ডুবেছি_আমি_তোমাতে #লেখিকা_Aiza_islam_Hayati #পর্ব_০৬

0
157

#ডুবেছি_আমি_তোমাতে
#লেখিকা_Aiza_islam_Hayati
#পর্ব_০৬

“আজ আমার মন ভালো নাই সামনে আয় তোকে একটু জ্বা’লা’ই।তোকে জ্বা’লা’লেই আমার মন ভালো হইয়া যাবে।কোথায় তুই ভাই?” কথা গুলো বলতে বলতে বারান্দার দিকে পা বাড়ায় আহির।বারান্দার থাই গ্লাসের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই দেখতে পায় আহনাভ কাউচে শুয়ে আছে।

আহির দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে আহনাভের কাছে গিয়ে হাঁটু ভাঁজ করে বসে মৃদু স্বরে বলে,” আজও বুঝি ভাই ওই লিলীমার কথা ভাবিস।লিলীমা পেত্নী আমার একমাত্র ভোলা ভালা ভাইটির অবস্থা কী করেছে।ওই লিলীমা পেত্নী কে পেলে একদিন জম্পেশ কেলানি দিবো মেয়ে হয়েছে তো কী হয়েছে এমন কেলানি দেবো না।”

আহির থেমে গিয়ে আহনাভকে ধরে উঠিয়ে নেয় ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য।কিন্তু আহনাভের ঘুম পাতলা হয়ে যায় চট করে চোখের পাতা খুলে বড় বড় করে আহিরের দিকে তাকায়।আহির আহনাভের দিকে তার বত্রিশটা দাঁত বের করে তাকিয়ে আছে।

আহনাভ আহিরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বলে,” তুই আমার মান ইজ্জত লুটে নিচ্ছিস নাকি!”

আহির ভ্রু কুচকে বলে,” জাস্ট শাট আপ ব্রাদার,সব রাইখা তোর মান ইজ্জত আমি লুটতে কেন যাবো।আজকাল আমার মত ভালো মানুষের দিন নাই।আমি তো তোকে ঘরে নিয়ে যাচ্ছিলাম,এইখানে তো পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিলি।”

“তুই ভালো মানুষ হলে আমি তো কচু গাছের সাথে ফাঁ’সি দিয়ে অ’ক্কা পেতেও রাজি।” বলেই বারান্দা ত্যাগ করে আহনাভ।

আহির চেঁচিয়ে বলে উঠে,”আমি তাহলে কচু গাছ এনে দেই তুই বরং ক’চু গাছের সাথে ফাঁ’সি দিয়ে ম’রে যা।”

…..

আজকের দিনটি হয়তো সকলের জন্যই ব্যাস্ততার। ভোরের দিকেই ঘুম থেকে উঠে লায়ানা তার এক গুরুত্বপূর্ণ কাজে গিয়েছে।

এইদিকে আহনাভ, আহির দুজন আজ খুব তাড়াতাড়ি করে অফিসে চলে গিয়েছে।প্রতিদিনের তুলনায় আজ দুজনের কাজের প্রেসার অনেকটা বেশি।

.
মুগ্ধতা নিজের কেবিনে বসে আছে।এখন ব্রেক টাইম চলছে আধ ঘণ্টা পর থেকে পেশেন্ট দেখবে মুগ্ধতা।মুগ্ধতা কিছু একটা ভেবে হাতে ফোন নিয়ে আহিরের নাম্বার ডায়াল করে কল করলো।

.
আহির তার কেবিনে বসে একটির পর একটি ফাইল চেক করছে সেইসময় আহিরের পাশে দাড়িয়ে থাকা নওশাদ আহিরের ফোন এগিয়ে দিয়ে বলে,”স্যার আপনার কল এসেছে।”

আহির ফাইলে সাইন করতে করতে বলে,” ফোন রিসিভ করে আমার কানে ধরো নওশাদ।”

নওশাদ কল রিসিভ করে আহিরের কানে ধরে।
ঐপাশ থেকে মুগ্ধতা বলে উঠে,”হ্যালো আসসালামু আলাইকুম।”

আহিরের হাত থেমে যায়,হাত থেকে কলম রেখে দিয়ে নওশাদের হাতের থেকে ফোন নিয়ে মুগ্ধতার সালামের উত্তর দিয়ে কল কেটে দেয় আহির।

মুখ ফুলিয়ে আহির বলে উঠে,” কথায় কথায় ভাই বলে রাগ তুঙ্গে উঠিয়ে এখন কল করা হচ্ছে।”

নওশাদ ঠোঁট টিপে হেসে বলে,”স্যার এই সামান্য ব্যাপারে আপনি রেগে আছেন?”

