#আঁধারের_তারাবাজি
#অভ্রায়ীনি_ঐশি
#পর্ব_৮
মসজিদের ফ্লোরে বসে আল্লাহর কাছে আহাজারি করা এক সুঠাম গড়নের শ্যাম সুন্দর ছেলেটাকে প্রায় কম বেশি অনেকেরই চোখে পড়ছে।অনেকেরই হৃদয় কাদছে।তারাও যে আল্লাহর সন্নিকটে উপস্থিত। আল্লাহরই এক বান্দা নিজের সকল বেদনার কথা অশ্রুর সহীত জানান দিচ্ছে আল্লাহকে।,,,সেই ছেলেটা আর কেউ নয়,,,মোয়ান।,,,
বোনের জন্য তার হৃদয় নিঙড়ানো অনুভূতি গুলো সে প্রকাশ করছে স্বয়ং আল্লাহর দরবারে।,,সে যে আর পারছে না চেপে রাখতে এই তিক্ত অনুভুতি গুলোকে,,,,,,,, সে যে নিজের সামর্থ নেই বলে আজ তার বোনকে একটু খানি আলোর ছটা দেখাতে পারছে না,,,এটা যে আর সইতে পারছে না সে।নিজেকেই মোমের আগে কোরবানি দিতে ইচ্ছে করছে তার।কিন্তু আপসোস,,তাও যে পারছে না।তার কাধে যে হরেক রকম দায়িত্বের ঝুলি,,,পরিবারের বড় সন্তান সে,,,এছাড়াও একটি মাত্র পুত্র যার মুখের দিকে চেয়েই বাকিটা জীবন কাটবে ঐ বয়ষ্ক মা বাবা।সব থেকে বড় কথা, সে একটি কোমল ফুলের বড় ভাই।,, এই ভাই শব্দটা দু অক্ষরের হলেও এর ভার যে ভীষণ ভারী।তা বইতে যে হবে তাকে।৷ এই মুহুর্তে নিজেকে শেষ করা মানে তার কাছে তার ঐ কোমল ফুলটিকেও দুমড়ে মুছড়ে ফেলে দেওয়া।সম্পুর্ন একটি পরিবার শেষ করে দেওয়া।,,,তাই চাইলেও এই বুঝদার মোয়ান অবুঝের মতো কাজ করতে পারবে না।,,,, কথা গুলো ভেবে মনটা আরো বিষিয়ে গেলো,,,মৃদু কন্ঠে কাদতে কাদতে বললো…
“কেন করলে তুমি এমনটা আল্লাহ?কেন আমাদের পরিবারে এক ছটা সুখ দিলে না?,,নাই বা দিলে ধন সম্পদ,,না দিলে অঢেল টাকার মালিক বানিয়ে। বড়লোকি সমাজও চাইনি,,,তাহলে কেন এই দুর্ভিক্ষের ন্যয় ভেসে আসা পরিবারের চোখের মনিকে তুমি এতো যন্ত্রণা দিলে?,,,যদি এভাবে জানিয়ে নিয়ে যাওয়ারই হয়,,তাহলে কেন তাকে পাঠালে আমাদের এই ছোট্ট সংসারে।নিজের কাছেই রেখে দিলেই তো পারতে। কেন শুধু শুধু মায়া বাড়ালে এতো বছর ধরে?,,,,,,”
গলা ধরে এলো মোয়ানের,,,মাথা ঝুকিয়ে নিশ্চল কন্ঠে বললো…
“আমার বোনিটাকে ঠিক করে দাও না আল্লাহ,,,এই অসম্ভব টা একটু সম্ভব করো না?,,,তুমি চাইলে তো সব পারো?,,,আমার এই দোয়াটা কবুল করো না আল্লাহ?,,,দয়া করে কবুল করো..”
