তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡 #DcD_দীপ্ত #পর্ব__________25

0
99

#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________25

ছাদ থেকে নেমে নিজের রুমে তৃপ্তিকে এনে ভালো করে সাজাতে লাগলো নীলা । তৃপ্তি সুধু নীলার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে । কোতুহল ধরে রাখতে না পেরে তৃপ্তি নীলাকে বললো ।

:+আপু আমাকে এভাবে সাজু গুজু করাচ্ছো কেনো । কোথাও যাবো নাকি ।(তৃপ্তি)

:+না কোথাও যাবো না ।(নীলা)

নীলা সোজা সাপটা জবাব দিলো । তৃপ্তি এবার আরো একটু অবাক হয়ে বললো ।

:+তাহলে আমাকে এভাবে সাজাচ্ছ কেন ।(তৃপ্তি)

:+চুপ করে বসে থাক ।(নীলা)

:+না,,, আগে তুমি বলো । আমাকে এভাবে সাজাচ্ছো কেন ।(তৃপ্তি)

:+আরে বাবা আগে সাজানো টাতো শেষ করে নিতে দে । তারপর সব বলবো । এভাবে নড়াচড়া করলে তো আর চোখ দু’টো ঠিক মতো সাজাতে পারবো না ।(নীলা)

:+আচ্ছা ঠিক আছে আমি চুপ করে বসলাম ।(তৃপ্তি)

:+হুম,,,এখন চুপচাপ লক্ষি মেয়ের মতো বসে থাক । আর একটা কথাও বলবি না । নড়াচরাও করবি না ।(নীলা)

গুরু আদেশের মতো আদের করলো নীলা তৃপ্তিকে । তৃপ্তিও সেই আদেশের পালটা জবাব দিলো । সেও আর কোন কথা বললো না । নীলা নিজের মতো করে তৃপ্তিকে সাজাতে লাগলো । তৃপ্তির চোখ দু’টো যেন কোন পরির চোখের মতো লাকছে,,,,,,,,,,,, ।

————————————

:+ওই থাম,,,, থাম,,,, থাম ।(রনি)

:+কি হইছে আবার তোর ।(আরিয়ান)

:+তুই তৃপ্তির চোখ, পরির চোখের সাথে তুলনা করলি কেন । পরি দেখিস কখনো ।(রনি)

:+না দেখিনি ।(আরিয়ান)

:+তাহলে তুই কি করে যানলি তৃপ্তির চোখ পরির চোখের মতো ।(রনি)

:+আরে ভাই এটা একটা গল্প । কথার কথা বললাম ওটা । গল্পতে এগুলো সাভাবিক বলাই যায় । (আরিয়ান)

:+ধুর বেটা কি বালের গল্প নিয়ে আসছিস । মানুষর চোখ নাকি পরির চোখের মতো হয় ।(রনি)

:+রনি,,,, আমি এটা বলিনি যে তৃপ্তির চোখ পরির চোখ । আমি এটা বলেছি তৃপ্তির চোখ পরির চোখের মতো লাকছে ।(আরিয়ান)

:+হইছে এবার বাকি ইস্টুরি সুরু কর । সুনি তোর পরির চোখ ওয়ালি সামনে কি করে ।(রনি)

:+এভাবে গল্পের মাজ খানে বাধা দিলে কিন্তু আমি আর গল্প বলবো না ।(আরিয়ান)

:+সরি ভাই আমার ভুল হয়ে গেছে । তুই বল । আমি আর কিছু কমু না ।(রনি)

:+চুপ থাকবি তাহলে ।(আরিয়ান)

:+ঠিক আছে ।(রনি)

