তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৬৯

0
699

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৬৯

🍁
রিদের এমন কথায় এবার মূহুর্তেই কপাল কুঁচকে এলো রুদ্রের কারণ রিদ কখনোই এসব বিষয়ে মজা করে না। এবারও হয়তো তাই করছে না তারপর কেন জানি রুদ্রের কিছুই ঠিক মনে হচ্ছে না। কোনো একটা কিন্তু কিন্তু ভাব থেকেই যাচ্ছে। আর সেই জন্য রুদ্র নিজের ঘাড় দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রিদের ওপর। আর রিদ তখনো চুপচাপ নিজের নাস্তা শেষ করায় মহা ব্যস্ত। এমন একটা ভাবে খাচ্ছে যেন কিছু হচ্ছে না এখানে…….
.

রুদ্র এই মূহুর্তে রিদের ভাবমূতি বুঝতে চাইছে। রিদ কি করতে চাইছে সেটা ধারণা করতে চাইছে। এই মূহুর্তে রুদ্রের মনে হচ্ছে রিদ আর যাই করুক না কেন খুব বড় কিছু করতে চলছে। কারণ রিদ খান ছোট খাটো বিষয় কখনোই চিন্তা ভাবনাও করে না। তাই রুদ্রসহ উপস্থিত সদস্য বিন্দরা সবাই রিদের ওপর ঘাড় দৃষ্টি স্থির করে রেখেছে খাবার ছেড়ে। সবার একটাই চিন্তা রিদ কি করতে চাইছে? কাকে নিজের বউ বলে দাবি করছে? অদো কি রিদের বউ বলে কোনো প্রাণী আছে? নাকি মিথ্যা বলছে? সবাই এতো এতো কৌতুহল নিয়ে একঝাক প্রশ্নের ঝুঁলি নিয়ে রিদের দিকে তাকিয়ে আছে। রিদ সবার চিন্তা ভাবনার অপেক্ষা করে নিজের মতো করে বাকিটা নাস্তা শেষ করে উঠে হনহনিয়ে চলে যায় নিজের রুমে দিকে। একটা বারের মতো পিছনে ফিরে তাকানোর প্রয়োজন বোধ করেনি। কারণ রিদ জানে এই মূহুর্তে সবাই তাঁকেই ঘাড় সন্দেহ দৃষ্টিতে দেখছে। তাঁকে নিয়ে সবাই ঝুরি ভরপুর প্রশ্ন সাজিয়ে রেখেছে। কিন্তু সে এই মূহুর্তে কারও কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নয়। সময়ে সাথে সাথে সবাই সবটা জানতে পারবে। অথযা আগেবাঘ বলে নিজের সময় নষ্ট করা ছাড়া অন্য কিছুই নয়। তাই সে চুপচাপ নিজের রুমে দিকে প্রর্দারপূণ করে।

