কাননবালা,১৫,১৬

0
554

#কাননবালা,১৫,১৬
#আয়েশা_সিদ্দিকা
পর্বঃ১৫

তাজ সকাল থেকেই অলসভাবে বিছানায় শুয়ে ছিল।শরীর মন দুটোই ভীষণ অস্থির তার।সেতুর দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী গতকাল তাজ নীতুর অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছে।একটা পলক দেখার আশায় কিন্তু কোথাও নীতুকে দেখতে পায়নি।তাজের ভীষণ চিন্তা হচ্ছে। নীতু শান্ত ও সরল ধরনের মেয়ে। কোন বিপদ হয়নি তো আবার?এই ঢাকার শহরে নীতু নিজেকে মানিয়ে চলতে পারছে তো?
সেতু প্লাজো আর টপস পড়ে চেয়ারে দু পা উঠিয়ে মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে পড়ছে।তাজ অবহেলিত চোখে একবার সেতুর দিকে তাকায়। প্লাজো খানিকটা উঠে গিয়ে সেতুর ফর্সা পায়ের গোড়ালির উপরের ভাগটা দেখা যাচ্ছে। তাজ দ্রুত দৃষ্টি সরিয়ে নেয়।সেতুর এই অষ্টাদশী সৌন্দর্য তাকে পুলকিত করে না।তিন কবুলের মায়া তাজকে জড়াতে পারে না!
তাজ সাবধানী স্বরে সেতুকে বলে,”বাড়ির সবার সাথে তোমার কথা হয়?কেমন আছে তারা?”

সেতু পড়া থামিয়ে কপাল কুঁচকে বলে,”হয়তো।ভালোই আছে সবাই।”

“আর তোমার নীতু আপি কেমন আছে?”

সেতু বইয়ের পাতা উল্টাতে উল্টাতে বলে, আপি ভালোই আছে।সকালেই তো কথা বললাম।”

“রোজ কথা বলো তোমরা?”

সেতু এবার তাজের দিকে সম্পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায়।বিয়ের পর থেকে তাজকে সে গম্ভীর ধরনের পুরুষ হিসেবে জানে।আলগা ভাব সে করে না।আজকে তাজকে এত কথা বলতে দেখে কিছুটা অবাকও হয়।মনের কৌতুহল দমিয়ে রেখে বলে,”হ্যা রোজই তো হয় কথা।তবে কাল কথা হয়নি।আপি সারাদিন হসপিটালে ছিলো তো!”

তাজের বুকের রক্ত ছলাৎ করে ওঠে।চোখে নেমে আসে মেঘের ছায়া!ঘাবড়ানো স্বরে বলে,”কি হয়েছে নীতুর?”

“কিছুই হয়নি আপির।পাশের ফ্লাটের আন্টিকে নিয়ে হসপিটালে গিয়েছিল!”
সেতু লক্ষ্য করলো না তাজের স্বস্তিদায়ক নিঃশ্বাস! মুখে ফুটে ওঠা মৃদু হাসি। সেতু আবার পড়ায় মনোযোগ দিলো।

শুক্রবার বলেই তাজ সকাল থেকে ঘরে শুয়ে ছিল।জুমার নামাজের সময় হওয়ায় তাজ ট্রাউজার আর গেঞ্জি নিয়ে ওয়াশরুমে যায়।সেতু পড়া শেষ করে নিজের আলমিরায় কাপড় ভাজ করে রাখছিল। কতক্ষণ পর তাজকে ফ্রেশ হয়ে বেড়োতে দেখে সেতু আঁড়চোখে তাজের দিকে তাকায়! কি স্নিগ্ধ একটা বর তার!ভেবেই সেতু আপনমনে লজ্জা পায়।
হুট করে রাবেয়া বেগমকে তাদের রুমে ঢুকতে দেখে সেতু নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।রাবেয়া বেগম উচ্চস্বরে বলে উঠেন,”সকাল থেকে একবারও রুম থেকে বের হওনি শুধু খাওয়া ছাড়া বউমা।আমিই যদি সব কাজ করি তবে তুমি কিসের বউ?”

সেতু নাক মুখ কুঁচকে বলে,”আমি পড়ছিলাম মা।”

রাবেয়া বেগম সেতুর কথায় তেতে উঠে বলেন,”সংসার ধর্ম পালন না করে তুমি পড়াশোনা করছো?এত পড়াশোনা করতে তোমাকে কে বলেছে?যতদূর পড়েছো এটাই ঠিক আছে আমার নাতি নাতকুর মানুষ করতে।পড়াশোনার নামে ফাঁকিবাজি করা লাগবে না।!”

