তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡 #DcD_দীপ্ত #পর্ব__________23

0
106

#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________23

সকাল সারে ১০টা…………..
নিদ্র বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে বন্ধুদের কাছে । আমেনা দৈনিক যেই কাজ করেন সেই কাজ করছেন তিনি । মানে রান্না করার জন্য আয়োজন করছেন । ফরহাদ অফিসে । তৃপ্তি নিচ তলায় সোফার উপর বসে টিভিতে কাটুন দেখছে । হঠাৎ কেও তৃপ্তির হাত থেকে রিমোট’টা টান দিয়ে নিয়ে নিলো । এরপর টিভি’টা অফ করে দিলো । তৃপ্তি দাত কটমট করে পাসে তাকালো । দেখলো নীলা তার পাসে বসে তার দিকে তাকিয়ে আছে । তৃপ্তি এক গাল হেসে বলে উঠলো ।

:+আরে আপু তুমি,,,,,,, কখন এলে ।(তৃপ্তি)

নীলা বসা থেকে দারিয়ে বললো ।

:+আসেছি তো অনেক খন হয়ে গেছে ।(নীলা)

:+ওহ,,সরি । টিভি দেখছিলাম তাই বুঝতে পারিনি ।(তৃপ্তি)

:+এভাবে টিভির দিকে তাকিয়ে থাকলে বুঝবে কি করে ।(নীলা)

তৃপ্তি ঠোঁট উলটে মুখে আওয়াজ করলো ।

:+হুমমমমমম ।(তৃপ্তি)

:+চলো তোমার রুমের দিকে যাই ।(নীলা)

:+আচ্ছা চলো ।(তৃপ্তি)

এই বলে বসা থেকে উঠে নিজের রুমের দিকে হাটা ধরলো তৃপ্তি । তৃপ্তির পাসে হাটতে লাগলো নীলা । এরপর দুজনে টুকটাক কথা বলতে বলতে দোতলায় রুমে আসলো । দুজনে গিয়ে বেডের উপর বসলো ।

:+এবার বলো । আমার সাথে ফ্রেন্ড হয়ে তোমার কেমন লাকছে সুইটি ।(নীলা)

:+আপু তোমাকে না বলছি আমাকে সুইটি বলে ডাকবে না ।(তৃপ্তি)

:+কেন,,,, সুইটি বলে ডাকলে সমস্যা কি ।(নীলা)

:+আমার নাম ছারা । আমাকে যদি কেও ওন্য নামে ডাকে তাহলে আমার অনেক আনিজি ফিল হয় । বিরক্ত লাগে । এই কথা আমি আর কতো বার বলবো তোমায় ।(তৃপ্তি)

:+বিরক্ত লাগুক আর যাই লাগুক আমি তো সুইটি বলেই ডাকবো ।(নীলা)

:+ধুর ।(তৃপ্তি)

:+বলতে বলছি না আমার সাথে ফ্রেন্ড হয়ে তোমার কেমন লাকছে ।(নীলা)

:+তোমার সাথে ফ্রেন্ড হয়ে আমার অনেক ভালো লাকছে । কিন্তু তুমি সুধু সুইটি বলে ডাকো আমায় । আমার ভালো লাগে না । আমি এতো টাও দেখতে সুইট না ওকে ।(তৃপ্তি)

গাল ফুলিয়ে নীলার থেকে মুখ সরিয়ে ওন্য দিকে তাকিয়ে বলে তৃপ্তি । নীলা তৃপ্তির কাছে এসে তৃপ্তির দু’গালে নিজের দু’হাত দিয়ে একটু এদিক সেদিক টানতে টানতে বললো ।

:+তুমি অনেক সুইট,,,,,, সুইটি । তাই তো তোমায় সুইটি বলে ডাকি । আর তুমি যাতই রাগ করো না কেন । তোমাকে তো আমি সুইটি বলেই ডাকবো । রাগ করলেও তোমাকে অনেক সুইট লাগে,,,,,,,,সুইটি ।(নীলা)

