প্রিয়তমা❤️ #সিজন_২ #writer- সালসাবিল সারা পর্ব-৩০

0
1445

#প্রিয়তমা❤️
#সিজন_২
#writer- সালসাবিল সারা
পর্ব-৩০
*
*
অনুষ্ঠান খুব ভালোভাবেই উপভোগ করছি।ইতি আপু আর রাফিদ ভাইয়ার সাথেও অনেক ছবি তুলেছি। সাদিফ ভাইয়া,জুমু, আমি,জুরাইন সবাই একসাথে ছবি তুলেছি অনেক।
যদিও সাদিফ ভাইয়া আমার সাথে উনার মন মতো ছবি তুলে নিয়েছেন। তবে আমি এখনো উনার উপর রাগ করে আছি।
একে তো উনি এতো সুন্দর যার কারণে আমার জেলাসি হচ্ছে আর একটি কারণ হলো উনি আমার হাত ধরে আছেন,যেটা আশে পাশের আত্মীয়রা অনেক ভালো করে লক্ষ্য করছে।যতবারই হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছিলাম ততবারই উনি আরো শক্ত করে হাত চেপে ধরছেন।

“আশ্চর্য!হাত কি ছাড়বেন?সবাই দেখছে আশে- পাশে।আপনার কি কোন কাজ নেই আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া?আপনার কি আর অন্য কোনো কাজ নেই?আপনার এত হাই ক্লাস মানুষ রেখে আপনি আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছেন।আপনার ইমেজ নষ্ট হবে এতে”।(আমি রাগী গলায় বললাম)

“এতই যখন হাত ছাড়ানোর ইচ্ছা নিয়ে ভাষণ দিচ্ছিস,তাহলে এমন ভাবে সেজেছিস কেনো?যাতে ছেলেরা একবারের জায়গায় বার বার তাকায়?আমার মেজাজ এমনিতেই খারাপ। দয়া করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক আমার সাথে।পা ব্যাথা করলে চেয়ারে বস।বাট তাও পকপক করিস না তো”।(সাদিফ ভাইয়া)

উনার কথা শুনে আমি উনার দিকে ফিরতেই দেখলাম উনি একনজর আমার দিকে দেখছেন আবার আশে পাশের আত্মীয় এর সাথে হাসিমুখে কথা বলছেন।

উফফ! উনার হাসিমুখ সচরাচর দেখা যায় না।
কেনো উনি এতো আকর্ষণীয়!!

সাদিফ ভাইয়া কথা বলছেন আর আমি উনার পাশে দাঁড়িয়ে জুমু আর তাসফিয়ার সাথে কথা বলছিলাম।হঠাৎ কারো আওয়াজে আমরা তিনজন পাশে ফিরলাম।

মিনিস্টার শাখাওয়াত জাফর উনার মেয়েকে নিয়ে সাদিফ ভাইয়ার সামনে হাজির হলেন।
আমরা তিনজন বেশ কৌতূহলের সাথে উনাদের দিকে তাকিয়ে আছি।

“হ্যালো,ইয়াং ম্যান কেমন আছো”?(মি.জাফর)

“আলহামদুলিল্লাহ্।আপনি কেমন আছেন”?(সাদিফ)

“এইতো আছি।ওহহ..যার জন্যে এসেছি সেটাই তো ভুলে গেলাম।মিট মাই ডটার সানিয়া”।(মি.জাফর)

“হাই মিস্টার সাদিফ! আই অ্যাম এ বিগ ফ্যান অফ ইউর অ্যাটিটিউড অ্যান্ড ওয়ার্কস”।( সানিয়া উনার দিকে হাত এগিয়ে দিয়ে বললো)

এইদিকে সাদিফ ভাবছে..
“একে তো আমার প্রিয়তমা রেগে দাঁড়িয়ে আছে পাশে।আর এই মেয়েটা হাত এগিয়ে দিলো। ধেত!কেনো যে পলিটিক্স করি। এতো হ্যান্ডশেক আর ভালো লাগে না”।

