ভ্যাম্পায়ার সিটি -(পর্ব_১১)

0
333

#ভ্যাম্পায়ার_সিটি
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_১১

“আকাশ আর অবনী শান্তশিষ্ট ভাবে ঘুমিয়ে আছে। তবে আগামীকাল তারা দু’জন এক সাথে ঘুমোতে পারবে কিনা তা উপর ওয়ালাই ভালো জানেন। এমন সময় হুট করেই আকাশ অবনীকে নিয়ে একটা দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম থেকে উঠে পড়ে। আকাশ ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখেছে কেউ অবনীকে তার থেকে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে। যার কারনে সে ঘুমের রাজ্যে থেকে বেরিয়ে আসে। ঘুমের রাজ্য থেকে বেরিয়ে আসার পর দেখে অবনী তার পাশে গুটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে। স্বপ্নটা যেনো বেশ ভয়ানক ছিল। চোখে-মুখে ঘাম চলে এসেছে আকাশের। কিন্তু আকাশ পরক্ষণেই অবনীকে সুস্থ-স্বাভাবিক ভাবে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে কিছুটা চিন্তা মুক্ত হয়। তবে তার মন থেকে এখনো ভয়ের রেষ কাটেনি। তাই সে অবনী আর তার মাঝখান থেকে বালিশ টাকে সরিয়ে ফেলে অবনীকে আলতো পিঠে নিজের কাছে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরে। তবে তার চিন্তার মাত্রাটা যেনো এখনো কমেনি। অবনীকে নিয়ে দেখা ভয়ানক স্বপ্নটা বাস্তবে বেশ প্রভাব ফেলেছে তার উপরে। তাই সে অবনীকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে মনে…মনে বলতে থাকে,

–নাহ মেয়েটাকে নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তা হচ্ছে আমার। আল্লাহ না করুক আমার স্বপ্নটা যদি কোনো ভাবে বাস্তব হয়ে যায়, তাহলে তো বেশ খারাপ হবে জিনিস টা। নাহ অবনীকে আমার জলদি বিয়ে করতে হবে। আজ বাদে আগামীকাল শুক্রবার। দুনিয়া এদিক-সেদিক হয়ে গেলেও মেয়েটাকে আমি আগামীকাল নিজের করে নিব। আমি আর অবনীকে নিয়ে কোনো ধরনের রিস্ক নিতে চাইনা। এমনিতেই সে আমাকে মরনের হাতে ছেড়ে দিয়ে নিজের অনিচ্ছায় দু’বছরের জন্য গায়েব ছিল। এবারো যদি এমন কিছু হয় তাহলে আমি শেষ। তাই এখন আমার একটাই লক্ষ্য মাত্রা। আগামীকাল যে করেই হোক বিয়েটা সম্পন্ন করতে হবে। আর সেই পর্যন্ত মেয়েটাকে নিজের কাছে আগলে রাখতে হবে। আমি সেটাই করবো। মেয়েটাকে আগামীকাল বিয়ে করার আগ পর্যন্ত নিজের চোখের সামনেই রাখবো। এখন মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরা অবস্থাতেই ঘুমিয়ে পড়ি।
.
আকাশ অবনীকে জড়িয়ে ধরা অবস্থাতেই ঘুমিয়ে পড়ে। “অপরদিকে অবনীও ঘুমের ঘোরে ফিল করে কেউ তাকে নিজের বাহুতে জড়িয়ে নিয়েছে। কিন্তু সে ঘুমের রাজ্য বিচরণ করায় এই বিষয়ে বেশি একটা ভ্রূক্ষেপ করে না। তবে সে ঘুমন্ত অবস্থাতে নিজের অজান্তেই আকাশকে জড়িয়ে ধরে। দেখতে দেখতে সকাল হয়ে এসেছে। সকাল হতেই আকাশের আগে অবনীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। অবনী ঘুম থেকে উঠে দেখে তাঁদের দু’জনের মাঝখানে থাকা বালিশটা গায়েব। আর কেউ তাকে লেপ্টে জড়িয়ে ধরে আছে। অবনী বিষয়টা নিয়ে শুরুতে কেমন যেনো নার্ভাস ফিল করে। কিন্তু পরবর্তীতে যখন দেখতে পায় আকাশ তাকে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে, তখন তার নার্ভাসনেসটা একদম চলে যায়। সেও এবার আকাশকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে। আলতো করে জড়িয়ে ধরার পর অপলক দৃষ্টিতে এক নজরে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। অবনী আকাশের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা দেখে মনে হচ্ছে, সে যেনো দুনিয়ায় সব চাইতে সুন্দর জিনিস টাকে নিজের চোখ দিয়ে দেখছে। যেই সৌন্দর্যময় জিনিসটা তার স্বাভাবিক চাহনি টাকে অপলক দৃষ্টি বানিয়ে দিয়েছে। এভাবে কিছুক্ষণ যাওয়ার পর আকাশের ও ঘুম ভেঙ্গে যায়। আকাশ নাড়াচাড়া দিয়ে উঠে। অবনী আকাশকে ঘুম থেকে উঠতে দেখে তাড়াতাড়ি করে সে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে। কারন সে কোনো ভাবেই আকাশের সামনে লজ্জায় পড়তে চায় না। একটা
নারী-পুরুষের মাঝে আকাশ-পাতাল তফাৎ আছে। একটা পুরুষ যখন কোনো নারীর দিকে অনুরাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে, তখনও একটা নারীকে উদ্বিগ্ন বা অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়। সেখানে কোনো নারী যদি কোনো পুরুষের দিকে অনুরাগী দৃষ্টিতে তাকায়, আর তার বিপরীতে পুরুষটা সেটা দেখে নেয়, তাহলে তো আর কথাই নেই। একজন পুরুষ লজ্জাটাকে সাময়িক সময়ের জন্য হলেও কন্ট্রোল করতে পারে। কিন্তু একটা নারী লজ্জায় পড়ার সাথে সাথেই সেটা নিয়ে হাইপার হয়ে যায়। তাই অবনী আগ থেকেই নিজেকে সামলে নিয়ে এমন একটা ভঙ্গিমা করেছে, যে সে কিছুই জানে না। সে এই মাত্র আসমান থেকে জমিনে টপকেছে। “অপরদিকে আকাশ ঘুম থেকে সজাগ হওয়ার পর অবনীকে ছেড়ে দিয়ে তার কপালে আলতো করে একটা চুমু একে দেয়। তারপর ফ্রেশ হওয়ার জন্য বিছানা ছেড়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। আকাশ ওয়াশরুমে যাওয়ার পর অবনী আকাশের এমন কর্মকান্ডে মুচকি মুচকি হাসতে থাকে। আর মনে মনে বলতে থাকে,

