#তোমার_মাঝে_আমি 🌸❤ [I_Am_In_You]
#লেখিকা_আয়েশা (কোয়েল)
#পর্ব_১১,১২,১৩
আয়েশা মেঝেতে পা ভাঁজ করে হাঁটু দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বসে আছে,,চোখ দিয়ে সমানে জল গড়িয়ে পরছে আর ঠোঁটের কোণা দিয়ে রক্ত বেরিয়ে শুকিয়ে রয়েছে চুল গুলো এলোমেলো হয়ে রয়েছে আর কপালের কোণে ও কেটে রক্ত জমাট বেঁধে আছে,,,আয়েশা নিজের হাতের আঙ্গুল দিয়ে ঠোঁটের কোণা টা ছুঁয়ে নিজের সামনে নিয়ে এলো আর হুঁ হুঁ করে কেঁদে উঠলো,,,
আয়েশা: কেনো আহিল কেনো?? আমাকে কি একটু বিশ্বাস করা যায় না,,কি এমন দোষ করেছি আমি?? কোন দোষের শাস্তি দিচ্ছো তুমি আমায় এভাবে?? আমার দোষ টা কি সেটা ও আমাকে বলছো না তুমি?? আমি জানি না আমি কোন ভুল কাজের জন্য শাস্তি পাচ্ছি,,আমি আর পারছি না আহিল,,আর পারছি না,,,আমাকে এভাবে তিলে তিলে শেষ করার থেকে একেবারে মেরে ফেলো তুমি,,,অন্তত নিজের ভালোবাসার হাতে মরতে তো পারবো,,এটা তো ভাগ্যের ব্যাপার,,কিন্তু এভাবে তিলে তিলে শেষ করে দিয়ো না আমায়,,,আমি যে তোমায় নিজের জীবনের চাইতেও বেশি ভালোবাসি,,,আজ তুমি আমার কথা না শুনে আমার গায়ে প্রথম হাত তুললে আহিল,,,আমার গায়ে তুমি হাত তুলতে পারলে?? আমি আর বাঁচতে চাই না আহিল,,,নিজের ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে অবহেলা সহ্য করার চাইতে মরে যাওয়া ভালো,,,মরে যাওয়া ভালো,,(কাঁদতে কাঁদতে মেঝেতে শুয়ে পরলো)
💫💫 কিছু সময় আগে 💫💫
আহিল আয়েশা কে খুঁজতে খুঁজতে মলের পিছনে যায় আর গিয়ে যেই দৃশ্য দেখে তা দেখার জন্য আহিল প্রস্তুত ছিলো না,,,আহিলের হাত থেকে আইসক্রিম টা নীচে পরে যায়,,,আহিলের চোয়াল শক্ত হয়ে যায় আর হাত মুষ্টিবদ্ধ করে ফেলে,,,আহিলের চোখ মুখ মুহুর্তেই লাল হয়ে যায় কারণ,,,
আয়েশা সেই ছবির ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরে আছে,,,ছেলেটি ওকে সোজা করে ওর মাথা ধরে কপালে চুমু দিলো আর গাল ধরে কথা বলছে,,,আয়েশা ও ওই ছেলেটির নাক টেনে দিয়ে আবার ও কথা বলতে বলতে জড়িয়ে ধরলো,,,,
আহিল: আয়েশাআআআআ!!!!
আয়েশা আহিলের কন্ঠ স্বর শুনে ঝটকা মেরে ছেলেটিকে ছেড়ে দিলো আর আমতা আমতা করে বললো,,
আয়েশা: অ..আ..আহিল
আহিল: হ্যাঁ আমি কেনো খুব প্রব্লেম হয়ে গেলো নাকি?? (দাঁতে দাঁত চেপে)
ছেলেটি: ইয়াহ অফ কোর্স খুব প্রব্লেম হয়ে গেলো,,,হু দ্য হেল আর ইউ??
আহিল: সেম পিঞ্চ,,,হু দ্য হেল আর ইউ?? সাহস কি করে হয় আয়েশা কে টাচ করার?? (ছেলেটির দিকে তেড়ে যেতে গেলে আয়েশা আটকে দেয়)
আয়েশা: আ..আহিল ও ঋক
ঋক: আয়েশার লাভার,,,
আহিল: ওয়াট!!!
আয়েশা: ঋক তুই কি বলছিস এসব??
ঋক: আয়েশা প্লিজ তুই আমাকে ভালোবাসিস আর আমি তোকে,,উই আর লাভ ঈচ অদর,,,এই আহিল তো তোকে জোর করে বিয়ে করেছে,,আমাদের মাঝে থার্ড পারসন হয়ে রয়েছে,,,
আহিল: ওহ রিয়েলি?? আমি থার্ড পারসন নাকি তুই আমাদের মাঝে থার্ড পারসন??
ঋক: ইয়াহ তুই থার্ড পারসন,, সি লাভস মি,,তুই ওকে জোর করে বিয়ে করেছিস,,আয়ু শুধু আমার ওকেই??
আহিল: (রেগে ঋকের কলার চেপে ধরে) জাস্ট শাট আপ!! আর একবার যদি তুই ওকে আয়ু বলেছিস তো আমার চাইতে খারাপ কেউ হবে না,,,এই নামে ডাকার অধিকার শুধু আমার,,জানে মেরে দেবো আমি তোকে,,
আয়েশা: আহিল প্লিজ স্টপ!!(আহিল কে ঋকের কাছ থেকে ছাড়িয়ে এনে) এটা রাস্তা কি করছো তুমি??
