#পতিতা_বউ
৪র্থ পর্ব
আফিফ নুহাকে নিয়ে ভার্সিটির স্টোর রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো। নুহা তো ভয়ে শেষ।
>>একি করলেন। এখানে কেনো আনলেন আমাকে আর দরজা বন্ধ করলেন কেনো আমি বাহিরে যাবো ছাড়ুন আমায়।
অনিমা বাহিরে দরজা ধাক্কাচ্ছে। নুহা দরজা খুলতে গেলেই। আফিফ নুহাকে টেনে নিয়ে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে। তারপর অনিমার উদ্দেশ্যে চিল্লিয়ে বলে,
>>আপু আপনি প্লিজ পাঁচটা মিনিট অপেক্ষা করুন। আমি আপনার ফ্রেন্ড এর সাথে কিছু জরুরি কথা বলছি।
অনিমা দরজা ধাক্কানো বন্ধ করে বাহিরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো। আফিফ এক দৃষ্টে নুহার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। আর নুহা ও। নুহা কেমন যেন কাঁপছে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে। নুহার শরীরে অনেকেই স্পর্শ করেছে কিন্তু কখনো এমন হয়নি। আফিফের স্পর্শে তার অন্যরকম লাগছে আজ। আফিফ নুহার চোখের দিকে তাকিয়ে কেমন ঘোরে চলে গেলো।
>>প্লিজ যেতে..দিন আমায়। আমার খুব ভয় করছে। প্লিজ।
নুহা কাপা কাপা গলায় আফিফ কে বললো।নুহার কথায় আফিফের ঘোর কাটলো। আফিফ নুহাকে বললো,
>>হুম ফার্স্টলি সরি আপনাকে এভাবে এখানে আনা উচিত হয়নি আমার। আর শুনুন আমার আপনার কাছ থেকে একটা হেল্প এর প্রয়োজন। আমার মনে হয়েছে যে আপনিই আমাকে হেল্প করতে পারবেন তাই আপনার কাছেই হেল্প চাইছি।
>>বলে দেখুন আমার সাধ্যের মধ্যে হলে আমি নিশ্চয় হেল্প করবো আপনাকে।
>>আপনি আমার সাথে প্রিন্সিপাল এর রুমে যাবেন। আর সেখানে গিয়ে বলবেন সোহান আপনাকে আর আপনার ফ্রেন্ডকে রেগ করছিলো। এই নিয়ে আমার সাথে সোহানের কথা কাটাকাটি হওয়াতে সে হাতাহাতি করা শুরু করে দেয়।
>>কিন্তু এটাতো মিথ্যে। আমি মিথ্যে কেনো বলবো?
>>মিথ্যে হোক আর যাই হোক আপনার কিন্তু আমাকে হেল্প করতেই হবে এন্ড দ্যাটস ফাইনাল।
>>সরি আমি পারবোনা।
এই বলে নুহা দরজার দিকে যেতে লাগলেই আফিফ নুহাকে টেনে নিয়ে দেওয়ালের সাথে তাকে তার দু’বাহু চেপে ধরে বলে,
>>তুমি জানো আমি কে? আমি আফিফ আফসার। আমি কিন্তু না মোটেই সহ্য করতে পারিনা। তুমি আমাকে না করার সাহস কোথায় পাও? ফার্স্ট ইয়ার স্টুডেন্ট নাকি? আগে কখনো দেখিনি ক্যাম্পাসে?
>>হ্য..হ্যা
>>ওহ গ্রেট। শুনো মাত্রই এসেছো। ধিরে ধিরে আমার ব্যাপারে জেনে যাবে আমি কেমন। ভালোভাবে বললাম যা বলছি তাই করো। নাহয় ভার্সিটি তে আর কখনো আসার সুযোগ পাবেনা। তুরি বাজাতেই তোমাকে বের করে দেওয়াতে পারবো। মাইন্ড ইট। তাই যা বলছো ভেবে বলো।
নুহা ঘাবড়ে গেলো। সে কোনো ঝামেলায় জড়াতে চাই না ঠিকই কিন্তু পড়াশোনা কন্টিনিউ করা টাও তার জন্য খুব জরুরি।
নুহা ভাবলো তার কথা টা মেনে নেওয়াই ভালো হবে।
>>আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু পড়ে যদি ওই ছেলেটা কোনো ঝামেলা করে?
