প্রিয়তমা❤️ #সিজন_২ #writer- সালসাবিল সারা পর্ব-১০ *

0
1001

#প্রিয়তমা❤️
#সিজন_২
#writer- সালসাবিল সারা
পর্ব-১০
*
*
সামান্য পাস্তা খেয়ে ডাইনিং থেকে উঠে লিভিংরুমে চলে আসলাম।হাতের তালুতে ফোসকা পড়েছে।তবে সাদিফ ভাইয়া তৎক্ষণাৎ প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার কারণে ফোসকা একটু কম পড়েছে।
নাহলে তো গরম গরম কফি পড়ার কারণে হাতটাই ঝলসে যেতো।তবে বেশি কফি পড়েনি হাতে। যেই অল্প টুকু পড়েছে,তাতেই হাতের এই অবস্থা।কিন্তু আল্লাহ্ এর দরবারে অনেক শুকরিয়া।সব কফি যদি পড়তো হাতে তবে কি অবস্থা হতো হাতের আল্লাহ্ জানেন।

ছাদ থেকে সবাই এসেই দেখলো আমাকে সাদিফ ভাইয়া অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দিচ্ছেন।মা তো এসেই উত্তেজিত হয়ে গেলো।

“ফুল!!হাতে কি হয়েছে??এমন লাল হয়ে গেলো কেনো হাতে”??

আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে সাদিফ ভাইয়া বলে উঠলেন…

” খালামণি। তোমার মেয়ের হাতে কফি পড়েছে।নেক্সট টাইম থেকে ও যেনো একা কিচেনে না ঢুকে”।

মা কিছু বললো না আর।
সবাই নাস্তা খেতে বসে গেলো।
নানু আমার হাতে দোআ পড়ে ফুঁক দিচ্ছেন।সবাই গপগপ করে খাচ্ছে।কিন্তু হাতে জ্বলার কারণে আমি শুধু পাস্তা খেয়ে উঠে নিলাম।

“আপু সরি।এখনো কি জ্বলছে হাতে”??
পাশ ফিরে দেখি জুরু।বেচারার চোখে পানি এসে গিয়েছে। সাদিফ ভাইয়াও তখন বকা দেওয়াতে ছেলেটা বড্ড মন খারাপ করেছে।
আমি মুচকি গেছে ডান হাত দিয়ে জুরুর চুল এলোমেলো করে দিলাম।

“ছোট ভাইয়েরা বড় বোনকে একটু আধটু এমন জ্বালায়।এতে কান্না করার কি”?
কথাগুলো বলেই জুরুকে একপাশ থেকে জড়িয়ে ধরলাম।আর জুরুও মুচকি একটা হাসি দিলো।

“শেফা আপি,তুমি অনেক ভালো।তোমার হাত পুড়েছে তুমি আমাকে বকা দাও নি।কিন্তু সাদি ভাইয়া আমাকে বকা দিয়েছে।আমার না অনেক খারাপ লেগেছিলো।আমি কি ইচ্ছা করে তোমাকে ব্যাথা দিয়েছি” !!

জুরুর কথায় আমি কিছু বলতে যাবো অমনি সাদিফ ভাইয়ার কথায় আমি আর জুরু পিছে তাকালাম…

“তোমার আপি তো তোমাকে জীবনেও বকা দিবে না।কিন্তু আমার তো দায়িত্ব বলে কিছু আছে নাকি?এমন ভয় লাগানো আর কখনো যেনো না দেখি জুরাইন।আমি জানি তুমিও তোমার আপুকে অনেক ভালবাসো।কিন্তু তোমার আপু এখনো ছোট বাচ্চা।সে অল্পতেই ভয় পেয়ে লাফিয়ে উঠে। সো ব্রো, কিপ মাই ওয়ার্ডস ইন ইউর মাইন্ড”।

“ইয়েস, সাদি ভাইয়া।আমি আর কখনো আপুকে ভয় লাগাবো না”।(জুরু)

