ত্যাগের সংসার – পর্ব ৭+৮

0
265

7 + 8

#ত্যগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 7
!
ছেলের কথা শুনে খান সাহেব আতকে ওঠেন আর অবাক চোখে ছেলের দিকে তাকিয়ে থাকেন,
!কিন্তু ছেলে তাকে পাওা না দিয়ে মায়ের কাছে শুতে চলে যায়,
!
পরেরদিন সকালে খান সাহেব ছেলের কক্ষের সামনে ঘুরঘুর করতে থাকেন,
ছেলে দরজা খুলে বাহিরে বেরতেই সে কক্ষে প্রবেশ করে ধির পায়ে বিছানার কাছে এগিয়ে যায়,
!
কিছুক্ষণ ধরে দেখার পরে বেগম সাহেবার দু গাল আলতো করে চেপে ধরেন,
সাথেসাথে বেগম সাহেবা উঠে পরেন,
!
আরে উঠলে কেন?
তোমার শীরের এখনো রেস্টের প্রয়োজন,
!
আমি না উঠলে আপনার সংসার চলবে কি করে আপনি বলেন?
!
তুমি জেদ করোনা প্লিজ,
আচ্ছা এই ডায়মন্ড রিং টা দেখত পছন্দ হয় কিনা?
!
তখনি আমার কয়েক বছর আগের কথা মনে পরে যায়,
!
একটা বিশেষ দিনের কথা মাথায় রেখে আমি ওনার কাছে ডায়মন্ড রিং এর আবদার করেছিলাম,
!
তখন উনি আমাকে অপমান করে বলেছিলেন,
!
তুমি জানো একটা ডায়মন্ড রিং এর দাম কতো?
!
অতো গুলো টাকা তুমি কখনো দেখেছ হুমম,
!
শোনো ভিক্ষাকারীর মেয়েদের এতো সখ আল্লাদ করতে নেই,
!
তাই বামন হয়ে চাঁদে হাত দেওয়ার চেষ্টা করোনা কেমন?
!
আমাকে এতো টা অপমানকরে
কষ্ট দিয়েছিলেন ঠিকি,
!
কিন্তু ইশার বার্থডে তে ওকে তিন কোটি টাকার ডায়মন্ড রিং উপহার দিয়েছিলেন উনি,
!
ওই দিনি বুঝেছিলাম যে বামন দের চাঁদে হাত দেওয়ার সখ আল্লাদ কখনওই রাখতে নেই,
!
তাই আর কখনো সখ আল্লাদ করিনি আমি,
!
কি হলো কি ভাবছ তুমি?
!
কিছুনা তো নাও এটা পরো?
!
আসলে বামন দের চাঁদে হাত দিতে নেই,
এতো দামি জিনিস আমার অঙ্গে সইবেনা, আমাকে মানাবে না,
!
তাই ওটা আপনি অন্যকাও কে দিয়ে দিন তাকে হয়তো ওটায় আমার থেকে বেশি মানাবে,
!
এটা আমি তোমার জন্যে কিনেছি,
!
আমার চাই না,
তাছাড়া আমার অনেক কাজ আছে,
আপনি আসুন,
!
তারপর আমি তাড়াতাড়ি ওনার পাশ কাটিয়ে কিচেনে চলে যাই ,
!
আর রান্নার গোছগাছ করি,
!
তখন মনে হলো কেউ আমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে,
!
হঠাৎ করে তখন পেছনে ফিরতেই ওনার বুকের সাথে ধাক্কা খাই,
!
কি হলো কিছু লাগবে আপনার?
!
হ্যা একটু রুমে আসো,
!
আমার এখন অনেক কাজ আছে,
পরে আসবো,
!
আর এমনি তেও আপনার প্রয়োজনীয় সব জিনিস,
আমি আগেই গুছিয়ে রেখে এসেছি,
!
তাহলে এখন কি চাই আপনার?
!
আমি তোমার স্বামী আমার তোমাকে প্রয়োজন হতেই পারে,
!
আর তোমার কি হয়েছে হুমম?
!
কথায় কথায় তর্ক কর কেন হুম,
শোনো আমি তর্ক করা পছন্দ করিনা এটা যেনে ও তুমি এটাই করছ,
!
সবসময় সবার সব জিনিস ভালো নাই লাগতেই পারে,
!
এর মানে তো এই নয়,
যে তাকে দিয়ে সেটা বলপ্রয়োগ করে করিয়ে নিতে হবে,
!
তোমার কথায় আমি কষ্ট পেয়েছি,
!
যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন,
তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিন,
চলবে..

