#প্রিয়তমা❤️
#সিজন_২
#writer- সালসাবিল সারা
পর্ব-১১
*
*
“আরে শেফা তুই কোথায়”??
ইতি আপুর আওয়াজ শুনেই সাদিফ ভাইয়া আমার দুই বাহু ধরে উনার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিলেন।কতক্ষণ উনার বুকের ভিতর আটকে ছিলাম তা আমি নিজেই জানিনা।
হাতের ফোসকাতে অল্প একটু চাপ লাগলেও আমার মুখ উনার বুকের ভেতর চাপা পড়ায় কিছুই বলতে পারছিলাম না।আর সাদিফ ভাইয়া আমার পিঠ,কোমর এমন ভাবে আঁকড়ে ধরেছিলেন,আমি নড়তেও পারছিলাম না।
“আরে তুই এখানে??তোকে আমি আরো কত জায়গায় খুঁজছিলাম। চল চল নিচে। খেতে চল।
ভাই তুমিও এসো তাড়াতাড়ি”।(ইতি আপু)
ইতি আপুর আওয়াজ পেয়ে আপু রুমে আসার আগেই সাদিফ ভাই আমাকে ছেড়ে উল্টো দিকে ফিরে নিজের টি-শার্ট পড়ে নিলেন।
আর আমি হাতের ফোসকাতে একপাশে দাঁড়িয়ে ফুঁক দিচ্ছিলাম।বড্ড জ্বলছে হাতে।
“ওকে। তোরা যা আমি আসছি”।
ইতি আপু আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে নিলেই সাদিক ভাই আবার বলে উঠলো…
“নাস্তা করা শেষে ওর হাতে একটু বরফ দিয়ে দিস। এরপর একটু অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দিবি। ওর হাতের ফোসকা এখনো ভালো হয়নি”।
ইতি আপু মুচকি হেসে বলল…
“ঠিক আছে। ভাই তুমি কোন চিন্তা করো না”।
আমি আর ইতি আপু নিচে চলে গেলাম।
ডাইনিং এর সবাই নাস্তা খাওয়া শুরু করে দিয়েছে। জুমু আমাকে দেখে তার পাশের চেয়ারে বসার জন্য চেয়ার টেনে দিল।
একটু পরে সাদিফ ভাইয়া নিচে চলে আসলো। চেয়ারে না বসে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই উনি গ্লাসে ফ্রুট জুস ঢেলে খেতে লাগলেন।
“সাদি!পানি বা পানি জাতীয় কিছু বসে খেতে হয়।এতবড়ো ছেলে এসব ভুলে যাস কেমনে”?
খালামনির কথা শুনে সাদিফ ভাইয়া ছোট্ট করে “সরি”
বলে চেয়ারে বসে পড়লো।
সাদিফ ভাইকে দেখা মাত্রই একটু আগের কথা মনে নাড়া দিয়ে উঠলো।আমি সাদিফ ভাইয়ার বুকের মাঝে আঁকড়ে ছিলাম ভাবতেই আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে।
আড়চোখে সাদিক ভাইয়ের দিকে তাকালাম। উনি আপাতত চুপচাপ নাস্তা করতে লাগলেন।
আমার দিকে যেই ফিরতে যাবেন!! সাথে সাথে আমি অন্য দিকে ফিরে গেলাম।
নাস্তা শেষে সবাই ডাইনিং এর পাশের সোফা সেটে বসে কথা বলছেন।আর ইতি আপু আমার হাতে আইস কিউব লাগাচ্ছে।
উফফ জ্বলে গেল!!ইতি আপু যতো যত্ন করে লাগিয়ে দিক,কিন্তু ফোসকাতে বরফ লাগা মাত্রই কেমন যেনো জ্বলছে!
আমি হাতের জ্বালা ভাবের কারণে “আল্লাহ্ আল্লাহ্” করছি আর চোখের পানি ফেলছি।
হঠাৎ সাদিফ ভাইয়া চিল্লিয়ে উঠলেন….
