বন্ধ দরজায় তুমি🖤পর্ব-৫

0
1359

#বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤
#Written_By_Mêhèriyâr_Mêhèr
#Part: 04…

— প্লিজ যেতে দিন। [ চোখ বন্ধ করে তীব্রকে কিল ঘুশি মারতে থাকে ]

মুহুর্তেই তীব্রের রাগটা বেড়ে গেল। ও তুরকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে যাতে তুর নড়তেও না পারে। তারপর ওর উন্মুক্ত কাধে খুব গভীরভাবেই চুমো আকে…. তুরের মনে হলো কোন জোক ওর রক্ত শুষে নিতে চাচ্ছে। জায়গায়টায় হয়ত রক্ত জমাট বেধে যাবে। তুরের বন্ধ চোখ গুলো রসগোল্লার মত বড় বড় হয়ে যায়। নিজের ছটফটানি থামিয়ে শান্ত কচ্ছপের মত দাড়িয়ে রইল। ওকে শান্ত হতে দেখে তীব্রের রাগটা ক্রমশ বেড়ে গেল। তীব্র কাধ থেকে সরে তুরের গলার ক্ষানিকটা নিচে নেমে বেশ সফটলি একটা হার্ড বাইট করে। তীব্র তুরের মুখ চেপে ধরার কারনে তুর চিতকার করতে পারে না শুধু চোখ দিয়ে অনর্গল পানি পরতে থাকে। তীব্র বাইটটা যতটা সফটলি করেছে তার ফিলিংসটা ততটাই হার্ড। মুহুর্তের মাঝেই লাল হয়ে গেছে জায়গাটা। তীব্র তুরের মুখ চেপে ধরা অবস্থাতেই বলল….

— আর কোনোদিন যেন আমাকে টাচ করার মত ভুল করো না। তোমাকে আমি স্পর্শ করতেই পারি কিন্তু আমাকে টাচ করার দুঃসাহস ও করো না।

তুরের ভেজা চুল গুলোকে নিজের মুঠোয় পুড়ে। ভেজা চুলের ব্যাথাটা বড়াবড় বেশি।কিন্তু শব্দ করতে পারে না। তীব্র মুখ চেপে তার উপায় রাখেনি। তুরের কান্নায় ধম বন্ধ হয়ে আসছে। এটা দেখে তুরকে ছেড়ে দিতেই ও কাদতে থাকে। রাগটা আরো বেড়ে যায় তীব্রের।

— কান্নার খুব শখ তাই না। ওকে….

বলেই তুরকে ধাক্কা মারে। তীব্রের ধাক্কায় তুর পানি ভর্তি বাথটবে পরে যায়। বাথটবে পরেই তুর আগে এক চোট নাকানিচুবানি দিয়ে পানি খায়। কোনোমতে নিজেকে সামলে উঠতে নিলেই তীব্র বাথটবের কাছে গিয়ে হাটু গেড়ে বসে পরে। তুর ওখান থেকে উঠতে চাইলে তীব্র তা হতে দেয় না। বরং বাথটবে পানি ভরে তুরকে ওখানেই আটকে রাখে। ওর রাগী চোখের চাওনীতে ভয়ে সেই পানির মধেই চুপটি মেরে কতক্ষন বসে থাকে তুর তা ও নিজেও জানে না। আর শাওয়ারের পানির নিচে বসে তীব্র বাথটবে তুরকে দেখতে থাকে। দুজনেই পানির মধ্যে বসে আছে একজন অনিচ্ছায় করে আরেকজন সেচ্ছায়। এভাবে থাকতে থাকতে একসময় তীব্র বুঝতে পারে তুর কাপছে শীতে। ও তুরের গালে নিজের হাত দিতেই দেখে পুরো শরীর ঠান্ডা হয়ে আসছে।

— কিহল শীতে লাগছে?

মাথা নাড়ায় তুর।

— ভয় পেয়েছ….

তুর চুপ করে রয়েছে।

— কিহল ভয় পেয়েছ?