“গুড ব্রো”।

এদের কথা শুনে মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো।আমাকে বাচ্চা বলছে এই লোকটা!! হাহ নিজে কি? নিজে তো একটা সাতাশ বছরের বুড়া।

“এই সাদিফ ভাইয়া।আমাকে আপনি বাচ্চা বলছেন কেনো..??আমি কি বাচ্চা!
আমার বয়স উনিশ বছর।আর আপনি আমাকে বাচ্চা ডাকছেন?
আপনি নিজে কি? নিজে তো একটা বুড়া”।

কথাগুলো বলেই সাদিফ ভাইয়ার দিকে তাকালাম। সাদিফ ভাইয়া আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছেন।

কিন্তু হঠাৎই সাদিফ ভাইয়া হাসতে হাসতে বললেন…

“আমি বুড়া? কোন এঙ্গেলে??আমার মতো ড্যাশিং ছেলে দেখেছিস জীবনে??একবার বিয়ে করবো বললে.. শত শত মেয়েরা লাইন ধরবে।আর তুই কি বলছিস বুড়া!! হাহাহা”।

আমি আর জুরু একজন একজনের দিকে তাকাচ্ছি একবার আরেকবার সাদিফ ভাইয়ার দিকে।
কিন্তু জুরুও সাদিফ ভাইয়ার সাথে তাল মিলিয়ে বললো..

“হ্যাঁ ভাইয়া।তুমি তো দেখতে একদমই টার্কিশ হিরোদের মতো”।

সাদিফ ভাইয়া আর জুরু একসাথে হাই ফাইভ দিলো।
আবারও সাদিফ ভাইয়া বলে উঠলো…

“নিজে বাচ্চা হয়ে অন্যকে বুড়া বলিস তাই না। দেখবি তোর কপালে বুড়া জামাই আছে।তখন কি করবি”?

আমি কিছু বলতে যাবো কিন্তু সাদিফ ভাইয়া আমাকে থামিয়ে বললো….

“একটু আগে বলেছিলাম না!!আমার মতো সুন্দর ছেলে দেখেছিস নাকি??এটা জাস্ট এমনি কথার কথা বললাম।কোনো ছেলের দিকে তাকালে আমার চেয়ে খারাপ কেউ হবে না।দেখতে হলে শুধু আমাকে দেখবি”।

উনার কথার মাঝেই ইতি আপু আর জুমু চলে এলো।

“কি আলাপ হচ্ছে এখানে”?(জুমু)

“আপু আর ভাইয়া ঝগড়া করছে তাই দেখছি আমি বসে বসে।আসো তোমরাও বসো।”(জুরু)

“হ্যাঁ??ভাই তুমি ঝগড়া করতে জানো”?(ইতি আপু)

“শাট আপ এভ্রিওয়ান”।(চিল্লিয়ে)

সাদিফ ভাইয়ার চিল্লানি খেয়ে সবাই একেবারে চুপ হয়ে গেলো।

তখনই মা,খালা,ভাবী,নানু,মামী এলো লিভিংরুমে।ভাইয়ারা মেবি নাস্তা করে যার যার রুমে চলে গেলো।

“মা আমি আসছি।ডিনার আমি বাহিরে করবো।তোমরা কি থাকবে নাকি আজকে”??(সাদিফ ভাইয়া)

“হ্যাঁ।আজ মা, বোন,ভাবীর সাথে গল্প করে রাত কাটিয়ে দিবো।কিন্তু কাল সবার ঐ বাসায় দাওয়াত রইলো”।(খালামণি)

“ওকে, আল্লাহ্ হাফেজ মা”।(সাদিফ ভাইয়া)

সাদিফ ভাইয়া বাকি সবাই থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন।কিন্তু আমার দিকে ভুলেও তাকান নি।হাতের অবস্থাও জিজ্ঞেস করেন নি।