তৃপ্তি আর কিছু বললো না । সে বুঝে গেছে নীলাকে বলে আর কোন লাভ হবে না । এই কয়দিনে সে নীলাকে অনেক বার বারন করছে সুইটি বলে না ডাকার জন্য, কিন্তু নীলা সুনেনি । নীলা তাকে সুইটি বলেই ডাকবে বলে জ্জিমি ধরছে । নীলা তৃপ্তির গাল থেকে হাত নামিয়ে বললো ।

:+আচ্ছা এসব এখন বাদ । এখন বলো কাজ হয়েছে ।(নীলা)

তৃপ্তি নীলার দিকে কিছুটা অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো ।

:+কিসের কাজ ।(তৃপ্তি)

:+আরে আমাদের ছাদে উঠার । ভুলে গেছো ।(নীলা)

:+ওহ সেট,,, আমি তো ভুলেই গেছি তোমাকে বলতে ।(তৃপ্তি)

নীলা কিছুটা ভেবা ছেকা খেয়ে গেলো । প্রশ্ন বোধক দৃষ্টিতে তাকালো তৃপ্তি দিকে, এরপর বললো ।

:+কি বলতে ভুলে গেছো ।(নীলা)

তৃপ্তি মুখে হাসি এনে কিছুটা চিৎকার করে বললো ।

:+ছাদের চাবি পেয়ে গেছি ।(তৃপ্তি)

কথা’টা সুনে নীলা তৃপ্তির হাত ধরে খুশিতে ডগমগ করতে করতে বলে উঠলো ।

:+সত্যি বলছিস । ছাদের চাবি নিদ্র দিয়েছে ।(নীলা)

:+হ্যাঁ,,,, আমি সত্যি বলছি । কাল রাতে আমি ভাইয়ার থেকে ছাদের চাবি নিয়ে নিয়েছি । দারাও তোমাকে দেখাচ্ছি ।(তৃপ্তি)

এই বলে বেড থেকে নেমে ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে ছাদের চাবি’টা বের করলো তৃপ্তি । এরপর আবার বেডের কাছে আসলো । তৃপ্তি নীলার সামনে ছাদের চাবি’টা ধরে বললো ।

:+এই দেখো,,,,,, এই যে চাবি ।(তৃপ্তি)

নীলা চাবি’টা দেখে নিজের কোমর থেকে ফোন বের করে একটা DJ গান প্লে করে, ফোনের ফুল সাউন্ড দিয়ে দিলো । এরপর তৃপ্তিকে ধরে উরা ধুরা নাচ সুরু করে দিলো নীলা । তৃপ্তি খিলখিলিয়ে হাসতে লাগলো । নীলার সাথে তাল মিলিয়ে এরপর সেও নাচতে লাগলো । কিছুখন নাচা নাচি করে হাপিয়ে গেল দু’জনে । পুরো শরীর ঘামে ভিজে চেপচেপা হয়ে গেছে দু’জনের । নীলা হাঁপাতে হাঁপাতে চিত হয়ে ধপাস করে তৃপ্তির বেডের উপর সুয়ে পরলো । তৃপ্তিরও একই অবস্থা সেও জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে নিতে দু’হাত দু’দিকে প্রসারিত করে, বেডের উপর চিত হয়ে ধপাস করে সুয়ে পরলো নীলার পাসে । নীলার চোখ বেডের পাসে যেতেই দেখলো এসি রিমোট । সে হাত বারিয়ে রিমোটা নিয়ে এসি’টা একটু বারিয়ে দিলো । এরপর দু’জনে চুপচাপ কিছু সময় কাটালো । দু’জনের সুধু শ্বাস নেওয়ার শব্দ শুনা যাচ্ছে । নিরবতা ভেঙে হাফাতে হাফাতে তৃপ্তি বলে উঠলো ।

:+এখন কি ছাদে যাবে আপু ।(তৃপ্তি)

