তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡 #DcD_দীপ্ত #পর্ব__________21

0
105

#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________21

ভোরে ফোনের এলামের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় নিদ্রর । গা নারা চারা দিয়ে উঠে বসে সে । আজ থেকে নিদ্র নামাজ পড়া শুরু করবে । দিনের শুরুটা তাই নামাজ পড়েই সুরু করতে চায় নিদ্র । ফোনের এলাম অফ করে বেড থেকে নেমে সোজা ওয়াসরুমে চলে যায় । এরপর ফ্রেশ হয়ে নিজ রুম থেকে বেরিয়ে আসলো । নিজ রুম থেকে বেরিয়ে ফরহাদ আহমেদের রুমে চলে যায় নিদ্র । কারন নিদ্র যানে ফরহাদ প্রতিদিন ভোরে মসজিদে নামাজ পড়তে যায় । ফরহাদের সাথে আজ নামাজ পড়তে যাবে নিদ্র । তাই তার আজ এতো ভোরে ঘুম থেকে উঠা । নিদ্র ফরহাদের রুমে গিয়ে দেখে ফরহাদ এখনো ঘুমিয়ে আছে । নিদ্র ফরহাদের পাসে গিয়ে আসতে করে ফরহাদকে ডাক দিলো ।

:+পাপা,,,,,, পাপা ।(নিদ্র)

ফরহাদ একটু নরে চরে উঠলো । আসতে আসতে চোখ খুলে তিনি দেখলেন নিদ্র দারিয়ে আছে তার বেডের পাসে । এটা দেখে তিনি বেশ অবাক হলেন এরপর চট করে উঠে বসলেন তিনি ।

:+কিরে তুই এই রুমে ।(ফরহাদ)

নিদ্র শান্ত গলায় বলে উঠলো ।

:+নামাজ পরতে যাবে না ।(নিদ্র)

ফরহাদ যেন অবাকের উপর অবাক হচ্ছে । নিজে চোখে বিস্বাস করতে পারছেন না তিনি । তিনি কি এটা সত্যি সুনছেন না এটা তার সপ্ন । আজ এতো বছর পর নিদ্র আবার নিজ মুখ দিয়ে নামাজের কথা বের করলো । এটা যেন তিনি বিস্বাসই করতে পারছেন না । নিদ্রর ফ্রেন্ডরা মারা যাওয়ার পর থেকে নিদ্র নামাজ কালাম পড়া বন্ধ করে দিয়েছে । ফরহাদ তার নিজের শরীরে নিজে চিমটি কাটলেন । না এটা তো সত্যি ব্যেথা পেয়েছেন তিনি ।

:+আমি কি এটা সত্যি সুনছি না এটা আমার সপ্ন । তুই সত্যি আমার সামনে দারিয়ে এই কথা বলছিস ।(ফরহাদ)

নিদ্র একটু বিরক্তিকর ভংগিতে বললো ।

:+ধুর,,,,, আমি নিচে তোমার জন্য ওয়েট করছি তুমি তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আসো ।(নিদ্র)

এই বলে ফরহাদের রুম থেকে বেরিয়ে যায় নিদ্র । ফরহাদ কিছুখন নিদ্রর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে । এরপর রুমে থাকা দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকান তিনি । না সময় তো ঠিকই আছে । অতপর বেড থেকে নেমে ওয়াসরুমে চলে যায় ফরহাদ । ফ্রেশ হয়ে নিজ রুম থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি । ফরহাদ কিছু একটা ভেবে নিদ্রর রুমের কাছে চলে যায় । তিনি নিদ্রর রুমের কাছে গিয়ে দেখেন নিদ্রর রুমের দরজা একটু ফাকা । এটা দেখে তিনি বেস অবাক হন তার মানে এটা তার সপ্ন না এটা সত্যি । পুরো ক্লিয়ার হওয়ার জন্য ফরহাদ নিদ্রর রুমের দরজা ফাক করে নিদ্রর বেডের দিকে তাকান দেখেন নিদ্র নেই । এটা দেখে ফরহাদের মুখে হাসি ফুটে উঠে । এরপর তিনি সেখান থেকে সোজা নিচে চলে আসেন । ফরহাদ নিচে এসে দেখেন নিদ্র সোফার উপর মাথা নিচু করে বসে আছে । এটা দেখে তিনি নিদ্রর কাছে চলে আসেন ।

