আঁধারের_তারাবাজি #অভ্রায়ীনি_ঐশি #পর্ব_১৫

0
620

#আঁধারের_তারাবাজি
#অভ্রায়ীনি_ঐশি
#পর্ব_১৫

“আম্মি,,,আমায় ছেড়ে তুমি কি করে আছো বলো না আম্মি?,,,তোমার কি একটুও কষ্ট হচ্ছে না?”

ক্রন্দনরত মোমের কন্ঠ শুনে ফোনের ওপাশে ডুকরে কেদে উঠলো আতিয়া,,,,আজ কতগুলো দিন পর মেয়েটার কন্ঠ শুনতে পারছে।মনে হচ্ছে শুকিয়ে যাওয়া কলিজাটা আবার পানিপূর্ন হয়ে উঠছে।,,

“আমি থাকতে পারছি নারে মোম,, তোকে ছেড়ে একটুও ভালো থাকতে পারি না আমি,,”

মোম কাদতে কাদতেই আলতো হাসলো..

“মিথ্যা বলছো কেন আম্মি?,, এই তো বেশ আছো এ কদিন আমায় ছাড়া।,,”

আতিয়া বুঝলো,,,তার মেয়েটার বড় অভিমান হয়েছে,,

“পাগলি মেয়ে,,,,ধরে নে তুই এখন তোর শশুড় বাড়ী আছিস,,,তাই তো দেখছি না তোকে।তবুও কখনো মায়া কমবে নারে মা,”

মোম আনমনা হলো,,,,চোখের পানি ফেলতে ফেলতেই বললো..

“আর কদিন পরে যখন সত্যিই দুরে চলে যাবো,, তখনও কি ভেবে নিবে?আমি শশুড়বাড়ী আছি?”

কথার ভাষা হারিয়ে ফেললো আতিয়া।,,,গত এক বছর ধরেই মেয়েটা কেমন নির্জীব হয়ে গেছে,,,আগের মতো আর দুষ্টামিতে মাতিয়ে রাখে না সারা বাড়িটা।,,,,কারনটা তার নির্মম সত্য।,,

নারি ছেড়া রত্ন আতিয়ার,,,,এই মেয়েটা,,,,।সেই মেয়ে যাকে কিনা এই ১৮ টি বছর ধরে আগলে রেখেছে সে।,,,কত মেরেছে?,,আদর করেছে,,লোরি শুনিয়েছে,খাইয়ে দিয়েছে।,,আরো কত কি?,,

যে মেয়ে সারাক্ষণ শুধু পিছু পিছু ঘুরঘুর করতো তার।,,যে মেয়ে রাত জেগে থাকতো,,,নিজেও ঘুমাতো না,আর এই আম্মিকেও ঘুমাতে দিতো না।,,,সেই মেয়ে কিনা এবার অনন্ত কালের জন্য ঘুমিয়ে যাবে?,,এটা কি করে মানবে এই মাতৃহৃদয়?,, পারবে না তোহ?,,আচ্ছা সেদিন কি করবে আতিয়া?যেদিন তার ছোট্ট পরির মতো মেয়েটির দুধ ফর্সা শরীরটা সাদা কাফনের কাপরে ঢাকা থাকবে?,,যেদিন ঐ চঞ্চল চোখের মনি জোড়া ঢাকা পরবে স্থির চোখের পাতা দ্বারা,,?,,সারাক্ষণ দৌড়াতে থাকা মেয়েটা যেদিন খাটিয়ায় করে আসবে তার সামনে?,,সইতে পারবে তো?এ যে কতটা যন্ত্রণাদায়ক তা একজন মাই বলতে পারবে,, চোখের সামনে নিজের ননির পুতুলটার এমন নির্জীব দেহ দেখার মতো দুর্ভাগ্যবতী মা এই পৃথিবীতে খুব কম সংখ্যকই আছে।,,,সেই তালিকায় যে আতিয়া এহসানের নামও যুক্ত হতে চলেছে,তা বিধাতা তাকে আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছে।,,,,

প্রতিদিন মোনাজাতে বসে কতো যে কান্না করে তা সেই জানে,,, হাউমাউ করে কান্নার শব্দে পুরো লোক ভর্তি বাড়িটা যেন মৃত্যুপুরীতে পরিনত হয় তখন।,,,

এই যেমন এখনো কেদে উঠলেন তিনি..

