দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা) #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৬১ 🍂

0
162

#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৬১
🍂
কথা গুলো বলেই হাঁটু গেড়া অবস্থায় রাস্তায় বসে উনার সামনে কান্না করতে থাকি উনি আমার সব-কয়টা কথা শুনে রেগে দ্রুত গতিতে আমার দিকে তেড়ে এসে আমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পরে একহাত দিয়ে আমার চুলের মুঠো ধরে অন্য হাতে আমার গলা শক্ত চেপে ধরে নিজের একদমই কাছে নিয়ে আসে উনার প্রতিটি নিশ্বাস আমার মূখে আছরে পড়ছে, উনি আমাকে এমন ভাবে নিজের সাথে চেপে ধরাই মূহুর্তেই নিশ্বাসটা বন্ধ হয়ে আসছে আমার,, আমি নাজেহাল অবস্থায় অঝোর ধারা চোখে পানি ফেলতে ফেলতে উনার আমার গলায় চেপে ধরা হাতটা ছুটানো চেষ্টা করতে থাকি,, উনি আমার দিকে তাকিয়ে থেকে আমাকে এমন করতে দেখে রাগে রি রি করতে করতে দাঁতে দাঁত চেপে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……

.

—” তোর কাকে চাই বা নাহ চাই সেটা ঠিক আমি করবো তুই না, তোর কি মনে হয় তুই আমাকে এসব বললে আমি তোকে যেতে দিব, এতো সোজা হুমমম, তোর সাথে গত একটা বছরে যাহ কিছু হয়েছে সবকিছুর পিছনে একটা করে কারণ আছে যেটা তুই জানিস না, তুই যদি কখনো আমার কাছে জানতে চাইতিস তাহলে আমি সেটা তোকে খুশি মনে সবটাই বলতাম, তোর প্রশ্ন করার জন্যই অপেক্ষায় ছিলাম আমি কিন্তুু তুই এতটাই অবুঝ যে কখনোই তোর মনে এসব নিয়ে প্রশ্নই জাগেনি, তাই আমিও চুপ ছিলাম, কিন্তুু আমার চুপ থাকার মানে এই নয় যে তোকে সরিয়ে রাখবো নিজের কাছ থেকে,,,

.

উনার বলা প্রতিটি কথা শুনে মূহুর্তেই আমি শীতল হয়ে আসি, আমাকে শান্ত হয়ে যেতে দেখে উনার যেন রাগটা মাথায় চেপে বসে আর সেই রাগের রেশ ধরে উনি আমার গলা ছেড়ে শক্ত হাতে সাথে সাথে আমার গাল চেপে ধরে পরে চোখ মুখ শক্ত করে রাগে কটমট করতে করতে আবারও বলে উঠে………

.

—” আমাকে আমার মতো সবকিছু বুঝে নিতে দে নয়তো আপুসে কিছু না পেলে জোরে করে আদায় করে নিতে দ্বিধা বোধ করবো না আমি,, আর আমি ভালো নয় তাই ভালোটা আমার সাথে যায় নাহ, তোকে ছেড়ে দিয়ার মতো ভালো বা মহৎ কোনোটাই সাজার ইচ্ছায় নেই আমার, আর বাকি রইল তোকে তোর মতো করে থাকতে দেওয়া সেটা তো কখনোই হচ্ছে না আমি থাকতে, তাই তোর যা করার আমার সাথেই থেকেই করতে হবে, তাই যেটা করতে বলি সেটা চুপচাপ কর নয়তো তোকে গুলি করে মারতে দ্বিধা বোধ করবো না আমি,,,

.

কথা গুলো বলেই একপ্রকার মাটিতে ধাক্কা মেরে ছুঁড়ে মারে আমাকে, আমি উনার এমন কাজে রাস্তায় উপুড় হয়ে পরি, উনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে রাগে গজগজ করতে করতে উঠে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে ঘুরে এক কদম বাড়াতেই আমি পিছনে থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার অবস্থায় উনাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠি……..

