অনুভূতির_শীর্ষবিন্দু 🍁🍁 #written_by_Nurzahan_Akter_Allo #Part_13

0
511

#অনুভূতির_শীর্ষবিন্দু 🍁🍁
#written_by_Nurzahan_Akter_Allo
#Part_13

গোধূলি লগ্নে আকাশটা ঘোলাটে রং ধারণ করেছে। বিকেলে সূর্যের তাপ কমে গিয়ে নামে হালকা শীত। ঘোলাটে আকাশে তুলোর মতো সাদা মেঘের ভেলা। আর সূর্য লাল আভা ছড়িয়ে ডুব দেয় পশ্চিমাকাশে। আকাশের গায়ে ছোপ ছোপ মেঘ, সূর্যের পশ্চিমে হেলে পড়ে রক্তিম আলো ছড়ানো আর সেই আলোর প্রতিফলন নদীর পানিতে। এর সৌন্দর্যটাও যেন অনন্য।

সন্ধ্যার পরে নক্ষত্র তিতিক্ষাকে নিয়ে ঘুরাঘুরির উদ্দেশ্যে বের হলো। তিতিক্ষা লেমন কালার কুর্তি, ব্ল্যাক জিন্স, লেডিস ডিজাইন জ্যাকেট, পায়ে ব্ল্যাক লেডিস কেডস্, ওড়না আর চুলগুলো উচু করে ঝুটি করা। নক্ষত্র লেমন কালার টি-শার্ট, ব্ল্যাক জ্যাকেট, ব্ল্যাক জিন্স আর ব্ল্যাক এ্যান্ড হোয়াইট সংমিশ্রণে কেডস্। দু’জনের এমন লুকে বেশ স্মার্টনেস ফুটে উঠেছে। নক্ষত্র একেবারেই ওই রিসোর্ট ছেড়ে বের হয়ে এসেছে। ওই রিসোর্টে আর ফিরবে না।

আজকে নক্ষত্র তিতিক্ষাকে রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করাতে চায়। এজন্য ওরা এসেছে সিলেটের রিভার ক্রুজে। এই রিভার ক্রুজটা হলো ভাসমান রেস্টুরেন্ট এবং ইভেন্ট ভেন্যু। এটা দূর থেকে দেখলে মনে হয়, নদীর বুকে ভেসে আছে মামুলি একটি লঞ্চ। কিন্তু রাতের বেলা এর চেহারা ভিন্ন। বড় আকারের লঞ্চটির নয়নাভিরাম দৃশ্য যে কারো নজর কাড়ে। সুরমা নদীর তীরে রিভার ক্রুজের সৌন্দর্য দেখে তিতিক্ষা অবাকই হলো। সিলেটে আসার পর থেকে এত এত সৌন্দর্যের সাথে পরিচয় হচ্ছে যে, এসব দেখে মাঝে মাঝে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলছে। তিতিক্ষা অবাক চাহনি নিয়ে রিভার ক্রুজটা দেখছে। নক্ষত্র তিতিক্ষাকে বললো,

–“এমন আরো সৌন্দর্য তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। ”

তিতিক্ষা মুচকি হাসলো। নক্ষত্র তিতিক্ষাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টের ভেতরে প্রবেশ করলো। হুট করে কোথা থেকে কয়েকজন এসে নক্ষত্রের ওপর হামলে পড়লো। হঠাৎ এমন কান্ডে তিতিক্ষা আহাম্মকের মত তাকিয়ে থাকলো। তবে তিতিক্ষা কিছু বললো না। কারণ সেই চার জন ছেলের মধ্যে একজন হলো সাফওয়ান । আর সাফওয়ানকে দেখেই বুঝতে পারলো ইনারাও নক্ষত্রের ফ্রেন্ডস। নক্ষত্র কোনরকম উনাদের হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে নিলো। এদের বন্ধুত্বটা যে কতটা গভীর সেটা ওদের খুনশুটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে। নক্ষত্র ওর সব বন্ধুদের এক এক করে জড়িয়ে ধরলো এবং কুশল বিনিময় করলো। নক্ষত্র তিতিক্ষাকে ওদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। পরিচয়পর্ব শেষ হলে নক্ষত্র সাফওয়ানকে বলল,
–“তুই সিলেট এসেছিস আমাকে জানালি না কেন?