.
রিদকে চুপচাপ নিজের রুমে দিকে যেতে দেখেই হুহু শব্দ করে কেঁদে ওঠে নিধি। এতক্ষণ যাবত নিজের কান্নাটা চেপে রাখা চেষ্টা রিদ চলে যাওয়াতে বিফলতায় পরিণত হয়। রিদের প্রতিটা কথায় ছিল নিধির জন্য বেদনা ধায়ক। হ্যাঁ নিধি অনেক দিন ধরেই রিদকে ভালোবাসে আসছে আর সেই ভালোবাসার মানুষটা সাথে যখন বিয়ে ঠিক হয়েছে শুনেছে। সেটা নিধি জন্য সর্গ সুখ মনে হয়েছিল। নিধি রিদকে বহুবার ভালোবাসি কথা বলেও যখন কোনো প্রকার সম্পর্ক স্হাপন করতে পারছিল না রিদের সাথে, তখন একটা সময় নিধি নিজ থেকেই চুপ করে যায় আর রিদকে নিজের ভালোবাসি কথাটা কখনোই প্রকাশ করেনি। অবশেষে রিদের সাথে বিয়ে কথাটা যখন নিজের মা মুখ থেকে শুনেছিল নিধি তিন দিন আগে তখন সে কতটা খুশি হয়েছিল সেটা নিধি নিজের মুখে যতটা প্রকাশ করবে ততটাই কম মনে হবে। কিন্তু আজ রিদের কথায় মনে হচ্ছে নিধি আবারও অন্ধকারে বসবাস করছে। কারণ রিদ তো কখনোই তাঁর নয় সেতো অন্য কারও। নিজের এমন চিন্তা ভাবনা সাথেই হু হু শব্দ করে কেঁদে ওঠে নিধি। হঠাৎ করেই কান্নার হু হু শব্দ কানে আসতেই সবাই চমকে উঠে দ্রত তাকাই নিধির দিকে। নিধিকে কান্না করতে দেখে দ্রত সবাই উঠে এসে নিধির পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে শান্তনা দিতে। রুদ মা, হেনা খান, ও নিধি মা মিলে নিধিকে মাথায় আদুরে হাত বুলিয়ে শান্তনা দিচ্ছে আর বুঝানোর চেষ্টা করছে তাঁরা রিদের সাথে কথা বলবে। আর যে করেই হোক রিদকে বুঝিয়ে কাল নিধি সাথেই রিদের বিয়েটা দিবে। রিদ হুট করে বিয়ে করতে চাই না বলে আজ এসব মিথ্যা নাটক সাজিয়েছে নিজের বউ আছে বলে সেটা। হেনা খানের কথায় উপস্থিত সবাই সহমত প্রকাশ করলেও আরাফ খান ও রুদ্র চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল কপাল কুঁচকে। তাদের মাথায় ছিল অন্য চিন্তা ভাবনা কারণ তাঁরা দুইজনেই জানে আর যায় হোক রিদ কখনো এই বিষয় মিথ্যা বলছে না। কিন্তু রিদ কিছু একটা বড় কিছু করতে চলেছে কিন্তু সেটা কি হতে পারে সেটা নিয়েই রুদ্র আর আরাফ খানের এতোশত চিন্তা।

.
রুদ্র, রিদ, আর নিধির বিয়েটা একেই বাড়ি থেকে হতে চলছে। খান বাড়ী থেকেই রিদ তিনজনে বিয়ে হতে চলেছে। তিনজনের বিয়েটা যেহেতু একিই দিনে হচ্ছে তাই হেনা খান চাই একিই বাড়ি থেকে হোক বিয়ের অনুষ্ঠানটা। তিনি কারও বিয়েটা মিস করতে চান না। রিদ যেমন উনার নাতী হয়। তেমনি রুদ্র ও উনার নাতী। তাহলে কেন এক নাতীর জন্য অন্য নাতীর বিয়ে মিস করবে উনি। আর বাকী রইল নিধি বিষয়টা তো হেনা খান চাই আলাদা আলাদা ভাবে দুই জায়গায় গিয়ে বিয়ে করিয়ে আনতে অনেক সময়ে ব্যাপার। তাছাড়া মেহমান লিষ্টটা অনেক বড় তাই এই তিনজনের বিয়েটা যদি একি বাড়ি থেকে হয় তো অন্তত আর যায় হোক কিছুটা ঝামেলা কমে যাবে অনেকটা। হেনা খানের এমন যুক্তিমূলক কথায় এক মত পোষণ করেন নিধির পরিবার ও রুদ্রের পরিবার। আর সেই সুবাদেই আজ সবাই এখানে উপস্থিত। বিয়ে সবগুলো অনুষ্ঠানে এই বাড়িতেই হয়েছে। পরপর তিন দিনের বিয়ের ফাংশন চুকিয়ে আজকে দিনে সবাই রেষ্ট নিয়ে কাল বিয়েটা শেষ করবে এমনত চিন্তা ভাবনা ছিল সবার। কিন্তু হুট করেই আজ সকালে রিদের এমন বোম ফাটা কথায় সবকিছু এলোমেলো পথে চলে যায়। সেই গুলো কিভাবে সামাল দিবে সেই চিন্তা ভাবনায় বিভোর আরাফ খান ও রুদ্র।