সাদিফ অল্প করেই হাত ছোঁয়ালো সানিয়ার সাথে।

হাহ!গা জ্বলে গেলো।(শেফা মনে মনে বললো)

সাদিফ বাকিদের সাথে কথা বলার সুযোগে শেফা, তাসফিয়া আর জুমুর সাথে অন্যদিকে চলে গেলো।
একটা বড় মিটিং শেষে মি.জাফর উনার মেয়েকে নিয়ে চলে গেলেন।
সাদিফ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে পাশ ফিরে দেখতে পেলো শেফা নেই তার পাশে।

সাথে সাথেই সাদিফের কপালের রগ ফুলে উঠলো…
” এই মেয়ে এতো তিরিং বিড়িং করে কেনো আল্লাহ্ জানে।কোনো কাজ করতে মানা করলে সে কাজ আরো বেশি করে করবে। এতো করে বললাম পাশ থেকে যেনো না সরে, কিন্তু না! সে আমার কথা শুনতে নারাজ। ইচ্ছে তো করছে এই মেয়েকে”…

সাদিফ আর কিছু না ভেবে শেফাকে খুঁজতে লাগলো।
শেফা,তাসফিয়া আর জুমু খেতে বসে গেলো ইতি আর রাফিদ এর সাথে।

সাদিফ খাবারের জোনে গিয়ে দেখলো মুটামুটি সবাই এখন খাবার খেতে ব্যস্ত। সাদিফ শেফাকে দেখতে পেলো।সে আপাতত এখন খাবার খাচ্ছে।
শেফাকে দেখার মাঝে হঠাৎ করে সাদিফ এর সামনে তার মা হাজির হলো…

“সাদি.. খেয়ে নে বাবা।সবাই খেয়ে নিচ্ছে”।

“খাবো মা।তুমি খেয়ে নাও।আমি আগে মেডিসিন নিবো এরপর খাবো”।(সাদিফ)
সাদিফের মা কিছু বলার আগেই সাদিফ ইজহারকে দেখতে পেলো।

“মা আমি একটা কাজে যাচ্ছি”। বলেই সাদিফ চলে গেলো ইজহার এর কাছে।

“হেই ইজহার।কিছু কথা আছে। রুফটপে চলো আমার সাথে”।(সাদিফ)

“হ্যাঁ। আমারও কিছু কথা আছে আপনার সাথে।ওকে, চলেন।”(ইজহার)

সাদিফ আর ইজহার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে। সাদিফ একজন গার্ডকে রুফের দরজার সামনে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। যাতে কেউ যেনো তাদের ডিসকাশনে ইন্টারফেয়ার না করে।

সাদিফ বলে উঠলো..

“তুমি স্টার্ট করবে নাকি আমি স্টার্ট করবো কনভারসেশন”?

“আপনিই করেন।”(ইজহার)

“সোজা কথায় বলবো…আমার শেফা থেকে দূরে থাকো।ওর দিকে আর যেনো তোমার দৃষ্টি পড়তে না দেখি।”(সাদিফ)

সাদিফের কথা শুনে ইজহার বলতে লাগলো..

“এই কথা যদি আপনাকে বলি আমি?আপনাকেও আমি বলছি আপনি শেফা থেকে দূরে থাকেন”।

সাদিফ হেসে উঠলো…
“হুয়াট?কি বললে তুমি??আমার জানের দিকে আমি তাকাবো না?আর ইউ ড্রাংক”?