————————————-

নীলা তৃপ্তির চোখ দু’টোকে একে বারে মারাল মোহানো করে তুলেছে । যে এই চোখ দু’টো দেখবে সে নির্ঘাত মাতাল হয়ে যাবে । পুরো মাতাল মোহানো তৃপ্তির চোখ দু’টোকে গরে তুলেছে নীলা । মুখে হালকা মেকাপ করিয়ে এরপর গোলাপি রঙের বোরখা, গোলাপি রঙের হিজাব, গোলাগি রঙের নিকাব তৃপ্তিকে পরিয়ে দিলো নীলা । পুরো গোলাপি হুর পরি করে তুলেছে তৃপ্তিকে নীলা । তৃপ্তির একটু আনিজি ফিল হচ্ছে নীলার বোরখা’টা পরে । আনিজি ফিল হবে না কেন, একজনের বোরখা আরেক জনে পড়লে এমনিতেই কেমন যেন লাগে । তার উপর আবার বোরখা’টা তৃপ্তির চেয়ে লম্বায় অনেক বড় । তৃপ্তি হাইটে ৪ ফুট ৮ ইঞ্চি আর নীলা হলো ৫ফুট ১ বা ২ ইঞ্চি লম্বা । এবার বুঝতেই পারছেন তৃপ্তির চেয়ে নীলার বোরখা’টা কতো বড় । তবে তৃপ্তির গায়ে বোরখা’টা তেমন একটা ডোলা হয়নি । এর কারন নীলা সব সময় ফিট ফাট বোরকা পরে । তৃপ্তির গায়ে বোরখা’টা অবশ্য একটু ফিট’ই লাকছে । হিজাব নিকাব ঠিক আছে ও গুলোতে কোন সমস্য নেই । তৃপ্তি চোখ দু’টো ছারা আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না । তৃপ্তি বসে আছে নীলার ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে । নীলা তৃপ্তির পায়ের কাছে বসলো । উদ্দেশ্য তৃপ্তির পায়ের জুতো খুলবে । নীলা তৃপ্তির পায়ের উপর থেকে বোরখা সরিয়ে তৃপ্তির পা ধরতে নিলেই, তৃপ্তি খপ করে নীলার হাত ধরে ফেললো । এরপর বললো ।

:+আপু তুমি এটা কি করছো । তুমি আমার পা ধরছো কেন ।(তৃপ্তি)

:+আরে বোকা,,, পা না ধরলে জুতো খুলবো কি করে ।(নীলা)

:+প্লিজ আপু তুমি আমার পা ধরো না । তুমি আমার চেয়ে অনেক বড়, তুমি যদি আমার পা ধরো তবে আমার ঘুনা হবে ।(তৃপ্তি)

নীলা তৃপ্তির দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললো ।

:+পা না ধরলে জুতো খুলবো কি করে ।(নীলা)

:+জুতো এগুলো থাকলে হবে না ।(তৃপ্তি)

:+কিহহ । এই সেন্ডেল পরে ভি,,,,,,। না না না,,,এগুলো খুলতেই হবে ।(নীলা)

:+আচ্ছা ঠিক আছে । তাহলে আমাদের ফ্ল্যাটে গিয়ে, আমার রুম থেকে আমার হাই হিল জুতো গুলো পরে আসি ।(তৃপ্তি)

:+তোদের ফ্ল্যাটে যেতে হবে না এখন । আমার এখানে অনেক জুতো আছে । দ্বারা আমি নিয়ে আসছি ।(নীলা)

এই বলে নীলা বসা থেকে উঠে তার আলমারি খুললো । আলমারির নিচের থাক পুরোটা জুতোয় ভর্তি । তৃপ্তি ড্রেসিং টেবিলের ওখানে বসেই জুতো গুলো দেখে হা করে তাকিয়ে রইলো । নীলা সুন্দর দেখে সাদা এক জোরা আর নিল এক জোরা সু জুতো নিলো । এরপর উপরের একটা ড্রয়ার খুলে দুই জোরা মুজা নিলো । মুজা গুলো নতুন বুঝাই যাচ্ছে । তৃপ্তি সুধু নীলার দিকে তাকিয়ে আছে । নীলা এরকম কেন করছে, এটা তৃপ্তি বুঝতে পারছে না । জুতো আর মুজা নিয়ে নীলা বেডের উপর রাখলো । এরপর তৃপ্তিকে বললো ।

:+তুই আমাকে তোর পা ধরতে দিবি না । নে এখানে এসে বেডের উপর বস । এরপর সু আর মুজা যেই জোরা তোর পছন্দ হবে সেই জোরা তুই পরে নে । আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি ।(নীলা)

