নিশীভাতি #১৫তম_পর্ব

0
442

#নিশীভাতি
#১৫তম_পর্ব

ঠিক তখন হন্তদন্তের মতো দাদার ঘরে প্রবেশ করলো রাশাদ। তার চোখজোড়া লাল হয়ে আছে। চোয়াল শক্ত। কঠিন স্বরে বললো,
“সকালে আপনে বাজারে গেছিলেন?”

কাওছার থতমত খেলো। অপ্রস্তুত গলায় বললো,
“হ”

রাশাদ কঠিন দৃষ্টিতে তাকালো তার দিকে। পরক্ষণেই দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে শান্ত গলায় বললো,
“এই শুক্রবার ই হুমায়রার বিয়ে, দাদা আপনি ফাইজান ইকবালকে খবর দেন”

শামসু মিঞা নড়েচড়ে বসলেন। বৃদ্ধ আঁখিতে ধরা দিলো অসীম বিস্ময়। এতোকাল রাশাদ-ই এই বিয়ের বিরোধিতা করছিলো। অথচ আজ সেই বিয়ের কথা বলছে। অবাক স্বরে শুধালো,
“হইছে কি রাশাদ?”
“সেইটা আপনার সুপুত্রকে জিজ্ঞেস করেন, কি হলো। বলেন না কেনো কিছু আব্বা”

কাওছার শুকনো ঢোক গিললো। এতো মিয়ে যাওয়া আবহাওয়াতেও সে তরতর করে ঘামছে। হাতের উলটো পাশ দিয়ে কপালের ঘাম মুছে ভীত স্বরে বললো,
“আমার দোষ নাই রাশাদ, শফি-ই আমারে উছকাইছে”
“আর উছকাইছে বলে বাজারের মাঝখানে ওরে মারবেন?”

শামসু মিঞা এবার অধৈর্য্য হলেন। ভারিক্কী স্বরে বললেন,
“হইছে ডা কি?”

রাশাদ গাল ফুলিয়ে তপ্ত নিঃশ্বাস ছাড়লো। ধীরে ধীরে ঘটনা উন্মোচিত হলো। মধ্যাগ্নের প্রথমভাগে কাওছার জোরপূর্বক বাজারে গিয়েছিলো। আতিয়া খাতুনের থেকে বাজারের ব্যাগ নিতে গেলে তিনি মুখ গোমড়া করে বলেন,
“তোর যাওনের কাম নাই”
“এডা কিতা কও আম্মা, আমি যামু না?”
“বুবুর বিয়া হওনের আগ পর্যন্ত বাড়িত থাক”

কিন্তু কাওছার শোনে না। সে আজ ঘটা করে বাজার করবে। গরুর মাংস কিনবে, ব্যাগ ভরে আজ সবজি কিনবে। রাশাদ এতোকাল যে টাকা পাঠিয়ে তা অক্ষত আছে। তাই খরচ করতে ছুটলো সে। বাজারের স্বর্ণকার মতিল তফরদারের কাছ থেকে হুমায়রার জন্য গহনার কথাও বলে আসবে। বিয়ে বলে কথা তাও চেয়ারম্যানের ভাগ্নের সাথে। কিন্তু বাজারে গিয়েই বাধলো গোল। দেখা হলো শফির সাথে। শফি সেদিনের অপমান, মারের কথা ভুলে নি। যদিও রাশাদ তার টাকা বেশির ভাগ ই চুক্তা করে দিয়েছে। কিন্তু অপমানের আঘাত এখন শুকায় নি। গ্রামভর্তি লোকের সামনে তাকে অপদস্থ, লাঞ্ছিত হতে হয়েছে। এমন কি তার স্ত্রী তাকে পরিত্যাগ করেছে। মেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছে। বলেছে তালাক দিবে। এবং দেনমোহরের টাকা ফেরত চেয়েছে। ব্যাপারটি মোটেই হজম হচ্ছে না শফির। কি পেলো সে? না হুমায়রাকে পেলো, না পরিবার। সম্মান খুইয়ে দিশেহারা হয়ে গিয়েছে সে। তাই যখন কাওছারকে পেলো নিজের সংযম হারিয়ে ফেলল। মাঝ বাজারে অপমান করার উদ্দেশ্যে বলেই উঠলো,
“কাওছার চাচা দেহি, সাপের খোপ দিয়ে বের হইলা নি?”

