বৃষ্টিস্নাত প্রেমের গল্প #পর্ব-৪২ ( শেষাংশ ) #লেখনীতে-আসমিতা আক্তার ( পাখি )

0
852

#বৃষ্টিস্নাত প্রেমের গল্প
#পর্ব-৪২ ( শেষাংশ )
#লেখনীতে-আসমিতা আক্তার ( পাখি )

আরেক দফা স্তব্ধ হয়ে গেল সবাই। বিশেষ করে হুর। চোখ দিয়ে তারা নোনা জল গড়িয়ে পড়ছে। নিঃসহায় আঁখি পল্লব।বিরতিবিহীন রুদ্ধর দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলছে।রুদ্ধর কোন ভাবান্তর হলো না। কঠিন দৃষ্টিতে রিফার দিকে তাকিয়ে রইল। আবারো কঠিন আদেশ দিল লেডি গার্ডদের রিফাকে এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। অট্ট হাসিতে ফেটে পড়ে রিফা তাদের সাথে গেল। এবার আর কোন ধস্তাধস্তি করলো না। না, করল নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা।অশ্রু শিক্ত হুরের দিকে তাকালো রুদ্ধ।ভেজা গলায় বলল,

“আপনি খু/ন করেন?

নির্লিপ্তভাবে রুদ্ধ উত্তর দেয়,
” হ্যাঁ, করি।

দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে হুহু করে কান্না করে দেয় হুর।বিস্ময় নিয়ে ফায়াজ বলে,
“রিয়েলি ব্রো?

তীক্ষ্ণ চোখে ফায়াজের দিকে তাকাতেই ফায়াজ চুপ মেরে যায়। আজ এতগুলো সত্যর মুখোমুখি হয়ে সোহেল শেখের মুখে তালা লেগে যায়।হতবাক হয়ে গেছেন।ফ্যাচ্ ফ্যাচ্ কান্নার শব্দ পছন্দ হচ্ছে না রুদ্ধর।হুরের দিকে তাকিয়ে শীতল স্বরে বলে,

” কান্না থামাও।

কান্না থামে না হুরের।হাতে মুখ গুজে কান্না করতে থাকে৷হুরের হাত শক্ত করে চেপে ধরে রুমে নিয়ে আসে রুদ্ধ। সহ্যশক্তি হারায় রুদ্ধ।ধমকে উঠে,

“এই মেয়ে এভাবে কাঁদছ কেন?মেরেছি আমি?বকেছি?কিছুই করিনি। তাহলে বিনা কারণে কাঁদছ কেন?

রুদ্ধর ধমক শুনে চমকে মুখ থেকে হাত সরায় হুর।ভেজা গাল মুছে নিল।ঠোঁট চেপে কান্না আটকানোর চেষ্টা করতে লাগল।মুখ থেকে আওয়াজ না বের হলেও চোখ দিয়ে অনর্গল পানি পড়তে লাগল।রুদ্ধ পুনরায় বলল,

“নিজের স্বামী খু/নি বলে যে তার কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখবে, তা ভুলেও করতে যেও না।নাহলে পরেরবার আমার গু/লির বর্ষন পড়বে তোমায় ওপর।

হুরের হাত শক্ত করে চেপে ধরে রুমে নিয়ে আসল।ভয়ার্ত চাহনি হুরের।হুর কাঁপা কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,

” আপনি খু/ন করা ছেড়ে দিতে পারবেন?

রুদ্ধর শক্ত গলা,
“না।

” তাহলে আমায় ছেড়ে দিন।

কাতর কন্ঠ হুরের। না চাইতেই এত কঠিন এক বাক্য বলেছে সে। যে রুদ্ধকে ছাড়া থাকতে পারবে না,সেই রুদ্ধকে ছেড়ে দিতে বলছে।বাঁকা হেসে হুরের কথার উত্তর দিলো রুদ্ধ।

“তোমাকে ছেড়ে দিলে তুমি কোথায় যাবে? যাবার মতো কোনো রাস্তা আছে?তুমি তো বলেছিলে আমি তোমার প্রথম এবং শেষ ভরসা।তাহলে কোন ভরসায় তুমি আমায় বলছো ছেড়ে দিতে?তুমি না বলেছিলে আমি তোমার না হলে তুমি মরে যাবে?তাহলে কোথায় গেল সেসব কথা? ভুলে গেলে? নেভার মাইন্ড!তুমি যতবারই ভুলে যাবে ততবারই আমি তোমায় স্মরণ করে দিব আর আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভুলে মস্তিষ্কে আনবে না। এবং কি ছাড়াছাড়ির কথা মুখ থেকে উচ্চারণ করবে না।না, আমি খুন করা ছাড়তে পারবো আর না তোমাকে ছাড়তে পারবো। এই খু/নির সাথেই তোমাকে থাকতে হবে।