আহিল: জাস্ট শাট ইউর মাউথ!! তোকে তো আমি পরে দেখে নেবো (ঋক কে উদ্দেশ্য করে)
আহিল এই বলে আয়েশার হাত ধরে আয়েশা কে টানতে টানতে নিয়ে চলে গেলো আর গাড়ির সামনে গিয়ে দরজা খুলে ধাক্কা মেরে বসিয়ে দিয়ে,,হাই স্প্রীডে গাড়ি চালাতে শুরু করলো,,আয়েশা কিছু বলার চেষ্টা করেও বলতে পারছে না কিন্তু এতো জোরে গাড়ি চালানোয় আয়েশা বলতে বাধ্য হলো,,,
আয়েশা: আহিল,,,আহিল প্লিজ গাড়িটা আস্তে চালাও আমার ভয় করছে,,আহিল প্লিজ,,
আহিল আয়েশার কথা শুনে আরো স্প্রীড বাড়িয়ে দিলো গাড়ির এদিকে আয়েশার ভয়ে প্রাণ যায় যায়,,,যেকোনো মুহূর্তে অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যেতে পারে তা জেনেও কিছু বললো না কারণ আহিল কে গাড়ি আস্তে করতে বললে আহিল আরো স্প্রীড বাড়িয়ে দেবে,,তাই চোখ বুজে রইলো আর কিছু বললো না,,,
আহিল বাড়ির সামনে গাড়ি থামিয়েই নিজে নেমে আয়েশা কে টেনে বার করলো গাড়ি থেকে আর টেনে হিঁচড়ে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যেতে লাগলো,,,আয়েশা সমানে আহিল কে ছাড়তে বলছে কিন্তু তাতে আহিলের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই,,
আহিল নিজের রূমে আয়েশা কে নিয়ে যাওয়ার সময় আহিলের মা আর আরোহী আহিলের সামনে আসতেই আহিল বললো,,
আহিল: আজ কেউ আসবেনা ওর আর আমার মাঝে,,
আয়েশা: আহিল আমার কথাটা শোনো একবার,,,প্লিজ আমার লাগছে ছেড়ে দাও আমায়,,,
আহিল কোনো কথা না শুনে আয়েশা কে টেনে হিঁচড়ে ঘরে নিয়ে গেলো আর নিয়ে গিয়ে আয়েশা কে ছুড়ে বিছানায় ফেলে দিলো আর দরজাটা ধরাম! করে বন্ধ করে দিয়ে,,,আয়েশার দিকে পিছন দিয়ে দু আঙুল দিয়ে নিজের কপালে স্লাইড করতে লাগলো,,স্লাইড করতে করতে হুট করেই একটা সজোরে লাথি মারলো সামনে থাকা একটা সেন্টার টেবিলে,,আর আয়েশা কেঁপে উঠলো আর কাঁপা গলায় বললো,,
আয়েশা: একবার আমার কথাটা শোনো আহি…
আহিল: তোর ঐ নোংরা মুখে আমার নাম টাও নিবি না,,,আই জাস্ট হেট ইউ ড্যাম ইট!! কি করে তুই আমার সাথে এটা করতে পারলি?? কি করে এভাবে আমাকে ঠকাতে পারলি??
আয়েশা (আহিলের সামনে গিয়ে) আহিল বিশ্বাস করো আমি শুধু তোমায় ভালবাসি,,
আহিল: (আয়েশার চুলের মুটি এক হাত দিয়ে ধরে আর এক হাত দিয়ে দু গাল চেপে ধরে বলল) এই ভালোবাসা কথাটা তোর মুখে শোভা পায় না,,,তোর মতো মেয়ের তো নষ্ট গলি তে থাকা উচিত (বলেই একটা ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো আর আয়েশার মাথাটা বিছানার পায়ায় গিয়ে বারি লাগলো)
আয়েশা: আহ!!
আহিল: হাহ! এইসব ন্যাকামি আর করিস না আমার সামনে,,,তোর এই মিথ্যে চোখের জলে আর আমার মন গলবে না,,আজ যা দেখেছি তাতেই সবটা প্রমান হয়ে যায়,,,প্রমান হয়ে যায় তুই একটা ফ্রড,,
আয়েশা: আহিল ঋক আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ওর সাথে আম..
আহিল: বেস্ট ফ্রেন্ড নাকি ফ্রেন্ড উইথ বেনিফিটস?? ও না না আমিও তো তোর বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলাম তারপর তো তোর লাভার ঠিক সেভাবে আমি চলে যাওয়ার পর ঋক কে ফাসিয়েছিস তাই না??
আয়েশা: (উঠে দাঁড়িয়ে আহিলের সামনে গিয়ে) আহিল!! আমি তো বললাম যে আমি তোকে ভালো…
ঠাস!! কথাটা শেষ হতে না হতেই আহিল সজোরে আয়েশার গালে একটা চড় বসিয়ে দিলো,,,আর আয়েশা ছিটকে পরলো,,চড় টা এতটাই জোড়ে মেরেছে আহিল যে আয়েশার ঠোঁট ফেটে রক্ত পরছে,,কিন্তু সেদিকে আহিলের কোনো হুশ নেই,,,
আহিল: জাস্ট গো টু হেল!! (বলেই বেরিয়ে গেলো)
💫💫 এখন 💫💫
আয়েশা শুয়ে ছিলো তখন হঠাৎ করে ফোন বেজে উঠলো,,আয়েশা অনেক কষ্ট করে ফোন টা নিয়ে দেখলো আননোন নাম্বার,,রিসিভ করে ঐ পাশের ব্যক্তির কথা শুনে বললো,,
আয়েশা: কোথায়??
——
আয়েশা: আমি আসছি এক্ষুনি
——
আয়েশা কল কেটে উঠে দাঁড়ালো আর একটু নিজেকে স্বাভাবিক করে,,ঠোঁটের কোণে রক্ত টা মুছে আরোহী কে ফোন করলো,,,আর গাড়ি বার করে আরোহী কে নিয়ে বেরিয়ে গেলো,,,গন্তব্য স্থলে পৌঁছে আয়েশার শরীর জানো অবশ হয়ে গেলো,,,কারণ সামনে…………………..