–প্রিয় তুমি যাই করো না কেন, ভিতর থেকে তুমি কতোটা পরিষ্কার তা একমাত্র খালি আমিই জানি। তোমার শরীরে মানুষ হাজারটা কলঙ্কের দাগ লাগালেও তোমার ভিতর গত সততা সেই দাগ গুলোকে মোচন করে দিবে। সত্যিই আমি তোমাকে পেয়ে অনেক লাকি।
.
অবনী নিজে নিজে বিরবির করছিল আকাশকে নিয়ে। এমন সময় আকাশ ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসার শব্দ পেয়ে অবনী চুপচাপ হয়ে যায়। আকাশ ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসে দেখে অবনী এখনো ঘুমিয়ে আছে। তাই সে অবনীকে ডেকে ঘুম থেকে তোলে তাকে ফ্রেশ হতে পাঠায়। অবনীও ভঙ্গিমা করতে করতে ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে চলে যায়। আর আকাশ শার্ট গায়ে দিয়ে নিচে চলে আসে। নিচে এসে রাজদের সাথে বসে কথাবার্তা বলতে থাকে। রাজ আর বাকি সবাই ভোর সকাল ছয়টার দিকেই উঠে গেছে। কিন্তু রাতের বেলায় আকাশ ঠিক মতন ঘুমোতে না পাড়ায় আজ ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হয়ে গেছে৷ ঘড়ির কাটা নয়টা ছুঁই ছুঁই অবস্থা। আকাশ এবং অনেকেই নিচে সোফার মধ্যে বসে কথাবার্তা বলছিল। এমন সময় হুট করেই আকাশের বাংলোতে গার্ড সহ এক্সট্রা করে দুই থেকে তিনজন লোক প্রবেশ করে। তাঁদের মধ্যে থেকে একজন পুরুষ আর বাকি দু’জন ফিমেল। ফিমেলদের থেকে একজন মহিলা আর পুরুষ মোটামুটি বয়স্ক। আর বাকি একজন যে আছে সে একদম অল্প বয়সী। মনে হয় যেনো সবে মাত্র ক্লাস নয়-দশ বা কলেজে পড়ে। তারা ঘরের ভিতরে প্রবেশ করতেই অস্থিরতা শুরু করে দেয়। তখনি রাজ তাঁদেরকে জিজ্ঞাস করে,

–এই যে মুরব্বি কি চাই আপনাদের?
.
মুজাহিদের কথার উত্তরে পুরুষ লোকটা বলে উঠে,

–আমরা আমাদের মেয়ের খোঁজে এসেছি।

–মেয়ের খোঁজে এসেছেন মানে?

