বৃষ্টিস্নাত প্রেমের গল্প #পর্ব-৩৪ #লেখনীতে-আসমিতা আক্তার ( পাখি )

0
430

#বৃষ্টিস্নাত প্রেমের গল্প
#পর্ব-৩৪
#লেখনীতে-আসমিতা আক্তার ( পাখি )

“আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না তুমি ভাইয়ার বউ।

হুর ফ্যালফ্যাল করে যুবকটির দিকে তাকালো।কথার মাঝে লুকিয়ে আছে আফসোস।তবে আফসোস কেন হচ্ছে তার সেটা বোধগম্য হচ্ছে না।হঠাৎ খেয়াল হল যুবকটির নাম সে জানেনা। তাই প্রশ্ন করল,

“আপনার নাম কি?

হুরের মত করে যুবকটি ও এখন হুরের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইল। দাঁত কেলিয়ে উত্তর দিল,

“ফায়াজ শেখ!

হুর সুর টেনে বলল,
” ও…

ফায়াজ এবার হুরের দিকে তাকিয়ে মলিন স্বরে আফসোস করে বলল,

“আমি তোমাকে কখনো ভাবি বলে ডাকবো না।প্রথমে ভেবেছিলাম তোমায় পটিয়ে বিয়ে করে ফেলব।বিয়ের আগে অবশ্য প্রেম করবো। কিন্তু আমার স্বপ্নে সেগুড়ে বালি। স্বপ্নে বউ আর বাস্তবে ভাবি বের হয়ে গেলে। এটা আমি কোনমতেই মানতে পারছি না। তাই ডিসাইড করেছি তোমায় ভাবি বলবো না, নাম ধরে ডাকবো। আর এমনিতেও তোমায় দেখে মনে হচ্ছে তুমি আমার থেকে অনেক ছোট। তাই ভাবী ডাকটা স্কিপ করলাম।

হুর বো/কা হেসে সম্মতি জানালো।ফায়াজ জুড়ে দিল তার রাজ্যের কথা।ননস্টপ বকবক করছে।হুর শুনছে আবার মাঝে মাঝে দু একটা কথা বলছে। রুদ্ধ এই মুহূর্তে বাসায় নেই। সেই বাহানায় ফায়াজ হুরের সাথে আড্ডায় মেতে উঠেছে। তাও আবার রুদ্ধর রুমে। এতে কিছুটা ভীত হয়ে আছে হুর। যদি রুদ্ধ ফায়াজ তার রুমে এসেছে তাহলে কি কেয়ামত ই না ঘটাবে সেটা ভেবে দুশ্চিন্তা হচ্ছে। আবার ফায়াজের মুখের উপর বলতেও পারছে না রুম থেকে বের হয়ে যেতে। দু তরফ থেকে চি/পায় পড়ে গিয়েছে।ফায়াজ জিজ্ঞেস করল,

“তুমি এখন কিসে পড়ছ?

“কিছুদিন আগে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছি।

“ও তাহলে তো তুমি আমার অনেক ছোট।আচ্ছা, তোমার সাথে ব্রো এর কতদিন হলো বিয়ে হয়েছে?

“এইতো মাসখানেক হবে।

“লাভ ম্যারেজ নাকি অ্যারেঞ্জ?

ফায়াজ থেমে গিয়ে আবার বলে,
“অবশ্য অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ হওয়ার তো কথা না। অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ তো ফ্যামিলিরা দেয়। আর ব্রো এর কোন ফ্যামিলি নেই। দ্যাট মিন্স তোমাদের লাভ ম্যারেজ!ওহ্ অ্যাম জি!আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না ভাইয়া তোমার ভালোবেসে বিয়ে করেছে। যদিও ভাইয়াকে কম চিনি তারপরও যতটুকু চিনেছি ততটুকু দিয়ে বুঝতে পেরেছিলাম ভাইয়া কখনো কেউর সাথে সম্পর্কে জড়াবে না।এখন আমায় বলতো তোমাদের কিভাবে কি শুরু হলো!