তৃপ্তির কথা সুনে তৃপ্তির দিকে মাথা কাত করে তাকালো নীলা । দেখল তৃপ্তি তার দিকে তাকিয়ে এই কথা বলছে । নীলা একটু হেসে তৃপ্তিকে বললো ।

:+না,,,, এখন ছাদে যাবো না ।(নীলা)

তৃপ্তি কিছু’টা অবাক হলো । এতোদিন ছাদে যাওয়ার জন্য নীলা তৃপ্তিকে জালিয়ে মেরেছে । আর এখন সেই বলছে ছাদে যাবে না ।

:+কেন,,,, ছাদে যাবে না কেন ।(তৃপ্তি)

:+আরে বোকা,,, ছাদে এখন প্রছন্ড রোদ । রুমের ভিতরেই থাকতে পারছিনা গরমে । আর ছাদে গেলে তো মরেই যাবো ।(নীলা)

:+ওহ,,,এই বেপার,,,,,, তাহলে কখন যাবে ।(তৃপ্তি)

:+বিকেলে যাবো । এখন তো ছাদের চাবি আমাদের কাছেই । বিকেলে রোদ পড়া কমবে তখন তোকে নিয়ে ছাদে যাবো ।,,,,,,,,,,ওহ সরি তুই করে বলে ফেলছি তোমাকে ।(নীলা)

:+আরে আপু সমস্যা নেই । তুমি আমার বড়, তাই তুমি আমাকে তুই করে বলতে পারো ।(তৃপ্তি)

নীলা তার বাম হাত দিয়ে তৃপ্তির ডান গাল একটু টেনে বললো ।

:+এজন্যই আমার তোমাকে খুব ভালো লাগে সুইটি । তাহলে এখন থেকে আমি তোমাকে তুই করে বলবো ওকে । রাগ করবে না তো ।(নীলা)

:+আরে না,,,,, রাগ করবো না । তুমি ডাকতে পারো । কোন সমস্যা নেই ।(তৃপ্তি)

এভাবে আরো অনেক কথা বলতে লাগলো নীলা আর তৃপ্তি । পুরো গল্প জুরে দিয়েছে দু’জনে । তৃপ্তি তার গ্রামের রাড়ির সব বিবরন দিচ্ছে । আর নীলা সুনে সুনে সেই গ্রমের উপর ক্রাস খাচ্ছে । আমেনা একবার এসে তৃপ্তির রুমের দরজার পাস থেকে দেখে গিয়েছিল দু’জনকে ।


নিদ্র বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে, সোজা ক্লাবে চলে যায় । ক্লাবে গিয়ে দেখে জেক চোখ বুঝে চেয়ারে চিত হয়ে সুয়ে আছে সুজনের কোলে । আর সুজন জেকের দাড়ি গুলোতে ধিরে ধিরে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে । রাহুল + সাব্বির + রাশেদ বসে বসে কি নিয়ে যেন কথা বলছে । ক্লাবের সামনে কাচের দেয়াল থাকায়, বাহির থেকে সব দেখা যায় ভিতরে কি হচ্ছে । নিদ্র বাইক ক্লাবের সামনে পার্ক করে ক্লাবের ভিতরে প্রবেশ করে । ক্লাবের ভিতরে এসে নিদ্র শুনতে পেল রাহুল বলছে ।

:+আরো কয়দিন থেকে যা । ওখানে গিয়ে তোরা এখন কি করবি । আংকেলদের তো আর হেল্প করবি না । টো টো করে ঘুরে বেরাবি ।(রাহুল)

:+দেখ রাহুল এখানে এসছি আজ ৩ মাস হয়ে গেছে । ডেড অনেক রাগা রাগি করছে চলে যাওয়ার জন্য ।(রাশেদ)

:+হ্যাঁ,,,, আমার আব্বুও অনেক রাগা রাগি করছে ।(সাব্বির)

নিদ্র কথা গুলো শুনে বলে উঠলো ।

:+কি হচ্ছে এখানে । কে কোথায় যাবে ।(নিদ্র)