রাগ করেছেন নাকি উনি?উনাকে বুড়া বলার কারণে!
আমি তো এমনি দুষ্টামি করে বলেছি। সাদিফ ভাইয়া মোটেও বুড়া না।অনেক সুন্দর একটা ছেলে উনি।যে কোনো মেয়েই উনাকে বিয়ে করতে এক পায়ে রাজি হয়ে যাবে।
কিন্তু সাদিফ ভাইয়া আমাকে এটা কেনো বললো.. আমি যেনো বাহিরের কোনো ছেলের দিকে না তাকায়!!সেই ক্লাস টেন থেকে এসব শুনে আসছি আমি উনার মুখ থেকে।তাছাড়া আমার এতো ইচ্ছা নেই প্রেম করার বা কোনো ছেলের দিকে তাকানোর।কারণ মা বাবা যার সাথে বিয়ে দিবেন উনিই আমার জন্যে বেস্ট হবে।তাই আর এসব পথে যায় নি আমি কখনো।
কিন্তু মনে মনে আমি এই রাগী সাদিফ ভাইয়ার উপরেই ক্রাশ খাই। সাদিফ ভাইয়ার বিয়ে হয়ে গেলে আমি কার উপরে ক্রশিত হবো!!!

হঠাৎ জুমুর ডাকে হুশ ফিরলো আমার।

“কিরে ফুল বেব্বব!কি ভাবছিস এতো??তোর তো জামাই নেই যে উনার কথা ভাববি”।

“চুপ কর তো।উপরে চল। কিসব জামাই জামাই করছিস সবাই।
আচ্ছা মা?বাবা আর খালু কোথায়”?

“উনারা একটা কাজে বাহিরে গিয়েছেন”(মা)

“ওকে।তোমরা গল্প করো।আমরা তিন বোন আর জুরু ভাই উপরে যাচ্ছি”।

🌸

রুমে গিয়ে আমরা গল্প করতে লাগলাম। জুরু তার ক্লাসের নানা কীর্তি কর্ম বলছে। আর আমরা হাসতে হাসতে কুপোকাত।

কতদিন পরে সবার দেখা পেলাম।খুবই আনন্দ লাগছে।
আজকে আর পড়তে বসিনি।

রাফিদ ভাইয়ার কল আসলেই ইতি আপু মোবাইল নিয়ে ব্যালকনিতে চলে গেলো।আর আমরাও যার যার জান মানে মোবাইল নিয়ে বসে গেলাম।

নোটিফিকেশন আর ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট চেক করতে গিয়ে দেখলাম… তাসিফ ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছে।

এই ছেলেকে আমার ভালোলাগে না।সব সময় কেমন করে তাকিয়ে থাকবে।আর তাছাড়া বাহিরের মানুষকে আমি এড করি না। তাই আর ঘাটলাম না ব্যাপারটা।

কেনো যেনো আজ সাদিফ ভাইয়ার কথা মনে পড়ছে।উনি কি সত্যি আমার সাথে রাগ করেছেন??

সাতপাঁচ না ভেবে সাদিফ ভাইয়াকে একটা মেসেজ দিলাম।

“ভাইয়া..সরি। তখন বুড়া বলার জন্যে।আসলে আপনি বুড়া না।অনেক সুন্দর হ্যান্ডসাম।আপনার বউ অনেক সুন্দর হবে দেখে নিয়েন।
রাগ করবেন না প্লিজ।আমার জন্যে কেউ রাগ করলে আমার সেটা মোটেও ভালোলাগে না। আপনিও আমাকে আর পিচ্চি বলবেন না কেমন”!!