শফির কথা শুনে কাওছার চুপসে গেলো। বেশি কথা বলতে চাইলো না। কিন্তু শফির মন কি তাতে ভরে? সে বারবার তাকে প্ররোচিত করার চেষ্টায় লেগে পড়লো। শেষ অবধি বলেই ফেললো,
“তুমি তো টেহা পাইলে সব ই করতে পারো, তা আমি যদি টেহা দেই নিজের মাইয়ার লগে হুইতে পারবা নি?”

শফির কথাটা শুনে নিজেকে শান্ত রাখতে পারলো না কাওছার। এলোপাথাড়ি মারতে শুরু করলো। বাজারে হট্টোগোল তৈরি হলো। মানুষ জড়ো হলো, কেউ এলো তাদের বিবাদ থামাতে, কেউ বা নিজের মনোরঞ্জনের খোড়াক জোগালো। সেই মাঝে নানা অশ্রাব্য কথা বললো শফি। হুমায়রার চরিত্রের কালি লেপনে কিছুই বাদ রাখলো না। বিজ্ঞান বলে আলোর গতি বেশি, তবে কথায় ভুল আছে। আলোর চেয়েও দ্রুত ছড়ায় রটনা। তাই হলো, বাজারের এই কথা আগুনের বেগে ছড়ালো। সেখান থেকে রাশাদের কানেও এলো, সেই সাথে এলো হুমায়রাকে নিয়ে অশ্রাব্য রটনাগুলো। বোনের চরিত্রের এমন কালিমা সহ্য হল না রাশাদের। ইচ্ছে হলো শফির জিহবা টেনে ছিড়ে ফেলতে। রাগ মস্তিষ্ক অসাড় করে তুললো রাশাদের। কিন্তু পর মুহূর্তেই ফাইজানের কথা স্মরণ হলো, “এই নোংরা জগৎ থেকে একটা সুন্দর পরিবেশ দিবো তাকে” — সত্যি এই পরিবেশে থাকলে সদ্যফুটন্ত স্নিগ্ধ কুড়িটা অকালে ঝড়ে যাবে। থেকে যাবে শুধু মূর্ছানো অবশিষ্ট। তাই নিজের মনের বিরুদ্ধেই কঠিন সিদ্ধান্ত নিলো রাশাদ। পরিশেষে কাওছারের পানে চেয়ে কঠিন স্বরে বললো,
“বিয়ে অবধি আপনে ঘর থেইক্যা বের হবেন না”

*******

চেয়ারম্যান বারির আমেজেই আনন্দের সৌরভ। শরীফাকে এতটা প্রফুল্ল শেষ কবে দেখেছে মনে নেই দেলওয়ারের। বোন মোটামোটি তাজমহল বানানোর উদ্বেগ নিয়েছে নিজের পুত্রবধুর জন্য। মোট বিশ ভরি স্বর্ণ বানিয়েছে। পাঁচখানা দামী শাড়ি। এর মাঝে বিয়েতে কি পড়বে সেই সিদ্ধান্ত ই নিতে পারছে না। হুমায়রার আত্মিয়স্বজন মিলিয়ে সতেরোটা শাড়ি কিনেছে। গ্রামের প্রতিটা বউকে সাদা পাড়ের শাড়ি দিচ্ছে সে। সবচেয়ে ভালো বাবুর্চিকে খবর দিয়েছে। ভাইছাকে জানিয়ে দিয়েছে মোট দুখানা গরু জবাই দিবে। সালমা ননদের পাগলামী দেখে বলল,
“শরীফা দেওয়ালেও নজর দেয়, এমন পাগলামি করতে নেই”

কে শোনে কার কথা! পাগলামী তো বাড়লো যখন হুমায়রাকে নিয়ে এলো ফাইজান। কোনো কথা না বলেই হুমায়রাকে নিজ ঘর নিয়ে গেলো শরীফা। একের পর এক শাড়ি তার গায়ে ফেলে দেখতে লাগলো কোনটা মানাবে। হুমায়রা থতমত খেলো। কিশোরী শিটিয়ে গেলো ভয়ে। বিব্রত স্বরে বলল,
“চাচী এগুলো কেন?”
“বা রে, বিয়েতে কি পড়বা? জানি আমার বউমা সুন্দর কিন্তু আমি চাই আমার বউ মাকে যেনো সবচেয়ে সুন্দর লাগে।“