নক্ষত্রের কথা শুনে সাফওয়ান একটা বোকা বোকা হাসি দিল। হাসির মাঝে কিছু একটা তো লুকিয়ে আছে। সাফওয়ানের গার্লফ্রেন্ড জেসিকাকে দেখে নক্ষত্র আর কথা বাড়ালো না। পরে না হয় সব তথ্য বের করা যাবে। সাফওয়ান তিতিক্ষাকে ওর গার্লফ্রেন্ড জেসিকার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। জেসিকা তখনও ঠোঁটের লিপস্টিক লাগাতে ব্যস্ত। জেসিকা তিতিক্ষার সাথে কথা বললো। জেসিকা মেয়েটা ভালোই কথা বলতে পারে। তিতিক্ষা বসে আছে আর জেসিকা বকবক করছে।

নক্ষত্র সাফওয়ানকে ডেকে কিছু একটা বললো। সাফওয়ান জেসিকাকে বসতে বলে বাইরের গেল। নক্ষত্র এসে তিতিক্ষাকে একটা জায়গায় নিয়ে গেল। রিভার ক্রুজটা বাইরে থেকে যতটা সুন্দর, তার ভেতরটাও অনেক সুন্দর। নক্ষত্র তিতিক্ষাকে ঘুরে ঘুরে সবটা দেখালো। এখানে একসঙ্গে ২৫০ জন মানুষের বসার হল রুম, কনফারেন্স রুম, ভিআইপি রুম এবং ছয়টি অত্যাধুনিক বাথরুম ও দুটি বেডরুমসহ সম্পূর্ণ শীতাতাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। নক্ষত্র তিতিক্ষাকে একদম নিরিবিলি একটা স্থানে নিয়ে গেল। এখানে টেবিল চেয়ারের ব্যবস্থা আছে বসার জন্য। নদীর বাতাস শরীরে লেগে শরীরের মধ্যে শির শির করে উঠছে। একজন ওয়েটার এসে ওদের কফির সাথে হালকা খাবার দিয়ে গেল। নক্ষত্র তিতিক্ষাকে খেতে বললো। তিতিক্ষা কফির মগে চুমুক দিলো। গরম গরম কফি, রাতের এত সৌন্দর্যের সমাহার সাথে প্রিয় মানুষটা।

নক্ষত্র কফির মগে দুইবার চুমুক দিয়ে রেখে দিলো। নক্ষত্র চুপ করে বসে আছে। ওর দৃষ্টি নদীর পানির দিকে। তিতিক্ষা নক্ষত্রের দিকে তাকালো। নক্ষত্রকে কেন জানি চিন্তিত দেখাচ্ছে। এত ঘুরাঘুরির পরেও কাল থেকে তিতিক্ষা খেয়াল করেছে, নক্ষত্রের মুখে একটা চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। নক্ষত্র তিতিক্ষার দিকে পূর্ন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,
–“আমি তোমাকে কিছু কথা বলতে চাই।”

তিতিক্ষা মাথা নাড়িয়ে বলার সম্মতি দিলো। নক্ষত্র বললো,
–“তোমার কাছে আমার একটা চাওয়া অপূর্ন রয়ে গেছে। আমি কি পুনরায় সেই চাওয়ার সুযোগটা পেতে পারি?”

–“জ্বি! কি চাই বলুন?”

নক্ষত্র কোন ভণিতা করলো না। একদম সরাসরি তিতিক্ষার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,

–“আমরা এই মুহূর্তে বিয়ে করবো।”

তিতিক্ষা অবাক হয়ে নক্ষত্রের দিকে তাকালো। নক্ষত্র তিতিক্ষার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে৷ চোখে ওর শান্ত চাহনি। নক্ষত্রের কথা শুনে তিতিক্ষা থম মেরে আছে। নক্ষত্র নিজে থেকেই আবার বললো,

–“তোমাকে হারানোর ভয়টা আমাকে স্থির থাকতে দিচ্ছে না। ভয়টা এমন ভাবে আঁকড়ে ধরছে, যে আমি এই দুইদিনে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে ভুলে গেছি।”