মেসেজ দিতেই কেনো জানি বুকটা ধুকপুক করছে।

*
এদিকে টুং করে মেসেজ টোন বেজে উঠাতে সাদিফ মোবাইলটা হাতে নিলো।এতক্ষণ সে পার্টিতে আসা লোকজনের সাথে আলাপে ব্যস্ত ছিলো।

মেসেজ ওপেন করতেই সাদিফ আনমনে হেসে উঠলো।আর মেসেজ পুরোটা পড়েই সাদিফ মোবাইলটা বুকে চেপে ধরলো আর বলে উঠলো…

“আমার বাবুই”

সাদিফকে এমন অবস্থায় দেখে একজন বলে উঠলো..

“কী সাদিফ ভাই!!হঠাৎ মুখে এত হাসি!!কি ব্যাপার”?

“এভরিথিং ইজ অলরাইট।এক্সকিউজ মি”..

বলেই সাদিফ একটু দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে ভিড় মুক্ত হলো।

শেফাকে মেসেজের রিপ্লাই দিতে লাগলো…

“বাচ্চাদের কথায় আমি রাগ করি না।আর তোর মতো অবুঝ শিশুর কথায় তো একদমই না।
কিন্তু তোর যদি এতই গিল্টি ফিল হয় তবে হাতের ছবি তুলে পাঠিয়ে দে আমাকে এখন”।

সাদিফের মেসেজ দেখে শেফা তো রেগে আগুন।মানা করা সত্ত্বেও তাকে আবার বাচ্চা ডাকা হচ্ছে!!!

কিন্তু এই লোক যখন হাতের ছবি পাঠাতে বলেছে তখন ছবি না পাঠিয়েও কোনো দিক নেই।কারণ যদি ছবি না পাঠায় আমাকে হাতের কাছে পেলেই ঠাস করে একটা দিয়ে দিবেন।

বাম হাতের তালুর একটা ছবি তুলেই উনাকে পাঠিয়ে দিলাম।

“লাল ভাবটা কমছে আস্তে আস্তে।কিন্তু ফোসকা পড়ে তো অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো।দেখ কমে নাকি!না কমলে কাল কোচিং থেকে আসার সময় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো।ডিনার করে ওষুধ লাগিয়ে ঘুমিয়ে যা।অনলাইনে দেখলে খবর আছে”।

সাদিফ ভাইয়ার মেসেজ দেখে মুখ ভেঙিয়ে উঠলাম।অনলাইনেও থাকা যাবে না নাকি??
যান!! আসলাম না অনলাইন।কিন্তু আপনি তো ভুলে গিয়েছেন আমার কাছে ল্যাপটপ আছে।আজ আমরা ভাইবোন মিলে মুভি দেখবো।কিন্তু আপনি কিছুই জানবেন না।

বাহ শেফা!!তোর মাথায় অনেক বুদ্ধি।
কিন্তু সাদিফ ভাইয়াকে শুধু “ওকে” মেসেজটা পাঠালাম।

*
*

ডিনার করে লিভিংরুমে বসে সবাই আড্ডা দিচ্ছি আর বাকিরা ইতি আপুর বিয়ের আলোচনা করছে।

যতটুক জেনেছি ইতি আপুর বিয়ের আর দুইমাস বাকি আছে।আহহা কত মজা হবে।বিয়ের কথা শুনতেই আমাদের মুভি দেখার প্ল্যান চেঞ্জ করে আমরা বিয়ে নিয়ে প্ল্যান করতে লাগলাম।

পরের দিন..
সকালের নাস্তা করে খালামণি আর ইতি আপু চলে গেলেন।কারণ আজ ওদের বাসায় দাওয়াত।

যদিও কাজের লোকেরা খালামনিদের সব কাজ করেন কিন্তু রান্নার কাজ শুধু খালামনি করেন।
কাজের লোকরা সব কাচা জিনিস ধুয়ে কেটে রেখেছেন।খালামণি গিয়ে নাকি শুধু রান্না করবেন।