[ফিরে আসবো আগামী পর্বে
#তোমার_মাঝে_আমি 🌸❤ [I_Am_In_You]
#লেখিকা_আয়েশা (কোয়েল)
#পর্ব_১২
আয়েশা বিছানায় ঢেলান দিয়ে বসে এক মনে আহিলের দিকে তাকিয়ে আছে,,আর আহিল আয়েশার পাশে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে কোনো হুশ নেই আহিলের,,,আয়েশা আহিলের দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করলো,,,
আয়েশা: আজ যদি তুমি আমায় একটু এক্সপ্লেন করার সুযোগ দিতে তাহলে হয়তো এতো কিছু হট না আহিল,,,আমি মানছি তুমি যা দেখেছো তাতে তোমার এমন রিয়াক্ট করা স্বাভাবিক কিন্তু একবার তো আমার কথাটা শোনা উচিত ছিলো,,,ঋকের কথা গুলো শুনে আমি নিজেই হতভঙ্গ হয়ে গেছিলাম,,,ইচ্ছে তো করছিল ঠাটিয়ে একটা চড় বসিয়ে দি গালে,,সাহস কি করে হলো ওর তোমাকে অপমাণ করার কিন্তু আমি তো নিরুপায় ছিলাম নিজের দাদার গায়ে কি করে হাত তূলতাম আহিল!!
–ঋক যে আমার নিজের কাকার ছেলে যেই কাকা কে আমার দাদু ত্যজপুত্র করে দিয়েছিলেন বহু বছর আগে,,,কিন্তু আমার বাবা কাকাই কে খুব ভালো বাসতো তাই দাদুর থেকে লুকিয়ে সম্পর্ক রেখেছিলো,,,ঋক আমি আর দা ভাই একসঙ্গে বড়ো হয়েছি একসঙ্গে স্কুলে পরেছি আমরা,,দা ভাই আমাদের থেকে উঁচু ক্লাসে ছিলো আর ঋক আমার ক্লাসে কারন ঋক আমার থেকে ৬ মাসের বড়ো ছিলো,,,ঋক যে আমার কাকার ছেলে তা আমি জানতাম না আর দা ভাই ও জানতো না,,,ঋকের কথা কি জানবো নিজের কাকার কথাই তো জানতাম না,,কিন্তু যখন জানতে পারলাম তখন ঋক বললো ” ৬ মাসের বড়ো তে কি হয়েছে আমি জানো ওকে ঋক বলেই ডাকি আর সবাইকে জানো বেস্ট ফ্রেন্ড বলেই পরিচয় দি ” আমি এটা শুনে বাবা কে বললে বাবা বলে ” ঋক যেমন টা বলেছে তেমনটাই করতে কারন তখন ও আমার দাদু জীবিত ছিলো তাই বাবা আর কাকার সম্পর্ক আছে জানলে রেগে যাবেন ” কিন্তু তোমার যখন আমার দা ভাইয়ের সাথে পরিচয় হলো তখনই হুট করে ঋক গায়েব হয়ে গেলো,,,দা ভাই চেয়ে ছিলো ব্যাপার টা তোমাকে জানিয়ে এক সাথে মিলে ঋক কে আর কাকাই কে খুঁজবে কিন্ত বাবা জানাতে দেয়নি তাই তুমি আজ পর্যন্ত ঋক কে চেনো না ওর সম্পর্কে জানো না,,,সবাইকে যেমন বেস্ট ফ্রেন্ড বলেছি তোমাকে ও তেমন বেস্ট ফ্রেন্ড বলেছি শুধুমাত্র বাবা আর দা ভাইয়ের কথা শুনে,,,ঋক কে হারিয়ে তোমায় পেয়ে ছিলাম আমি আহিল,,,শুরুতে তোমায় নাম ধরে ডাকায় বাবা আর দা ভাই দুজনেই বকা দিয়েছিল কারন তুমি আমার দাদার বয়সি আমার থেকে অনেকটা বড়ো,,,কিন্তু তারপর তো তুমিই বললে যে আহিল বলেই ডাকতে দাদা বা ভাইয়া না ডাকতে,,তার কারন টা অবশ্য আমি পরে জেনেছি (সামান্য হেসে) এরপর তুমি আমেরিকা চলে যাওয়ায় ঋক আবার আসে,,,আহিল আমি মানছি ৬ মাসের বড়ো ঋক আমার থেকে,,আমার স্বামী কে অপমান করেছে ও সেখানে আমার ওকে একটা চড় মারলে কোনো দোষ হতো না কিন্তু! আমার বাবা মা যে আমায় এমন শিক্ষা দেয়নি,,আমি ওখানে দাঁড়িয়ে সবটা ক্লিয়ার করতাম তার আগেই তুমি আমাকে নিয়ে চলে এলে,,,আমি কি করে কথা বলতাম বলো তো! তোমরা কি একটা বার ও আমায় বলার সুযোগ দিয়েছো?? আমি বলতে গেলেই তুমি বা ঋক থামিয়ে দিয়েছো,,আমি তোমাকে ওখানে দাঁড়িয়েই বলতাম ঋক আমার সম্পর্কে দাদা হয় আর এক জন দাদা একটা বোন কে জড়িয়ে ধরতেই পারে কপালে চুমু দিতেই পারে,,,(হঠাৎই আয়েশা থেমে গেলো)
আয়েশা এবার নিজে নিজে ভাবতে লাগলো,,,কারণ ওর একটু খটকা লাগছে ঋকের ব্যবহারে,,,ও নিজে নিজেই বলতে শুরু করলো
আয়েশা: এক মিনিট,,,ঋক আমাকে হুট করে ওভাবে জড়িয়ে ধরলো কেনো?? আর কপালে চুমুই বা দিলো কেনো?? আমরা তো শুধু দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম তাহলে হুট করে?? ঋক তো কোনদিন এমন করেনি শুধু আহিলের চলে যাওয়ার পর উল্টো পাল্টা আচরণ করতো,,,আমি আজকে মলের পিছনে ঋক কে যেতে দেখেই দৌঁড়ে চলে যাই ওর কাছে কথা বলতে কারণ আহিলের আমেরিকা থেকে ফেরার আগেই ও আবার গায়েব হয়ে যায়,,,তাই কথা বলতে গেছিলাম আর কথা বলতে বলতেই ও আমাকে জড়িয়ে ধরে আর কপালে চুমু দেয়,,,তার মানে কি ও আহিল কে দেখেই এমন টা করেছে?? হ্যাঁ নাহলে ও কেনো বললো আমি ও কে ভালোবাসি আর ও আমাকে যেখানে ও আমার কাকার ছেলে হয়,,,ব্যাপার টা আহিল জানে না দেখে?? এই জন্যই ওরম করলো যাতে আহিল ভাবে আমার আর ঋকের মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে,,,আহিল আজকে ঋক কে প্রথম দেখলো কারণ আহিল আসার আগেই ঋক হুট করে গায়েব হয়ে যেতো,,,ঠিক যেমন আহিলের সাথে দা ভাইয়ের পরিচয় হয় আর আহিলের আমাদের বাড়ি আসার আগেই ও গায়েব হয়ে গেলো,,,ফিরে এলো আহিলের আমেরিকা যাওয়ার পর আবার যখন আহিল দেশে ফিরে এলো তখনই ও আবার সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়,,,আর ঋক জানলো কি ভাবে আহিল আমাকে জোর করে বিয়ে করেছে?? দা ভাই বা বাবা বলেছে??
