#মনের_অরণ্যে_এলে_তুমি
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_২৪
নিশুতি রাত। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ইনায়া। শীতল হাওয়া ছুঁয়ে যাচ্ছে কায়া। উড়ু উড়ু করছে উন্মুক্ত কেশরাশি। দৃষ্টি নিবদ্ধ তার আকাশের বুকে উজ্জ্বল নিশাকরে। মানসপটে বারংবার ভেসে উঠছে এক মুখশ্রী। র’ক্তিম যার চক্ষু জোড়া। বড় দুর্বোধ্য চাহনি। রাগত বদনে তাকিয়ে বুঝি। কিচ্ছুটি বলছে না। না শুনছে। করে যাচ্ছে শুধু অভিমান। অভিমান! আসলেই কি তাই? অভিমান তো তার সঙ্গে হয় যারে আপন মানে হৃদয়। সে তো রাহি ভাইয়ার আপন কেউ নয়। যদি হতো এতখানি অবজ্ঞা সইতে হতো না। তবে কি করে এ অভিমান হিসেবে অভিহিত হবে! কেন দু’জনার মধ্যে যোজন যোজন এর দূরত্ব! তারে বোঝে না কেন সে-ই অবুঝ একরোখা মানুষটি!
” রাহি ভাইয়া! আমায় এতখানি অবজ্ঞা করো না কো। তোমার এত অবজ্ঞা, ঘৃ ণা সহ্য করবার মতো বিন্দু তুল্য শক্তি যে নেই। বড় দুর্বল আমি। দুর্বল তোমাতে। এ কিশোরী হৃদয়ে চুপিসারে কবে প্রবেশ করলে তুমি? করে নিলে সীমাহীন জায়গা। টেরও পেলাম না। যখন উপলব্ধি করলাম তখন সবটা নাগালের বাইরে। ইনুর হৃদয়ে ধ্বনিত হয় শুধু একটি নাম। তোমার নাম। ”
অসীম আকাশের পানে চেয়ে মনের গহীনে লুকানো অনুভূতি ব্যক্ত করছে এক কিশোরী কন্যা। অব’জ্ঞাকারী সে মানব কভু জানবে কি এই অনুভূতির বহর? নাকি আড়ালে আবডালে রয়ে যাবে সব? অন্তরে মৃ ত্যু হবে এক আকাশসম আবেগের!
•
সান্ধ্যকালীন প্রহর। লিভিংরুমে পাশাপাশি বসে তিনজন। সোফায় মধ্যমণি হয়ে বসে মালিহা। ওনার ডানে হৃদি। বামে ইনায়া। টেবিলের ওপর পাকোড়া রাখা ট্রে। মালিহা পাকোড়া মুখে পুরে অতি মনোযোগ সহকারে টিভি দেখছেন। সম্পূর্ণ ধ্যান জ্ঞান টিভির পর্দায়। আশেপাশে কে আছে, কি হতে কি হচ্ছে ওনার তাতে একটুও চেতনা নেই। জাগতিক হুঁশ হারিয়ে উনি মগ্ন টেলিভিশনের পর্দায়। হৃদি পাকোড়া খেতে খেতে মায়ের মনোযোগী অবতার দেখছে। হাসছে মিটিমিটি। ব্যতিক্রম ইনায়া। সে বিরক্ত হয়ে মা’কে ডেকে উঠলো,
” আম্মু। ও আম্মু। তোমার এখনো হয়নি? রিমোটটা দাও না। ”
বিরক্ত হলেন মালিহা। মেয়ের দিকে তাকিয়ে আপত্তি জানিয়ে বলে উঠলেন,
” আহ্! বিরক্ত করিস না তো। দেখছিস না সিরিয়াল দেখছি?”