:+কিরে যাবি না নামাজ পড়তে,,,, চল ।(ফরহাদ)

ফরহাদের কথা সুনে বসা থেকে উঠে দারালো নিদ্র ।

:+চলো ।(নিদ্র)

অতপর বাপ ছেলে দুজনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসলো । নিদ্রদের বাড়ি থেকে মিনিট দুই সময় লাগে মসজিদে যেতে । রাস্তার এক পাস দিয়ে হেটে যাচ্ছে নিদ্র আর ফরহাদ । ফরহাদ নিদ্রর উদ্দেশ্য বললো ।

:+আজ হঠাৎ তোর কি হলো বল তো ।(ফরহাদ)

:+কেন ।(নিদ্র)

:+এতো দিন পর তুই ,,,,,,,,।(ফরহাদ)

ফরহাদের মুখের কথা কেরে নিয়ে নিদ্র বলে উঠলো ।

:+আমি যানি পাপা তুমি খুব অবাক হচ্ছো । অবাক হওয়ারই কথা । কিন্তু অবাক হয়ে কোন লাব নেই । কারন আজ থেকে আমি আবার পুনোরায় নামাজ পড়া শুরু করবো । তাই তোমার সাথে আজ মসজিদে যাচ্ছি ।(নিদ্র)

ফরহাদের মুখে হাসি ফুটে উঠলো ।

:+আজ এতো দিন পড় আবার নামাজ পড়া শুরু করছিস । নিশ্চই বেশেস কোন একটা কারন আছে ।(ফরহাদ)

নিদ্র একটু ভেবাচেকা খেয়ে গেল । ফরহাদের দিকে তাকালো সে ।

:+আরে না কিসের কারন থাকবে । কোন কারন নেই । MOM প্রতিদিন বকা যকা করে তাই ভাবছি নামজটা পরা দরকার । তাই,,,,,,,,,,,,,,,,,,,।(নিদ্র)

ফরহাদ নিদ্রকে থামিয়ে বললো ।

:+না কোন তো একটা কারন আছেই । আমি লক্ষ করছি তুই আগে সকাল ১১টায় ঘুম থেকে উঠতি । কিন্তু এখন সকাল ৮টা বাজলেই ঘুম থেকে উঠে পরিস । আবার এখন ভোরে আমাকে ডেকে নামাজে নিয়ে আসলি । নতুন করে আবার নামাজ পড়া সুরু করবি । বিসয়টা কেমন যেন লাকছে । কিছু তো একটা কারন আছেই । (ফরহাদ)

:+ধুর,,,,,পাপা তুমিও না । বললাম তো কোন কারন নেই ।(নিদ্র)

:+হয়েছে মসজিদে এসে গেছি আর কথা না চল ।(ফরহাদ)

এরপর দুজনে মসজিদের ভিতরে চলে গেল ।

প্রতিদিনের মতো আজও আমেনার ঘুম ভেঙ্গে যায় । আসতে আসতে চোখ খুলে একবার চারপাসে চোখ বুলিয়ে নেন তিনি । এরপর তৃপ্তির দিকে তাকায় আমেনা । দেখেন তৃপ্তি তাকে বাচ্চাদের মতো দু’হাত দিয়ে জরিয়ে ধরে এক’পা আমানের গায়ের উপর তুলে দিয়েছে । আমেনার মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠে । তিনি তৃপ্তির কপালে একটা চুমু দিলেন এরপর মাথায় আলতো করে হাত বুলাতে লাগলেন । এভাবে কিছু সময় যাওয়ার পর আমেনা তৃপ্তিকে ডাক দিলেন ।

:+তৃপ্তি,,,,,উঠ মা নামাজ পড়বি না ।(আমেনা)

কিন্তু তৃপ্তির কোন হেল দোল নেই । সে পরম জনতন্ত্র আমেনাকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে । আমেনা একটু জোর গলায় তৃপ্তিকে ডাক দিলে ।

:+তৃপ্তইইইইই ।(আমেনা)

তৃপ্তি এবার একটু নরে চরে উঠলো ।

:+হুমমমমমম ।(তৃপ্তি)

:+উঠ,,, নামাজ পড়বি না ।(আমেনা)