–“এজন্যই বুঝি কালকে সারারাত না ঘুমিয়ে পায়চারি করেছেন?” (তিতিক্ষা)

এটা সত্যি, কালকে সারারাত নক্ষত্র দু’চোখের পাতা এক করতে পারেনি। তিতিক্ষার সাথে সময় কাটানো সত্ত্বেও ও স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারেনি৷ বার বার মনে হচ্ছে তিতিক্ষাকে হারিয়ে ফেলবে৷ তিতিক্ষা ওর থেকে দূরে সরে যাবে। অদ্ভুত ভাবে ওকে হারানোর ভয়টা ওকে গ্রাস করে নিচ্ছে। নক্ষত্র তিতিক্ষার এই কথার প্রতি উত্তরে কিছু বললো না। বরং অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে শান্ত কন্ঠে বললো,

–“বিয়ে হয়ে গেলে আমাকে আর কারো সাথে তোমার উডবি হাজবেন্ড বলেও পরিচয় করিয়ে দিতে হবে না। তখন তুমিও সরাসরি বলতে পারবে আমি তোমার হাজবেন্ড।” (নক্ষত্র)

নক্ষত্রের কথাতে অভিমান স্পষ্ট। কালকে ওই মহিলাকে হবু বলে পরিচয় করাটা নক্ষত্রের পছন্দ হয়নি। তবুও মুখ ফুটে কিছু বলেনি। তিতিক্ষা এখন বুঝতে পারলো নক্ষত্র টেনশনের কারণ। কালকে এক্সিডেন্টের ঘটনা, আর ওকে হবু হাজবেন্ড বলাটা নিয়ে সে হয়তো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে নক্ষত্র কে হার্ট করার জন্য তিতিক্ষা বলেনি। তিতিক্ষা চুপ করে আছে। নক্ষত্র সিরিয়াস ভাবেই বললো,

–“এবার বলো তোমার সিদ্ধান্তটা কি? আমি জোর করবো না। তুমি যেমনভাবে বলবে তেমনভাবেই হবে।”

তিতিক্ষা কিছুক্ষণ ভেবে, ঢোক গিলে সম্মতি দিলো। নক্ষত্র সাফওয়ানকে ফোন করে দ্রুত আসতে বললো। সাফওয়ান আর নিহাদ কাজি আনতেই গিয়েছে। নক্ষত্র তিতিক্ষাকে বসতে বলে কোথাও গেল। তখনই জেসিকা আসলো। তিতিক্ষা সাবধানতার সাথে চোখের কোণের অশ্রুটা মুছে নিলো। জেসিকা তিতিক্ষার সামনের চেয়ারে বসে বললো,

–“তিতিক্ষা নক্ষত্র ভাইয়ার আবদারটা মেনে নাও। কারণ তুমিই হলে ভাইয়ার অনুভূতির শীর্ষবিন্দু। যে অনুভূতিতে এক বিন্দু খাত নেই। সত্য বলতে এমন চিরসঙ্গী পেতেও ভাগ্য লাগে।”

জেসিকার কথা শুনে তিতিক্ষা মুচকি হাসলো। একটু পরে সাফওয়ান কাজি নিয়ে চলে আসলো। সামনাসামনি নক্ষত্র আর তিতিক্ষা বসে আছে। কাজি লেখালেখির পর্ব চুকিয়ে‌‌ নক্ষত্র আর তিতিক্ষার বিয়ে সম্পূর্ন করলো। তিতিক্ষা কেন জানি নক্ষত্রকে ফিরাতে পারেনি। সে পারেনি নক্ষত্রের মুখের উপর না বলতে। তিতিক্ষা পারেনি নক্ষত্রের প্রথম চাওয়াটাকে অপূর্ণ রাখতে। কিভাবেই বা সে পারবে? নক্ষত্র যে তিতিক্ষার মনে ভালবাসা নামক মায়াজালের আস্তরণ সৃষ্টি করেছে। ধীরে ধীরে নক্ষত্র যে তিতিক্ষার মনে নিজের অনুভূতি দিয়ে পাকাপোক্ত ভাবে জায়গা দখল করে নিয়েছে।

