প্রিয়তমা❤️ #সিজন_২ #writer- সালসাবিল সারা পর্ব-৩১

0
1003

#প্রিয়তমা❤️
#সিজন_২
#writer- সালসাবিল সারা
পর্ব-৩১
*
*
কনভেনশন হল থেকে একসাথে সবাই নিচে নামলাম।খালামণি আর আপুর কথা মতো আমি খালামনির বাসায় যাবো।যদিও খালামণি মা আর ভাবীকে যেতে বলেছে সে বাসায়। কিন্তু মা যাবে না জানালো।
এইদিকে মামা,মামী,জুরাইন আর নানু মামার গাড়ি করে চলে গেলো একেবারে নানুবাসায়। মা- বাবা, ইসলাল ভাইয়া,ভাবী,বাবু আর রাফসান ভাইয়া আমাদের গাড়ি করে চলে গেলো বাসায়।

আমি খালামণি আর ইতি আপুর পাশে দাঁড়িয়ে আছি। সাদিফ ভাইয়া উনার ফুফুদের এক গাড়িতে উঠিয়ে দিলেন।আর এর পরের গাড়িতে খালামণি,খালু আর ইতি আপুকে উঠতে বললেন।
সাথে সাথেই আপুরা গাড়িতে উঠে চলে গেলেন।

পরের গাড়িতে উঠার জন্যে সাদিফ ভাইয়া.. জুমু আর মীরা আপুকে নির্দেশ দিলেন।

আমি অবাক হয়ে ভাবছি… আমি কই যাবো তাহলে?আমি কি এইখান থেকে হেঁটেই যাবো নাকি!কিছু না বলে আমি যে স্থানে দাঁড়িয়ে ছিলাম সেইখানেই দাঁড়িয়ে রইলাম।
আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জুমু বলে উঠলো..

“ম্যাম,আপনি কি বাসায় যাবেন না”?

“না যাবো না।আমি রাফসান ভাইয়াকে কল দিচ্ছি ও এসে আমাকে নিয়ে যাবে।তোর ভাই তো আমাকে দেখছে না চোখে”।(আমি)
কথাটা বলার সময় আমার প্রচন্ড অভিমান হলো।
আমি কি এমন করেছি যার কারণে উনি এত্ত ইগনোর করছেন আমাকে।সরি বলার সুযোগটা পর্যন্ত দিচ্ছেন না।

“যাবি না মানে কি? আয় জলদি। সাদিফ ভাইয়া বকবে এখন আবার”।(জুমু)

কথার মাঝেই দেখলাম সাদিফ ভাইয়া গাড়ি থেকে নামলো।কিন্তু আমি উনার দিকে পাত্তা না দিয়ে জুমুকে বললাম…

“বললাম তো যাবো না।তোর ভাইয়ার দামী গাড়িতে আমার মতো মিডেল ক্লাস মেয়ের জায়গা হবে না।আমি যাবো না ভাই।আমি আমার বাসায় যাবো। ভুল হয়েছে আমার বাসায় না গিয়ে”।

কথা বলার মাঝে শেষ মেশ আমি কান্নায় করে দিলাম।এই সাজগোজে আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে কান্না করছি তাও এই সাদিফ ভাইয়া আমার সাথে রাগ দেখিয়ে মুড দেখাচ্ছেন, তাই।ভাবা যায় এইসব?

সাদিফ ভাইয়া আমাদের দিকে এগিয়ে আসলো।আমি ততক্ষণে পার্স বের করে রাফসান ভাইয়ার মোবাইলে কল দিতে নিচ্ছিলাম।আর তখনি সাদিফ ভাইয়া আমার হাত থেকে মোবাইল নিয়ে নিলেন।

“সমস্যা কি?নাম ধরে ধরে গাড়িতে উঠাতে হবে এখন? কাঁদছিস কেনো?আমি মরিনি এখনো এভাবে কাঁদতে হবে না।আমি মরলে তখন কাঁদিস।আর একটা সাউন্ড করা ছাড়া আমি যেনো তোদের গাড়িতে দেখি”।(সাদিফ ভাইয়া চিল্লিয়ে বললেন)

সাদিফ ভাইয়ার মুখে মরার কথা শুনে আমার মনে হলো আমি আর এই দুনিয়ায় নেই।কান্না করা অফ না করে আমার চোখ দিয়ে পানির পরিমাণ আরো বেশি করে ঝরতে লাগলো।

