আগন্তুকের_আসক্তি #পলি_আনান [পর্ব সংখ্যা ১৫]

0
192

#আগন্তুকের_আসক্তি
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ১৫]

__________
– আসসালামু আলাইকুম কাকিমা সুফিয়া কোথায়?তার সাথে দেখা করতে এসেছি।

গোলগোল চশমার কাচ দিয়ে অলীদের দিকে সুফিয়ার মা তাকিয়ে আছে অবাক দৃষ্টিতে।কিছুক্ষণ আগেই তিনি ঘুম থেকে উঠেছেন।দারোয়ান ফোন করে জানালেন সুফিয়ার বন্ধু অলীদ এসেছে তার সঙ্গে দেখা করতে।তখন বেশ খানেকটা অবাক হন তিনি।কেননা ঘড়িয়ে সবে মাত্র আটটা পাঁচ।এত সকাল সকাল ছেলেটা কি মনে করে আসলো তিনি বুঝতে পারছেন না।

– কাকিমা সুফিয়া কোথায়?

অলীদ বেশ জোরেই কথাটা বলে উঠে।সহসা সামনে বসে থাকা অর্ধ বয়স্ক মহিলাটি নড়ে চড়ে বসেন।

– বাবা তুমি এত সকালে এসেছো তাই ঘাবড়ে গেছি।কোন সমস্যা হয়েছে?

– না আন্টি কোন সমস্যা না।আসলে আজ আমি বাড়ি যাবো।তাই ভাবলাম সুফুর সাথে দেখা করে যাই।তাছাড়া অনেকদিন হয়েছে আমাদের দেখা হলো না।আন্টি আঙ্কেল কী সত্যি তাকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেবে?

– হ্যা,বাবা।তোমারা তো জানো তিনি এক কথার মানুষ আগেও চেয়েছে সুফিয়াকে দেশের বাইরে পাঠাতে।কিন্তু মেয়ে যেতে চায় নি।এবারো যদি কোন গন্ডগোল করে তবে,হয় তাকে বিদেশ পাঠানো হবে, না হয় বিয়ে দিয়ে দেবেন।মেয়েকে আর এই শহরে একা রাখতে ইচ্ছুক নন তিনি।কোন ইতরের প্রেমে পড়েছে এই মেয়ে ভাবতেই আমার ঘৃণা হচ্ছে।ওয়াসিম ছেলেটার জাত পাত মোটেও সুবিধের নয়।আমাদের সাথে তো কোন দিক দিয়েই যাবে না।

এতক্ষণ সুফিয়ার মায়ের বলা কোন কথায় কানে ডুকলো না অলীদের।সুফিয়ার বিয়ের কথা শুনেই তার চোখে মুখে যেন ধৌঁয়া উড়ছে।সবটা এলোমেলো লাগছে।
মেয়েটাকে নিয়ে তার মনে কেন এত অনুভূতি জমা হলো?ইনান যদি যানে তবে নির্ঘাত দু’চার চড় তার গালে বসিয়ে দেবে।কিন্তু কি করবে সে?সুফিয়ার প্রতি অনুভূতি ভালোলাগা থাকলেও সে নিজেই প্রতিবার সবটা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে গেছে।তার বেস্ট ফ্রেন্ড তার মানে এই নয় যে ভালোবাসতে হবে নিজের বউয়ের মর্যাদা দিতে হবে।আর সুফিয়া জানলেও হয়তো বন্ধুত্বের বন্ধনটা আলগা হয়ে যাবে।তাই প্রতিবার চুপ ছিল সে।কিন্তু ওয়াসিমের জন্য কান্না করা,পাগলামো দেখে মনের কোনে হিংসাত্মক ভাব চলে আসছে।কেন হচ্ছে এমন?

– আন্টি সুফিয়ার রুমে কি যাবো নাকি সে আসবে?

