#আগন্তুকের_আসক্তি
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ১২]
_________
হাতে বেশ কয়েকটি শপিং ব্যাগ নিয়ে হেলেদুলে হাটছে সুফিয়া।তার বাম পাশে ইতিকা।অলীদ সামনে সামনে হাটলেও তাদের স্থির হাটায় বিরক্ত সে।
– এইসব কি? এমনে কেউ হাটে?এমন হেলেদুলে হাটার মানে কি সুফু?
– আর পারছিনা দোস্ত।তুই দুইটা ব্যাগ নে হাতে।আমার হাত তো ছিড়ে যাবে।
– আমি কোন শপিং করছি?করলি তোরা দুজনে।তাহলে ব্যাগ নিবিও তোরা দুজনে।আমাকে কি তোদের চামচা লাগে নাকি?
– আহ চামচা হওয়ার কি আছে?তুই না আমার বন্ধু?
– আজকের জন্য সব বন্ধুত্ব বাতিল।ওই ইনান শালা কোথায় গেলো আবার?আমাদের একা করে তিনি কোন মহাভারত শুদ্ধ করতে গেল?
– আমি জানি না।যাই হোক দ্রুত হাট।
৩ জনে আবার হাটতে শুরু করে।শপিং মল থেকে বের হয়ে পার্কিং জোনের দিকে এগিয়ে যায় তারা।পার্কিং জোনের দিকে লোক সমাগম তেমন নেই।ইতিকা চাতক পাখির মতো এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখছে পরিবেশটা।
– ইতিকা?
দূর থেকে একটি ছেলর চিৎকারে ঘুরে তাকায় ইতিকা।কিন্তু পেছেনে ঘুরে ওয়াসিমকে দেখতে পাবে সপ্নেও ভাবে নি সে।ওয়াসিম ইতিকার নাগাল পেয়ে যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছে।এক ছুটে ইতিকার সামনে চলে আসে।আশেপাশে না তাকিয়ে নির্দ্বিধায় ইতিকাকে জড়িয়ে ধরে বক্ষপিঞ্জরে।অপরদিকে ইতিকা স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।মাথার সবটা যেন খালি খালি লাগছে।কি করবে সে?ওয়াসিমের বক্ষপিঞ্জরে তার ছিল সবচেয়ে নিরাপদ স্থান।আজ আবার দীর্ঘদিন পর সেই চেনা স্থানে সে ফিরে এসেছে।জড়িয়ে কি ধরবে তাকে একবার?নাকি দূরে সরিয়ে দেবে?
ইতিকা ভাবনার মাঝেই হাতে থাকা শপিং ব্যাগগুলো আলগা করে ছেড়ে দিলো।ইতিকা আলতো হাতে ওয়াসিমকে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে উঠে।সবটা তার সপ্ন লাগছে।দৃঢ় মনে কখনো ভাবেনি ওয়াসিমকে এইভাবে আরো একবার ছুঁয়ে দিতে পারবে।
– ক…কোথায় ছিলে তুমি?
ইতিকার কান্না জড়িত কন্ঠে উত্তর দিলো না ওয়াসিম বরং সে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে ইতিকাকে।
.
দুপুরের পর ইতিকা অলীদ এবং সুফিয়াকে শপিং এর উদ্দেশ্য বের হয় ইনান।কেনাকাটা শেষে অলীদকে সুফিয়া আর ইতিকার দায়িত্ব দিয়ে সে ফুল দোকানের উদ্দেশ্য বেরিয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পর হাতে একগুচ্ছ গোলাপ নিয়ে ফেরে সে।কিন্তু পার্কিং জোনে দাঁড়িয়ে এমন একটা পরিস্থিতি দেখবে সপ্নেও ভাবেনি।হাতে থাকা গুচ্ছগোলাপ গুলো সহসা হাত থেকে মাটিতে পতিত হয়।
– ইতিবউ!