“মারে,,,এমন কথা বলিস না মা,, দোহাই তোর,,।আমি আর সইতে পারবো না রে মা,,,তুই ফিরে আয় নারে মা,,,আমার বুকটা যে খালি হয়ে আছে,,,ফিরে আয় না মা,,,আমার কোলে আর একটি বার মাথাটা রাখ মা।আমি তোকে আর যেতে দেবো না,,আর দুরে রাখবো নারে,,”

কান্নার বেগ বেড়ে গেলো মোমেরও নাক টেনে টেনে কাদছে সে।,,,মাথায় চাপ পড়ছে তবে এখন আর সেই দিকে খেয়াল দিলো না মোম।,,কান্নায় ভেঙে পড়েছে,,তবুও হৃদয় শক্ত হয়ে জমে আছে।সেই পাথর খন্ড থেকেই মোম বলে উঠলো..

“আমায় আর ডেকো না আম্মি,,,এভাবে ডেকো নাহ।,,তুমি চাইলেই আমি তোমার কাছে ফিরতে পারবো নাহ,,,তুমি চাইলেই আর আমায় বুকে জড়িয়ে নিতে পারবে নাহ।নিজেকে সামলাও না আম্মি,,,তোমাকে তো শিখতে হবে,,কি করে আমায় ছেড়ে থাকতে হয়?,,,,”

থামলো মোম,,,জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলতে লাগলো চোখ বন্ধ করে,,,অনুভব করছে মাথার যন্ত্রণাটা বাড়ছে।,

“আম্মি,,ও আম্মি,,,শোন আমার কথা,,,,আমি চেয়েছিলাম,,, এই কদিন তোমাদের সাথে থাকতে।একটু সুখ পেতে,,তা আর হলো না আম্মি।,,তুমি হয়তো আমার নিঃশ্বাস নিতে থাকা মুখখানি আর দেখবে না।,,,,নিজেকে পরিবর্তন করো আম্মি।দেখোনি?জেঠাই,,জেঠিরা কত সহজে নিজেদের পরিবর্তন করে ফেললো,,,একটা সময় আমি ওদের সবার প্রিয় ছিলাম,,কিন্তু,,,,কিন্তু যখনই আমার নির্মম পরিনতির কথা জানলো,,,তখন থেকেই আমায়,, আমাদের তুচ্ছ করে যাচ্ছে। আচ্ছা আম্মি?আমার পরিনতিটা কি ঘৃনার বিষয়?বলো আম্মু?,,তারা এমন কেন করলো?,,,”

উত্তর নেই আতিয়ার কাছে। মোম একটু থেমে আবার বলে উঠলো..

” আম্মি,,,আম্মিজান,,,,এই দেখো,,এখনও আমার কষ্ট হচ্ছে,,, ভিষণ কষ্ট।, এভাবেই একদিন আমি,,, এমন ভিষণ কষ্ট নিয়ে এই দুনিয়া ছেড়ে….”

আর বলতে পারলো না মোম।তার আগেই তার হাত থেকে কেউ একজন ছো মেরে ফোনটা কেড়ে নিলো।,,,তাকাতেই দেখলো রক্তচক্ষু নিয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে নভ।,,,, ফোসফোস করতে করতে কানে নিলো ফোনটা।,,,,

অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিতে গিয়েও দিলো না আতিয়ার “মা ” ডাকটা শুনে।।চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাস নিলো,,,তারপর এক নাগাড়ে বললো….