এটা তো মনে হচ্ছে কোনো ষড়যন্ত্র!! আমাকে আর আহিল কে আলাদা করার জন্য নয় তো??
আমাকে জানতে হবে যে করেই হোক জানতে হবে,,কালকেই বাবা আর দা ভাইয়ের সাথে কথা বলবো আমি,,ঋকের ব্যাপার টা না হয় জানবো কিন্তু রিয়া?? রিয়া যেটা করতে চেয়ে ছিলো আহিলের সাথে সেটা কি ছিলো??
💫💫 কিছুসময় আগে 💫💫
আয়েশার ফোনে একটা আননোন নাম্বার থেকে কল আসতেই আয়েশা কল টা রিসিভ করে অপর ব্যক্তির কথা শুনে নিজেকে স্বাভাবিক করে বেরিয়ে গেলো আরোহী কে নিয়ে,,,গন্তব্যস্থলে পৌঁছে আয়েশা যা দেখলো তার জন্য আয়েশা প্রস্তুত ছিলো না,,,আয়েশা দেখলো,,
আহিলের কোমর এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে আছে রিয়া আর আহিল রিয়ার কাঁধে ভর করে আছে,,,দেখেই বোঝা যাচ্ছে আহিল নেশায় বুঁদ হয়ে রয়েছে কারণ এটা একটা হোটেল,,যেখানে মেয়েরা নাচছে আর লোক গুলো টাকা ওড়াচ্ছে আর আহিল বার সাইডে বসে নেশায় ঝুলছে,,,আয়েশা এসব দেখে দু-কদম পিছিয়ে যেতেই আরোহী আয়েশা কে ধরে আর সামনে থেকে একজন বলে,,,
জ্যাক: নিজেকে সামলাও বৌদি,,,
আয়েশা: আপনি???
জ্যাক: হ্যাঁ আমি,,আমিই আপনাকে ফোন করেছিলাম,,,
আয়েশা: আপনি ইচ্ছে করে আহিল কে ড্রিংক করিয়েছেন তাই না??
জ্যাক: নাহ বৌদি আমি এসব করিনি আমি এখানে আহিল কে ফলো করে এসেছি,,আহিল আমাকে যখন ফোন করেছিল তখন ভীষণ রেগে ছিলো আর অর্ধেক কথা বলেই ফোন রেখে দেয়,,,তখন আমি ওর লোকেশন ট্রাক করে এখানে আসি,,কারণ আমেরিকা থাকাকালীন আহিল রেগে গেলেই ভীষণ ড্রিংক করতো,,,তখন আমি সামলাতাম বাট এখানে ওর পি.এ রিয়া কে দেখে আমার মনে হলো আপনাকে জানানো উচিত,,,
আয়েশা: কিন্তু!!
জ্যাক: আগে দিন যা ঘটেছে তা আপনাকে আমি পরে বলবো এখন আগে আমাদের আহিল কে বাড়ি নিয়ে যাওয়া উচিত,,
আরোহী: বৌমনি ভাইয়া কে নিয়ে ঐ রিয়া কোথায় গেলো??
আয়েশা আরোহী আর জ্যাকের কথা বলার মাঝে রিয়া আহিল কে নিয়ে একটা রূমের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় যেটা কেউ দেখতে পায়নি ওরা,,রিয়া আহিল কে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠছিল তখনই সেটা আয়েশার চোখে পরে,,,
আয়েশা: ঐ তো রিয়া!!
বলেই আয়েশা রিয়ার পিছন করতে নেয় কিন্তু সবাই নাচ করছে দেখে জায়গা টা ভিড় হয়ে রয়েছে তাই আয়েশাদের যেতে একটু টাইম লাগে,,,আয়েশা সিঁড়ি দিয়ে উঠে দেখে রিয়া আহিল কে নিয়ে একটা রূমে ঢুকে পরে,,,আয়েশা দৌঁড়ে রূমের কাছে যেতেই দেখে দরজা লক,,রিয়া ভিতর থেকে দরজা লক করে দিয়েছে,,আয়েশার পিছন পিছন জ্যাক আর আরোহী এলে আয়েশা বলে,,,
আয়েশা: দরজা লক,,আমি ভিতরে যাবো কি করে??
জ্যাক: দরজা ভেঙে,,,(বলেই দরজা টা ভাঙতে শুরু করলো)
জ্যাকের দরজায় দু বার আঘাত করার পর তিন বার আঘাত করতে নিলেই দরজা খোলার শব্দ আসে,,,রিয়া দরজা খুলেই ঘাবড়ে যায়,,,
রিয়া: আ..আয়েশা ত..তু..তুমি??