–টিভিতে আমরা আমাদের হারিয়ে যাওয়া মেয়ের ছবি দেখেছি। সেখানে আমাদের মেয়ের ঠিকানা দেওয়া ছিল। যেই ঠিকানা অনুযায়ী আমরা এই বাড়ি পর্যন্ত এসে পৌঁছেছি।
.
মুজাহিদ লোকটার কথা শুনে চুপ হয়ে যায়! আকাশ ও থতমত খেয়ে গেছে। কারন তারা সকলেই বুঝে গেছে তারা কার খোঁজে এই বাড়িতে এসেছে। তাই সবার মাঝে নিরবতা এসে বিরাজ করেছে। কেউ কোনো কথা বলতে না। এমন সময় অবনী সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে উপর তলা থেকে নিচে নেমে আসে। অবনী নিচে নেমে আসতেই অবাক হয়ে যায়। কারন সামনের লোক গুলোকে কেমন যেনো পরিচিত মনে হচ্ছে। “অপরপাশ থেকে পুরুষ এবং বয়স্ক মহিলাটা অবনীকে দেখতে পেয়ে দৌড়ে এসে তাকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে শুরু করে। কিন্তু অবনী তাঁদের আচরণে পুরোপুরি শকট হয়ে গেছে। কারন সে এখনো পুরোপুরি ভাবে কিছুই বুঝে উঠতে পারেনি। তাই সে বেকুবের মতন তাঁদের দিকে ছলছল করে তাকিয়ে আছে। অবনীর এমন ভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে এবার বয়স্ক মহিলাটা বলে উঠে,

–কিরে মা তুই আমাদেরকে চিনতে পারছিস না?
আমরা তোর হারিয়ে যাওয়া মা-বাবা।
.
বয়স্ক মহিলাটার মুখে এমন কথা শুনে অবনী বড়সড় একটা ঝাটকা খায়। তবে সে ঝাটকা খেলেও নিজেকে সামলে নিয়ে সেই দু’জন মানুষকে বলে,

–জ্বি আপনাদের চেহারাও আমার কেমন যেনো বেশ পরিচিত মনে হচ্ছে। তবে আপনারই যে আমার হারিয়ে যাওয়া মা-বাবা সেটা আমি শিওর হয়ে উঠতে পারছি না।
.
অবনীর এই ধরনের কথা শুনে সেই বয়স্ক মহিলাটা অবনীকে আবার বলে উঠে,

–আরে অবনী আজ থেকে প্রায় ছয় বছর আগে তোর ছোট বোন আফিয়াকে তোর খালার কাছে রেখে তুই আমি আর তোর বাবা মিলে কোনো এক জায়গায় যাওয়ার জন্য গাড়িতে করে সফরে বেরিয়ে ছিলাম। এমন সময় মাঝ পথে আমাদের গাড়ি এক্সিডেন্ট করে। যার ফলে অনেকই নিজের প্রাণ হারায়। কিন্তু আমি আর তোর বাবা বেঁচে যাই। আর তুই সেই এক্সিডেন্টেই আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছিস। আমরা শুরুতে ভেবেছি তুই হয়তো মরে গেছিস। কিন্তু ঘটনাস্থলে নাকি পুলিশ তোর লাশ অনেক খোজাখুজি করেছে, কিন্তু তারা তোর লাশ সনাক্তই করতে পারেনি। আর পারবেই বা কি করে, তুই তো সেই জায়গা থেকে হুট করেই কোথায় গায়েব হয়ে গেছিস।
.
অবনী সেই বয়স্ক মহিলাটার কথা শুনে বুঝে ফেলে এরাই তার মা-বাবা। তাই সেও এবার তাঁদেরকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে আরম্ভ করে। অবনীর মা অবনীর ছোট বোনকেও ডেকে কাছে আনে। আফিয়াও নিজের বড় বোনকে দেখতে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। সে এতোদিন তার বাবা মায়ের কাছে তার হারিয়ে যাওয়া বোনের কথা খালি শুনেই বেড়াতো। কিন্তু সেই বোন আজ তার চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আফিয়াও অবনীকে জড়িয়ে ধরেছে। পাশ থেকে সবাই অবনী আর তার পরিবারের মিলিত হওয়ার খুশি টাকে উপভোগ করছে। এভাবে কিছুটা সময় যাওয়ার পর সবাই স্বাভাবিক হয়। স্বাভাবিক হওয়ার পর অবনীর বাবা অবনীর হাত ধরে বলে,