ভাবীর মিটিমিটি হাসি অগ্রাহ্য করে মা’কে বললো মেয়েটি,
” আর কত দেখবে? এবার তো দাও। সে-ই একঘন্টা ধরে দেখছো। ”
” উফ্ একটু থামবি? ডায়লগ শুনতে পারছি না। ”
মালিহা অসন্তুষ্ট হয়ে টিভিতে মনোনিবেশ করলেন। ইনায়া দুঃখী বদনে ভাবীর দিকে তাকালো। ননদের করুণ অভিব্যক্তি দেখে বেশ মজা পাচ্ছে হৃদি। ভাবীর এই হাসি, ঝলমলে চেহারা এই মুহূর্তে সহ্য করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠলো। দৃষ্টি সরিয়ে ট্রে হতে পাকোড়া হাতে নিলো ইনায়া। বেজার মুখে পাকোড়া চিবোতে লাগলো। সিরিয়ালের মেঘ ভাঙা, ধুমতানা কিসব শব্দে মস্তিষ্ক ফেটে যাবার উপক্রম। এত ধৈর্য ধরে বছরের পর বছর কেউ কি করে একই জিনিস দেখতে পারে! জানা নেই ইনায়ার। বড় করে শ্বাস ছাড়লো মেয়েটি। অতিবাহিত হলো আরো কিছু মুহূর্ত। হৃদির পাকোড়া খাওয়া শেষ। পেপার ন্যাপকিনে হাত মুছে নিলো সে। সোফাতে রাখা মোবাইল হাতে নিলো। ননদের দিকে একপলক তাকিয়ে দুষ্টু হেসে মোবাইল স্ক্রল করতে লাগলো। ইনায়া জোরপূর্বক পাকোড়া খাচ্ছে যেন। নেহাত নিজের রুমে টিভিতে প্রবলেম করছে তাই এখানে আসা। ভাবীর সঙ্গে একসাথে কোনো মুভি এনজয় করবে ভেবেছিল। ভেবেছিল কি আর সেখানে হচ্ছে টা কি! আম্মু সে-ই কখন থেকে একটার পর একটা টিভি সিরিয়াল দেখেই চলেছে। কখনো স্টার জলসা তো কখনো জি বাংলা। হায় রে! শেষ নেই এর। অবশেষে স্টার জলসার সিরিয়ালটা সমাপ্ত হলো। খুশিমনে রিমোটের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো ইনায়া। তবে কাজ হলো না। আঁতকে উঠে রিমোট রক্ষা করলেন মালিহা। মেয়েকে ধমক দিয়ে বললেন,
” করছিস টা কি? সর। ”
ইনায়া আবেগী কণ্ঠে বললো,
” রিমোটটা দাও না সোনা মা। ”
” না। এখন ‘তুঁতে’ হবে। ওটা দেখে নিই। তারপর.. ”
” ইয়া খোদা! ”
আঁতকে উঠলো ইনায়া! আরো আধা ঘন্টা! হইছে। আজ আর টিভি দেখা হবে না। ওর অভিব্যক্তি দেখে শব্দ করে হেসে উঠলো হৃদি। মোবাইলের পাওয়ার বাটন চেপে ননদের পাশে গিয়ে বসলো। সান্ত্বনার স্বরে বললো,
” কাঁদে না মেয়ে। আর মাত্র আধ ঘন্টা। এরপর পাবে। ঠিক আছে? ”
” ভাবী তুমিও মজা নিচ্ছো? কিচ্ছু বলছো না। ধ্যাৎ! ”
বিরক্তিসূচক শব্দ করে সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো ইনায়া। মালিহা তা লক্ষ্য করে বললেন,
” যা। গিয়ে পড়তে বস। ক’দিন পর না পরীক্ষা? ”
ধুপধাপ শব্দ করে সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠে গেল ইনায়া। হৃদি শব্দহীন হাসলো। এবার চক্ষু পড়লো মায়ের দিকে। মা সিরিয়াল দেখছে আর কাকে যেন খুব বকছে। বাঙালী রমণী যেমন হয় আর কি। ভারতীয় সিরিয়াল যেন তাদের আবেগ। বকবে, হাসবে, কাঁদবে তবুও দেখবে।