তাজ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পাঞ্জাবি পড়ছিল।সবটাই সে শুনতে পেলেও কোন প্রতিত্তোর করলো না।খুব যত্ন করে হাতে পায়ে লোশন মাখা শুরু করলো।
সেতু আলমিরার দরজা ঠাস করে লাগিয়ে দিয়ে বলে,”মা আপনি যদি ভেবে থাকেন আমি পড়াশোনা করছি বা করেছি আপনার ছেলের ট্যা ট্যা বাচ্চাদের পালন করতে তবে আপনি ভুল ভাবছেন।আমার নিজের জন্য আমি পড়াশোনা করছি।দেখা গেলো কিছুদিন পর আমাকে আপনার ভালো লাগলো না তখন আবার আপনার একমাত্র ছেলেকে বিয়ে দিবেন।তখনকার মাটি শক্ত করছি আমি।”
রাবেয়া বেগম কি বলবেন বুঝতে পারলেন না।রাগান্বিত চোখে ছেলের দিকে তাকালেন।ছেলেকে চুপ থাকতে দেখে রাবেয়া বেগম ফের বললেন,”তোমাকে ছেলের বউ করে এনেছি কেন?পূজা দিবো আমি তোমাকে?বুড়া মানুষ হয়ে একা একা রান্না করি আর ছেলের বউ হয়ে পা তুলে খাবে তুমি।”

সেতু এবার হা হা করে হেসে দিয়ে বিছানায় বসে পরে।শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে বলে,”মা মিথ্যে বলবেন না।গত সপ্তাহে আমি রান্না করলাম। আপনি শত ভুল ধরে আমার সাথে গজর গজর করলেন।অথচ আপনি আমাকে বুঝিয়ে দিলেই হতো।আমার রান্না যখন খেতেই পারেন না তবে কিসের জন্য রান্না করবো?”

“ছি ছি কেমন মেয়েমানুষ তুমি?আমার এভাবে কপাল পুড়লো।কিরকম বউ চাইলাম আর পেলাম কি?”‘….রাবেয়া বেগম আর্তনাদ করে বলেন।

সেতু লাফ দিয়ে খাট থেকে নেমে বলে,” কপাল আমারো পুড়েছে।আমি যা এক্সপেক্ট করেছি তা কি পেয়েছি তবে আপনারা পাবেন কেন?আপনাদের বেলা ষোলকলা আর আমার বেলা কাঁচকলা হবে কেন?”……এই কথা বলে সেতু আঁড়চোখে একবার তাজের দিকে তাকিয়ে ফোঁস ফোঁস করতে করতে রুম থেকে বের হয়ে যায়।

তাজ মাথায় টুপি পড়ে বের হচ্ছিল মসজিদের উদ্দেশ্যে।রাবেয়া বেগম চিল্লায়ে বলে উঠলেন,”দেখলি তোর বউয়ের ব্যবহার?কেমন বেয়াদবি করলো আমার সাথে। তুই মুখে কুলুপ এঁটেছিস কেন?কিচ্ছু বললি না কেন ওকে?”

তাজ দরজার কাছে দাঁড়িয়ে মায়ের দিকে ঘুরে বললো,”মা সেতুকে এই ঘরের বউ করে তুমি এনেছো।ওর ভুলের দায় তো আমার না!আমি যাকে চিনতাম না, জানতাম না তাকে হুট করে কি করে বদলাবো?আর যেখানে আমি ওর স্বামী হয়েই উঠতে পারিনি সেখানে ওকে শাসন করার অধিকারও আমার নেই।আজ এখানে যদি নীতু থাকতো তবে তোমার সাথে বেয়াদবি করার শাস্তি আমি নিজেই দিতাম।অবশ্য নীতুর দ্বারা মুরব্বিদের সাথে বেয়াদবি করা কখনোই হত না!আমার নীতু এরকম মেয়েই নয়!”…….এই কথাগুলো বলে তাজ দপদপ পা ফেলে চলে গেলো। রাবেয়া বেগম ধপাস করে খাটের উপর বসে পড়লো।তার মাথা ঘুরাচ্ছে! নিজের সিদ্ধান্তের কারণে আজ ছেলে এবং ছেলের বউ দুজনের কাছেই সে খারাপ! এ কষ্ট তিনি সইবেন কি করে?

**************
সকাল থেকেই নীতু ভীষণ ব্যস্ত।শুক্রবার দিনটা ফ্রি থাকে বলে সব কাজ গুছিয়ে রাখে।এক সপ্তাহের জন্য মশল্লা ব্লেন্ড করে রাখে,কাপড় চোপড় সব পরিষ্কার করে রাখে। কোনদিন কোন কাপড়টা পড়বে তাও আয়রণ করে ভাজ করে রাখে।ঘর মুছে ঝকঝকে তকতকে করে রাখে। সাথি সোফায় বসে টিভি দেখছিল।নীতুকে এত কাজ করতে দেখে সাথির মেজাজ খারাপ হয়।এত কাজ কিভাবে করে মানুষটা?