>>সেসব তোমার না ভাবলেও চলবে। আর একবার যখন তুমি আমাকে হেল্প করছো তোমার সিকিউরিটির দায়িত্ব আমার। এখন চলো আমার সাথে।
আফিফ নুহাকে ছেড়ে দিয়ে দরজা খুলে দিলো। এরপর নুহার হাত ধরে টানতে টানতে আবার বের করে আনলো। অনিমা দরজার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো। আফিফ তাকে নিয়ে যেতেই থামিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
>>কি তখন থেকেই টানাটানি করছেন ওকে নিয়ে। হচ্ছেটা কি শুনি?
>>আপনিও চলুন আর সেটা আপনার ফ্রেন্ড থেকেই জেনে নিন। আর এই মেয়ে তুমি তাড়াতাড়ি আসো আমার সাথে প্রিন্সিপাল এর অফিসে।
আফিফ নুহার হাত ছেড়ে দিয়ে হাটা ধরলো। আফিফ নুহার হাত এতই জোড় দিয়ে ধরেছিলো যে নুহার হাত ফর্সা হাতে তার পাঁচ আংগুলের ছাপ বসে আছে। নুহা অনিমাকে বললো,
>>আয় আমার সাথে সব বলছি।
নুহা যেতে যেতে অনিমা কে সব কথা বললো। অনিমার মনেও একটাই প্রশ্ন যদি সোহান পড়ে ঝামেলা করে তাহলে কি হবে।
আফিফ প্রিন্সিপাল অফিসের সামনে আসতেই দেখলো দরজার পাশে সোহান দাঁড়িয়ে আছে। আফিফ সোহানের দিকে তাকিয়ে একটি বাকা হাসি দিয়ে রুমে ঢুকে গেলো। তার পিছে পিছে সোহান ও ঢুকলো। আর সোহানের পিছে পিছেই নুহা ঢুকলো।
তাদেরকে দেখে প্রিন্সিপাল একপ্রকার চিল্লিয়ে বললো,,
>>হচ্ছেটা কি আমার ভার্সিটি তে। এই ভার্সিটি থেকে আগে সবাই গ্রেজুয়েট হয়ে বের হতো আর এখন তোমরা গুন্ডা হয়ে বের হচ্ছো। যখন তখন ক্যাম্পাসে মারামারি করছো। আমি কম্পলেইন পেতে পেতে অতিষ্ঠ। আজই তোমাদের লাস্ট ওয়ার্নিং।
আফিফ স্যারের উদ্দেশ্যে বলে উঠলো,
>>স্যার চোখের সামনে অন্যায় হতে দেখবো নাকি? স্যার সোহান সকাল থেকেই ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট দের রেগিং করছিলো কিন্তু এই মেয়ে গুলোর সাথে অতিরিক্তই করে ফেলেছিলো তাই আমি তাকে মানা করার এক পর্যায়ে সে হাতাহাতি তে নেমে আসে।
প্রিন্সিপাল সোহানের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালেন। সোহান তো পুরাই থ আফিফের কথায় সে বলে উঠলো,
>>স্যার আফিফ একদম মিথ্যা বলছে। এমন কিছুই হয়নি।
>>স্যার আমি সত্যিই বলছি এইতো তারাও আছে রুমে আপনি নাহয় তাদেরই জিজ্ঞেস করুন।
স্যার নুহা আর অনিমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
>>এইসব যা আফিফ বলছে সত্যি নাকি?
নুহা কাঁপছে থরথর করে। আফিফ রাগি দৃষ্টিতে নুহার দিকে তাকিয়ে আছে। সেদিকে চোখ পড়তেই নুহা বলে উঠলো,
>>হ্যা স্যার সব সত্যি।
>>ঠিক আছে তোমরা যাও।
নুহা আর অনিমা চলে গেলো। সোহান রাগে গজগজ করছে। আর আফিফ মনে মনে পৈশাচিক আনন্দ নিচ্ছে। স্যার সোহানের দিকে তাকিয়ে বললো,
>>এইবার লাস্ট ওয়ার্নিং দিচ্ছি তোমাকে। আর যাতে এসব না শুনি। আর ক্যাম্পাসে রেগিং যাতে আর না হয়। নেক্সট টাইম তোমাকে রাস্টিকেট করতে আমার হাত কাঁপবে আমার।
>>জি স্যার।
>>হুম তোমরা যেতে পারো। আর ধন্যবাদ আফিফ প্রতিবাদ করার জন্য তবে মারামারি নট এক্সেপ্টেড মাথায় থাকে যেন।
>>থ্যাংকস ইউ স্যার।
সোহান আর আফিফ বের হয়ে গেলো রুম হতে। আফিফের ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি। সোহান আফিফের দিকে রাগী ভাবে তাকিয়ে বললো,
>>তোকে আর ওই মেয়ে গুলোকে আমি দেখে নিবো।
>>তা আমিও দেখে নেবো।
চলবে……
#Razia_Binte_SuLtan