“কথায় কথায় মরার কথা বলতে হয়?আপনার আগে তো আমিও মরে যেতে পারি।আল্লাহ্ কার মৃত্যু কবে লিখে রেখেছেন কেউ জানে না।বার বার মরার কথা বলা অফ করেন প্লিজ”।(কান্না করে)

“আর একটা কথা বলবি তো তোর অবস্থা আমি খারাপ করে ফেলবো।মুখে মুখে তর্ক শিখেছিস? আমার মতো গুন্ডার জন্যে তোর কাঁদতে হবে না। আয় এইবার গাড়িতে আয়।নাহলে থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিবো”।(সাদিফ ভাইয়া)

আমাকে আর যেতে হয়নি। সাদিফ ভাইয়া নিজেই আমার হাত ধরে গাড়িতে বসিয়ে দিলেন।আর নিজে সামনের সিটে বসে পড়লেন।

জুমু এতক্ষণ দাঁড়িয়ে এই দুইজনের কান্ড দেখছিলো।নিশ্চয় আজকের ঘটনার কারণে কিছু হয়েছে ওদের মাঝে।
“ব্যাপার না। শেফা থেকে জিজ্ঞেস করা যাবে আজ কি হলো তাদের মাঝে।”

এমনটা ভেবে দেরি না করে জুমুও গাড়িতে বসে পড়লো। জুমু গাড়িতে বসামাত্র ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দিলো।

কান্না করার কারণে আমার মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা হচ্ছে। ঐ বাসায় পৌঁছাতেই আমি আস্তে আস্তে বাসার ভিতরে চলে গেলাম।অবশ্য জুমু আমার এক হাত ধরে রেখেছিলো। সাদিফ ভাইয়ার দিকে আর তাকায়নি আমি।

ফ্রেশ হয়ে একটা কামিজ সেট পড়ে নিলাম।জুমু ততক্ষণে ঘুমে বেহুঁশ।আমি বের হওয়া মাত্রই ইতি আপু ওয়াশ্রূমে চলে গেলো।

সাদিফ ভাইয়াকে সরি বলা লাগবে আমার।তাই আর কিছু না ভেবেই আমি ধীরে ধীরে উনার রুমের দিকে এগোলাম।
দরজায় নক করতেই কোনো সাড়া পেলাম না।আবারো নক করতেই পিছন থেকে কেউ বলে উঠলো..

“কি চায় এইখানে”?

এইভাবে হঠাৎ পিছন থেকে ডাকার ফলে আমি ভয়ে কেঁপে উঠলাম।কণ্ঠস্বর শুনেই বুঝতে পেরেছিলাম এইটা সাদিফ ভাইয়া।
আমি পিছনে ফিরতেই উনার উন্মুক্ত বুকের সাথে ধাক্কা খেলাম। এতো কাছে এসে দাঁড়ানোর কি দরকার আমি বুঝিনা।উনার এক হাতে কফির মগ আরেক হাত দিয়ে গলায় ঝুলানো তাওয়াল ঠিক করছেন।
আমি আমার কপালে হালকা হাত বুলিয়ে সাদিফ ভাইয়াকে বলে উঠলাম…

“ভাইয়া আপনার সাথে কিছু কথা আছে।আসলে আমি অনেক দুঃ”…

আমার কথার মাঝে উনি উনার গলায় ঝুলানো তাওয়াল দিয়ে মাথা মুছে বলে উঠলেন..

“হুয়াট?আমার মতো গুন্ডার সাথে তোর এতো কিসের কথা?জানিস তো গুন্ডাদের চরিত্র কেমন হয়?তাছাড়া চেহারার যা হাল বানিয়েছিস মনে হচ্ছে তোর জামাই তোকে পাত্তা দিচ্ছে না।”

উনার কথায় আমি আবারও কেঁপে উঠলাম।তাও নিজেকে ঠিক রেখে বললাম..