আয়েশা কিছু না বলে রিয়া কে এক ধাক্কা মেরে ভিতরে গিয়ে দেখে আহিল বেডে শুয়ে রয়েছে আর আর আহিলের শার্টের বোতাম গুলো হাফ খোলা,,,আয়েশা এটা দেখে রিয়ার হাত ধরে টেনে আনে আর বলে,,,
আয়েশা: সাহস কি করে হলো আমার স্বামীর দিকে নজর দেওয়ার?? আর কোনদিন যদি আহিলের ধারে কাছেও দেখি আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না,,
এই বলে আয়েশা জ্যাক কে হেল্প করতে বললো আর জ্যাক,,আয়েশা মিলে আহিল কে নিয়ে ওখান থেকে বেরিয়ে গেলো,,,আর আরোহী নিজের ফোনের ক্যামেরা টা অফ করে রিয়া কে বললো,,,
আরোহী: প্লিজ রিয়া এবার আমার ভাইয়ার পিছন ছাড়ো,,হি ইস ম্যারেড,,,
বলে আরোহী ও বেরিয়ে গেলো,,আর রিয়া দাঁত কটমট করে বললো,,
রিয়া: সেটা কোনদিন হবে না,,,আহিল আর আয়েশা কে আলাদা হতেই হবে,,,আজকের প্লান ফ্লপ হয়েছে তো কি হয়েছে ওর জন্য ” আমাদের ” কাছে অন্য প্লান আছে,,,তার আগে এই জ্যাক টার ব্যবস্থা করতে হবে,,,আ’ম সিওর ওই আয়েশা কে খবর দিয়েছে,,,শিট!!
আয়েশা আরোহী আর জ্যাক আহিল কে ঘরে এনে শুয়ে দেয়,,এরপর আয়েশা জ্যাক কে কিছু বলতে নিলে জ্যাক বলে,,
জ্যাক: বৌদি এখন কোনো কথা নয়,,,আমি আপনাকে কালকে সকালে না হয় সব বলবো,,,আগে আপনি আহিল কে ঠিক করে শুয়ে দিন,,আমার মনে হয় ওর জ্ঞান ফিরেছে,,,কিছু একটা বিড় বিড় করছে,,আপনি ওকে সামলান আমি আসছি,,
জ্যাক বেরিয়ে গেলে আরোহী ও আয়েশা কে ভরসা দিয়ে বেরিয়ে যায়,,,আর আয়েশা আহিলের কাছে যায় ওকে ঠিক করে শোয়াতে,,,কাছে যেতেই আয়েশা শুনতে পায় আহিল খুব ধীরে ধীরে কিছু বলছে,,,অর্থাৎ বিড়বিড় করছে আয়েশা আহিলের ঠোঁটের কাছে কান নিয়ে যেতেই শুনতে পায়,,,
আহিল: আ..আয়ু কেনো ক..করলি তুই আমার স..সাথে এ..এমন?? আ..আমি তো তোকে খ..খু..খুব ভালো ব..বাসি তাহলে ক..কে..কেনো ঠকালি আ..আমায়,,তোর দা..দাদা যেমন আমার দি কে ঠ..ঠকিয়ে ম..মেরে ফে..ফেলেছে তে..তেমন ত.. তুই ও আমায় ঠ..ঠকালি আ..আয়ু ত..তু…(আর বলতে পারলো না ঘুমিয়ে পরলো)
আয়েশা: দা ভাই আনিকা বৌদি কে মেরে ফেলেছে?? তাও আবার ঠকিয়ে?? এইজন্য আহিল আমাকে আমার ফ্যামিলি কে ফ্রড বলতো,,,,
আয়েশা এসিব চিন্তা করতে করতে আহিল কে ঠিক করে বিছানার এক পাশে শুয়ে দিলো আর নিজে এক পাশে ঢেলান দিয়ে আহিলের দিকে এক মনে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো,,,
💫💫 এখন 💫💫
আয়েশা এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে তার খেয়াল নেই,,,দেখতে দেখতে সকাল হয়ে গেলো,,,
সকালে……………………..☀️☀️
আহিলের ঘুম ভাঙ্তেই আহিল উঠে বসলো আর মাথা চেপে ধরলো,,
আহিল: উফফফ মাথাটা এতো ভার লাগছে কেনো,,,আর আমি ঘরে কি করে এলাম আমি তো হোটেলে ছিলাম (আশে পাশে তাকিয়ে) কিছু মনে পরছে না কেনো আমার??
আহিল পাশে তাকাতেই দেখলো আয়েশা ওর পাশে ঢেলান দিয়ে ঘুমিয়ে রয়েছে,,,আহিল আস্তে করে আয়েশা কে ঠিক করে শুয়ে দিলো আর কালকের কথা ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওয়াশরূমে চলে গেলো,,,
আয়েশার ঘুম ভাঙ্তেই পাশে তাকিয়ে দেখলো আহিল নেই,,,ধড়ফড় করে উঠে বসলো আয়েশা,,আর তাকিয়ে দেখলো ৭টা বেজে গেছে,,আয়েশা উঠে ওয়াশরূমে চলে গেলো আর রেডি হয়ে নীচে নেমে গেলো,,,
ড্রয়িং রুমে এসে আয়েশা দেখলো আহিল কোথাও নেই তাই আহিলের মা কে জিজ্ঞেস করলো,,
আয়েশা: মা আহিল কোথায়??
আহিলের মা: ও তো গেষ্ট রূমে আছে
আয়েশা: কেনো??
আহিলের মা: রিয়া এসেছে,,ওর সাথে কথা বলছে (মুখটা নীচু করে)
আয়েশা এটা শুনে আর এক মুহুর্ত ওয়েট করলো না তেরে মেরে গেষ্ট রূমের দিকে চলে গেলো আর গিয়ে দেখলো,,,আহিল কে রিয়া জড়িয়ে ধরে আছে,,আর আহিল হাত আলগা করে রেখেছে,,দেখেই বোঝা যাচ্ছে আহিলের অনিচ্ছে তে রিয়া ওকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে,,,আয়েশার জন্য মাথায় রক্ত চড়ে গেলো আর আহিলের কাছে গিয়ে রিয়া কে টেনে আহিলের থেকে আলাদা করে ঠাস! করে একটা চড় বসিয়ে দিলো,,,
আহিল তো পুরো অবাক এমন ঘটায় যেই আয়েশা কোনদিন কাওর সাথে উঁচু গলায় কথা বলেনি সে চড় মারলো?? আহিল বললো………………….