বুদ্ধিহীন ভাবে ফায়াজ এর দিকে তাকিয়ে আছে হুর। মস্তিষ্কে কোন কিছুই প্রবেশ করছে না। হতভম্ব হয়ে ফায়াজের দিকে তাকিয়ে ভাবছে একটা মানুষ এত কথা কিভাবে বলতে পারে!আস্ত এক রেডিও ক্যাসেট।আর তাদের বিয়েটা লাভ ম্যারেজ না অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ সেটাই তো সে বুঝতে পারছে না।বিয়ের আগে কখনো কেউ কাউকে ভালোবাসি শব্দটা বলেনি। কেউ কারো কাছে অনুভূতির কথা প্রকাশ করেনি। শুধু বিয়ের আগে নয় এবং কি বিয়ের পরেও কেউ কাউকে ভেতরকার অনুভূতির কথা প্রকাশ করেনি। তাহলে হুর কিভাবে বুঝবে রুদ্ধ তাকে ভালোবাসে কিনা!ভাবুক হয়ে ফায়াজ এর দিকে তাকিয়ে রইল হুর। ফায়াজের প্রশ্নের উত্তর কি দিবে!যে উত্তর সে নিজেই জানে না।তবে কোন কিছু একটা বলে টপিকটা চেঞ্জ করতে হবে। তাই করল হুর,

“সে বিশাল এক ঘটনা। এখন এসব কথা রাখুন। আর বলুন এতদিন যাবত আপনারা কোথায় ছিলেন?কখনো তো আপনাদের এই বাড়িতে আসতে দেখিনি।

মলিন হয়ে আসলো ফায়াজের মুখ।বলতে লাগল,
“আমরা এতদিন বনানীতে ছিলাম।শুরু থেকেই ভাইয়া আমাদের সাথে ছিল না।ভাইয়া আমাদের সাথে কেন থাকতো না তা প্রথম প্রথম বুঝতে পারতাম না। শুধু জানতাম আমার একটি বড় ভাইয়া আছে। আমার বয়স যখন ১০ বছর তখন মা আমাদের ছেড়ে চলে যায়। সেদিন বাবা প্রচুর কেঁদেছিলেন। প্রথম সেদিন বাবার চোখে পানি দেখেছিলাম। বাবাকে কাঁদতে দেখে আমিও কাঁদছিলাম। বিষন্নতায় কেটে যায় আমাদের কয়েকটা দিন।

বুঝতে পেরেছিলাম মা আর কখনোই আমাদের কাছে আসবেন না।আমাকে নিয়ে বাবা ভাইয়ের কাছে এসেছিলেন। ভাইয়াকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।দু ছেলেকে নিয়ে সংসার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভাইয়া আসতে নারাজ। বাবা ভাইয়াকে বেশি প্রেসার দেওয়ায় ভাইয়া রাগে বাবাকে আঘাত করেছিল।ফুলদানি ছুড়ে মেরেছিল বাবার কপালে।ক্ষত শুকিয়ে গেলেও দাগ রয়ে গেছে।হার মানেনি বাবা। ভাইয়ের কাছে প্রায়ই যেতেন তাকে নিয়ে আসার জন্য।বাবা শুধু ভাইয়ের কাছেই বিনতি করতেন না।

যে ভাইয়াকে নিয়ে গিয়েছিলেন,যার আশ্রয় ভাইয়া ছিলেন তাকেও অনেক আকুতি মিনতি করেছিলেন ভাইয়াকে তার কাছে দিয়ে দেয়ার জন্য।ভাইয়ের মতো সেই লোকটি ও চাইতে না ভাইয়া তার বাবার কাছে ফিরে যাক।কারণ ভাইয়ার মায়ায় তিনি পড়ে গিয়েছিলেন।তাই তিনি ভাইয়াকে দিতে চাইছিলেন না ।একদিন খবর আসে সেই লোক মারা গেছেন।বাবা তখনো ভাইয়ের কাছে যায় ।প্রতিবারের মতো সেদিনও ভাইয়া তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়।তখনো আমি জানতাম না ভাইয়া আমার সৎ ভাই।