কাধে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে ফিরে তাকালো মোয়ান,,,,নভের জিজ্ঞেসু দৃষ্টি তার দিকেই নিবদ্ধ।,,, দ্রুত চোখ মুছে নিলো মোয়ান।নিজেকে গুটিয়ে সামলেও নিলো।ভাবটা এমন যেন এতক্ষণ কিছুই হয়নি।,,,,,হয়তো একেই বলে পুরুষ মানুষ।,,,
“ক্ কিছু বলবেন স্যার?”
নভ চুপ রইলো..
“আ্ আপনি এখানে?,, ব্ বোনির জ্ঞান ফিরেছে?”
এবার নভ গম্ভীর মুখে বললো..
“চলো,,,”
মোয়ান বিচলিত হলো..
“ব্ বোনি ঠিক আছে?”
“হুম,,,তুমি উঠো।হসপিটাল চলো।মোমের কাছে।”
মোয়ান উঠে দাড়ালো,,,,
“হ্যা,,,,আপনি যান,,আমি রিসেপশনে কথা বলেই আসছি।”
“লাগবে না,,,,আমি বিল পে করে দিয়েছি এখন চলো…”
মোয়ান অবাক হলো..
“স্যার,,আপনি কেন?,,,আমি তো দিতামই,,,”
“সমস্যা নেই..”
হাটা ধরলো নভ,,,সাথে সাথে মোয়ানও,,,,।
মাথা ঝুকালো সে..
“শুধু শুধু ঋনের বোঝাটা আরেকটু বাড়িয়ে দিলেন।,,,”
“যদি বলি সেই ঋণ আর শোধ করতে হবে না?”
অবাক হলো মোয়ান,,,,বিচলিত কন্ঠে বললো..
“ক্ কি বলছেন স্যার?,,,”
“হুম,, ”
মোয়ান মাথা নোয়ালো..
“এটা হয় না স্যার,,,,কারোর কাছে ঋণ রেখে আল্লাহর কাছে দোষী হতে চাই না।”
“রিন কোথায়?,,,সময় হলে আমি আমার পাওনা জিনিস চেয়ে নেবো।,,,এখন চলো।”
বলতে বলতেই হাটার গতি বাড়িয়ে দিলো নভ,,,,মোয়ান নভের কথা খানা বোধগম্য করতে পারলো না।তাই নিজেও হাটা ধরলো হসপিটালের দিকে,,,মাত্র দু মিনিটেরই পথ,, তখন হসপিটালে নিজেকে অসহায় লাগায় ছুটে এসেছিলো আল্লাহর দরবারে।,,,
::::হসপিটাল ফিরতেই মোমের কেবিনের বাইরে চোখে পড়লো তেজকে।ফোম টিপছে সে।,,,নভ আর মোয়ানকে দেখেই ফোন পকেটে পুরে উঠে দাড়ালো…
“ভেতরে নার্স আছে,,চিন্তা নেই।আর বললো মোমের জ্ঞান ফিরেছে।”
নভ আর মোয়ান,, দুজনেই ভেতরে প্রবেশ করলো।,,সাথে সাথে তেজও ঢুকলো।,,
মোমের এই পরিস্থিতির ব্যপারে নভ অবগত না হলেও মোয়ান সম্পুর্নই অবগত।কিসের পর কি হয় তা ঠের জানা।,,,গত একবছরে প্রায় ১০ বারের উপরে এমনটা চলে আসছে যে।,,,,,
মোম শান্ত শরীর নিয়ে নির্বিকার মাথাটা হেলিয়ে এক পাশে তাকিয়ে আছে।,,,জানে এখন হাজার চেষ্টা করলেও নিজ শক্তি ব্যয় করে উঠে বসতে পারবে না।হাত পা নাড়ানোই যে দায়।,,,তাই আর বৃথা চেষ্টাও করলো না।,,,,অপেক্ষা করতে লাগল ভাইয়ের আসার।,,,,
মোয়ান আসলো,,,,আলতো হাতে মোমের চুলে বুলিয়ে দিলো,,,,কপালে একটা স্নেহের পরশ একে বললো…
“খুব বেশি খারাপ লাগছে বোনি?”