– তোমাকেই যেতে হবে।তাকে বাইরে থেকে বন্ধ করে রাখা হয়।

অলীদে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়।

.
এলোমেলো চুল চোখের সামনে এসে ছুঁয়ে গালে বেয়ে গলায় আছড়ে পড়ে আছে।দু’ঠোঁট উষ্কখুষ্ক হয়ে আছে।সুফিয়ার দুগালে কেমন যেন আঙুলের ছাপ ভাসমান।অলীদের কাছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক লাগলো না।

– সুফু উঠ,আমি এসেছি।

বাক্যটা সুফিয়ার কর্ণকুহুরে ঠেকলো কী না কে জানে?সে এখনো ঘুমিয়ে আছে একই অঙ্গভঙ্গিতে।

– এই যে নবাবজাদী উঠুন এবার।গায়ে পানি ঢালতে আমি কিন্তু দু’মিনিটো দেরি করবো না।

সুফিয়া এখনো ঘুমিয়ে আছে।তার বড় বড় শ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ রুমে যেন বার বার প্রতিধ্বনি হচ্ছে।অলীদ কিছুক্ষণ মেয়েটার দিকে স্থির ভাবে তাকিয়ে থাকলো।মেয়েটার গালে আঙুলের ছাপ স্পষ্ট ।সুফিয়ার গালে হাত দেবে কী দেবে না।ভাবতে ভাবতে নিজেই অস্বস্তিতে পড়ে যায়।অলীদের সন্দেহের বাতি নিভে যায় খাটের তলায় একটি ঔষুধে পাতা দেখলে,যেটি ঘুমের ঔষুধ।

অলীদ এবার সব বাঁধা ভুলে সুফিয়ার গালে হাত বুলাতে থাকে।

– এই সুফু উঠ।সুফু এই সুফু।

সুফিয়া উঠলো না বরং তার ভারী ভারী নিশ্বাস অলীদের হৃদপিন্ডের গতি বাড়িয়ে তুলছে।দু’বাক্য না ভেবে ঝটকায় সুফিয়াকে কোলে তুলে নেয় অলীদ।দ্রুত ওয়াশরুমের দিকে গিয়ে ঝরনার নব ছেড়ে দেয়।সুফিয়া এখনো অলীদের বুকে লেপ্টে আছে।পানির ছিটকায় সহসা চোখ খুলে সুফিয়া।হঠাৎ আক্রমণে কি করা উচিত বুঝে উঠতে পারছেনা সে।

– ঘুমের ওষুধ গিলেছিস কয়টা?

– কে কে?

– তোর যম!

পানির গতিতে চোখে খুলতে পারছেনা সুফিয়া।নিজেকে ভাসমান অনুভব করে ঘাবড়ে গেছে সে।

– ব..বন্ধ করুন।বন্ধ করুন প্লিজ।

সুফিয়া অলীদ দুজনেই ভিজে জুবুথুবু হয়ে আছে।অলীদ ঝরনার নব ঘুরিয়ে দেয় সহসা পানির গতিক থেমে গেছে।পিট পিট চোখ তুলে তাকায় সুফিয়া।অলীদকে দেখে আসমান থেকে পড়ার মতো অবস্থা তার।

– ত..তুই?

– কার কথা ভেবেছিলি?ওয়াসিম?নাকি তোর হবু বরের কথা?

– একদম বাজে বকবি না।আমাকে ভিজিয়ে দিলি কেন?

– তোর ঘুম ভাঙ্গছিল না তাই।এবার বল ঘুমের ওষুধ কয়টা গিলেছিস?

সুফিয়া মাথা নুইয়ে নেয়।
অলীদ তাকে চুপচাপ দেখে এবার বেশ ধমকের সুরেই বলে,

-সুফু কথা বল আমাকে একদম রাগাবিনা। কোলে আছিস আছাড় মারতে বেশ সুবিধা হবে। এক আছাড়া তোর ভালোবাসা কারে কয় ছুটিয়ে দেবো।

সুফিয়া এবার ঘাবড়ে যায়।দৃষ্টি নত রেখে আমতা আমতা সুরে বলে।

– দুইটা খেয়েছি।

– এত কম কেন?আর ছিলনা বুঝি?

– না ওষুধের খোসায় দুইটাই ছিল।

অলীদ ফসফস করে শ্বাস ছাড়ছে।দুজনের মাঝে বেশ কিছুক্ষণ নীরবতা কেটে যায়।অলীদ ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সুফিয়ার দিকে।অপরদিকে সুফিয়া পড়েছে অস্বস্তিতে।এতক্ষণ অলীদের কোলে নিজের অবস্থান দেখতে বড্ড বেমানান লাগছে।

– আমাকে ছাড় অলীদ।

অলীদের হুশ ফিরেছে।এবার নিজেই যেন বেকায়দায় পড়েছে সে।লজ্জায় ইচ্ছে করছে এক ছুটে পালিয়ে যেতে।তার অস্বস্তি ভাব বুঝতে পেরে সুফিয়া ঠোঁট বাকা।অলীদ সুফিয়াকে কোল থেকে নামিয়ে ঘুরে দাঁড়ায়।

– তোর গালে চড় দিয়েছে কে রে সুফু?