সাথি হেলেদুলে রান্নাঘরে গিয়ে দেখে নীতু পিঠা বানাচ্ছে। সাথি চোখ চোখ বড় বড় করে ফেলে।সাথি এখন বিশ্বাস করে নীতুর দ্বারা সব সম্ভব ।সাথি দেয়ালে হেলান দিয়ে বলে,”আপু তোমার ক্লান্ত লাগে না এত কাজ করতে?”
নীতু পিঠা ভাজতে ভাজতে বলে,”ক্লান্তি কিসের?নিজের কাজে ক্লান্তি আছে?”
“তারপরও আমার ভাগের কাজটুকুও তুমি করো।ছয়টা দিন অফিস করার পর এই একটা দিন তুমি রেষ্ট নাও না।আমার প্রচুর খারাপ লাগে।”….. সাথি মুখ অন্ধকার করে বলে।
নীতু সাথির অভিমানী মুখটার দিকে তাকিয়ে বলে,” পুচকুটা আসুক তখন আমি আর পুচকু আয়েশ করবো আর তুই কাজ করবি।এখন ছুটি কাটিয়ে নে!”

” পিঠা বানাচ্ছো কেন?”

নীতু একটা প্লেটে সাজের পিঠা আর কাঁচামরিচ, সরষে ভর্তা সাজিয়ে সাথির সামনে রেখে বলে,”সেদিন শুনলাম রিপনকে ফোনে বলতেছিলি তোর এই পিঠা খেতে ইচ্ছে করছে।তাই আজ বানিয়ে দিলাম।খেয়ে দেখতো কেমন হয়েছে?”
সাথির চোখে জল এসে যায়। নীতু আপু এত ভালো কেন?একদম মা মা আদর কেন তাকেই করতে হবে?
নিজের চোখের জল মুছে বলে,”আমার সাথে তুমি না খেলে আমি কিন্তু খাবো না।”
নীতু সাথির পাগলামো কথায় হেসে দেয়।

*************
অনীক তখন রুমির সাথে একটা কমিটমেন্টে। অভীক নিজের নতুন অফিসে পাকা পোক্ত ক্যারিয়ার গড়তে ব্যস্ত।সেই ব্যস্ত সময়ই নীতুর সাথে দেখা হয়েছিল অভীকের।
নীতুর বড় বোনের বাসা তখন ছিল চিত্রালীতে।সেখানেই অভীকের ফুপুর বাসা।রুশিয়া বেগম ননদের বাসায় থাকতেই নীতুর সাথে আলাপ হলো।এক আলাপেই তার নীতুকে খুব ভালো লেগে গেলো।ঠিক করলেন ছেলের বউ করবেন।কিন্তু অনীক রাজি হলো না।তার নিজস্ব পছন্দ আছে।তারপরও রুশিয়া বেগম দমলেন না।ছোটছেলের উপর অগাধ বিশ্বাস নিয়েই নীতুর বাসায় হাজির হলেন কয়েক পদের বাহারি মিষ্টি আর ফলমূল নিয়ে। ননদের কোন বারণ শুনলেন না।ছেলেকেও জিজ্ঞেস করলেন না।এক সন্ধ্যায় মোটামুটি কথা পাকা করে নীতুর হাতে এক হাজারের পাঁচটা নোট দিয়ে ছেলের বউ পছন্দ করে রেখে এলেন।

