পতিতা বউ – পর্ব ২৩

0
247

#পতিতা বউ

২৩তম পর্ব

নুহা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে তখনি আফিফ নুহাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। আস্তে আস্তে তার সব গয়নাগুলো খুলে ফেললো। নুহা ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।
আফিফ নুহাকে আবারো তুলে নিলো কোলে। নুহাকে খাটে নিয়ে বসিয়ে দিলো। নুহা চোখ বন্ধ করে আছে। তার চোখ দিয়ে অনবরত পানি গড়িয়ে পড়ছে। আফিফ তা খেয়াল করলো। সে নুহার চোখে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে বললো,

>>আই প্রমিস নুহা তোমার এই চোখ দু’টোয় কখনো আমার কারণে পানি ঝড়তে দেবোনা। আর তোমাকে নিজের সর্বস্ব দিয়ে আগলে রাখবো। তোমাকে অনেক ভালোবাসবো অনেক।

নুহা আচমকায় আফিফকে ঝাপটে ধরে ফেললো। এখনো সে নিজেকে সামলাতে পারছেনা। এখনো চোখ দিয়ে জল ঝড়ছে।
আফিফ নুহাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
সময় যত গড়ালো তারা একে অপরের আরো কাছে চলে এলো। তাদের সম্পর্কে আর কোনো দূরত্ব রইলো না। একে অপরকে নিজের করে নিলো তারা। সেই রাত টি ও তাদের ভালোবাসার মত পরিপূর্ণ হলো।

ফজরের আযান পড়তেই নুহার ঘুম ভেঙে গেলো। নুহা চোখ খুলে দেখলো আফিফ তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। কেন জানি আফিফকে দেখে তার প্রতি আরো বেশি মুগ্ধতা কাজ করছে। নুহা আফিফের গালে আর কপালে চুমু দিয়ে উঠে পড়লো।
শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়ালো। গলায় আর ঘাড়ে অসংখ্য দাগ।সবই ভালোবাসার সাক্ষী। এমন দাগ নুহার শরীরে আগেও আঁকা হয়েছিলো তবে সেগুলো ছিলো লালসার। কিন্তু আফিফের একে দেওয়া এই দাগ গুলো ভালোবাসায় ভরপুর।
নুহা একটি গলা বন্ধ থ্রি-পিচ খুঁজে পড়ে নিলো। এরপরনামাজ পড়ে নিলো। আর মোনাজাতে তাদের নিজেদের নতুন জীবনের জন্য প্রার্থনা করলো।
নামাজ শেষ করে নুহা একবার ভাবলো আফিফ কেও ডাকবে পরে আবার তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখে মায়া হলো। রাতে তো নিজেও ঘুমাইনি আর তাকেও ঘুমুতে দেয়নি।
নুহার অনেকটা লজ্জা লাগছে।

নুহা ব্যাল্কুনি তে চলে গেলো। সবেমাত্র নতুন দিনের আলো ফুটেছে। নুহার নতুনজীবনের ও আজকে নতুন দিন। প্রায় অনেক্ষণ নুহা ব্যাল্কুনিতে কাটিয়ে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়লো।

আফিফের ঘুম ভাঙলো সাড়ে সাতটায়। উঠে সে নুহা কে না দেখে কিছু টা ভয় পেয়ে গেলো। ওয়াশ রুমে চেক করেও পেলোনা। ব্যাল্কুনিতে গিয়ে দেখলো নুহা কাউচে জড়সড় হয়ে ঘুমিয়ে আছে।

আফিফ নুহার পাশে বসে তার এলোমেলো চুল গুলো ঠিক করে দিলো। তারপর তাকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় নিয়ে শুইয়ে দিয়ে তার কপালে একটি ভালোবাসার পরশ একে দিলো। তারপর শাওয়ার নিতে চলে গেলো।

নুহার ঘুম ভাঙার পর সে নিজেকে বিছানায় পেয়ে একটু ও অবাক হয়নি। সে জানে এটা আফিফই করতে পারে।
নুহা উঠে বসতেই আফিফ ওয়াশরুম থেকে বের হলো। শুধুমাত্র টাওয়াল পেছিয়ে আছে সে। আফিফকে দেখে নুহা লজ্জায় মাথা নামিয়ে ফেললো। আফিফ চুল আছড়াতে আছড়াতে বললো,

>>এখনো লজ্জা পাচ্ছো? আমি তো ভাবলাম সব লজ্জা কালকে রাতেই দূর হয়ে গেছে।

>>উফফ তোমার মুখে কথা আটেনা একদমই।

>>আমি আমার বউয়ের সাথে কথা বলছি। তাই আটছেনা কিছু। আচ্ছা শুনো তোমার পিঠের মধ্যখানের তিলটা খুবই

নুহা উঠে আফিফের মুখে হাত দিয়ে তার কথা আটকে ফেললো। লজ্জায় লাল হয়ে আছে মেয়েটা। আফিফ হাসছে। ঠিক তখনি দরজায় নক পড়লো। নুহা আবার গিয়ে খাটে বসে পড়লো।

>>কে?

>>স্যার ব্রেকফাস্ট এর জন্য আসুন।

>>হ্যাঁ আসছি নাও গো।

আফিফ তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নুহাকে নিয়ে নিচে নেমে এলো। নাহিদা আর রাফি টেবিলেই ছিলো।

আফিফ টেবিলে বসতেই রাফি তার সাথে দুষ্টুমি করা শুরু করে দিলো। নুহা যেই না মাত্র নাহিদা কে সালাম করতে যাবে সে টেবিল ছেড়ে উঠে গেলো। এই ঘটনায় নুহা কষ্ট পেলো। আর আফিফ অনেকটা রেগে গেছে। রাফি উঠে গিয়ে নাহিদার হাত ধরে জোর করে তাকে নিয়ে এনে বললো,

>>ভাবি সালাম না করা পর্যন্ত এক পা ও নড়বে না তুমি এখান থেকে।

ছেলের কর্মকান্ডে নাহিদার মাথায় যেন আরো রক্ত চেপে যাচ্ছে। নুহা ঝুকে সালাম করলে তিনি নুহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে আবারো চলে গেলেন।
সবাই আবারো টেবিলে বসে পড়লো। একপ্রকার শান্ত পরিবেশেই তারা ব্রেকফাস্ট সেড়ে নিলো।

চলবে…

#Razia_Binte_SuLtan

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here