.
🍁
মাথায় নিজের রুমে মধ্যে সকাল থেকে ঘাপটি মেরে বসে আছে চুপচাপ। না কারও সাথে কোনো রকম কথা বলছে না কোনো কিছু খাচ্ছে। কেমন একটা উদাসীন ভাব হয়ে দুই পা ভাজ করে সেখানটায় নিজের মাথাটা গুজিয়ে বসে আছে চুপচাপ। মায়ার পঞ্চ বান্ধবীরা মিলেও অনেক করে বলার পরও মায়া কোনো রকম তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে দিচ্ছে না। না কোনো কথা বলছে। সকাল থেকে প্রায় এমনটা হয়েই বসে আছে। একটা সময় মায়ার ওপর মায়ার পঞ্চ বান্ধবীরা বিরক্ত হয়ে চলে যায় বাহিরের দিকে মায়াকে একা রেখে।কারণ মায়ার কর্ড়া আদেশ হচ্ছে ওকে একটু একা থাকতে দিতে। টানা চার ঘন্টা এই ভাবে ঘাপটি বসে থেকে হুট করে উঠে চলে যায় বাথরুমের দিকে। লম্বা একটা সাওয়ার নিয়ে গোসল সেরে সাদামাটা একটা সাদা লং থ্রী পিস পড়ে বের হয় লম্বা ভিজা হাঁটো অবধি চুল গুলো পিঠের ওপর ছড়িয়ে দিয়ে। একপলক নিজের রুমটা পযবেক্ষণ করে নিয়ে চুপচাপ ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাড়িয়ে পড়ে নিজের ঠিকঠাক সাজিয়ে তুলার জন্য। স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে নিজের সাজানোর চেষ্টা করছে বারবার মায়া। কিন্তু বারবারই নিজেকে সাজানোর বিথা চেষ্টা করেও সফল হতে পারিনি মায়া। পারবে বা কিভাবে নিজের বুকের ভিতরটা বুক ফাটা চিৎকার করছে বারবার কাকে বুঝাবে সেই কষ্টটা? কাকে বলবে সে এই বিয়েটা সে করতে চাই না। সে অন্য কাউকে ভালোবাসে। সে তার বিয়ে করা স্বামীকে চাই থাকতে। কেউ কি বুঝতে চাইবে এসব কথা গুলো। বুঝার মতো কি কেউ আছে তাঁর। কথা গুলো ভেবেই মূহুর্তে দুই চোখ ভরে আশে মায়ার। দ্রুত নিজের চোখের পানিটা মুছতে নিবে তখনই পিছন থেকে কেউ অতি আদুরের সহিত বলে উঠে…….

.
—” আমার মা টা কি তার কষ্টটা লুকাতে চাইছে? তাঁর চোখের পানির আড়ালে?

.
হঠাৎ কারও কথা কানে আসতেই চমকে উঠে মায়া দ্রুত নিজের চোখের পানিটা মুছে পিছন ফিরে তাকায়। ঘুরে তাকাতেই দরজার সামনে নিজের বাবাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে জোর পূর্বক একটা হাসির রেখার নিজের ঠোঁটের ওপর ঝুলিয়ে নিজের কষ্টটা আড়াল করে বলে উঠে……

.
—” বাবার খুব আদুরের মেয়েকে কি কখনো কষ্ট লুকাতে হয় কিভাবে সেটা কি তার বাবা শিখিয়েছে কখনো? তাহলে আজ কিভাবে কষ্ট লুকাবে?