ইনানের ডাক ইতিকার কর্ণকুহুরে পৌছালো না।সে এখনো ওয়াসিমের বাহুডোরে বন্ধী।
অলীদ আর সুফিয়া তাকিয়ে আছে স্থির নয়নে।এই পরিস্থিতে কি করা উচিত বুঝে উঠতে পারছে না তারা।
– ইতিকা ভুলে যেওনা তুমি বিবাহিত।ইনান দাঁড়িয়ে আছে পেছনে।
সুফিয়ার কথায় ছিটকে দূরে সরে যায় ইতিকা।ইনানের দিকে তাকিয়ে সে যেন বর্তমানে ফিরে এসেছে।ওয়াসিমের সামনে থেকে সরে ইনানের পাশে আসতেই ক্রুদ্ধ হয় ইনান।
– দূরে যান ইতিবউ।আরেকটু কাছে আসলে আমার দুহাত আর স্থির থাকবে না বলে দিলাম।
– সরি!
– চুপ,মুখ বন্ধ।
ইনান ইতিকাকে বেশ শান্ত সুরেই কথাগুলো বলছে।এ যেন ঝড় আসার পূর্বাভাস।ইনানের কাছে এগিয়ে আসে ওয়াসিম।বেশ কয়েকবার সামনে থাকা ইনান, ইতিকাকে পরখ করে বলে,
– আমি এসে গেছি তোর নাটক বন্ধ করে ইতিকাকে আমার কাছে ফেরত দে।
– নাটক কে করছে?আমি নাকি তুই?আমি কি চিনি কে তোর গার্লফ্রেন্ডে।আর না চিনি কে তোর হবু বউ।আমি তো এই মেয়েটাকে বিয়ে করেছি তার পরিবারকে জেনে। কে তার বয়ফ্রেন্ড আর কে তার এক্স সেই সব জেনে নয়।
-দেখ ইনান কথা একদম প্যাচাবি না।সবটা যে তুই ইচ্ছে করে করেছিস তা আমি ভালো করেই জানি।ইতিকাকে ফেরত দে।
– অদ্ভুত কথা তোর।আর বউকে আমি কেন পরপুরুষের কাছে দেব।ভালোয় ভালোয় বলছি সরে যা।
– তুই নিজে সরে যা আমাদের জীবন থেকে।মাঝখানে এসে কেন সবটা তছনছ করে দিচ্ছিস?
ইনান প্রত্যুত্তর করলো না।সে ইতিকাকে ইশারা করে গাড়িতে গিয়ে বসতে।ইতিকাও বিনাবাক্য গাড়ির দিকে পা বাড়ায়।তৎক্ষনাৎ ওয়াসিম তার হাত চেপে ধরে আর বিষটি সহ্য হয়নি ইনানের।সহসা রুষ্ট বাঘের ন্যায় মুছড়ে ধরে ওয়াসিমের শার্টের কলার।
– অধিকার আগের মতো এক চুল পরিমানেও নেই তোর।আগের ইতিকা ইয়াসমিন তোর যা ইচ্ছা তা ছিল।কিন্তু বর্তমান ইতিকা ইয়াসমিন হলো মিসেস ইফতিহার।যা বলবি সাবধানে। আর যা করবি সাবধানেই করবি।আবার এমন সাহস দেখালে হাত কেঁটে রাস্তার মাঝে ছুড়ে মারবো মাইন্ড ইট।’ইতিকা’ গাড়িতে বসুন।
ইনানের মুখে ‘ইতিকা’ নামটি শুনেই চমকে তাকায় ইতিকা।যার মুখে ‘ইতিবউ’ শব্দটা মুখোরিত থাকতো সে আজ ইতিকা বলে ডাকছে।
ইতিকা আর কথা বাড়ালো না।চুপচাপ এগিয়ে গেল গাড়ির দিকে।
_
নিজের রুমে এসে সহসা ওয়াশরুমে প্রবেশ করে ইনান।গায়ের শার্টটা ছুড়ে ফেলে ঝরনার পানিতে ভিজতে থাকে অবিরত।শরীরের শিরায় উপশিরায় রাগের সঞ্চার হয়েছে।চোখের সামনে বারবার ভেসে উঠছে ওয়াসিমকে জড়িয়ে ধরার সেই মূহুর্তটা।
ভয়ে গুটিয়ে থাকা ইতিকা স্থির পায়ে রুমে প্রবেশ করে ইনাকে না দেখে স্বস্তির শ্বাস ছাড়ে।কিন্তু পেছন থেকে বজ্রকন্ঠ ইনানের কথা শুনেই লাফিয়ে উঠে সে।
– ইতিকা ওয়াশরুমে যান।দ্রুত গোসল করবেন আপনি।
– কিন্তু কেন?