:+পড়বো তো,,,, আগে আরো একটু ঘুমিয়ে নেই ।(তৃপ্তি)

ঘুম জোরালো কন্ঠে বলল তৃপ্তি ।

:+না,,, না এখন আর ঘুম নয় । আগে নামাজ পড়বি তারপর ঘুম,,,, উঠ ।(আমেনা)

এই বলে আমেনা তৃপ্তিকে জোর করে টেনে উঠিয়ে বসালেন । এরপর আমেনা তৃপ্তিকে ওয়াসরুমে দিয়ে । তৃপ্তির রুম থেকে বেরিয়ে আসেন । তৃপ্তির রুম থেকে বেরিয়ে আমেনা বেস অবাক হন । কারন তিনি দেখছেন নিদ্রর রুমের দরজা একটু ফাক করা ।
(((নিদ্রর রুমে সামনা সমানিই তৃপ্তির রুম ।এটা আগেও উল্লেখ করা হচ্ছে । আপনাদের সুবিধাতে আবার মনে করিয়ে দিলাম । এজন্য আমেনার তৃপ্তির রুম থেকে বেরোতেই নিদ্রর রুমের দিকে চোখ পরে যায় ।)))
কোতুহল নিয়ে আমেনা নিদ্রর রুমের দরজা ফাক করে ভিতরে তাকান । দেখেন নিদ্র নেই । এটা দেখে তিনি আরো অবাক হন । ধীর পায়ে রুমের ভিতরে প্রবেশ করেন আমেনা । এরপর রুমটা ভালো করে দেখেন কিন্তু কোথাও নিদ্র নেই । ওয়াসরুম – বারান্দা রুমের সব যায়গা চেক করে আমেনা কিন্তু কোথাও নিদ্রকে পান না তিনি । অতপর বিচলিত হয়ে পরেন আমেনা । নিদ্রর রুম থেকে বেরিয়ে তাড়াতাড়ি নিজ রুমে চলে আসেন তিনি । নিজ রুমে এসে অবাকের শীর্ষ প্রজায় পা দিয়ে ফেলেন আমেনা । কারন তিনি নিজ রুমে এসে দেখেন ফরহাদ নেই । এবার আমেনার বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠে ।

:+কোথায় গেল দুজনে ?(আমেনা)

আনমনেই আমেনার মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে এই রকম কিছু শব্দ । এরপর আমেনা কিছু সময় ভেবে ধীরে ধীরে ওয়াসরুমের ভিতরে চলে যান । ওয়াসরুমের ভিতরে গিয়ে । ওয়াসরুমে থাকা আয়নায় নিজেকে দেখে আরো অবাক হন আমেনা । কারন কোন সময় তার দু’চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরেছে এটা টেরই পায়নি আমেনা । হঠাৎ আমেনার চোখ যায় ওয়াসরুমে থাকা বেসিং এর দিকে । তিনি দেখেন বেসিংএ পানি লেগে আছে । এটা দেখে আমেনার মুখে হাসি ফুটে উঠে । দু’হাতের তালু দিয়ে দু’চোখের পানি মুছে বললে উঠলো আমেনা ।

:+তার মানে ফরহাদ নামাজে গেছে । কিন্তু আমার ছেলে,,,,আমার ছেলে,,,নিদ্র কোথায় গেল । না নিদ্র নিশ্চয়ই ফরহাদের সাথে গেছে ।(আমেনা)

মুখে এই রকম কথা বলে তাড়তাড়ি আজু করে ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে আসেন আমেনা । অতপর নামাজে বসে পরেন তিনি । তৃপ্তি ঘুম ঘুম চোখে নামাজ পড়া শেষ করে আবার ধপাস করে বেডের উপর সুয়ে পরলো ।

নিদ্র আর ফরহাদ নামাজ শেষ করে মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসলো ।

:+যাক ভালোই হলো । প্রতিদিন একা একা এতো ভোরে নামাজে আসতে ভালো লাগতো না । এখন থেকে বাপ বেটা দু’জনে এক সাথে নামাজে আসবো ।(ফরহাদ)

নিদ্র কিছু বললো না ।

:+চল আজ একটু হাটা হাটি করে আসি ।(ফরহাদ)

:+মানে ।(নিদ্র)

:+মানে এখন আমরা দু’জনে,,,,,,,।(ফরহাদ)

