#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ৫১
.
🍁
রিদ খানের রুমে বসে আছি আমি ও কেয়া বর্ষা। আমি আরও কেয়া এখান থেকে ছুটার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করলেও বর্ষা স্বাভাবিক অবস্থায় নিজের দুহাতে মাথা চেপে ধরে নিচের দিকে তাকিয়ে বসে আছে সেই কখন থেকে চুপটি করে। রিদ খান আমাদের তিন জনকে এই রুমের ভিতর রেখে সেই কখন থেকে গায়েব। সে এখন কোথায় আছে তাও জানি না কিছু। শুধু জানি আমাদের এইখানে বন্দী অবস্থা রেখে গেছে। আমি আরও কেয়া ছোটার চেষ্টা করতে করতে একটা সময় কান্ত হয়ে বসে পরি জায়গায়। কিন্তু তখনো বর্ষার কোনো রকম খেল তুল নেই জায়গায় চুপটি করেই বসে আছে। বর্ষাকে এমন করতে দেখে রাগে আর বিরুক্তিতে ফেটে পরছি আমি আরও কেয়া। একটা মানুষ হঠাৎ করে এতটা স্বাথর্পর কিভাবে হতে পারে জানা ছিল না আমার যাহ আজ বর্ষাকে দেখে বুঝতে পারছি আমি। রাগে ফেটে পরা ভাব নিয়ে ঠাস করে জায় বসে থাকি শান্ত হয়ে। আমি শান্ত থাকলেও কেয়া যেন কোনো ভাবেই শান্ত করতে পারছে না নিজেকে। কেয়া রাগে বিরক্তি নিয়ে পাশে থাকা ফুলের টপসটা ফ্লোরে ছোড়ে মারে চিৎকার করে বর্ষাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……..
.
—” তুই কি চাস বর্ষা একটু বলবি আমাদের প্লিজ। কারণ তোর এই নাটকটা আর নিতে পারছি না আমরা কেউ। সিরিয়ালি তোর মতো মেয়ে আমি আমার জীবনে খুবই কমই দেখেছি। কিসের এতো ভাব ঐ রিদ খানের সাথে তোর হে যার জন্য আমাদের দুই এতটা কষ্ট দিতে দ্বিধা বোধ করছি না। কি হয় তো ঐ রিদ হ্যাঁ?
.
নিস্তব্ধ পরিবেশ কেয়া প্রতিটা শব্দ ছিল প্রতিধনি শব্দ মতো। প্রতিটি কথা ছিল ঝংকালোর মতো। কেয়া উচ্চ চিৎকারেও ছিল বর্ষার শান্ত দৃষ্টি বগি। বর্ষার আগের নেয় চুপটি করে মাথা নিচু করে বসে আছে চুপচাপ। বর্ষাকে চুপ থাকতে দেখে এবার যেন আমি রাগে ফেটে পরছি কেয়ার সাথে সাথে। আশ্চর্য একটা মানুষ এতকিছুর শুনার পরও এতটা শান্ত হয়ে কিভাবে বসে থাকতে পারে। যেখানে আমিও কেয়া উত্তেজনায় পাগল পারা হয়ে যাচ্ছি। আমার মধ্যে যদি এটা পাগলপূণা তো বর্ষার মধ্যে কি তার বিন্দু মাত্র খারাপ লাগছে না আমাদের জন্য। এতটা নিষ্ঠুর কিভাবে হতে পারে বর্ষা। আমি এই চিন্তা ভাবনায় করে রাগে ফেটে পরার অবস্থায় দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বলে উঠি…….
.
—-” তুই কি কিছু বলবি আমাদের বর্ষা? কারণ তোর এই অসময়ে চুপ থাকাটা সাংঘাতিক বিরক্তিদায়ক মনে হচ্ছে আমাদের কাছে।
.
আমার এমন কথায় বর্ষা আগের নেয় বসে থেকে মাথা নিচু করে শান্ত সুরে বলে উঠে……
.
—” আমার কিছু বলার তোদের।
.
বর্ষার এমন কথায় তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলাম আমি ও কেয়া। বর্ষার শান্ত সুরে এই কথা ছিল আগুনে ঘী ডালার মতো। আর সেটা হয়ে কেয়া তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বললো……..
.
—” তার বলার থাকবে কেন তোর তুই তো পারিস ঐ রিদ খানকে সাপোর্ট করতে নারী পাচারের কাজে। আজ তোর জন্য আমিও পৃপ্তী এই পরিস্থিতি স্বীকার হলাম। শুধু আমরা দুজন নয় বরং আমাদের আশ্রমের পুরো মেয়েরা তোর জন্য এই পরিস্থিতি স্বীকার। কি করে পারি তুই রিদ খানের মতো দালালকে সাপোর্ট করতে আমাদের নিয়ে ব্যবসা করতে। তোর একটু বুক কাঁপলো না।
.
কেয়া উচ্চ স্বরে কথায় বর্ষা আস্তে করে নিজের মাথাটা তুলে উপরে কেয়া দিকে তাকিয়ে থেকে শান্ত সুরে বললো……
.