“আমি চাইনা কারোর জন্য কষ্ট পেয়ে আমার মোম চোখের পানি ফেলুক।এতে তার মস্তিষ্কে চাপ পড়ে,,আপনি তা খুব ভালো করেই জানেন।,,সে আপনি তার আম্মু হন আর বা অন্যকেউ।,,,,তাই নেক্সটাইম আমার মোমের সাথে কথা বলার সময় সাবধানে কথা বলবেন।,,,নাহলে কথা বলারই প্রয়োজন নেই,,,,”

বলেই কেটে দিলো ফোনটা।,,,,,,,তীব্র রাগে ছুড়ে ফেললো ফোন।সাথে সাথেই টুকরো টুকরো হয়ে গেলো অবনের ফোন।,,,,নভ তাকালো অবনের দিকে,,,,গর্জে উঠে বললো…
তুমি
“আমার অনুমতি ছাড়া তুমি কেন ওকে ওর মায়ের সাথে কথা বলতে দিলে আব্বু?,,,হুয়াই?”

কেপে উঠলো উপস্থিত সকলেই।,,,এমনকি সিড়ির মাথায় দাড়িয়ে থাকা পলিও।যে এতোক্ষণ সবই দেখছিলো।তবে দুর থেকে।,,,

নভ একবার তাকালো তার দিকে,,,ওভাবেই বললো..

‘”সব মায়েরা আমার মায়ের মতো নয় আব্বু,,,,,তারা সন্তানদের সাথে নির্লিপ্ত থাকতে পারে না,,,,সন্তানের টানে বুক ফাটিয়ে কান্না করে তারা,,,আর সব সন্তানও আমার আর নোভার মতো নিজেকে সামলাতে পারে না,,,তেমনি আমার মোমও পারে না।,,,কেন দিলে তুমি ওকে ফোন?”

অবন বুঝলো,,কথার মাঝে কতটা না পাওয়া জমে আছে নভের।,,,কষ্ট পেলেন না তিনি,,,তবে আগোছালো ভাবে বলতে লাগলো..

“নভ আমি সত্যিই জানতাম না মোমমার এমনটা হবে,,আমি তো ভেবেছিলাম এমনিই কথা…”

আর বললো না অবন,,,তার আগেই কানে ভেসে এলো মোমের ফুপিয়ে কান্নার আওয়াজ।,,,এতোক্ষণ নিরবে কাদলেও এখন আর সামলাতে পারলো না মোম নিজেকে।,,

নভ এগিয়ে গেলো,,,বসা অবস্থাতেই মোমকে জড়িয়ে ধরলো।,, মোমের মাথাটা গিয়ে ঠেকলো নভের পেটের কাছটায়।,,আনমমে মোমও নভের কোমড় জড়িয়ে ধরলো।,,

“কাদে না মোম,,,প্লিজ কাদেনা।,,কষ্ট হবে তোমার,,বোঝার চেষ্টা করো,,,মোম?”

মোম যেন নিজের অন্তরানুভুতি সব উগলে দিতে চাইলো,,,কাদতে কাদতেই গুনগুনিয়ে বলে উঠলো..

“আমার আম্মি,,,আম্মি খুব কষ্ট পাচ্ছে ,আমি আরেকটু কথা বলবো আম্মির সাথে,,,আরেকটু কথা বলতে দিন না,,,আআমি,,,আমায় সবাই দুরে ঠেলে দিচ্ছে,,, আমার আম্মি ছাড়া,,,আমায় একটু কথা বলতে দিননা?”

নভ আরেকটু শক্ত করে চেপে ধরলো মোমের চুলের ভাজের হাতটা,,,

“বলবে তো মোম,,,তবে এখন নাহ।,,পরে,,।তোমার মাথায় যন্ত্রণা করছে না?,,, এখন একটু খেয়ে নাও,,,দেন মেডিসিন নিলেই যন্ত্রণা কমে যাবে।,,দেখি?”

বলতে বলতেই মোমের মুখটা উপরের দিকে তুললো,,চোখগুলে মুছিয়েও দিলো।,, চোখের ইশারায় রুবিকে বললো মোমের খাবার দিতে, তিনিও নিজ হাতে পাস্তা তুলে নিয়ে এলেন।,,,,নভ বসলো মোমের পাশের চেয়ারটায়,,,চামচে পাস্তা তুলতে তুলতে বললো…

“তোমরা সবাই খেয়েছো আব্বু?”

অবন জবাব দিলো..