মোম চোখ উলটে তাকালো মোয়ানের দিকে।,,,ভাঙা কন্ঠে বললো…
“উহুম,,, ”
মোয়ান মুচকি হাসলো।,,,,মোম আবারও ভাঙা স্বর নিয়ে বলে উঠলো…
“কত খরচ হয়েছে ভাইয়া?”
মোয়ান একটু থামলো।তারপর হাসার চেষ্টা করে বললো…
“কতই আর হবে বল?,,,ঐ আর কি ৫ থেকে ৬শো টাকা গেলো।ব্যাস।,,,”
“সত্যি বলছো তো ভাইয়া?”
মোয়ানের হাসি আরো গাঢ় হলো..
“ধুর পাগলি,,,তো্ তোকে মিথ্যা বলবো নাকি?,, ”
বলতে বলতেই মোমকে ধরে বসালো মোয়ান।নিজের গায়ের উপরই হেলান দিয়ে রাখলো মোমকে।,,,,,কোমল কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো…
“খিদে পেয়েছে বোনি?”..
ভেসে এলো মোমের ভাঙা কন্ঠ…
” নার্স আপু খাইয়ে দিয়েছে।,,”
চোখ পড়লো সামনে দাড়ানো নভের দিকে।,,নভও তার দিকেই অপলক তাকিয়ে।,,, সে দেখছে এই নেতিয়ে যাওয়া মোমকে।,,,,,,কিছুক্ষন আগেই কতো প্রানোবন্ত ছিলো মেয়েটি।ঐ তো তখন সারাপথ রিক্সায় হাত নাড়িয়ে হেসে হেসে কি নিদারুণ কথা বলছিলো।আর এখন?,,তার নিজেকেই ধরে রাখার ক্ষমতা নেই?,,, কি অদ্ভুত না?,,,,
তবে সে ভীষণ ভাবে অনুভব করছে,,মোমের এই রুপ তার সহ্য হচ্ছে না।কেন যেন মনে হচ্ছে মোম এমন হলে একটুও মানাতো নাহ,,,ঐ যে ঠোট ফুলিয়ে, হাত নাড়িয়ে পিটপিট করে তাকিয়ে কথা বলে না?,,ঐ টাই তো মানায় মোমকে।তাহলে সে কেন এভাবে থাকবে?একদম এভাবে থাকতে দেবে না নভ তাকে।,,,
মোমের দিকে একপলক তাকিয়ে হনহনিয়ে কেবিন ছাড়লো নভ।তার যাওয়া দেখে পিছু নিলো তেজও।
“””””
“কিয়ারে ব্যাডা,,,তোরে এইক্কা লাগের কা?”
তেজের সু মিষ্ট ভাষা শুনে ঘুরে দাড়ালো নভ।একবার দেখে আবার হসপিটালের কর্নারের করিডোরের জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো।শান্ত কন্ঠে বললো…
“মোম এতো উইক হলো কি করে?,,”
তেজের চিন্তা বিহীন ভাব…
“ওও,,,ইয়ান নি??,এইডা ত ঐ থেরাপির লাইগা ওইছে।হুইনলাম কাইল্লা বেয়াইন্না দি আবার ঠিক ওই যাইবো আগের মতন।আইজ্জা নাকি হাই স্কেলে থেরাপি দিচে।হেল্লাই সহ্য কইত্তো ন হারি হাত ঠ্যাং অবশ ওই গেছে মোমের।”
“এই থেরাপি টা মোমকে কেন দেওয়া হয়েছে?,,জানিস কিছু?”
“নাহ,,,আআই ডাক্তাররে জিগাইছি।কিছু কয়নো,,,কয় যে রোগীর পরিবারের তুন মানা কইচ্ছে কইবারলাই।”
নভ একটু চিন্তিত হলো…
“কি এমন বিষয়,, যে কাউকে জানানো যায় না?,,,”
তেজ এসে দাড়ালো নভের পাশাপাশি,,,
“যা ইচ্ছা তা ওক,,,তোর কিয়া এগাইন জানি?,,তুই টেয়া হাইলে ত মোমরে ছাড়ি দিবি,,তোর এতো কিছু জানি লাভ কিয়া?”