[ ফিরে আসবো আগামী পর্বে 🌹]
#তোমার_মাঝে_আমি 🌸❤ [I_Am_In_You]
#লেখিকা_আয়েশা (কোয়েল)
#পর্ব_১৩
।
।
।
আহিল তো পুরো অবাক এমন ঘটায় যেই আয়েশা কোনদিন কাওর সাথে উঁচু গলায় কথা বলেনি সে চড় মারলো?? আহিল বললো…
আহিল : আয়েশা!!! কি করছো টা কি?? রিয়ার গায়ে হাত তুললে কেনো তুমি??
আয়েশা: যা করেছি বেশ করেছি,,
রিয়া: দেখেছিস আহিল,,,কেমন ব্যবহার করছে আমার সাথে?? (ন্যাকা কান্না করে)
আয়েশা: লজ্জা করে না তোমার এভাবে অন্যের স্বামীর গায়ে ঢলে পরতে?? এতটাই বেহায়া তুমি যে কালকে বারণ করার পরও আবার চলে এসেছো??
আহিল: জাস্ট স্টপ্পেড আয়েশা!! আর একটা বাজে কথা তুই বলবি না রিয়ার ব্যাপারে,,
আয়েশা: কেনো?? কে হয় ও তোমার??
আহিল: বেস্ট ফ্রেন্ড হয় ও আমার,,,সো আর একটা বাজে কথা নয়,,
আয়েশা: ওহ আচ্ছা তুমি তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড কে জড়িয়ে ধরলে কোনো দোষ নেই,,আমি কিছু বলতে পারবো না কারণ ও তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড,,,আর আমি?? আমাকে যদি আমর বেস্ট ফ্রেন্ড জড়িয়ে ধরে তাহলেই দোষ,,,আমার কোনো কথা সেখানে তুমি শুনবে না,,তোমার বেলা সাত খুন মাফ,,,
আহিল: আয়েশা!! (চিল্লিয়ে)
আহিল আয়েশার দিকে হাতের পিছন পিঠ করে মারতে গিয়েও থেমে গেলো,,আয়েশা কিছু টা চমকে আহিলের হাতের দিকে তাকালো আর বললো,,
আয়েশা: আজ আপনি বুঝিয়ে দিলেন যে কে আপনার জন্য প্রয়োজন,,কার গুরুত্ব আপনার জীবনে বেশি,,,এ পৃথিবী তে সবার গুরুত্ব আছে আপনার জীবনে,,,প্রয়োজন আছে কিন্তু আমার নেই,,,আমি নেহাতই একজন আশ্রিতা,,,আশ্রিতা বললে ভুল হবে আমি তো আপনার র…(থেমে গেলো) প্রতিশোধ নিতে বিয়ে করেছেন তাই না?? যদিও আমি জানি না কোন ভুলের শাস্তি আপনি আমাকে দিচ্ছেন তবুও বলছি প্রতিশোধ নেওয়া হয়ে গেলে আমায় বলে দেবেন আমি আপনার জীবন থেকে চলে যাবো,,,কোনদিন ফিরে আসবো না হারিয়ে যাবো চিরতরে (একটু একটু করে পিছোচ্ছে) হারিয়ে যাবো!!(দৌঁড়ে বেরিয়ে গেলো)
আহিল স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,,কি বলবে বুঝতে পারছে না,,,যখনই মনে হয় সব ভুলে আয়েশা কে আপন নেবে তখনই সব ওলট পালট হয়ে যায়,,,আহিলের চোখের সামনে ঋক আর আয়েশার কথপোকথনের কথা মনে পরলেই আহিল আবার নিজেকে শক্ত করে নেয় আর ঐ মুহুর্তেই,,,
আরোহী: আমি জানতাম রিয়া,,তুমি ঠিক আসবে,,আমার ভাইয়া আর বৌমনির সম্পর্ক টা তো তোমাকে ভাঙ্তেই হবে তাই না??
রিয়া: ক..কি বলতে চাইছো ত..তুমি??
জ্যাক: কেনো গত রাতে তুমি যেটা করেছ সেটার কথা বলতে চাইছি আমরা,,
আহিল: এখন তোরা ও শুরু করলি আয়েশার মতো?? কি করেছে রিয়া কিসের কথা বলছিস তোরা??
জ্যাক: কালকে তুই একটা হোটেলে ছিলিস মনে আছে তোর??
আহিল: হ্যাঁ আমি তোকে ফোন করার পর ঐ হোটেলটায় গেছিলাম আর ওখানে রিয়া ও ছিলো,,আর ওখানে গিয়ে বেশি ড্রিংক করার ফলে আমার কোনো হুঁশ ছিলো না,,বাট আগে কোনদিন আমার এমন হয়নি,,,তারপরে কি হয়েছে আমার কিছুতেই মনে পরছে না আজকে সকাল থেকে মনে করার চেষ্টা করছি বাট,
জ্যাক: তারপর কি হয়েছিল আমি বলছি,,,
— আমি তোর কল রাখার পর বুঝতে পারি তুই রেগে আছিস আর হোটেলে যাবি ড্রিংক করবি,,,এটা তোর অভ্যেস তাই আমি তোর লোকেশন ট্রাক করি আর আমিও পৌঁছে যাই তোর হোটেলে,,গিয়ে দেখি তুই ড্রিংক করছিস আর রিয়া তোর পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে,,আমি আরেকটু কাছে যাই কিন্তু রিয়া যাতে দেখতে না পায় সেভাবেই আড়ালে দাঁড়াই আর দেখি যে রিয়া তোর ড্রিংক এ কিছু একটা মেশালো আর তারপর তোকে দিয়ে দিলো,,,তুই ড্রিংক টা হাফ খেয়ে রেখে দিস আর আমি যখন রিয়া কে তোর সাথে দেখি তখনই বৌদি কে ফোন করেদি যাতে আরোহী কে সাথে নিয়ে এখানে চলে আসে,,,আর তারপরই দেখি রিয়ার ঐ কান্ড তুই হাফ ড্রিংক খেতেই কেমন একটা আচরণ করতে থাকিস আর রিয়া তোকে হোটেলের রূমে নিয়ে যেতে চায় সেই মুহুর্তেই বৌদি আসে আর তোদের ফলো করে,,,এদিকে আমি তোর হাফ ড্রিংক এর গ্লাস টা নিয়ে সেটার ড্রিংক টা একটা প্যাকেটে ভরে নি আর তারপর আয়েশা বৌদি যে দিকে গেছে সেদিকে যাই আর গিয়ে দেখি রিয়া তোকে নিয়ে যে রূমে ঢুকেছে সেটা লক করা,, আমি দরজা ভাংতে নিলেই রিয়া দরজা খুলে দেয় আর তারপর,,,,(থামিয়ে দিয়ে)
আরোহী: তারপরে যা হয়েছে সেটা আমি বলছি,,,
— রূমে ঢুকেই আমরা দেখি তুই বেহুঁশ হয়ে বিছানায় পরে আছিস আর তোর শার্ট ও খোলা,,,আর বিছানা থেকে দুরে একটা ক্যামেরা ফিক্স করা যেটা দিয়ে কোনো কিছু রেকর্ড করলে বা ছবি তুললে বিছানায় যা যা হচ্ছে সব বোঝা যাবে,,,আমার মনে হয় না তোকে আর কিছু বলতে হবে,,,
রিয়া: ম..মি..মিথ্যে সব মিথ্যে,,,কি প্রমান আছে হ্যাঁ??