“নাহ,,,মাত্র এলাম।”

“তাহলে বসে পরো৷,, আর তিশুকে এসব কিছু বলার দরকার নেই।,,,দ্রুত খেয়ে নাও,,,সবাই-ই কাজে লাগতে হবে।”

নোভা বসতে বসতে বললো..

“আমরা আবার কি কাজ করবো?”

নভ মোমের মুখে খাবার তুলে দিতে দিতে বললো…

“কেন?,,তোরা তো এখন সাজা শুরু করলে বিকেল হয়ে যাবে এমনিতেই।,,”

নোভা মুখ কুচকালো..

“ভাইয়ায়ায়ায়া,”

নভ উত্তর দিলো না।মোমকে খাওয়াতে ব্যস্ত হলো।,,,,

“আ্ আমি খেয়ে নিচ্ছি,,, আপনি আপনারটা খান।”

“এতো কিছু ভাবতে হবে না তোমায়।,,খাওয়ার হলে আরো আগেই খেয়ে নিতে।,,”

মোম আর কথা বাড়ালো না,,,খাওয়ায় মনোযোগ দিলো।,,

()()()

একের পর এক মোমের কাধে শাড়ী রাখছে চৈতি,স্মৃতি, নোভা,ইশু মিলে।,,,পরপরই আবার সরিয়ে নিচ্ছে।,, এ বলছে এটায় বেশি সুন্দর লাগছে,,,ও বলছে ওটায় বেশি সুন্দর লাগছে। এক প্রকার ঝগড়া লেগে গেছে প্রায়।,,এদের এসব কান্ড মোম বসে বসে চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে,,, এসবের মাঝেই জিয়া এসে ঢুকলো হাতে একটা প্যাকেট নিয়ে।

“মোমের ড্রেস এটায় আছে। নভ ভাইয়া পাঠাইলো।বলেছে দ্রুত রেডি হতে৷ বরের গাড়ি এই এলো বলে।,”

সবাই মিলে প্যাকেটটা খুলেই দেখলো খুব সুন্দর স্টোনের কারুকাজের একটি নীল লেহেঙ্গা।,, সাথে জুতো,জুয়েলারি সবই আছে।

“ওয়াও,,,”

চৈতির কথায় তার দিকে তাকিয়ে ইশু বললো..

“রাখ তোর ওয়াও।,,আমরা সবাই শাড়ী পরছি,,আর মোম লেহেঙ্গা পড়বে?”

নোভা বললো..

“সত্যিই,,,দিস ইজ নট ফেয়ার,,”

জিয়া গিয়ে লেহেঙ্গাটা মোমের হাতে দিতে দিতে বললো..

“মোম,, তুই এটা পড়ে আয়,,,দ্রুত।”

মোম শুনলো,,এমনিতেও শাড়ী পড়তে ইচ্ছে দিচ্ছে না,,,এতোদিন রিসোর্টে শাড়ী পড়ে থাকতে থাকতে এক প্রকার বিরক্তি চলে এসেছে তার।,,,লেহেঙ্গাটা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো মোম।

“নভ ভাইয়া সাফ সাফ মানা করেছে মোম যাতে শাড়ী না পড়ে।”

জিয়ার কথায় উদাস হলো সকলেই।,,,

“সে বললো,,,আর তুইও কিছু বললি না?”

চৈতির কথায় জিয়া তাকালো তার দিকে..

“আমার কি সেই সাধ্যি আছে?,,যে,, দা ডন অবয়ব রায়ানিশের মুখের উপর তর্ক করবো?”

কথাটাও ঠিক।তারা কেউই এই ৩য় বিশ্বযুদ্ধের মুখোমুখি হতে পারবে না,,,,,,স্মৃতি লাফিয়ে বসে উঠলো..

“এই নোভা,,,তুই তো নভ ভাইয়ার আপন বোন,,,তুই গিয়ে একবার বলনা?”

