তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৪১

0
719

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৪১

.
🍁
চারপাশ থেকে নানান সব কথা শুনতে হচ্ছে আমাকে রিদ খানকে নিয়ে। সবার ধারণা আমার রিদ খানের সাথে বিশেষ কোনো সম্পর্ক রয়েছে যার কারণে উনার সাথে একসঙ্গে রাত কাটিয়েছি আমি। আমার বয়সটা বিশেষ একটা না হলেও সবার নানান সব কথায় এতটা অন্তত বুঝতে পারি যে সবাই আমাকে খারাপ চোখেই নিচ্ছে বাজে মন্তব্যের সাথে সাথে। সবাই আমাকে একটা ক্রিমিনাল মতো থ্রেট করছে। কথায় কথায় বাজে ইংগিত দেয়া, খারাপ আচরণ করা, আমাকে এড়িয়ে চলা, ইত্যাদি সব কর্ম কান্ড করছে বিগত দুইদিন পর থেকে। কিন্তু আশ্চর্য বিষয় হলো যে ফাদার ও মাদার সবটা জানার পরও তারা কিছুই বলছে না আশ্রমের সদস্যদের যে তাঁরাই আমাকে রিদ খানের রুমে পাঠিয়ে ছিল এমন কিছু। প্রথম প্রথম তো বর্ষা ও কেয়া আমার ওপর গাঢ় সন্দেহ করেছিল। আমাকে নানান সব প্রশ্নের সমহীন হতে হয়েছিল। সারারাত কোথায় ছিলাম? নিজের উত্তরে জানাই কোথায় ছিলাম রিদ খানের সাথে সেটা। তৎক্ষনাৎ আবারও প্রশ্নে ছুড়ে মারে যে রিদ খানের সাথে সারারাত কি করছিলাম? কেন ছিলাম? ওদের কেন ডাকিনি? ইত্যাদি। আমি কেয়া ও বর্ষাকে সবটা খুলে বলতেই বুঝতে পারে আমার বলা প্রত্যেকটা কথা। বর্ষা আমার থেকে সবটা শুনার পর কেমন একটা যেন অস্থিরতা বোধ করছিল, যে ফাদার আমার এমনটা কেন করলো? আমাকে কেন রিদ খানের রুমে একা পাঠালো থাকার জন্য? আর যদি কোনো কারণে পাঠিয়ে থাকে তাহলে পরে কেন খবর নেই নি? বা আমাকে কেন রিদ খানের রুমে থেকে আনানো হয়নি? আমার সাথে খারাপ কিছু তো ঘটতে পারতো? বর্ষা এমন সব চিন্তা ভাবনায় করেই আমাকে রুমে রেখে একাই মাদারের সাথে কথা বলতে যায় আমার বিষয়ে। কিন্তু এতে আরও আবাক হতে হয় আমাদের কারণ বর্ষার কথা অনুযায়ী মাদার নাকি উল্টো বর্ষাকে বলে যে চুপ থাকতে ও নিজের কাজে মন দিতে। আমাকে নিয়ে না মাথা ঘামালেও চলবে।

.

মাদারের এমন অর্থহীন কথায় হতাশ হয়ে ফিরে আসে বর্ষা। মাদারের জবাবে বর্ষাকে হতাশ করলেও বর্ষার গাঢ় সন্দেহপূণতা রইয়েই যায় ফাদার ও মাদার প্রতি। কারণ আমার বয়সটা অপ্রাপ্ত হলেও বর্ষার বয়সটা ছিল প্রাপ্ত বয়সকর। তাই বর্ষা আমাদের থেকে আগভাগ অনেকটাই বুঝে থাকতো সবসময়। তাই বর্ষার সেদিনের পর থেকে নিজের সন্দেহপূণতা জন্য আমাকে আরও বেশি নিজের সাথে সাথে করে রাখে। সেই সাথে আশ্রামের মানুষের বাজে কথা উত্তরও দিত আমার হয়ে দুই দিন ধরে। আর এই বিগত দুই দিন যাবত আশ্রমের বেশ মানুষ আমাকে এড়িয়ে চলাটা আমার জন্য ছিল বেশ হতাশ জনক। কারণ আমি সবসময় বন্ধুমহলে থেকেছি হঠাৎ করে সবার থেকে বিচ্যুতি হয়ে যাওয়াটা ছিল আমার কাছে একটা শাস্তি মূলক কারাদন্ড। যার জন্য আমি বরাবরই কষ্ট ও অপমানিত হচ্ছিলাম সেই বন্ধুমহল থেকে ।

.