.

—” ঠিক আছে তাই হোক মেরে ফেলুন আমাকে….

.

কথাটা বলেই আস্তে করে উঠে দাঁড়ায় আমি, উনি আমার এমন কথা শুনে সাথে সাথে দুহাত মুষ্টি বদ্ধ করে পিছন ফিরে ঘুরে তাকায় আমার দিকে, উনার দৃষ্টি শক্ত করে আমার দিকে তাকাতেই আমি নিজেকে ঠিক করে উনার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আবারও শক্ত গলায় উনাকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠি…..

.

—” আমি আর পারছি না সবকিছু মেনে নিতে, আমাকে কেন আটকে রাখতে চান আপনি কোন অধিকার নিয়ে থাকবো আপনার বাড়ি, আমি আপনার বোন হয় সবাই তো তাই জানে, আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য রাখতে চান আপনার বাড়ি, আমাকে দেখাতে চাই আপনি আপনার ভালোবাসা মানুষটির সাথে বিয়ে করে কিভাবে সুখী থাকছেন সেটা,,,

.

আমার কথায় মূহুর্তেই কপাল কুচকে এলো উনার পরে আমার দিকে সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে তীক্ষ্ণ গলায় প্রশ্ন করে বসে…..

.

—” মানে কিসের ভালোবাসার মানুষ আমার….?

.

উনার এমন না বুঝ কথায় করুণ চোখে তাকায় আমি উনার দিকে, উনি কি বলতে চাইছেন এই মূহুর্তে কিছু বুঝতে পারছি না আমি, তাই বুঝ অবুঝের ধাপটা পেরিয়ে নিজের মতো করে আবারও বলে ওঠি……

.

—” হাসালেন সাহেব, সবকিছু করে আজ আপনিই অবুঝ সেজে বসে আছেন, আপনারা দুজন পারেন ও বটে, একজন ঘাড় ধাক্কায় বাড়ি থেকে বেড় করে আর অন্য জন্য পর পর আঘাত করে বেড়ায়,, আপনারা সবাই বলেন আমি কিছুই বুঝিনা, আমি ভালোবাসাটা বুঝে ওঠতে না পারি তাই বলে স্বামীর অন্যের প্রতি ভালোবাসাটা সেটাও বুঝবো না, আর আজ আমি এখানে সেটা তো আপনাদেরই জন্য, তাই আমার কাউকে লাগবে না প্লিজ আপনাদের আমি আর নিতে পারছি না, তাই আমাকে মেরে ফেলুন নয়তো মুক্তি দিন প্লিজ,,,

.

আমার এমন কথা যেন উনি নিজেকে নিজের মধ্য থেকে হারিয়ে ফেলে মূহুর্তেই, তাই দ্রুত আমার কাছে এসে দু’হাতে আমার দুগাল আঁকড়ে ধরে নিজের কাছে টেনে আমার কপালের সাথে নিজের কপাল চেপে ধরে স্বাভাবিক কণ্ঠে দ্রত বলে উঠে……

.

—” শিই রিররত, আর কতটা জ্বালাবি আমায় তুই কেন বুঝতে পারছিস না আমাকে, আমি তোর দহনে আগুনে জ্বলে পুড়ে মরছি বারবার আমার শান্তিটা তুই,, তাই তোকে মুক্তি দিতে পারবো না আমি,, তবে একটা কাজ ঠিকই করবো আমি তোকে আজকে থেকে আর কোনো রকম বিরক্ত করতে আসবো নাহ কখনোই, আজ থেকে তুই একদমই স্বাধীন আমি তোর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবো না আর,, তাই তোর সামনেও আসবো না আমি, তুই তোর মতো করে সবার সাথে থাকতে পারবি তবে সেটা আমার বাড়িতে থেকে, তুই তোর মতো করে সবটাই করতে পারবি একদম আগের মতো করে যা আর জ্বালাবো না তোকে আমি, আমাদের সম্পর্কটা যেখান থেকে শুরু হয়েছে আজ থেকে আবার সেই জায়গাতেই এসে দাড়িয়ে পড়লাম দুজন,, কিন্তুু আমাকে ছেড়ে যাওয়ার অপশন দিব না তোকে আমি, সবিই আবার আগের মতো চলবে, এবার তুই নিজ থেকে ডাকলেও আমি তোর কাছে আসবো না,,,, সারাজীবন এইভাবেই কাটাবো তুই আর আমি, যাহ এবার সামনের থেকে,,,,

