সে_আমার_চিত্তমহলের_প্রেয়সী #সাবিকুন্নাহার_সুমী #রাজনীতি+রোমান্টিক #পর্ব:৩

0
334

#সে_আমার_চিত্তমহলের_প্রেয়সী
#সাবিকুন্নাহার_সুমী
#রাজনীতি+রোমান্টিক
#পর্ব:৩
(🚫দয়া করে কেউ কপি করবেন না। কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ🚫)
—ধরণীর বুক থেকে অন্ধকার নিমজ্জিত রাত বিদায় নিয়ে সূর্যের আলোক রশ্মি প্রবেশ করার পূর্বেই, মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সকাল সকাল বৃষ্টি যেন গৃহিণীদের অ*লসতা করার নিমন্ত্রণ জানিয়েছে। সকালে ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস অনেকের থাকলেও ঠান্ডা আবহাওয়ায় তাদের ঘুম যেন আজ গভীর হয়েছে। ফজর নামাজ আদায় করার পর তাসবীহ পাঠ করার জন্য, খাটে হেলান দিয়ে বসতেই ঠান্ডা আবহাওয়ায় মাহাদের মা রুবাইয়া বেগম কাঁথা শরীরে টেনে তুলতুলে বালিশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে। দীর্ঘসময় ঘুমানোর পর তীব্র মাংস আর খিচুড়ির ঘ্রাণে তার ঘুম ভেঙে যায়।খাবার গ*ন্ধে তার মস্তি*ষ্ক সচল হয়।নাসারন্ধ্রে খাবারের ঘ্রাণ প্রবেশ করতেই, তিনি বুঝতে পারেন ঘ্রাণটা খিচুড়ি আর মাংসের।ধারণা করেন আশেপাশের কোন বাড়িতে বৃষ্টি উপলক্ষে কেউ খিচুড়ি আর মাংস রান্না করছে। রুবাইয়া বেগম তাড়াহুড়ো করে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়।সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে না পারায় তার খুব আফসোস হয়।কারণ মাহাদের বাবা এনায়েত সাহেব আটটা বাজলেই তার কাপড়ের দোকানে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়বে।সাভার নিউমার্কেটে মাহাদের বাবার ছোটখাটো একটা কাপড়ের দোকান আছে। সকালে নাস্তা করেই সে দোকানেের উদ্দেশ্য রওনা দেয়।রুবাইয়া বেগম ফ্রেশ হয়ে রান্নাঘরের সম্মুখে আসতেই সে বিস্মিত নয়নে রান্নাঘরের দিকে তাকাল।মোটামুটি, বড়সড় একটা পাতিল চুলায় বসানো আর অন্য চুলায় কড়াই বসানো।মাহাদ আর এনায়েত সাহেব পাতিলে দক্ষ হাতে নাড়াচাড়া করছে। মাহাদ আর এনায়েত সাহেব রান্না করছে এটা নিয়ে রুবাইয়া বেগমের মাথা*ব্যাথা নেই।মাহাদ আর এনায়েত সাহেব টুকটাক রান্না জানেন।তার ভাবনা তিনজন মানুষের জন্য এত বড় পাতিলে এত খাবার রান্নার কারণ কি?

রুবাইয়া বেগম উৎকন্ঠা নিয়ে এনায়েত সাহেবকে জিজ্ঞেস করলেন,
~এত বড় পাতিলে এত খাবার রান্না করছেন কেন?আমরা তিনজন এত খাবার শেষ করতে পারব?

এনায়েত সাহেব বেসিন এ হাত ধুঁয়ে গলা*য় ঝুলানো গামছায় হাত মুছল। রুবাইয়া খাতুনকে বলল,

~আজ স্পেশাল কিছু অতিথিদের এই বৃষ্টিস্নাত সকালে খিচুড়ি খাওয়ার নিমন্ত্রণ করা হয়েছে রুবাইয়া। তাই এত বড় পাতিলে রান্না হচ্ছে।

রুবাইয়া খাতুন ভ্রু কুঁচকে মাহাদের দিকে তাকিয়ে বলল,
~কে এমন স্পেশাল অতিথি? যে আমাকে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখেই বাপ,ছেলে রান্না বসিয়েছ?