দুঃখ, কষ্টে, কান্নায় আমার বিগত দুইটা দিন কেটে যায়। আর এই দুই দিন যাবত রিদ খানের সাথে আমার কোনো রকম দেখে হয়নি। কিন্তু এই ব্যাক্তিটাকে নিয়ে সবাই কথা শুনিয়েছে ঠিকই। আর এই সম্পূর্ণ কথা গুলো নিজের রুমে বসে ভেবে নেই আমি। কথা গুলো ভেবেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় ঘুড়ি দিকে। বর্ষা ও কেয়া অনেকক্ষণ যাবত বাহিরের গেছে আমাকে রুমে বসিয়ে। এখন অবধি আসার নাম নেই। বলে গেছে আমার জন্য নাকি খাবার আনতে যাচ্ছে আমি রুমেই বসে থাকতে বাহিরে না যেতে। এটা বলে সেই অনেকক্ষণ ধরেই বাহিরের রয়েছে দুইজনই। আমি ঘুড়ি দিকে তাকিয়ে থেকে বর্ষা ও কেয়ার জন্য আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার মনোস্থির করি ওদের জন্য। আমার এমন ঘুড়ি দিকে তাকানোর মধ্যে দিয়েই হঠাৎ করে রুমের দরজাটি ঠাস করে উচ্চ স্বরে শব্দ করে উঠে। দরজার খুলার শব্দ কানে আসতেই চমকে উঠি আমি। বর্ষা ও কেয়া এসেছে ভেবে সাথে সাথে দরজা দিকে তাকায় আমি। কিন্তু দরজার সামনে দাড়িয়ে থাকা ব্যাক্তিটিকে দেখে আতংকে উঠে দাড়িয়ে উত্তেজিত কন্ঠে দ্রুত বলে উঠি……

.

—” এই আপনি এখানে…

.

আমার এমন কথায় রিদ খান তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে এগিয়ে আসতে আসতে বলে উঠে…………

.

—” কেন অন্য কাউকে আশা করেছিলে নাকি?

.

উনার এমন কথা মেজাজ খারাপ হয়ে যায় আমার। তাই হিটহেটে মেজাজ এ বলে উঠে…..

.

—” হুমমম ঠিক তাই । এখানে কেন এসেছেন?

.

—” কেন এখানে আসতে গেলে কি তোমার পারমিশন নিতে হবে আমার?

.

—” হ্যাঁ নিতে হবে খারাপ লোকটা। এই যানতো আপনি এখান থেকে……

.

আমার এমন কথায় রিদ খান দায়সারা ভাব নিয়ে উত্তরে বলে উঠে…..

.

—” ডাকছো খারাপ লোক আর বলছো ভালো কাজ করতে সেটা কি করে হয় বলো। খারাপ লোক তো খারাপ কাজটাই করবে তাই না। ভালোটা কি করে করি বলো তো। ভালো মানুষের গুণ হয় সবার কথা শুনা। যেমনটা তুমি এখন বললে এখান থেকে চলে যেতে। আমি ভালো হলে ঠিকই চলে যেতাম চুপচাপ। কিন্তু আফসোস খারাপ লোক তো তাই আপাতত যেতে পারছি না। তাই এখানে যেটা করতে এসেছি সেটাই করি এখন কেমন।

.

উনার এমন কথা মূহুর্তে ভয়ে চুপসে যায় আমি। কারণ আমি এক মূহুর্তে জন্য ভুলে গিয়েছিলাম উনার গুন্ডামীর কথা গুলো রাগে। তাই আগের কথা গুলো মনে করে একটা শুকনো ঢুক গিলে উনার দিকে ভয় ভয় তাকিয়ে থেকে ভয়াৎ কন্ঠে বলি…..

.

—” আপনি আমার সাথে এমন করছে কেন? আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি? যার জন্য আপনি আমাকে এতটা শাস্তি দিচ্ছেন। আপনি যানেন আপনার জন্য আমাকে সবার কাছ থেকে কতটা বাজে কথা শুনতে হচ্ছে সেই দিনের রাতের জন্য। সবাই আমাকে কতটা খারাপ খারাপ কথা শুনাচ্ছে আপনাকে নিয়ে। আমি নাকি আপনা সাথে রাত কাটিয়েছি আপনার টাকার জন্য। কেন করছেন আপনি আমার সাথে খারাপ এতটা আচরণ।

.