শরীফার কথায় আকাশ থেকে পড়লো যেনো হুমায়রা। ফাইজান প্রগাঢ় দৃষ্টিতে কিশোরীর ভ্রান্ত মুখখানা দেখলো। ঠোঁট গোল করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
“মা, উনি জানেন না। এমন আচারণ করলে তোমাকে পাগল ভাববে”
“তুমি জানো না হুমায়রা? রাশাদ বিয়েতে মত দিয়ে দিয়েছে”

কথাখানা শুনতেই স্তব্ধ হলো কিশোরীর। মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষে আন্দোলিত হলো যেনো কথাটা। ধাতস্থ হতে সময় নিলো। সাথে সাথেই শত প্রশ্ন হামলে পড়লো মনে। চাপা কষ্টে হৃদয়ভারী হলো। চোখ ঝাপসা হলো ঈষৎ, ভাইজান ও তার হাত ছেড়ে দিলো কি!

*******

জানালার বাহিরে একনজর দেখলো ইলহা। হুমায়রা ফিরে নি। আজ তাকে বাজারে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। বাসা ছাড়ার সময় টাকা নিয়ে তো বের হয়েছিলো, কিন্তু জামাকাপড়, প্রয়োজনীয় জিনিস আনে নি। গন্তব্যহীন পথে পা বাড়ালে এই ঠুংকো জিনিসের প্রতি প্রাধান্য থাকে না। কিন্তু এখন যখন একটা ছাদের ব্যবস্থা হয়েছে, নিশ্চিন্তে, নিঃসংকোচে নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে তখন এই নিত্য প্রয়োজন বিরাট ঝামেলা তৈরি করছে। আজ তো হুমায়রার জামা পড়েই কাটিয়েছে। কিন্তু আর কতদিন। তাই ব্যাগখানা হাতে নিয়েই বেরিয়ে পড়লো সে। সন্ধ্যার কালচে আঁধার ধীরে ধীরে গ্রাস করেছে আসমানী অম্বর। পাতার ফাঁকে উজ্জ্বল চাঁদখানা দেখা যাচ্ছে। ইলহা উঠান পার হতেই মুখোমুখি হলো রাশাদের সাথে। সকালের ঘটনাটা স্মৃতিতে এখনো স্পষ্ট ইলহার। শুভ্র গালজোড়া লাল হয়ে গেলো। লজ্জিত দৃষ্টি নত হলো। রাশাদ সন্দীহান কিন্তু নম্র স্বরে শুধালো,
“কোথায় যাচ্ছেন আপনি?”
“একটু বাজারে, কিছু কেনার ছিলো”
“একা যাবেন না, হুমায়রাকে নিয়ে যান”

প্রগাঢ় স্বরে কথা বললো রাশাদ। কথাটায় কিছু একটা ছিলো যেন! আদেশ, খবরদারি নাকি পরোয়ার রেশ! কিন্তু রাশাদের নিপুণ সতর্কতার কারণে আঁচ করতে পারলো না ইলহা। নিচু গলায় উত্তর দিলো,
“হুমায়রা তো বাসায় ফিরে নি?”
“এখনো ফিরে নি?”

রাশাদের কন্ঠে ছলকে উঠলো উদ্বিগ্নতা। হাতের কালো বেল্টের পুরানো ঘড়িটা চোখ বুলালো। গম্ভীর হলো স্বর,
“ফাইজান সাহেব তো বলেছিলেন দেরি হবে না। আচ্ছা, চলুন আমি যাচ্ছি আপনার সাথে”
“আপনি যাবেন?”