মাহাদের রান্না শেষ।তাই, চুলা বন্ধ করে রুবাইয়া বেগমের নিকট আসল।পেছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
~প্রতিদিন কাক ডাকা ভোরে উঠে, আমাদের জন্য খাবার তৈরি কর।আজ না হয় আমি আর বাবা-ই রান্না করলাম।

রুবাইয়া বেগম ছেলের কথায় খুশি হলেও,মুখে কাঠি*ন্যতা বজায় রেখে বললেন,
~পড়াশোনা বাদ দিয়ে রান্না করে আমার মন জয় করতে হবে না।
মাহাদ কিছু বলবে তার পূর্বেই কলিং বেল বেজে উঠল। মাহাদ মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,
~ওরা এসে গেছে মনে হয় মা।

—মাহাদ দরজা খুলতেই ছাতা মাথায় ভিতরে প্রবেশ করল আয়মান,মীরা,আনজারা।রুবাইয়া বেগমের এতক্ষণ বোধগম্য হল স্পেশাল অতিথি সম্পর্কে। সকলেই সালাম দিয়ে সোফায় বসল। রুবাইয়া বেগম হাস্যােজ্জ্বল মুখশ্রীতে সকলের ছাতা গুলো নিজ রুমের বারান্দায় রাখল।তিনি সকলের জন্যে ডাইনিং এ খাবার পরিবেশন করতে শুরু করলেন। আনজারা,মীরা,অহনাও তাকে সাহায্য করার জন্য হাতে হাতে সব খাবার এনে ডাইনিং এ রাখল।এনায়েত সাহেব দোকানে যাবে তাই রেডি হতে রুমে চলে গেল।আর,সোফায় বসে আয়মান আর মাহাদ গল্প করতে ব্যস্ত।তবে,মাহাদের সম্পূর্ন মনোযোগ মীরার দিকে। এই-যে ফর্সা শরীরে কালো থ্রি-পিছ মীরাকে কত সুন্দর মানিয়েছে।ব্যস্ত হাতে খাবারের প্লেট টেবিলে রাখছে সামান্য এই কাজটাই তার ছোঁয়ায় কত সুন্দর লাগছে। ছোট ছোট চোখজোড়া বারবার পলক ফেলছে মাহাদের চোখে তা মোহনীয় লাগছে।পাতলা ঠোঁটজোড়া যখন কথা বলার সময় নড়েচড়ে উঠে। কত লোভনীয় লাগে মাহাদের চোখে তা কি মীরা জানে?এই-যে পাশে আনজারা,অহনা আছে তাদেরকে-তো এমন লাগেনা। মাহাদের চোখে তারা কেবলই বোন সমতুল্য বন্ধু।
মাহাদের মনোযোগ নষ্ট হলো আয়মানের থাপ্প*ড়ে। দীর্ঘসময় বক*বক করার পরেও যখন মাহাদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তখন, আয়মান, মাহাদের পিঠে এক থাপ্প*ড় দিল ফিসফিস করে বলল,

~হারা*মি ল*জ্জা করেনা?এভাবে,মীরার দিকে তাকিয়ে আছিস কেন?চোখের দৃষ্টিতেই মীরাকে প্রেগ*ন্যান্ট বানানোর ধান্দা করছিস?

আয়মান এর কথায় মাহাদ আহাম্মক বনে গেল।

~একদম ফাল*তু কথা বলবিনা আয়মান।

আয়মান নিরেট কন্ঠে বলল,
~ইশশশ,চোরের বাবার বড় গলা, বিয়েটা করে মামা হওয়ার সুযোগ করে দে।এভাবে, আর কত তোদের কাহিনি দেখব।একজন দিনরাত এক করে সুয়ারেজ সিকদারকে স্মরণ করে। আরেকজন,প্রপোজ করার পর রিজেক্ট হয়ে চোখে চোখে বাসরের স্বপ্ন দেখে।

“মাহাদ” আয়মানের দিকে তাকিয়ে বলল,
~বেশি কথা না বলে খেতে আয় ভার্সিটিতে যেতে দেরি হয়ে যাবে।

খাবার শেষ করে সকলেই মাহাদের রুমে বসে আছে। আনজারা,অহনা খাটের হেডবোর্ডে হেলান দিয়ে বসে আছে। মাহাদ,আয়মান ফ্লোরে বসেছে কারণ পুরো খাট দখল করে মীরা শুয়ে আছে।
মীরা ঢেঁকুর দিয়ে
মাহাদের দিকে তাকিয়ে বলল,
~দোস্ত তোর রান্না যে পরিমাণ টেস্ট হয় তোর বউতো অনেক ভাগ্যবতী হবে।এত টেস্টি খাবার টেস্ট করার জন্য হলেও আমি তোর বউ হব।

