তোমার_হতে_চাই ২ part : 7 writer : Mohona

0
277

#তোমার_হতে_চাই ২
part : 7
writer : Mohona

.

কিন্তু মেরিন নেই…
নিহাল : কি হয়েছে? তুমি হুট করে ওকে মারলে কেনো? কি হয়েছে?
নীড় : তুমি ওকে কোথায় পেলে? আর তুমি ওর সাথে কেমন করে?
নিহাল সবটা বলল। নীড় চেয়ারে ধপ করে বসলো।
নিহাল : কি হয়েছে বুঝতে পারছিনা। বলো তো কি হয়েছে!
নীড় : জীবনে অনেক বড় অপরাধ করে ফেলেছি বাবা।
নিহাল : কি অপরাধ ?
নীড় চুপ।
নিহাল : বলো নীড়…
নীড় : নাটক করে।
নিহাল : কিসের নাটক?
নীড় : খারাপের নাটক…
নিহাল : খারাপের নাটক?
নীড় : হামম খারাপের নাটক… সেদিন সকালে আমাদের বেডরুমে মামনি ওর সাথে যাকে দেখেছিলো , তোমরা যাকে দেখেছিলে সেটা আমিই ছিলাম।
নিহাল : কিহ?
নীড় : হামম। রবিন স্যার , কবির বাবা… ওরাও ঠিক বলছিলো। আমার সাথে ১টা মেয়ে ছিলো । কিন্তু ওরাও এটা জানেনা যে আমার সাথে লালঝুটি কাকাতুয়াই ছিলো।
নীড় স্থির চোখে কথাগুলো বলছে।
নিহাল : কি বলছো কিছুই বুঝতে পারছিনা।
নীড় সব বিস্তারিত বলল। সব বলতেই নীড়কে ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
নীড় : মারো বাবা আমাকে। মেরে ফেলো। কিন্তু আমি ওকে চাই। ওকে খুব ভালোবাসি । খুব । ওকে ছারা আমি বাঁচতে পারবোনা।
নিহাল আরো ১টা থাপ্পর মারলো। নিহালের বুকে ব্যাথা উঠে গেলো।
নিহাল : লজ্জা করছেনা এই কথাগুলো বলতে? হ্যা? কোন মুখে এই ভালোবাসার কথা? কোন মুখে? কোথায় ছিলো ৫বছর আগে এই ভালোবাসা? বলো। কোথায় ছিলো? কতো আশা করে তোমাদের বিয়ে দিয়েছিলাম জানো? জানোনা। কারন তোমাদের জন্য তোমাদের একে অপরকে বেস্ট মনে হয়েছিলো আমাদের সবার। কিন্তু তোমরা… তোমরা কেবল নিজেদের সম্পর্ক শেষ করোনি। শেষ করেছো দুটা পরিবারের মধ্যকার সম্পর্ক। ধ্বংস করেছো আমার আর কবিরের এতো বছরের বন্ধুত্ব। আমরা বেস্টফ্রেন্ড ছিলাম। বেস্টফ্রেন্ড। বুঝেছো? বেস্টফ্রেন্ড । কিন্তু সবশেষ। তোমাদের জন্য। এখন বলছো ভালোবাসো । ওতে ছারা বাঁচতে পারবেনা। যখন সব শেষ। তোমার মামনির কথা ভেবে দেখেছো? সত্যিটা জানলে মরে যাবে ও। ও নিজেকে ক্ষমা করতে পারবেনা মেরিনকে ওসব কথা বলার জন্য। তোমরা এই বিরহেরই যোগ্য।
নিহালের কথা বলতে আরো কষ্ট হতে লাগলো। বুকের বা পাশটা চেপে ধরলো।
নীড় : ববাবা… বুকে ব্যাথা করছে তোমার। দেখি…
নিহাল : ডোন্ট টাচ মি। এন্ড ডোন্ট কল মি বাবা।
নীড় : হসপিটালে চলো বাবা।
নিহাল : বললামনা ডোন্ট টাচ।
ব্যাথা অসহনীয় হয়ে গেলো নিহালের। নীড় আর দেরি না করে জোর করে নিহালকে হসপিটালে নিয়ে গেলো। হার্ট অ্যাটাক করেছে নিহালের। নিজের অপরাধবোধ মাথাচরা দিয়ে দিয়েছে নীড়ের। ভুল করেছে সেটা আগেও অনুভব করেছে। কিন্তু আজকের মতো করে করেনি। যতোবড় অপরাধ করেছে সেই অপরাধ কোনোক্রমেই শুধরানোর নয়। নিজেদের ইগোর কারনে নিজেদের সুন্দর জীবনকে চিরতরে শেষ করে দিয়েছে। সেই সাথে ২টা পরিবারকেও। ওর মামনির মুখে আজ হাসি নেই। এরজন্য দায়ী ওরা।