ইলহা বিস্মিত হলো। রাশাদ খুব স্বাভাবিক স্বরে বললো,
“এই সন্ধ্যার সময় নিশ্চয়ই আমি আপনাকে একা ছাড়বো না”

ইলহা হাসলো। তাচ্ছিল্যভরে বলল,
“আমার জন্যে আপনি চিন্তিত বুঝি?”
“যতদিন আমার বাড়ি আছেন, আপনি আমার দায়িত্ব। তাই চিন্তিত হব, এটাই স্বাভাবিক। চলুন”

ইলহা কিয়ৎক্ষণ চুপ করে রইলো। গভীর মনোযোগে সামনের মানুষটিকে দেখলো। অন্ধকারে তার মুখখানা দেখা যাচ্ছে না তবে তার গাঢ় নয়নের আঁচ ঠিক পাচ্ছে। মানুষটিকে খুব অদ্ভুত লাগে, একই সময় কতটা নরম আবার একই সময়ে খুব কঠিন____

*********

চেয়ারম্যান বাড়িতে পুতুলের মতো বসে ছিলো হুমায়রা। কথা নেই, হাসি নেই। যেনো কাঠের পুতুল, জান তো আছে, শুধু অনুভূতি নেই। ব্যাপারটা দৃষ্টিগোচর হলো না ফাইজানের। মায়ের উম্মাদনায় কিছুই বলার সাহস করে পায় নি। কিন্তু সন্ধ্যা হতেই বললো,
“ওকে বাড়ি নিয়ে যাবো। রাশাদ সাহেবের সাথে সন্ধ্যা পর্যন্তই কথা হয়েছে”

চারিদিকে নিগুঢ় কালচে নিরবতা। আলো নেই পথে। ফাইজানের হাতে একটি কম ব্যাটারীর টর্চ। সেই ক্ষীন আলোতেই পথখানা স্পষ্ট হচ্ছে। চারিদিকে অলীক স্তব্ধতা। ঝিঝিপোকার ডাকটা কানে রিদম তৈরি করছে। দুটো মানুষ চলছে অথচ কোনো কথা নেই। আমানের সাথে বের হবার সময় হুমায়রার দেখা হয়েছিলো। সে কিছু বলতে চাইলো। কিন্তু ততক্ষণে ফাইজান এসে দাঁড়িয়েছিলো তার পাশে। বেশ অহমীকার সাথেই বলেছিলো,
“তোর ভাবীর সাথে দেখা হয়েছে?”

আমান উত্তর দিলো না। শুধু কাতর দৃষ্টিত চেয়ে রইলো। হুমায়রা নিশ্চুপ ছিলো। এখনো সে নিশ্চুপ। নীরবতা ভাঙ্গলো ফাইজান। অবিচল স্বরে বললো,
“আপনার কাপড়গুলো পছন্দ হয় নি?”
“না—সুন্দর”
“তাহলে মুখ এমন বিষন্ন কেনো? আমাকে বিয়ে করতে হচ্ছে বলে?”

হুমায়রা উত্তর দিলো না। তার মনোযোগ আধার চিরে রাস্তায় গোল করে থাকা আলোকগুচ্ছের দিকে। ফাইজান একবার চাইলো নিশ্চুপ কিশোরীর দিকে। তারপর কণ্ঠ নরম করে বললো,
“আমাকে আপনার এতো অপছন্দ কেনো?”

এবার পা থামলো হুমায়রার। মনে মনে অনেকগুলো কারণ দাঁড় করালো। কিন্তু সেই কারঙুলো এখন তুচ্ছ। তাই খুব নিচু গলায় বলল,
“আমি পড়তে চাই, আমি চাই না আমার পড়াশোনা বন্ধ হোক”
“হবে না, আপনার যতটা ভয় লাগছে ততটা ভয়ের কোনো কারণ নেই। আপনার কোনো ইচ্ছের অনাদর হবে না। আমি মানুষটি হয়তো আপনার পছন্দের সারিতে পড়ি না। কিন্তু কথা দিচ্ছি আপনার কখনো অসুবিধা হবে ঐ বাড়িতে। অনেকে অনেক কথা বলবে কিন্তু সেগুলো মাথায় নিবেন না। সবার অতীত থাকে। আপনার ও তো আছে। আমি তো ঘাটছি না। তাই না?“
“আপনি আমাকে কেন বিয়ে করছেন?’

