#মেঘের_শহর
#পর্ব_৬
Saji Afroz
.
মেয়েটির কথা শুনে ঘামতে শুরু করলো জিকো। চুরি করার দায়ে তাকে পুলিশের কাছে পাঠানো হবে কি?
মনে হয় না! কাপড় চুরির দায়ে কাউকে পুলিশ ধরেছে এমনটা শুনেনি। তবে গণধোলাই খেতে শুনেছে।
এই মেয়েটি কি চেঁচামেচি করে মানুষ জড়ো করবে?
মেয়েটি বকবক করেই চলেছে।
জিকো এতক্ষণ পর নজর দিলো তার দিকে। রাগে মেয়েটির ফর্সা গালটি লাল হয়ে গেছে।
লজ্জা পেলে মুখ লাল হয়ে যায় এটা জিকো শুনেছে। রাগলেও যে হয় তার জানা ছিল না।
ছেলে হয়ে থাকলে মেয়েটির বকা খেয়ে এতক্ষণে সে প্রেমে পড়ে যেত। কিন্তু এখন সে মেয়ে। তাই এসব ভাবাও ঠিক নয়।
জিকো কিছু বলতে চাইলে তাকে বলার সুযোগ দিলো না মেয়েটি। সে কোন তলায় থাকে গম্ভীরমুখে জানতে চাইলো। আরো জানালো, এটার বিচার সে বাড়িওয়ালা কে দিবে।
জিকো ঘাবড়ে গেল। বাড়িওয়ালা বড্ড রাগি একজন মানুষ৷ এর আগে কম্বল চুরির দায়ে একজন ভাড়াটিয়া কে তিনি বাড়ি ছাড়া করেছিলেন অর্ধেক মাসেই। এখন যদি জিকো কেও বাড়ি ছাড়া হতে হয়! এই মুহূর্তে তার কাছে এত টাকা নেই যে, সে অন্য একটি বাড়ি জোগাড় করতে সক্ষম হবে। কারণ নতুন বাড়ি ভাড়া নেওয়া মানেই অগ্রিম কয়েকমাসের টাকা দেওয়া।
জিকো তার ভুল স্বীকার করে মেয়েটির কাছে ক্ষমা চায়।
মেয়েটি নাছোড়বান্দা। তার একটাই কথা, এমন একটা চোর মেয়ে এই বিল্ডিং এ থাকা একেবারেই উচিত নয়।
মেয়েটি জিকোর হাত ধরে তাকে টানতে থাকলো বাড়িওয়ালার কাছে নেয়ার জন্য। ঠিক তখনি মোখলেস এসে থামালো মেয়েটিকে।
কি হয়েছে জানতে চাইলে, মেয়েটি তাকে সব খুলে বলল।
সব শুনে মোখলেস বলল-
আপনি কি করে বুঝলেন চুরি ও করেছে? একই ড্রেস অনেক মেয়ের কাছেই থাকতে পারে।
-তা পারে। কিন্তু সে নিজে স্বীকার করেছে এটা আমারই ড্রেস।
-সে যদি স্বীকার না করতো তবে আপনি কি করতেন? কিছুই করার থাকতো না আপনার।
.
মোখলেসের কথা শুনে জিকোর হাত ছেড়ে দিলো মেয়েটি। মোখলেশ মেয়েটিকে জানালো সব।
তার কাছে পোশাক না থাকার কারণেই সে চুরি করতে বাধ্য হয়েছে।
মোখলেসের কথা শুনে জিকোর ভীষণ লজ্জা পাচ্ছে। নিজের বন্ধুকে মিথ্যা বলেছে সে। আর বেচারা সবটা বিশ্বাস করে এখন মেয়েটিকে এসব বলছে!
মেয়েটি জিকোর দিকে তাকিয়ে বলল-
বুঝলাম তুমি না বুঝে এটা করেছ। তাই ক্ষমা করে দিলাম। এই পোশাকটি তুমিই রেখে দাও। তোমার ভাই তো বাসায় নেই, কোনো প্রয়োজন হলে আমাকে জানাবে। আমি দ্বিতীয় তলায় থাকি।
-আচ্ছা
.