– আর কে মারবে?তোর দাম্ভিক আংকেল মেরেছে।রাগে জিদে তাই তো ওষুধ খেলাম।দাগ বসে গেছে নাকি রে?

– হুম দু’আঙুলের ছাপ স্পষ্ট।চিন্তা করিস না তোর হবু বর আদর করে সারিয়ে তুলবে।

– আমার হবু বর?

– কেন জানিস না আঙ্কেল তোকে বিয়ে দেবেন।পাত্র খুঁজছেন।

– কবুল বলার আগে আমার শরীর থেকে রুহ চলে যাক।আমিন!

সুফিয়া রাগান্বিত স্বরে কথাটা বলে থেমে যায়।হঠাৎ দেয়ালের সাথে বেশ জোরে আঘাত লাগে তার।মেয়েটার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে অলীদ, তার দু’গাল চেপে দেয়ালের সাথে ঠেসে ধরেছে।

– আর যদি এই কথা তোর মুখ থেকে বের হয় তবে কসম বাকি গালটাও আর স্বাভাবিক থাকবে না।আমার রাগ,জেদ,শাসন এখনো কিছু দেখিস নি তুই।তোকে সোজা করা আমার সেকেন্ডের কাজ।তাই মাথা থেকে এইসব কু’বুদ্ধি ছেড়ে দে।দুই’সাপ্তাহ পর এক্সাম।পড়াশোনায় মন বসা।

ফর্সা রক্তিম গাল,আরক্ত দৃষ্টি,দাঁতে দাঁত চেপে অলীদের কথার ভঙ্গিতে ঢোক গিলে সুফিয়া।
___

ইনাকে নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ যাবৎ তোষামোদ করছে ইতিকা।

– আপনি আসুন প্লিজ আর দুইদিন বাকি আপনার এক্সামের।কিছুই তো পারেন না একটু পড়তে বসুন।

– সরে যান ইতিবউ আমার গুরুত্বপূর্ণ মিটিং আছে।না গেলে মামু ভীষণ রাগ করবে।

– করুক রাগ তিনি যাই ইচ্ছে তাই করুক আমি আপনাকে ছাড়ছিনা। আপনি পড়তে বসবেন মানে বসবেন।আর এখন রাত এগারোটা বাজে এত রাতে বের হলে আসবেন রাতের দুই,তিনটায় আমি ভালো করেই যানি।আপনার আর পড়া হবে না।

– আপনার তো আজ এক্সাম শেষ যান চিল করুন আমাকে জ্বালাবে না একদম।

– আমি আপনাকে জ্বালাই?

ইনানের কথায় দুচোখ ছোট করে প্রশ্ন করলো ইতিকা।ইনান ব্লেজার গায়ে জড়িয়ে স্মিথ হাসে।

– অবশ্যই।আমার না পড়লেও চলে।টুকে নিয়ে যাবো খাটি বাংলায় নকল করবো।

– ছিহহ লজ্জা করেনা?আবার বলছেন নির্দ্বিধায়।আমি আপনার জন্য কত কষ্ট করে সব সাজেশন জোগাড় করেছি দেওয়রজির কাছ থেকে আর আপনি বলছেন নকল করবেন।

– আমাকে যেতে হবে।

– আপনাকে আমি বারণ করছি তবুও আপনি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন কেন?

ইনান আরেকবার ইতিকার দিকে তাকিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসে।নিস্তব্দ রুম টায় ভাইব্রেট হতে থাকে ইনানের ফোন।স্কিনে বাহরুল ইসলামের নাম্বার দেখে তড়িঘড়ি করে ফোন রিসিভ করে।

– হ্যা মামু বলো।

– তুই কইরে?সবাই বসে আছে।

-দশ মিনিট আমি আসছি।

ইনান ফোন রেখে।ইতিকাকে টেনে দাড় করায়।মেয়েটার কপালে থাকা চুলগুলো সরিয়ে আলতো করে ভালোবাসার পরশ একেঁ দেয়।