বাবা নিজেই আমায় সব সত্য কথা বলেছিলেন।এও জানতে পেরেছিলাম ভাইয়া একজন গ্যাংস্টার।বাবা এটা মানতে পারেননি যে হার ছেলে একজন ভয়ংকর মানুষ বের হবে। তবে তখন তার হাতে কোন কিছুই ছিল না। পুরো কনসেনট্রেট বাবা তখন আমায় দিতেন। আমি এক সময় বাবা পাগল হয়ে গেলাম। সব সময় বাবার আগে পিছে ঘুরতাম। আমার খেয়াল রাখার মাঝে বাবা ভাইয়ারও খেয়াল রাখতেন। আড়ালে । একদিন দুর্ঘটনায় চাচা আর চাচীর মৃত্যু হয়। সেই থেকে রিফা আমাদের সাথে থাকে।

সবকিছু ভালই যাচ্ছিল। আনন্দে কাটছিল আমাদের দিন।বাবার বহু বছরের বিশ্বস্ত বন্ধু তাকে ধোকা দেন।ব্যবসায় তাকে এমন ভাবে ডোবায় যে,আমাদের সবকিছু বিক্রি করে দিতে হয়েছে। তারপর আর কোন রাস্তা না পেয়ে ভাইয়ের কাছে আসি।তারপরের ঘটনা তো তোমার জানা ই।

কথা শেষে বড় করে এক শ্বাস নিল ফায়াজ।খুব মনোযোগ দিয়ে ফাইয়াজের প্রতিটা কথা শুনলো হুর। মনে হচ্ছিল ফায়াজ লেকচারার,আর সে স্টুডেন্ট।

“আচ্ছা, হুর একটা কথা আমার মগজে ঢুকছে না।

প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে ফাইয়াজের দিকে তাকালো হুর। এমন কি কথা আছে যে ফায়াজ বুঝছে না, তাই চোখের দৃষ্টি দ্বারা প্রশ্ন করছে।হুরের প্রশ্নসূচক দৃষ্টি দেখে ফায়াজ বলে,

“এত রাগী একটা মানুষকে তুমি বিয়ে করতে পারলে কিভাবে?রাগী বললে ভুল হবে। উনি কিছুটা বদমেজাজিও।আমার তো এখন সন্দেহ লাগছে যে তোমাদের মাঝে প্রেম বলে কোন কিছু ছিল।তোমার সাথে তো আমাকে বেশ মানাত। তুমি যেমন শান্তশিষ্ট,আমিও তেমনি শান্তশিষ্ট।যদিও একটু কথা বেশি বলি। আমাদের দুজনকে দেখতে হেব্বি লাগতো। মাঝখান থেকে ভাইয়া কাবাব মে হাড্ডি হয়ে গেছে।

বলেই হুহু করে হেসে দিল। হুরের এখন কেমন রিয়েকশন দেয়া উচিত?হাসবে না কাঁদবে।নাকি দুঃখ প্রকাশ করবে?কিছুই বুঝে উঠতে পারল না।ফায়াজের দিকে তাকিয়ে এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎই চোখ গেল দরজার কাছে।শক্ত হয়ে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে রুদ্ধ। চেহারায় ক্ষিপ্ততা দেখা যাচ্ছে। চোখ বড় বড় করে ফায়ারের দিকে তাকালো। দেখল ফায়াজ এখনো বিছানায় গড়িয়ে গড়িয়ে হাসছে।তা দেখে তড়িঘড়ি করে ফায়াজের কাছে এসে হুর বলে।

“ভাইয়া আপনাকে মনে হয় আপনার বাবা ডাকছে।

হাসি থামিয়ে ঠিকঠাক ভাবে বসে হুরের দিকে তাকালেও ফায়াজ।কান খাড়া করে শোনার মতো করে বলল,

” কই না তো, বাবা ডাকছে না।

বিচলিত হয়ে আবার হুর বলে,
“আরে হ্যাঁ ভাইয়া, আমি শুনেছি বাবা আপনাকে ডাকছেন।

“আচ্ছা ঠিক আছে, আমি গিয়ে দে…

ফায়াজের দৃষ্টিগোচরে রুদ্ধ আসে। থমকে যায় ফায়াজ। বন্ধ হয়ে যায় তার কণ্ঠস্বর। এলোমেলো হয়ে যায় মস্তিষ্ক। জ্ঞান শূন্য হয়ে যায় রুদ্ধের মুখশ্রী দেখে। রাগান্বিত মুখশ্রী। কপালের গলার রগ ফুলে উঠেছে। যার দরুন বোঝাই যাচ্ছে সে কতটা পরিমাণে রেগে আছে।এখন ফায়াজের অবস্থা “ছেড়ে দে মা কেঁদে মরে বাঁচি” শব্দ করে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায়। ভয়ে আমতা আমতা করতে লাগে।

“আব…হুর..

