Addicted_love Part:59(২য় খন্ড) aarizona ella

0
1271

#Addicted_love
Part:59(২য় খন্ড)
aarizona ella
সকালে ফ্রেশ হয়ে এলা রুমের বাহিরে যাওয়ার জন্য পা বারাতেই ইশফাক পিছন থেকে ডাক দিলো।
এলা,,,,এতো সকাল সকাল কোথায় যাচ্ছো?ঘুম ঘুম চোখে বললো ইশফাক।
কিচেনের দিকে যাচ্ছি,,ফ্রেশ হয়ে জলদি নিচে আসুন,, (এলা)
কিচেনের দিকে এগুলো সে,,কিচেনে আন্টি রান্না করছেন।।
গুড মর্নিং আন্টি😊(এলা)
গুড মর্নিং বিউটি 😊(আন্টি)
আন্টি আজকে নাস্তা আমি রেডি করবো,,
কিন্তু তুমি তো রান্না করতে জানো না(আন্টি)
আরেহ আন্টি কিছু হবে না,,আপনি যান আমি রেডি করছি বলেই এলা আন্টিকে ঠেলে কিচেন থেকে বের করে দিলো।
বেশ কিছুক্ষন পর কিচেন থেকে খুব স্বজোরে আওয়াজ আসাতেই ঘাবড়ে গেলো আন্টি,,ইশফাক ও চমকে গিয়ে দৌড়ে সিড়ি বেয়ে নামলো।।।
কিচেনে গিয়ে আন্টি আর ইশফাক দুজনের মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।😵
গোটা কিচেন ধোয়াচ্ছে,,,,,চারিদিক পোড়ার গন্ধে ভৌ ভৌ করছে,,,দেয়ালের চারপাশ কালচে হয়ে গেছে,,,ব্লেনডার ব্লাস্ট হয়ে জুস সব চারপাশে ছড়িয়ে গেছে😵।
ইশফাক এদিক ওদিক এলাকে খুজছে,,,এলা মিরর স্ট্যান্ড এর নিচে এক কোনায় হাটু দুটো কে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বসে আছে,,ভয়ে চুপসে গেছে সে,তার পুরো গায়ে জুস।।,,টুইস্টারের ১২ টা বাজিয়েছে,,ব্রেড পোড়া গন্ধ আসছে টুইস্টার থেকে,,মোট কথা কিচেনে ১৯৭১ এর দু্র্ভিক্ষ নেমেছে আজ।
এলায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া,,,,,ঠিক আছো তুমি?😰😰তোমাকে কিচেনে আসতে বলেছে কে?ইশফাক দৌড়ে এলাকে কোলে নিয়ে কিচেন থেকে বেরিয়ে আসলো।
ডাইনিং টেবিলের কেদারায় নিয়ে বসালো এলাকে।
ঠিক আছো তুমি?কোথাও লাগে নি তো?হতড়ম্ব হয়ে জিজ্ঞেস করলো ইশফাক।
এলা এখনো পাথর এর মতো হয়ে আছে ভয়ে।।
এলা কথা বলছো না কেন?কিচেনে কে বলেছে যেতে?কেন গিয়েছিলে?😡(ইশফাক).