– আমি গেলাম ইতিবউ।দুঃখিত আপনার কথা রাখতে পারলাম না।

নিগূঢ় রাগটা বাইরে থেকে প্রকাশ করলো না ইতিকা।মানুষটা তার কথা রাখেনি?এই তার ভালোবাসা!এই বাড়িতে থাকা যেন তার কাছে বন্দি জীবন লাগে।শশুড়-শাশুড়ী,স্বামীর ভালোবাসা, আদর, যত্ন পেলেও কোথাও যেন নিজেকে বন্দিনি মনে হয় তার কাছে।আচ্ছা ইনান কী সত্যি তাকে ভালোবাসে?না কী ওয়াসিমের সাথে শত্রুতার বর্শে তাকে বিয়ে করেছে?উত্তর অজানা তার।
‘নারী’ জাতীর মন গলানো সবচেয়ে সহজ মাধ্যেম ভালোবাসা।মেয়েরা ভালোবাসায় কাঙাল।একটু আদুরে কথা,আদর যত্ন পেলেই পোষ মেনে যায়।আর সেই কাজটাই কি করেছে ইনান?
আর ভাবতে পারলো না সে।মাথার ভেতরটায় সব প্রশ্নেরা একসঙ্গে খেলা করছে।

দ্রুত পা চালিয়ে নিচে নেমে এলো ইতিকা।ডাইনিং টেবিলের চেয়ারে মন মরা হয়ে বসে আছেন তার শাশুড়ী মিসেস নাসরিন।

– আম্মা আপনি বসে আছেন কেন?

– খাবি না রাতে?

– আপনার ছেলে তো না খেয়ে গেলো আমার খেতে ইচ্ছে করছে না।আব্বা কি খেয়েছেন?

– না।

ইতিকা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো।পাশের চেয়ার টেনে বসে পড়লো নাসরিনের পাশে।

– একটা কথা বলবো আম্মা?

– বল।

– আপনার আপন ভাই আপনার ক্ষতি করছে।তবে আড়ালে।আপনার একমাত্র ছেলেকে বখে দিয়েছে।সে এখন এক কথায় অবাধ্য সন্তান।অথচ আপনি আপনার ভাইয়ের সঙ্গ দিচ্ছেন?আব্বা আপনার ভাইকে নিয়ে কিছু বললেই তেতে উঠছেন।আপনি কী কিছু বুঝেন না?নাকি না বোঝার ভান করে আছেন?

– মা রে আমি আমার সন্তানকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি।ভেবেছি তুই এসেছিস তুই তাকে আচঁলে বেধে নিবি কিন্তু তা আর হলো কই?

ইতিকা মাথা নুইয়ে নেয়।রক্তিম দুচোখের কোনে পানি জমাট বেঁধে গেছে।

– আম্মা তিনি আমার কোন কথাই শুনেন না।রাখেন না আমি কী করবো?আজকেও বার বার বারণ করেছি কিন্তু আমার কথায় তিনি সোপর্দ হননি।মামু ফোন করলো তৎক্ষণাৎ চলে গেলেন।

নাসরিন মনঃক্ষুণ্ণ হলেন।ইতিকার দিকে তাকিয়ে প্রণত হয়ে বলেন,

– আমার পরিবারের শেষ একজন জীবিত আমার ভাই বাহরুল ইসলাম।তাই তার সাথে জোর খাটিয়ে কিছু করছিনা।এক বছর আগে ভাইজানের সাথে রাগারাগি করায় এবং রাত করে বাড়ি ফেরায় জবাব চাওয়ায় ইনান বাড়ি ছেড়েছে।তাই আমি আর মুখ ফুটে কিছু বলি না।আর….

দুজনের কথার মাঝেই মিসেস নাসরিনের ফোন বেজে উঠলো।স্কিনে ‘অলীদ’ নামটা দেখে কিঞ্চিৎ ভ্রু-কুচলালো।

– এত রাতে উনি ফোন করেছে কেন আম্মা?

– ধরে দেখি।

মিসেস নাসরিন ফোন ধরলেন তবে অলীদ কথা বলতে চাইলো ইতিকার সাথে।

– পিচ্চি ভাবী কেমন আছো?

– আলহামদুলিল্লাহ ভালো দেওরজি।আপনি কেমন আছেন?

– ভালো।ইনান কোথায় জানো কিছু?