“সে আপনার জান হতে পারে কিন্তু তার কাছে আপনি হয়তো কেউ না। শেফা যদি কারো হয় তবে সে আমার হবে।তাছাড়া আপনি ওর ভাই হোন”।(ইজহার)

সাদিফ এতক্ষণ বেশ শান্ত ছিলো। কিন্তু ইজহার এর এসব কথা শুনে তার শান্ত মন অশান্ত হয়ে উঠলো।সে এক ঝটকায় ইজহারের কলার চেপে ধরলো…

“কি বলেছিস তুই?বেশি কথা আমার পছন্দ না।আমার জান আমাকে ভালোবাসে,এই কথা ও মুখে না বললেও আমি জানি।আমার জন্যে ওর জেলাসি,ওর মুখে হাসি,আমার দিকে ভালোবাসার নজরে তাকানো,কিছুই আমার চোখ এড়ায়নি।আমাদের ব্যাপারে তুই নাক গলানো বন্ধ কর”।

এইদিকে শেফার খাওয়া শেষে তাসিফ শেফাকে বললো…

“আরে শেফা, একটা গন্ডগোল লাগতে পারে। সাদিফ ভাই আর ইজহার ভাইকে উপরে রুফটপের দিকে যেতে দেখলাম”।

“ভালো হয়েছে।আমার সাথে কথা বলার সাহস কেমনে পাও তুমি?অসভ্য যাও এখান থেকে”।
(শেফা)
শেফার কথায় তাসিফ অপমানে একেবারে হলের বাহিরে চলে গেলো।

মুখে তাসিফের কথা নাকচ করলেও আমি একদৌড়ে জুমুর কাছে গেলাম।

“জুমু রুফটপে যেতে হবে। সাদিফ ভাইয়া আর ইজহার ভাইয়ার মাঝে কিছু একটা হয়েছে”।(আমি)

আমার কথায় জুমু আর তাসফিয়া আমার সাথে উপরে যেতে লাগলো।

রুফটপে পৌঁছাতেই ঐ দুজনের কথা ভেসে আসছে।আমরা ভিতরে যেতে নিলেই গার্ড আমাদের বাঁধা দিচ্ছেন। ভাগ্যিস চার তলায় রুফটপ।নাহলে এতক্ষনে সবাই জেনে যেতো এখানের কাহিনী।

ইজহার এবং সাদিফ ভাইয়ার কথা স্পষ্ট শুনতে পারছি।

“আপনি অনেক বড়লোক।শেফার মতো সাধারণ মেয়ে আপনার সাথে যায় না।আর আপনি চাইলেই শত শত মেয়েকে নিজের বেড পার্টনার করতে পারেন।কিন্তু শেফাকে ছেড়ে দিন।ওকে আমার হতে দিন। রাণী করে রাখবো ওকে আমি।আপনার যদি এতই ভালো লাগে ওকে তাহলে এক রাতের জন্যে ওকে ইউজ করে নিন।আমি এরপরও ওকে ভালোবাসতে রাজি আছি”।
ইজহারের এমন কথা শুনে আমার বুকে মোচড় মারলো।জুমু আর তাসফিয়াও প্রচন্ড অবাক হলো ইজহার এর এমন কথা শুনে।

ইজহারের মুখে এমন কথা শুনে সাদিফ আর দেরি করেনি। ধুম করেই একটা ঘুষি মেরে দিলো ইজহারের নাক বরাবর।

“শাট দা ফাক আপ !!!আর একটা কথা বলবি তো তোর জিহ্বা ছিড়ে নিবো আমি।আমার জান শেফা।আমার জান!!ওর সম্পর্কে এসব বলার সাহস কেমনে হয় তোর? এতো সাহস!!আমারই ভুল। তোকে আগে শাস্তি দেওয়া উচিত ছিলো আমার।আজ তুই মরবি আমার হাতে”।
(এক নাগাড়ে ইজহারকে এলোপাথাড়ি লাথি দিতে দিতে বললো সাদিফ)

এসব কথা শুনে শেফা জুমুকে বললো..

