#অবাধ্য_বাঁধনে
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ২৩ খ ]
___________________
অনেক বছরের অপেক্ষার অবসান আজ হতে চলেছে।ঈশানের মা আজ দেশে ফিরছেন এই নিয়ে ঈশান আর রাসেলের আনন্দের শেষ নেই।সারা বাড়ি সাজানো হয়েছে ফুল দিয়ে।ঘরের ভেতরে প্রবেশ পথে গোলাপের পাপড়ির গালিচা সাজানো হয়েছে।ছেলের এসব পাগলামিতে কান্নার মাঝেও হাসলেন মাহমুদা।এয়ারপোর্টে দেখা হওয়ার সাথে সাথে মাহমুদার কান্না শুরু এর মাঝে আর থামেনি দুই ছেলেকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত তিনি।লাল গালিচায় পা ফেলে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করেন মাহমুদা।পুরো বাড়িটা তিনি দেখছেন অবাক চোখে।
” আমার দুই ছেলে এত বড় হয়ে গেছে।এত বড় বাড়ি তোমাদের!”
” বাড়ি বড় হলে কি হবে থাকার মানুষ নেই আন্টি।এখন তুমি এসেছো ঘরটা আনন্দে ভরে গেছে।”
রাসেলের কথায় স্মিত হাসলেন মাহমুদা।আদুরে হাতে ছুঁয়ে দিলেন তার গাল।কঁপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে চুমু খেলেন শব্দ করে।ঈশানকে পাশে টেনে তার কপালেও এঁকে দিলেন ভালোবাসার পরশ।
” আমার দুই হীরার টুকরো ছেলে জীবনে আরো উন্নতি কর।”
৪৭.
হঠাৎ করে নাজিমের বিয়ের দিন ধার্য করা হয়।পারিবারিক ভাবে স্বল্প আয়োজনে বিয়েটা সম্পর্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।যেহেতু হঠাৎ বিয়ের দিন ঠিক হয়েছে তাই সবার মাঝে হুড়োহুড়ি ব্যপারটা বৃদ্ধমান।শপিং নিয়ে সবার তোড়জোড় অবস্থা।মাহমুদা দেশে এসেছেন তাই বিয়ের দাওয়াত থেকে বাদ পড়েননি তিনিও।নাজিমের মা আলেয়া এসে দাওয়াত করে গেছেন।ঈশান তার মাকে নিয়ে শপিং এর উদ্দেশ্যে বের হয়।রাসেল তার সঙ্গেই ছিলো।মায়ের জন্য শাড়ি কিনে অর্নামেন্টসের দোকানে প্রবেশ করতে এক পাশে চেপে দাঁড়ায় এই দোকানে মেয়েদের অভাব নেই।মাহমুদা পুরো দোকানটায় চোখ বুলাতে নজরে আসে একটির মেয়ের মুখ যাকে তিনি ভীষণ পছন্দ করেন।
ঈশা আর অনু দুইজনে গহনা পছন্দ করছিলো আকস্মিক কেউ ঈশার হাত টেনে ধরে।অবাক চোখে পেছনে ঘুরতে নজরে আসে হাস্যজ্বল একজন ব্যক্তির মুখ।
” এই তুমি ঈশা না?”
মাহমুদার কথায় দ্বিধাদ্বন্দে মাথা নাড়ায় ঈশা।
” জ.. জি।”
” আমাকে চিনতে পেরেছো?”
” আপনি কে উম মনে পড়ছে না।”
” রুমার খালা তোমার সাথে ভিডিও কলে কথা বলেছি মনে আছে?”
ঈশার মনে পড়ে উনি ঈশানের মা।চিনতে এতটা ভুল করেছে।এক গাল হেসে দ্রুত সালাম জানালো মাহমুদাকে।মাহমুদা দোকান থেকে বের করে এনে রাসেলের সামনে দাঁড় করালো ঈশাকে।
” দেখ কাকে খুঁজে পেয়েছি।”
ঈশান ফোনে কথা বলছিলো মায়ের পাশে ঈশাকে দেখে দ্রুত এগিয়ে আসে।অবাক চাহনি নিক্ষেপ করে দুজনের দিকে।ঈশান কান থেকে ফোন রেখে বলে,
” ঈশা তুমি এখানে?”