তৃপ্তিকে আর কিছু বলতে না দিয়ে নীলা রুমের এসি’টা একটু বারিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেল । এসি বারানোর কারন তৃপ্তি যাতে ঘেমে না যায় । ঘেমে গেলে তো পুরো চেহারার অবস্থা নাজে হাল হয়ে যাবে । এই জন্য নীলা এসিটা বারিয়ে দিয়ে গেল । তৃপ্তি এখন কি করবে বুঝতে পারছে না । হাটুর উপর বোরখা টাকে খামছি মেরে ধরলো । এরপর উপরের দিকে টেনে দারালো তৃপ্তি । বোরখার শেষ অংশ এসে তৃপ্তির পায়ের গোরালির সাথে লাগলো । আরো একটু বোরখা টাকে উচু করে গুটি গুটি পায়ে বেডের কাছে এসে দারালো তৃপ্তি । পায়ের সেন্ডেল জুতো গুলো খুলে বেডের উপর উঠে বসলো সে । ফর্সা পায়ে তালু গুলো লাল হয়ে আছে । মনে হয় টোকা দিলেই রক্ত বেরিয়ে আসবে । বেডের উপর বসে তৃপ্তি ভাবতে লাগলো কোন জোরা মুজা আর কোন জোরা সু জুতো পরবে সে । এখানে সাদা এক জরো সু জুতো আর এক জোরা সাদা মুজা আছে । আরেক দিকে কালো এক জোরা মুজা আর নিল এক জোরা সু জুতো আছে । দুই টাই তৃপ্তির পছন্দ হয়ে যায় । এখন কোন জোরা পরবে দোটানায় পড়ে গেলে তৃপ্তি । শেষে মেষে মাথা থেকে সব যেরে ফেলে অপু ১০ + ২০ + ৩০ + ৪০ গুনতে লাগলো তৃপ্তি । এক বার সাদা সু জুতো আবার নিল সু জুতোর দিকে হাতের আঙুল তাক করে সে । দোটানায় পড়ে গেলে এমনিই করে তৃপ্তি । এরকম করতে করতে শেষে ১০০ এসে ঠেকলো সাদা সু জুতোয় । তৃপ্তি একটা হাসি দিয়ে সাদা সু জুতো জোরা নিজের কাছে টেনে নিলো । পায়ে সাদা মুজা পরে এরপর সাদা সু জুতো পরে নিলো তৃপ্তি । এবার পরলো আরেক বিপদে সু জুতোর ফিতার গিট লাগাতে পারে না সে । নীলা ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে এসছে অনেক খন আগেই । তৃপ্তি এতোখন কি করছিন বুকে দু’হাত গুজে দারিয়ে দারিয়ে দেখছিল সে । তৃপ্তি সু জুতোর ফিতার গিট লাগাতে পারছে না দেখে নীলা এসে তৃপ্তির পাসে বসলো । এরপর তৃপ্তিকে কিছু বলতে না দিয়ে তৃপ্তির পা জোরা নিজের কাছে এনে সু জুতো জোরার ফিতার গিট লাগিয়ে দিলো নীলা । তৃপ্তি অনেক জোরা জুরি করেও নীলার হাত থেকে তার পা ছারাতে পারে নি । সু জুতো জোরার ফিতার গিট লাগিয়ে বসা থেকে উঠে দারালো নীলা । তৃপ্তি বললো ।

:+আপু তুমি কিন্তু এটা ঠিক করোনি । আমি না করার পরও কেন তুমি আমার পা ধরলে । এবার আমার পাপ হবে ।(তৃপ্তি)

নীলা আলমারি খুলে তার থেকে একটা নিল বোরখা আর কালো নিকাব আর হিজাব নিয়ে বেডের উপর রেখে বললো ।

:+পাপ হবে না । তুই তো সু জুতোর ফিতার গিট লাগাতে পারছিলি না । তাই গিট লাগিয়ে দিলাম । সমস্যা হবে না তোর । কেও যদি ইচ্ছে করে কারো পা ধরে তাহলে পাপ হয় না । আর যদি নিজের অজানতে কারো গায়ে পা লেগে যায় তখন তাকে সালাম করতে হয় । এতে পাপ কমে যায় । আবার কেও যদি ইচ্ছে করে কারো গায়ে পা লাগায় বা লাত্থি মারে তাহলে সেটা ঘোড় পাপ হয়,,,,,,,,এবার বুঝলি ।(নীলা)

তৃপ্তি কোন কিছু না বলে বেড থেকে নেমে নীলার পা ছুয়ে সালাম করলো । নীলা অবাক হয়ে বললো ।

:+তোকে আমি এখন সালাম করতে বলছি ।(নীলা)

:+না বলনি । তবে আমার কেন যেন মনে হলো তোমাকে সালাম করা দরকার । কারন তুমি আমার পা ধরেছো । হোক সেটা আমার দরকারে,,,, কিন্তু তবুও,,,,,,।(তৃপ্তি)

:+হয়েছে বুড়ি আমি বুঝতে পারছি । আর বলতে হবে না ।(নীলা)

:+আপু আমি মোটেও বুড়ি না ।(তৃপ্তি)

