#পতিতা_বউ
২৬তম পর্ব
আফিফের ঘরে ফিরতে প্রায় সন্ধ্যা গড়িয়ে এলো। বাসাই ঢুকেই তার মনে পড়লো নাহিদার সাথে কথা বলা দরকার। সে নাহিদার রুমের দিকে যেতেই দেখলো নাহিদা খাটে আধশোয়া হয়ে বসে আছে। সে দরজায় নক করলো। নাহিদা মাথা তুলে দেখে আবারো আগের মত শুয়ে পড়লো। আফিফ নাহিদার পাশে যেয়ে বসে বললো,
>>ছোটমা আই এম সরি।
>>কিসের জন্য?
>>এই যে তোমাকে না জানিয়ে এত কিছু করে ফেললাম তাই।
>>এতে সরি বলার কি আছে তুমি এখন যথেষ্ট এডাল্ট। এমন টা করতেই পারো। আমি এসব নিয়ে কিছু বলার কে?
>>সরি আমার সব বিহেভিয়ার এর জন্য। প্লিজ মাফ করে দাও। একটা প্রবলেম এর জন্যেই আমি নুহাকে এভাবে বিয়ে করে নিয়ে এসেছি। সব কিছু এত তাড়াহুড়ো করে হলো যে তোমাদের কাউকেই কিছু জানানোর সুযোগ পাইনি। এর জন্যে তুমি আমাকে যা শাস্তি দেবে আমি মেনে নিবো প্লিজ তাও রাগ করে থেকোনা।
>>জানিস আমি রাফির চেয়েও বেশি।তোকে ভালোবাসি তাও তুই এমন টা করলি। আমার সাথে বাজে ব্যবহার করলি। এসবে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি। যাই হোক। আমি এসব ভুলে যেতে চাই এখন যখন বিয়ে করেই ফেললি আর কিছু কি বলবো সুখে থাক দোয়া করি।
>>জি ছোটমা সবসময়ই দোয়াই রাখবে। আসি তাহলে।
>>হুম যা।
আফিফ চলে গেলো। নাহিদা যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো। আফিফের সামনে এই ভালো সাজার অভিনয় করতে করতে সে বিরক্ত। তবুও যে করতে হবে। উপায় নেই। সব হাসিল করার জন্য করতেই হবে। আফিফ এক ঝামেলা এখন তার বউ হলো আরেক ঝামেলা। কিন্তু এই ঝামেলাকে ব্যবহার করেই নাহিদা নিজের কাজ করবে। তাহলে সাপ ও মরবে আর লাঠি ও ভাঙবেনা।
আফিফ সিড়ি দিয়ে উঠার সময় রাশু খালা তাকে এসে বলে,
>>বাবা বউমণির শরীল হয়তো খারাপ। দুপুরে খাওন ও খাইতে নামে নাই। রুমে দিয়া আসছিলাম কিন্তু তাও খাইলো না। সেই তখন থেকে ঘুমাইয়ায় আছে।
>>কি বলেন খালা। আচ্ছা আমি দেখছি। আপনি পারলে কিছু খাবার পাঠিয়ে দিন।
আফিফ রুমে ঢুকেই দেখলো পুরো রুম অন্ধকার। আফিফ লাইট জ্বালালো। নুহা এখনো ঘুমিয়ে আছে চাদর মুড়িয়ে। আফিফ গিয়ে নুহার পাশে বসলো। নুহা অনেক্ষণ কান্না করেছিলো ঘুমানোর আগে। তাই তার চোখমুখ কেমন যেন ফ্যাকাসে হয়ে আছে। আফিফ আস্তে আস্তে নুহা কে ডাকতেই নুহার ঘুম ভেঙে গেলো। আফিফকে দেখে নুহা উঠে বসতেই আফিফ বললো,
>>তুমি দুপুরেও কিছু খাওনি কেন? খাওয়াদাওয়া বাদ দিয়ে এভাবে পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছো কেন? আর চোখ মুখ এমন হয়ে আছে কেন?
আফিফের উত্তরে নুহা কি বলবে সে বুঝতে পারছেনা। তখন নাহিদার আচরণে নুহা অনেক কষ্ট পেয়েছিলো। সেই সাথে মামুণির কথা ও মনে পড়ছিলো তাই নুহার মানুষিকতা মোটেও ভালো ছিলোনা। নুহার একটা বাজে অভ্যাস হচ্ছে সে যখন কষ্ট পাই তখন স্লিপিং পিলস খেয়ে ঘুমিয়ে থাকে।
>>কি হলো কিছু বলছো না কেন? শরীর খারাপ নাকি?
>>না..না আসলে মামুণির কে খুব মিস করছিলাম তাই মন খারাপ ছিলো। আমার মন খারাপ থাকলে কিছু খেতে মন চাই না। আর তুমিও ছিলেনা একা একা বসে খাওয়া যায় নাকি বলো?
>>ওহ আচ্ছা সরি আসলে খুব দরকারি কাজ ছিলো তাই দেরী হয়ে গেলো। আর আমিও কিছুই খাইনি চলো একসাথে খেয়ে নিবো। আমি ফ্রেস হয়ে আসছি কেমন।
>>আচ্ছা।
আফিফ ওয়াশরুমে চলে গেলো। নুহা বসে আছে। তখনি কানে মাগরিবের আজান ভেসে এলো। নুহা গভীর ঘুমে ছিলো তাই সে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করতে পারেনি। আফিফ ওয়াশরুম থেকে বের হতেই নুহা গিয়ে অজু করে এসে নামাজে দাঁড়ালো। আফিফ বরাবরই তা দেখে অবাক আর মুগ্ধ ও। নুহা নামাজ পড়ছে আর আফিফ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। মেয়েদের সবচেয়ে বেশি সুন্দর দেখায় নামাজ পড়ার মুহূর্ত্ব গুলো তেই। সেই সময়ে সার্ভেন্ট খাবার দিয়ে গেলো। আফিফ অপেক্ষা করছে কখন নুহার নামাজ পড়া শেষ হবে।
চলবে….
#Razia_Binte_SuLtan