“রাফিদ ভাইকে ডেকে আন জলদি।আর প্লিজ ভাই,কেউ যেনো না জানে।জানলে ফ্যামিলির মান সম্মান যাবে”।

শেফার কথায় জুমু রাফিদকে ডাকতে চলে গেলো।আর শেফা,তাসফিয়া জোর করে রুফটপের ভিতরে চলে গেলো।

ইজহার নিচে শুয়ে আছে নাক দিয়ে তার রক্ত বের হচ্ছে।
সাদিফ ইজহারের কলার ধরে গার্ডকে ডাকতে লাগলো…

“অতন ঐ অতন!গান বের কর।আজকে এই বাইন*** শেষ দিন”।

আমি হালকা পায়ে উনার দিকে এগোলাম।গার্ড দৌড়ে উনার দিকে যেতে নিলেই আমি গার্ডকে ইশারায় থামিয়ে দিলাম।

সাদিফ ভাইয়ার কাঁধে হাত রাখতেই উনি গার্ড ভেবে হিংস্র লুকে পিছে ফিরলেন।আমাকে দেখা মাত্রই উনি ভুত দেখার মতো চমকে উঠলেন।
সাথে সাথে দাঁড়িয়ে পড়লেন উনি…

“তুমি এখানে কেনো এসেছো?এত সাহস কই পাস তুই?? ঐ অতনের বাচ্চা।তুই দেখিসনি ওকে এইখানে প্রবেশ করার সময়”?(চিল্লিয়ে)

গার্ডের সাথে এতো বাজে ব্যবহার করতে আমি কখনোই দেখিনি উনাকে।কিন্তু হঠাৎ চোখ গেলো উনার হাতের দিতে।চারদিকের ফেইরি লাইটের কারণে উনার হাত থেকে টপ টপ রক্ত বের হচ্ছে এটা স্পষ্ট দেখতে পারছি।

“কথা আস্ক করছি কানে যাচ্ছে না তোর?এইখানে কি”??(চিল্লিয়ে বলে উঠলেন সাদিফ ভাইয়া)

আমি উনার কথা পাত্তা না দিয়ে উনার হাত ধরে ভালো ভাবে দেখতে লাগলাম।

“এইভাবে মারপিট করছেন কেনো?বসে কথা বললেও তো হয় নাকি?ভালোলাগে না একদম আপনার এসব জিনিসগুলো”।(আমার হাতে থাকা টিস্যু দিয়ে সাদিফ ভাইয়ার হাতের রক্ত মুছে দিয়ে বললাম)

তাসফিয়ার প্রচন্ড মায়া হচ্ছিলো ইজহারের জন্যে।কিন্তু তার মুখের ভাষা শুনে সে পারছেনা এখন ইজহারকে জুতোর বাড়ি দিতে।

“শেফা! হি ইজ অ্যা জার্ক। ও তোমাকে ইউজ করতে চায়।তাই আমি বলেছি ওকে ওর ইউজ করা শেষ হলে আমার কাছে পাঠিয়ে দিতে তোমাকে”।(ইজহার উঠে বললো)

ইজহারের কথা শুনে সাদিফ ভাইয়া আমার হাত ছাড়িয়ে দিয়ে গার্ড থেকে গান নিয়ে ডিরেক্ট শুট করে দিলো।গুলির সাথে সাইলেন্সার লাগানো
ছিলো।আতঙ্কে আমি আমার মুখ ঢেকে নিলাম।

“সাদিফ, আর ইউ ম্যাড? কি করতে যাচ্ছিলে এখন”?
রাফিদ ভাইয়ার কণ্ঠ শুনে চোখ মেলে তাকালাম রাফিদ ভাইয়া সাদিফ ভাইয়ার হাত ধরে আছেন।আর ইজহার দাঁড়িয়ে আছে।তারমানে গুলি লাগেনি ইজহারের গায়ে।

“ভাই।আপনি কেনো এসেছেন এইখানে?আর আপনি কি জানেন না আমার কাজে বাঁধা দেওয়া আমার পছন্দ না”??(সাদিফ ভাইয়া)

“আজিব।তুমি বুঝছো না কেনো?সামান্য কারণে তুমি ওকে জানে মেরে ফেলবে?মাথা ঠাণ্ডা করো।আজ যদি শেফা জুমুকে দিয়ে খবর না দিতো, তবে কি হতো আল্লাহ্ জানেন”।
কথাগুলো বলেই রাফিদ ভাইয়া ইজহারকে নিয়ে চলে গেলেন।