অভীক তখন অফিসের কাজে এতটাই ব্যস্ত যে দম ফেলবার ফুসরৎ নেই!তারপরও রুশিয়া বেগম হাল ছাড়লেন না।পাঁচ আনা স্বর্ণের আংটি তৈরি করলেন নীতুর অনামিকা আঙুলের মাপে।মহিমা বেগমও যেন নীতুর এত ভালো সম্বন্ধ পেয়ে খুশিতে আত্মহারা।যে কৃষ্ণবর্ণ মেয়েটির বারবার বিয়ে ভেঙে যায় তার এত ভালো সম্বন্ধ পেয়ে মহিমা বেগম দুজন এতিম খাওয়ালেন।আত্মীয় স্বজন সবাইকেই মোটামুটি জানিয়ে দিলেন এই সু সংবাদ।
নীতু সবকিছুতেই ছিল নির্বাক।তার একটা বিয়ে যেন এই পরিবারের কাঙ্খিত খুশি।সেটা হোক পিয়নের সাথে বা কোন চাকুরিজীবীর সাথে। তা কোন ম্যাটার করে না,ম্যাটার করে কেবল নীতুর একটা বিয়ে! এত কিছুর মধ্যেও নীতুর মনে খটকা হতে লাগলো।এত দ্রুত কি সব ভালো হয়?হয় না তো।
তাই হলো।রুশিয়া বেগম মিথ্যে বলে ছেলেকে ঢাকা থেকে টেনে হিঁচড়ে খুলনা নিয়ে এলেন।আর নীতুর পরিবারে জানানো হলো,আজ ছেলে আসছে নীতুকে দেখতে আর আজই আংটি বদল।রুশিয়া বেগম, অনীক আর ফুপু তারা আগেই নীতুর বাসায় উপস্থিত হলো। অভীক আসলো একটু দেরিতে।অভীক তখনো জানতো না তার জন্য পাত্রী ঠিক করা হয়েছে।সে নিতান্ত দাওয়াত এটেন্ড করতে এসেছে।অভীক আসার আগেই রুশিয়া বেগম চরম আশ্চর্য কাজটি সেরে ফেললেন।নীতুকে ভারী শাড়ি আর অলংকৃত দেখে আবেগে ভেসে গিয়ে নীতুর অনামিকায় আংটি পড়িয়ে একগাদা দোয়া করে দিলেন।নীতুকে তার কেন এত ভালো লেগেছে সেই কারণ স্বয়ং বিধাতা ছাড়া কেউ জানে না!
অভীক যখন সেই সন্ধ্যায় নীতুদের বাসায় পৌঁছালো তখন হুট করেই বিদ্যুৎ চলে গেলো।নিজেকে আবিষ্কার করলো এক রুম লোকালয়ের সামনে।টেবিলে সাজানো হরেক রকমের পিঠা আর নাস্তার আইটেম দেখে অভীক বুঝে গেলো আজকের আয়োজনের বলির পাঠা সে! মুহুর্তে মেজাজের পারদ থইথই করে বেড়ে গেলো।তার সামনে বসা ঝকমকে শাড়ি পড়া নত মস্তকে বসা মেয়েটিকে বড়ই অসহ্য মনে হতে লাগলো!
অভীক মাকে বুঝাতে পারলো না সে এই মুহুর্তে বিয়ের জন্য রাজি না।তার জবটা আরো গুছিয়ে বিয়ে করতে ইচ্ছুক সে।তা আর হলো না।কালো শার্ট প্যান্ট পড়া অত্যাধিক সুদর্শন পুরুষ টিকে সবারই পছন্দ হলো!নীতুর মা মনে মনে হাজার খানিক দোয়া করে ফেললেন।কিন্তু সেই দোয়া কোন কাজে আসলো না।

অভীক প্রচন্ড রাগে সেখান থেকে প্রস্থান নিলো।রুশিয়া বেগম আহত ও হতভম্ব দৃষ্টিতে ছেলের দিকে তাকিয়ে রইলেন।দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ছেলেকে আটকে ধরলেন।হাজার খানিক কসমও দিয়ে ফেললেন ছেলেকে।কোন কিছুতেই অভীকের সিদ্ধান্ত বদলালো না।মায়ের মিথ্যা, অফিসের কাজ,আর অযাচিত নীতু সবকিছুই অভীকের কাছে বিরক্ত লাগছিল।মাকে কোন মতেই বুঝাতে না পেরে শেষতক অভীক বলে ফেললো,”একবারো ভাবলে না মা তোমার পছন্দ করা মেয়ে আমার পছন্দ হবে কিনা?দেখেছো মেয়েটিকে?আমার পাশে যায় তাকে?”
রুশিয়া বেগম ছেলের ব্যবহারে কষ্ট পেলেন।তার ছেলেদের কখনো তিনি অহংকারী বলে জানতেন না।কালো রঙ দেখে ছেলের বিবেচনায় তিনি আহত হলেন।অভীক চলে গেলে কষ্ট পেলেন তিনি।
আর নীতু?নীতু তো গোটা আত্মীয় মহলের কাছে ফের অপমানিত হলো!অভীক যখন চলে গেলো নীতু চোখে টলমল করা জল আর মুখে শ্লেষাত্মক হাসি নিয়ে অনামিকায় জ্বলজ্বল করা আংটির দিকে তাকিয়ে রইলো।কেউ বুঝলো না নীতুর কতটা কষ্ট হলো?অভীকের পরিবার চলে যাওয়ার পর মা নীতুর উপর চাউর হলো।অতি দুঃখে তিনি জনম দুঃখী মেয়েটিকে কুৎসিত কুৎসিত গালি দিলো।
অভীক যখন বুঝতে পারলো তার ভুল হয়েছে।তার আচরণে মা এবং সেই মেয়েটা অপমানিত হয়েছে।ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।মাস পার হয়েছে।নীতুর কাছে অভীকের মাফ চাওয়া হলো না।কিন্তু একটা অপরাধ বোধ হতে লাগলো।অভীক কখনো গায়ের রঙ দিয়ে মানুষ বিচার করেনি।অভীকের কাছে ব্যক্তিত্ব বড়।কিন্তু রাগের মাথায় ভুল করে ফেলেছে।নীতুর কাছে তার মাফ চাওয়া হলো না কিন্তু রুশিয়া বেগমের হাতে পায়ে ধরে ঠিকেই মাফ চাওয়া হয়েছিলো।এবং সেদিনই ঠিক করেছি মায়ের পছন্দেই বিয়ে করবে সে!