তাদের বিদায় জানিয়ে মেয়েটি চলে যায়।
মোখলেশ শান্তস্বরে জিজ্ঞাসা করলো-
পোশাকের প্রয়োজন হলে আমাকে জানাতেন। চুরি করলেন কেনো?
.
জিকো কিছু না বললে মোখলেশ বলল-
আমাকে না বলেন, জিকোর জিন্স আর পাঞ্জাবি পরেই নাহয় বেরুতেন।
-ভাইয়া জিন্স পরে না। ওসব প্যান্ট, লুঙ্গি পরে বেরুলে আমাকে পাগল ছাড়া কিছুই ভাবতো না কেউ। ভেবেছিলাম এই পোশাকটা পরে কিছু শপিং করে আবার ছাদে দিয়ে আসব।
-আচ্ছা যা হবার হয়েছে। এখন চলুন।
-কোথায়?
-শপিংমলে। আপনাকে পোশাক কিনতে সাহায্য করি।
.
জিকো হ্যাঁ সূচকভাবে মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো। মোখলেস একটি সি.এন.জি. ঠিক করে জিকো কে নিয়ে রওনা হলো শপিংমলের উদ্দেশ্যে।
.
.
.
বসে বসে পত্রিকা পড়ছেন অন্তরা আহম্মেদ। সকালে একবার পড়া হলেও দিনে বেশ কয়েকবারই তিনি একই পত্রিকা পড়েন। এতে তার বিরক্ত হয়না বরং ভালোই লাগে।
মেঘ এসে মায়ের পাশে বসলো। কিন্তু কিছু বললো না। বেশকিছু সময় কাটার পর অন্তরা আহম্মেদই মুখ খুললেন –
দেখেছিস সোহাগী শহরের কি অবস্থা? প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে একটা অসহায় মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। আজ যদি প্রেম না করতো তবে তাকে ফাঁসাতো কি করে!
-প্রেম কি বলে কয়ে হয় মা! ভালোবাসা, এটা সম্পূর্ণ মনের ব্যাপার৷ যা নিজের আয়ত্তেও থাকে না।
-কি ব্যাপার! তুই তো কখনো এভাবে কথা বলিস না। কি হয়েছে?
-মা তুমি প্রেম বিরোধী কেনো?
.
মেঘের মুখে হঠাৎ এই প্রশ্নটি শুনে ঘাবড়ে গেলেন অন্তরা আহম্মেদ। তিনি বেশ অবাকও হলেন। এসব পছন্দ করেন না তিনি যা তার ছেলেমেয়ে জানে। কিন্তু কখনো জিজ্ঞাসা করেনি এই বিষয়ে। আজ কেনো হঠাৎ এই প্রশ্নটি করলো মেঘ!
.
-কি হলো মা? বলো।
.
বসা থেকে উঠে পড়লেন অন্তরা আহম্মেদ। রাগে গজগজ করতে করতে বললেন-
একটা মানুষের পছন্দ অপছন্দ কি থাকেনা! আমারো আছে। এটা নিয়ে প্রশ্ন করার কি আছে?
.
মেঘকে দ্বিতীয় কোনো কথা বলতে না দিয়ে তিনি নিজের রুমের দিকে এগিয়ে গেলেন।
মেঘ বুঝতে পারলো, তার মা প্রেম বিরোধী হবার পেছনে নিশ্চয় কোনো কারণ আছে। কিন্তু সেটা তিনি আড়াল করছেন। কারণ টা কি হতে পারে?
.
.
দেখতে দেখতে কয়েকদিন পার হয়ে গেল। মেঘ বেশ কয়েকবার হুরায়রার ভার্সিটিতে গিয়েছে। তার দেখাও পেয়েছে। কিন্তু কথা বলার সুযোগ পায়নি। বলবেও বা কি করে! হুরায়রা তাকে দেখলেই মুখ ঘুরিয়ে হাঁটতে শুরু করে বা রিকশায় উঠে যায়।
কেউ এভাবে এড়িয়ে চললে কোনো কারণ ছাড়া তার সাথে কি কথা বলা যায়! তবে আজ মেঘের কাছে বিশেষ একটা কারণ আছে হুরায়রার সাথে কথা বলার। সে জানে, কথাটি শুনলে মেয়েটি বেশ খুশি হবে। হতে পারে খুশিতে তাকে জড়িয়েও ধরবে।
নাহ, একটু বেশিই ভেবে ফেললো মেঘ। হুরায়রা এমন মেয়েই না। একটা ধন্যবাদ দিয়ে চলে যাবে সে। এতটুকু আশা করাই যায়।
.
বেশকিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর মেঘ দেখতে পেল হুরায়রা কে। ব্যাগ কাধে চাপিয়ে হেঁটে আসছে সে। প্রতিদিনের মতো আজও লম্বা চুলগুলো খোলা। এই মেয়েটি চুল খোলা রাখে কেনো? সে জানেনা? শত ছেলে তার চুলেরই প্রেমে পড়ে যায়।
সে যদি হুরায়রার প্রেমিক হত, তবে প্রথমেই তার চুল খোলা রাখা বন্ধ করাতো। কেবল তারই হুরায়রার দীঘল কালো চুল দেখার অধিকার থাকতো। কোনো এক বিকেলে আনন্দ নদীর পাড়ে গিয়ে দুজনে বসতো। আর মেঘ তখন আহ্লাদী স্বরে তাকে চুল খুলতে বলতো। উফফ! বলতে কেনো হত? নিজের হাতেই খুলে দিত। তারপর তার খোলা চুলে মুখ ডুবিয়ে রাখতে চাইলে হুরায়রা বলতো-
করছো টা কি? কেউ দেখে ফেলবে!
.
এসব ভাবতেই আনমনে হেসে ফেললো মেঘ।
ততক্ষণে হুরায়রা হেঁটে তার কাছেই চলে এসেছে। তাকে দেখেও হুরায়রা থামলো না। পাশ কাটিয়ে হেঁটে যেতে থাকলো। মেঘ তাকে থামালে মুখে একরাশ বিরক্তির ছাপ নিয়ে সে বলল-
হ্যাঁ বলুন কি বলবেন?
-আপনার সেই বস্তির খালাকে আমি একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আনন্দ নগর গার্মেন্টস এর একজন কর্মী এখন তিনি।
-ওহ! বেশ ভালো।
.
মেঘ অন্তত ধন্যবাদ আশা করেছিল হুরায়রার কাছে। কিন্তু সে তাও বললো না। বেশ ভালো বলেই আবারো হাঁটতে শুরু করলো।
মেঘ তার সাথে হাঁটতে হাঁটতেই বলল-
একটা ধন্যবাদ কি আমার প্রাপ্য নয়?
-ধন্যবাদের জন্য কি তাকে সাহায্য করেছেন আপনি?
-নাহ। তবে আপনার কথায় করেছি।
-তা এখন কি উপকার করার জন্য সেদিনের মতো চা খাওয়াতে হবে?
.
হুরায়রার কথা শুনে হেসে মেঘ বলল-
ওহ! চা খাওয়ানোর ভয়েই আপনি পালাচ্ছেন তাহলে?
-মোটেও তা নয়। আপনার ইচ্ছে হলে খেয়ে আসুন সেই চাচার দোকান থেকে। টাকা আমি পরে দিয়ে দিব।
.
মেঘকে আর কোনো কথা বলার সুযোগ দিলো না সে। একটা রিকশা ঠিক করে চটজলদি তাতে উঠে বলল-
মামা সামনে চলুন তো তাড়াতাড়ি।
.
হুরায়রার এমন ব্যবহার দেখে মেঘের মনটা বেশ খারাপ হলো। শুনেছিল সুন্দরী মেয়েরা অহংকারী হয়। সে এই মুহুর্তে মেয়েটিকে কি অহংকারী ই বলবে?
.
.
বিকেলে ছাদে বসে আছে সাইয়ারা। তার খালার বাড়িতে সে, খালা আর খালু ছাড়া কেউ নেই। একমাত্র মেয়ের গতবছর বিয়ে হয়েছে। তাই সে এখানেও বেশ আদর যত্নেই আছে। খালুও বেশ পছন্দ করেন সাইয়ারা কে। মনেই হয়না এটা তার খালার বাড়ি। মনেহয় তার নিজের বাড়ি। আর এই শহর টা তার নিজেরি শহর। আজকাল এই শহর টাকে তার আরো বেশি আপন মনে হয়। আলাদা একটা টান অনুভব করে। এটা কেনো হচ্ছে সে জানে না। শুধু মনে হয় কেউ একজন আছে, যার জন্য সে এই শহরেই থাকতে চায়।
.