ফরহাদের মুখে কথা কেরে নিয়ে নিদ্র বলে উঠলো ।

:+না পাপা আজ না । আজ ভালো লাকছে না । কাল দু’জনে মিলে নামাজ শেষ করে এক সাথে ঘুরবো । আজ ভালো লাকছে না ।(নিদ্র)

:+আরে চল ভালো লাগবে । ভোর বেলায় হাটা হাটি করার মজাই অন্য রকম ।(ফরহাদ)

:+বললাম তো ভালো লাকছে না । ঘুম পাচ্ছে খুব ।(নিদ্র)

ফরহাদ নিদ্রর মুখের দিকে তাকালো । তিনি দেখলেন সত্যি নিদ্র চেহারা অন্য রকম হয়ে গেছে । একটা ঘুম ঘুম ভাব চলে এসছে নিদ্রর মুখের মাজে ।

:+ঠিক আছে চল,,,আজ বাসায় যাই । কাল নাহয় ঘুরবো ।(ফরহাদ)

এরপর দুজনে হাটতে হাটতে বাড়ির কাছে চলে আসলো । অতঃপর দুজনে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলো । নিদ্র আর ফরহাদ বাড়ির ভিতরে এসে দেখলো আমেনা সোফার উপর মাথা নিচু করে বসে আছে । এটা দেখে নিদ্র আর ফরহাদ একে অপরের মুখ দেখা দেখি করলো । এরপর দুজনে আমেনার কাছে আসলো ।

:+কি বেপার তুমি এখান এভাবে বসে আছো কেন ।(ফরহাদ)

ফরহাদের কথা সুনে ফরহাদের দিকে তাকায় আমেনা । ফরহাদের পাসে নিদ্রকে দেখে ফুস করে জোরে একটা নিশ্বাস ছারলেন তিনি । এরপর নিজেকে একটু কন্ট্রোল করে ফরহাদের উদ্দেশ্য বললেন ।

:+কোথায় গিয়ে ছিলে তোমরা দুজন ।(আমেনা)

:+কোথায় আবার নামাজে গিয়ে ছিলাম ।(ফরহাদ)

ফরহাদের কথা সুনে ফরহাদের দিকে তাকায় আমেনা ।
:+ও কোথায় গিয়ে ছিলো ।(আমেনা)

নিদ্রকে উদ্দেশ্য করে বলে আমেনা ।

:+আমার সাথে নামাজে গিয়ে ছিলো ।(ফরহাদ)

কথাটা শুনে নিদ্রর দিকে চোখ বড় বড় করে তাকায় আমেনা । নিদ্র একটা হাসি আমেনাকে উপহার দেয় ।

:+তা কি মনে করে এতো দিন পর নামাজে গেলেন নবাব ।(আমেনা)

নিদ্র হাত দুটো উঁচু করে একবার ডান পাসে আবার বাম পাসে ঘুরে আমেনাকে বললো ।

:+কোন কিছু মনে করে না । আমার প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে আমি গেলাম ।(নিদ্র)

এই বলে সেখান থেকে হাই তুলতে তুলতে চলে গেল নিদ্র নিজের রুমের দিকে ।

:+ছেলেটার কি হলো বলো তো ।(আমেনা)

:+আমিও কিছু বুঝতে পারছি না । আমি ঘুমিয়ে ছিলাম । হঠাৎ ও এসে আমাকে ডেকে নামাজে নিয়ে গেল ।(ফরহাদ)

ফরহাদের কথা সুনে ফরহাদের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকায় আমেনা ।

:+কিহহ । নিদ্র নিজে তোমাকে ডেকে নামাজে নিয়ে গেল ।(আমেনা)

:+হ্যাঁ,,,,যাই হক,,,, এখন যেহেতু ও আবার নামাজ পড়া শুরু করছে । সেহেতু তুমি এখন থেকে ওকে আর কিছু বলবে না ।(ফরহাদ)

আমেনা মাথা যাকালো ।

:+আমারও কেমন যেন ঘুম ঘুম ভাব পাচ্ছে আমিও গেলাম ।(ফরহাদ)

এই বলে ফরহাদ সেখান থেকে নিজের রুমে চলে গেল । আর আমেনা সেখানে ঠাই কিছু সময় দারিয়ে রয় । এরপর কিছুটা খুশি মনে নিজের কাজে লেগে পরেন আমেনা । নিদ্র আবার আগের মতো পুনোরায় সবকিছু করবে এই ভেবে আমেনার খুশি হচ্ছে ।