“আমি জানি আপনি অনেক ভালো।প্লিজ আমার কথাটা শুনুন।আমি সত্যি সত্যি সরি।আমি অনেক বড় ভুল করেছি আপনাকে গুন্ডা বলে।প্লি..”
আমার কথা শেষ করার আগেই.. সাদিফ ভাইয়া উনার এক হাত আমার বুকের উপর রেখে আমাকে দরজার সাথে চেপে ধরলেন।

“আমি ভালো..ভীষন ভালো অন্যদের জন্যে।কিন্তু আমি খারাপ… ভীষন খারাপ আমি, তোর জন্যে আর স্পেশালি তোর সাথে রিলেটেড যেকোনো ছেলের জন্যে।আজ তো ঐ ছেলেকে বাঁচিয়ে দিলি।কিন্তু নেক্সট টাইম..আমার জিনিসের দিকে কেউ শুধু নজর দিলে হবে, বাজে কথা তো দূরে থাক।তাকে আমি মেরে ফেলতেও আমার হাত কাঁপবে না”।
প্রচণ্ড রাগে কথাগুলো বলে উনি আমার গলায় নাক ঘষে দিলেন। এমন হওয়াতে আমি চোখ বন্ধ করেই উনার বুক খামচে ধরলাম।

“আউচ”বলেই সাদিফ ভাইয়া আমার দিক থেকে সরে গেলেন।

উনি সরতেই আমি চোখ খুললাম। সাদিফ ভাইয়া উনার বুকে তাওয়াল দিয়ে চেপে ধরে আছেন।

“অল্পতেই এই তোর অবস্থা। বাট ওয়েট ফর মাই ব্যাড টর্চার বেবি”।(সাদিফ ভাইয়া)

সাদিফ ভাইয়া আমাকে দরজা থেকে ঠেলে সরিয়ে দিলেন।

“আপনি আমাকে মারলে মারেন।টর্চার করলেও করেন।বাট প্লিজ আমার সাথে কথা বলবেন।আপনি আমার সাথে কথা না বললে আমার একদম ভালো লাগে না”।(আমি)

“জাস্ট গো ফ্রম হেয়ার। গুন্ডার সাথে কথা বলার কোনো দরকার নেই তোর।আর আমি তোর মতো ভদ্র মেয়ের সাথে কথা বলিনা”।(সাদিফ ভাইয়া)
বলেই উনি আমার মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিলেন।

আবারও কান্না চলে আসলো।এই লোকটা আমাকে এমন করছে কেনো?উনাকে ছাড়া আমি একটুও থাকতে পারবো না।আর একটু আগে না আমাকে বেবি ডাকলেন!
কিন্তু আবার তো বললেন আমার মতো মেয়ের সাথে উনার কোনো কথা নেই।
চোখের পানি মুছে আমি রুমে চলে গেলাম।
ইতি আপু এখনো ওয়াশ্রূমে।

আমি জুমুর পাশে শুয়ে পড়লাম।কেনো যেনো সাদিফ ভাইয়ার কাছে ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে বার বার।উনার কথা ভাবতেই আমার চোখ দিয়ে নোনাজল পড়তে লাগলো।
আচ্ছা উনি কি আমার সাথে আর কখনোই কথা বলবেন না?উনি কি অন্য একজনকে বিয়ে করে নিবেন?
নাহ আর ভাবতে পারছি না।উনার কথা ভাবতেই বুকে এক অসহনীয় ব্যাথা হচ্ছে।কান্না করা অবস্থায় আমি ঘুমিয়ে গেলাম।

ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে সাদিফ। তার বুকের উপর তার বাবুইয়ের নখের আঁচড়ে হাত দিয়ে ছুঁয়ে দিচ্ছে সে।
সে আয়নায় তাকিয়ে বলে উঠলো…

“প্রায় অনেক বছর ধরে আমি তোমার প্রেমের, তোমার স্পর্শের জন্যে কাতর হয়ে আছি। তোমার একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্যে তোমাকে এতো বছর আগলিয়ে রাখা প্রিয়তমা।সেই যে ছোট ছিলে,এখনো সে ছোট্টটি রয়ে গেলে তুমি।অল্পতেই কি এতো কাঁদতে হয়?তাহলে তুমি ভেবে নাও এখন আমার কেমন লেগেছে এতটা বছর।আমি মোটেও ইগনোর করছি না তোমায়।তুমিও যে আমায় খুব বেশি ভালোবাসো,তোমায় সেই কথাটি বুঝিয়ে দিচ্ছি জাস্ট। পিচ্চিটার কান্না মাখা মুখে আজ তো আবারো ভুলে করে চুমু দিয়ে দিতাম। এতো আদুরে কেনো তুমি?তুমি শুধুই আমার। ইউ আর ওনলি মাইন বেবি।”

চুলের উপরে হাত বুলিয়ে দিয়ে, সাদিফ তার প্রিয়তমাকে নিয়ে স্বপ্ন সাজাতে সাজাতে ঘুমিয়ে পড়লো।