ইন্না-লিল্লাহ পড়লো নোভা,,,

“আমায় তুই পাগল পাইলি স্মৃতি আপু?অন্য ব্যপার হলে ওকে ডান।কিন্তু এই দু’দিকে যা দেখলাম,,,আমার ভাইয়াটা কিউটিপাইকে নিয়ে একটু পজেসিভ,,,তাই ওকে নিয়ে আমি কিছুই বলতে পারবো না।”

ইশু তুরি বাজিয়ে বললো..

“এই আমার ভাইয়াকে দিয়ে বলালে হয় না?,যতই হোক প্রায় সেইম এজ।,,শুনলেও শুনতে পারে।,,,”

কথাটায় জোর দিলো সকলেই,,,এর মাঝেই আবার নোভা বলে উঠলো..

“এই,,,ইশু,,,তোর ইউনিক ভাষাওয়ালা কেও বলিস,,বন্ধু তো,,হয়তো মেনে যাবে ভাইয়া।”

কথা মতোই দু মিনিটের মাথায় হাজির করা হলো নিশান আর তেজকে।

“কিয়া রে,,,বিবি, শালিরা,,,,তোন্ডা আমগোরে কিল্লাই ডাইকলা?তাও আবার তোমগো হাজুনি গুজুনির টাইমে?,,আনডা কি তোমগোরে হাজাই দিমু নি?”

ইশু বিরক্ত হলো..

“থামো তো তুমি,,,,”

“কেনো ডেকেছিস সেটা বল।বাইরে প্রচুর কাজ।”

নিশানের কথায় সবাই সরাসরি কথা বলতে লাগলো।,,,ইশু বললো..

“তোকে একটা কাজ করতে হবে ভাইয়া।,,,”

“দ্রুত বল কি?,, এখন আবার মার্কেট থেকে কিছু এনে দিতে পারবো না,,”

চৈতি মুখ বাকালো..

“উমমমও,,,এখন নিজের ঐ শাকচুন্নি বউ বললে তো ঠিকই যেতে।”

খেয়াল হলো নিশানের,,যে এখানে আখি নেই,

“এই আখি রেডি হচ্ছে না?”

মুখ বাকালো ইশু..

“তোর বউ তো আমাদের সাথে সাজবে না,,,তার নাকি এতে প্রবলেম হবে।তাই তিনি আমাদের থেকেও গর্জিয়াস সাজার জন্য একা একা সাজছেন।,”

অবাক হলো নিশান..

“নীল কে নিয়ে একা একা সাজছে??”

“হুহ,,,মাথা খারাপ?,নীল সোনা তো আব্বুর কোলে কোলে আছে।,,”

ইশুর থেকে কথা কেড়ে নিয়ে নোভা বললো..

“ওহ,,,তোর বউয়ের সাথে তোর শালিও আছে সেখানে।,,,”

চৈতি হেসে বললো..

“ভালোই হয়েছে,,নিশান ভাইয়ের ঐ পেঁচা মুখো শালি এখানে আসলে আমরা আর সাজা লাগতো না।,”

নিশান কথা ঘোরালো.

“আচ্ছা কি কাজ সেটা বল।।”

“নভ ভাইকে রাজি করাতে হবে।যে মোম লেহেঙ্গা নয় শাড়ী পড়বে।”

কথাটা শুনেই দু কদম পিছিয়ে গেলো নিশান।,,

“খাইছে রেহ,,,আমি নাই এখানে।,,”

বিরক্ত হলো সবাই,,,ইশু এবার তাকালো তেজের দিকে..

“তুমি অন্তত্য বলো,”

“এমা বউ,,,তুউউই কি আআরে হাগল হাইছো নি?,,আই হাইততাম ন।”

অনেক বোঝানোর পরেও রাজি হলো না দুজন।,,অবশেষে নিশান বললো..

“শোন তোদের একটা কথা বলি।,,আমি গুপ্তচরদের থেকে জেনেছি।”

সবাই একসাথে বললো..

“কি?”