নভের শান্ত উত্তর…
“উহুম,,,,ওকে আমি ছাড়ছি না আর।”
কথাটা শুনে তেজ একটু লুকিয়ে হাসলো।তবে মুখে অবাক হওয়ার ভান করে বললো..
“মানে?,,,ছাইরতি ন কা?,,”..
” ছাড়বো না মানে ছাড়বো না,,,,ওকে ছেড়ে দিলে আমার চলবে কি করে?,,”
“বুঝাই ক,,, ”
“আই থিংক,,,, সি ইজ এট্রাক্টেড মি,,,”
তেজ এবার একটু সিরিয়াস হলো,,,, আলতো হেসে বললো…
“ওটাকে এট্রাক্টশন বলে না রে ব্যাটা,,,অন্য কিছু,”
নভ কেমন অশান্ত হয়ে উঠছে।এলোমেলো দৃষ্টিতে তেজের দিকে তাকিয়ে বললো…
“আমার কি হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না তেজ।আমি আগের মতো কিছুই করতে পারছি না।,,,অফিসে কোনো মেয়েকে দেখলে মনে হয় ঐটা মোম।,,,ফিরতে একটু লেট হলে মনে হয় খুব দেরি হয়ে গেছে,,,মোমের কাছে যেতে।যেখানে আমি রাতের পর রাত ঘোরাফেরা করেই কাটাতাম।মদ্য মাতাল হয়ে পরে থাকতাম।,,,বাসায়ও আগের মতো আর যাওয়া হচ্ছে না।,,,আগে তো কিছুদিন পরপর হলেও যেতাম,,,বাট এখন মনে হয়,,আমি বাসায় গেলে মোম থাকবে কি করে?,,,,,প্রতিরাতে আমার নতুন নতুন মেয়ে ছাড়া চলতো না।আর এখন?,,,কোনো মেয়েকে ছুতে গেলেই মনে হয় মোম কাতর কন্ঠে আমায় ডাকছে।এই বুঝি ঐ দিনের মতো বমি করে ক্লান্ত হয়ে গেলো,,,সব ছেড়ে আবার ছুটে যাই ওর রুমে,,,আর গিয়ে দেখি তেমন কিছুই না,,,সে ঘুমায়,,,।যেখানে নারি শরীর ছাড়া আমার একদমই চলে না,,,সেখানে মোমের ঐ মাখন শরীরের বেখেয়ালি অপ্রত্যাশিত স্থান দেখেও আমি নিজেকে সামলে নিয়েছি।আমি চেয়েও ওকে বাজে ভাবে ছুয়ে দিতে পারছি না।,,,কেন যেত তখন মন বলে উঠে,,,সম্পর্কে একটা সচ্ছল হালালতা দরকার,,,এর আগে কিচ্ছু নাহ।,,,,এমন কেন হয় বলতো?,,,ঐ মেয়ে তো আমায় একদম পাগল বানিয়ে দিচ্ছে,,, ”
তেজ শুনলো নভের কথা গুলো,,,সে আগে থেকেই এমন কিছুই ধারণা করেছিলো,,,তবে সে এখন আর পারবে না নভকে গোলক ধাঁধাঁর মাঝে রাখতে।জানানো উচিৎ তার।মুচকি হেসে তেজ বললো…
” তুই ফাইসা গেলি দোস্ত,,, ”
নভ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো তেজের দিকে।,,, তা দেখে তেজ বলে উঠলো…
“মোম তোর আকর্ষণ,,, ও তোর মায়া,,,ও তোর পুর্নতা,, তোর সহায়িকা,,,এই সব কিছু মিলিয়ে ও তোর কে জানিস?”