.

২০ দিনপর…
মেরিন অন্য ১টা ল’স্কুলে মাইগ্রেট করেছে। অন্য ফ্ল্যাটে শিফ্ট হয়েছে। দেশেই ফিরে যেতো। কিন্তু হাজারটা প্রশ্ন উঠবে। তাই আর ফিরেনি। বসে বসে মোবাইলে ছবি গুলো দেখছে। আছে নীড়ের সাথে ক্যাম্পিং এর , আছে নিহালের সাথে সেদিনের। আর আছে দুই পরিবারের সাথে।
মেরিন : শ্বাশুরি কখনো মা হয়না। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে এটা ভুল ছিলো। আমার শ্বাশুরি , শ্বাশুরি ছিলোনা। ছিলো মামনি । ১টা আম্মু আর ১টা মামনি। আর ২টা বাবা।
তখন মোবাইলটা বেজে উঠলো।
মেরিন : হ্যা ভাইয়া…
প্রহর : আপি গেস হোয়াট?
মেরিন : হুয়াট?
প্রহর : তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে এসে নিজেই সারপ্রাইজড হয়ে গিয়েছি। এসে দেখি তুমি অন্য ফ্ল্যাটে শিফ্ট হয়েছো।
মেরিন : হাহা। ভালো হয়েছে।
মেরিন নতুন ঠিকানা দিলো।
প্রহর : এটাতো যথেষ্ট দূর এখান থেকে।
মেরিন : হামম।
প্রহর : এতোদূর গেলে কেনো?
মেরিন : জায়গাটা ভালো লেগেছে ভীষন। তাই।
প্রহর : আচ্ছা বাকী কথা এসে হবে। আসছি আমি।
প্রহর এলো। মেরিন প্রহরের সব পছন্দের খাবার অর্ডার করে রেখেছে।
প্রহর : মাইগ্রেট করলে করলে কেনো আপি?
মেরিন : হানি ইজ অ্যা হেডেক। ওর আর গার্লফ্রেন্ড আর ব্রেকআপের কাহিনি শুনতে শুনতে দেখতে দেখতে অসহ্য হয়ে গিয়ছি।
প্রহর হাহা করে হাসতে লাগলো।
প্রহর : আপি প্যারিস যাবা?
মেরিন : প্যারিস?
প্রহর : হামম। ফ্রেন্ডের বিয়ে।
মেরিনের চোখের সামনে ওদের অদ্ভুত হানিমুনের স্মৃতি ভেসে উঠলো।
প্রহর : চলোনা আপি। তোমাকে পিক করতেই এলাম। ও আপি।
মেরিন : না ভাইয়া তুমিই যাও।
প্রহর : নো। তুমি যাবে আমার সাথে। দ্যাটস ইট।
প্রহর জোর করে মেরিনকে প্যারিস নিয়ে গেলো।

.