•
নিকষকৃষ্ণ রজনী। বিছানায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে বইখাতা। একপাশে হাঁটু মুড়ে বসে হৃদি। মনোযোগ নিবদ্ধ বইয়ের পাতায়। সে মুহূর্তে কক্ষে প্রবেশ করলো সাহেব। ক্লান্ত দেহ। উষ্ণ ছাঁচে জ্ব’লছে বুঝি সারা কায়া। ঘর্মাক্ত অবস্থা। শুভ্র পাঞ্জাবি স্বেদজলে সিক্ত হয়ে লেপ্টে দেহে। শ্লথ গতিতে হাঁটছে মানুষটি। এসে বসলো ডিভানে। বিছানা সংলগ্ন ডিভানটি। বইয়ে মনোযোগী হৃদি টের পায়নি স্বামীর আগমন। একমনে লিখে যাচ্ছে মেয়েটা। ইরহাম ডিভানে দেহ এলিয়ে দিলো। বাঁ হাতে একে একে খুলে ফেললো পাঞ্জাবির বোতামগুলো। এলোমেলো স্বল্প ঘামে সিক্ত চুলে হাত বুলালো একবার। ক্লান্তিতে নিমীলিত হয়ে এলো আঁখি যুগল। কিছুটা সময় অতিবাহিত হলো। বইয়ের পাতা উল্টাতে গিয়ে হৃদির অচঞ্চল দৃষ্টি পড়লো ডিভানে। হতভম্ব হলো মেয়েটি! ইরহাম! উনি কখন এলেন! ব্যস্ত হাতে বই খাতা বন্ধ করলো হৃদি। এলোকেশ আলগা খোঁপায় বন্দী করতে করতে নেমে এলো বিছানা ছেড়ে। গিয়ে দাঁড়ালো স্বামীর পাশে। হাত বাড়িয়ে দ্বিধায় ভুগছে মেয়েটা। উনি কিছু মনে করবেন কি? যদি বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন! পরক্ষণে ভাবলো স্বামী হন। এতটুকু করা যেতেই পারে। দ্বিধা কাটিয়ে স্বামীর চুলে আঙুল গলিয়ে দিলো হৃদি। আচানক স্পর্শে ঈষৎ চমকালো ইরহাম! আঁখি মেলে তাকালো। একঝলক স্ত্রীর পানে তাকিয়ে পুনরায় আঁখি বুজে ফেললো। ওর মাথার তেলোয় নরম চিকন পাঁচটি আঙ্গুল বুলাতে বুলাতে হৃদি কোমল কণ্ঠে শুধালো,
” খুব ক্লান্ত? ”
” হুঁ। ” অস্ফুট স্বরে জবাব দিলো মানুষটি।
হৃদি স্বামীর চুলের ভাঁজে আঙ্গুল চালনা করতে লাগলো। এতক্ষণ বাদে আকাঙ্ক্ষিত আরাম মিললো। আবেশিত মানুষটির তনুমন। চক্ষু বুজে স্ত্রীর স্নেহশীল স্পর্শ অনুভব করে চলেছে ইরহাম। মাথার তেলোয় ঘুরে বেড়াচ্ছে অর্ধাঙ্গীর অঙ্গুলি সমূহ। নরম পাঁচটি আঙ্গুল যেন ওর ভেতরকার সবটুকু ক্লান্তি শুষে নিতে বদ্ধপরিকর। হৃদি আঙ্গুলের কারিশমা বহাল রেখে মোলায়েম স্বরে বললো,
” ফ্রেশ হয়ে নিন। আমি খাবার বেড়ে দিচ্ছি। খেয়েদেয়ে একটু লম্বা ঘুম দিন। সারাদিন, রাত ছোটাছুটি করে চলেছেন। শরীর আর কত সহ্য করবে? রোবোট নন। শেষে অসুস্থ হয়ে পড়বেন তো। ”
স্ত্রীর কথা শুনে চক্ষু মেলে তাকালো ইরহাম। ক্লান্ত স্বরে আপত্তি জানিয়ে বললো,
” ঠিক আছি আমি। ”
চুলের ভাঁজ হতে আঙ্গুল সরিয়ে নিলো হৃদি। আরামে ব্যাঘাত ঘটায় কিছুটা মনোক্ষুণ্ন হলো মানুষটির। প্রকাশ পেল চেহারায়। সেসব অগোচরে রয়ে গেল হৃদির। সে কাবার্ডের ধারে অগ্রসর হতে হতে পাকা গিন্নি ভঙ্গিমায় বললো,