নাস্তা রেডি করতে গেছিলাম আমতা আমতা করে জবাব দিলো এলা।
নাস্তা রেডি করতে কে বলেছে তোমাকে? আমি বলেছি?(ইশফাক)
ন,,,,,,না।।ভয়ে ভয়ে উত্তর দিচ্ছে এলা।
এখানে কি কাজের লোকের অভাব?এখন যদি কোন অঘটন ঘটতো?কিচেনে আগুন লাগিয়েছো ভালোকথা,যদি তোমার কিছু হয়ে যেতো আমার কি হতো??? জবাব দাও,,ধমক দিয়ে বললো ইশফাক।
মাথা নিচু করে ঢোক গিলছে এলা।।
রান্না জানো না তো রান্না করতে যেতে বলেছিলো কে???এই মেয়ে আজকের পর থেকে যেনো তোমাকে আর কিচেনে না দেখি😠এইসব সিরিয়াস ব্যাপার নিয়ে ঘাড়ত্যাড়ামি আমি একদম সহ্য করবো না,,যদি আমার কোটি টাকার সম্পত্তির লোকসান ও হয়ে যায় আমার কিছু যায় আসে না কিন্তু একবার যদি তোমার কিছু হয়ে যায় আমি মাত্তাম ফেলিয়ে দিবো সবখানে।ভালবাসি বিধায় কিছু বলি না তাই বলে আমার দুর্বলতার সুযোগ নিবে না,,যেমনটা ভালবাসি তেমন শাসন করার অধিকার আছে আমার।তাই ভালবেসে বুঝাচ্ছি এমন কোন কাজ করবে না যেটাতে আমার কষ্ট হবে আর আমাকে এমন কিছু করতে বাধ্য করবে না যেটা দ্বারা তোমার নিজেকে বন্দী মনে হবে।।(ইশফাক)
ইশফাক এর কথা শুনে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করছে এলা।এলার কান্না দেখে ইশফাক শান্ত হয়ে এলাকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে গেল।।
ফ্রেশ হয়ে নাও জলদি,,অফিস এর লেট হয়ে যাচ্ছে।।গম্ভীর কন্ঠে বললো ইশফাক।
ইশফাক এর কথা শুনে এলার আর বুঝতে বাকি রইলো না যে ইশফাক চরম রেগে আছে।।
ইশফাক সরি আর হবে না😞(এলা)
যাও ৫ মিনিটের মধ্যে ফ্রেশ হয়ে এসো।(ইশফাক)
হুম।।এলা তাওয়াল আর কাপড় নিয়ে ওয়াশ্রুমে ঢুকে পড়লো।ইশফাক মুখ গোমড়া করে দাঁড়িয়ে আছে।প্রায় ১০ মিনিট পর এলা ওয়াশ্রুম থেকে বের হয়ে এলো।
ইশফাক এলাকে টেনে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসিয়ে মাথা আচরিয়ে দিলো।ইশফাক এর এমন স্বভাবে এলা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যাচ্ছে।
কাপ্বার্ড থেকে ওড়না নিয়ে এলার গায়ে ছাড়িয়ে দিলো ইশফাক।
চলো,,,(ইশফাক)
কোথায়??? অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো এলা।
চুপচাপ আসতে বলেছি।হাটতে শুরু করলো ইশফাক।
এলাও ইশফাকের পিছু পিছু হাটা শুরু করলো।দুজন গাড়িতে গিয়ে বসলো।
ইশফাক তার অফিস এর সামনে গাড়ি থামালো।ইশফাক এর এমন আচরনে এলা ৪৪০ ভোল্ট এর ঝটকা খাচ্ছে।
ইশফাক গাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো,, এলা এখনো গাড়িতেই বসে আছে।।
কি বেরুচ্ছো না কেন?রেগে গিয়ে বললো ইশফাক।
এলা ভয়ে তারাতাড়ি গাড়ি থেকে নেমে গেলো।।
ইশফাক এর পিছু পিছু এলাও অফিসের ভিতর প্রবেশ করতে লাগলো। ইশফাক কে দেখে অফিসের সবাই দাঁড়িয়ে গেছে।কেউ হ্যালো স্যার,তো কেউ গুড মর্নিং স্যার বলছে।।সাথে এলাকেও সবাই গুড মর্নিং ম্যাম বলে সম্বোধন করছে।
ইশফাক টেনে এলাকে তার কেবিনে নিয়ে গেলো।