প্যারিসে…
মেরিন ১টা গাছের নিচে দারিয়ে আছে । ফ্রেঞ্চ ভাষায় ওর আর নীড়ের নাম লেখা। ‘লালবাদুর’ । মেরিন হাসলো। আবছা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আজও আছে নামটা। হাটতে হাটতে মেরিন অাইফেল টাওয়ার পর্যন্ত গেলো। মনে পরলো ফটোগ্রাফারের বলা কথা। পায়ে পায়ে দুজনের পথ চলার কথা। ঢাকা জুরে বিভিন্ন স্মৃতি রয়েছে। তাই ঢাকা ত্যাগ করেছিলো। কেস হাতে এলে ঢাকা যাওয়া হয় কেবল। আজকে প্যারিস এসে আবার একঝাক স্মৃতি সামনে এলো।
☆ : আর ইউ মিসিং সামওয়ান অর মি?
মেরিন অত্যন্ত বিরক্তি নিয়ে পাশ ফিরলো। দেখলো এক সুদর্শন পুরুষ দারিয়ে আছে। সে এগিয়ে এলো।
☆: ইউ হ্যাভ অ্যা কিউট ফেইস। আর ইউ বেঙ্গলি?
মেরিন কিছু না বলে এগিয়ে গেলো।
☆: হ্যালো মিসি … ওয়েট ফর মি। হাই আই অ্যাম নীর।
মেরিন : নীড়…
নীর : ইয়াহ … ব্যারিস্টার নীর আকরাম।
মেরিন : সো হুয়াট ক্যান আই ডু?
নীর : ইউ আর রুড।
মেরিন : হেই মিসি মিসি ওয়েট ফর মি । ক্যান উই মেট বিফোর ?
মেরিন কিছু না বলে হাটতে লাগলো।
নীর : কোথায় দেখেছি মেয়েকে না জানা পর্যন্ত তো আমার মাথার পোকা গুলো থামবেনা।শী ইজ কিউট বাট রুড। রুড… ইয়াহ আই গট ইট। ক্রিমিনাল ল’য়ার মেরিন বন্যা খান।
নীর ছুটে গেলো।
নীর : আপনি ব্যারিস্টার মেরিন বন্যা খান না?
মেরিন : জানিনা।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নীর : এই মেয়ে তো দেখি বিশ্ব রুড। নোবেল পাওয়ার যোগ্য । কিউট মেয়েদের এমন রুড মানায়? কিউটিদের সাথে দুষ্টুমি মানায়। মনে হয় এর বর একে দিনরাত পিটায়। তাই এতো রুড। কিন্তু এ তো মিস । মিসেস না। শী ইজ ইন্টারেস্টিং। হিহি। রুড মানুষদের পেছনে লাগার মজাই আলাদা। মিসি তুমি আরেকবার সামনে পরলে তোমার মাথা হ্যাং করে দিবো। আই প্রমিস।

.

আমেরিকাতে…
নীলিমা : তোমার কি হয়েছে বলো তো নিহাল? লন্ডন থেকে ফেরার পর থেকে তোমাকে এমন লাগছে কেনো? নীড় ঠিক আছে তো? ওর কিছু হয়নি তো?
নিহাল : ওর নাম আমার সামনে নিবেনা।
নীলিমা : কি হয়েছে বলো তো? ও এলোনা কেনো? কি করছে?
নিহাল : খুজছে।
নীলিমা : কি খুজছে?
নিহাল : মেরিন…
নীলিমা : কি? ওকে খুজছে? পাগল হয়ে গিয়েছে নীড় ?ওকে… ওকে ফোন করে এখনই আসতে বলবো।
নীলিমার অস্থিরতা স্পষ্ট ।
নিহাল : নীলি নীলি নীলি স্টপ। আমার কথাটা তো পুরোটা শোনো। তুমি যা ভাবছো তা নয়।
নীলিমা : তুমিই তো বললে যে ওই মেয়েকে খুজছে।
নিহাল : আমার কথাটা কমপ্লিট করতে দাও। নীড় কি খুজছে আমি জানিনা। কিন্তু আমার তোমাকে কিছু বলার ছিলো। মেরিনকে নিয়ে।
নীলিমা : আমি ওই মেয়েকে নিয়ে কোনো কথা শুনতে চাইনা।
নিহাল : নীলি আমি কি বলতে চাই শোনো।
নীলিমা : না। না মানে না।
নীলিমা চলে যেতে নিলো।
নিহাল : যদি শোনো মেরিন মরে গিয়েছে? তাহলে তোমার প্রতিক্রিয়া কি হবে?
নীলিমা থেমে গেলো। বুকটা কেপে উঠলো।
নিহাল : যদি তোমাকে মেরিনের মৃত্যু সংবাদ দেই তাহলে নিশ্চয়ই তুমি খুব খুশি হবে!
নীলিমার চোখে পানি চলে এলো। সব ঝাপসা দেখতে লাগলো। পরে যেতে নিলো। নিহাল ছুটে গিয়ে নীলিমাকে ধরে ফেলল।
নিহাল : নীলি… নীলি… চোখ খোলো নীলি…
ডক্টর ডাকা হলো।
ডক্টর : কতোদিন বলেছি এনাকে সকল ধরনের স্ট্রেস থেকে মুক্ত রাখতে? ওনার কন্ডিশন ভালোনা। ১টা দুর্ঘটনা ঘটে গেলে আমাকে দোষারোপ করবেননা প্লিজ।
নিলা : কাকিমা কি করে সুস্থ হবে? কিছু তো করুন ডক্টর।
ডক্টর : কিছু তো তখন করতে পারবো যখন তার মানসিক যন্ত্রণার উৎস খুজে পাবো। তিনি তো কিছুই বলতেই চাননা। উনার ইনার কন্ডিশন এমন যে হিপনোটাইজ করতেও সাহস পাইনা। এনিওয়ে ১২ঘন্টা তিনি ঘুমাবেন। স্যালাইন লাগিয়ে গেলাম। ডিস্টার্ব করবেননা। এক্সকিউজ মি।
ডক্টর চলে গেলো। রুম থেকে সবাই বেরিয়ে গেলো। রইলো কেবল নিহাল।
নিহাল : খুব ভালোবাসো তুমি মেরিনকে। তাইনা? আজও খুব ভালোবাসো। তুমি ওর ওপর রাগ না অভিমান করে আছো। যেদিন সত্যিটা জানবে সেদিন আফসোস করবে আর তোমার অভিমানটা আরো তীব্র হবে। কারন যেখানে ভালোবাসা বেশি সেখানেই অভিমান বেশি। কতো কি বলেছি মেয়েটাকে…