—” না কাপিনি আমার বুক রিদ খানকে সাপোর্ট করতে। আর কেন কাঁপবে বল তো। রিদ খান তো কোনো খারাপ কাজ করছে না আমার দৃষ্টি কোণ থেকে। এখন যদি রিদ খান তোদের সাথে খারাপ কিছু করে থাকে তো আমাকে বুঝাতো কিভাবে করেছে তোদের সাথে কিছু। না বল না কি এমন খারাপ কাজ করেছে তোদের দুজনে সাথে রিদ খান। আজ আমারও বড্ড জানতে ইচ্ছা করছে যে কি করেছে কি তোদের সাথে এমন রিদ খান। আচ্ছা কেয়া কথা না হয় বাদই দিলাম। পৃপ্তী তুই তো বিঘত ছয় মাস ধরে রিদ খানের সাথে ঘুরে বেড়িছিস তাই না। তাহলে তুই বলতো রিদ খান কি তোর সাথে কখনো খারাপ আচরণ করেছে যেটা মাধ্যমে তোর মনে হয়েছে যে উনি তোকে বাজে ভাবে ছুইছে হুমমম। আচ্ছা এটা বাদ দে তোকে কখনো কোনো সময় রিদ খান কোনো ছেলে সামনে পরতে দিয়েছে এমন কি বিঘত ছয় মাস আমাদের আশ্রমের কোনো কাজের ছেলেই হোক বা টিচার হোক বা ফাদারই হোক কেউ কি কখনো তোর সাথে কথা বা সামনে এসেছি কখনো এই ছয় মাস হুমমম আমার তো মনে হচ্ছে না এমন কিছুই হয়েছে……
.
বর্ষার এমন কথায় চমকিত হলাম আমি। কারণ বর্ষা যাহ বলছে তা সবিই সত্য। রিদ খান আমার জীবনের আসার পর থেকে আমি দ্বিতীয় কোনো পুরুষে সাথে আমার কোনো কথা বা দেখা হয়নি। আর উনাকে নিয়ে এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে কখনো এই বিষয়টি লক্ষই করতে পারি নি আমি। তাই বর্ষার সাথে সাথে আমি চমকিত হয়ে বলে উঠি…..
.
—” মানেহহহহ….?
.
—” মানেটা খুবই সহজ পৃপ্তী সহজটা কখনোই চোখে পড়ে না তোর। সবসময় উল্টোয় চোখে পড়ে তোর। তুই সম্পূর্ণ বিষয়টি না জেনেই সবাইকে একে পর এক দোষ দিয়ে যাচ্ছিস। তাও তাদের দোষ দিচ্ছিস যারা তোকে বাঁচানোর জন্য ভয়ানক কিছু শত্রুর সাথে রোজই মাইন্ড গেমস খেলতে হচ্ছে। শুধু তোকে সেইফ করার জন্য। শুধু তোকে এই সব থেকে দ্রুরে রাখার জন্য তাদের মতো লোকদের সাথে চলতে হচ্ছে রিদ খানকে। তোর সাথে সাথে আমার মতো হাজার মেয়ে জীবন বাঁচাতে আজ তোর কাছে রিদ খানের মতো ব্যক্তিকে হতে হয়েছে চরিত্রহীন লম্পট স্বৈরাচারী মানুষ।
.
বর্ষার এমন কথায় মূহুর্তে চমকে উঠে দাঁড়িয়ে পরি আমি। বর্ষার কথায় আমার সারা শরীর যেন সাথে সাথেই হীম ধরে বরাফ এর মতো জমে যায় এসব কথা শুনে। কি বলতে চাচ্ছে বর্ষা রিদ খানের সম্পর্কে সেটা ঠিক করে বুঝতে না পেরে জমে যাওয়া অবস্থায় কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠি…….
.
—” মানেহহহহহ…?
.
আমার এমন কথার পিছনে কেয়া কপাল কুচকে বলে উঠে বর্ষাকে…..
.
—” তোর কথার মানে আমরা বুঝতে পারছি না বর্ষা। তবে তুই যাহ বলতে চাইছিস তাহ কি প্রোফ করতে পারবি আমাদের। কারণ আমরা তোকে বিশ্বাস করি না।
.
কেয়ার এমন কথায় বর্ষা কেয়ার দিকে এক পলক তাকিয়ে থেকে স্মিথ হেসে আবারও আগের নেয় বলে উঠে…..
.
—” আমাদের সত্যটা মানতেই সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় কেয়া। কিছুতেই মানতে চাই না আর সেটাও আজ তোদের হচ্ছে সেটা আমার সাথে হয়েছে ছিল প্রথমে…….
.
বর্ষার এমন কথায় আমি ও কেয়া এক সাথে সাথে বলে উঠি…….
.
—” মানেহহ? তোর সাথে হয়েছে? কি বুঝতে চাইছিস……
.
(রাতে আরও একটা পর্ব দিতে পারি)
.
.
.
চলবে……….