নভ কিছুই বললো না,,, শুনতে চাইলো তেজের কথা,,,মিলাতে চাইলো নিজের উত্তরের সাথে।আদেও কি তার ধারনাটা ঠিক কি না?জানতে চায় সে,,,,,।তেজ বললো..
“ও তোর ভালোবাসা,”
এইতো মিলে গেলো নভের উত্তরের সাথে,,,মিলে গেলো তার অনুভূতির সাথে।আনমনেই মুখ জুড়ে এক বিস্তৃত হাসি ফুটে উঠলো তার।,,,, চোখের সামনে আবার ভেসে উঠলো মোমের কিটকিটিয়ে হাসি মাখা মুখটা।,,,
তেজ কাঁধে হাত রাখলো তার,,,
“কিরে ব্যাটা,,,কি ভাবছিস?”
গোপন করলো না নভ,,,তেজকে সে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে।তাইতো নিজের সকল অনুভুতি খুব সহজেই শেয়ার করে তেজের সাথে।,,,হাসি মাথা মুখ নিয়েই উপর নিচ মাথা ঝাকিয়ে বললো…
“আই থিংক সো।”
হাসি প্রগাঢ় হলো তেজেরও।,,,তার ইচ্ছে পুরন হলো।অবশেষে নভ যে তার অনুভূতি গুলো বুঝতে সক্ষম হয়েছে।,,, এবার আর কোনো চিন্তা নেই তার,, নভের উশৃংখল জীবনটাকে মোমই পারবে গুছিয়ে তুলতে।,,,কিছু না করেই সে অনেক কিছু করতে পারবে।,,,,
“মোমের সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট কবে দিবে?,”
নভের কথায় তেজ বললো…
“পরশু বললো,,,,তুই মোয়ানকে জিজ্ঞেস করিস নি মোমের ব্যপারে?”
“উহুম।মোয়ানের অবস্থা ঠিক ছিলো।তাই আর বলা হয়ে উঠেনি,,,,ছাড়,,একবারে সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট দেখেই বোঝা যাবে।”
“ওকেয়,,,,তো চল,,কখন ফিরবে জেনে নিই।”
“হুম,,,”
বলতে বলতেই কেভিনের দিকে হাটা ধরলো তারা,,,,সামনে আসতেই কানে ভেসে এলো মোয়ানের বিচলিত কন্ঠ…
“স্যার,,প্লিজ স্যার,,,,এমন করবেন না।এই জবটা আমার জন্য খুব প্রয়োজন,,,প্লিজ স্যার প্লিজ।”
“—-”
“আমার কথাটা একটু শুনুন প্লিজ স্যার,,,,স্যার…”
কেটে গেলো ফোন।মোয়ান ক্লান্ত মুখে ঘুরে দাড়ালো পেছনে।সাথে সাথেই চোখে পড়লো নভ আর তেজকে।তেজ জিজ্ঞেস করলো…
“কি হইছে?”
মোয়ান লুকালো না,,,একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো…
“কি আর হবে?,,,শেষ সম্বল,, চাকরিটাও গেলো।”..
এই সময় এমন কথা যেন তেজ আশাই করেনি।
” ওয়াট?”
“হুম,,,মাসে মাসে ছুটি কে দেবে বলুন,,,তারাও তো কাজের দায়ে আমায় চাকরি দিয়েছিলো। ”
নভ শুনলো,,,,তাকালো বিছানায় ঘুমন্ত মোমের দিকে। আবার তাকালো মোয়ানের দিকে…
“একটু আগে ঋণ শোধ করার কথা বলেছিলাম।মনু আছে?,,,”
মোয়ান তাকালো নভের দিকে।
“তোমাদের ঋণের বদলে আমি তোমার থেকে দুটো জিনিস চাইবো।,,,”
মোয়ান অবাক হয়ে বললো…
“কি চান আপনি?”
নভ বাম হাত দিয়ে কাউন্ট করলো..