.

চট্টগ্রামে…
রবিন : নো। আমি কাউকে ট্রেইন করতে পারবোনা।
○ : আপনি দেশের একজন সেরা ডাক্তার। আপনার কাছ থেকে নতুনদের কতো কি শেখার আছে। অথচ আপনি বলছেন আপনি কাউকে অ্যালাউ করবেননা?
রবিন : না। রবিন মাহমুদ স্টুডেন্টদের ঝামেলায় আর জরাতে চায়না।
○ : বোঝার চেষ্টা করুন স্যার।
রবিন : আমি যা বলি একবারই বলি।
○ : ১টা সময় তো করতেন।
রবিন : হামম। করতাম। তখন ডাক্তারি আমার পেশা না প্যাশন ছিলো। এখন এটা আমার প্যাশন নয় পেশা।
○ : আপনি ছেলে ২টাকে ১টা সুযোগ দিন স্যার। দেখবেন ওরা আপনাকে নিরাশ করবেনা। ওরা নিজেদের ব্যাচের বেস্ট।
রবিন : ওদের থেকে কয়েকগুন বেস্ট কেউ ছিলো। ডক্টর হিসেবে যতোটা বেস্ট মানুষ হিসেবে ততোটাই ওর্স্ট। এক্সকিউজ মি।
বলেই রবিন চলে গেলো।
রবিন : তুমি আমাক প্রিয়র থেকেও প্রিয় ছিলে নীড়। তাই তোমাকে আমার কলিজাটা দিয়েছিলাম। তুমি যা করেছো সেটা আমি চাইলেও ভুলতে পারিনা। আফসোস ১টাই চাইলেও তোমাকে ভুলতে পারিনা। ঘৃণা করতে পারিনা। কি জাদু করেছিলে জানিনা।

.