তুরকে কোনো কথা বলতে না দেখে বুঝল ও ভয় পেয়েছে। তুর ভয় পেয়েছে ভেবে হালকা হাসল তীব্র। তুর কিছু বোঝার সুযোগ না দিয়েই ওকে কোলে তুলে নেয়। তুর ওকে ধরতে গিয়েও ধরে না। ব্যাপারটা বুঝলেও কোনো ইয়াত্তা না দিয়েই রুমে চলে গেল। একটা তোয়ালে বের করে তুরের দিকে ছুড়ে দিল।

— শরীর মুছে কাপর পালটে নেও। আমি এখানেই আছি।

তীব্রের কথায় আবার অবাক হয় তুর। তীব্র কি এখানেই থাকবে নাকি। মানে কি? তখনি আবার ভাবল থাকলে কি আর না থাকলে কি রুমে তো ক্যামেরা লাগানোই আছে। তারমানে তীব্র থাকলেও ও রুমে চেঞ্জ করতে পারবে না আর না থাকলেও।

— আমি বাথরুমে চেঞ্জ করব।

— মানে? এতক্ষন ভিজে স্বাদ মেটেনি নাকি আবার ভিজতে চাইছ। 😡

তুর কিছু বলল না শুধু ক্যামেরাগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখল। তুরের দৃষ্টির দেখে বুঝতে বাকি রইল না তীব্রের।

— এখানেই চেঞ্জ করতে পারো সমস্যা নাই। আমি কিছু দেখব না। আর না ওই ক্যামেরা গুলো।

তীব্রের কথা আগা মাথা কিছুই বুঝল না তুর। কিন্তু ওকে কিছু বলার সাহস ও পাচ্ছে না। এই পাবনা ফেরত লোকটাকে কিছু বলাও পাপ। তাই ও ওখানেই দাড়িয়ে রইল। এটা দেখে তীব্র শান্ত গলায় বলে উঠল…

— কি বললাম তোমাকে? যা মন চায় করো। কিন্তু মনে রেখ যদি অসুস্থ হয়ে গেলে সেবা কেন তোমার দিকে ফিরে তাকানোর মত লোকও নেই।

তুর কি করবে বুঝতে পারল না। নিজের অজান্তেই ওর চোখে পানি এসে গেল। যে সবার চোখের মনি ছিল সে এখন….

— কিহল… [ ধমক দিয়ে ]

কলিজা কেপে উঠল তুরের।

— যদি ভেবে থাক তোমাকে দেখে ফিলিংস জাগবে। তাহলে মনে রেখ তুমি যে অবস্থায় আছো এর চেয়ে বেশি কিছু লাগে না ফিলিংস আনার জন্য। So ফালতু ভাবনা ছাড়ো।

তুর বুঝতে পারল কিছু বলা মানেই অপাত্রে দান হবে। আর কি করবে? বাথরুমের ক্যামেরাও উন্মুক্ত। আর এখানে তো….। যদিও লোকটি পিছন ফিরে আছে। তুর কিছুই বলল না রাগে চোখে পানি এসে থুতনি কাপতে লাগল। তারপর নিজের মনে ঠিক করল লোকটি যখন বলেছে তখন তাই হোক। রাগে নিজের চোখটা বন্ধ করে কাধের ওড়ানায় হাত দিয়ে টান দিতেই সবটা অন্ধকার হয়ে গেল। তুর চেয়ে দেখে একদম ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে আছে চারদিক। তখনি লোকটার গলা শুনতে পেল।

— Just 5 minutes. এর পর আবার লাইট জলে উঠবে। So fast…

তুর কিছু বুঝতে পারল না। কারন এখানে কোনো লাইটের সুইচ নেই।

— সবকিছুই যখন রির্মোট কন্ট্রোল লাইট টাও তাই। যেটা আমার কাছে। তাই এত না ভেবে তাড়াতাড়ি করো। ৪ মিনিট….

তুর আর কিছু ভাবল না। অন্ধকারে কোনোমতে চেঞ্জ করে নিল। তারপর ওড়নাটা পরতে নিলেই লাইট জ্বলে উঠল। সবটা ঠিকঠাক দেখে স্বস্থির নিশ্বাস ছাড়ল তুর। কিন্তু শান্তি আর পেল না। সামনে দিকে তাকাতেই তীব্র ভ্রু কুচকে ওর গলার দিকে তাকিয়ে এগোতে থাকে। এটা দেখে তুর ঢোক গিলে পেছতে থাকে। পিছতে পিছতে স্লিপ কেটে বিছানায় পরে যায়। তীব্র ওর কাছে গিয়ে একহাটু গেড়ে ওর পাশে বসে। ওকে টাচ করার চেষ্টা করতেই তুর নিজেকে গুটিয়ে নেয়। কিন্তু তীব্র তাতে খেয়াল না করে তুরের গলার কাছ থেকে ওড়নাটা হালকা নামায় বাইটের জায়গায় হালকা ভাবে আঙুল বুলিয়ে দিতেই তুর কেপে উঠে। সঙ্গে সঙ্গে তীব্র বলে উঠল …

— এই দাগটা কোনোদিন মিটবে না তোমার। মনে করে নেও এটাই আমার বন্দীনি হিসেবে আমার নামের সিলমোহর। তুমি চাইলেও যা আমি মেটাতে দেব না।

তারপর গলার নিচে বাইটের জায়গায় আলত করে চুমো আকে তীব্র। তারপর কাধের থেকে কাপর সরিয়ে লালচে হওয়া জায়গায় হাত বুলায়। তুর নিজের কাধের দিকে তাকাতেই দেখে রক্ত জমাট বেধে গেছে সেখানে। তীব্রের ঠোঁটের ছাপ বসে গেছে। মনে হচ্ছে ঠোঁট দিয়েই কাধে তীব্রে নিজের ঠোঁটের ট্যাটু করে দিয়েছে। তীব্র সেখানে একটা চুমো দিতেই তুর চিতকার করে উঠে….