.
মেয়ে জোর পূর্ব হাসি দেখে আর চাপা সুরের কথা শুনে মূহুর্তেই ধীর পায়ে হেঁটে এসে কয়েক কদম রফিকুল ইসলাম (মায়ার বাবা)। তিনি মেয়ে কষ্ট বুঝতে পারলেও কষ্ট কারণ কি সেটা না জানায় চুপ করে এসে বসে পড়ে মায়ার বিছানা ওপর। হাতে ইশারা করে মেয়েকে নিজের কাছে ডাকতে মায়া কোনো রকম আপত্তি ছাড়াই চুপচাপ বাবার পাশে বসে পড়ে। রফিকুল ইসলাম একহাতে মেয়ে মাথায় নিজের হাত বুলিয়ে দিতে দিতে শান্ত গলায় বলে উঠে…….

.
—” কি হয়েছে আমার মার সে কষ্ট পাচ্ছে কেন?

.
বাবার কথায় মায়া নিজেকে ঠিক ঠাক করে নিজের বাবাকে দেখানোর জন্য খানিকটা চঞ্চলতা নিজের মধ্যে প্রকাশ করে হাসি হাসি ভাব নিয়ে বললো…….

.
—” কই আমি কষ্ট পাচ্ছি। আমি একদমই ঠিক আছি বাবা তুমি দেখ আমাকে।

.
রফিক সাহের মেয়ের মিথ্যা হাসি দেখে মূহুর্তে তিনি খানিকটা স্মিত হাসে। মেয়ে তার বড় হয়ে গেছে মিথ্যা বলতে শিখে গেছে। তবে এতোটা বড় হয়নি যে বাবা-মার কাছ থেকে নিজের কষ্ট লুকাতে পারবে। তিনি মেয়ের চাপা কষ্ট বুঝতে পেরে আবারও মেয়ে মাথায় নিজের আদুরের হাতটা বুলিয়ে দিতে দিতে বলে উঠে………

.
—” আমার মেয়ে কি এখন তাঁর বাবার সাথেও মিথ্যা বলবে? সেকি এতোটাই বড় হয়ে গেছে?

.
ফেসে কৃত্রিম রাগ ঝুলিয়ে নিয়ে বাবাকে উদ্দেশ্য করে বললো……..

.
—” আমি মোটেও মিথ্যা বলছি না বাবা। তুমি একটু বেশিই চিন্তা করছো আমাকে নিয়ে? আমি কখনো তোমাদের সঙ্গে মিথ্যা বলি না হুহ্……

.
—” আমি জানি আমার মেয়ে কখনোই আমার সাথে মিথ্যা বলবে না। তাই তো মেয়ে কাছে আশা নিয়ে সত্যিটা জানতে চাইছি। কি হয়েছে? সে কষ্ট কেন পাচ্ছে?

.
বাবার আকুতি মূলক কথায় মূহুর্তে নরম হয়ে আসে মায়া। নিজেকে মূহুর্তেই দুর্বল প্রকাশ করে বাবার কাঁধের মাথা রেখে কান্না জড়িত কন্ঠে আস্তে করে বললো……
.

—“আমি কষ্ট পাচ্ছি না বাবা! আমি শুধু সময়ের বেড়া জ্বালে আটকা পড়ে গেছি। কি করবো বুঝতে পারছি না! সময়টা যে আজ আমার অনুকূলে বাবা…..

.
মেয়ের কথায় মানে খানিকটা বুঝতে পেরে তিনিও মেয়েকে সাপোর্ট করে শান্ত গলায় বললো…….