নক্ষত্র তিতিক্ষার মুখের দিকে তাকিয়ে কবুল বলেছে। আর মনে মনে আল্লাহকে শুকরিয়া জানিয়েছে। সবশেষে আজকে ওর চাওয়াটা পূর্ণ হলো। নক্ষত্রের নামের সাথে পবিত্র ভাবে তিতিক্ষার নাম যুক্ত হলো। নক্ষত্রের চার বন্ধু আর জেসিকা ওদের বিয়ের সাক্ষী হলো। তবে এই বিয়ের কথা ওদের মাঝেই আবদ্ধ থাকবে, বাইরের কেউ জানবে না; যতদিন না ওদের পারিবারিকভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানটা না হচ্ছে। নক্ষত্র ওর বন্ধুদের ট্রিট দিলো। সবাই ওদের অভিনন্দন জানালো।

নক্ষত্র তিতিক্ষার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে সবার থেকে বিদায় নিয়ে রিভার ক্রুজ থেকে বের হয়ে গেল। ওরা দু’জনেই গেল নূরজাহান গ্র্যান্ড হোটেলে। রিভার ক্রুজ থেকে নূরজাহান গ্র্যান্ডে যেতে ১৪ মিঃ লাগে। নক্ষত্র আগেই রুম বুক করে রেখেছিলো। রিসিপশন থেকে চাবি নিয়ে দাঁড়াতেই নক্ষত্রের ফোনের রিংটোন বেজে ওঠে। নক্ষত্র একটু দুরে কথা বলছে আর তিতিক্ষার রিসিপশনের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। তখনই একটা ভদ্রলোকের আগমন ঘটে আর তিতিক্ষাকে বলে,
–“ম্যম নাহিয়ান স্যার আপনার কে হয়?”

তিতিক্ষা লোকটির দিকে এক নজর তাকিয়ে মৃদু সুরে বললো,

–“হাজবেন্ড।”

ভদ্র লোকটি এই কথা শুনে যেন খুব খুশি হলো। উনি তিতিক্ষাকে আবার বললো,

–“স্যারের বিয়ে হলো অথচ আমরা জানি না! এজন্যই আমরা আপনাকে চিনতে পারিনি ম্যম। তাই আপনাকে জিজ্ঞাসা করলাম। প্লিজ! কিছু মনে করবেন না। আচ্ছা ম্যম কত দিন হচ্ছে আপনাদের বিয়ের?”

তিতিক্ষার এবারও মৃদু স্বরে ছোট্ট করে বললো,

–” ঠিক ১৭ মিনিট ২৩ সেকেন্ড আগে।”

নক্ষত্র এসে তখন তিতিক্ষার পাশে দাঁড়ালো। ভদ্রলোকটি দেখে নক্ষত্র উনাকে সালাম দিয়ে হেসে হেসে কথা বললো। এই ভদ্রলোক নক্ষত্রের পূর্ব পরিচিত। এই ভদ্রলোকের ঢাকার ফ্ল্যাটের ডিজাইন নক্ষত্রই করেছে। উনার থেকে বিদায় নিয়ে তিতিক্ষাকে নিয়ে নক্ষত্র ওদের রুমে গেল। তিতিক্ষা বেডের উপর চুপটি করে বসে আছে। নক্ষত্র রুমে দরজা লক করে তিতিক্ষার সামনে বসলো। তিতিক্ষা তখনও চুপ করে আছে। নক্ষত্র তিতিক্ষার দুই গালে হাত রেখে শান্ত কন্ঠে বললো,

–“ভালবাসি বলেই তো তোমাকে আমার সাথে পবিত্র ভাবে জড়িয়ে নিলাম। আমার স্পর্শে যাতে তোমার শরীরে কালিমা না লাগে, এজন্যই তো কবুল বলে নিজের করে নিলাম। হারানোর ভয়টা যাতে আমাকে আর কাবু করতে না পারে, এজন্যই তো এমন আবদার রাখলাম তোমার কাছে। তুমি আমার অনুভূতির শীর্ষবিন্দু বলেই সারাজীবনের জন্য তোমাকে আমার সাথে আবদ্ধ করে নিলাম।”