“এসব বাচ্চাদের কে কিচেনে ঢুকতে বলে আল্লাহ্ জানে? সামান্য একটু ব্যথার কারণে সেই কাল থেকে কেঁদে চলছে।আশ্চর্য!!কাজ না পারলে করতে যেতে বলে কে?
ইতি তুই একটু আস্তে ধীরে অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দে ওকে”।
“আচ্ছা ভাই”।(ইতি আপু)
“আজব ছোট মানে?? কতটুক ছোট?উনিশ বছর বয়স আমার।আমার ইচ্ছা আমি কিচেনে যাবো।আর ব্যাথা পেলে না কেঁদে কি হাসবো”?(কান্না মাখা কন্ঠে বলে উঠলাম)
“চুপ অসভ্য। কিছু বলছি না দেখে কি মাথায় উঠে যাবি?চুপচাপ বসে থাক।ইতি ওষুধ লাগিয়ে দিচ্ছে। মুখে মুখে তর্ক করবি তো দেখবি কি করি”!
আমি আর কিছু বললাম না।এভাবে নিজের বেজ্জতি করানোর কোনো মানে হই না।কিন্তু আমার খালামণি দিলেন এক ধমক উনাকে..
“কি সমস্যা তোর সাদি।বাচ্চা মেয়েটাকে কেনো এমন বকিস সবসময়?আর একটা বকা দিলে আমার চেয়ে খারাপ কেউ হবে না”।
“কাজ করতে বলো ঠিকাছে।কিন্তু কাজ করতে গিয়ে নিচে চোট পাবে এটা তো কোনো কথা নয়।যতবার ও এমন বেখেয়ালিতে ব্যাথা পাবে ততবার আমিও ওকে বকা দিবো”।
কথাগুলো বলেই উনি হন হন করে উপরে চলে গেলেন।
আর সবাই উনার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
“আমি ওর মা নাকি ও আমার বাবা!!আমি এই জিনিসটাই আজ পর্যন্ত বুঝলাম না”!(খালামণি)
এই এক মানুষ বাজি।কোনো মানুষকে পরোয়া করে না।আবার জড়িয়েও ধরে আমাকে।আমি অসভ্য না আপনি অসভ্য!
জুমু আমার কানে ফিসফিস করে বলে উঠলো…
“এই সুন্দরী!আমার ভাইয়ের কি হলো আজকে?এত ক্ষেপেছে কেনো তোর উপর”?
“তোর ভাই আমার উপরে কখন ক্ষেপে না? বল তো?
আমাকে বকা দেওয়ার জন্যে উনার কোনো কারণ লাগে না”।
“হ্যাঁ সেটাই।আমার ভাইয়ের বউকে নিয়ে আমার অনেক টেনশন হয়। ভাইয়া কি হাল করবে বেচারীর আল্লাহ্ জানে”!(জুমু)
হঠাৎ মাথায় এই কথা নাড়া দিলো। সাদিফ ভাইয়া অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করবে!?
হ্যাঁ তা তো করবেই।না করার কি?আমিও না কি কি ভেবে বসে থাকি।
কিন্তু আমার না এই কথা ভাবতে বেশ খারাপ লাগছে।
🌸
লাঞ্চ সারতে সারতে প্রায় ২.১০বেজে গেলো।কোচিং শুরু হবে তিনটা থেকে।আমি আর জুমু তাড়াতাড়ি উপরে চলে গেলাম।
চুল আঁচড়িয়ে ওরনা সুন্দর করে সেটিং করে নিলাম।এরপর ব্যাগ নিয়ে চলে এলাম নিচে।
সবার থেকে বিদায় নিয়ে আমি আর জুমু গাড়ির কাছে গেলাম।
গাড়িতে বসতেই সাদিফ ভাইয়া ধুম করে আমার পাশে বসে পড়লেন।
আমি ভ্রু কুচকে তাকাতেই জুমু ভাইয়াকে বলে উঠলো..
“ভাই তুমি আজ আমাদের সাথে যাবা! তোমার কি কোনো মিটিং আছে”?