ঈশা প্রত্যুত্তর করলো না।মাহমুদা খুশিতে জড়িয়ে ধরলেন ঈশাকে।মাহমুদার ব্যবহারে ধাপে ধাপে অবাক হলো ঈশা যেখানে ঈশান রাগি তেজি দেমাকি সেখানে তার মা সহজ সরল বন্ধুত্বপূর্ণ।মাহমুদাকে শাড়ির সাথে বাকি অর্নামেন্টস গুলো অনু আর ঈশা মিলে পছন্দ করে দেয় তাদের মাঝে তৈরি হওয়া মেলবন্ধন দেখে মনে মনে খুশি হয় ঈশান।কেনাকাটা শেষ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন তারা।ড্রাইভিং সিটে ঈশানের পাশে ছিলেন মাহমুদা রাসেল পেছনে বসে ছিলো।হঠাৎ মনটা খারাপ হয়ে গেলো মাহমুদার হতাশার শ্বাস ছেড়ে আফসোস সুরে রাসেলের উদ্দেশ্যে বলে,
” খাঁটি রত্নটা হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছেরে রাসেল।”
সন্দিহান চোখে রাসেল বলে,
” কিসের রত্ন?”
” ঈশা রত্নের কথা বলছি মেয়েটা কি ভালো তোর পাশে ভালো মানিয়েছে।”
” মানালেই কি বিয়ে করতে হবে আন্টি?”
” জানি তোর পছন্দের মানুষ আছে বাবা।কিন্তু ঈশাটা যে হাত ছাড়া হয়ে যাবে এই ভেবে আফসোস হচ্ছে।”
” শুধুই কি ঈশাকে ভালো লেগেছে তোমার ঈশার পাশের মেয়েটাকে ভালো লাগেনি?”
” সেও ভালো এক কথায় ভীষণ ভালো।”
” ঈশাকে তোমার ছেলের জন্য নিয়ে যাও আন্টি।”
” পা গ ল নাকি আমি ওর মতো মিষ্টি মেয়েকে কি না ঈশানের মতো ঝাঁঝের ভান্ডারে ফেলবো।ঈশান এই মেয়ের যত্ন করতে পারবে?রাগের মাথায় চড় থাপ্পড় মা র তে দ্বিধা করবে না আমার ছেলেকে আমি ভালোভাবে চিনি।”
” তা ঠিক বলেছো।”
কথাটা বলে ঠোঁট চেপে হেসে ফেলে রাসেল।ঈশান ঘাড় ঘুরিয়ে চোখ রাঙিয়ে তাকায় রাসেলের দিকে।ঈশানের নজর এড়ালো না মাহমুদার তিনি উলটো কঠোর চোখে তাকালেন ঈশানের দিকে।
.
রাত দুইটা ছুঁই ছুঁই ঈশান তার কাজ সেরে মাত্র বাসায় ফিরেছে।নাজিমের বিয়ে নিয়ে তার কম দায়িত্ব নেই সেই দায়িত্ব পালনে তাকে সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হচ্ছে।সারাদিনের ক্লান্তির অবসান ঘটাতে এই মুহূর্তে ঈশাকে প্রয়োজন তাই চিন্তা ভাবনা ছাড়া এত রাতে ফোন করে বসলো ঈশাকে।ঈশা তখন গভীর ঘুমে কাবু কল আসতে ঝাপসা চোখে রিসিভ করে কানে তুলে,
” হ্যালো কে।”
ঈশার ঘুম জড়ানো কণ্ঠ শুনে ঈশান মজার ছলে বলে,
” আমি সে।”
” সে আবার কে?”
” কে টাই হলো সে।”
” কি সে কে? ”
” আমি সে।”
” পা গ ল নাকি।কি সে কে সে কে করছেন।”
ঈশার ঘুমটা প্রায় ছুটে এলো স্কিনে ঈশানের নাম্বার দেখে অবাক হয়ে বলে,
” এত রাতে আপনি ফোন করে টিটকারি করছেন আমার সাথে।আপনি কি প্যাঁচা?রাত জাগা প্যাঁচা।”
” আমি প্যাঁচা তুমি প্যাঁচি এবার শান্তি।কেমন আছো তুমি?”