—————————————

সাকাল ১১টা বাজে………..
নিদ্র চলে গেল বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে । আর ফরহাদ অফিসে । আমেনা কিচেনে রান্না করছেন । তৃপ্তি নিজ রুমে বসে নিদ্রর ফোন দিয়ে গেম খেলছে । নিদ্র ফোন এখন বেসিরভাগ সময়ই তৃপ্তির কাছে থাকে ।

:+আসতে পারি ।(নীলা)

হঠাৎ কারো গলার আওয়াজ শুনে ফোন থেকে মাথা তুলে দরজা দিকে তাকালো তৃপ্তি । দেখলো নীলা দারিয়ে আছে ।

:+আরে আপু আপনি । ভিতরে আসুন ।(তৃপ্তি)

নীলা দরজার পাস থেকে তৃপ্তির বেডের কাছে আসলো । তৃপ্তি শুয়ে ছিল নীলা আসাতেই সে শুয়া থেকে উঠে গোল হয়ে বসলো । নীলা তৃপ্তির বেডের পাসে বসলো ।

:+কি করছিলে ।(নীলা)

:+এই তো গেম খেলছিলাম । কেন কিছু বলবেন আপু ।(তৃপ্তি)

:+না এমনিই আসলাম তোমায় দেখতে । একা একা বাসায় ভালো লাগছিল না । তাই ভাবলাম তোমার সাথে একটু দেখা করে যাই ।(নীলা)

:+কেন,,,,, আপনার কোন ফ্রেন্ড নেই ।(তৃপ্তি)

:+আছে,,,কিন্তু সে সকাল হলেই কাজে চলে যায় আর আসে বিকেল পাঁচ টায় ।(নীলা)

:+ওহ ।(তৃপ্তি)

:+তুমি তো এখানে নতুন ।(নীলা)

:+হুম ।(তৃপ্তি)

ঠোঁট উলটে বললো তৃপ্তি ।

:+চলো আমরা দুজন ফ্রেন্ড হই ।(নীলা)

:+মানে ।(তৃপ্তি)

:+মানে আমরা দুজন আজ থেকে ফ্রেন্ড । তুমি তো এখানে নতুন কাওকে ঠিক মতো চিন না । আর আমারও সময় কাটানোর কোন ফ্রেন্ড নেই । দুজনে ফ্রেন্ড হলে জমবে ভালো । অনেক মজা করতে পারবো ।(নীলা)

:+কিন্তু আপনি তো আমার থেকে বয়সে অনেক বড় ।(তৃপ্তি)

:+বড় হয়েছি তো কি হয়েছে । বড়দের সাথে ফ্রেন্ডসিপ করা যায় না নাকি ।(নীলা)

:+যায় । কিন্তু,,,,,,,,,,,।(তৃপ্তি)

:+আচ্ছা তুমি এবার কিসে পড় ।(নীলা)

:+এবার SSC পরিক্ষায় পাস করে ইন্টারে ভর্তি হইছি ।(তৃপ্তি)

:+তাহলে তো মাত্র পাঁচ বছরের বড় আমি । এটাকে কেও বড় বলে । এর থেকেও বয়সে বড় লোকেদের সাথে ফ্রেন্ডসিপ করা যায় । ফ্রেন্ডসিপ করতে বয়স না মন লাগে বুঝচ্ছো ।(নীলা)

:+ওহ ।(তৃপ্তি)

:+ধুর,,,, বাদ দাও তো । আজ থেকে তুমি আমাকে তুমি করে বলবে । আপনি করে আর বলবে না । কারন আমরা দুজন আজ থেকে ফ্রেন্ড,,,,,,ওকে ।(নীলা)

:+ঠিক আছে ।(তৃপ্তি)

:+এখন এখানে বসে থাকবে নাকি ওন্য কোথাও যাবে ।(নীলা)

:+মানে,,,,কোথায় যাবো ।(তৃপ্তি)

নীলা কিছুখন ভেবে বলে উঠলো ।

:+চলো ছাদে যাই ।(নীলা)

:+না ছাদে যাওয়া যাবে না ।(তৃপ্তি)

:+কেন ।(নীলা)