আজ এতদিন পর নীতুকে দেখে পুরানো সেই অপরাধ বোধ মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। পড়ন্ত সন্ধ্যায় বারান্দায় বসে অভীক আনমনে এসবই ভাবছিল ঠিক তখনই ফুপু এসে অভীকের পিঠে হাত বুলিয়ে বললেন,”এত কিসের চিন্তা করছিস বাবা?”
অভীক প্রলম্বিত নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে,”মা ঘুমিয়েছে ফুপি?”

“কথা ঘোরাস না বাবা।বল কি হয়েছে? ”

অভীক ফুপুর হাতটা মুঠো করে ধরে।ভীষণ অস্থিরতা নিয়ে বলে,”আমার ভীষণ অস্থির লাগছে ফুপি।এক ধরনের অপরাধ বোধ আমার বুকের ভিতর কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে! এই শিক্ষা তো ফুপু আমি পাইনি।তবে কি করে আমি কাউকে এতটা কষ্ট দিলাম?নিজেকে বড় অমানুষ মনে হচ্ছে! ”

ফুপু নিরবে হাত বুলালেন অভীকের চুলে।তারপর মৃদু স্বরে বললেন,”অনুতপ্তের থেকে বড় শাস্তি হয় না।অভীক, এটা কি শুধুই একটা মেয়েকে সমাজে হেনস্তা করার জন্য অপরাধ বোধ নাকি অন্য কিছু?”

অভীক বারান্দার রেলিং দুহাতে শক্ত করে চেপে ধরে বলে,”আমি জানি না ফুপি।আমি কিচ্ছুটি জানি না!আমার বড় অস্থির লাগছে ফুপি!দমবন্ধকর অনুভূতি হচ্ছে। ”

********
নীতু সকালে অফিসে গিয়ে দেখলো সবাই ভীষণ তটস্থ! হুড়োহুড়ি করে কাজ করছে।এমনকি বড় স্যারকেও বলতে শুনলো,”সবকাজ সুন্দর মত করো।যেন কোন ভুল না ধরতে পারে!”
নীতু তার এক মেয়ে কলিগকে প্রশ্ন করলো,”কি ব্যাপার আজ কেউ আসছে নাকি?এত ব্যস্ততা সবার?”
মেয়েটি গড়গড় করে বলতে শুরু করলো,”আজ এসএম স্যার আসছে।সে ভীষণ কঠোর!বড় স্যার পর্যন্ত তাকে সমঝে চলে এমন ব্যক্তিত্ব তার!”
নীতুর ভীষণ আগ্রহ হলো এই নতুন স্যারটিকে দেখার।কে সে?নীতুরও কেমন ভয় হতে লাগলো!

চলবে,

#কাননবালা!
#আয়েশা_সিদ্দিকা
পর্বঃ১৬

ধূসররঙের কোট মেরুন রঙের ফুল স্লিভ শার্ট আর কালো প্যান্টে সজ্জিত অভীক।শুভ্র মুখশ্রীতে স্ট্রিম করা খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি!ঘন চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করা।গভীর চোখ দুটিতে বুদ্ধির ঝিলিক!ঠোঁটের ভাঁজে একরাশ কঠোরতা নিয়ে অভীক লম্বা লম্বা পা ফেলে অফিসে প্রবেশ করে।
নীতুর মনে হলো তার ভ্রম হচ্ছে। চোখের সামনে অভীকের অবয়ব তার উর্বর মস্তিষ্কের সৃষ্টি! ইনি কি সত্যিই অভীক?
নীতু ধপ করে চেয়ারে বসে পরে।পাশে দাঁড়ানো রিপার হাত খপ করে চেপে ধরে।রিপা তখনও অভীককে হা করে গিলছে।বেহুশের মত! নীতু বিরক্ত হয়ে রিপাকে ধাক্কা দেয়।রিপার সম্বিত ফিরিয়ে এনে জিজ্ঞেস করে, “এই মাত্র কে আসলো?”
রিপা সম্মোহনী কন্ঠে বলে,”আমাদের অফিসের একমাত্র রাফ এন্ড টাফ স্যার!তাশরীফ অভীক!”
নীতুর চোখ মুখ কাঁদো কাঁদো হয়ে গেলো।দুদিন আগেও যে মানুষটার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলেছে আজ তাকে দেখে নীতুর শরীর মন দুটোই অস্তিত্বে আছন্ন হলো।সেদিন কি ভেবেছিল এই অভীককেই চোখের সামনে দেখতে হবে সারাটাদিন। নীতুর মাথা চক্রাকারে ভনভন করে ঘুরতে লাগলে।নীতু যতোই নিজেকে কঠোর বলে প্রেজেন্ট করুক,আদতে তো সেটা সত্যি না!কঠিন আবরুর আড়ালে নীতু এখনও সেই শান্ত ধীর মেয়েটি! যে পুরুষটা তাকে অযোগ্য বলে রিজেক্ট করেছে তার সামনে কিভাবে সারাক্ষণ স্বাভাবিক থাকবে?ভেবে পায় না নীতু।
এই অভাবের বাজারে নতুন একটা চাকরি পাওয়া যে কতটা কঠিন তা নীতুর থেকে ভালো আর কে জানে?
একরাশ চিন্তায় নীতুর মুখ অন্ধকার হয়ে আসে!