নিদ্র উপস্থিতি এতোখন টের পায়নি রাহুল + সাব্বির + রাশেদ । সাথে সুজন এবং জেকও । নিদ্রর কথা শুনে জেকের দাড়িতে হাত বুলানো বন্ধ করে দেয় সুজন । এরপর সবাই নিদ্রর দিকে তাকায় । সুধু জেক ছারা কারন জেক এতোখনে ঘুমিয়ে গেছে । ওরা সবাই নিদ্রর দিকে তাকিয়ে আছে দেখে নিদ্র বললো ।

:+আমি কি মঙ্গল গ্রহের এলিয়েন, যে আমার দিকে এমন করে তাকিয়ে আছিস ।(নিদ্র)

নিদ্র কথা শুনে নিদ্রর থেকে চোখ নামিয়ে নেয় সবাই । রাহুল মাথা চুলকাতে চুলকাতে নিদ্রর উদ্দেশ্য বললো ।

:+কাল রাতে মেয়ে’টা কে ছিলরে নিদ্র ।(রাহুল)

হঠাৎ রাহুল এই প্রশ্ন করায় । নিদ্র এই কথার উওরে কি বলবে বুঝতে পারছে না । তবে এটা বেশ বুঝতে পারছে কাল রাতের কথা রাহুল সবাইকে বলে দিয়েছে । তাই তো সবাই নিদ্রর দিকে এমন করে তাকিয়ে ছিল । তৃপ্তির কথা এখনো এদের যানায়’নি নিদ্র । নিদ্র কোন কথা বলছে না দেখে ওরা আবার নিদ্রর দিকে তাকালো । দেখল নিদ্র কি যেন ভাবছে । এবার সাব্বির বলে উঠলো ।

:+আসলে বেপার’টা কি বল তো । কাল রাতে তুই যখন রাহুলের সাথে কথা বলছিলি তখন নাকি রাহুল কোন মেয়ের গলার আওয়াজ শুনতে পায় । তোর সাথে তখন কে ছিল ।(সাব্বির)

:+হ্যাঁ,,,,বল ।(রাহুল)

নিদ্র চোখ বুঝে জোরে একটা নিশ্বাস নিয়ে ওদের পাসে একটা চেয়ার টেনে বসলো । রাশেদ আর সুজন সুধু তাকিয়ে আছে নিদ্রর দিকে ।

:+আমার চাচা তো বোন তৃপ্তি । আমি যেদিন গ্রাম থেকে ঢাকায় আসি । ওই দিনই ওকে আমি আমার সাথে করে নিয়ে আসি । এখানে আদিদের কলেজে ভর্তি করিয়ে দিয়েছি ওকে । ও এবার ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে । এখন থেকে ঢাকাই থাকবে ও ।(নিদ্র)

:+এতো দিন আমাদের এই কথা কেন বলিস’নি ।(রাশেদ)

:+বলিনি কারন,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,।(নিদ্র)

নিদ্রকে থামিয়ে রাহুল বলে উঠলো ।

:+আরে বাদ দে । কারন বলতে হবে না তোকে । যতদুর বলেছিস ততদুরই এনাপ । এখন বল ও সিঙ্গেল আছে তো । ও দেখতে কেমন । ওর হাসি’টা শুনে আমি ফিট হয়ে গেছি মামা । আমার সাথে রিলেশন করিয়ে দে না ।(রাহুল)

রাহুলের কথা সুনে মাথা গরম হয়ে যায় নিদ্রর । ঠাসস করে একরা চড় বসিয়ে দেয় নিদ্র রাহুলের গালে । রাহুল নিজের গাল ডলতে ডলতে বললো ।

:+মারলি কেন আমি কি কিছু ভুল বল্লাম । ওতো তোর চাচা তো বোন হয় । আমার সাথে রিলেশনে গেলে কি হবে । আমি কি খারাপ ছেলে ।(রাহুল)