#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 8
!
যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন,
তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিন,
!
তুমি এতো মুখেমুখে তর্ক কর কেন?
হুমম?
!
তর্ক না করে,
আমার সাথে রুমে গেলেই তো পারো,
!
বাবাই তোমার সমস্যা কি?
মা কে জোর করছ কেন?
!
এমনি তার সাথে আমার কিছু কাজ আছে?
তাই,
!
আর এমনি তেও,
অলওয়েজ মা বাবার ব্যাপারে নাক গলানো উচিত নয়,
!
ওকে বাই,
!
আপনার যা বলার তাড়াতাড়ি বলুন,
!
মানে?
আমাকে তোমার কাজের ব্যস্ততা দেখাচ্ছ?
!
সারাদিন এমন কি কাজ করো তুমি?
যে তোমার কাজের ব্যস্ততা তুমি আমাকে দেখাচ্ছ,
!
দেখুন ইয়ানার কলেজে টিফিন করে পাঠাবো,
!
তাই আমাকে এভাবে বিরক্ত করা বন্ধ করুন,
!
ও তাই,
মুখের খুব বুলি ফুটেছে তাই না?
!
তোমার যা মন চায় করো,
যতসব এই মহিলা কে বিয়ে করে আমার লাইফ টাই হেল হয়ে গেল,
!
জানি তো,
সেকি আর আমি জানিনা,
!
আমার কথায় কষ্ট পেয়ে,
আমার ওপরে রাগ ঝাড়তে চলে এসেছেন,
!
এতো বছরে,
যে কষ্ট গুলো আমি পেয়ে এসেছি,
সেই রাগ গুলো আমি কার ওপরে ঝাড়ি?
দুপুরে মিয়াদ কে খাইয়ে,
হলে গিয়ে দেখি,
উনি বেশ হাসিখুশি হয়ে অফিস থেকে ফিরে এসেছেন,
নিশ্চই ইশা কে ডাক্তার দেখিয়ে এসেছেন,
হুহহ বাড়ি তে নিজের অসুস্থ বৌ ফেলে আরেকজনের বৌয়ের সেবা ঠিকি করছেন,
!
কি হলো কিছু লাগবে আপনার?
!
হ্যা,ইয়ানার রিপোর্ট কার্ডে টিপ সই মেরে দাও,
!
কেন টিপ সই কেন?
আমি তো আর অশিক্ষিত নই,
!
ওরে আমার শিক্ষিত এইচ,এস,সি পাশ,
এই এতো ঢং করোনা তো,
তাড়াতাড়ি সাইন করে দাও,
!
তারপর উনি আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রুমে চলে যায়,
!
ইদানীং বেগম টা বেশ তর্ক করা শিখেছে,
কি যেন বার করতে গিয়ে হঠাৎ আমার কিছু রং জ্বলে ছিড়ে যাওয়া সাড়ি ব্লাউজ পেটিকোটেরর দিকে যায়,
!
তখন ফুলবানু কে ডেকে বলি,
!
এগুলো ফেলে দে,
তো তদেরর বেগম সাহেবা এগুলো যত্ন করে রেখে দিয়েছে,
আসলে ওরি বা দোষ কি?
গরিব ঘেরে মেয়ে তাই অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকে,
!
তখন ফুলবানু বিড়বিড় করে বলে,
!
সাহেব এগুলো বেগম সাহেবার নিত্যদিনের পরিধেয় কাপড়,
!
শুনে বেশ অবাক লাগল যে আমার বেগম টা এসব রং জ্বলে ছিড়ে যাওয়া সাড়ি ব্লাউজ পরে আর এগুলে আজ ওবদি আমার চোখে পরেনি,
ও বেশ কয়েক মাস আগে আমাকে সাড়ি কিনে দেওয়ার কথা বলেছিল,
আমিই ও ইশা কে অপমান করায় রাগ কর কিছু কিনে দেইনি,
আমারি অন্যায় হয়েছে ওকে ওভাবে বাজে খরচের দোহাই দেওয়া উচিৎ হয়নি আমার,
আমি জানি ও এই সময় ছেলের রুমে থাকে তাই সেখানে গিয়ে দেখি,
ও ছেলের ঘর গোছাচ্ছে আর বা হাতের নিচ থেকে ছিরে যাওয়া ব্লাউজ টা স্পষ্ট দেখাচ্ছে কিন্তু আমাকে দেখেই সেটা লুকিয়ে ফেলে ও, সাথে সাথে ছেলে রুমঢুকে ওকে জড়িয়ে ধরে বলে,
!
মা দেখো তোমার জন্যে আমি আজকে বেতন পেয়ে কত গুলো সাড়ি নিয়ে এসেছি,
এখন থেকে তুমি এগুলো পরবে,
তোমার কিছু লাগলে আমাকে বলবে,
জানি পার্ট টাইম জব তবে আমার কোনো সমস্যা নেই,
আমার মায়ের জন্যে করতে পারলে আমারি ভালো লাগবে,
বিশ্বাস করো এখানে বাবাই এর এক টাকা ও আমি খরচ করিনি
!

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here