***-***—***
তাজ ব্যস্ত হাতে নিজের আলমিরা ঘাটছে।চোখ মুখ বিরক্তিতে কুঁচকে আছে।অফিস থেকে নিয়ে আসা গুরুত্বপূর্ণ ফাইলটা তাজ প্রথম ড্রয়ারে রেখেছিল তার স্পষ্ট মনে আছে।অথচ এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাজ গুছানো প্রকৃতির মানুষ। সবকিছুই তার গুছানো থাকে।অথচ আজ তার ব্যবহৃত এক একটা জিনিস এক একেক জায়গায়।
সেতু বারান্দায় বসে হাত পায়ের নখ কাঁটছে।তাজের এই খোঁজাখুঁজি পর্ব দেখেও সেতু নড়লো না। সেতু চায় এই ছুতোয় অন্তত তাজ তার সাথে কথা বলুক।একটু কথা বলায় তো আর দোষ নেই!
তাজ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে। অফিসের লেইট হয়ে যাচ্ছে! বারান্দার কাছে এসে কপালে বিরক্তির ভাঁজ ফেলে বলে,”সেতু ফাইলটা কোথায়?”

সেতু একবার ঘাড় উঁচু করে তাকিয়ে আবার নখ কাটতে মনোযোগ দেয়।ওই উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ মুখটির দিকে সেতু বেশিক্ষণ তাকাতে পারেনা। তাহলেই ভীষণ প্রেম পায় তার!নিজের এই দূর্বিষহ অবস্থায় সেতু নিজেই বিরক্ত।

“আপনার ফাইল কোথায় তা আমি জানবো কি করে?”

তাজ কোমড়ে দু’হাত রেখে বলে,”প্রশ্নের বিপরীতে প্রশ্ন করবে না সেতু।এ ঘরে তুমি ছাড়া আর কে থাকে?আমার জিনিস তুমি ছাড়া কে ধরেছে?তাড়াতাড়ি বলো। ”

সেতু কন্ঠে একরাশ উদাসীনতা নিয়ে বলে,”একঘরে থাকলেই বুঝি সব ছোঁয়া যায়?সব জানা যায়?”
সেতু পরক্ষণেই মনে মনে বলে,”কই আপনাকে তো আমি ছুঁয়ে দিতে পারলাম না?আর আপনার মন? সে তো সেতুর নাগালের বাইরে! ”

“একদম হেয়ালি করবে না সেতু।আমার গুরুত্বপূর্ণ একটা ফাইল।অফিসে যেতে পারবো না ফাইলটা না পেলে।সকাল থেকেই দেখছি আমার ব্রাশ বাথরুমের বদলে ড্রেসিং টেবিলে,আয়রন করা শার্ট এলোমেলো,তোয়ালেটা ভেজা,আলমিরার সবকিছু একেকটা একেক জায়গায়। এসবের কারণ কি?”

সেতু কিচ্ছু বললো না।পায়ের নখ যত্ন সহকারে কাটতে শুরু করলো।তাজ কতক্ষণ সেতুর দিকে তাকিয়ে থেকে রুমে ফিরে অফিসের জন্য রেডি হতে শুরু করলো। শার্টে বোতাম লাগাতে লাগাতেই তাজ দেখতে পেলো সেতু এলোমেলো পায়ে আলমিরার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।কাপড়ের স্তূপের মধ্যে থেকে সবুজ ফাইলটা বের করে বিছানায় রেখে চুপচাপ রুম ছেড়ে বেড়িয়ে গেলো সেতু। তাজ গোপনে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো।দিনকে দিন সেতু অধৈর্য হয়ে পড়ছে আর তাজ বিরক্ত! এভাবে একটা সম্পর্ক কি বয়ে নেয়া যায়?