গাল ফুলিয়ে বলে তৃপ্তি । নীলা তৃপ্তির দু’কাধে দু’হাত রেখে বললো ।

:+না না না । তুই তো বুড়ি না । তুই হচ্ছিস আমাদের সুইটি ।(নীলা)

কাধ থেকে হাত নামিয়ে তৃপ্তির নাক টেনে বললো নীলা । তৃপ্তি বললো ।

:+আপু তুমি সাজবে না ।(তৃপ্তি)

:+হ্যাঁ,,, সাজবো তো । তুই বেডের পাসে গিয়ে বস । আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে সেজে নিচ্ছি ।(নীলা)

:+ আমি তোমাকে সাজিয়ে দেই ।(তৃপ্তি)

:+না তুই পারবি না ।(নীলা)

তৃপ্তি নীলার হাত ধরে বললো ।

:+প্লিজ আপু ।(তৃপ্তি)

:+বল্লাম তো পরবি না । চুপচাপ গিয়ে বেডের পাসে বসে থাক ।(নীলা)

:+ধুর ভালো লাগে না ।(তৃপ্তি)

এই বলে তৃপ্তি নীলার সামনে থেকে এসে বেডের পাসে বসলো । নীলা আর দারিয়ে না থেকে, প্রথমে বোরখা’টা পরলো এরপর ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে বসে সাজতে সুরু করলো । তৃপ্তি বেডের পাসে বসে বসে নীলার সাজ দেখতে লাগলো । পাঁচ মিনিট বলে দশ মিনিট ওভার হয়ে গেছে কিন্তু নীলার এখনো সাজই শেষ হয়নি । তৃপ্তি বসে বসে নীলার সাজ দেখছে আর নীলা সাজচ্ছে । এমন সময় সেখানে সুমির আগমোন ঘটে । সুমি নীলার রুমের ভিতরে প্রবেশ করেই দেখলো তৃপ্তি নীলার বোরখা, হিজাব, নিকাপ পরে বেডের পাসে বসে আছে । আর নীলা ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে নিজের সাজা নিয়ে বেস্ত । তৃপ্তিকে দকদম হুর পরি লাকছে সুমির কাছে । তৃপ্তির চোখ দু’টোর দিকে অপলোকে খানিখন তাকিয়ে রইলো সুমি । এরপর গলা খেখিয়ে সুমি বললো ।

:+কি বেপার নীলা তোরা এমন সাজু গুজু করছিস কেন কোথাও যাবি নাকি ।(সুমি)

সুমির গলার আওয়াজ শুনে নীলা আর তৃপ্তি দু’জনেই সুমির দিকে তাকালো । তারা দেখলো সুমি বুকে দু’হাত গুজে দারিয়ে আছে । নীলা একটা ডেবিল মার্কা হাসি দিলো, এরপর আবার নিজের সাজায় মন দিয়ে বললো ।

:+না কোথাও যাবো না ।(নীলা)

সুমি এসে তৃপ্তির পাসে বসতে বসতে বললো ।

:+তাহলে এমন সাজু গুজু করছিস কেন । ওহ হো বুঝতে পারছি,,, সালি তোর মাথায় তৃপ্তিকে নিয়ে টিকটক করার ভূত চেপেছে তাই না ।(সুমি)

নীলা পিছনে ঘুরে সুমির দিকে তাকিয়ে এক গাল হাসি দিয়ে বললো ।

:+তুই দেখছি আমার সব কিছু আগে আগে বুঝে যাস ।(নীলা)

:+বুঝবো না কেন । কোথাও না গেলে তো তুই সুধু টিকটক ভিডিও করার জন্য সাজিস ।(সুমি)

তৃপ্তি এদের কথা কিছু বুঝতে না পেরে সুমিকে বললো ।

:+আচ্ছা আপু টিকটক কি ?(তৃপ্তি)

:+আরে বোকা এটা একটা ভিডিও app,,, যেখানে ১০ বা ২০ সেকেন্ড এর ভিডিও থাকে । আর,,,,(সুমি)

সুমিকে থামিয়ে তৃপ্তি বললো ।

:+ভিডিও মানে । ওই যে,,,,কি যেন,,,,,ধুর ছাই মনে পরছে না ।(তৃপ্তি)

নীলা সুমিকে ধমকের সুরে বললো ।

:+সুমি তুই চুপ থাক তো । তুই দেখছি আমাকে ভাইরাল হতে দিবি না । বেশি পডর পডর না করে এখানে এসে আমাকে একটু সাজতে হেল্প কর ।(নীলা)