দুপুর বারোটার দিকে আমরা খালামনির বাসার দিকে রওনা দিলাম।মা, ভাবী,নানু, মামী আর ইসলাল ভাইয়া গাড়ি করে যাচ্ছে।আর আমি,জুমু,রাফসান ভাইয়া, জুরু আমরা হেঁটে যাচ্ছি।পাঁচ মিনিটের পথ এই বাসা থেকে ঐ বাসা। বাবা আর মামা, উনারা নাকি জোহরের নামায শেষে আসবেন।

গেট দিয়ে ঢুকতে দেখলাম সাদিফ ভাইয়া থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট আর টিশার্ট পড়ে বাগানের দিকে ল্যাপটপ নিয়ে বসে কি করছেন। সাদিফ ভাইয়াকে দেখা মাত্রই রাফসান ভাইয়া ঘরে না ঢুকে বাগানের দিকে চলে গেলো।

আমি আর জুমু ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বক বক করতে লাগলাম।

“শেফা বেব!!আচ্ছা তোর ভাই রাফসান এত রাগী কেনো”?

আমি এক ভ্রু উচু করে বললাম….

“তোর ভাই থেকে অনেক কম।তাছাড়া তুই আর সাদিফ ভাইয়া যা রাগী।তোদের কাছে অন্যদের রাগ একদম ফিকে”।

“হাহ.. তারপর বল।আমার ভাইয়া রাগী হলেও অনেক ভালো। দেখবি তোর কপালে আমার ভাইয়ার মতো একটা বর জুটবে”।

কথাটা বলেই জুমু আমাকে একটা খোঁচা মেরে দৌড় দিলো।আর আমিও জুমুকে মাইর দেওয়ার জন্যে তার পিছে দৌড় দিলাম।

সাদিফ ভাইয়াদের বাসায় উপরে নিচে অনেকগুলো রুম।তবে নিচে কেউ থাকে না।সবাই উপরের রুমগুলোতে থাকে।

জুরাইন তো আসা মাত্রই সাদিফ ভাইয়ার রুমে চলে গেলো ভিডিও গেমস খেলার জন্যে।

সাদিফ ভাইয়ার রুমটা অনেক বেশি সুন্দর। অবশ্য ওদের বাসার সব রুম সুন্দর।

নাস্তা খেতে ইতি আপু আমাদের ডাকতে এসেছে।আমরা তিনজন মিলে সাদিফ ভাইয়ার রুমে গেলাম। জুরু আর রাফসান ভাইয়া মিলে গেমস খেলছে।

“এই ভাই…তোরা আয়।নাস্তা করবি না”??(ইতি আপু)

“আপু এটা লাস্ট গেম।আসছি।(জুরু)

ওরা ওদের মতো কথা বলছে আর আমি রুম দেখছি।এক মাসের ভিতরে আবারো এই রুমের ডিজাইন উনি চেঞ্জ করে ফেলেছেন।টাকা থাকলে যা হয় আরকি!

বেশ সুন্দর লাগছে রুম।একপাশে এত্ত বড় ওয়াল ফিটিং কাবার্ড,একপাশে গেমিং জোন,একপাশে পিসি, রুমের মাঝখানে সুন্দর বড় একটা খাট,আর চারপাশে সুন্দর সুন্দর লাইট এবং পুরো রুম জুড়েই নানা শোপিজ আর উনার ছবি।

আমি উনার রুমের ব্যালকনি দেখতে গেলাম আবার।ব্যালকনিতে নতুন ডিজাইন করেছেন।

কারণ আগে অন্যরকম ছিল।খালার বাসায় আসলেও সাদিফ ভাইয়ার রুমে আসা হয় না।কারণ জেনে শুনে আমি বাঘের খাঁচায় আসতে রাজি না।

,

শেফা এইদিক দেখতে ব্যস্ত আর এদিকে ইতি ট্রিক করে সবাইকে নিয়ে রুম থেকে চলে গেলো নিচে।