**************

অভীক নীতুকে অফিসে দেখে কেন জানি অবাক হলো না।ঠোঁটের কোণে ঈষৎ হাসির রেখা দেখা দিল কেবল।হসপিটালে নীতুকে দেখে যেমন দমবন্ধকর অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছিল এখন সেরকম লাগলো না বরং কোথাও যেন একটা স্বস্তির আমেজ দেখা গেলো।
নীতুকে অভীক ডেকে পাঠিয়েছে তার কেবিনে।শুনেই নীতুর হাত পা ঠান্ডা হতে শুরু করেছে।নীতুর কিছুতেই অভীকের মুখোমুখি হতে মনে চাইছে না। পলাশ এসে তাগাদা দিয়ে বললো,”নীতু তুমি এখনও দাঁড়িয়ে আছো কেন?নতুন সব এমপ্লয়িয়ের সাথে অভীক স্যারের দেখা হয়েছে কেবল তুমি বাকি।যাও তাড়াতাড়ি যাও।অভীক স্যার মোটেও গাফলতি পছন্দ করেন না।”
নীতু বারকয়েক দম ফেলে নিজেকে আস্বস্ত করলো।এত ভয় পাওয়ার কি আছে?বলে নিজেকে শাসালো।মাথা সোজা করে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার বৃথা চেষ্টা করলো। এরপরই অভীকের কেবিনে নক করে বললো,” মে আই কাম ইন স্যার?”

অভীক নতুনদের গ্রুমিং ফাইল দেখছিলো। দরজার দিকে একপলক তাকিয়ে কাম ইন বলে আবার ফাইলে মনোযোগ দিলো। সেই একপলকেই অভীকের নীতুকে পর্যবেক্ষণ করা হয়ে গেলো।বড় নেকের ব্লাউজ, বাঙ্গি রঙের শাড়ি। ঘাড়ে এলানো হাত খোঁপা।হাতে চিকন বেল্টের ঘড়ি আর কাকচক্ষু জলের গভীর চোখ দুটিতে কাজল দিয়ে সজ্জিত নীতু।
পারমিশন নিয়ে নীতু চেয়ারে বসে পড়লো।
অভীক সরাসরি নীতুর দিকে তাকিয়ে বললো,”কি নাম আপনার?”
নীতু অবাক চোখে তাকালো অভীকের প্রশ্নে।নাম জানা স্বত্বেও কেন জিজ্ঞেস করলো নীতু বুঝতে পারলো না।
“আফসানা নীতু।”
অভীক টেবিলের উপরে রাখা ফাইলের ভিতর থেকে একটা ফাইল বের করলো।নীতু বুঝতে পারলো ফাইলটা তারই।এসি রুমের মধ্যে বসেও নীতু নার্ভাসনেসের কারণে ঘামতে শুরু করলো।নাকের ডগায় মুক্তোর মত বিন্দু বিন্দু ঘাম চকচক করছে। অভীক ভ্রু কুঁচকে একবার নীতুর দিকে তাকিয়ে আবার নিজের কাজে মনোনিবেশ করলো। রুম জুড়ে পিনপন নিরবতা। পুরোটাসময় নীতু অস্বস্তিতে গাঁট হয়ে বসে রইলো। একটাসময়ে অভীকের ফাইল দেখা শেষ হলো।চেয়ারে শরীর এলিয়ে দিয়ে নীতুর দিকে সরাসরি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো,”মিস নীতু আপনি দেখছি রিকোয়েস্ট ক্যান্ডিডেট।আমার জানা মতে সুপারিশ তার জন্যই করা হয় যে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসে ভুগে।আমি কি ঠিক বলছি মিস নীতু?”

অভীকের কথায় নীতু একপলক তাকিয়ে দৃষ্টি নত করে ফেললো। নীতুর চোখ স্পষ্ট দেখেছে অভীকের ঠোঁটের কোণে ঈষৎ হাসি।মি.অভীক কি নীতুকে বিদ্রুপ বা কটাক্ষ করে হাসলো?নীতু তা বুঝতে পারলো না।কেবল মনের মধ্যে খুঁত খুঁত করতে লাগলো। নীতুর গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসলো।
অভীক ফের বললো,”মিস নীতু আপনি দৃষ্টি নত করে কেন রেখছেন?কারো সম্মুখে চোখের দৃষ্টি তারাই নত করে যারা কোন অন্যায় করে থাকে বা কোন বিষয়ে লজ্জা পেলে।আপনি কি সেরকম কিছু করেছেন?”

নীতু বহুকষ্টে ভার হয়ে আসা কন্ঠে বললো,”না!”