খুব ধীর স্বরে প্রশ্ন শুধালো হুমায়রা। ফাইজান মৃদু হেসে বলল,
“কারণ আমার মার ধারণা আপনি আমার জন্য যথেষ্ট। আচ্ছা একটা প্রশ্ন করবো?”
“জি?”
“আপনি পড়তে খুব ভালোবাসেন?”
“জি”
“কখনো ইচ্ছে হলে আমাকেও পড়তে পারেন, মানুষটা এতোও খারাপ নই আমি”

হতবাক চোখে চাইলো হুমায়রা। কাঠখোট্টা মানুষটি কি হাসলো! অন্ধকারে বোঝা গেলো না। হাফসার কথাটা জিজ্ঞে করতে ইচ্ছে হলো। কিন্তু করতে পারলো না। ঠিক তখন ই ভেসে এলো শেয়ালের ডাক। খপ করে ফাইজানের বাহুটা ধরলো কিশোরী। ফাইজান নড়লো না। বরং খুব নিভৃতে হুমায়রার হাতটা আগলে ধরলো। আশ্বাস দিয়ে বলল,
“আমি আছি”

**********

হুমায়রার বাসায় হলুদের অনুষ্ঠানের ঝাকজমক আয়োজন। কাগজ দিয়ে গেট বানানো হয়েছে। কাঁচা হলুদ বাটা হয়েছে। বরের বাড়ি থেকে তত্ত্ব এসেছে। সকলের চোখ যেনো ছানাবড়া হয়ে আছে। এতো গহনা, এতো শাড়ি, এতো আড়ম্বড়তা! আনন্দের সন্ধ্যাটায় ফাঁটল ধরালো এক অদ্ভুত খবর। বড় মাঠের শেষ প্রান্তের অশ্বথ গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে শফির লা/শ…………………

চলবে
[অয়নের স্ত্রীর নাম প্রাপ্তি। বিগত দেড় বছর যাবৎ মেয়েটি নিখোঁজ। কোথায় আছে! কি করছে! আদৌ বেঁছে আছে কি না কেউ জানে না। দিনটি ছিলো তাদের বিবাহ বার্ষিকী, প্রাপ্তি তার স্বামীকে চমকে দেবার জন্য সারপ্রাইজ পরিকল্পনা করেছিলো। অয়ন তার সারপ্রাইজটা পেলো ঠিক ই কিন্তু যেখানে তাদের দেখা করার কথা ছিলো সেখানে প্রাপ্তিকে পেলো না। নিজ ক্ষমতা, টাকা পয়সা সবকিছু দিয়ে অয়ন তার স্ত্রীকে খোঁজার চেষ্টা করলো। কিন্তু ব্যর্থতাকেই বরণ করতে হলো। পুলিশ ও হাত তুলে ফেলেছে। প্রাপ্তি যেনো হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো। আজ অবধি সে নিখোঁজ অথচ একটা অচেনা মেয়ে দাবি করছে সে প্রাপ্তি। এটা কিভাবে সম্ভব! মেয়েটির গড়ণ প্রাপ্তির মতো হলেও তার চেহারা একেবারেই ভিন্ন। চোখ, ঠোঁট, চাহনী, নাক সব ভিন্ন। অয়নের মাথা ধরে এসেছে। ক্রোধ, বিষাদ, শুন্যতা তাকে ঘিরে ধরলো। বুকের ভেতর ছাই চাপা আগুনটা দাও দাও করে জ্বলে উঠলো। তীব্র কন্ঠে বলে উঠলো,
“আমি আপনাকে চিনি না, আল্লাহর ওয়াস্তে আমার ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিবেন না!”
“অয়ন, তুমি সত্যি আমাকে চিনতে পারছো না? তুমি ই তো বলতে আমাকে নাকি অন্ধকারেও ঠিক চিনে পারবে! সব কি মিথ্যে ছিলো তবে! তুমি বলতে আমার অস্তিত্ব তোমার রক্তে মিশে আছে! সব মিথ্যে?”

অয়ন তার দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না। মেয়েটার ভেজা কন্ঠ গায়ে কাঁটার মতো বিধছে। এই কথাগুলো সে শুধু প্রাপ্তিকে বলেছিলো। মেয়েটি কিভাবে জানলো! কে এই মেয়ে
তন্দ্রাবিলাসী (অংশ বিশেষ)

পুরো গল্পটা এখন পেয়ে যাবেন বইটই এপে। দাম মাত্র ৮৫ টাকা!

তন্দ্রাবিলাসী: মূল্য – ৮৫টাকা।
https://link.boitoi.com.bd/RmQN

মুশফিকা রহমান মৈথি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here