-তোমার কি ছাদে সময় কাটাতে ভালো লাগে বেশি?
.
পাশ ফিরে মেঘ কে দেখতে পেল সে। তারই অপেক্ষা যেন করছিল সাইয়ারা। কিন্তু কেনো!
আঙ্গুলে তুড়ি বাজিয়ে সাইয়ারার ঘোর কাটালো মেঘ। জানতে চাইলো কিসের ভাবনায় এত মগ্ন সে।
সাইয়ারা জবাব দিলো-
কোনো কিছুরই না। আজ সারাদিন কি কি করলেন?
.
.
বেশ কয়েকদিন যাবত মেঘের কার্যকলাপ লক্ষ্য করছেন অন্তরা আহম্মেদ। ছেলেটাকে কেমন উদাসীন মনে হচ্ছে আজকাল তার। সেদিন তাকে প্রেম বিষয়ে প্রশ্নও করেছে। হঠাৎ এমন একটা প্রশ্ন কেনো করলো আজও তার মাথায় এল না।
ছোট্ট একটা নিশ্বাস ফেলে তিনি ছাদের দিকে এগিয়ে গেলেন। কাপড় শুকোতে দিয়েছিলেন, আনা হয়নি।
ছাদে পা রাখতেই থেমে গেলেন তিনি। সামনে আর এগোলেন না।
মেঘ ও সাইয়ারা কে হাসতে হাসতে কথা বলতে দেখলেন। সাইয়ারার ছাদের দোলনায় বসে দুজনে কথা বলছে। কি বিষয়ে কথা বলছে শুনতে পেলেন না।
তবে দৃশ্যটি দেখার মতো! দুজন কে বেশ মানিয়েছে।
মনে হচ্ছে এই শান্ত বিকেলে এক জোড়া পাখি কিচিরমিচির করছে!
মেঘ কে কোনো মেয়ের সাথে এভাবে প্রাণবন্ত ভাবে কথা বলতে এই প্রথম দেখলেন তিনি।
অবশ্য ছেলেকে অনেকদিন পরেই এত কাছে পেয়েছেন অন্তরা আহম্মেদ। মানুষ তো বদলায়। মানুষের স্বভাবও বদলায়। সেই আগের মেঘ যে একটুও বদলাবে না, এটা ভাবা মানেই বোকামি করা।
অন্তরা আহম্মেদ কে তারা খেয়াল করলো না। নিজেদের মতো কথা বলতে থাকলো। অন্তরা আহম্মেদ কাপড় নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে নামতে ভাবলেন, তিনি মনেহয় মেঘের প্রশ্ন করার কারণ বুঝতে পেরেছেন। হয়তো তার ছেলে প্রেমে পড়েছে। তাই তো সে তার মা প্রেম বিরোধী এটা নিয়ে চিন্তায় আছে। আর তাই এসব প্রশ্ন সে করেছে।
তিনি যা ভাবছেন তা আসলেই কি সত্যি!
.
.
মেঘ ও সাইয়ারার একজন প্রতিবেশির মেয়ের বিয়ে কাল। এটা নিয়েই তারা কথা বলছে।
গ্রামের বিয়ে সম্পর্কে সাইয়ারার মুখে শুনে মেঘ বেশ মুগ্ধ হলো। সাইয়ারা কে বলেই ফেললো সে, একদিন তার গ্রামের বাড়ির কোনো বিয়েতে নিয়ে যেতে।
সাইয়ারা হাসতে হাসতে বলল-
আমার বিয়েতেই যেতে পারেন।
-তাই! কবে তোমার বিয়ে?
-যখন হবে তখন।
-তাড়াতাড়ি করার ইচ্ছে আছে?
-স্বপ্নের পুরুষ পেলে এখুনি করতেও রাজি।
-কেমন তোমার স্বপ্নের পুরুষ?