:+কারন ছাদের দরজায় তালা লাগানো । আর চাবি ভাইয়ার কাছে ।(তৃপ্তি)

:+তো নিয়ে আসো ।(নীলা)

:+কিন্তু ভাইয়া তো বাসায় নেই ।(তৃপ্তি)

:+কোথায় গেছে ।(নীলা)

:+তার বন্ধুদের কাছে গেছে ।(তৃপ্তি)

নীলা কিছু একটা ভাবনার মাজে পরে গেল ।

:+তোমার সাথে যে করেই হোক আমাকে ভাব যমাতেই হবে । তারপর নাহয় ছাদে যাওয়া যাবে । এখন ওন্য একটা প্লেন করতে হবে ।(নীলা)

মনে মনে এসব ভাবতে লাগলো নীলা । নীলার ভাবনা দেখে তৃপ্তি বলো উঠলো ।

:+কি ভাবছেন আপু ।(তৃপ্তি)

:+না কিছু না । ভাবছি এখন কি করা যায় । আর তোমাকে না বলছি আমাকে আপনি করে না বলতে ।(নীলা)

:+ওহ । সরি,,।(তৃপ্তি)

:+ইটস ওঁকে । এরপর থেকে আর আপনি করে বলবে না । চলো তোমাকে আমাদের ফ্যাট ঘুরিয়ে নিয়ে আসি ।(নীলা)

:+এখন যাবো ।(তৃপ্তি)

:+হ্যাঁ,,,,,এখনই চলো ।(নীলা)

:+কিন্তু,,,আচ্ছা ঠিক আছে চলো ।(তৃপ্তি)

এরপর তৃপ্তি আর নীলা তৃপ্তির রুম থেকে বেরিয়ে আসলো ।

:+আপু,,, বড় আম্মুর থেকে বলে আসা দরকার ।(তৃপ্তি)

:+কেন ।(নীলা)

:+ উনি যদি আমাকে পরে খোজ করে না পায় তাহলে অনেক টেনশন করবেন ।(তৃপ্তি)

:+ওহ । এই বড় আম্মু কে ।(নীলা)

:+ বড় আম্মু হচ্ছে নিদ্র ভাইয়ার আম্মু মানে আমার জেঠিমা । আমি উনাকে বড় আম্মু বলে ডাকি ।(তৃপ্তি)

:+তাই ।(নীলা)

:+হুম ।(তৃপ্তি)

:+চলো দুজনে এক সাথে তোমার বড় আম্মু সাথে দেখা করে আসি ।(নীলা)

এই বলে নিচ তলার দিকে হাটা ধরলো দুজনে । টুক টাক কথা বলতে বলতে নিচ তলায় কিচেনের সামনে চলে আসলো তৃপ্তি আর নীলা । আমেনা আপন মনে রান্না করে যাচ্ছেন ।

:+বড় আম্মুউউউউউ ।(তৃপ্তি)

তৃপ্তির গলার আওয়াজ শুনে কিচেনের দরজার দিকে তাকায় আমেনা । তিনি দেখেন তৃপ্তি আর নীলা দারিয়ে আছে ।

:+কি হয়েছে । কিছু লাগবে ।(আমেনা)

:+নাহ ।(তৃপ্তি)

:+তাহলে ।(আমেনা)

:+না মানে আন্টি আমি ওকে আমাদের ফ্যাটে একটু নিয়ে যেতে চাই ।(নীলা)

নীলার কথা সুনে নীলার দিকে তাকায় আমেনা ।

:+কেন ।(আমেনা)

:+এমনি,,,,, একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসি আমাদের ফ্যাট থেকে । ও একা একা রুমের ভিতরে বসে আছে তাই ভাবলাম,,,,,,,,।(নীলা)

:+তৃপ্তি,,,,,,,,।(আমেনা)

:+বড় আম্মু যাই ।(তৃপ্তি)

আমেনা একটু সময় নিয়ে কিছু একটা ভেবে এরপর বললেন ।

:+ঠিক আছে যা । তবে সাবধানে চলা ফেরা করবি ।(আমেনা)

:+আচ্ছা ।(তৃপ্তি)

:+নীলা ওর মাজে একটু বাচ্চা বাচ্চা সভাব আছে । ওকে একটু,,,,,,,,।(আমেনা)