প্যারিসে…
হিয়া : আরে… আমি ‘Nir’ নীড়ের এর ট্যাটু করাতে বলেছিলাম ‘Neer’ নীড়ের না। আমি আপনার খবর করিয়ে দিবো।
চিৎকার-চেচামেচির শব্দ পেয়ে মেরিন ওখানে গেলো।
হিয়া : আমার ভালোবাসা , আমার জীবন , আমার দুনিয়া সবকিছু হলো Nir নট Neer।
ওখানে ব্যারিস্টার নীরও ছিলো।
নীর : বাহ আপনার জীবন-ভুবন তবে আমি হয়ে গেলাম।
হিয়া : এই যে মিস্টার হুয়াট ডু ইউ মিন?
নীর : আসলে আমার নাম নীর রহমান। ইংরেজীতে আমি আমার নাম ‘NEER’ এভাবেই লিখি। সো…
হিয়া : শাট আপ জাস্ট শাট আপ। হিয়ার সাথে কেবল আর কেবল নীড়ের নাম জুরতে পারে। আর কারোনা।
নীর : জুরে তো গেলো তো আপনার সাথে আমার ।
হিয়া : মুছে দেবো এই ট্যাটু। যদি না মোছা যায় তবে নিজের হাত কাটিয়ে ফেলবো।
নীর : বাপরে… এ দেখি গভীর প্রেম।
হিয়া : শাট আপ।
নীর : ওকে। বাই ।
মেরিন মনেমনে : মেয়েটা ভীষন ভালোবাসে ক্ষীরবাদুরকে। ভালোই থাকবে ক্ষীরবাদুর ওর সাথে।
নীরের দৃষ্টি মেরিনের দিকে পরলো।
নীর : হেই ব্যারিস্টার মেরিন বন্যা খান ইটস মি।
মেরিনের নামটা শুনে হিয়া তাকালো। নামটা ও জানে। চেহারাও চেনে। ঘুরে বুঝলো এটা সেই মেরিন। নীড়ের লালঝুটি কাকাতুয়া। ও মেরিনকে গভীরভাবে দেখতে লাগলো।
নীরকে আসতে দেখে মেরিন চলে যেতে নিলে নির লাফিয়ে মেরিনের সামনে গেলো।
নীর : হ্যালো মিসি উপস মিস খান। পালাচ্ছেন আমাকে দেখে? আই অ্যাম অ্যা বিগ ফ্যান অব ইউরস। আপনার প্রতিটা কেস আমি স্টাডি করি।
মেরিন : আর আপনার প্রতিটা কেস আমি ইগনোর করি।
নীর : কেনো? আমার কেসগুলোকি পঁচা? 95% জেতার রেকর্ড আমার।
মেরিন : আই ডোন্ট লাইক 95%।
নীর : ইয়াহ ইয়াহ। যার রেকর্ড 100% তার কি আর 95% ভালো লাগে?
মেরিন : এক্সকিউজ মি।
বলেই মেরিন চলে গেলো ।
নীর : হে প্রেমের শহর প্যারিস… এমন দুই সুন্দরী রমনীর সাথে দেখা করালে যে কি বলবো? একজন তো nir বলতে অজ্ঞান। আর আরেকজনের কথা তো বাদই দিলাম। মনে হয় আরো কয়েকবছর একা থাকতে হবে। ব্যাড লাকই খারাপ আমার। কি আর করার। চলো বাবা নীর চলো।

.