সকালে ঘুম ভাঙলো দুপুর একটায়।মাথা এক প্রকার ভার হয়ে আছে।তাও কোনমতে উঠে বসলাম।
জুমু আমার পাশে বসে মোবাইল গুতাচ্ছে।আমাকে উঠে বসতে দেখে সে বলে উঠলো…

“গুড নুন জান।”

“গুড নুন।”

“নাস্তা এনে দিবো এইখানে?নাকি নিচে গিয়ে খাবি?”(জুমু)

“নাহ খাবো না।বাসায় চলে যাবো ফ্রেশ হয়ে। একেবারে বাসায় গিয়ে লাঞ্চ করবো।”(আমি)

“বাজে বকিস না।ভাইয়া নেই তাই বলে কি তুই আবারো এইসব খাবার না খাওয়ার ধান্ধায় লেগে যাবি?”(জুমু)

“ভাইয়া নেই মানে?তোর ভাই কই?”(আমি অবাক হয়ে বললাম)

“কেনো তুই জানিস না?ভাইয়া এক সপ্তাহের জন্যে থাইল্যান্ড গিয়েছে বিজনেসের কাজে।ওর ফ্লাইট ছিলো সকাল ১০টায়।”(জুমু)

জুমুর এমন কথা শুনে আমি বেশ অবাক হলাম।

সাথে সাথেই আমার চোখ ভরে এলো আবার।

“না জুমু।উনি আমার সাথে প্রচন্ড রাগ করেছেন।আমার সাথে মনে হয় আর কখনোই কথা বলবেন না উনি।উনাকে ছাড়া আমি কেমনে থাকবো জুমু!”(আমি কান্না করলে বললাম)

জুমু আমাকে জড়িয়ে ধরলো।

“এই বাবু।কান্না কেনো?কি হলো তোদের মাঝে আমাকে বল?আর ভাইয়া তো বিজনেসের কারণে গিয়েছে।চলে আসবে তো।পাগল মেয়ে কাঁদতে হয় নাকি এভাবে?কি হলো তোদের মাঝে বল তো আমাকে।”

জুমুকে আমি সব খুলে বললাম উনার আর আমার মাঝে যা কিছু হলো।

“ভাইয়া এখন বেশ রেগে আছে।বুঝতেই তো পারছিস।সমস্যা নেই ঠিক হবে সব আল্লাহ্ ভরসা।চিন্তা করিস না।আমি খাবার এনে দিচ্ছি। ফ্রেশ হয়ে নে।”(জুমু)

জুমু চলে যেতে নিলেই আমি সাদিফ ভাইয়াকে মেসেজ দেওয়ার জন্যে মোবাইল নিলাম।কিন্তু ঘটনা দেখে আমি অবাক!
সাদিফ ভাইয়া আমাকে ব্লক করে দিয়েছেন সব সোশিয়াল মিডিয়া থেকেই।উনার মোবাইলে তো কল যাবেই না এখন।
এখন কি করবো আমি?

আজ পাঁচদিন উনার সাথে আমার কোনো যোগাযোগ নেই।একটা মুহূর্ত যায়নি যেখানে আমি উনাকে মিস করিনি।ভার্সিটিতেও আমার মন টিকে না। দুই চোখ শুধু উনাকে খুঁজে।
প্রায় সময় উনার পেজেই থাকি।শুধু উনাকে দেখি আমি।উনার সাথে আমার কিছু ছবি আছে আমার মোবাইলে।সেগুলোও দেখি।
এই লোকটাকে আমি কি পরিমাণে ভালোবাসি সেটা আমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারছি।বাসায়ও কারো সাথে তেমন কথা বলি না।উপরেই থাকি শুধু।মাঝে মাঝে ছাদে যায় বাবুকে নিয়ে।দোলনায় বসে থাকি।ভাবীর সাথে,বাবার সাথেও ভালো করে কথা বলিনা।আসলে মন ভালো না থাকলে কিছুই ভালো লাগে না।
যদিও সবাই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো আমার কি হয়েছে,আমি ওদের ভুলভাল বুঝিয়ে দিয়েছিলাম।মনটা শুধু এখন সাদিফ ভাইয়াকে খুঁজে।