“গতকাল হলুদের সময় কলোনীর কয়েকটা ছেলে মোমের দিকে অন্য ভাবে তাকিয়ে ছিলো।একটা তো কয়েকবার কথা বলতেও চেয়েছে,,তবে মোম পাত্তা দেয়নি তেমন।,,,,,এই ব্যপারটা আমাদের নভ বাজপাখি ঠিকই দেখেছে।,,,আজ সকালে খবর পেলাম,,যেই ছেলেটা মোমের সাথে কথা বলতে চেয়েছিলো সে ছাড়া বাকিগুলা হসপিটালে ভর্তি। ”

চোখ বড় বড় হয়ে গেলো সবার,,শুধু তেজ ছাড়া।কারন এই ব্যপারে সে সবই জানে।,,নোভা অবাক থেকেই বললো..

“আর যে কথা বলতে চেয়েছিলো সে? তাকে ভাইয়া ছেড়ে দিয়েছে?”

কথাটা শুনে আড়ালে হাসলো তেজ।,,নিশান বললো..

“তার কোনো খোজ পাওয়া যায়নি।রাত থেকে বাড়িও ফেরেনি শুনলাম।,,”

ইশু বলে উঠলো..

“হয়তো ভয়ে কোথাও পালিয়ে গেছে।”

তেজ আবারো হাসলো,,,আর মনে মনে বললো..

“সে অবয়ব রায়ানিশের কলিজায় হাত দিয়েছিলো,,, নভ বাজপাখির থেকে পালানো কি এতোটাই সোজা?,,গুনে গুনে ২৩ টুকরো করেছে ঐ ছোকরাকে।,,,এতোক্ষণে হয়তো নদীর হাঙরগুলো সব গুলো টুকরো খেয়ে হজমও করে ফেলেছে।,,”

নিশান আবারো বলতে লাগলো..

“সে তো পরের কথা,,,আমার সাধাসিধা ভাই তুলেনকেও ধমকেছে নভ ভাই।,,,কারন ঐ যে,, স্টেজে অজ্ঞান হওয়ার সময় মোমকে সে ধরেছিলো?,,,”

অবাক হয়ে জিয়া বললো..

“এ্যা!!!,, কি বলো?”

“সে আর বলতে?,,জানিস কেমনে ধমকেছে?,,,”

একথা বলেই নিশান অভিনয় করে নভের মতো গম্ভীর হয়ে বললো….

“বল তুলেন,,,,আমার মোমকে বাজে ভাবে টার্চ করিস নিতো?,,সত্যি করে বল,,”,,,,,, বেচারা তুলেন তো ভয়েই শেষ।,,,এখনো নভ ভাইকে এরিয়ে এরিয়ে চলছে,, ”

সব যেন সবার মাথার উপর দিয়ে গেলো,,,নভ এতো কিছু করেছে?কিন্তু কখন?কেউ তো কিছুই বুঝতে পারলো না,,,এখনো সবার সামনে কি স্বাভাবিক আছে নভ।,,,
সবাই বুঝলো,,,মোমকে লেহেঙ্গাই পড়তে হবে।,,,অগত্যা নিশান আর তেজ চলে গেলো রুম থেকে।,,,জিয়া একটু ভেবে বললো..

“এই,,,নভ ভাই মোমের জন্য এতোকিছু করেছে?,,ব্যপারটা তো এতো নর্মাল নাহ।,,, এই নভ ভাই কি মোমকে লাভ করে??”

সবাই প্রায় ৮০%শিওর যে তাদের দা গ্রেট নভ ভাইও অবশেষে প্রেমে পড়লো।,,নোভা বললো..

“কিন্তু যার প্রেমে পড়লো,,,সেকি জানে?,,”

“আসলেই,,,কোথায় মোম?এখনো বের হয়নি?”

জিয়া গিয়ে ওয়াশরুমে দরজা ধাক্কালো,মোম একটু খুলে মুখ বের করে বললো..

“ভাইয়ারা চলে গেছে?”

“হ্যা,,,তুই এখনো বের হোস নি কেন?”

এবার বেরিয়ে আসতে আসতে বললো মোম…

“তখন একটু দরজা খুলে দেখলাম ভাইয়ারা রুমে।”

“তো বের হলি না কেন?”

“কি করে বের হবো?ওড়না তো নেই নি ওয়াশরুমে।”

“ওহ,,,আচ্ছা। ”

+++চলবে+++

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here