“চোখে দেখতেই তো পারছিস। হ্যাঁ আছে। এমনি এমনি তো গাড়িতে বসিনি।ড্রাইভার চলেন”।
কথাগুলো বলেই আমার গা ঘেঁষে বসে পড়লো।আমি যতই জুমুর দিকে চেপে যাচ্ছি ততই উনি আমার দিকে চেপে বসছেন।
ভালোলাগছে না আমার মোটেও কিছু। জুমুর কারণে কিছু বলতেও পারছি না।তাই চুপচাপ বসে রইলাম ঝিম কেটে।
কোচিং আসতেই, সাদিফ ভাইয়া নেমে দাঁড়ানোর আগে.. আমি জুমু নামতেই ওর পাশ দিয়ে নেমে গেলাম।
জুমু আর সাদিফ ভাইয়া কি কি আলাপ করছে। আমি ওদের থেকে একটু দূরেই দাঁড়িয়ে আছি।
তাসফিয়া আর তাসিফ তখনই গাড়ি থেকে নেমে এলো।
আমাকে দেখা মাত্রই আমার সাথে কথা বলতে লাগলো তাসফিয়া।কিন্তু তাসিফ কে ইগনোর করার কারণে সে আপাতত চুপ করে আছে।
জুমু আমাদের কাছে এসে আমার হাত ধরে দাঁড়ালো।কিন্তু কি ভেবে আবারো দৌড় লাগালো সাদিফ ভাইয়ার দিকে।আমার হাত জুমুর হাতে ছিল। অগত্য আমাকেও যেতে হলো জুমুর সাথে।
সাদিফ ভাইয়া তখনো গাড়ি নিয়ে ওয়েট করছিলো। হয়তো আমরা কোচিং এ প্রবেশ করলেই উনি উনার গন্তব্যে রওনা দিতেন!
“ভাইয়া!!আজকে কোচিং এর পেমেন্ট করতে হবে।দিয়ে দিও প্লিজ আজকে।নিতে আসবে না তুমি”?
জুমুর কথায় আমার হুঁশ আসলো।আল্লাহ্! আজকে কোচিং এর বেতন দিতে হবে।ভর্তির টাকাও সাদিফ ভাইয়া দিয়েছিলো।কিন্তু আমি আজ টাকাও আনিনি।সমস্যা নেই। কাল দিয়ে দিবো।
“হ্যাঁ।নিতে আসবো।ওকে দিয়ে দিবো।এখন ক্লাসে যা।সাবধানে থাকিস। তোর সাথের শেফা বাচ্চাটাকে দেখে রাখিস।ড্রাইভার চলেন”।
বলেই চলে গেলেন সাদিফ ভাইয়া।
কোচিং এ প্রবেশ করতে করতে তাসফিয়া বলে উঠলো..
“এটা তোর ভাই! সাদনান সাদিফ!অনেক হ্যান্ডসাম।কোনো একদিন পরিচয় করিয়ে দিস”।
জুমু হাসতে হাসতে বললো…
“আমার ভাই তো আগুনের গোল্লা।আচ্ছা দিবো মিট করিয়ে”।
জুমুর কথা শুনে তাসফিয়ার চোখ দুটি চক চক করে উঠলো খুশিতে।
তাসফিয়া মনে হয় সাদিফ ভাইয়ার উপর ফিদা হয়ে গেলো!!
ধুর।কিসব ভাবছি। যার যা ইচ্ছা করুক।
*
*
একমাস পরেই ফাইনাল এক্সাম শুরু কোচিং এর।আর এখন একটা করে সাবজেক্ট রিভাইস চলছে।তাই যে স্যারের যতক্ষণ লেকচার শেষ করতে সময় লাগে ততক্ষণ ক্লাস চলে।তাই কখনো আগে ছুটি হয়। আবার কখনো পরে ছুটি হয়।
আজকে ছুটি একটু লেট করে হলো। সাদিফ ভাইয়াও আজ মিটিংএ আটকে গেছেন।সবাই কোচিং থেকে বের হয়ে যাচ্ছে।
আমরা কোচিং শেষে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে কথা বলি আমরা তিনজন। আজও কথা বলছিলাম।ইমরান ভাইও নাকি মিটিং এ বিজি।তাই আমরা তিনজন একসাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছি।আর তাসিফ কই আল্লাহ্ জানে। অবশ্য ও আমরা মেয়েদের মাঝে কিই বা করবে!!