মীরার কথায় আয়মান, মাহাদ,অহনা,আনজারা সকলেই মীরার দিকে তাকাল। মীরা মুখ ফসকে এত বড় একটা কথা বলায় নিজেই লজ্জা পেল।

পরিবেশ স্বাভাবিক করতে মীরা বলল,
~আমি চা বানিয়ে নিয়ে আসছি।তোরা আড্ডা দে।

আনজারা বলল,
~আমিও আসছি।

অহনা নিজের স্থান ত্যাগ করে মাহাদকে বলল,
~মুখ ফসকে সত্যি কথা বের হয়ে গিয়েছে দোস্ত।

মাহাদ মনে মনে আওড়ালো বউ-তো তুই আমারই হবি মীরা।

******
নাবহান ব্যাতীত তালুকদার বাড়ির প্রতিটি সদস্যই খাবার টেবিলে উপস্থিত। নাদমানের বাবা নয়ন তালুকদার, চাচা কবির তালুকদার, বোন নাইসা তালুকদার, চাচাতো ভাই সাহিম তালুকদার সকলের খাবার মোটামুটি শেষ। নাদমানের মা রাজিয়া তালুকদার, চাচি সীমা তালুকদার সকলের খাবার শেষ হলে খেতে বসবেন। বারবার অনুরোধ করার পরেও তারা সকলের খাবার শেষ না হলে বসবেনা।

নাদমান রুটি টুকরো করে ভাজি দিয়ে স্বর্ণভাকে খাইয়ে দিচ্ছে। সেও ভদ্রভাবে খাচ্ছে। নাদমান ব্যাতীত সকল পুরুষ সদস্য খাবার শেষ করে অফিসে চলে যাবে।

নাবহানকে সেই সকাল থেকে ডাকাডাকি করেও কেউ ঘুম থেকে উঠাতে পারিনি।নাদমানদের বাসার কাজের লোক জেসমিন বহুবার দরজায় নক করেও নাবহানের সাড়াশব্দ পাইনি। বেচারা গতকাল রাতে স্বর্ণভাকে কার্টুন দেখার জন্য জাগিয়েছিল পরবর্তীতে স্বর্ণভাকে, নাদমান শতচেষ্টা করেও যখন ঘুমানোর জন্য রাজি করাতে পারছিল না।তখন,নাবহানকে দায়িত্ব দিয়েছিল স্বর্ণভাকে ঘুম পাড়ানোর জন্য। ভোর রাতে স্বর্ণভাকে ঘুম পাড়াতে সক্ষম হয়েছিল।
তারপর নাবহান ঘুমিয়েছে সর্বোচ্চ তিনঘণ্টাও হয়নি।তারমধ্য,এত ডাকাডাকিতে নাবহান মুখে “চ”কারান্ত শব্দ করল।
জেসমিনের অতিরিক্ত ডাকাডাকিতে নাবহান ঘড়িতে টাইম দেখল আটটা বিশ বাজে। নয়টার মধ্যে অফিসে উপস্থিত না থাকলে নয়ন তালুকদার তাকে একগাদা কথা শোনাবে।তাড়াহুড়ো, করে ফ্রেশ হয়ে যখন সিঁড়ির শেষ প্রান্তে আসল তখন সকলের খাবার শেষ।নাইসা,সাহিম বিনাশব্দে হাত ধুঁয়ে নিজেদের রুমে চলে গেল।কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হতে। নাইসা এবার ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে আর সাহিম ফার্স্ট ইয়ারে। দুজনের কলেজ আলাদা। নয়ন তালুকদার নাবহানের দিকে তাকাল।
পরনের থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট টি-শার্ট কুঁচকে আছে। ঘুমের জন্য ভালো করে তাকাতেও পারছেনা।নয়ন তালুকদার মুখ গোল করে নিঃ*শ্বাস ছাড়ল।নাদমান, নাবহান জমজ হলেও চেহারা,উচ্চতা, গায়ের রং সব কিছু এক হলেও আচার -আচরণ, চলাফেরা সবকিছুই ভিন্ন যেন, একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। নাদমান গম্ভীর, বিচক্ষন,স্বল্পভাষী,দায়িত্বশীল আর নাবহান পুরোটাই উল্টো চঞ্চল, বাঁচাল,দায়িত্ব পালনে অনীহা।

টেবিলে বসতে যাবে তার পূর্বেই নয়ন তালুকদার রাগমিশ্রিত কন্ঠে নাবহানকে বলল,
~দেরী হল কেন?