ইশফাক চেয়ারে বসলো,,আর এলাকে তার সামনে বসালো। এলা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কারন এমন রাগান্বিত ভাবে সে ইশফাক কে আগে কখনো দেখে নি।
হ্যালো,,,,bring some food in my cabinet…quickly কাউকে কল করে বললো ইশফাক।
১০ মিনিটের মধ্যে অফিসের একজন স্টাফ খাবার নিয়ে হাজির হলো।
স্যান্ডুইচ,কফি আর কিছু ফ্রুটস আনিয়েছে।স্যান্ডুইচ নিয়ে ইশফাক এলাকে নিজ হাতে খাওয়াতে শুরু করলো,এলাও হাব্লুর মতো হয়ে আছে,কি হচ্ছে কিছুই মাথায় আসছে না এলার।
আপনি খাবেন না?ইশফাক কে থামিয়ে দিয়ে বললো এলা।
আগে তুমি খাও,,কাল রাতেও কিছু খাও নি।গম্ভীর কন্ঠে বললো ইশফাক।
আমি আর খাবো না,,মন খারাপ করে বললো এলা।
এলার মন খারাপ হয়ে গেছে দেখে ইশফাক ও দু এক বাইট খেয়ে নিলো।
সরি ইশফাক,,আপনি এভাবে রাগ করবেন জানলে আমি কখনোই কিচেনে যেতাম না,,সো সরি আর কখনো হবে না।(এলা)
কখনো কিচেনে যেতে হবে না তা কিন্তু না,,বাট আগে নিজেকে সামলাতে শিখো যতদিন নিজেকে গুছিয়ে না নিচ্ছো ততদিন তোমাকে কেউ জোর করছে না,এভাবে খামখেয়ালি হলে তো তুমি নিজেকেই সংকট এ তালিয়ে দিবে,,আমি অনেক ভালবাসি তোমাকে,,, সকালে তোমার এমন অবস্থা দেখে কলিজার পানি শুকিয়ে গেছিলো, তোমার কিছু হলে সহ্য করতে পারবো না আমি,,তুমি কেন বুঝো না,?অনেক আবেগপ্রবণ হয়ে কথা গুলো বললো ইশফাক।
i am sorry ইশফাক আমি বুঝতে পারি নি,,বসা থেকে উঠে গিয়ে ইশফাকের কোলে বসে ইশফাককে জড়িয়ে ধড়লো এলা।ইশফাক ও এলাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
হঠাৎ এলা ইশফাক এর কোল থেকে উঠে ওয়াশ্রুমের দিকে দৌড় দিলো,ইশফাক ও এলার পিছু পিছু দৌড় দিলো।পর পর ৩ বার বমি করেছে এলা।তা দেখে ইশফাক আরও চিন্তিত হয়ে গেছে।
বাসায় চলো এলা।চিন্তিত হয়ে বললো ইশফাক।
এলার অনেক দুর্বল লাগছে হাটতে না পেরে দুলিয়ে পড়ে যাচ্ছে সে।
জান???কি হয়েছে এমন করছো কেন?😢কান্না জড়িত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো ইশফাক।
এলা এখনো দুলছে ঠিক ভাবে দাঁড়াতে পারছে না সে।ইশফাক এলাকে কোলে তুলে কেবিনের বাহিরে যেতে লাগলো,, অফিস এর সবাই হা করে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে,,এলা ও হাল্কা হাল্কা চোখ মেলে তাকাচ্ছে। সিকিউরিটি গাড়ির দরজা খুলে দিলো,,এলাকে কোলে নিয়েই গাড়িতে বসলো ইশফাক।অফিসের একজন স্টাফ কে গাড়ি ড্রইভ করতে বলা হয়েছে।এলার মাথা ইশফাকের বুকে আর ইশফাক শক্ত করে
আকড়ে রেখেছে তার মায়াবিনী কে।।
ওই অবস্থায়ও হাল্কা বমি হয়েছে এলার,আর সব ইশফাক এর বুকে পড়েছে,কিন্তু ইশফাক বিন্দুমাত্র ও রিএ্যাক্ট করে নি।এলার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে সে,,চোখ এর কোনে জল এসে জমাট বেঁধেছে ইশফাক এর।।।
চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here