” সত্যি তো ভাই বললে সমস্যা কী?” বলে আবার হঠাৎ মুখ ফুলিয়ে বলে উঠে,” আমাকে ভাই বলে রাগাবে কেনো?”

” স্যার আপনি কী মুগ্ধ ম্যাম কে পছন্দ করেন?”

আহির নওশাদের দিকে আড় চোখে তাকিয়ে বলে,”জানি না। আর করলেও তোমাকে কেনো বলবো।”

.
আহির অফিসের কাজ শেষ করে অপরাহ্নের দিকে বেরিয়ে সিটি হসপিটাল চলে যায়,দুটো পেশেন্ট এর হার্ট সার্জারি রয়েছে।হার্ট সার্জারি সফল ভাবে শেষ করে জরুরি এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে আসা কয়েকজন রোগীকে চেকআপ করে নেয়।

আহির চলে যাওয়ার পর আহনাভ অফিসে দুটি মিটিং অ্যাটেন্ড করে সামলে নেয়।অতঃপর সন্ধ্যায়
আহনাভ অফিস থেকে বেরিয়ে চলে যায় তার শুটিংয়ে। আহনাভের নতুন গানের শুট চলছে,শুটিং রাতে হওয়ায় আজ সকাল থেকে সন্ধ্যা অব্দি অফিসের কাজ সামলে নিয়েছে।

.
আহনাভ শুট শেষ করে বাড়ি ফিরছে নিজের গাড়ি করে।আহনাভের পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট তমাল ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি চালাচ্ছে।আহনাভ পিছনের সিটে গা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে।হঠাৎ আহনাভের ফোনে টুং করে আওয়াজ হতেই আহনাভ চোখ মেলে তাকায়।পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে ফোনের স্ক্রিনে একটি ম্যাসেজ শো করছে। অননোন নাম্বার থেকে আসা ম্যাসেজ।আহনাভ ম্যাসেজটি ওপেন করতেই আহনাভের চোখ রসগোল্লার মত আকার ধারণ করে।

ম্যাসেজটির প্রথমেই লায়ানার রক্তিম বর্ণ ধারণ করা মুখাবয়ব এর ছবি,ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে লায়ানা এক্সট্রিম লেভেলে রেগে আছে।

আহনাভ শুকনো ঢোক গিলে ছবিটা স্ক্রল করে উপরে টেনে ছবির নিচে লেখা গুলো বিড়বিড় করে পড়া শুরু করে,”শুটিং করবে করো ভালো কথা কিন্তু ওই ঢঙ্গী মেয়েটা কেনো তোমার গায়ে পড়ছিল?আমি কথা বললে তুমি তো রাগে ফায়ার হয়ে যাও তো ওই মেয়ের সাথে এত্ত দাঁত কেলানোর কী ছিল?আমি ছুঁয়ে দিলে গা জ্বলে যায় তোমার ওই মেয়ে তোমার হাত ধরার সাহস কী করে করলো?আহনাভ আমি খু’ন করে ফেলবো বলে দিলাম।আমার প্রিয় মানুষটিকে কেনো ওই মেয়ে ছুঁবে। আই সুয়ের আহনাভ আমি শে’ষ করে ফেলবো সব কিছু।”

আহনাভ পাশে ফোন রেখে দিয়ে বড় করে দুই তিনবার শ্বাস নিয়ে বলে উঠে,”এ তো পুরোই সাংঘাতিক মেয়ে রে বাবা।আমার পিছনে স্পাই লাগিয়েছে নাকি?”

লায়ানা আহনাভের পিছনে স্পাই লাইয়েছে।কাজের মাঝে আহনাভের প্রতিটা খোঁজ স্পাই লায়ানাকে দেয়।আহনাভের গানের নায়িকা হয়েছে ওলি নামের একটি মেয়ে।ওলি একটু গায়ে পড়া টাইপের মেয়ে। আহনাভের সাথে কথা বলার সময় গায়ে পড়ে যায়।আহনাভ শুটিংয়ের ব্রেক টাইমে ওলির কথার তালে তালে কিছুটা হেসেছিল।ওলির গায়ে পড়া ভাব আর এই হাসি লায়ানার গা জ্বালিয়ে রাগ তুঙ্গে তুলে দেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল।

…..

সকালের সূর্যের মিষ্টি রোদ লায়ানার মুখে এসে পড়তেই লায়ানা চোখ বন্ধ রেখেই মুখ কুচকে চেঁচিয়ে বলে উঠে,” কোন বজ্জাত জানালার পর্দা সরিয়েছে রে?”