সুমি তৃপ্তির কাছ থেকে উঠে নীলার কাছে এসে দারিয়ে বললো ।

:+আমি কেন তোকে হেল্প করবো । তুই তো এখন আর আমার সাথে সময় দিস না । এখন তো তুই নতুন ফ্রেন্ড পেয়ে গেছিস তাই না ।(সুমি)

অভিমানি সুরে বলে সুমি । নীলা বসা থেকে উঠে সুমিকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বললো ।

:+বাহ বাহ,,,,আমার বেস্টু’টা দেখছি অভিমান করছে । অভিমান করে লাভ নেই । তুই আগে যেমন আমার কলিজার বেস্টু ছিলি । ঠিক এখনো আমার কলিজার বেস্টুই আছিস ।(নীলা)

নীলা আর সুমির এমন বন্ধুত্ব দেখে আহত হয় তৃপ্তি । বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠে । মনে পরে যায় মিম আর সামিয়ার কথা । কেমন আছে ওরা,,, কি করছে এখন । তৃপ্তিকে ছারা থাকছে কি করে । আগের মতো কি চেয়ারম্যান বাড়ি এসে তৃপ্তির খোজ করে ওরা । এসব ভেবেই তৃপ্তির চোখ ভোরে আসে । দু’চোখ বুঝে নেয় তৃপ্তি । মিম আর সামিয়ার চেহারা ভেসে উঠে তার সামনে । নিজ রুমে বসে তৃপ্তি মিম আর সামিয়া কতো গল্প করছে । গায়ে গা লাগিয়ে জরা জরি করে সুয়ে সুয়ে কতো গল্প করেছে তিন জনে । নীলার চোখ হঠাৎ তৃপ্তির দিকে যেতেই অবাক হয় নীলা । দু’চোখ বুঝা তৃপ্তির চোখের পাপড়ি গুলো চিক চিক করছে । মনে হয় খানিক’টা জল লেগেছে ওতে । নীলা সুমিকে ছেরে দিয়ে তৃপ্তির কাছে আসে তার পাসে বসলো । সুমিও অবাক হলো তৃপ্তির এমন কান্ড দেখে । নীলার পিছু পিছু সুমিও এসে তৃপ্তির পাসে বসলো । নীলা তৃপ্তির কাধে এক হাত দিয়ে বললো ।

:+তৃপ্তি,,,,,।(নীলা)

কাধে হাত পরায় আর নিজের নাম সুনায় চোখ খুলে তৃপ্তি । ভবনার যগত থেকে বেরিয়ে আসে সে । নীলা তৃপ্তির দিকে অবাক হয়ে তাকায় । তৃপ্তির চোখে পানি চিক চিক করছে । চোখ দু’টো দেখে মনে হয় এখনি পানি বেরিয়ে আসবে । সুমি আর নীলা একে অপরের মুখ দেখা দেখি করে নিলো । সুমি তৃপ্তির আরেক কাধে হাত রেখে বললো ।

:+তৃপ্তি,, শরীর খারাপ লাকছে ।(সুমি)

তৃপ্তি এবার পুরো কেদে দিবে এমন অবস্থা হয়ে যায় । কাদালো কন্ঠে বলে উঠলো তৃপ্তি ।

:+মিম আর সামিয়াকে খুব মনে পরছে আপু ।(তৃপ্তি)

বলেই প্রায় কেদে দিবে এমন সময় নীলা বলে উঠলো ।

:+এই,,,,,,,,এই,,,,,,,এই । কাদিস না প্লিজ । কাদলে একে বারে মুখ, চোখের অবস্থা নাজে হাল হয়ে যাবে ।(নীলা)

এই বলে নীলা তাড়াতারি বসা থেকে উঠে ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে একটা টিসুর পিচ নিয়ে এসে, তৃপ্তির চোখের পানি ধিরে ধিরে মুছে দিলো । সুমি তৃপ্তিকে বললো ।

:+মিম আর সামিয়া কে তৃপ্তি ।(সুমি)

:+আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ।(তৃপ্তি)

:+সুমি আমি তোকে ওদের কথা পরে বলবো । সুইটি আমাকে ওদের কথা সব বলছে । তুই প্লিজ এখন এই নিয়ে আর কথা তুলিস না ।(নীলা)

:+আচ্ছা তুলবো না । বাট এটা জন্য আবার কাদা লাগে নাকি । ওদের সাথে ফোন করে কথা বলতে পারে তো ।(সুমি)