অতিরিক্ত প্রেসার আর দুর্বল শরীর নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না।চোখের সামনে অন্ধকার হয়ে পড়ে যেতে নিল। তখনই রুদ্ধ হুরকে বুকে আগলে ধরল। বাহুডোরে আবদ্ধ করে হুরের গালে চাপড় মারতে লাগলো। জাগিয়ে তোলার প্রচেষ্টা। আধো আধো চোখ খুলে রুদ্ধকে দেখার চেষ্টা করে এক সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলল।হকচকিয়ে রুদ্ধ হুরকে কোলে তুলে বিছানায় শোয়ালো।পানি নিয়ে মুখে ঝাপটা মারলো। তাও জ্ঞান ফিরলো না। বিচলিত হয়ে ডাক্তার কে ফোন লাগালো। কিছুক্ষণের মধ্যেই ডাক্তার চলে আসবে।রুম থেকে বের হয়ে সিঁড়ির কাছে এসে চিল্লিয়ে জেরিন কে ডাকল।হুড়মুড় করে রুমে এসে জেরিন হাপাতে হাপাতে জিজ্ঞেস করলো,

” জ্বি,স্যার ডেকেছেন?

রুদ্ধর কন্ঠ বিচলিত শোনা গেল,
“দেখুন হুর চোখ খুলছে না।

জেরিনের পিছে লিলিও এসেছে।দুজন এগিয়ে গেল হুরের কাছে। হুরের মুখে পানির ছিটা দিল। তাও ও জ্ঞান ফিরলো না। কলিংবেলের আওয়াজ কর্ণপাতে আসতেই রুদ্ধ লিলিকে আদেশ দিল দরজা খুলতে। কারণ ডাক্তার এসেছে। ডাক্তারকে নিয়ে দ্রুত রুমে চলে আসলো লিলি।পেশেন্টের কথা জিজ্ঞেস করলে লিলি হুরকে দেখালো।মহিলা ডাক্তার হুর কে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলো।হুরের দিকে চেয়ে থেকে জিজ্ঞেস করলেন,

“পেশেন্টের স্বামী কে?

সাথে সাথে রুদ্ধর জবাব,
“আমি ওর স্বামী?কি হয়েছে ওর? হঠাৎ জ্ঞান কেন হারালো?

ডাক্তার বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে রুদ্ধর দিকে তাকিয়ে গম্ভীর হয়ে বললেন,

“স্ত্রীর প্রতি যত্ন নিন। মানসিকভাবে সে ভেঙ্গে পড়েছে। তাই হঠাৎ করে জ্ঞান হারিয়েছে।

ডাক্তার রুদ্ধর মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝলেন রুদ্ধ আতঙ্কিত হয়ে আছে।মুখে আরেকটু আতঙ্ক ঢেলে দেয়ার জন্য পুনরায় গম্ভীর কন্ঠে বললেন,

“তবে আরেকটা কারণে জ্ঞান হারিয়েছেন।

ধ্বক করে উঠলো রুদ্ধর বুক।কিছু না বলে ডাক্তারের মুখ পানে চেয়ে রইলেন ডাক্তারের উত্তর শোনার জন্য। ডাক্তার তা বুঝে গম্ভীর মুখশ্রী পরিবর্তন করে ঠোঁটের কোণে হাসি টেনে নিলেন।হেসে বললেন,

“রিল্যাক্স, এত চিন্তা করার কিছুই নেই।বাবা হতে চলেছেন আপনি। নতুন মেহমান আসতে চলছে বাড়িতে।স্ত্রীর প্রতি সতর্ক হোন। তার শরীর ভীষণ দুর্বল।কিছু ঔষধ লিখে দিচ্ছি টাইম মতো খাইয়ে দিবেন।কিছুক্ষন পরই জ্ঞান ফিরে আসবে।

চলে গেলেন ডাক্তার।”বাবা হতে চলেছেন আপনি”এই বাক্যটি মাথায় পুরনো আমলের সাদা কালো টিভির মতো ঝিরঝির করতে লাগলো।মাথা যেন পুরো ব্ল্যাংক হয়ে গেছে।তারপরে ডাক্তার কি বলেছে তা কোন কিছুই মাথায় ঢোকেনি। কান অব্দি পৌঁছেছে কিনা তাও সন্দেহ। হুর মা হতে চলেছে শুনে সবাই খুশিতে আত্মহারা। ফায়াজ আর সোহেল শেখ দুজনের চোখ মুখ চকচক করছে। লিলি আর জেরিন দৌড়ে চলে গেল রান্নাঘরে মিষ্টির আয়োজন করতে। এমন একটি সুসংবাদে মিষ্টি না হলে চলেই না।ফায়াজ দৌড়ে এসে রুদ্ধকে জড়িয়ে ধরে বলে।