ব্যালকনি ভালোভাবে দেখে আমি পিছনে ফিরতেই দেখি ব্যালকনির দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন সাদিফ ভাইয়া।শুধু ট্রাউজার পড়ে খালি গায়ে দাঁড়িয়ে আছেন।মুখে তার শয়তানি হাসি।
এইমাত্র শাওয়ার নেওয়ার কারণে উনার গায়ে বিন্দু বিন্দু পানি জমেছে আর চুলগুলোও এলোমেলো হয়ে আছে।

আমি একনজর তাকিয়ে উনার থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে.. আমার চোখ নিচে নামিয়ে ফেললাম।

মনে হচ্ছে আমার গলা একদম শুকিয়ে গেছে।

কারণ সাদিফ ভাইয়াকে কখনো আমি এই অবস্থায় দেখি নি।

আমি সাদিফ ভাইয়ের পাশ কাটিয়ে যেতে নিলে.. উনি দরজা থেকে সরে না দাঁড়িয়ে, আরো ভালোভাবে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন।

“আ..আশ্চর্য সরছেন না কেনো ভাইয়া?আমি নিচে যাবো ।আর এভাবে কেমনে দাঁড়িয়ে আছেন কাপড় ছাড়া?লজ্জা নেই আপনার”?

“কোথায় কাপড় ছাড়া দাঁড়িয়ে আছি? ব্ল্যাক ট্রাউজার তোর চোখে লাগছে না??আর আমি একমাত্র তোর ব্যাপারে নির্লজ্জ”।

“আস্তাগফিরুল্লাহ!!কিসব কথা বার্তা।দেখি সরেন সরেন ভাইয়া।নিচে যাবো।আর আপনার এই বডি ঢেকে রাখুন।আমার কেমন কেমন যেনো লাগছে।লজ্জা করছে আমার”।

“হ্যাঁ, দেখতেই পাচ্ছি আমি।কিভাবে লাল টমেটো হয়ে যাচ্ছিস।এত্ত লাল হলে তো ভবিষ্যতে তুই পচঁতাবি”।
কথাগুলো বলতে বলতে উনি ভেজা তাওয়াল ব্যালকনির হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে দিতে নিলেই… আমি সেই সুযোগে দৌড় দিয়ে রুমের ভিতরে চলে আসলাম।

রুম থেকে বের হতে নিলেই পিছন থেকে সাদিফ ভাইয়ার হ্যাঁচকা টানে একেবারে উনার বুকের উপরে গিয়ে পড়লাম।আমার হাইট একদম উনার বুক সমান।

মাত্র শাওয়ার নেওয়াতে সাদিফ ভাইয়ার সম্পূর্ণ শরীর একদম ঠান্ডা হয়ে আছে।

লজ্জায় আমার গা কাঁপছে। সাথে সাথেই সম্পূর্ণ শরীর অবশ হয়ে যাচ্ছে এমনটাই মনে হচ্ছে আমার। সাদিফ
ভাইয়া থেকে ছুটতে নিলে.. উনি আমার কোমর চেপে ধরলেন।

ব্যস আমি শেষ!!! সাদিফ ভাইয়ার ঠান্ডা হাত আমার কোমরে লাগতেই আমার সম্পূর্ণ শরীরে কারেন্ট এর শক লেগে উঠলো। আর আমি আতঙ্কে উনার বুক খামচে ধরলাম।!

চলবে….

আমি বেশ বুঝতে পারছি গল্প আপনাদের ভালো লাগছে না।দিনদিন লাইক কমেন্ট কমছে গল্পের।সমস্যা নেই।আমি খুব দ্রুত গল্প শেষ করে দিবো।আমার ব্যাস্ততার কারণে গল্প রোজ দিতে পারছিনা।কিন্তু আপনারা আমাকে একটু সাহস দিলে ভালো হয়।
তবে আমি বুঝেছি আপনাদের আর আমার গল্প ভালো লাগছে না।চিন্তা করবেন না দ্রুত শেষ করে দিবো গল্প।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here