:+আরে বাবা ওদের ফোন নাম্বার দিয়েছিল । এখানে এসে ওদের ফোন নাম্বার হারিয়ে ফেলেছে ও ।(নীলা)

:+হুম,,,বুঝলাম ।(সুমি)

নীলা তৃপ্তির নিকাবের উপর দিয়ে তৃপ্তির দু’গালে দু’হাত রেখে বললো ।

:+আচ্ছা সুইটি এখন চুপচাপ বসে থাকো হুম । আর একদম কান্না কাটি করবে না । এরপর যখন বাড়িতে যবে, তখন ওদের নাম্বার অবশ্যই নিয়ে আসবে । আর এমন ভাবে নিয়ে আসবে যাতে কোন দিনও না হারায় ।(নীলা)

:+আচ্ছা ।(তৃপ্তি)

এরপর নীলা সুমির দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+সুমি একটু আমাকে হেল্প কর প্লিজ । হাজিব’টা একটু সুন্দর করে পরিয়ে দে ।(নীলা)

:+ঠিক আছে আয় পরিয়ে দিচ্ছি ।(সুমি)

অতপর নীলার সাজা শেষ হলো । নীলাকে এখন পুরো নিল পরি লাকছে । চোখ ছারা যদিও কিছু দেখা যেচ্ছে না, তবুও হুর পরি লাকছে নীলাকে । তৃপ্তি আর নীলাকে এক সাথে দারাতে বললো সুমি । নীলা আর তৃপ্তিও এক সাথে দারালো । সুযুগ বুঝে সুমি তৃপ্তি আর নীলার কয়েকটা ছবি নিজের ফোনের কেমেরায় আবদ্ধ করে নিলো ।

:+ওয়াও,,,নীলা । তোদের দুজনকে পুরো নিল পরি আর গোলাপি পরি লাকছে । জাস্ট অসাম মাই ডিয়ার বেস্টু । এভাবে যদি টিকটক বানাস তাহলে তুই নিরঘাত আজ ভাইরাল হবি ।(সুমি)

নিজের ফোনে পিক গুলো নীলা আর তৃপ্তিকে দেখিয়ে বললো সুমি । নীলা নিজের সেলফি স্টেক আর ফোন নিয়ে সুমিকে বললো ।

:+থ্যাংস ইউ । বাট এবার চল যাই ।(নীলা)

সুমি অবাক হয়ে নীলাকে বললো ।

:+কোথায় যাবি এখন আবার । তুই তো সব সময় নিজের রুমেই টিকটক করিস ।(সুমি)

নীলা এক গাল হেসে বললো ।

:+ছাদে যাবো ।(নীলা)

কথাটা শুনে সুমি স্কট খেলো ।

:+ছাদে যাবি মানে । তৃপ্তি কি তাহলে ছাদের চাবি নিয়ে নিয়েছে ।(সুমি)

নীলা মাথা নেরে বললো ।

:+হুম,,,,, ।(নীলা)

সুমি তৃপ্তির দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললো ।

:+সত্যি তৃপ্তি ।(সুমি)

:+হুম আপু সত্যি । কিন্তু আমি এটা বুঝতে পারছি না । ছাদে যাওয়ার জন্য হতো সাজ গুছের কি আছে ।(তৃপ্তি)

নীলা তৃপ্তির দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+ছাদে গেলেই বুঝতে পারবি ।(নীলা)

সুমি বলে উঠলো ।

:+বেস্টু আমার আর তর সইছে না তারাতাড়ি চল ।(সুমি)

:+হুম চল । তুই না গেলে আমাদের ভিডিও করবে কে । আয় সুইটি ।(নীলা)

এই বলে নীলা ফোন আর সেলফি স্টেক নিয়ে হাটা ধরলো । নীলার পিছু তৃপ্তিও হাত দিয়ে বোরখা’টাকে উচু করে ধরে হাটা ধরলো । সুমি তৃপ্তির দিকে তাকিয়ে টাসকি খেয়ে বলে উঠলো ।

:+ওয়াও বেস্টু একবার পিছনে তাকা । পুরো ডানা কাটা হুর পরি হেটে চলছে । আমি যদি ছেলে হতাম তাহলে এখনি ওকে এখান থেকে তুলে নিয়ে যেতাম ।(সুমি)

নীলা পিছনে ঘুরে তৃপ্তির দিকে এক বার তাকালো । এরপর সুমির পিঠে ধুম করে একটা ঘুসি মেয়ে বললো ।