সম্পূণ কথা গুলো উনাকে বলতে বলতে আমার চোখে টলমল করে পানিতে। তখন আমার চোখ দুটো অশ্রু সিক্ত থাকলেও রিদ খানের চোখে ছিল ঘাড় রহস্য। উনি আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বাঁকা হেঁসে রহস্য জনক ভাব নিয়ে বলে উঠে…….

.

—” এটাই তো আমি চেয়েছিলাম।

.

উনার এমন কথার মানে আমি কিছুই বুঝতে না পেরে বলে উঠি…..

.

—” মানে…..

.
উনি আবারও রহস্যময় ভাব নিয়ে বলে উঠে….

.
—” তোমাকে আরও অনেকটা পথ পাঁড়ি দিতে হবে এই লাঞ্ছনার সাথে। এতে আমার কিছুই করার থাকবে না। কারণ আমি নিজেই চাই এমনটা হোক তোমার সাথে। আর এটা কেন চাই সেটাও তোমাকে বলতে বাধ্য নয়। এখন চুপচাপ চলো আমার সাথে…..

.

কথাটা বলেই আমার হাত চেপে ধরে টানতে টানতে নিয়ে যেতে লাগলো নিজের সাথে। আমি নিজেকে উনার হাত থেকে বাঁচানো জন্য প্রাণপূণ শক্তিতে ছুটার চেষ্টা করেই চলছি তারপরও উনার শক্তি সাথে বিন্দু মাত্রও পেরে উঠছিলাম না। উনি আমাকে আশ্রের সবার সামনে দিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছিল উনার গাড়ির দিকে। আর আমি চিৎকার করছিলাম উনার হাত থেকে বাঁচার জন্য। আমার এমন কান্নার আশ্রমের সবাই শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিল কেউ কিছু না বলে। আমাকে টেনে হেচড়ে নিয়ে যেতে দেখে কোথাও থেকে বর্ষাও কেয়া দৌড়ে আসে দাঁড়ায় রিদ খানের সামনে। রিদ খানের পথ আটকিয়ে। পরে বর্ষা চোখ মুখ লাল করে সাহসী কন্ঠে রেগে রিদ খানকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…….

.

—” আপনি রিদ খান বলে যেখানে সেখানে গুন্ডামী করে বেড়াবেন। আর সেটা আমাদের মেনে নিতে হবে। সেটা কখনোই হবার নয়। আপনি পৃপ্তীর হাতটা ছাড়ুন অসভ্য লোক নয়তো আমার খারাপ কেউ হবে না।

.

বর্ষার এমন কথা রিদ খান রেগে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বলো উঠে…..

.

—” আল্লাহ জবান দিয়েছে বলে যেখানে সেখানে সেই জবান খরচ করছেন না মিস। বিশেষ করে আমার মতো লোকের সামনে তো নয়ই। কারণ এই জবানবন্ধি করতে আপনার জিবটা ছিঁড়ে ফেলতেও আমার দুই মিনিট লাগবে না মিস। আর আপনার থেকে কে খারাপ হতে পারে সেটা আমিও দেখতে চাই।

.

কথাটা বলেই রিদ খান তার পিছনে থাকা আসিফ কে ডেকে তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…..

.

—” আসিফ এই দুই মিসকেই গাড়িতে তুল…..

.

—” জিই ভাই……

.

কথা বলেই রিদ খান আমাকে কোলে তুলে নেই আর আসিফ নামক লোকটি বর্ষা ও কেয়া অন্য বডিগার্ড দিয়ে ধরিয়ে জোর করে অন্য একটি গাড়িতে তুলে নেই। আমার এমন বিপদের মধ্যেও কেউ এগিয়ে আসিনি সবাই রিদ খানের ভয়ে চুপ করে জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল……….

.

(আপিরা আমার ফাইনাল পরীক্ষা চলতেছে। তাই গল্প লেখতে বসতে পারছি না। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পযন্ত কিছু বলতে পারছি না।)
.

.

.
চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here