” সে তো দেখতেই পাচ্ছি। এবার চটাপট উঠে পড়ুন তো। খেয়ে ঘুম দেবেন। খবরদার ওই ইংরেজদের উদ্ধার করতে বসবেন না যেন। ”
অর্ধাঙ্গীর শাসক অবতার দেখে মুচকি হাসলো ইরহাম। ফ্রেশ হওয়া দরকার। গা চিটচিট করছে। কিন্তু শরীর মানতে নারাজ। হাত-পা অবশ প্রায়। দিনরাত অবিরাম ছোটাছুটি চলছে। আর কত সইবে শরীর! মানবদেহ এটি। কোনো যন্ত্র কিংবা রোবোট নয়। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ডিভানে দেহ এলিয়ে রইলো মানুষটি। হুঁশ ফিরলো হৃদির আগমনে। ওর ঘরের পোশাক নিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে মেয়েটা।
” এই যে ড্রেস। ”
স্বামীর কোলের ওপর পোশাক রাখলো হৃদি। হাত বাড়িয়ে নভোনীল চক্ষু হতে চশমা খুলে ফেললো। কব্জি হতে হাতঘড়িও খুলে নিলো। ওগুলো নিয়ে পা বাড়ালো ড্রেসিং টেবিলের দিকে। অবসাদকে দূরছাই করে ইরহাম গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ালো। এবার ফ্রেশ হওয়া সত্যিই আবশ্যক।
•
নিশুতি রাত। বেডরুমে বড় সোফায় আয়েশি ভঙ্গিতে দেহ এলিয়ে বসে আজগর সাহেব। পড়নে ওনার কৃষ্ণবর্ণ নাইট ড্রেস। হাতে কাঁচের স্বচ্ছ ড্রিংকিং গ্লাস। মন্থর গতিতে গ্লাসে ওষ্ঠাধর ঠেকিয়ে ম!দ্যপান করছেন উনি। আভিজাত্য বিরাজমান এ ঘরের আনাচে কানাচে। বিদেশি আসবাব, দেয়ালে শোভা পাওয়া পেইন্টিং এমনকি ছোট-বড় শোপিস যে কারোর নজর কাড়তে সক্ষম। ওনার বিপরীত দিকে দাঁড়িয়ে এক যুবক। ওনার দলের কর্মী হয়। তিন বছর ধরে ওনার সাহচর্যে রয়েছে। বিশ্বস্ত বলা চলে। আজগর সাহেব গ্লাসে চুমুক দিয়ে অন্তর হতে ম-দের স্বাদ গ্রহণ করলেন। বড় করে তৃপ্তিময় শ্বাস ছেড়ে তাকালেন দলীয় কর্মীর দিকে। চেহারায় রূঢ় ভাব ফিরে এলো। শীতল কণ্ঠে বলে উঠলেন,
” চৌধুরী বড় ডানা মেলে উড়তে শিখছে। আকাশে আকাশে রাজার হালে উড়ে বেড়াচ্ছে। আর কত? এবার তো ডানা ছেঁটে ফেলার সময় এসে গেছে। ”
যুবকটি বাধ্যগত শিষ্যের ন্যায় বললো,
” আমাদের কি করণীয়? আপনি শুধু আদেশ করেন নেতাজী। এক্কেবারে ওর কাম তামা করে দেবো। ”
আজগর সাহেব তর্জনী নাড়িয়ে আপত্তি জানালেন,
” আহা। তুই না। আমার প্রিয় বাচ্চাটাকে খবর দে। কতদিন ওরে দেখি না। যত্ন করি না। খবর দে। বল নেতাজী স্মরণ করছে। ”
মাথা নাড়ল যুবকটি, ” ঠিক আছে নেতাজী। সকালের মধ্যেই সে আপনার চরণে থাকবে। ”
জবাবে সন্তুষ্ট উনি। প্রসন্ন চিত্তে ম-দ্যপান করতে লাগলেন। গ্লাসে ঠেকে থাকা তর্জনীর ইশারা পাওয়া মাত্রই আনুগত্য স্বীকার করে কক্ষ হতে বেরিয়ে গেল যুবক। জটিলতা ভরপুর হিং স্র পরিকল্পনার ছক কষে চলেছেন এই প্রবীণ তুখোড় রাজনীতিবিদ। কি হতে চলেছে শীঘ্র? এ কোন প্র’লয় সৃষ্টিকারী ঝড়ের আভাস মিলছে!