:+নজর লেগে যাবে তোর সালি । নিদ্র তোর মাথা ফাটিয়ে দেবে একদম ।(নীলা)

সুমি নিজের পিঠ ডলতে ডলতে বললো ।

:+সত্যি বলছি মাইরি । আমি ছেলে হলে এতোখনে ওকে তুলে নিয়ে যেতাম ।(সুমি)

নীলা একটু বিরক্তি হয়ে বললো ।

:+হয়েছে এবার চল ।(নীলা)

বলে হাটা ধরলো নীলা । রুম থেকে বেরিয়ে আসলো গোলাপি পরি আর নিল পরি । সুমি বার বার তৃপ্তির চার পাসে ঘুরে তৃপ্তিকে প্রযোবেখন করছে । রুম থেকে বেরুতেই সামনে পরেন নীলার আম্মু নাজমা বেগম । তিনি নীলা আর তৃপ্তির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে সুমিকে বলে উঠলেন ।

:+এরা কারা’রে সুমি ।(নাজমা)

সুমি একটা বেডিল মার্কা হাসি দিয়ে বললো ।

:+নিজের মেয়েকে চিনতে পারছেন না আন্টি ।(সুমি)

নাজমা নীলা আর তৃপ্তিকে ভালো করে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখে বললেন ।

:+কোথায় যাচ্ছিস তোরা নীলা ।(নাজমা)

:+কেন আম্মু ।(নীলা)

:+কোথাও যেতে হবে না ।(নাজমা)

সুমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো ।

:+কেন আন্টি ।(সুমি)

:+কোথাও গেলে আমি আর আমার মেয়েকে পাবো না ।(নাজমা)

নীলা তৃপ্তি আর সুমি চোখ বড় বড় করে নাজমার দিকে তাকায় । নীলা বলে উঠলো ।

:+কেন পারবে না আম্মু । আমি কি কোথাও হারিয়ে যাবো নাকি । এই নীলা হারিয়ে যাওয়ার কোন চান্স নেই বুঝচ্ছো । কারন এই নীলা ঢাকা শহরের অলি গলি সব চিনে ।(নীলা)

নাজমা নিজের শারির আচল দিয়ে মুখ হাত মুছতে মুছতে বললেন ।

:+হারিয়ে যাওয়ার ভয় হচ্ছে না । ভয় হচ্ছে কেও যদি তোদের তুলে নিয়ে যায় ।(নাজমা)

নীলা, তৃপ্তি, সুমি নামজার দিকে আবার তাকায় । নীলা যেন মাথা ঘুরার উপ ক্রম্য । তার আম্মু এসব কি বলছে ।

:+আম্মু তুমি এসব কি বলছো আবুল তাবুল ।(নীলা)

:+আবুল তাবুল বলছি না । যে রকম সাজ দিয়েছিস তোরা,, বাড়ি থেকে বেরুলেই ছেলেরা তোদের তুলে নিয়ে যাবে ।(নাজমা)

নীলা বিরক্ত হয়ে বললো ।

:+আম্মু তোমার মজা করা শেষ হয়েছে । আমি তো ভেবে ছিলাম কি না কি বলবে তুমি ।(নীলা)

:+মজা করছি না । সত্যি বলছি ।(নাজমা)

:+ধুর থাকো তুমি ।(নীলা)

এই বলে নীলা ছাদের সিরির দিকে হাটা ধরলো । সুমিও হাটা ধরলো । তৃপ্তি আবার হাটা ধরতেই নাজমা তৃপ্তির হাত ধরে নিজের কাছে এনে তৃপ্তির কপালে একটা চুমু একে দিয়ে বললেন ।

:+বেচে থাকো মা । ধীর্ঘাউ হও । স্বামী সংসার সুখি করে তোলে,,,,,,দোয় করি ।(নাজমা)

তৃপ্তি নিকাবের ভিতর দিয়ে একটা হাসি দিলো । নাজমা বেগম সেই হাসির আভাস পান । তৃপ্তি বললো ।

:+আন্টি যাই তাহলে এখন ।(তৃপ্তি)

:+যাই না । বলবা আসি ।(নাজমা)

:+আচ্ছা আসি তাহলে ।(তৃপ্তি)