– মামুর সঙ্গে নাকি কোন মিটিংএ আছেন।

– হাহ তোমার বর মিটিং এ আছে!সত্যি?এই মাত্র দেখে এলাম গোপন আস্তানায় প্রবেশ করতে।আর সেখানে যাওয়া আমাদের সাধারণ মানুষদের জন্য নিষিদ্ধ।

– গোপন আস্তানায় কী হয়?

– বাহরুল ইসলামের বিরুদ্ধে যারা আছে তাদের শায়েস্তা করা হয় ইনানের নির্দেশে।এই ছিল তার মিটিং?ছেলেটা বখে যাচ্ছে।প্লিজ কিছু একটা করো।

-আমি কি করবো, আমার কিছু কি করার আছে?পারলে আপনারা আমায় মুক্তি দিন।

ইতিকা ফোন কেটে দিলো।নাসরিনের কোলে আছড়ে পড়ে দু’চোখের পানি বিসর্জন দিচ্ছে।

– আম্মা আমায় মাফ করে দিন আমার আর ভালো লাগছেনা কিছু।এমন জীবন আমার দরকার নেই।এককথায় এখন আমি পরবাদিনী।আমার উপর থাকা সকল দাবী,চাওয়া পাওয়া তুলে নিন।আমার বাকিটা জীবন পড়ে আছে আমাকে আমার মতো চলতে দিন।

নাসরিন ইতিকার দিকে তাকিয়ে আছে হতাশ দৃষ্টিতে।

– তুই কিছু করতে চাইছিস?

– হ্যা।

– তবে যা,তুই মুক্ত।

___

ইতিকার রগচটা ব্যবহারে সস্তব্দ ওয়াসিম।মেয়েটা পালটে গেছে।হুট হাট রেগে যাচ্ছে অদ্ভুত।

– এত রাতে তুমি এখানে ইতিকা?ইনান কী তোমায় বের করে দিয়েছে?আমার জানা মতে ইনান তোমায় ছাড়ার পাত্র নয়।

– এত প্রশ্ন করছো কেন ওয়াসিম।আমি যা বলছি তার উত্তর দাও।তোমার বউ কোথায়?

– আমার বউ?কিসব বাজে বকছো তুমি?আমি বিয়ে করলাম কবে?

– কেন দেশের বাইরে করেছো।

– রাবিশ ওটা আমার ফ্রেন্ডের বিয়ে ছিল।আমার পাশের মেয়েটি আমার ফ্রেন্ড।

– তাই বলে এত জড়িয়ে ধরবে?ছবিতে আমি স্পষ্ট দেখেছি তোমরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছিলে।

– আমেরিকার কালচার সম্পর্কে তোমার ধারনা নেই।জড়িয়ে ধরা,কিস করা তাদের কমন অভ্যাস এটা আমাদের দেশ নয়।আমার ফ্রেন্ডকে আমি জড়িয়ে ধরতেই পারি।

– তার মানে তুমি সত্যি বিয়ে করনি?

– না।তবে আমার হবু বউ আমার সামনে।

কথাটি বলেই মৃদ্যু হাসলো ওয়াসিম।কিন্তু ইতিকার মাথা কাজ করছেনা ইনান তাকে মিথ্যা বলেছে।তার সাথে প্রতারণা করেছে।বিয়ের পরদিন বলেছিল ওয়াসিমের আশা যেন ছেড়ে দেয় ওয়াসিম বিবাহিত।তবে?ইনান প্রতিটি কাজে প্রতিটি ধাপে তার সাথে মিথ্যা ছলনা করছে।

– ইতিকা তোমার চোখে পানি কেন?নিশ্চই আনন্দের,আমার কাছে ফিরে আসার আনন্দের।আই এম সো হ্যাপি তুমি আমার কাছে আবার ফিরে এসেছো।

ইতিকা ছলছল চোখে স্মিথ হাসলো।

– যাবে ওয়াসিম?

– কোথায়?

– এমন জায়গায় ইফতিহার ইনান যেখানে আমাদের হদিস পাবেনা।তবে তার আগে আমি আমার গ্রামের বাড়ি যেতে চাই।

– বেশ তবে তাই হোক।

#চলবে
সবগুলো পর্ব একসাথে – https://polyanan.com/tag/aguntuker-asokti/
®পলি আনান
❌কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ❌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here