মিশে_আছি_তোমাতে ❤ #Nusrat_Jahan_Bristy #Part_5

0
120

#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_5

নিরব গাড়ি ড্রাইভ করছে আর নিজে নিজে বক বক করছে, “উফফ আমি বুঝতে পারি না কেন ভাইয়া আমাকে একা কিছু করতে দেয় না? সবসময় পেছনে কিছু লোক লাগিয়ে রাখে আমাকে গার্ড করার জন্য দেশের বাইরে ছিলাম ওখানে কিছু লোক পেছনে লাগিয়ে রেখেছিল আর এখন এখানেও। আজকে কোনো মতে ওদের চোখ ফাঁকি দিয়ে একা এসেছি তার জন্য কত কিছুই না বললো আমাকে ভাইয়া। নিজে একটু গাড়ি ড্রাইভ করতে চাইলে বলে আমি গাড়ি চালিয়ে কিছু অঘটন করে ফেলবে। আমি কি এখনও বাচ্চা আছি নাকি যে কিছু করতে পারবো না। মানছি ভাইয়া আমাকে ভীষণ ভালোবাসে তা বলে কি আমি নিজের ইচ্ছে মতো একটু গাড়ি ড্রাইভ করতে পারবো না। গাড়ি ড্রাইভ করলে কি আমি এক্সিডেন্ট করে ফেলবো নাকি…. ।”

এক্সিডেন্ট করার কথাটা বলার সাথে সাথে গাড়ির সামনে একটা মেয়ে চলে আসে আর সাথে সাথে নিরব গাড়ি ব্রেক করে। নিবর তাড়াতাড়ি করে গাড়ি থেকে বের হয়ে দেখে একটা মেয়ে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটা সাদা একটা ড্রেস পড়ে আছে চুলগুলো বাতাসে হালকা উড়ছে থুতনির এক সাইডে একটা কালো তিল যেটা মেয়েটার সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মেয়েটা একটা চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে কিছুই হয় নি ওর, জোরে একটা নিঃশ্বাস ছাড়ে মেয়েটা। নিবরকে দেখে মেয়েটি রেগেমেগে বলে।

“এই যে মিস্টার এভাবে কি কেউ গাড়ি চালায় যদি কিছু হয়ে যেত আমার তাহলে কি হত?”

নিবর বাকা হেসে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে বলে, “বিউটিফুল।”

“হোয়াট? কি বললেন আপনি? এই আপনাকে কিন্তু আমি পুলিশে দিব গাড়ি চালাতে পারে না আবার গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেছেন। আপনাদের বড় লোকের ছেলেদের এই একটা সমস্যা বড় বড় গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যান আর তারপর রাস্তায় মানুষ আছে কি নেই সেটা আপনাদের চোখে পড়ে না।”

একদমে কথাগুলা বলে মেয়েটি থামে। তারপর নিরবের চাওনি দেখে বলে, “কি হলো এমন হুতুম পেঁচার মতো তাকিয়ে আছেন কেন? জীবনে মেয়ে দেখেন নি কোনো দিন।”

নিবর বিড়বিড় করে বলে, “আপনার মতো এমন ধানি লঙ্কা দেখে নি জীবনে।”

মেয়েটি ভ্রু কুচকে বলে, “কি বিড়বিড় করছেন? যা বলবেন স্পষ্ট ভাবে বলুন। এভাবে মেয়েদের মতো মিনমিন করে কথা বলছেন কেন?”

নিবর মুচকি হেসে বলে, “আপনি কিন্তু অযথাই রাগ দেখাচ্ছেন আমার উপরে।”

“আমি অযথা রাগ দেখাচ্ছি আপনার উপরে।”

“ভুল কিন্তু আপনার আপনি হঠাৎ করে আমার গাড়ির সামনে চলে এসেছেন। অব্যশই তাতে আমার ভালোই হয়েছে আপনাকে তো দেখতে পেলাম।”

“মানে।”

“না কিছু না।”

“আমি কিন্তু আপনাকে পুলিশে দেব।”

নিরব গা ঝাড়া দিয়ে বলে, “দেন পুলিশে তাতে আমি কিছু মনে করবো না তবে সম্পূর্ণ দোষটা কিন্তু আপনার।”

“আমার দোষ! নিজে দোষ করে এখন বলছে আমি দোষ করেছি। এখন তো আপানকে সত্যি সত্যি পুলিশে দেব আমি। দাঁড়ান পুলিশকে আমি ফোন করছি।”

নিরব এবার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে সিরিয়াস হয়ে বলে, “আরে আরে আপনি তো খুব ডেঞ্জারাস মেয়ে নিজেই গাড়ির সামনে চলে এসেছেন আর এখন নিজের দোষটা স্বীকার না করে উল্টে আমাকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিছেন।”

“হে হুমকি দিচ্ছি পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়ার। একদম এখান থেকে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না তাহলে কিন্তু আমি চিৎকার করে সবাইকে এখানে জড়ো করব।”