নিদ্র এবার রাহুলের আরেক’টা গালে চড় মারে । রাহুল সুধু গালে হাত দিয়ে নিদ্রর দিকে হাবলার মতো তাকিয়ে আছে । নিদ্রর চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে । কপালের রগ টান টান হয়ে দারিয়ে গেছে । রাহুল দেখে ভিতরে ভিতরে একটু ভয় পেয়ে যায় । শুকনো একটা ঢোক গিলে সে । কিন্তু নিদ্রর রাগ হলো কেন রাহুল সেটা বুঝতে পারছে না । সাব্বির + সুজন + আর রাশেদ সুধু তাকিয়ে আছে । নিদ্র রাহুলের গাল থেকে রাহুলের হাত সরিয়ে । নিজের বাম হাত দিয়ে রাহুলে থুতনি চেপে ধরে মুখের কাছে মুখ নিয়ে রাহুলের চোখে চোখ রেখে বললো ।

:+ও সুধু আমার । ওর দিকে যে চোখ তুলে তাকাবে,,, তার চোখ আমি চিরো দিনের জন্য তুলে ফেলবো । আমার জানের দিকে যে চোখ দিবে,, তার চোখ আমি তুলে ফেলবো,,, মনে রাখিস ।(নিদ্র)

এই বলে রাহুলের থুতনি ছেরে দিয়ে উঠে দারালো নিদ্র । হন হন করে সেখান থেকে ক্লাবের ভিতরে থাকা একটা রুমের ভিতরে চলে আসলো নিদ্র । রাহুল সুধু হবলার মতো তাকিয়ে ছিল নিদ্রর দিকে । সাব্বির + রাশেদ + সুজন তো নিদ্রর কথা সুনে অবাক । সবাই একটু ভাবনার মাজে পরে গেল । জেক সুধু পরে পরে ঘুমাচ্ছে সুজনের কোলে । রাহুল নিজের দু’গালে আবার দু’হাত রেখে বলে উঠলো ।

:+কি হলো এটা । ও এমন রেগে গেল কেন ।(রাহুল)

রাহুলের কথা সুনে ভাবনার যগত থেকে বেরিয়ে আসলো সবাই ।

:+তার মানে নিদ্র ওর চাচা তো বোনকে ভালোবাসে ।(সাব্বির)

:+না এটা কি করে সম্ভব । ও তো,,,,,,,, নিদ্রর চাচা তো বোন হয় । চাচ তো বোনকে কেও ভালোবাসে নাকি ।(রাহুল)

:+এখন চাচা তো বোনের সাথে বিয়ে হয় বুঝলি । চাচা তো বোনের সাথে প্রেমও করা যায় ।(রাশেদ)

:+আরে গাধা নিদ্র যদি ওই মেয়েকে ভালোই না বাসতো । তাহলে কি তোকে এভাবে চড় মারতো । বা তোর থুতনি চেপে ধরতো ।(সাব্বির)

সুজন জেককে নিজের কোল থেকে ধাক্কা মেরে বলে উঠলো ।

:+যদি ভালোই না বাসে তাহলে জানই বা বলবে কেন । আর “ও সুধু আমার” এই কথা টাই বা বলবে কেন ।(সুজন)

সুজন জেককে ধাক্কা মারায় জেক চেয়ার এবং সুজনের কোল থেকে ফ্লোরে পরে যায় । পরেই চিৎকার করে উঠলো জেক ।

:+বাবা গো আমার কোমর’টা ভেঙে গেলো গো ।(জেক)

নিদ্র রাগ দেখিয়ে ওখান থেকে চলে আসে ক্লাবের একটা রুমে । এখানে এসে নিদ্র রুমে থাকা ফেন’টা জোরে চালিয়ে তার নিচে দারিয়ে রয় । নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেস্টা করে নিদ্র । এভাবে কিছু সময় যাওয়ার পর হঠাৎ জেকের চিৎকার ভেসে এলো নিদ্রর কানে । নিদ্র তাড়াতাড়ি রুম থেকে বেরিয়ে দেখে জেক ফ্লোরে পরে আছে । সুজন দারিয়ে আছে তার পাসে । আর সবাই আগের মতোই বসে ছিল । সুজন তাড়াতাড়ি জেককে ধরে উঠিয়ে বসায় । জেক সুজনের পায়ে একটা চড় মেরে বললো ।