“1,,,আমার কম্পানিতে তোমার সিভি জমা দেবে তুমি,,,,নাম্বার 2,,,,তোমার বোনকে আজীবনের মতো আমায় দিতে হবে।”
মোয়ান অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো নভের দিকে,,,, কি বলছে এই লোকটা? সে তো কিছুই বুঝতে পারছে না.. একটু থেমে নভ ভিলেনি স্টাইলে এগোতে এগোতে বললো…
“তুমি ভেবোনা যে নাকোচ করবে।,,কারন তুমি রাজি থাকলেও আমি মোমকে দেবো না আর,,,আর রাজি না থাকলেও দেবো না।,,নাও চয়েজ ইজ ইউরস,”
()())()
পিটপিট করে চোখ খুলতেই নিজেকে রিসোর্টের ঐ রুমটায় আবিষ্কার করলো মোম,,,,চোখ ঘুরিয়ে এদিক ওদিক তাকাতেই চোখে পড়লো ব্ল্যাক টি শার্ট পড়া নভকে।খাটের কোনে বসে তার দিকেই তাকিয়ে আছে।মোম ভাঙা কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো…
“ভাইয়া কোথায়?”
নভের সরাসরি উত্তর,,,,
“চলে গেছে।”
মোম অবাক হলো…
“আমায় নেয় নি?”
নভ ভ্রু কুচকালো…
“কি ভেবেছো?,,,ভাই আসলেই যেতে দেবো?”
মোম নিয়ন্ত্রণ হীন হয়ে যাচ্ছে। জোর করে হাত পা নাড়ানোর চেষ্টা করছে,,ঠোট উলটে কান্না করবে,,, এমন সময়ই নভ তার ঠোট চেপে ধরে ধমক দিয়ে বললো…
“চুপ,,, একদম কান্নাকাটি নয়,,,,”
মোমের রাগ হলো,,,,টুশ করে নভের হাতের তালুতে একটা ছোট্ট কামর দিয়ে বসলো।,,,নভ হাত সরিয়ে ফেললো।,,,,
“তবে রে মেয়ে,,,আমায় কামড় দেখানো হচ্ছে?,,, এবার আমার টার্ন”
বলেই ঝুকলো নভ,,,,মুখটা একদম মোমের মুখের উপর নিয়ে এলো।এক পলক তাকিয়ে নিজের সরু পুরুষালী ঠোট জোরা কিন্চিৎ ফাক করে দখল করে নিলো মোমের নরম তুলতুলে ঠোটদ্বয়।,,,,চুষে নিতে থাকলো প্রেমশিখার ওষ্ঠ শুধা।,,,
মোম আবেশে চোখ বুজে ফেললো।না নড়তে পারছে, আর না পারছে নভকে আটকাতে।,,,,
শেষের দিকে মোমের ঠোটে আলতো কামড় দিয়ে মুখ তুললো নভ।মোম চোখ খুলে তাকালো।নভ লো ভয়েজে বললো….
“হাউ ইজ ইট,,সুইটহার্ট? ”
মোমের ঠোটদ্বয় এখনো তিরতির করে কাপছে।,,,,,সেই কাপাঠোট কিন্চিৎ নাড়িয়ে মোম বললো….
“আ্ আমার অসস্থি হচ্ছে,,,, স্ সরুন।”
বাকা হাসলো নভ।
“এটা তোমার কাজের রিভেঞ্জ জুলিয়েট।চাইলে ইন ফিউচার আমি যা যা করবো,,তুমি তার রিভেঞ্জ নিতে পারো।বিশ্বাস করো,,,আমি তোমার মতো আদর নিতে একটুও কাপাকাপি করবো না।প্রমিস।”
মোম নাক কুচকে বললো…
“হুহ,,,,কাপাকাপি করবেন কিকরে?,,,আপনি তো আল্ট্রা প্রো লেভেলের খিলাড়ি।”
একচোখ টিপ মারলো নভ।
“তুমি বুঝি আনারি?”
++++চলবে+++++
[আজকে কিন্তু অনেক বড় পর্ব দিলাম।কেউ আবার বইলেন না যেন,,,এতো ছোট কেন?,,]