“বজ্জাত ছেরি উঠ ঘুম থেকে।”

লায়ানা কম্বল আরো ভালো করে টেনে চোখ ঢেকে নিয়ে বলে,”ওহ বনু তুই।আরেহ বনু প্লিজ আরেকটু ঘুমাতে দে।”

“এই তুই না বললি আজ তাড়াতাড়ি তোকে ডেকে উঠাতে।এখন নিজেই উঠতে চাইছিস না।”

“নাহ থাক আমি আরেকটু ঘুমাবো কাল তো রাত দুইটায় বাড়ি ফিরে ঘুমালাম এখন দেখ আমার চোখের শাটার খুলতে চাইছে না আমাকে আরেকটু ঘুমতে দে।”

মুগ্ধতা লায়ানাকে টেনে উঠিয়ে বসিয়ে দেয়।লায়ানা ঝিমাতে ঝিমাতে বলে,”আমার চোখের শাটার খুলবে না এখন ঘুমাতে দে বইন।”

“তুই যদি তোর চোখের শাটার না খুলিস সত্যি এই শীতের মধ্যে এক বালতি পানি এনে তোর মাথায় ঢেলে দিবো।”

লায়ানা চোখের পাতা হাত দিয়ে টেনে খুলে বলে,”এইযে খুলে গিয়েছে শাটার।আমি যাই।” বলেই ওয়াশরুমে দৌড়।

.
লায়ানা ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে ব্রেক ফাস্ট করে নেয় অতঃপর ঘরে এসে মুগ্ধতার পাশে বসে বলে,” তুই কী আজ ফ্রি আছিস?”

“হ্যা ফ্রি আছি।আজ তো আমার ছুটির দিন।কেনো?”

” ‘পিএস ইন্ডাস্ট্রির’ শাখা অফিসের ডিজাইনের মেইন প্রজেক্ট ফাইল আমি সাইন করে দিয়েছিলাম তা দিয়ে আসার জন্য পিএস ইন্ডাস্ট্রিতে রাফির যাওয়ার কথা ছিল।আমার এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে ওই আহনাভের সাথে তাই আমি চাইছি নিজে যেতে।তো তুই আমার সাথে চল ফ্রি যখন আছিস।”

” ঠিক আছে যাওয়া যাক।”

.
গাড়ি বিশ তলা ভবনের সামনে এসে থামলো।ভবনের মাঝ বরার সিলভার রঙের অক্ষরে বড় বড় করে লেখা পিএস ইন্ডাস্ট্রি (PS industry)।গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে লায়ানা,মুগ্ধতা,রাফি ও রুদ্র।চারজন অগ্রসর হয় ভবনটির প্রবেশ দরজার দিকে।
.
রিসেপশন এর সামনে গিয়ে চারজন দাড়িয়ে যায়।

রিসিপশনিস্ট এর কাছে গিয়ে রাফি বলে,” এক্সকিউজ মি, মি. আহনাভ বা আহির এর কেবিন কত তলায়?”

“দুজনের কেবিন ১৬ তলায় ।”

রাফি লায়ানার কাছে এসে বলে,”ম্যাম ১৬ তলায় ওনাদের দুজনের কেবিন।”

লায়ানা রাফির হাত থেকে সাইন করা মেইন ফাইল গুলো নিয়ে বলে ,”ঠিক আছে তোমরা দুজন এইখানেই থাকো।”

মুগ্ধতা বলে উঠে,”আচ্ছা আমি মি. আহির এর কেবিনে যাই?”

“এখনও রাগ ভাঙ্গে নি নাকি?”

” নাহ রেহ।এই দুইদিন বিরক্তিতে আছি পুরো।”

“ঠিক আছে চল।”

লায়ানা,মুগ্ধতা লিফট করে ষোলো তলায় পৌঁছে যায়।লিফট থেকে নেমে লায়ানা নওশাদ কে দেখতে পায়।লায়ানা নওশাদের দিকে এগিয়ে গেলে নওশাদ ঠোঁটের কোণে হাঁসি ফুটিয়ে বলে,”ম্যাম আপনি!আসুন আহির স্যার কেবিনেই আছে।”

“মি. আহনাভ কেবিনে আছে?”

“জি ম্যাম।”

” মি. আহনাভ এর কেবিন কোথায়?”