:+সালা,,,,, তোর কোলে সুতে দিবি না এটা আগেই বলতি । এভাবে ফেলে দিলি কেন ।(জেক)

:+সরি দোস্ত,,,,,,। আমি আসলে,,,,,,,,,।(সুজন)

:+রাখ তোর সরি । আম্মা গো তোমার ছেলের কোমর ভেঙে গেলো গো ।(জেক)

নিদ্রর এদের এমন কাহিনি এখন সজ্জ হচ্ছিল না । তাই সে আবার রুমের ভিতরে চলে যায় । আর এদিকে জেক কোমরে হাত রেখে সুজনের বোনকে একশ বার বিয়ে করছে আর একশ বার তালাক দিচ্ছে ।

:+সালা,,,, তোর বোনরে আমি বিয়া করমু না বলে দিস তুই তোর বোনরে । আর যাতে আমাকে কল না করে ।(জেক)

আসলে সুজনের ছোট বোনের সাথে রিলেশন চলছে জেকের । একবার লন্ডন থেকে সুজনের সাথে দেশে ঘুরতে আসে সুজনের বোন সাথি । তখন জেককে দেখে তার প্রছন্দ হয়ে যায় । আর সাত পাচ না ভেবে জেককে সোজা সাপটা প্রপোজ করে দেয় সাথি । জেক প্রথমে না করে দেয় কারন সুজনের সাথে বন্ধুত্ব ভেঙে যাবে এই ভয়ে । পরে সাথি অনেক পাগলামি সুরু করে দেয় । সুজনকে জেকের বেপারে বলে সাথি । কিন্তু সুজনও না করে দেয় । সুজন না করাতে সাথি তখন আরো বেশি পাগলামি সুরু করে । জেকের জন্য পুরো মরিয়া হয়ে উঠে ছিল সাথি । বোনের এমন পগলামি আর সজ্জ করতে না পেরে সুজন শেষ মেষ জেকের কাছে এসে মিনতি করে তার বোনের সাথে রিলেশন করার জন্য । সেদিন আর জেক ফিরিয়ে দিতে পারেনি সুজন এবং সাথিকে । বুকে টেনে নিয়েছে সেদিন সাথিকে জেক । সুজন আবার চেয়ারে বসে বললো ।

:+সর সালা,,,,,, আমার বোনরে তোর কাছে বিয়ে দিতে আমার বয়েই গেছে ।(সুজন)

:+হ্যাঁ,,,,এখন তো এই কথা বলবিই । কারন আমি এখন ফেসে গেছি তো,,,,, তাই ।(জেক)

:+প্রথমে তো আমার বোনের সাথে রিলেশন করতে চাই ছিলি না । কতো কষ্ট পেয়েছে আমার পিচ্চি বোন’টা । আর এখন,,,, আচ্ছা বাদ দে । তোর মতো দাড়ি ওয়ালা হুজুরের কাছে আমি আমার বোনের বিয়া দিমু না ।(সুজন)

:+দাড়ি রাখা ভালো । পুরো সাউদের হিরোদের মতো দেখায় । আর তোর বোন তো এই দাড়ির জন্যই আমার প্রেমে পরছে । আচ্ছা আমিও বাদ দিলাম,, তুই যদি তোর বোনকে আটকে রাখতে পারিস তাহলে আমি কিছু কমু না ।(জেক)

:+আমি আমার বোনরে ঠিকই আটকিয়ে,,,,,,,,।(সুজন)

সুজন আর কিছু বলার আগে রাহুল একটু জোর গলায় বলে উঠলো ।

:+ওই তোরা কি সুরু করলি,,, চুপ করবি তোরা ।(রাহুল)