আমেনার কথার মাজ খানেই তৃপ্তি বলে উঠলো ।

:+বড় আম্মু আমি এখন আর বাচ্চা নেই । আমি এখন বড় হয়েছি । ধুর ভালো লাগে না । সবাই সুধু আমাকে বাচ্চা বলে ।(তৃপ্তি)

আমেনা একটু হেসে উঠলেন ।

:+হয়েছে,,,,, আমি বুজতে পারছি তুই বড় হয়োছিস ।(আমেনা)

:+আন্টি আমি আছি । আপনি কোন চিন্তা করবেন না । তৃপ্তি চলো যাই ।(নীলা)

এই বলে তৃপ্তির হাত ধরে কিচেনের সামনে থেকে নিয়ে আসলো নীলা । এরপর দুজনে নিচ তলায় লিফটের কাছে এসে দারালো । লিফটের কাছে আসতেই তৃপ্তি বলে উঠলো ।

:+না,,, না,,, না,,, আপু আমি এটাতে উঠবো না ।(তৃপ্তি)

নীলা একটু অবাক হয়ে বললো ।

:+কেন ।(নীলা)

:+আমার এটার ভিতরে অনেক ভয় করে । চলো আমরা সিরি বেয়ে উপরে উঠবো ।(তৃপ্তি)

এই বলে নীলার হাত ধরে সিরির দিকে টানতে লাগলো তৃপ্তি । নীলা একটু হেসে উঠলো ।

:+আরে বোকা মেয়ে ভয় পাবার কিছু নেই । আমি আছি তো কিছু হবে না ।(নীলা)

:+না,,,,,,।(তৃপ্তি)

তৃপ্তির কথা শেষ হওয়ার আগেই লিফটের দরজা খুলে গেল ।

:+এই তো লিফটের দরজা খুলে গেছে চল ভিতে যাই ।(নীলা)

:+না আমি যাবো না ।(তৃপ্তি)

এই কথা সুনে নীলা তৃপ্তির হাত ধরে টান দিয়ে লিফটের ভিতরে নিয়ে আসলো । লিফটের ভিতরে আসতেই তৃপ্তি খপ করে নীলার কোমর জরিয়ে ধরলো ।

:+প্লিজ আপু চলো আমরা সিরি বেয়ে উপরে উঠি । এটা থেকে প্লিজ নামো ।(তৃপ্তি)

তৃপ্তির কথায় কান না দিয়ে । নীলা লিফটের ভিতরে থাকা পাঁচ তলার সুইচ বাটন চাপ দিলো । সুইচ বাটনে চাপ দিতেই লিফটের দরজা বন্ধ হয়ে গেল । এরপর লিফট একটু যাকুনি দিতেই তৃপ্তি বাবা গো বলে নীলার উপর যাপিয়ে পরলো । নীলা টাল সামলাতে না পেরে লিফটের ভিতরে ধপাস করে বসে পরলো । নীলা বসে আছে আর নীলার গায়ের উপরে তৃপ্তি চুখ মুখ বুঝে নীলাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে আছে । তৃপ্তির এমন কান্ড দেখে নীলা কাদবে না হাসবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না ।

————————————-

:+উআআআআআআআ ।(রনি)

:+কিরে এমন হামি দিচ্ছিস কেন ।(আরিয়ান)

:+একটু চা খাওয়া দরকার । তোর এই গল্প সুনে আমার খুব ঘুম পাচ্ছে ।(রনি)

:+ধুর ।(আরিয়ান)

:+ চল আগে একটু চা খেয়ে আসি তারপর বাকিটা সুনবো ।(রনি)

:+চল । বিল তুই দিবি ।(আরিয়ান)

:+প্রতিদিন তো আমিই দেই । আজ নাহয় তুই দে ।(রনি)

:+আমার এতো ঠেকা পরে নাই । বিল তুই দিবি । (আরিয়ান)

:+ঠিক আছে চল বিল আমিই দিবো । বিয়ে করে খুব কিপটে হয়েগেছিস তুই আরিয়ান ।(রনি)

:+আগে নিজে বিয়ে কর তারপর বুঝবি ঠেলা ।(আরিয়ান)

:+হইছে এখন চল ।(রনি)

:+হুম চলো ।(আরিয়ান)

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,

(।কপি করা নিষেধ।)

[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দিষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here