.
—” যেটা তোমার অনুকূলে চলছে সেটাকে তুমি জয় করে তোমার প্রতিকূলে করে নাও। তোমার ইচ্ছাতে সবকিছু তুমি তোমার চাওয়াটা ওপর কতটা অটল সেটাই পরীক্ষা করে সময়। সময় কখনো আমার পথ ঠিক করে দেয় না। আমরা আমাদের পথ ঠিক করি আর সময়টা শুধু আমাদের মাধ্যম হয়ে থাকে সবসময়। তাই সময়ের দোষ দিয়ে নিজের কপালকে মেনে নেওয়া একদল বোকামি কাজ। আমি চাই না আমার মেয়ে সেই দলের পরুক। আমার মেয়েকে আমি কষ্টটা লুকাতে না শিখালেও কিভাবে প্রতিবাদী হওয়া যায় সেটা আমি সবসময় শিখিয়েছি। আমি সবসময় চাইবো আমার মেয়ে সময়ের ধোহায় না দিয়ে প্রতিবাদী হয়ে ওঠোক। জীবনের এখানেই শেষ নয়। অনেকটা পথ হাটতে হবে তাঁকে নিজের পথ নিজেই ঠিক করো অন্যের জন্য কখনোই নিজের পথটা হারাবে না। সেটা করাটাও বোকামি কাজ।

.
বাবার সম্পূর্ণ কথা গুলো মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করে মায়া। নিজের বাবা যে এতটা সাপোর্ট করবে কখনোই ভাবিনি মায়া। নিজের বাবার প্রতি একবুক ভালোবাসা নিয়ে নিজের বাবার কাধের থেকে মাথাটা তুলে আস্তে করে তাকাই রুফিক সাহেবর দিকে। মায়া অশ্রু সিক্ত টলমল চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে থেকে আবারও অবুঝের মতো করে বললো……

.
—” বাবা আমি কি করবো? আমি যে অনেক বড় একটা বেড়া ঝালে আটকা পড়েছি। সেখান থেকে ছুটার দ্বিতীয় কোনো রাস্তা খোঁজে পাচ্ছি না…….

.
—” সেটা তোমার ধারণা তুমি সময়ের বেড়া জ্বালে আটকে পড়ে গেছো। কিন্তু আমি বলবো এমন কোনো সমস্যা নেই যেটার একটা সমাধান পাট থাকে না। তোমার সমস্যা সমাধানও আছে হয়তো একটু কঠিন হবে কিন্তু তুমি চাইলে হয়তো সব ঠিক করতে পারবে। সবকিছু ব্যাক্তির হাতেই থাকে শুধু সামনের ব্যাক্তিটাকে সেটা খুঁজে বের করতে হয়। তুমিও পারবে খুজে বের করো তোমার সমস্যা সমাধান পাটটা কোথায় আছে। তাহলেই তুমি তোমার সঠিক রাস্তা খুঁজে পাবে।

.
বাবার এমন মন জোড়ানো কথায় মূহুর্তে থমকে যায় মায়া। নিজের বাবা নামক পুরুষটি কাছ থেকে সবসময়ই সঠিক সমাধান পেয়ে এসেছে আজও তাই পাচ্ছে। কিন্তু বাবা নামক মানুষটি জানের না তার সমস্যা কারণটা জানলেও হয়তো এতোটাই সাপোর্ট করতে এখনকার মতোই। মায়া আর কোনো রকম কথা না বলে দুহাতে নিজের বাবার গলা জরিয়ে ধরে নিরবে কেঁদে ওঠে। রফিক সাহেবও মেয়ের চাপা কান্নাটা বুঝতে পেরে দু’হাতে জরিয়ে ধরে মেয়েকে একহাতে নিজের মেয়ে মাথায় আদুরে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে চুপচাপ।

.