“কনগ্রাচুলেশন্স ভাইয়া।আমি যে এত তাড়াতাড়ি চাচ্চু হয়ে যাব ভাবতেও পারিনি। তবে যা হয়েছে ভালো হয়েছে। আশপাশ ঘুরঘুর করার জন্য একটা ছোট মানুষের প্রয়োজন ছিল।

সোহেল শেখ আনন্দিত হলেও মুখে প্রকাশ করতে পারলেন না। কারণ একটাই রুদ্ধ। কথার পিঠে যদি কিছু বলে তাহলে লজ্জায় পড়তে হবে। তাই কিছু না বলাই শ্রেয় মনে করলেন। দুইজন রুম থেকে বের হয়ে গেলেন।রুম ফাঁকা হতেই রুদ্ধ সর্বপ্রথম দরজা লাগালো। হুরের কাছে এসে হুরের মুখের দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে রইল।পিটপিট করে চোখ খোলার চেষ্টা করছে হুর। এক সময় পুরোপুরি ভাবে খুলল। আলো চোখে পড়ে পুনরায় বন্ধ করে নিল।কয়েক সেকেন্ড পর ধীরে ধীরে আবার খুললো।সাথে সাথে রুদ্ধ হুরের বাহুদহরে হেচকা টানে বসিয়ে দিল।আকস্মিকতায় ভড়কে গেল হুর।এক তো শরীরে বিন্দুমাত্র শক্তি নেই। তার ওপর ক্ষুধাও প্রচন্ড লেগেছে। আর এই স্বার্থপর মানুষ তার সাথে যা নয় তা ব্যবহার করছে। রেগে চিল্লাতে মন চাইলো। তবে শক্তিতে কুলাতে পারল না।দুর্বল কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল,

“কি হয়েছে এমন করছেন কেন?

দাঁতের দাঁত পিষে রুদ্ধ বলে,
“কে বলেছে তোকে প্রেগনেন্ট হতে?

ভ্রু কুচকে কিছুক্ষণ রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে থেকে রুদ্ধর বলা কথা মস্তিষ্কে ঢুকালো। প্রথমে না বসলেও কয়েক সেকেন্ড পর ঠিকই বুঝল ছিল। সাথে সাথে বিস্ময়ে চোখ বড় হয়ে আসলো। হাত চলে গেল পেটে। বিস্ময় নিয়ে বলল,

“প্রেগনেট মানে?

নিজের মাথার চুল খামচে ধরলো রুদ্ধ।হুরের নিকটে এসে হুরের গলা টিপে দিতে মন চাইলো। হাত উঠিয়েও হাত গুটিয়ে নিল। মেয়েটা অসুস্থ। আবার প্রেগনেন্ট।হিতে বিপরীত হলে বউয়ের নাম নিশানা পৃথিবী থেকে উঠে যাবে।তাই রিস্ক না নিয়ে নিজেকে সংযত রাখার চেষ্টা করল।তবে রাগ দমন করতে পারল না। কটমট চোখে বলল,

“ওহ্ এখন প্রেগন্যান্ট মানে ভুলে গিয়েছিস?কে বলেছিল তোকে প্রেগনেন্ট হতে? নিজের প্রতি সতর্ক হতে পারিস নি। এই তোকে আমি পিল দিয়েছিলাম না?তাহলে পিল খাওয়ার পরেও তুই কিভাবে প্রেগনেন্ট হলি?

বিস্ময় রেখা মিইয়ে গিয়ে হাসির রেখা ফুটে উঠলো হুরের মুখপানে। শব্দ করে হেসে উঠলো। পেটে হাত বুলিয়ে হেসে বলল,

“সত্যি আমার পেটে বাবু আছে ?সত্যি আমি মা হচ্ছি?আর আপনি বাবা।

হুরকে খুশি হতে দেখে মেজাজ আরো বিগড়ে গেল রুদ্ধর। রাগে ইতিমধ্যে চোখের সাদা অংশ লাল হয়ে গেছে। মুখ ও হালকা লাল ভাব ধারণ করেছে।লাল চোখ জোড়া হুরের উপর নিবদ্ধ রেখে বলল,

“তুই মা হলেও আমি বাবা হচ্ছি না।এই বাচ্চা আমার না। কোন প্রয়োজন নেই আমার বাচ্চার। যদি বাচ্চা নেওয়ারই থাকে তাহলে কি আমি তোকে পিল খাওয়াতাম?তোর নিজের ভুলের কারণে তোর বাচ্চা পৃথিবী থেকে আসার আগেই মরে যাবে।

আঁতকে উঠল হুর।ভয় মিশ্রিত কন্ঠে বলল,

“পৃথিবীতে আসার আগেই মরে যাবে মানে?