কিন্তু কিছু সিনিয়র ভাই, মানে যারা বিসিএস এর কোচিং করে । এদের মধ্যে তিনজন এসে আমাদের সামনে দাঁড়ালো।
আমাদের দিকে উদ্দেশ্য করে ছেলেগুলো বলে উঠলো..
“সাদিফ ভাইয়ের বোন কোনটা আর ইমরান ভাইয়ের বোন কোনটা?আমরাও পলিটিক্স করি তো।তাই তোমাদের সাথে একটু পরিচিত হতে চায়।যেনো তোমরা আমাদের তোমাদের ভাইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দাও” ।
“আপনাদের জেনে কি লাভ??আমরা আপনাদের সাথে কথা বলতে ইচ্ছুক নই”।(তাসফিয়া)
“উফফ চল তো।আপনাদের কথা বলতে হলে ভাইয়াদের সাথে বলবেন।আমাদের সাথে কথা বলে লাভ নেই”।(আমি বলে উঠলাম।কারণ জুমু আর তাসফিয়া যেকোন মুহুর্তে ঝগড়া লাগিয়ে দিবে)।
“তুমি কে আবার ?? কার জিনিস তুমি? সাদিফ নাকি ইমরানের”?(লাল শার্ট পড়া একজন ছেলে)
“ও আপনাদের নানী। কাম কাজ নেই আর??চলতো”।
জুমু কথাগুলো বলেই আমার হাত ধরে অফিস রুমের দিকে চলে গেলো।আর তাসফিয়া আমাদের সাথে সাথেই চলে এলো।
“কি অসভ্য ছেলেপেলে।আদনান ভাইকে বলা উচিত।আর আমি তো সাদিফ ভাইয়াকে বলবই এই কথা।যা ইচ্ছা তাই করবে নাকি!!পলিটিশিয়ান এর বোন আমি।আর এরা ইচ্ছা করেই আমাদের মজা নিতে এসেছিল।খবিশের দল”।
জুমু বেশ রাগেই কথাগুলো বললো।
“হ্যাঁ ঠিক বলেছিস জুমান।আমিও আমার ভাইয়াকে বলবো।এভাবে যেই সেই এসে আমাদের সাথে যা তা বলবে নাকি”?(তাসফিয়া)
“আরে বাদ দে তোরা।আর জুমু সাদিফ ভাইয়া শুনলে আবার মারপিট বাজিয়ে দিবে।তুই তো উনার রাগ সম্পর্কে খুব ভালো করেই জানিস”।
কেউ আর কোনো কথা বললো না।চুপ করে বসে আছি অফিসে।
রাফসান ভাইকে বললে এতক্ষণে এসে আমাদের নিয়ে যেতো বাসায়।কিন্তু সাদিফ ভাইয়া বললেন পাঁচ মিনিটের মাঝে আসছেন। তাসফিয়াও বসে আছে।ওর ভাইয়ারও নাকি লেট হবে।
যে যার যার মোবাইল ইউজ করছি।
বড্ড পানির পিপাসা লেগেছে।অফিসের ফিল্টার খালি।তাই জুমুকে বলে সামনের দিকে ক্লাসের ফিল্টারের কাছে গেলাম।
যদিও জুমু আসতে চেয়েছিলো।কিন্তু আমি আসতে মানা করেছি।অত দূরেও না ফিল্টার।
পানি পান করে,ওয়ান টাইম গ্লাসটা ডাস্টবিনে ফেলে দিলাম।
“তোমাকে রিকুয়েস্ট দিয়েছিলাম ফেসবুকে।একসেপ্ট করোনি কেনো”?
সামনে ফিরে দেখি তাসিফ।হঠাৎ এমন কথা বলে খুব ঘাবড়ে গেলাম আমি।আর ওকে দেখলে আমার এমনিও অজানা কারণে ভয় করে।তাও সাহস করে বলে উঠলাম…
“আমি অপরিচিত কাউকে এড করি না”।
“আমরা পরিচিত হতে পারি”।(তাসিফ)
“কিন্তু আমি চায় না”..