– পরপুরুষকে ছুঁয়েছেন আশা করি আর কোন কারন জানার প্রয়োজন নেই আপনার।
.
দীর্ঘ দিন পর ওয়াসিম দেশে আসায় বাড়িতে বেশ হইহুল্লোর শুরু করে দিয়েছে ওয়াসিমের পরিবারের লোকজন।কিন্তু তার আগুনের চুল্লির মতো মুখখানা দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়।ওয়াসিমের বাবা সাহাব উদ্দিন বেশ রেগেই প্রশ্ন ছুড়েদিলেন তার দিকে,
-সমস্যা কি তোমার?আমাদের আনন্দের কোন মূল্য নেই তোমার কাছে?একটা মেয়ের জন্য সবাইকে অবজ্ঞা করছো।
– বাবা আমি স্থির থাকতে পারছিনা।পারছিনা নিজের মনকে শান্তনা কি করে দেবো?তুমি যদি আমায় জোরাজোরি করে বিদেশ না পাঠাতে তবে এমনটা ভুলেও হতো না।
– তোমার জন্য কি মেয়ের অভাব হবে?একটা গাইয়া মেয়ের জন্য পড়ে আছো কেন?নিজের ব্যাক্তিত্ব ঠিক রেখে চলো।
– তোমার এসব জ্ঞান আমার ভালোলাগছে না বাবা।আমি উপরে গেলাম।আরেকটা কথা ইতিকা এই বাড়ির বউ হয়ে আসবে এটাই ফাইনাল।
ওয়াসিম রাগ দেখিয়ে উপরে চলে যায়।সাহাব উদ্দিন ছেলের দিকে তাকিয়ে আছে ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে।
_
গত দুইদিন কোন কথা নেই ইনানের মুখে।ভুলেও ইতিকার সাথে কথা বলেনি।প্রতিবার তাকে উপেক্ষা করে গেছে।ইতিকা বেশ ভালো করেই বুঝেছে ইনান ক্ষেপে আছে।ইতিকার উপর রাগ দেখিয়ে বাড়ির কোন দানাপানি মুখে তুলে নি সে।আর বিষটি বেশ ভালোভাবেই লক্ষ্য করেছে নাসরিন এবং ইব্রাহিম।
বেশ রাত করে বাড়ি ফিরেছে ইনান।গত কয়েনদিন তার বাড়ি ফেরা নিত্যকার অভ্যাস হয়ে গেছে।প্রতিদিন ইতিকা ঘুমিয়ে পড়লেও আজ তন্দ্রাহীন অপেক্ষায় আছে ইনানের আশায়।ইনানকে রুমে আসতে দেখেই প্রশ্ন ছুড়লো ইতিকা।
– সমস্যা কি আপনার?আমাকে ইগ্নোর করছেন কেন?
– কে করলো আপনাকে ইগ্নোর?
– যাকে প্রশ্নটা করেছি সে করছে।
ইনান এবারো উত্তর দিলো না।রাগ দেখিয়ে শুয়ে পড়লো।ইতিকা তার পাশে বসে বাহুতে মাথা রেখে শুয়ে যায়।
– দূরে সরুন ইতিবউ আদিখ্যেতা আমার ভালো লাগছেনা।
– এমন কেন করছেন আপনি?
– কোন মুখে এই কথা জিজ্ঞেস করছেন?ওয়াসিমকে জড়িয়ে ধরলেন কেন?
-ভুল হয়ে গেছে।
– ভুল হয়েছে গেলে বললেই কি হবে নাকি?আশেপাশে সুফিয়া, অলীদ তার মাঝে আপনি ছিহ!