জুমুর পিছে আমি যেতে নিলে সাদিফ ভাইয়া আমাকে হাত ধরে থামিয়ে দিলেন।আর সাথে জুমু,তাসফিয়া আর গার্ডকে চলে যেতে বললেন।
সাদিফ ভাইয়ার অবস্থা দেখে সবাই শনশন করে চলে গেলো।

সাদিফ ভাইয়া আমার দুই বাহু চেপে ধরে বললেন..
“কি?? বেশি মায়া হচ্ছিলো ঐ কুত্তার জন্যে”?

আমি উনার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম…

“মায়া হচ্ছিলো কিন্তু উনার জন্যে না আপনার জন্যে।বুঝেন আপনি এইসব?নাকি শুধু মানুষ মারতেই পারেন।বুঝলাম সে খারাপ কথা বলেছে।তাই বলে কি জানে মেরে ফেলবেন”?

উনি আমার কোমর চেপে ধরে উনার সাথে মিশিয়ে নিলেন আমাকে।

“আমি ওকে মারতে চাইনি।সামান্য একটু বুঝিয়ে দিয়ে চেয়েছিলাম তুমি শুধু আমার।তোমার দিকে যেনো সে আর চোখ না দেয়।কিন্তু দেখো সে কি করেছে!আমার প্রিয়তমার নামে উল্টো পাল্টা কথা বলছিলো। অ্যান্ড লাস্টে সে কি বললো?উফফ!!!এখন তোকেই আমার মারতে মন চাচ্ছে।রাফিদ ভাইয়াকে ডেকে আনার কি দরকার ছিলো”?(চিল্লিয়ে)

“আপনি!! আর শান্ত ভাবে বুঝাবেন কাউকে?? এমনটাও কি পসিবল?আপনি যে একটা গুন্ডা আমি তা ভালো করে জানি।আর গুন্ডাদের মন কখনোই শান্ত থাকে না।সামান্য একটা কারণে আপনি একটা জানকে মেরে ফেলবেন”??
(আমি)

“কি বললি আমাকে তুই আমি গুন্ডা? ওহ ভালই তো।যার জন্যে আমি এতো কিছু করলাম সে আমাকে গুন্ডা বলে উপাধি দিলো। গ্রেট”।
আমার কোমর ছেড়ে দিয়ে সাদিফ ভাইয়া আবারো বলে উঠলেন..
“আমার চোখের সামনে থেকে যা তুই।আজকে থেকে তুই আমার চোখের সামনে আসবি না। তোকে দেখলে আমার অধিকার খাটাতে মন চায়।বাট তুই তো আমাকে গুন্ডা ভাবিস।তাই আমিও এখন থেকে তোর সাথে গুন্ডামি করবো”।

আমি কি বলতে কি বলে ফেললাম উনাকে!আল্লাহ্!গুন্ডা বলাতে উনি রাগ করেছেন প্রচন্ড। এটা আমি বেশ বুঝতে পারছি।
কিন্তু আমি তাও সাহস করে বললাম..

“সরি।গুন্ডা না আপনি অনেক ভালো মানুষ।হাতে ব্যান্ডেজ করে নিবেন। আর আপনি ডিনার করেননি কেনো এখনো?প্লিজ আসুন।আর কতক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখবেন?”

আমার কথায় উনি দেওয়ালে ধুম করে একটা ঘুষি মারলেন।

“লেট মি ডাই এলোন।না খেলে, ওষুধ না লাগালে কি আমি মরে যাবো?মরলেও তোর কি? হ্যাঁ তোর কি?জাস্ট গো”।(চিল্লিয়ে)

উনার হাত থেকে টপ টপ করে পড়া রক্ত এখন বেশ জোরে বের হচ্ছে।উনার কথা শুনে আমার বুকের প্রচন্ড ব্যাথা করতে লাগলো।মরার কথা বলার কি আছে?