ওকে আর কিছু বলতে না দিয়ে চলে আসতে নিলেই..
তাসিফ আমার বাম হাতের তালুতে ধরতেই ফোসকাতে
খুব জোরে চাপ লাগে।আর আমি “উফফ” বলে উঠলাম।
সাথে সাথেই চোখে পানি চলে এলো।
ব্যথা পাওয়া স্থানে ব্যাথা পেলে জানই বেরিয়ে যায়।আমার ক্ষেত্রেও তেমনটাই হলো।
আমি এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে নিলাম।
পিছন থেকে একটা আওয়াজ শুনে আমি একদম কেঁপে উঠলাম..
“কি হচ্ছে এখানে”??
সাদিফ ভাইয়া!!!নির্ঘাত উনি আমাকে মেরে ফেলবেন।
শেফা পানি খাওয়ার কিছুক্ষণ বাদেই সাদিফ অফিসে এসেছিল। জুমান থেকে জানতে পারে শেফা এইদিকে পানি খেতে এসেছে।
তাই আর দেরি না করে সাদিফ এই দিকে হাঁটা দিলো।
সাদিফ ভাইয়া আমার কাছে এসে আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে উঠলেন…
” এই চোখে পানি কেনো??এই ছেলে কি চাও তুমি এখানে”?
আমি কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম…
“কিছুই হচ্ছে না।আমি পানি খেতে এসেছিলাম।আর উনিও পানি খাবেন হয়তো।আমি গ্লাস রাখতে গিয়ে হাতে ব্যাথা পেয়েছি।তাই চোখে পানি এসেছে”।
“তোকে আমি কয়বার সাবধানে কাজ করতে বলবো?দেখেশুনে কাজ করবি তো।আর পানি খেতে এখানে আসতে হয়?আদনান কে বলা যেত না”?
এমন সব বকা দিতে দিতে উনি আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন।ভাগ্যিস ব্যাপারটা বুঝেন নি উনি।যদি জানতেন তাসিফ আমার হাত ধরেছিলো তাহলে কি করতেন ওকে আল্লাহ্ জানেন।
কিন্তু আমার মন উনার বকার মাঝে নেই এখন।আমার মন উনার হাতের স্পর্শে। কেমন গরম গরম হয়ে আছে উনার হাতটা।
🌸
সাদিফ ভাইয়া আমাকে নিয়ে অফিস রুমে গেলেন।
জুমু সাদিফ ভাইয়ার সাথে তাসফিয়ার পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।
“ভাই এটা আমার ফ্রেন্ড তাসফিয়া।আর তাসফিয়া ও আমার ভাই সাদিফ”।
“হ্যালো ভাইয়া” বলেই তাসফিয়া উনার দিকে হাত এগিয়ে দিলো।
আর তা দেখে সাদিফ ভাইয়া এক নজর আমার দিকে তাকালো।আমি তখনও উনার দিকে তাকিয়ে।আমি ভেবেছিলাম উনি হ্যান্ডশেক করবেন তাসফিয়ার সাথে।
কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে সাদিফ ভাইয়া শুধু হালকা করে তাসফিয়ার আঙ্গুলের সাথে উনার আঙ্গুল স্পর্শ করলেন।
আর আমি ভাবছি এটা হ্যান্ডশেক নাকি ফিঙ্গার শেক!!
সাদিফ ভাইয়ার কান্ডগুলো বড্ড অদ্ভুত।
‘
“আদনান ভাই!আমি আজ টাকা আনতে ভুলে গিয়েছি।আমি কাল পেমেন্ট করলে চলবে”?