এতোখন জেক খেয়াল করেনি রাহুলের দিকে । তাই রাহুল কথা বলতেই জেক তাকায় রাহুলের দিকে । তাকিয়ে দেখে রাহুলের দু’গাল লাল হয়ে আছে । কোতুহল নিয়ে জেক রাহুলকে বললো ।

:+ রাহুল তোর গালে কি হয়েছে রে ।(জেক)

রাহুল আবার নিজের দু’গালে হাত রেখে বলে উঠলো ।

:+দোস্ত তাড়াতাড়ি বরফের বেবস্তা কর গাল দু’টো জ্বলে যাচ্ছে ।(রাহুল)

জেক সুজনের পায়ের কাছে বসলো । এরপর সুজনের হাটুর উপর তার ডান হাতের কনুই রেখে বললো ।

:+আমি কিছু বুঝতে পারছি না । তোর গালে কি হয়েছে ।(জেক)

জেকের কথায় পাত্তা না দিয়ে সাব্বির রাশেদকে বললো ।

:+যা তো রাশেদ,,,,,, ফাহাদ ভাইয়ে দোকানের ফ্রিজ থেকে কিছু বরফ নিয়ে আয় ।(সাব্বির)

রাশেদ কোন কথা না বলে বসা থেকে উঠে চলে গেল । জেক এবার একটু রাগ দেখিয়ে বললো ।

:+তোরা বলবি কি হয়েছে ।(জেক)

:+কি হয়েছে সুনবি । তাহলে শুন ।(সুজন)

এরপর সুজন জেককে একটু আগের সব কথা বললো । জেক কথা গুলো শুনে তো অবাক ।

:+কি নিদ্র ওর চাচা তো বোনের প্রেমে হাবু ডুবু খাচ্ছে ।(জেক)

:+এখনো পুরো ক্লিয়ার না আমি । “জান” আর “ও সুধু আমার” এই কথা গুলো বলছে নিদ্র । তাই আমরা সবাই ভেবে নিয়েছি নিদ্র ওর চাচা তো বোনকে ভালোবাসে ।(সুজন)

:+কিন্তু নিদ্র এটা ঠিক করেনি । রাহুল তো আর যনতো না নিদ্র ওকে ভালোবাসে । দারা সালার একটা বেবস্তা করে আসি ।(জেক)

এই বলে বসা থেকে উঠে নিদ্র যেই রুমে গেছে সেই রুমের দিকে হাটা ধরলো জেক । অতপর রুমের দরজার কাছে এসে দারালো সে । রুমের দরজা একটু ফাক করে ভিতরে তাকালো জেক । সাব্বির + রাহুল + সুজন চুপ করে জেকের দিকে তাকিয়ে আছে । জেক ভিতরে তাকিয়ে দেখলো নিদ্র উলটো দিকে ঘুরে দারিয়ে আছে । আর রুমের ভিতরে ফেন’টা সা সা করে বাতাসের গতিতে ঘুরছে । রুমের ভিতরে থাকা ছোট কাগজের টুকরো গুলো বাতাসের সাথে উরছে । জেক রুমের ভিতরের দিকে পা বারাতেই সুজন পিছন থেকে বলে উঠলো ।

:+জেক যাস না এখন । ওর মাথা এখন ঠিক নেই । ওর মাথা ঠান্ডা হোক তারপর এই বিষয়ে কথা বলবো ।(সুজন)

কে শুনে কার কথা । সুজনের কথায় কান না দিয়ে জেক রুমের ভিতরে চলে গেল । সাব্বির নিজের মাথা’টা একটু এদিক সেদিক নারিয়ে বললো ।

:+সালা এখন দু’টো চড় নিরঘাত খাবে ।(সাব্বির)