‘এই যে হ্যালো মিস মেরিন বন্যা খান।’ ডাকটা শুনে মেরিন দারালো। পেছনে ঘুরলো। দেখলো হিয়া।
হিয়া : আমি হিয়া। তুমি আমাকে চেনোনা। কিন্তু আমি তোমাকে চিনি।
মেরিন : প্রথম দেখাতে কাউকে তুমি বলে ডাকতে হয়না। এতোটুকু ভদ্রতা জানা উচিত । আর তারওপর বয়সে তুমি আমার ছোট।
হিয়া : বয়সে ছোট হতে পারি। কিন্তু সম্পর্কে নয়।
মেরিন : সম্পর্ক?
হিয়া : হামম সম্পর্ক ।
মেরিন : তোমার আমার আবার কিসের সম্পর্ক ?
হিয়া : সতীন কাটার সম্পর্ক।
মেরিন : সতীন কাটার সম্পর্ক ?
হিয়া : হামম। নীড়… আমি নীড়ের ফিওনসে। খুব শীঘ্রই আমাদের বিয়ে হতে চলেছে।
মেরিন : কংগ্রেচ্যুলেশন। কিন্তু তুমি বোধহয় ভুলে যাচ্ছো যে আমি তোমার কো-ওয়াই়ফ নই । আমার আর ক্ষীরব… নীড়ের ৫বছর আগেই ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে।
হিয়া : ইয়াহ আই নো। বাট স্টিল নীড়ের সবটা জুরে তুমিই বিরাজ করো। ও মু়খে কিছু বলেনা । কিন্তু আমি ঠিকই বুঝি। বাট যাই হোক তোমার জন্যই আজকে আমার জীবনে নীড় আছে। ছোট্ট একটা ধন্যবাদ তোমার প্রাপ্য।
মেরিন : আমি তোমার ধন্যবাদ চাইনা।
হিয়া : তুমি ক্যারেক্টারলেস জানতাম এতোটা অহংকারী সেটা আজকে জানলাম।
মেরিন : আমার ক্যারেক্টার নিয়ে কথা বলার সাহস তোমাকে কে দিয়েছে?
হিয়া : যদি বলি নীড়।
মেরিন : অসম্ভব । কোনোদিনই না।
হিয়া : সম্ভব ।
মেরিন : বললাম তো না। ক্ষীরবাদুর নিজের গলা কাটিয়ে নিবে। কিন্তু আমাকে ক্যারেক্টারলেস বলার অধিকার তোমাকে দিবেনা।
হিয়া : ওহ রিয়েলি?
মেরিন : রিয়েলি । বিশ্বাস না হলে ওর সামনে একবার বলে দেখো। এই গালে না হয় ওই গালে ধাপাস করে ১টা পরবে। যাইহোক তুমি ওকে ভালোবাসো। ওকে ভালো রেখো । তোমরা দুজনই ভালো থেকো। আমার শুভ কামনা রইলো তোমাদের জন্য। আর দয়া করে আর পেছন থেকে ডেকোনা। আমার বিরক্ত লাগে পিছু ডাক।
হিয়া : দারাও।
মেরিন : বলো।
হিয়া : ওর নাম নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন । হয় ওকে নীড় বলে ডাকো নাহয় মিস্টার চৌধুরী বলে ডাকো। ক্ষীরবাদুর কি শুনি হ্যা ক্ষীরবাদপর কি? আমার নীড়কে আর কখনো ক্ষীরবাদুর ডাকবেনা।
মেরিন : ও তোমার নীড় কিন্তু আমার ক্ষীরবাদুর। ওর সাথে আমার বিয়ে-ডিভোর্সের সম্পর্ক নয়। বিয়ে তো হলো সেদিন। আর ক্ষীরবাদুর ও লালঝুটি কাকাতুয়ার সম্পর্ক বহুদিনের। ২যুগ হওয়ার পথে। ও তোমার হবু স্বামী বলো , ভালোবাসা বলো যাই বলো। কিন্তু ও আমার ক্ষীরবাদুর। ও আগাগোরা সবটাই তোমার। ওর ওপর তোমারই অধিকার। কিন্তু এই ডাকটার ওপর আমার অধিকার। তোমার কাছে পারমিশন আমি নিবোনা। তারথেকেও বড় কথা… আমি তোমাদের থেকে অনেক দূরে। না তো আমাদের মধ্যে কোনো ভালোবাসার সম্পর্ক ছিলো। তবুও কেনো এতো ইনসিকিওর তুমি? ক্ষীরবাদুর মুক্ত আকাশে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে। জবাবদিহিতা নয়। নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মেরোনা।
বলেই মেরিন চলে গেলো ।
হিয়া : বুঝলাম না আমাকে শুভ কামনা দিয়ে গেলো নাকি নিরব থাপ্পর!
তখন হিয়া কল্পনা করলো নীড়ের সেদিনের সেই থাপ্পরটা।
হিয়া : ঠিকই তো বলে গেলো । নীড় কোনোদিনই আমাকে অ্যালাউ করবেনা। তুমি আসলেই আমার সতীন কাটা। না থেকেও তুমি বিরাজ করে আছো আমার আর নীড়ের মাঝখানে। কিন্তু নীড় কেবল আর কেবল আমার। তোমার অস্তিত্ব আমি ওর জীবনে থাকতে দিবোনা।ওকে এতো ভালোবাসবো যে ওর মন মস্তিষ্ক থেকে তুমি বিলীন হয়ে যাবে। দিনশেষে নীড়ও মানুষ। পুরুষমানুষ।

.

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here