ইতিকা নিজের ভুল বুঝতে পেরে দ্রুত মাথা নামিয়ে নেয়।অপরাধ যে তার মাঝে হয়নি তা কিন্তু না।অপরাধ তার মাঝেও সৃষ্টি হয়েছে আর তা নিয়ে অনুতপ্ত সে।
– একটা কথা বলুন ইতিকা যদি আপনার সামনে কেউ আমায় জড়িয়ে ধরে,মাথায় চুমু খায় আপনি কি মেনে নেবেন?সহ্য করতে পারবেন সেই মূহুর্তটা?
ইতিকা শিউরে উঠলো।বিষটি ভাবতেই তার গা কেঁপে উঠছে।বিয়েটা যেমন তেমন হোক ইনানকে যেহেতু সে নিজের স্বামীর স্থানে একবার বসিয়েছে সে তো আর কিছুতেই অন্য মেয়ের সঙ্গে তাকে মেনে নিতে পারবেনা।
– কথা বলছেন না কেন ইতিবউ?
– ভুল হয়ে গেছে মাফ করেদিন।
– একটা জবান দিন তো আমি মানছি আমার সাথে হয়তো আপনি জড়তা নিয়ে থাকেন কিন্তু আমার বাবা, মা তারা তো আপনাকে নিজের মেয়ে চোখেই দেখছে।আদর যত্নে আগলে রাখছে আমাকে ছেড়ে গেলেও তাদেরকে ছাড়তে পারবেন?
-আমার বাবা- মা নেই।এই বাড়িতে আসার পর বাবা-মা নেই এটা নিয়ে আমার সব অভিযোগ যেন ভুলে গেছি।বর্তমানে তারাই আমার সবকিছু।
– আর আমি?আমাকেও কি আপন ভাবছেন?
ইতিকা চুপচাপ তাকিয়ে রইলো ইনানের দিকে।এই ছেলে যে আজ বেজায় চটে আছে তা খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে সে।
ইনান ইতিকার এমন নিরব চাহনী কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা।রাগের মাথায় এতক্ষণ শান্ত থাকলেও হুট করেই রাগ দিগুন বেড়েছে।হেঁচকা টেনে ইতিকে কোলে বসায় ইনান।হঠাৎ টানে ইতিকাকেও নিজেকে সামলাতে পারলো না।দড়াম করে বসে যায় ইনানের কোলে।
– কি করছেন কি?এইভাবে কেউ….
-চুপ কথা বাড়াবেন না।পরিস্থিতি ভালো নেই ইতিবউ।আর আপনি যদি আমার বিরদ্ধে যান তবে এরপর কি হবে আমি জানিনা।শুধু এটাই জানি আমি ভালো থাকবো না।
জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে শুচালো কথা গুলোর কোন মানে বুঝে উঠতে পারছেনা ইতিকা।
– আপনার কি হয়েছে বলবেন আমায়?আমি আপনার এইসব অস্বাভাবিক অচরণ আর নিতে পারছিনা।
– ওয়াসিম চলে এসেছে। সে আপনাকে নেওয়ার জন্য নানান ছল বাহানা করবে।যদি আপনি তার সাথে চলে যান তখন আমার কি হবে?
ইতিকা স্তব্দ হয়ে যায়।কি বলবে সে বুঝে উঠতে পারছে না।
– ওয়াসিমের বউ আছে আমি কেন তার সাথে যাবো?
– আবেগে পড়ে যেতে পারেন।যেমনটা সেদিন জড়িয়ে ধরেছেন।
ইনান কথা শেষ করতেই বাইরে থেকে গাড়ির হর্ণের শব্দ পেলো।অস্বাভাবিক ভাবে গাড়ির হর্নটা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে।ইনানের অবচেতন মন জানান দিচ্ছে নিশ্চই ওয়াসিম এসেছে।
ইতিকাকে সরিয়ে ইনান বারান্দার দরজা ফাঁক করে দৃষ্টি বাইরের দিকে তাক করলো।তার ভাবনাটা তবে সত্যি হয়েছে।ওয়াসিম বাইক নিয়ে এসে বাইরে হর্ন বাজাচ্ছে।
ইনান ধীরে পায়ে বারান্দার দিকে এগিয়ে আসে।ওয়াসিম তার দিকে তাকিয়ে আছে বাইকের উপরে বসে।ইতিকা জড়োসড়ো হয়ে ইনানের পাশে দাঁড়ায়।নিচ থেকে ওয়াসিমকে দেখে তার চক্ষুচড়ক গাছ।
-ইতিবউ প্লিজ হাগ মি।
– হাহ!