— প্লিজ এখানে আর কিছু করবেন না। এমনি রক্ত জমাট বেধে গেছে। [ নিজের চোখ বন্ধ করে খুব জোরে চিল্লিয়ে নিজের কাধ চেপে ধরে। ]

তীব্র ওর কথা শুনে বাকা হেসে বলে উঠল….

— আর কি করার কথা ভাবছ…..
,
,
,

,
,

পরক্ষনেই নিজের চোখ খুলে তুর তীব্রকে খোজার চেষ্টা করে। কিন্তু তীব্রকে কোথাও খুজে পায় না। তারমানে লোকটা কিছু করেনি। তুর এতক্ষন সেদিনের তীব্রের কাজগুলো কল্পনা করছিল। ভেবেই একটা স্বস্থির নিশ্বাস ছাড়ল। কিন্তু কি মনে করে নিজের কাধের কাপরটা সড়ালো। রক্ত এখনো জমাট বেধে আছে। এটা দেখে নিজের গলার সেই বাইটের জায়গায় হাত দেয়। হ্যা সেখানেও আজও ক্ষতটা রয়েছে। শুধু ব্যাথা গুলোই নেই। ঘা থাকলেও ব্যাথা করে না। ব্যাথাটা সয়ে গেছে। কারন তীব্র তার নামের সিলমোহর দিতে কখনো ভোলে না। আর তাই এই দুইটাই তুর সবসময় পায় তীব্রের কাছে।

,
কিন্তু তীব্র নেই ভেবে গলার দাগে হাত দিয়ে মেঝেতে পাতা বিছানায় শুয়ে পরে তুর। এতক্ষন যা যা করছিল সবটাই গাড়িতে বসে নিজের ল্যাপটপে দেখছিল তীব্র। তুরের নিজের গলা আর কাধ দেখতে দেখে বুঝল তার বন্দীনী তার দেওয়া চিহ্নকেই দেখছিল। তুরের শরীরে নিজের দেওয়া রেখা দেখে ল্যাপটপটা বন্ধ করে গাড়ির ছিটে মাথা রেখে প্রশান্তির নিশ্বাস ছাড়ল তীব্র। এটা ভেবে তার তুর, বন্দীনি হয়ে তার হয়ে আছে। হ্যা তার তুর। কিছুদিন আগে না থাকলেও কয়েকঘন্টার ব্যবধানে তুরের উপর আলাদা একটা অধিকার বোধ জন্ম নিয়েছে তীব্রের। ৩ মাস আগেও যেটা জোর মনে হত। সময়ের ব্যবধানে তা এখন অধিকারে পরিনত হয়েছে তীব্রের। তুরের উপর অজান্তেই এখন অধিকার শুধু তীব্রের। কারন তুর যে তার #বন্ধ_দরজায়_বন্দিনী…. নয় তীব্রের #বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤………….
,

,
,
,

,
,
,
,

[ আপনারা এটাই ভাবছেন আসলে ৩ মাস আগে কি হয়েছিল যার কারনে তীব্রের সাথে তুরের ভাগ্যটা এভাবে জুড়ে গেল। আর তীব্র এমন করছেই বা কেন? ভালোবেসে না অন্যকারন……….

,
,
,
,
৩ মাস আগের কথা……..

তুরের লাইফে তীব্র নামের অভিশাপের প্রকাশ ঘটে খুব অদ্ভুত ভাবে। কোন একটা ঝড়ের চেয়ে কম ভাবে না। যেন মাঝ নদীতে কোন এক অজানা ঝড়…..

.
.
.
.
.
.
.
.
.

[ বাকিটা পরের পর্ব গুলোতে জানবেন ]

সরি ব্যস্ত থাকার কারনে পার্টটা বেশি বড় করতে পারিনি। আশা করছি পরবর্তী পর্বে আরো ভালো কিছু রাখার জন্য……

সবাইকে ধন্যবাদ…..

Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr
#Åriyâñà_Jâbiñ_Mêhèr

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here