নাবহান,, নাদমান এর দিকে তাকিয়ে বলল,
~কাল সারারাত স্বর্ণভাকে ঘুম পাড়িয়ে ছিলাম।

নাদমান গম্ভীর কন্ঠে জেসমিনকে বলল,
~স্বর্ণভাকে নিয়ে যাও।আমি পার্টি অফিসে যাচ্ছি। কোন প্রয়োজন হলে কল দিও।আর হ্যাঁ আমি না আসা পর্যন্ত ওর সাথেই থাকবে। খাবার ঠিকমতো খাওয়াবে।

জেসমিন ঘাড় নাড়িয়ে বলল,
~ঠিক আছে ভাই।আফনি ছিন্তা কইরেন না।

নাদমান, মেয়ের কপালে চুমুর পরশ এঁকে দিল।স্বর্ণভাও, নাদমানের গালে চুমু দিল।জেসমিন, স্বর্ণভাকে সাথে নিয়ে দুইতলায় চলে গেল।
এতসময় সকলেই চুপ ছিল বাচ্চার সামনে-তো আর হৈচৈ করা যায়না।

নাবহানকে আবারও নয়ন তালুকদার এর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হলো।
~তুমি গত চারদিন যাবৎ অফিসে গিয়েও ঝিমাচ্ছ।সে খবর কানে এসেছে আমার।তুমি কি ভেবেছ সারারাত বাচ্চাদের মতো কার্টুন দেখবে আর অফিসে ঝিমাবে।আর আমি মেনে নিব?বাবার বিজনেস বলে ছাড় পাবে না।বারবার বলছি নাবহান রুটিনে আস।

নাদমানের চাচা,,, ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বলল,
~ভাই আর ব*কাঝকা করনা-তো।ছেলেরা এখন বড় হয়েছে আর আমরা-তো আছিই। আমরা থাকতে ওদের কেন এত কষ্ট করতে হবে।

নাবহান গাল চুলকিয়ে হাসল।বাবার কথা তার কানে প্রবেশ করেছে বলে মনে হয়না।

নয়ন তালুকদার রা*গী চোখে ভাইয়ের দিকে তাকাল।
সীমা তালুকদার রুমে গিয়েছেন অনেকক্ষন।রাজিয়া তালুকদার নাবহানের প্লেটে রুটি,ভাজি তুলে দিল।
ছেলের মাথায় হাত রেখে বলল,
~স্বর্ণভা কার্টুন দেখলে মানা যায়।কিন্তু, তুই এত বড় ছেলে হয়ে কেন কার্টুন দেখিস?
~ওফফ,মা খেতে দাও-তো।

নাবহান চেয়ার টেনে নাদমানের পাশের টেবিলে বসল

নাদমানের কানের নিকট ফিসফিস করে বলল,
~তোর জন্য এতগুলো কথা শুনলাম, তোকে আমি দেখে নিব নাদমান।

নাদমান অগ্নিচোখে নাবহানের দিকে তাকিয়ে বলল,
~সাহসতো কম না তুই আমাকে হুমকি দিচ্ছিস।আমি না তোর বড় ভাই।
~পাঁচ মিনিটের বড় হু। তোকে কি এমপি বলে কুর্নিশ করব?