–অবনী মা এবার আমাদের সাথে বাড়ি চল।
আজ বহু বছর পর বাড়ির মেয়ে আবার বাড়িতে ফিরে যাবে।
.
আকাশ পাশ থেকে সোফায় বসে এতোটা সময় তাঁদের সমস্ত কিছু দেখছিল। কিন্তু অবনীর বাবার কথা শুনে আকাশ তড়িৎগতিতে সোফা থেকে উঠে অবনীর বাবার দিকে তেড়ে আসে। তারপর অবনীর হাত থেকে ঠুস করে অবনীর বাবার হাত ঝাড়ি দিয়ে সরিয়ে দিয়ে অবনীকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে তার বাবাকে বলে,

–এই আপনি অবনীকে নিয়ে যাবেন মানে এটা কেমন কথা?

–ওমাহ ঘরের মেয়েকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাবো না?

–নাহ আপনারা ওকে নিয়ে যেতে পারবেন না।
দেখুন এমনিতেই আমি আপসেট হয়ে আছি অবনীকে নিয়ে। তার উপরে খামোখা অবনীকে আমার চোখের আড়াল করবেন বলে ইচ্ছে পোষণ করিয়েন না আপনারা। তাহলে কিন্তু অনেক খারাপ হবে।

–আরে বাবা তুমি এমন করছো কেন? আমরা আজ এতোদিন পর আমার মেয়েকে ফিরে পেয়েছি। আমরা কি তাকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে যাবো না?

–নাহ যাবেন না। কারন অবনী আর আমি আগামীকাল বিয়ে করতে চলেছি। আর তার থেকেও বড় কথা হচ্ছে সে আমার দুনিয়া। তাকে আমি নিজের জীবনের চাইতেও বেশি ভালোবাসি। তাই এক সেকেন্ডের জন্যেও অবনীকে আমি চোখের আড়াল করবো না। আমি চাইনা সে আমার চোখের সমানে থেকে আড়াল হয়ে আবার কোনো বিপদের মুখে পড়ুক।

–তো বাবা এখন আমরা কি করবো বলো?
আমরা এতো দূর থেকে ছুটে এসেছি ঘরের মেয়েকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তুমি তো তা করতে দিচ্ছো না। তো এখন তুমিই বলো আমাদের কি করণীয়?

–আপনারা সহ আমাদের বাসায় থাকুন। আগামীকাল ওকে আমি নিজের করে নেই। তারপর না হয় দেখা যাবে বাকিটা।

–আচ্ছা অবনীও কি তোমায় ভালোবাসে?
এই অবনী মা তুই ও কি এই ছেলেটাকে ভালোবাসিস?

–হ্যাঁ বাবা আমিও ওকে ভালোবাসি।

–ঠিক আছে তাহলে তো আমাদের আর কিছুই বলার নেই। তবে বিয়েটা দুয়েক দিক পিছিয়ে নিলে ভালো হতো। কারন আত্মীয়-স্বজনকে অবনীর বিষয়ে বলা যেতো।

–দেখুন আমার হাতে এতো সময় নেই। আগামীকাল আমরা বিয়ে করছি সেটাই ফাইলাম। আপনারা আর এই বিষয় নিয়ে কোনো ধরনের দ্বিমত পোষণ করিয়েন না অনুরোধ। তবে আপনাদেরকে একটা কথা বলছি, পরবর্তীতে আপনারা চাইলে আত্মীয়-স্বজনকে ইনভাইট করে আবার আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠান করতে পারেন।

–ঠিক আছে বাবা তাহলে তোমরা যেভাবে ঠিক মনে করো সেভাবেই করো। কারন আমরা চাইনা আমাদের মেয়ে টাকে কোনো ভাবে কষ্ট দিতে। আজ এতো বছর পর মেয়েটাকে ফিরে পেয়েছি। আমাদের মেয়ে যেটাতে খুশি থাকবে আমরা সেটাই করবো। তাই তোমরা আগামীকাল বিয়ের আয়োজন করো। আর আমরা তোমার বাসায় অবস্থান করছি।

–জ্বি ধন্যবাদ।
এই রাজ ঘরের কাজের মানুষকে উনাদের জন্য দু’টো রুম সুন্দর ভাবে গোছগাছ করে রাখতে বল।
আর উনাদেরকে আপাতত আমার রুমে নিয়ে গিয়ে বসা।