তিতিক্ষা কিছু বললো না। ছলছল চোখে নক্ষত্রের মুখ পানে তাকিয়ে আছে। তিতিক্ষার চোখের কোণা বেয়ে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো।
নক্ষত্র তিতিক্ষার কপালে আদর দিয়ে চোখের পানিটা মুছে দিলো। তিতিক্ষা নিজেকে আটকাতে পারলো না। নক্ষত্রের বুকে ঝাপিয়ে পড়ে শব্দ করে কেঁদে দিলো। নক্ষত্রও আজকে তিতিক্ষাকে বুকের সাথে জড়িয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো। তিতিক্ষা ওর পরিবারের সবাইকে না জানিয়ে বিয়ে করার জন্য মনে মনে বার বার বলছে।
–“আব্বু, আম্মু, মামনি, ভাইয়া, বিভা, আমি সরি। আমাকে মাফ করে দিও।”

তিতিক্ষা নক্ষত্রের জ্যাকেট আঁকড়ে ধরে কাঁদছে। নক্ষত্র তিতিক্ষাকে জড়িয়ে ধরে ওর কাঁধে থুতনি রেখে বললো,

— “কারো অগোচরে প্রেম করবো না বলেই তো পারিবারিকভাবে বিয়ের ব্যবস্থা করলাম। কিন্তু তুমি নামক মায়াজাল আমাকে এমন ভাবে আঁকড়ে ধরেছে, যে তোমাকে হারানোর ভয়টা কাটাতেই আমাকে এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।”

তিতিক্ষা নক্ষত্রের বুকে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গেছে। তিতিক্ষা নিজেও ফ্রেশ হয়নি। আর নক্ষত্রকেও ফ্রেশ হওয়ার সুযোগ দেয়নি। নক্ষত্র তিতিক্ষাকে ওর বাহুডোরে আবদ্ধ করেই শুয়ে পড়লো। তিতিক্ষার কপালের একটা আদর দিয়ে মুচকি হেসে বললো,
–“মিসেস নাহিয়ান, সত্যি আপনি আমার মনোপ্যাথি।”

পরেরদিন সকালে____

সাওয়ান আর জেসিকা নূরজাহান গ্র্যান্ডে এসে হাজির হয়েছে। ওরা চারজন মিলে যাবে জাফলং। আর জাফলংয়ের সৌন্দর্যের মাঝে অন্য এক ভালোলাগার আবেশ সৃষ্টি করেছে শ্রীপুর চা বাগান।
নক্ষত্র আর তিতিক্ষা শ্রীপুরের চা বাগানে দাঁড়িয়ে চা বাগানের সৌন্দর্য দেখছে। হঠাৎ নক্ষত্র চায়ের দুইটা পাতার একটা কুড়ি ছিড়ে তিতিক্ষার সামনের হাঁটু গেড়ে বসে মুচকি হেসে বললো,

–“আমি তোমাকে ভাল ফাই মিসেস নাহিয়ান।”
(আমি তোমাকে ভালবাসি মিসেস নাহিয়ান)

তিতিক্ষা লজ্জা পেলো নক্ষত্রের মুখে এমন ভাবে ভালবাসি কথা শুনে। নক্ষত্র তখন দুষ্টু হেসে বললো,

–“আমার দেকিয়া এতো লজ্জা ফাও খেনো? তুমার সরম মাখা মুখ খান আমার খুব বালা লাগে। আ… ।”

নক্ষত্র কথাটা পুরো শেষ করতে পারেনি। অবাক হওয়ার দৃষ্টিতে বাম দিকে তাকিয়ে আছে। নক্ষত্রের দৃষ্টি অনুসরণ করে তিতিক্ষাও সে দিকে তাকিয়ে থ।

সাফওয়ানের গলাতে জেসিকার হ্যান্ড ব্যাগ ঝুলানো। সাফওয়ানের এক হাতে পানির বোতল আর অন্য হাতে জেসিকার মেকাব বক্স। আর জেসিকা সেলফি তুলতে ব্যস্ত। জেসিকা সেলফি তুলছে আর সাফওয়ান জেসিকার পেছন পেছন ঘুরছে। সাফওয়ানের এমন করুন অবস্থা দেখে নক্ষত্র তিতিক্ষার দিকে তাকালো। তিতিক্ষা নক্ষত্রের দিকে তাকাতেই দুজনেই হো হো করে হেঁসে দিলো।

To be continue….!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here