রুদ্ধর কর্কশ গলা,
“ভাবি! শী ইজ ইউর ভাবি।

আরো ঘাবড়ে গেল ফায়াজ।তোতলিয়ে বলে,
” হ্যাঁ, ভাবি… আব ভাবি এখন আমি যাই। বাবা আমায় ডাকছেন।

বলে কাউকে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ওর পাশ দিয়ে দ্রুত গতিতে হেঁটে চলে গেল।এদিকে হুর দু ভাই এর কথা শুনে থমকে দাঁড়িয়ে আছে।রুদ্ধ রুমে ঢুকে দরজা ঠা/স করে লাগিয়ে দিল।বিকট শব্দ শুনে কেঁপে উঠল হুর। রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে দেখলো রুদ্ধ ক্ষিপ্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তার দিকেই এগিয়ে আসছে।হুরের নিকটে এসে রুদ্ধ দাঁতের চিবিয়ে বলে,

“আমি তোমাদের মাঝে হাড্ডি হয়ে গেছি তাইনা?তোমাকে আমার সাথে মানায় না বরং ফায়াজের সাথে মানায় তাই না?আমি রাগী, বদমেজাজি?

হুরের এখন ইচ্ছে করছে দুই ভাইয়ের মাথায় বারি দিতে।একটা উল্টাপাল্টা বলে আরেকটা উল্টাপাল্টা বুঝে।হুর বুদ্ধকে বোঝানোর মত করে বলে,

“দেখুন উনি মজা করে এসব বলেছেন।আপনি সিরিয়াসলি নিয়েন না।

রুদ্ধ এগিয়ে এসে হুরের দুগাল নিজের আঙ্গুল দ্বারা চেপে ধরল। লাল হয়ে যাওয়া চোখ দিয়ে ভোরের চোখের দিকে তাকালো। হিসহিসিয়ে বলল,

“মজা করে বলুক আর সিরিয়াস করে বলুক,সে তোমায় এসব কথা বলবে কেন?আর আমার অনুপস্থিতিতে তুমি তাকে রুমে নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলে কেন?এক দিনের পরিচয়ে বেশ রসিকতা হচ্ছে তোমাদের মাঝে।

শয়তানি বুদ্ধি মাথায় চেপে বসল হুরের। দুহাতে দিয়ে রুদ্ধের পেট জড়িয়ে ধরল। নিজেদের মাঝে থাকা দূরত্ব ঘুচিয়ে মিশে গেল।রুদ্ধ তার গাল চেপে ধরার কারণে দু ঠোঁট ফুলে উঠেছে।ফোলা ঠোঁট নিয়ে বাচ্চাদের মতো করে বলে,

“আর ইউ জেলাস?

গাল থেকে নিজের হাতে সরিয়ে আনলো রুদ্ধ।মুখভঙ্গি সিরিয়াস রেখে হুরের দিকে তাকালো।সরে আসতে চাইলে হুর আরো হাতের শক্তি প্রগাঢ় করে। বুকে মাথা রেখে বলে,

“আগে যা হয়েছে ভুলে যান।এখন আপনার আপন মানুষরা আপনার কাছে আছে,পাশে আছে।নতুন করে সব কিছু সাজান। বাবা তার কাজের জন্য খুবই অনুতপ্ত।আরেকটা সুযোগ কি তাকে দেয়া যায় না?

” না, দেয়া যায় না।

কোটের উপর থেকে রুদ্ধের বু/কে চুমু খেল হুর। বলল,
“একটু নরম হওয়া যায় না?