” ম্যাম বা দিকে গেলেই আহনাভ স্যার এর কেবিন।”

“ঠিক আছে তাহলে আমি মি. আহনাভ এর কেবিনেই যাচ্ছি।”লায়ানা থেমে গিয়ে মুগ্ধতার হাত ধরে বলে,” নওশাদ ও হচ্ছে আমার বোন মুগ্ধতা।ওর মি.আহির এর সাথে গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।”

নওশাদ মুগ্ধতার দিকে তাকিয়ে মুগ্ধতাকে বলে,” ওকে ম্যাম আপনি আসুন আমার সাথে।আমি আপনাকে নিয়ে যাচ্ছি।”

.
লায়ানা আহনাভের কেবিনের সামনে এসে বলে,”আসতে পারি।”

কেবিনের ভিতর থেকে গম্ভীর কন্ঠে ভেসে আসে,” জি আসুন।”

লায়ানা দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করে,আহনাভ ফাইল থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সামনে তাকাতেই অবাক স্বরে বলে,”তুমি?”

লায়ানা গম্ভীর কণ্ঠে বলে,”হম আমি।কেনো অন্য কাউকে আশা করছিলে নাকি?”

“আজব কেমন কথা।এইখানে কেনো এসেছো?আর তুমি কাল আমাকে থ্রেট কেনো করেছো?আমি বলেছিনা আমার থেকে দূরে থাকবে।আর তুমি আমার পিছনে স্পাই লাগিয়েছো?”

লায়ানা বড় বড় পায়ে আহনাভের সামনে এসে দাড়িয়ে হাতের ফাইল গুলো টেবিলে জোরে রেখে বলে,”আমার সাথে প্রজেক্ট সাইন করেছো আর আমি এই অফিসে আসতে পারবো না?প্রজেক্ট এর মেইন ফাইল গুলোতে সাইন করে দিয়েছি তা নিজে থেকে দিতে এসেছি।”

লায়ানা আহনাভের দিকে কিছুটা ঝুঁকে যায়,এক হাত টেবিলের উপর রেখে আরেক হাত চেয়ারের হাতলে রেখে আহনাভকে ব্লক করে ফেলে।

আহনাভ আমতা আমতা করে বলে,”এইসব কী করছো সরো সামনে থেকে।”

লায়ানা দাঁতে দাঁত পিষে বলে,”জাস্ট শাট ইউর মাউথ। কী ভাবো নিজেকে? কাল তো ম্যাসেজ করে থ্রেট দিয়েছি আজ সামনাসামনি থ্রেট দিতে এসেছি।আহনাভ আমি কখনোই পছন্দ করবো না ঐরকম কোনো মেয়ে আমার শখের পুরুষের গায়ের উপর ঢলে পড়ুক,বার বার তোমাকে ছুঁয়ে দেখুক।”

“তুমি নিজেই আমার উপর ঢলে পড়ে আছো।”

“আমি একশো বার ঢলে পড়বো অন্য মেয়েরা কখনোই পারবে না বুঝলে।যদি এমন হয় দেখে নিও আমি কী করতে পারি।” বলে এক বড় নিশ্বাস ছারে লায়ানা অতঃপর ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটিয়ে বলে,”আমি অনেক ক্লান্ত আহনাভ।এই লায়ানাকে রাগিয়ে দিও না।”

আহনাভ লায়ানাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দাড়িয়ে যায়। আহনাভ ধমকের স্বরে বলে,”তুমি কী বুঝতে পারছো না আমি তোমাকে পছন্দ করছি না তাহলে কেনো বার বার আমার সামনে এসে এইসব করছো?”

লায়ানা বুকে দুই হাত ভাঁজ করে মুখ ফুলিয়ে বলে,”আমি কেনো বুঝতে যাবো?আমি কিছুই বুঝতে চাই না আমি তোমাকে পছন্দ করি এইটাই আসল কথা।আমি বারবার তোমার কাছে আসবো যখন ইচ্ছে হয় তখন আসবো।তোমার সমস্যা হলে মুখে ললিপপ নিয়ে বসে থাকো।”

লায়ানার এইভাবে মুখ ফুলানো দেখে আহনাভের খুব হাসি পেলো কিন্তু মুখে গম্ভীর ভাব টেনে বলে, “হোয়াট ননসেন্স হায়া।তুমি কেন বুঝতে চাইছো না এক পাক্ষিক ভালোবাসায় হয় না।একটা সম্পর্কে দুইজনের ভালোবাসার প্রয়োজন হয়।”