“গুড।এখন থেকে আমার সাথে সরাসরি কথা বলবেন। মনে থাকবে?”

“অবশ্যই স্যার!”
গ্লাসে ঢেকে রাখা পানি অভীক নিঃশব্দে ঠেলে নীতুর দিকে এগিয়ে দেয়। নীতু প্রশ্নবোধক চাহনিতে তাকালে।
অভীক বলে ওঠে, “আপনার দরকার মিস নীতু।”
নীতু গ্লাসে চুমুক দিয়ে নিজের শুকিয়ে আসা গলাটা ভিজিয়ে নেয়।কপালে ছড়িয়ে পরা ক’গাছি অবাধ্য চুল কানের পাশে গুজে নেয়।সবকিছুই অভীক পর্যোবেক্ষণ করে। এরপর টেলিফোন কানে তুলে বলে,”পলাশ আমার কেবিনে আসো।”
কিছুক্ষণ পরই পলাশ অনুমতি নিয়ে কেবিনে প্রবেশ করে।
অভীক পলাশের দিকে তাকিয়ে বলে,”পলাশ আমি জানি তুমি তোমার কাজে খুবই দায়িত্বশীল। কিন্তু মাঝে মাঝে তোমার মধ্যে সফট কর্ণার কাজ করে, কেন?এটা যে কোম্পানির জন্য হুমকি স্বরুপ তা অবশ্যই তুমি জানো?”

পলাশ কিছুটা দ্বিধা নিয়ে বলে,”কোন ভুল হয়েছে স্যার?”

অভীক নীতুর দিকে একবার তাকিয়ে আবার পলাশের দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে,”একজন অভিজ্ঞতাহীন এমপ্লয়ির কাজে তুমি কি করে জব পারফরম্যান্স এইটটি পার্সেন্ট রাখো?তোমার কি সত্যিই মনে হয় মিস নীতুর পারফর্ম এতটা ভালো?”
পলাশ আমতা আমতা করে কিছু বলতে নিলে অভীক কথা থামিয়ে দিয়ে বলে,”আমার তো মনে হয় মিস নীতুর ওয়ার্ক পারফরম্যান্স বুঝে তাকে ফিফটিতে ফেলা যায়!”

“মিস নীতু আপনাকে বলছি। কি কারণে পলাশ আপনাকে এতটা ফেবার করলো আমি জানি না।তবে আমি এরপর অবশ্যই দেখবো আপনার কাজ। যদি কোন ভুল পাই তবে আপনার পূর্বে আপনার মেন্টরকে আমার কাছে যথাপোযুক্ত জবাবদিহী করতে হবে।এবার আপনারা দুজনেই আসুন!”

নীতু এলোমেলো পা ফেলে কেবিন থেকে বের হয়। চোখের দৃষ্টি বিধ্বস্ত। মনে হচ্ছে কোন ঝড়ের সামনে থেকে বেঁচে ফিরেছে। পলাশ আস্বস্ত ভঙ্গিতে বলে,”নীতু তুমি কিছু মনে করো না।অভীক স্যার কাজের বেলা খুবই কঠোর হলেও তিনি মানুষটা চমৎকার! ”
নীতু পলাশের কথায় ফ্যাকাশে হাসলো।ধীর পায়ে নিজের ডেস্কে ফিরে গেলো।
নীতু চলে যেতেই অভীক গলা ছেড়ে হো হো করে হেসে দিলো।নীতুর ভেজা বেড়াল মুখটা এত স্নিগ্ধ লাগছিল। অভীকের ইচ্ছে করছিল নীতুর গাল টেনে বলতে,”এই মেয়ে এত ভয় পাচ্ছা কেন?আমি কি বাঘ নাকি ভালুক? আমি তো তাশরীফ অভীক!”
অভীক আবার হেসে উঠলো।পরক্ষণেই হাসি মুছে গিয়ে অভীকের শরীরে জুড়ে আলাদা শিহরণ বয়ে গেলো।চোখের সামনে ভেসে উঠলো, নীতুর নাকের উপর জ্বলজ্বল করতে থাকা মুক্তোর মত ঘামের বিন্দু!কাকচক্ষু জলের পদ্মদিঘির মত অবাক করা ভীষণ সুন্দর দুটি চোখ।
অভীক মুহুর্তেই চোখ বন্ধ করে ফেললো!তার সাথে এসব কি হচ্ছে ভেবে পেল না!

নীতু অভীকের আচরণে এতটুকু বুঝতে পারলো।মি.অভীক পারসোনাল লাইফে আর প্রোফেশনাল লাইফে একই ব্যক্তির আলাদা সত্তা! নীতু কেন যেন অভীকের এই আচরণে মুগ্ধ হলো।অফিসে কাজ করা কঠিন হবে না ভেবে নিশ্চিন্ত হলো।

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here