জুমুও ইদানিং কার সাথে ফুসফুস করে কথা বলে।সে যে রাফসান ভাইয়া না সেটা আমি জানি ভালো করে।আমি খেয়াল করলে সে চুপচাপ ফোন কেটে দেয়।
কিছু জিজ্ঞেস করতে গিয়েও আমি জিজ্ঞেস করি না।কারণ মন থেকে আমি কিছুতেই শান্তি খুঁজে পায় না।যা কিছু করুক ,জুমু আমার ভাইকে ধোঁকা দিবে না এটা আমি বেশ ভালো করেই জানি।

রাতে খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ সাদিফ ভাইয়ার পেজে ঘুরাফিরা করলাম। গতকালকে উনি একটা পোস্ট করেছেন।আগামী মাসে একটা ইলেকশন হবে সেই বিষয়ে।সেই পোস্টেও উনার একটা ছবি দিয়েছেন।
বেশ সুন্দর লাগছে উনাকে।আজও সে ছবি দেখে আমার বুকে প্রচণ্ড চাপা কষ্ট হানা দিলো। মোবাইলটা বুকের উপর রেখে ঘুমিয়ে গেলাম।

সকালে মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙলো।ঝাপসা চোখে দেখলাম মা হাসিমুখে আমাকে বলছেন…

“ফুল বারোটা বাজে।জলদি উঠে পড়।কিছু স্পেশাল মেহমান আসবে।আমি খাটের উপরে শাড়ি রেখেছি।গোসল সেরে নে।ইরা আসবে একটু পরে। ও এসে তোকে শাড়ি পড়িয়ে দিবে।ফটাফট উঠে যা”।

আমি এই কথা শুনে এক লাফে উঠে পড়লাম।

“কি বলছো মা?কোন মেহমান আসবে??আমি কেনো শাড়ি পড়বো?”
(আমি উত্তেজিত হয়ে বললাম )

“ছেলেপক্ষ আসবে তোকে দেখতে।”(মা)

“কি??আমি কোনো বিয়ে করবো না এখন!মা আমি এখনো ছোট”।

“আগামী মাসে বিশ বছর হবে তোর।আর তুই এখনো ছোট?এই বিষয় নিয়ে আর কোনো কথা না।আর একটা কথা বলবি তো তুই আমার মরা মুখ দেখবি।”
এই কথা বলে মা চলে গেলো।

আর আমি অশ্রুসিক্ত চোখে মায়ের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম।মা কখনো এসব কথা বলেনি আমাকে।কি এমন হলো আমি বুঝতেই পারছিনা।আর ভাবতে পারবো না।সাথে সাথে জুমুকে কল দিলাম..

“দোস্ত!মা বললো ছেলেপক্ষ দেখতে আসবে! আমি কি করবো এখন?আমাকে সাদিফ ভাইয়ার সাথে কথা বলিয়ে দে।প্লিজ, আই নিড হিম।উনাকে ভালোবাসি আমি।উনাকে ছাড়া অন্য ছেলেকে আমি বিয়ে করতে পারবো না।”

“দেখ যা হচ্ছে হতে দে।আমাকে এসব বলে কিছু হবে না।ভাইয়া নেই দেশে।আমি কি বলবো ওকে?একবার বিয়ে হলে সব ঠিক হয়ে যাবে।”(জুমু)

“কি বলছিস জুমু?তুই জানিস কি বলছিস??আমি মরে যাবো তাও উনাকে ছাড়া অন্য কারো সাথে আমি বিয়ে করবো না।”
(বলেই রেগে ফোন কেটে দিলাম)

শেষ আশা খালামণি।কারণ বাবা,ভাই এরা সবাই মায়ের কথা মতো চলে।এদের কিছু বললে উল্টো মায়ের হাতের মাইর খেতে হবে।

তাই খালামনির নাম্বারে কল দিলাম। কিন্তু পোড়া কপাল আমার,খালামনির নাম্বার বন্ধ। ব্যস, আমার মনে হলো আমার জীবন শেষ।

কি হতে যাচ্ছে আমার লাইফে,একমাত্র আল্লাহ্ ভালো জানেন। সাদিফ ভাইয়া আপনি কোথায়?

চলবে….❤️

কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। দয়া করে কেউ গল্প কপি করবেন না।আমার পেজ ছাড়া আমি আর কোথাও গল্প পোষ্ট করবো না।সো,কপি করা নিষেধ।
আমার এক্সাম ছিলো কালকে।তাও আমি আজ পোস্ট করেছি গল্প।ছোট পার্ট বলে কেউ কমপ্লেইন করবেন না।যতটুকু পেরেছি লিখেছি😇।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here