড়েছে ওর।

আহনাফ চোখ বন্ধ করলো। বাবা আর বোনের কথা ভেবেই বিয়ে করেছে সে, কারণ নিষেধ করেও বিয়ে আটকানো কঠিন ছিল। সারাহ্-কে কখনো ভালোবাসতে পারবে কিনা তা সে জানে না, কিন্তু জেনেবুঝে সারাহ্-র জীবন নিয়ে খেলেছে সে।
______________________________________

ইমতিয়াজ কফি বানিয়ে রুমে গিয়ে বসলো। রাত গভীর হচ্ছে আর ওর একাকিত্ব বাড়ছে। এখন আবার বাসা খোঁজার জঞ্জাল শুরু হয়েছে।

ইমতিয়াজের ফোন বেজে উঠলো। আননোন নাম্বার থেকে হোয়াটসঅ্যাপে কল এসেছে।

ইমতিয়াজ রিসিভ করে।
“হ্যালো, কে বলছেন?”

অপরপাশ থেকে কোনো কথা আসলো না। ইমতিয়াজ বলল,
“কাকে চাচ্ছেন?”

বেশ কিছুক্ষণ পর অপরপাশ থেকে বলল,
“কেমন আছেন?”

সুকন্ঠী নারী কন্ঠে ইমতিয়াজ চমকে উঠে। দ্বিধায় পড়ে বলল,
“ভালো, বাট আপনি কে?”
“মৃ..”

বলতেই কলটা কে°টে গেল। ইমতিয়াজ ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষণ। মৃ থেকে মৃত্তিকা নয় তো? কপাল কুঁ°চকে চেয়ে রইলো সে।

এদিকে মৃত্তিকা ফোন খাটে ছুঁ°ড়ে ফেলে ফ্লোরে বসে পড়ে। আজ, এতোদিন পর কেন ও ইমতিয়াজকে কল করলো। কেন ইমতিয়াজকে ভুলতে পারছে না সে। কারণ জানা নেই ওর।
______________________________________

পরদিন,
ফজরের আযানে ঘুম ভা°ঙলো সারাহ্-র। আড়মোড়া দিতে গিয়েই খেয়াল হলো ঘুমের ঘোরে আহনাফের কাছে চলে এসেছে সে। ওর চোখের পাপড়িতে আহনাফের ঠোঁট ছুঁইয়ে আছে। সারাহ্ ধীরে ধীরে সরে আসলো।

শাড়িটা একটু ঠিকঠাক করে উঠে ফ্রেশ হতে গেল। ওযু করে এসে আহনাফকে ডাকলো।
“নামাজ পড়বেন, উঠেন।”

দুইবারের ডাকে আহনাফ চোখ খুললো। উঠে বসে বলল,
“আযান দিয়েছে?”
“হুম, আমি ওযু করে এসেছি।”

আহনাফ উঠে দাঁড়িয়ে সারাহ্-কে টেনে কাছে এনে ওর গলায় গভীর করে চুম্বন করলো। সারাহ্ অ°স্ফু°ট স্বরে বলল,
“সরুন, আমি নামাজ পড়বো।”

আহনাফ সরলো না। সারাহ্-কে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বলল,
“বিয়ের তো খুব শখ ছিল, তো এসবের ধারণা ছিল না?”

সারাহ্-কে ছেড়ে দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল আহনাফ। দরজাটা বেশ জোরে শব্দ করে বন্ধ করলো। সারাহ্ নিজের গলায় হাত দিলো। আহনাফের ছোঁয়ায় ভালোবাসা নয়, একপ্রকার রাগ খুঁজে পেল সে। অন্য একজনকে ভালোবেসেও ওকে কেন বিয়ে করলো, এখনো এই কথাটাই বুঝতে পারছে না সারাহ্। একজন ছেলের এমন কি দায়ভার থাকতে পারে?

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here