আবারও কঠিন স্বর,
” না।

রুদ্ধের বু/ক থেকে মাথা উঠিয়ে রুদ্ধের কোট খুলে দিতে লাগল।আটকালো না রুদ্ধ।কোট খোলা শেষ হলে গলা থেকে টাই ও খুলে দিল।সাদা শার্টের উপরের দুটা বোতাম খুলে দিল।

“আমি চাই আপনি তাদের সাথে ভালোভাবে ব্যবহার করুন।

“আমি চাইনা।

“তাদের সাথে একসাথে বসে খাবার খান।

“প্রয়োজন মনে করছি না।

“ক্ষমা করে দিন আপনার বাবাকে।

“কোনদিনও না।

“দোষ আপনার বাবা করেছিল,কিন্তু সাজা আপনার ভাই বোনেরা পাচ্ছে।মনমালিন্যতা দূর করুন।বাঁচতে হলে কাউকে না কাউকে প্রয়োজন।মন খুলে কথা বলার মত মানুষ প্রয়োজন। তারা আপনার আপনজন। তাদের এভাবে দূরে ঠেলে দিবেন না।অভিমান করার হলে কাছে থেকে করবেন। তাও নিজের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখবেন না।

“আমার আপনজন বলতে তুমি। তুমি ছাড়া আর কাউকে প্রয়োজন নেই আমার।

“আর আমি যদি না থাকি?তখন!তখন নিশ্চয়ই আপনার কোন আপনজন প্রয়োজন হবে?

রুদ্ধের মুখের দিকে তাকালো হুর।রিঅ্যাকশন বুঝতে পারল না। আসলে হুরের কথা রুদ্ধ প্রথমে ধরতে পারল না। পরক্ষণে যখন বুঝলো তৎক্ষনাৎ দুহাত দিয়ে খামচে ধরলো হুরের দু বাহু।কপট রাগ দেখিয়ে বলল,

“মানে, কোথায় যাবে তুমি?হুরপাখি…
কখনো আমায় ছেড়ে যাওয়ার নাম মুখে আনবে না।না, হলে সেদিন কেয়ামত কে ডেকে আনতে আমি বেশি সময় লাগাবো না। তোমাকে যে ছাড় দেবো এমনটাও না। তোমাকেও ধ্বংস করে দিব। তুমি আমার বউ। তাই তোমাকে রাগের চেয়ে ভালবাসাটাই বেশি দেখাতে চাই। সেঁধে গিয়ে তুমি আমার হিংস্রতা দেখতে চেওনা। এর পরিণাম খুবই ভয়াবহ হবে।

আর্তনাদ করে উঠল হুর।সে তো কথার কথা বলেছিল। এখন কি মজা করাও যাবে না নাকি?ভাগ্য গুনে এমন একটা স্বামী পেয়েছে যে তার সাথে মজা করা যাবে না। বড্ড আফসোস হচ্ছে তার। তবে এখন আফসোস করে কোন লাভ নেই।কোন জিনিস পছন্দ না হলে পরবর্তীতে চেঞ্জ করা যায়। কিন্তু স্বামী নামক পদার্থকে কখনোই চেঞ্জ করা যায় না।তাই এখন তাকে সারা জীবন আফসোস নিয়েই থাকতে হবে।হুরের আর্তনাদ শুনেও রুদ্ধ তাকে ছাড়লো না। ইচ্ছে করছে হুরকে পিষে দিতে। তবে তা করলো না। একমাত্র বউ তার। বউয়ের কোন কিছু হয়ে গেলে তা সে সহ্য করতে পারবে না। তাই ছেড়ে দিল। ছাড়া পেতে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে বিড়বিড় করে বলল,

“হে আল্লাহ! এমন স্বামী আপনি আর কেউর কপালে দিয়েন না।

বিঃদ্রঃ গল্পটা কি কয়েক পর্বের মধ্যে শেষ করব?এগিয়ে যেতে মন চায়,কিন্তু আপনাদের রেসপন্স তেমন পাই না। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে লেখা-ই বন্ধ করে দেই।রিচ সংখ্যা অনেক, তবে রিয়েক্ট মাত্র ২০০+ পাই। দিনকে দিন নিরাশ হচ্ছি আমি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here