জ্যাক: এই যে প্রমাণ,,,(একটা রিপোর্টের কাগজ দেখিয়ে) আহিল!! এটা সেই ড্রিংক এর রিপোর্ট যেটা তোকে রিয়া দিয়েছিল,,,স্পষ্ট লেখা ড্রিংক এ ড্রাগস ছিলো,,
আরোহী: আর এই যে ভিডিও ক্লিপ,,,এতে রিয়া যে ড্রাগস মেশাচ্ছে তা দেখা যাচ্ছে আর যদি বলিস ঐ রূমে তোর অবস্থা টা তুই দেখবি দেন আমার ফোনে সেটার ও ভিডিও করা আছে দেখতে পারিস,,,[১২ পর্বে উল্লেখ আছে]
আহিল সব প্রমাণ গুলো দেখে চোয়াল শক্ত করে চোখ গরম করে রিয়ার দিকে তাকাতেই দেখলো রিয়া নেই,,,
জ্যাক: ওহ শিট!! রিয়া কোথায়??
আরোহী: পালিয়েছে নিশ্চয়ই
জ্যাক: আহিল!! তুই এখন ও বৌদি কে ভুল বুঝবি??
আহিল: আমি কালকে যেটা দেখেছি সেটার কি হবে??
আরোহী: যদি সেটাই বলিস তাহলে বৌমনি ও তো আজকে তোকে আর রিয়া কে ওভাবে দেখলো আর গত রাতে যেভাবে দেখেছে সেটা তো তুই নিজেই দেখেছিস,,বৌমনি যেটা দেখেছে সেটা কি সত্যি??
আহিল: নাহহহহ!!
জ্যাক: তাহলে তো তুই যেটা দেখেছিস সেটা ভুল ও হতে পারে,,,তুই আমাকে সবটা বলেছিস কালকে আর তাই আমি বলছি,,একবার বৌদির কথাটা শোন,,অনেক বার তোকে কিছু একটা বলতে চেয়েছে যেটা বলতে পারেনি,,,
আরোহী: এভাবে নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি টা আর কতদিন ধরে রাখবি ভাইয়া,,,তুই বরং একবার অঙ্কুর দার সাথে কথা বল কারণ দি ভাইয়ের ব্যাপারে তুই যা যা জেনেছিস তা কিন্তু একটা অজ্ঞাত ব্যক্তির থেকে,,,মিথ্যে ও তো হতে পারে?? যা সবসময় আমরা দেখি বা শুনি তা ঠিক হয়না তার জন্য যথাযথ যুক্তি দরকার যেটা আমি আর জ্যাক তোকে রিয়ার ব্যাপারে দিলাম কিন্তু ঐ লোকটা তো প্রমাণ দেখিয়েই ধাঁ,,,কোনো পাত্তা নেই তোর সামনে পর্যন্ত আসেনি,,,তাহলে কেনো তুই বৌমনির থেকে ওই লোক টাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছিস?? বৌমনি কি তাহলে সত্যি বললো,,,এখন আর তুই বৌমনি কে ভালোবাসিস না?? বৌমনির কি কোনো গুরুত্ব নেই কোনো প্রয়োজন নেই তোর জীবনে??
আহিল: আরু!! তুই জানিস না আমি আয়েশা কে কতটা ভালোবাসি??
আরোহী: ভালোবাসলে বিশ্বাস করতিস ভাইয়া যেটা তুই করছিস না,,,সব ক্লিয়ার করতে হলে তোকে বৌমনির সাথে কথা বলতে হবে,,
আহিল: হমম কিন্তু তার আগে বল তুই কি করে জানলি আমার আর আয়েশার বিয়ে হয়ে গেছে?? (জ্যাক কে উদ্দেশ্য করে)
জ্যাক: আমি মানে…
আরোহী: আমি বলেছি
আহিল: তুই?? কিন্তু কি করে??
আরোহী: তোর ফোন থেকে,,,জ্যাক এর সাথে কথা বলার পর জানতে পারলাম যে তোকে বৌমনির ব্যাপারে অনেক ছবি পাঠানো হয়েছে আর ভয়েজ ও,,,আর এখানে এই জন্যই তুই এমন ব্যবহার করছিস তাই জ্যাক এখানে আসে আর আমরা প্লান করে ঐ দিনের ঘটনাটা ঘটাই,,,
আহিল: তার মানে তুই সবটা জানতিস??