আমি উনার হাত ধরতে চাইলে আমাকে জোরে ধাক্কা দিয়ে চলে যেতে লাগলেন উনি।
অর্ধেক পথ গিয়ে আবারো ফিরে এলেন।আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলেন।

আমাকে সেন্টারের গেটের সামনে রেখে উনি নিচে নেমে গেলেন।

অন্য সময় হলে আমি এতক্ষণে কেঁদে ভাসিয়ে দিতাম।কিন্তু এখন কান্না করলে সবাই জিজ্ঞেস করবে কাহিনী কি।
তাই বাসায় গিয়ে সব কান্না করবো।আর আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে সাদিফ ভাইয়া আজ বেশ আঘাত পেয়েছেন।আমিও না কি বলতে কি বলে ফেললাম।

আসলেই তো উনার নামে আমাকে কেউ খারাপ কিছু বললে আমিও তার চুল টেনে ছিড়ে ফেলবো।কিন্তু মেরে ফেলেটা আমি মোটেও সাপোর্ট করি না।সমস্যা নেই,আমি জানি উনি আমার সাথে রাগ করে থাকতেই পারবেন না।

ভিতরে আবারো জুমুর সাথে এক হলাম।তাসফিয়া নাকি চলে গিয়েছে।আর রাফিদ ভাই উনার ড্রাইভারকে দিয়ে ইজহারকে হসপিটালে পাঠিয়েছেন। হায় আল্লাহ্! কতো প্রেসের মানুষজন ছিলো।কেউ দেখলে আজকের কাহিনী সেটা কালকের খবরের কাগজে আর চ্যানেলে টপ নিউজ থাকতো।

বেশ কিছুক্ষণ পর দেখলাম, সাদিফ ভাইয়া প্রবেশ করলো হলে। হাতে তার ব্যান্ডেজ করানো। যাক বাবা ব্যান্ডেজ করিয়ে নিলেন।আমি উনার দিকে যেতে নিলে উনি অন্যদিকে চলে গেলেন।

আমি বেশ অবাক হলাম উনার এমন কাজে।বাট এখন রেগে আছেন ভেবে আমি এই ব্যাপারটাকে ইগনোর করলাম।
ফ্যামিলি ফটো তুললাম সবাই একসাথে। সব মেহমানদের বিদায় দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটলো।

সেই তখন থেকে এখন পর্যন্ত সাদিফ ভাইয়া আমার সাথে কথা তো দূরের ব্যাপার, আই কন্টাক্ট পর্যন্ত করেননি।

আমি উনার ব্যাবহারে মোটেও অভ্যস্ত নই।তাই জুমুর সাথে উনার দিকে এগোলাম।

“এই আপনি ডিনার করেছেন”?(আমি)

আমার কথা পাত্তা না দিয়ে উনি জুমুকে বললেন…

“আমি গুন্ডা মানুষ,আমি না খেলে.. কার কি বুঝলাম না।জুমু আর্লি নিচে নেমে যেতে বল সবাইকে”।
কথা শেষ করে উনি নিচে নেমে গেলেন।

আর উনার এমন কথায় আমার চোখ ভরে এলো। সাদিফ ভাইয়া কি জানেন না আমি উনার জন্যে কি ফিল করি??

আচ্ছা উনি কি আমার সাথে আর কখনোই কথা বলবেন না?

চলবে…❤️

কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। দয়া করে কেউ গল্প কপি করবেন না।আমার পেজ ছাড়া আমি আর কোথাও গল্প পোষ্ট করবো না।সো,কপি করা নিষেধ।
পার্ট ছোট লাগলে মনে করবেন আমি ব্যস্ত আছি কিন্তু তাও গল্প পোষ্ট করেছি।আর, যদি দেখেন আমি পোস্ট করছি না তাহলে বুঝে নিবেন আমি অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে ব্যস্ত আছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here