নাদমান আর তর্কে না জড়িয়ে বিদায় নিয়ে পার্টি অফিসে রওনা হল। তাদের সম্পর্কটাই এমন দুষ্ট, মিষ্টি।
******
ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে মাথায় হিজাব পিন আপ করছে আনজারা।আনজারার বাবা মাহমুদ সাহেব এর স্টুডেন্ট এর বাসায় আজ তাদের পুরো পরিবার নিমন্ত্রিত। স্টুডেন্ট এর কয়েকদিন পর জন্মদিন। জন্মদিন পালন করা ইসলামে হারাম তাই তার পরিবার জন্মদিন পালন না করে গরীব, অসহায়দের আজ দুপুরে খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর, সকল প্রফেসর এর পরিবারকেও নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। সেখানেই যাওয়ার জন্য আনজারা রেডি হচ্ছে। কি,সুন্দর উদ্যোগ হাজার হাজার টাকা খরচ করে এসব হারাম অনুষ্ঠান না করে গরীব,অসহায়দের খাওয়ানোর এই নিয়মটা আনজারার ভালো লাগল এই,যেন এক অন্যরকম প্রশান্তি।
মাহমুদ সাহেব মেয়ের রুমে প্রবেশ করল,
~হয়েছে মা?
~জ্বি আব্বু চল।
*****
—-বিশাল বড় এক ক্লাবে খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। কয়েকশো মানুষের মিলনমেলায় ক্লাবের আনাচে-কানাচে পরিপূর্ণ। ছোট, বড়,বয়স্ক নরনারী একবেলার খাবার খেতে পেরে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছে।সকলেই দোয়া করছে এই মিলনমেলার আয়োজন দাতাকে।আনজারার বাবা,মা আসার সাথে সাথেই ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।আশেপাশে পরিচিত লোকদের সাথে কথা বলায়।আনজারারও সেই মহান ব্যাক্তটিকে একনজর দেখার ইচ্ছে হল।আশেপাশে তাকাতেই আনজারার চোখ আটকে গেল এক গুলু মুলু বাচ্চার দিকে, পিংক কালারের বেবি ফ্রক, লম্বা বিনুনির বাচ্চাটিকে কোলে নেওয়ার তীব্র ইচ্ছে হানা দিল আনজারার মনে। আনজারা ধীরপায়ে বাচ্চাটির নিকট গেল।বাচ্চাটিকে কোলে নিতেই বাচ্চা তার কোলে উঠার অনিহা প্রকাশ করল।
আনজারা বাচ্চাটিকে তার আয়ত্তে আনার জন্য বলল,
~তোমাকে এত সুন্দর করে কে বিনুনি গেঁথে দিয়েছে?
আমাকে কেউ বিনুনি করে দেয় না।

আনজারার কথায় বাচ্চাটি আনাজারর নিকটে আসল।নিজের ছোট ছোট হাত দিয়ে মুখ চেপে খিলখিল করে হাসল।
বাচ্চাটির খিলখিল হাসিতে আনজারা মন খুশিতে নেচে উঠলো।

বাচ্চাটি আনজারাকে বলল,
~তোমাকে কেউ বিনুনি করে দেয় না?তুমি এখানে বস।কোথাও যাবে না কিন্তু, আমি এখনই আসছি।

বলেই বাচ্চাটি দৌড়ে চলে গেল।আনজারাও একটা চেয়ার টেনে বসল।একটু পরে বাচ্চাটি এসে আনজারাকে বলল,
~আন্টি আসো বাবাই তোমাকে বিনুনি করে দিবে।

আনজারা অবাক হল।
~বাবাই!

তারপর বাচ্চাটি আঙুল উঁচিয়ে ইশারা করে তার বাবাইকে দেখাল।
আনজারা সম্মুখে দন্ডায়মান সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত, সুঠাম দেহের শ্যামবর্ণের পুরুষটিকে দেখে অবাক হল। এই সে পুরুষ চারবছর পূর্বে তিনমাসের বাচ্চা কোলে নিয়ে যে তাকে বিয়ে করতে গিয়েছিল।একই শহরের একই উপজেলায় থাকার পরেও চারবছর পর সরাসরি পুরুষটির সাথে আজই প্রথম দেখা।আনজারা বাচ্চাটির দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল।এটাই নাদমান সাইক তালুকদার এর মেয়ে স্বর্ণভা।

স্বর্ণভা আনজারা আঙুল ধরে বলল,
~আন্টি আস, বাবাই বিনুনি গেঁথে দিবে।
চলবে—-
(আজকের পর্বে প্রকাশিত নতুন চরিত্র :সাহিম,নাইসা,কবির তালুকদার, সীমা তালুকদার,নয়ন তালুকদার
🌹🌹নাদমানের বয়স এডিট করে দুই বছর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
নাদমান সাইক তালুকদার এর বর্তমান বয়স ৩০ বছর।
দয়া করে মন্তব্য করবেন। এই পোস্টে ৩০০+ রিয়েক্ট হলে বোনাস পর্ব দিব)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here