বলতে দেরি দু’গালে দু’হাত রেখে রুম থেকে বেরিয়ে আসতে দেরি হলো না জেকের । এমন সময় রাশেদও বরফ নিয়ে হাজির । জেক রাশেদের হাতে বরফ দেখে তাড়াতাড়ি রাশেদ কাছে এসে তার হাত থেকে কয়েক টুকরো বরফ নিয়ে নিজের গালে ডলতে লাগলো । রাহুলও রাশেদের হাত থেকে বরফ নিয়ে নিজের গালে ডলতে লাগলো । রাশেদ জেকের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললো ।

:+কিরে তোর গালে আবার কি হলো ।(রাশেদ)

:+কথা বলিস না দোস্ত । আগুনের ছ্যাক লাকছে ।(জেক)

রাহুল জেকের দিকে তাকিয়ে একটা বাকা হাসি দিয়ে বললো ।

:+আইচে বেবস্তা করতে । এখন নিজেই বেবস্তা নিচ্ছে ।(রাহুল)

:+ওযে এই বেপাসে এতোটা সিরিয়াস হবে এটা আমি ভাবতেও পারি নাই ।(জেক)

:+আমি তো তোকে বারন করে ছিলাম এখন না যেতে । শুনলি না কেন ।(সুজন)

:+আচ্ছা জেক কি হয়েছে বলতো । তুই ওর কাছে গিয়ে কি বলছিস । যার কারনে ও তোকে মারলো ।(সাব্বির)

জেক গালে বরফ ডলতে ডলতে বললো ।

:+আমি ওর কাছে গিয়ে বল্লাম । দেখ নিদ্র এটা তুই ঠিক করিসনি । রাহুল তো আর যানতো না যে তোর চাচা তো বোনকে তুই ভালোবাসিশ । এখন যেহেতু রাহুল ওকে পছন্দ করে ফেলছে । সেহেতু তুই তোর চাচা তো বোনকে রাহুলের হাতে তুলে দে । এটা বলতে দেরি ভাই । এরপর ও আমার দিকে ঘুরে আমাকে ঠাস ঠাস করে দু’টো চড় বসিয়ে দিলো ।(জেক)

জেকের কথা সুনে জেকের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো সবাই ।

:+তোকে বললাম এখন ওর মাথা গরম আছে । তারপরও তুই ওর সাথে ফান করতে গেলি । এখন আরো গরম করে দিয়ে এসছিস তুই ওকে । ওতো তোকে দু’টো চড় মারছে । আমি হলে আরো চার’টা মারতাম ।(সুজন)

:+সমন্দি বাবু আপনি এটা বলতে পারলেন । আপনার বোন সুনলে খুব কষ্ট পাবে সমন্দি বাবু ।(জেক)

:+ধুর সালা,,,,, রাখ তোর সমন্দি । তোর কাছে আমি আমার বোনের বিয়াই দিমু না ।(সুজন)

এদের এমন কথা বার্তায় রাশেদ একটু বিরক্তি হয়ে বললো ।

:+ওই তোরা চুপ করবি ।(রাশেদ)

:+আচ্ছা রাশেদ এই নে টাকা । যা গিয়ে চার’টা কোলড্রিংস নিয়ে আয় ।(সাব্বির)

রাশেদের দিকে টাকা বারিয়ে বললো সাব্বির ।

:+চার’টা কেন আমরা তো পাচ জন ।(রাশেদ)

:+নিদ্র এখন খাবে না । ওর এখন মাথা গরম আছে ।(সাব্বির)

:+আমি এখন আর যেতে পারবো না । তুই পারলে যা ।(রাশেদ)

:+আরে যা না ।(সুজন)

:+পারলে তুই যা আমি আর এখন যেতে পারবো না । এই আমি বসলাম ।(রাশেদ)

এই বলে রাশেদ বসে পরলো । আর সুজন উঠে একটু রাগ দেখিয়ে সাব্বিরের হাত থেকে টাকা নিয়ে ক্লাব থেকে বেরিয়ে গেল ।

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,

(।কপি করা নিষেধ।)

[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দিষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here