“এবরশন করাবি।

চিৎকার করে হুর বলে,
” না….আমি কখনও এবরশন করাবো না।দরকার হলে আমি চলে যাব তাও আমি বাবুকে মারবো না।

বিদ্রুপ করে রুদ্ধ বলে,
“বাচ্চা দুনিয়াতে আসতে না আসতেই তুই তাকে নিয়ে কেটে পড়ে যেতে চাচ্ছিস ?বাঁচার জন্য তুই আমাকেও ছাড়তে রাজি? তা কখনো হবে না মিসেস রুদ্ধ। আপনি আজীবন আমার হয়ে থাকবেন। তবে শুধু একা। আপনার আর আমার মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি কেউ হবে না। এমনকি আমাদের বাচ্চারাও না।

শব্দ করে কেঁদে দিল হুর।বলল,
“কেন এভাবে বলছেন আপনি?আমার বাচ্চা কি এমন দোষ করেছে যে তাকে পৃথিবীর আলো দেখার আগেই মেরে দিতে চাচ্ছেন?সে তো শুধু একার আমার অংশ না। আপনারও অংশ। তাহলে আপনি কিভাবে পারেন বাবা হয়ে বাচ্চাকে মারতে?

রুদ্ধর গম্ভীর কণ্ঠস্বর,
“আমার বাচ্চা চাই না।

এবার চিল্লিয়ে হুর বলে,

“কেন চাইনা আপনার বাচ্চা?কি এমন কারণ আছে যে আপনি আমার বাচ্চাকে মারতে চাচ্ছেন?

রুদ্ধ বুঝলো হুরের সাথে রাগারাগি করে কথা বলা উচিত হবে না। তাকে শান্ত হয়ে বোঝাতে হবে। তাই হুরের সামনে বসে হুরের দুই হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে শান্ত ভঙ্গিতে বলল।

“তুমি জানো আমি একজন গ্যাংস্টার মানুষ।আমার জীবনে পদে পদে শত্রু আছে। শত্রুরা সব সময় উৎ পেতে থাকে মারার জন্য।আগে আমি একা ছিলাম তাই ভয় ছিল না।যখন আমার জীবনের সাথে তুমি জড়িত হলে। তখন থেকে ভয় বাড়লো। সব সময় তোমার কথা মাথায় থাকতো।এমন একটি দিন নেই যে আমি বাহিরে গেলে তোমায় নিয়ে ভাবি না। খোকনের চ্যাপ্টার আমি এখনো ক্লোজ করতে পারিনি।সে তোমাকে মারার জন্য হাত ধুয়ে পড়ে আছে। যেকোনো সময় তোমার উপর অ্যাটাক হতে পারে।আর এই অবস্থায় যদি বেবি থাকে তাহলে তো আরো ঝুকিতে পড়ে যাবে তুমি। তাই আমি চাইনা আমাদের বেবি হোক। আমি তোমায় নিয়ে অনেক সুখে আছি। ভবিষ্যতেও থাকতে পারবো। তাই এখন বেবির চিন্তা বাদ দাও। কাল হসপিটালে গিয়ে এবরশন করিয়ে আসবো।

রুদ্ধর ভয় বুঝলো সুর। তবে সে এটা মানতে নারাজ তার বাবুকে মে/রে ফেলা হবে।সে নিজের প্রাণ দিয়ে দিবে তাও বাবুকে মারবে না।অসহায় মুখশ্রী আকস্মিক কঠিন হয়ে উঠল। কঠিন স্বরে রুদ্ধকে বলল,

“আমি আমার বাবুকে কোনমতেই মারতে পারবো না।। প্রয়োজন হলে বাবুর সাথে আমিও জীবন ত্যাগ করব।

নিজের রাগ আর সংযত করতে পারে না আর রুদ্ধ।হুরের হাত ছেড়ে গাল শক্ত করে চেপে ধরে।চোখ বড় বড় করে বলে,

“হ্যাঁ, এটাই করব। তোকে আর তোর বাচ্চাকে
একসাথে মারবো। তারপর আগের লাইফ স্টাইল আমি উপভোগ করব। না, থাকবে কোন ভয় আর না থাকবে কোন চিন্তা। এবরশন করানোর সময় ডাক্তারকে বলবো তোকেও যেন মেরে ফেলে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here