এই বলে তৃপ্তি নাজমার সামনে থেকে সিরি দিকে হাটা ধরলো ।
অতপর ছাদে আসলো তারা তিন জনে । ছাদে এসে সুমি সুধু হা করে পুরো ছাদ দেখছে । নীলা সব কিছু সেটিং করছে ভিডিও বানানোর জন্য । তৃপ্তি দোলনার উপরে বসে আছে ।
৫টা ২০বাজে………
সব সেটিং করার পর নীলা তৃপ্তির কাছে এসে তৃপ্তির পাসে দোলনার উপর বসলো । এরপর নীলা তৃপ্তিকে বললো ।

:+সুইটি ।(নীলা)

:+হুম আপু বলো ।(তৃপ্তি)

:+আমি যেভাবে যেভাবে বলবো সেভাবে সেভাবে সব করবি ঠিক আছে ।(নীলা)

তৃপ্তি বাধ্য মেয়ের মতো বললো ।

:+আচ্ছা ঠিক আছে ।(তৃপ্তি)

এরপর নীলা সুমির দিকে তাকালো । দেখলো সুমি ফুল গাছ গুলোর থেকে নাক দিয়ে ফুলের সুবাস নিচ্ছে । নীলা সুমিকে ডেকে বললো ।

:+ওই সুমি এদিকে আয় ।(নীলা)

সুমি নীলার দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+কি হইছে । তোর জন্য একটু সান্তিতে ফুলের সুবাসও নিতে পারবো না নাকি ।(সুমি)

:+আরে আয় না বেস্টু । লেট হয়ে যাচ্ছে । ৫.২০এর বেসি বাজে । অন্ধকার হয়ে গেলে তো আর বিভিও বানাতে পারবো না ।(নীলা)

নীলা যেখানে ভিবিও বানানোর জন্য ফোন সেটিং করছে সেখানে এসে দারালো সুমি । হঠাৎ সুমির মাথায় একটা বিষয় আসলো । সে নীলাকে বলে উঠলো ।

:+নীলা তুই কি নিদ্র ভাইয়া থেকে পারমিশন নিয়েছিস । তৃপ্তির সাথে ভিডিও বানানোর জন্য ।(সুমি)

:+না কেন ।(নীলা)

:+যদি নিদ্র ভাইয়া তোদের ভিডিও দেখে রেগে যায় ।(সুমি)

:+কিছু হবে না । নিদ্র টিকটক দেখে না । আমি ওর ফোন চেক করছি ।(নীলা)

:+দেখিস ভাই পরে যেন কোন জামেলা না হয় ।(সুমি)

:+কোন জামেলা হবে না । কারন নিদ্র তৃপ্তিকে ঠিক মতো চিনতেই পারবে না । দেখছিস না আম্মু আমাদের চিনতে পারিনি । বোরখা কি পরেছি সাদে নাকি । আর জামেলা হলে সেটা আমি দেখবো তুই ভিডিও করা সুরু কর ।(নীলা)

নীলার কথা সুনে সুমি আর কিছু বললো না । সে ভিডিও করা সুরু করলো । আর নীলা তৃপ্তিকে যেভাবে যেভাবে করতে বলছে । তৃপ্তিও বাধ্য মেয়ের মতো নীলার সাথে সেভাবে সেভাবে করে যাচ্ছে ।
৬টা বাজে…….
নীলার ভিডিও বানানো শেষ হয় । দোলনার উপর বসে ভিডিও টাকে ইডিট করে টিকটকে পোস্ট করে দেয় সে । দোলনার উপর বসে আছে তিনোজনে ।

:+আচ্ছা আপু তুমি এসব করানোর জন্যই কি আমাকে এভাবে সাজালে ।(তৃপ্তি)

:+হুম,,,,,, কেন ।(নীলা)

:+না এমনি জিজ্ঞেস করলাম ।(তৃপ্তি)

:+ওহ আচ্ছা ।(নীলা)

একটু একটু অন্ধকার নেমে আসছে । তৃপ্তি নিচে যেতে চায় । কিন্তু নীলা আর সুমি তাকে নিচে যেতে দিচ্ছে না । তাই বাধ্য হয়েই সে দোলনার উপর নীলা আর সুমির মাজ খানে বসে থাকে । নীলা টিকটক ভিডিও দেখা সুরু করে । তৃপ্তি সে সব ভিডিও দেখে নিচে যাওয়ার কথা ভুলেই যায় । দোলনায় দোল খেতে খেতে,, নীলার ডান হাত জরিয়ে ধরে নীলার ডান কাধে মাথা রেখে টিকটক দেখছে তৃপ্তি । সুমি বসে বসে ফেসবুক চালাচ্ছে ।

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,

(।কপি করা নিষেধ।)

[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দিষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here