আরোহী: হম,,,এখন যা তুই বৌমনি কিন্তু কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গেছে,,,মনে হয় ঘরেই গেছে,,
আহিল আর এক মুহুর্ত দেরী না করে চলে গেলো আর জ্যাক এসে আরোহীর কাঁধে হাত রাখলো,,
আরোহী: জানি না কবে সব ঠিক হবে??
জ্যাক: ডোন্ট বি আপসেট আরু!! সব ঠিক হয়ে যাবে,,
আরোহী: হম সেটাই তো চাই,,
আহিল ঘরে এসে দেখলো আয়েশা কোথাও নেই,,আহিল ভাবলো হয়তো ওয়াশরূমে আছে,,,কিন্তু সেখানেও নেই আয়েশা,,হঠাৎই আহিল ফোঁপানোর আওয়াজ শুনতে পেলো ব্যালকনি থেকে,,,গিয়ে দেখলো আয়েশা হাঁটু মুড়ে বসে রয়েছে আর ফোঁপাচ্ছে,,,আহিল গিয়ে কোনো কথা বললো না সরাসরি আয়েশা কে কোলে তুলে নিলো,,আয়েশা তো পুরো অবাক,,,হঠাৎ করে এভাবে আহিলের কোলে নেওয়ার মানে খুঁজে না পেয়ে চুপ থাকলেও কিছুক্ষণ পর ছুটোছুটি করতে লাগলো,,,
আয়েশা: কেনো কোলে নিয়েছেন আপনি আমাকে?? ছাড়ুন,,ছাড়ুন বলছি আমি আপনার সাথে কোনো কথা বলতে চাইনা,,নামান আমাকে,,কি হলো কথা কানে যাচ্ছে না,,
আহিল আয়েশার কথার তোয়াক্কা না করে আয়েশা কে রূমে নিয়ে গিয়ে সোজা বেডে বসিয়ে দিলো আর আয়েশার দু-গালে হাত দিতেই আয়েশা ঝাড়া দিয়ে আহিলের হাত সরিয়ে দিলো আর বললো,,
আয়েশা: ওহ তো এখন কি আপনি আবার আমাকে ভোগ করতে এসেছেন??
আহিল: আয়েশাআআ!! বেশি কথা বলছো তুমি,,
আয়েশা: হ্যাঁ সবসময় তো আমিই বেশি বলি,,,ভুল করি সব দোষ তো সবসময় আমার তাই না?? আপনার কোনো দোষ নেই,,আপনি আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড কে জড়িয়ে ধরতে পারেন তাতে আপনাকে কিছু বলা যাবে না আর না আপনার ফ্রেন্ড কে কিন্তু আমাকে যদি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড জড়িয়ে ধরে তাহলে আমি বাজে মেয়ে নষ্ট মেয়ে,,,আমার উপর হাত তোলা যায়,,,ঠিকই তো বলেছেন নষ্ট মেয়ে বলেই তো আজকে নিজের রক্ষীত…
আয়েশা নিজের কথা শেষ করবে তার আগেই আহিল আয়েশার মাথার পিছন দিকটা ধরে নিজের সামনে এনে আয়েশার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো,,,আহিল আয়েশার ঠোঁট দুটো আকড়ে ধরেছে,,আয়েশা নড়াচড়া করতে পারছে না কারণ আহিল আয়েশার মাথার পিছন টা যেমন ধরে আছে তেমন এক হাত দিয়ে আয়েশার দুটো হাত ও ধরে আছে,,,আস্তে আস্তে আয়েশার ঠোঁট দুটো ফাঁক হয়ে গেলো আর তার মধ্যে আহিলের ঠোঁট তীব্র থেকে তীব্র ভাবে প্রবেশ করতে লাগলো,,কিছুক্ষণ বাদে আহিল আয়েশার হাত দুটো ছেড়ে দিতে আয়েশার হাত টা আপনা আপনি আহিলের বুকে চলে যায় তারপর আস্তে আস্তে আহিলের কলার চেপে ধরে আয়েশা,,,
আয়েশা অনুভব করছে আহিলের এই স্পর্শ ভালোবাসার,,,এতে নেই কোনো প্রতিশোধের আগুন না আছে কোনো রাগ,,,আয়েশা ও আহিলের সাথে সমান ভাবে তাল মিলিয়ে চলেছে,,,কিন্তু আস্তে আস্তে আয়েশার শরীর নেতিয়ে পরতেই আহিল আয়েশার কোমর জড়িয়ে ধরে বসা অবস্থাতেই আয়েশা কে আরো কাছে টেনে নেয়,,,আহিল আস্তে আস্তে আয়েশার ঠোঁট জোড়া ছেড়ে আয়েশার গলায় চিবুক বেয়ে নামে,,,নিজের উষ্ণ পরশ দিতে থাকে আর ঠোঁট বুলাতে থাকে,,তারপর ঘাড়ের কাছে গিয়ে হাল্কা একটা কামড় দেয় আর মাথা তুলে আয়েশার গলা থেকে সরে এসে দেখে আয়েশা চোখ বুজে রয়েছে আর আয়েশার চোখ টা ভেজা,,,আহিল আয়েশার দু চোখে চুমু দেয় তারপর আয়েশার ভেজা কাঁপা ঠোঁট গুলোয় নিজের বুড়ো আঙুল দিয়ে স্লাইড করতে থাকে এতে আয়েশা আরো শক্ত করে আহিলের কলার চেপে ধরে যা আহিল কে আরো উত্তেজিত করে তোলে এবং আহিল আবার ও আয়েশার ঠোঁটের নেশার মাঝে ডুব দেয়,,,আবার নিজের আয়ত্তে নিয়ে নেয় আয়েশার ঠোঁট জোড়া আর আয়েশা ও আস্তে আস্তে নিজের এক হাত আহিলের মাথার চুলে ডুবিয়ে দেয় আর এক হাত দিয়ে আহিলের কাঁধের শার্ট খামচে ধরে,,,এভাবেই একে অপরের মধ্যে মত্ত থাকে দুজন কাছে টেনে নেয় একে অপরকে……………………
,
[ ফিরে আসবো আগামী পর্বে ⚘🍁]