.
🍁
রিদ অস্থিরতা নিয়ে দাড়িয়ে আছে নিজের রুমের কাচ বিশিষ্ট দেয়ালটি ধরে। চোখে মুখে হালকা বিরক্তি সাথে সাথে চিন্তা ভাজটা ফুটে উঠেছে। আর তার একটাই কারণ তা হচ্ছে মায়াকে নিয়ে। এখন প্রায় সন্ধ্যা সাতটা ছুঁই ছুঁই। রিদ মায়ার জন্য সারাদিন ধরে অপেক্ষা করতে করতে এখন রাত হয়ে এলো বলে তারপরও মায়া আসার নাম নেই আর না কোনো কিছু করছে। নিজের খেলাই কি এখন নিজেই মার খেয়ে যাবে রিদ। অবশেষে কি সবকিছু হারাতে হবে মায়ার চুপ করে থাকার জন্য। মন বলছে মায়া কিছু ঠিকই করবে কিন্তু পরিস্থিতি বলছে অন্যটা। এখন যদি মায়া ঠিক সময়ে কথা না বলে তাহলে এবার রিদ সবার কাছেই অদ্ভুত প্রাণী বা মিথ্যাবাদী বলে গর্ণ হবে। কিন্তু সেটা বড় কথা নয় রিদের কাছে কারণ রিদ কাউকেই পরোয়া করে না সেই সুবাদে কে কি বললো সেটাও দেখার কথা না। সেটা দেখার বিষয় সেটা হচ্ছে রিদের হেরে যাওয়াটা।রিদ সেটা কখনোই মেনে নিতে পারে না এবারও পারবে না। সে কিছুতেই নিজের এতো দিনের সাজানো খেলাই নিজেই হেরে যেতে দিবে না। কিছু একটা না একটা তো অবশ্যই করবে। কিন্তু রিদ এই মূহুর্তে বুঝতে পারছে না মায়া কেন চুপ করে আছে! সেকি পরিবারের ভয়ে চুপ নাকি অন্য কিছু বুঝতে পেরে রিদ সম্পর্কে? মায়া কি তাহলে রিদ সম্পর্কে কিছু ধারণা করতে পেরেছে? এই কথাটা ভেবেই আবারও পর মূহুর্তে নাহুচ বগিতে নিজের নিজেই বললো……

.
—” রিদ কি সেটা একমাত্র রিদ খানেই জানে। অন্য কারও বুঝার স্বাধ্য নেই আমাকে বুঝার। আমি জানি শেষটা আমার প্লেনিং অনুযায়ী হবে এর জন্য হয়তো আমাকে আরও কিছুটা সময় ধয্য ধরতে হবে। কিন্তু পাখিটা আমার খাঁচাই বন্দী হতে হবে বাধ্যতা মূলক। এবার এতে পাখির পছন্দ হোক না হোক। খেলাটা আমার সাজানো তাই শেষ চালটা আমার সাপেক্ষেই হবে…..

.
কথাটা বলেই রিদ বাঁকা হেঁসে নিজের ফোনের দিকে তাকায়। একটু ঝুকে ফোনটা হাতে নিয়ে কল লাগায় অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যাক্তিকে। মনোযোগ সহকারে একমিনিট কথা বলে আস্তে করে ফোনটা রেখে দেয় পাশে। চোখে মুখে রিদের তৃপ্তিতস প্রকাশ করে তাকাই বাহিরের দিকে কর্ড়া লাইটিং এর দিকে। কাল কি হতে চলেছে সেটা চিন্তা ভাবনা করেই বাঁকা হাসে রিদ আর সাথে রহস্য পূণ্যতা নিয়ে বলে উঠে…..

.
—” লক্ষহীন মানুষ গুলোই অর্থহীন একটা প্রাণীর মতো। যাদের অস্তিত্ব তো আছে কিছু কোনো চেতন বোধ নেই। আর তারাই শাসিত হয় আমাদের মতো শসিত মানুষদের কাছে। দোষী আসলে আমাদের মতো মানুষদের নয়, দোষী আসলে তারাই যারা নিজেদের সবোচ্চ অর্থহীন প্রাণী বানিয়ে তুলে ধরে আমাদের মতো মানুষদের কাছে……..

.
(নেক্সট কাল দিব)

.

.

.
চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here