•
দিনমণির কিরণে উজ্জ্বল ধরিত্রী। মমতাময়ীর কোলে মাথা এলিয়ে মেঝেতে বসে রাহিদ। সোফায় বসে থাকা পল্লবী ছেলের মাথায় আদুরে হাত বুলিয়ে চলেছেন। অশ্রু ছলছল করছে নেত্রে। কতদিন পর নাড়ি ছেঁড়া ধন এর সাক্ষাৎ মিললো! প্রায় একমাস বাদে। ভেজা কণ্ঠে পল্লবী ছেলেকে প্রশ্ন করলেন,
” মায়ের কথা একটুও মনে পড়ে না। তাই না? ”
” পড়ে তো। ”
মায়ের কোলে মাথা এলিয়ে রেখেই জবাব দিলো রাহিদ। পল্লবী এহেন মন্তব্যে অভিমানী স্বরে আপত্তি জানালেন,
” মিথ্যে কথা। মনে পড়লে এভাবে চোখের আড়ালে আড়ালে থাকতিস না। কাছেই থাকতি। ”
লুকায়িত অভিমান উপলব্ধি করে মাথা তুলে মায়ের পানে তাকালো রাহিদ। আবেগময় কণ্ঠে বললো,
” দূরে কোথায় মা? তোমার ছেলে তোমার হৃদয়েই তো আছে। ডিপ ইন দ্যা হার্ট। ”
অশ্রুসজল নয়নে তাকিয়ে পল্লবী। দু হাতে ভরে নিলেন একমাত্র পুত্রের মুখের আদল। ললাটে স্নেহের চুম্বন এঁকে সহসা কেঁদে উঠলেন।
” আমার সোনা বাবা। মা তোকে খুব মিস্ করে। ”
দু হাতে মা’কে গভীর আলিঙ্গন করলো রাহিদ। ভেতরকার যন্ত্রণা গোপন করে শুকনা ঢোক গিললো। অস্ফুট স্বরে বললো,
” রাহিও তোমায় মিস্ করে মা। ”
পল্লবী অনবরত ছেলের চুলে হাত বুলিয়ে চলেছেন। চুমু এঁকে দিচ্ছেন মাথায়, গালে, কপালে। চক্ষু বুজে মায়ের মমতাময়ী স্পর্শ অনুভব করতে লাগলো ছেলেটা। কতদিন মায়ের সান্নিধ্য মেলেনি। অনুভব করেনি এই স্নিগ্ধ মা মা ঘ্রাণ। মা ও ছেলে একে অপরের সান্নিধ্যে জাগতিক হুঁশ হারিয়েছে। তারা এখন এক মধুরতম পবিত্র জগতে অবস্থান করছে। সেথায় নেই কোনো যন্ত্রণা, অ*ত্যাচার, ক্রো’ধ কিংবা ঈ’র্ষা! আছে শুধু একবুক ভালোবাসা! আকস্মিক মা ছেলের মধুর লগন ভঙ্গ হলো। কারণ..
চলবে.
[ কোন বিপদের আভাস মিললো আজ? পল্লবী ও রাহিদের এমন দূরত্বের কারণ কি? ]