লায়ানা এগিয়ে যায় আহনাভ এর একদম সামনে। লায়ানা মলিন স্বরে বলে,”আমাকে একবার সুযোগ দিয়ে দেখো আমি তোমার মনের মত হওয়ার চেষ্টা করবো।আমি কখনো তোমাকে অনুশোচনা করার মতো কোনো পথ রাখবো না।”

আহনাভ লায়ানার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে লায়ানাকে থামিয়ে দিয়ে বলে,”জাস্ট শাট আপ হায়া।আমি কাউকে কোনো সুযোগ দিতে চাই না।না কোনো কথা শুনতে চাই। আই জাস্ট হেট লাভ, আই ডোন্ট বিলিভ ইন লাভ।

লায়ানা কোমরে দুই হাত দিয়ে আহনাভের মুখোমুখি দাড়িয়ে বলে,” এহ মুখের মোয়া সুযোগ দিবে না।সুন্দর করে বলেছি তো গায়ে লাগলো না ।লাগবে না সুযোগ দেয়া,এই লয়ানা সুযোগ বানিয়ে নিতে জানে।আর কোন শাকচুন্নি তোমার মন নিয়ে খেলেছে যার কারণে তুমি ভালোবাসায় বিশ্বাস করো না আমাকে একটু বলো আমি গিয়ে ওই শাকচুন্নির হাড় মাংস এক করে দিয়ে আসি।”

আহনাভ বিরক্তি মাখা মুখ বানিয়ে চেয়ারে গিয়ে বসে বলে,” তুমি কী কোনো গুন্ডি?কথায় কথায় বলো শে’ষ করে ফেলবো,মে’রে ফেলবো, দেখে নিব,হাড় মাংস এক করে দিবো।”

“এইসব ডায়লগ বলতে হলে কী গুন্ডি হতে হয়?আমার এই সুইট কিউট ফেস থেকে গুন্ডি রূপে যেতে সময় লাগে না।” বলে লায়ানা চেয়ার টেনে আহনাভের পাশে বসে বলে,”এইবার বলো ওই শাকচুন্নি মেয়েটার কথা।”

“তুমি এত্ত জায়গা থাকতে চেয়ার নিয়ে আমার পাশ ঘেঁষে কেনো বসেছো?”

লায়ানা শরম পাওয়ার মত করে বলে,”তুমি চাইলে তোমার কোলেই বসে পড়তে পারি।”

আহনাভ চোখ বড় বড় করে ধমকের স্বরে বলে,”জাস্ট শাট আপ।বেশরম মেয়ে একটা।”

লায়ানা চুপ হয়ে যায়।একটু একটু করে হাত বাড়িয়ে আহনাভের হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলে,” প্লিজ ওই মেয়েটা সম্পর্কে বলো আমাকে।আমার সাথে তোমার কষ্ট গুলো শেয়ার করো আহনাভ।আচ্ছা আমাকে তোমার বন্ধু ভেবে বলতে পারো। দেখো আমার সাথে শেয়ার করে তোমার মন হালকা হতে পারে প্লিজ আহনাভ।”

আহনাভ অবাকের চরম শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছে এই মেয়ে রণচন্ডী রূপ ধারণ করে একবার,আবার মুখ ফুলিয়ে বাচ্চাদের মত করে,আবার রোম্যান্টিক,এখন কিনা কণ্ঠে মায়া মাখিয়ে আহনাভকে সম্মোহিত করছে।

.
নওশাদ মুগ্ধতাকে আহিরের কেবিনের সামনে এনে বলে,”ম্যাম আপনি যেতে পারেন।”

“ওকে।” বলেই দরজা ঠেলে কেবিনের ভিতরে চলে যায় মুগ্ধতা।আহির পকেটে দুই হাত গুঁজে উল্টো দিকে ফিরে দাড়িয়ে আছে,থাই এর দেয়াল ভেদ করে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে আহির।

“কে ?”,বলেই আহির পিছনে ফিরবে তার আগেই মুগ্ধতা বড় বড় পায়ে এগিয়ে গিয়ে আহির এর একদম সামনে দাড়িয়ে যায়।আহির চমকে চোখ বড় বড় করে কিছু বলবে তার আগেই মুগ্ধতা বলা শুরু করে,” এই এইসবের মানে কী?আমি আপনাকে ফোন দিয়েছি কিন্তু আপনি ফোনের ঐপাশ থেকে আমার কণ্ঠ শুনেই ফোন কেটে দিয়েছেন।এত্ত বার ফোন দিয়েছি তুলেন নি কেনো?বয়রা হয়ে গিয়েছিলেন?”

চলবে।

ভুল ত্রুটি হলে আশা করি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here