– হা হু করার সময় নেই।আমাকে হাগ করুন।
ইনানের কথায় নড়ে-চড়ে উঠে ইতিকা।ইনানকে সে নিজে থেকে হাগ করবে!কখনোই না মরে গেলেও না।
ইনান দাঁত কিড়মিড় করে ইতিকার দিকে দৃষ্টি রাখে।
– কি বলেছি তোমায়?যদি হাগ না করো তবে আমি দোতলা থেকে লাফ দেবো।
– না মানে….
– এখন মানে মানে করছো?ওয়াসিমকে কি করে জড়িয়ে ধরেছিলে?
ইতিকা বিভ্রমে পড়ে গেছে কি করবে সে?মাথার ভেতরটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।তবুও একটু একটু করে হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসে ইনানের দিকে।ইনান তার হাত টেনে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।এটাই ইনানের জীবনের প্রথম আলিঙ্গন তার ইতিবউকে আদর মিশ্রিত ভালোবাসায় জড়িয়ে ধরার।ইতিকা জড়োসড়ো হয়ে কাঁপছে ইনানের বক্ষপিঞ্জরে।অপর দিকে ওয়াসিম ক্রুদ্ধ হয়ে দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে।ইনান হাত ইশারায় ওয়াসিমকে হেরে যাওয়ার ইঙ্গিত করে।ওয়াসিম আর সেখানে দাড়ালো না।বাইক নিয়ে ছুটে চলে আপন গন্তব্য।
– ইতিবউ কাঁপছেন কেন?আপনার কাঁপুনিতে আমার শরীরে যেন ভূমিকম্প শুরু হয়ে গেছে।
– ছেড়ে দিন প্লিজ আপনার ছোঁয়া কেমন যেন।
– কেমন আমার ছোঁয়া?
– আপনাকে আমি প্রথম বার জড়িয়ে ধরেছি তাই।তাও আবার অপ্রতিভ অবস্থায়।
– প্রথমবার জড়িয়ে ধরেছো মেনে নিলাম।আর এই আলিঙ্গন যেন আমাতেই সীমাবদ্ধ থাকে।
ইতিকা প্রত্যুত্তর করলো না।ইনান তার মাথায় হাত বুলিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।মেয়েটা কেমন যেন দিন দিন অগোছালো নুইয়ে যাচ্ছে ইনানের মাঝে।
_
গভীর রাতে ভিডিও কলে সুফিয়ার কান্না দেখতে ব্যস্ত অলীদ।সুফিয়ার ফ্যাচফ্যাচ করে কান্নায় তেঁতে উঠে অলীদ।
– সমস্যা কি সুফু?অতীত কেন টানছিস?
– আমি ওয়াসিমকে ভুলতে পারছি না রে।
-তোর সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি ওয়াসিম কু*ত্তাটার জন্য তোর চোখে আবার পানিও আসে।
– ইতিকা যখন ওয়াসিমকে জড়িয়ে ধরেছিল তখন আমার কেমন যে লেগেছিল সেটা শুধু আমি জানি।বিশ্বাস কর আমি মানতে পারছি না।যত যাই হোক ওয়াসিমকে আমি ভালোবাসি।
– তুই একা বাসিস ওয়াসিমতো আর বাসে না।এইসব বাদ দে সুফু ইনান জানলে আর রক্ষে থাকবে না।
– আমি কি করবো আমায় বুদ্ধি দে।
– তুই মর বেয়াদব মেয়ে।রাতবিরেত আমার ঘুম ভেঙ্গে পরপুরুষের জন্য কান্না দেখাতে এসেছিস। ফাউল মাইয়া।
অলীদ কথা শেষ করেই মুখের উপর ফোনটা কেটে দেয়।
#চলবে..
❌কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ❌
[বিঃদ্রঃ পর্বটা দেরিতে দেওয়ার জন্য দুঃখিত]