.

কথা গুলো বলেই আমাকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দেয় হালকা ধাক্কা দিয়ে, আমি উনার সব গুলো কথা নিরবে শ্রবণ করলাম, পরে উনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে সামনে দিকে ঘুরে আকাশের দিকে তাকিয়ে বড় বড় নিশ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করে ড্রাইবার চাচাকে বলে আমাকে বাসায় পৌঁছিয়ে দিতে,, আমি উনার কথা অনুযায়ী ধীর পায়ে গাড়ি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে পরতেই পিছন থেকে উনি (রিদ) রাগে চাপা সুরে আবারও আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…..

.

—” আমি জানি নাহ আজ রাতে এমন কি হয়েছে, তবে কি হয়েছে সেটা খুঁজে বের করবোই আমি, কারণ তোর দ্বারা তো এতোটা দূর আসা তো দূর থাক, তুই খাঁন বাড়ির দরজাটা পযন্ত পার করাও সম্ভব নয়, তাই যে তোকে পালাতে সাহায্য করেছে আই সোয়ার তাকে এই কাজটা জন্য চরম মূল্য দিতে হবে, আর এটা যে কতটা ভয়াবহ হবে সেটা সে নিজেরও জানে নাহ, তবে আমি তাকে নিজে বুঝাবো রিদ খাঁন আসলে কি….

.

কথা বলেই আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িটি মধ্যে ওঠে পরে, উনি সামনের গাড়িটিতে উঠতেই গাড়ি থেকে দ্রুততা সঙ্গে নেমে আসে আসিফ আমার সামনে এসে গাড়ি দরজা খুলে আমাকে পিছনে সিটে বসিয়ে ড্রাইবার চাচা সঙ্গে বসে পরে আসিফ, আমরা গাড়িতে বসার সাথে সাথেই গাড়িটি চালাতে শুরু করে আপন গতিতে ড্রাইবার চাচা, আর আমাদের ঠিক সামনের গাড়িটি মধ্যে রয়েছে উনি, উনি উনার কথা রেখেছেন তাই আমার থেকে এখন থেকে দ্রুত বজায় রাখছেন,,,

.

উনার এমন দ্রুত বজায় রাখাটা নিয়ে আমার কোনো দ্বিমত পোষণ করছি না, উল্টো উনার কাজে আমি সহমত পোষণ করছি মানে একমত পোষণ করছি,,, উনাকে নিয়ে আমার কষ্টে ঝুরিটা এটাই ভরপুর যে আর নতুন করে কিছু ভাবতে পারছি না আমি,, তাই শূন্য অনূভুতি নিয়ে গাড়ির সিটে গা এলিয়ে দিয়ে বসে আছি আমি, যা হচ্ছে সেটাই হতে দেওয়া ঠিক এবার সময় ঠিক করবে আমরা কি করবো আমাদের সাথে কি হবে,,,, এবার আমারও কোনো রকম দুঃখ নেই কারও ওপর আর না আছে কোনো রকম আশা,,, আমিও আর কখনোই যাব না উনার সামনে এড়িয়ে চলবো উনাকে,,,
এবার সময় সাপেক্ষে বিবেচনা করবে আমাদের সম্পর্কের অবস্থানটা,,,,,

চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here