নিরব কোমড়ে হাত রেখে বলে, “কি আজব ঝামেলাতে পরলাম রে বাবা।”

নিরব চাইলেই চলে যেতে পারত কিন্তু সামনে দাঁড়ানো মেয়েটা যেই ডেঞ্জারাস যদি সত্যি সত্যি চিৎকার করে বসে আর জনগণরা এসে যদি এই মেয়ের কথা শুনে গণধোলাই দিয়ে বসবে তাহলে। তার চেয়ে ভাল পুলিশের কাছে ধরা পড়া‌। অন্তত গণধোলাই থেকে রেহাই তো পাবে।

মেয়েটা পুলিশকে সত্যি সত্যি ফোন করে আর পুলিশও এসে নিবরকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ স্টেশনে গাড়িসহ।

_______

অন্যদিকে আবির ঘরে ঢুকে দেখে চারিদিকে শাড়ি লেহেঙ্গা গহনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে আর সে সবের মাঝে তিশা হাটু ঘেড়ে বসে আছে। আবির তিশা সামনে দাঁড়িয়ে বলে।

“এসব কি তিশা তোমাকে আমি তৈরি হতে বলেছি আর তুমি কি না এভাবে সব কিছু নিচে ফেলে দিয়েছো।”

তিশা আবিরের কথা শুনে উঠে দাঁড়ায় কিন্তু টু শব্দটাও করে না। আবির পুনরায় বলে, “কি হলো আমি তোমাকে কিছু জিঙ্গেস করছি তো।”

তিশা বাজখাই গলায় বলে, “আমি আর কতবার বলবো আপনাকে আমি বউ টোও সাজাতে পারবো না।”

আবির ভ্রু কুচকে বলে, “কেন? সমস্যা কি তোমার? বউ সাজলে কি তোমার কোনো জাত যাবে।”

“না আমার কোনো জাত যাবে না।”

“তাহলে প্রবলেমটা কোথায় বউ সাজলে?”

“আমি আর কত বার বলবো আপনার জন্য আমি বউ সাজতে পারবো না।”

আবির সোফাতে আরাম করে বসতে বসতে বলে, “ওকে ফাইন। তোমাকে বউ সাজানোর জন্য আমার অন্য উপায় জানা আছে। তুমি নিজে থেকে বউ সাজবে আমার জন্য।”

তিশা অবাক হয়ে বলে, “মানে।”

আবির পায়ের পা তুলে ফোনটা বৃদ্ধ আর তর্জনী আঙুল দ্বারা ঘুরাতে ঘুরাতে বলে “আসলে তুমি না একটু অন্য টাইপের মেয়ে তোমাকে যেটা করতে বলি সেটা তুমি করতেই চাও না। সোজা যেতে বললে যাও বাকা পথে আর বাকা পথে যেতে বললে যাও সোজা পথে। বিশেষ করে এই‌ কাজটা আমার ক্ষেত্রে করো আমি যেটা বলবো সেটা তুমি করবেই না। তাই তোমাকে দিয়ে কিছু করাতে হলে কিছু টেকনিক জানা দরকার যেটা আমার খুব ভাল করে জানা আছে সুইটহার্ট।”

তিশা ভ্রু কুচকে বলে, “কি বলতে চাইছেন আপনি?”

“আচ্ছা তুমি কি জানো তোমার বাবা, মা, বোন এখন কি করছে?”

“না জানি না।”

আবির একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে, “তুমি না জানলেও আমি কিন্তু জানি তোমার বাবা, মা, বোন কি করছে?”

তিশা এবার উত্তেজিত হয়ে আবিরের কাছে গিয়ে আবিরের কলার ধরে বলে, “কি করেছেন আপনি আমার বাবা, মা আর বোনের সাথে?”

আবির ইশারা করে বলে, “কলারটা ছাড়ো তারপর বলছি।”

তিশা আবিরের কলার ছেড়ে দিয়ে বলে, “কি করেছেন ওদের সাথে আপনি বলুন? যদি খারাপ কিছু করেছেন তো ওদের সাথে তাহলে কিন্তু আপানকে আমি খু’ন করে ফেলবো।”

আবির কলারটা ঠিক করে বলে, “জান রিলেক্স! আমি কিছুই করে নি তবে করবো তুমি যদি বিয়ের কনে না সাজো তাহলে।”

“আমি বলেছি তো আমি আপনার জন্য বউ সাজবো না। এক কথা কত বার বলব‌ আমি।”

“ওকে তাহলে তুমি বরং এটা দেখো তোমার বাবা, মা, বোন কি করছে?”

আবির তিশার কাছে এসে ফোনের স্ক্রিনে তিশার বাবা মাকে দেখায়। তিশা তা দেখে মুচকি হাসে কিন্তু পরক্ষনে তিশা আবিরের ফোনে যা দেখে তাতে তিশার প্রাণ যায় যায় অবস্থা।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here