“সমস্যা নেই আপু। যখন ইচ্ছে তখন দিবে তুমি। নো প্রব্লেম”।(আদনান ভাইয়া)
“এই নে আদনান। এখান থেকে দুইজনের পেমেন্ট আদায় করে নে”।(সাদিফ ভাইয়া উনার ক্রেডিট কার্ড আদনান ভাইকে দিয়ে বললেন)
আমি সাদিফ ভাইয়ার কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললাম…
“দরকার নেই।আমি কালকে নিয়ে আসব টাকা।আপনি এমন করবেন না প্লিজ।আম্মু শুনলে বকবে আমাকে”।
“চুপ একদম চুপ।খালামণিকে আমি জানিয়ে দিব।আর এরপরও বকলে আমাকে জানাবি।আমার টাকা তোর টাকা একই।সো একদম চুপ”।(দাঁতে দাঁত চেপে বললেন)
আমিও আর কিছু বললাম।নাহলে সবার সামনেই আমাকে চিল্লাবেন হুদাই।
গাড়িতে বসতেই আবারো আমার গায়ের সাথে ঘেঁষে বসলেন উনি।এই লোকটা আমার পাশে বসে কেনো আল্লাহ্ জানে?
কিন্তু উনার বাহুটাও কেমন যেনো গরম গরম লাগছে।
আর জুমু আজকের ঐ তিন ছেলের ঘটনা হুরহুর করে বলে দিলো উনাকে।
আর সাদিফ ভাইয়াও ওর কথার বিপরীতে কি কি যেনো বলছেন।
কিন্তু আমার চিন্তা উনার গায়ের গরম ভাব নিয়ে।কিছু না ভেবেই আমার বাম হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে সাদিফ ভাইয়ার হাঁটুর উপর রাখা হাতের উপর ছোঁয়ালাম।
আমার স্পর্শে উনি আমার দিকে ফিরলেন।আর আমি উনার তাকানোকে তোয়াক্কা না করে বাম হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে উনার কপালে স্পর্শ করলাম।
এত্ত গরম কপাল!!হঠাৎ করে উনার জ্বর আসলো কেনো??
আমার দিকে ভ্রু উঁচু করে তাকিয়ে আছেন সাদিফ ভাইয়া আর আমি উনাকে বলে উঠলাম…
“এই আপনার তো অনেক জ্বর!!হঠাৎ করে জ্বর কেনো আসলো আপনার??এদিক থেকেই ডাক্তার দেখিয়ে নিন। জ্বরে কপাল পুড়ে যাচ্ছে আপনার”।
আমার কথা শুনে সাদিফ ভাইয়া কিছু বললো না।এক নজরে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন।আর জুমু তার ভাইয়ের কপাল ছুঁয়ে সেও তার ভাইকে বলছে ডাক্তার দেখাতে।
কিন্তু সাদিফ ভাইয়া আমাদের কারো কথার পরোয়া করলেই তো!জুমু আর না পেরে চুপ হয়ে গেলো। সাদিফ ভাইয়া নিজের মন ছাড়া কারো কথা শুনে না এটা আমরা সবাই বেশ জানি।
সাদিফ ভাইয়া সিটে হেলান দিয়ে চুপ করে শুয়ে রইলেন।হঠাৎ করে আমার হাতটা জড়িয়ে ধরলেন আলতো করে।আমি উনার দিকে ফিরতেই একনজর আমার দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলেন।
আমিও আর হাত সরালাম না। আস্তে আস্তে উনার গায়ের গরমভাব বাড়তেই আছে।
বড্ড মায়া লাগছে উনার জন্যে।হঠাৎ জ্বরই বা কেনো আসলো উনার!!
চলবে….🙂
একটা জিনিস আমি বুঝি না, বারবার আমাকে কেনো জিজ্ঞেস করেন গল্প দিতে লেট হচ্ছে কেনো? আমি তো বলেই দিয়েছি একদিন পরপর গল্প পাবেন।আমার অনলাইন ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্টের কাজ সব কিছুই করতে হচ্ছে।এর মাঝে গল্প লেখাটা খুব কষ্টদায়ক।তাও আমি কষ্ট করে লিখছি আপনাদের জন্যে। একটু দেরি হলেও আমার সাথে থাকবেন প্লিজ।আপনাদের ভালোবাসা পাওয়ার আশায় পোস্ট করি গল্প।গল্প ছোট লাগলেও সরি।
আমার মন মেজাজ খুবই খারাপ।আর দয়া করে n,nxt
করবেন না🙂
গল্প ভালো লাগলে,পেজে একটা রিভিউ দিয়ে দিয়েন🙂❤️