–ঠিক আছে ভাই।
এই যে আংকেল আন্টি আপনারা আমার সঙ্গে আসুন।
.
রাজ অবনীর মা-বাবা এবং ছোট বোনকে সঙ্গে করে নিয়ে যায় আকাশের রুমে বসার জন্য। এদিকে অবনীর মা-বাবা আর ছোট বোন রাজের সাথে যেতেই অবনী আকাশকে বলে,

–এই যে মিস্টার, আপনার বউ টাকে তো কেউ খেয়ে ফেলবে না। বাপরেহ বউটা একটু চোখের আড়াল হবে সেই কথা উঠতেই মহাশয় যেভাবে তেড়ে আসছে বাবার দিকে, মনে হচ্ছে যেনো উনারা আমার বাবা-মা নয়। মনে হচ্ছে যেনো উনারা অন্যকেউ।

–এই অবনী একদম কথা বলবা না। এমনিতেই আমার মনে কু কু ডাকছে। তার উপরে আমি তোমাকে এই অবস্থায় আড়াল হতে দিব সেটা কখনোই হবে না। আমার বউ আমার চোখের সামনেই থাকবে।

–ইশ রে কি ভালোবাসে বরটা আমাকে।

–হুম অনেক ভালোবাসি।

–আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোমার চোখের আড়াল হবো না। কিন্তু এখন বাবা-মা আর ছোট বোনের সাথে কথাবার্তা বলি গিয়ে।

–ঠিক আছে যাও।
.
অবনী নিজের রুমে ফিরে আসে তার বাবা-মায়ের সাথে কথা বলার জন্য। এভাবেই দুপুর হয়ে গিয়েছে। দুপুর হতেই সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়া করে আকাশ আর অবনী নিজদের রুমে চলে এসেছে। আর অবনীর মা-বাবা এবং ছোট বোন তাঁদের জন্য ঠিক করা রুমে গিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে। এদিকে আকাশ রুমে আসতেই অবনীকে বলে,

–এই রেডি হও শপিং করতে যাবো। কারন রাতের বেলায় সমস্ত দোকানপাট বন্ধ থাকবে।

–এই শপিংয়ের প্রয়োজন নেই।
আমার যা আছে তাতেই চলবে।

–অবনী বেশি কথাবার্তা বলিও না। তোমায় আমি যেটা বলেছি সেটা করো।

–আচ্ছা ঠিক আছে আমি রেডি হচ্ছি।

–হুম জলদি।
.
আকাশের কথায় অবনী চটজলদি রেডি হয়ে নেয়। তারপর আকাশ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে অবনী সহ শপিংয়ের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। তারপর শপিংমলে পৌঁছে আকাশ অবনীর জন্য অনেক কেনাকাটা করে। এর মধ্যেই সময় পেরিয়ে মাগরিবের ওয়াক্ত হয়ে যায়। মাগরিবের ওয়াক্ত হতেই শপিংমল বন্ধ করে দেওয়ার উপক্রম চালু হয়ে গিয়েছে। দেখতে দেখতে শপিংমল পুরো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আকাশদের ও কেনাকাটা শেষ। তাই তারা বাড়ি আসার জন্য রওয়ানা হয়। বাড়ি ফিরে আসার মাঝপথেই মাগরিবের আজান হয়ে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে। তাই ড্রাইভার একটু চালু ভাবে গাড়ি চালাতে আরম্ভ করে। “অন্যদিকে অন্ধকার হতেই ক্রাউন কফিনের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে তার অনুসারী সবাইকে একজোট করে অবনীকে খোঁজার উদ্দেশ্যে আকাশের বাসায় আসার জন্য রওয়ানা হয়। “এদিকে আকাশরাও প্রায় বাসার কাছাকাছি চলে এসেছে। কিন্তু তাঁদের কারোর এই জানা নেই একটু পরে ক্রাউন নামক ভ্যাম্পায়ারের সাথে তাঁদের বাঘে-সিংহের লড়াই হবে…

চলবে….

ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।
সবাই গল্প সম্পর্কে নিজেদের পার্সোনাল মতামত দিয়ে যাবেন। কেউ অনুগ্রহ করে Next আর Nice লিখে কমেন্ট করবেন না। আর আজকের কমেন্ট টার্গেট ২২০। যদি সম্ভব হয় পূরণ করে দিবেন।

গল্পটা শেষের পথে প্রায়।
আর কয়েক পর্বের মধ্যে সমাপ্তি ঘটবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here