-এমন কেউ, যে আমাকে পাত্তা দিবেনা কিন্তু আমি তার পেছনে ঘুরব।
.
তার কথা শুনে মেঘ হাসতে হাসতে দোলনা থেকেই উঠে পড়লো।
সাইয়ারা মুখ বাঁকিয়ে বলল-
হাসার কি হলো?
-হাসবো না! মেয়েদের বলতে শুনেছি, তাকে খুব ভালোবাসে এমন কেউই তার স্বপ্ন পুরুষ হয়। বাট তুমি বলছো উল্টো।
-হুম উল্টো! কোথায় লেখা আছে? ছেলেদেরই মেয়েদের পেছনে ঘুরতে হবে! মেয়েরা ঘুরতে পারেনা?
-যুক্তি আছে। কিন্তু এমন টা তো আশা করা যায় যে, যাকে তুমি ভালোবাসবে সেও তোমাকে ভালোবাসবে ভীষণ।
-সহজে কিছু পেলে তার মূল্য আমি অন্তত দিতে জানিনা। তাই এটা ভেবে রেখেছি। আমি নিজেই কোনো ছেলেকে পছন্দ করব। তাকে ভালোবাসবো। তাকে প্রপোজ করব। তারপর তার পেছনে ঘুরঘুর করে প্রেম করতে রাজি করাব।
-আর যদি প্রথম বারেই রাজি হয়ে যায়? বা যাকে তোমার ভালো লাগবে সেই যদি নিজ থেকে আসে?
-তাহলে তাকে বাদ দিব। অন্য একজন কে ধরব। আমার ওমনি লাগবে।
.
কোনোমতে হাসি থামিয়ে মেঘ বলল-
তুমি জানো তুমি একটু পাগলী আছ?
.
কিছু বলল না সাইয়ারা। অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে হাসলো সে।
.
.
শপিং শেষে রাতের খাবার খেয়ে বাসায় ফিরে আসলো জিকো। তার সাথে আছে মোখলেস। সে নিজের টাকাতেই জিকো কে সব কিনে দিয়েছে।
অথচ এই মোখলেস বন্ধু হলেও কখনো তাকে ফ্রিতে কিছু দেয়নি। টাকা ধার দিলেও আদায় করে ছেড়েছে। আর আজ তাকে জিকোর বোন ভেবে কত কদরই না করছে! এসব ভেবে নিজেরই হাসি পাচ্ছে তার।
মোখলেস তাকে আরাম করতে বলে বেরিয়ে যাচ্ছিল।
জিকো তাকে থামিয়ে চা খেয়ে যেতে বলল। একবার বলাতেই রাজি হয়ে গেল সে।
জিকো দুকাপ চা বানিয়ে আনলো। মোখলেস চা খেতে খেতে তার বেশ প্রশংসা করলো।
জিকো বুঝতে পারলো মোখলেস তার প্রতি দূর্বল হয়ে পড়ছে। কিন্তু কিছু করার নেই। এটার সুযোগ নিয়ে তার একটা কাজ জোগাড় করতে হবে। বাড়িতে টাকা পাঠাতে হয় মাসে মাসে। মাস শেষে বাড়ির সবাই যে তার আশায় বসে থাকে।
কথায় কথায় একটা কাজের কথা বলেই ফেললো জিকো।
মোখলেস জানালো, সে থাকতে তার কেনো কাজ করতে হবে! জিকো না আসা অবধি সেই তার দায়িত্ব নিতে পারে।
বেচারা মোখলেস তো আর জানেনা জিকোই জেসিকা!
আর শুধু জেসিকার দায়িত্ব নিলেই তো হবেনা। তার পুরো পরিবার আছে!
জিকো জানলো, সে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। পরিবারের সাহায্যও সে চায়না।
.
এসবের কারণ মোখলেস জানতে চাইলো না। তার ভীষণ মায়া হলো জেসিকার জন্য। প্রত্যেকের কিছু ব্যক্তিগত বিষয় থাকে। এসব বিষয়ে প্রশ্ন তোলা অনুচিত।
মোখলেস তাকে আশা দিলো, একটা কাজের ব্যবস্থা সে করে দিবে। ততদিন নাহয় জেসিকার দায়িত্ব তারই থাক।
.
চলবে