#পতিতা_বউ
৩২তম পর্ব
সোহান ড্রাইভ করছে আর পুরোনো দিনের গল্প শোনাচ্ছে নুহা কে।
>>আফিফ আর আমার ফ্রেন্ডশিপ নার্সারি থেকে ভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ার পর্যন্ত ছিলো। একে অপরের বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলাম।
কিন্তু একটা মেয়ের জন্যই যত প্রবলেম হলো আমাদের মাঝে। আমার সাথে রিলেশন এ জড়িয়ে ছিলো মেয়েটা কিন্তু আফিফ শুরু থেকেই মেয়েটাকে অত পছন্দ করতো না। মেয়েটা ছিলো চালু টাইপের। সে আমার সাথে রিলেশন থাকাকালীন ও আফিফের সাথে লাইন মারতে চাইতো।
একবার এসব নিয়ে আফিফ আমাকে বললে আমি উলটো আফিফের সাথেই বাজে বিহেভ করি। অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। নিজের বেস্টফ্রেন্ডকেও সেদিন বিশ্বাস করিনি।
সেদিন এর পর থেকেই আফিফের সাথে শত্রুতার শুরু হয় আমার। দুই জনে দুই জনের বিরুদ্ধে থাকতাম। আর মেয়েটা আমাকে উস্কে দিতো। পরে যখন নিজেই রিয়ালাইজ করলাম মেয়েটা আসলেই বাজে সেদিন খুব গিলটি ফিল করে ছিলাম। আফিফের কাছে মাফ চাওয়ার ট্রাই করেছি বেশ কয়েকবার কিন্তু সাহস পাইনি। আর আমি জানি আফিফ আমাকে কখনোই মাফ করবেনা।
>>একবার ট্রাই তো করে দেখতেন?
>>নাহ কোন মুখে অর কাছে মাফ চাইবো আমি? সেসব থাক আমরা পৌছে গেছি।
নুহা সোহানের কথা মনযোগ দিয়ে শুনছিলো তাই সে খেয়ালই করেনি যে সে চলে এসেছে। নুহা গাড়ি থেকে নেমে সোহান কে বাই বলে ঘরের দিকে হাঁটা দিলো।
নাহিদা বাগানে দোলনায় বসে চা খাচ্ছিলেন। নুহার সাথে সোহানকে দেখে ভ্রু কুঁচকান। নুহা ঘরে ঢোকার সময় তাকে দেখে সালাম দেয়।
>>আসসালামু আলাইকুম ছোটমা।
>>ওয়ালাইকুম সালাম। কার সাথে এসেছো?
>>ছোট মা আজকে ঘর থেকে গাড়ি যায়নি আর আফিফ ও অফিসে বিজি ছিলো তাই উনার পুরোনো একজন ফ্রেন্ড আমাকে ড্রপ করে দিয়েছে।
>>ওহ আচ্ছা ঠিক আছে তুমি যাও।
নুহা উপরে চলে গেলো। আর নাহিদা বসে বসে অন্যকিছু ভাবতে ব্যস্ত।
সন্ধ্যায় আফিফ অফিস থেকে ফিরলো। ব্যাগ টা খাটে রেখে ওয়াশরুমে গেলো সে। বের হয়েও নুহা কে আশেপাশে পেলো না। এই সময়ে হয় নুহা বাগানে থাকে নাহয় ব্যাল্কুনি তে। আফিফ গেইট দিয়ে আসার সময় বাগানে তাকে দেখেনি তাহলে সে ব্যাল্কুনি তে আছে। আফিফ ব্যাল্কুনির দিকে পা বাড়ালো। নুহা আপনমনে দাঁড়িয়ে প্রকৃতি দেখছে দুচোখ ভরে। পিঠময় খোলা চুল গুলো বাতাসের সাথে ক্ষণে ক্ষণে উড়ছে। আফিফ গিয়ে নুহাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে চুল গুলো একপাশে এনে ঘাড়ে মুখ গুঁজে দিলো ঠিক প্রথম বারের মত। নুহা আফিফের স্পর্শ টের পেয়ে বললো,
>>কবে এলে?
আফিফ সেই অবস্থাতেই উত্তর দিলো,
>>২০মিনিট আগে।
>>ডাকলে না কেনো আমাকে?
>>ডাকলে কি এখনের এই মোমেন্ট টা পেতাম বলো?
>>ইশ যতদিন যাচ্ছে তোমার প্রেম-ভালোবাসা যেন দিন দিন বাড়ছে।
>>হুম বাড়ছে তো তাতে কি তোমার কোনো প্রবলেম আছে? আমার বউয়ের প্রতি ভালোবাসা দেখে কি আপনার হিংসে হয়?
আফিফের কথায় নুহা হেঁসে দিলো। আফিফ তার বাঁধন আলগা করতেই নুহা তার দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। আফিফ নুহার কপালে একটা পরশ দিতেই সে চোখ বুজে তা নিলো।
আফিফ নুহাকে বললো,
>>আজ একটু মন ভরে আদর করে নিতে দিন ম্যাডাম কাল সকালে ৪দিন এর জন্য সিলেট যেতে হবে একটা সেমিনারে।
>>৪দিন..! এতদিন দূরে থাকবো কিভাবে?? (মন খারাপ করে নুহা)
>>ইশ.! বউ একটু কষ্ট তো করতেই হবে।জরুরি না হলে যেতাম না আমি।
>>আচ্ছা যেও কিন্তু কোনো মেয়ের সাথে একদম ঘেঁষাঘেঁষি করবে না।
>>আরেহ কি যে বলোনা। কত বিজনেস ইউমেনস রা আসবে..! একটু ঘেঁষাঘেঁষি না করলে কি চলে?
>>হারামি আমার সাথে আর কথা বলবা নাহ তুমি যাও দূর হও।
নুহা আফিফকে ধাক্কা মেরে রুমে যেতে নিলেই আফিফ নুহাকে এক ঝটকায় কোলে তুলে নিয়ে বলে,
>>উঁহু এত সুন্দর বউ থাকতে আমি অন্য কারো সাথে কি জন্য ঘেঁষাঘেঁষি করতে যাবো শুনি? এতটাও পাগল না আমি বুঝলেন মিসেস আফসার।
চলবে…..
#Razia_Binte_SuLtan