” ভালো ছিলাম তবে এখন ভালো নেই।”
” সরি ফোন করার জন্য ভালো লাগছিলো না তাই ফোন করলাম।
” রাতে খেয়েছেন?”
” না।”
” খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন।কাল থেকে হলুদের অনুষ্ঠান আরো অনেক কাজ আছে।”
” তোমাকে দেখার অপেক্ষায় রইলাম।”
৪৮.
গায়ে হলুদে মেয়ের বাড়ির এবং ছেলের বাড়ির প্রত্যকের পোশাকের রঙ নির্ধারিত ছিলো।মেয়েরা গোলাপি রঙের শাড়ি পরবে এবং ছেলেরা বাসন্তি রঙের পাঞ্জাবি।ঈশা অনু দুজনে একই সাজে সেজেছে।ঈশার মামি ‘সুমা’ একটি প্লেটে মিষ্টি সাজিয়ে রাখছিলেন ঈশাকে দেখে একটু তোষামোদ করে বলেন,
” এটা কে লো?চেনা যাচ্ছে না দেখি দেখি দেখি।”
ঈশার হাত টেনে ধরলেন সুমা।
” তোকে তো ভারী সুন্দর লাগছে।আমার তো মনে হয় না শ্রেয়ার বিয়েটা হবে ছেলে পক্ষের মানুষ তো তোকে নিয়ে টানাটানি লেগে যাবে।”
সুমার সূক্ষ্ম খোঁচানো কথা বুঝতে পেরে কপট হাসলো ঈশা।
” যার বিয়ে তাকে গিয়ে দেখো হুরপরী লাগছে।”
” তোকেও কম সুন্দর লাগছে না।”
” আমরা প্রত্যকেই সুন্দর।”
ঈশা দ্রুত সরে আসলো সুমার নজর থেকে।ছাদে স্টেজ করা হয়েছে তাই ঈশা অনু ছাদের দিকে গেলো।ঈশার মামির কান্ডে অনু বলে,
” তোর মামি তোর প্রশংসা করেছে এটা কি আমার স্বপ্ন নাকি সত্যি?”
” আয় চিমটি কেটে বুঝিয়ে দি।”
” আমার গড়বড় লাগছে ঈশা যে মানুষ সারাক্ষণ অন্যর ঢোল পেটানোর কাজে লেগে থাকে, এ পাড়ার কথা ওই পাড়ায় গিয়ে লাগায় সেই মামি তোর প্রশংসা করেছে ভাবা যায়।শ্রেয়ার এঙেজমেন্টের দিনেও তো তোকে দফায় দফায় কম অপমান করেননি।”
” শুধু কি আমাকে করেছেন সবাইকে করেছেন।তিনি কাউকে রেহাই দেননা।বাদ দে এসব রিনা খান টাইপের মহিলার কথা বলে আমাদের মুড নষ্ট করে লাভ নেই। ”
ঈশা অনু দুজনে স্টেজে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ছবি তুলে।ছাদে থাকা কাজিনদের সাথে কিছুক্ষণ গল্প স্বল্প করে নিচে নেমে আসে তারপর সব কাজিন মিলে শ্রেয়াকে স্টেজে নিয়ে যায়।ছেলে পক্ষের অতিথিরা আসবে বলে তাদের স্বাগত জানাতে ফুল গুলো একে একে সাজিয়ে নিচ্ছে বাকিরা।
ঈশার মামতো ভাই ‘অয়ন’ অনন্যদের সাথে হাতে হাত লেগে টুকটাক কাজ করছিলো ঈশার মামি সুমা ছেলের হাত টেনে আড়ালে এনে রেগে বলেন,
” তোকে আমি কি বলেছিলাম?কু ত্তা র বাচ্চা সব ভুলে গেছিস?”
” গালি দিচ্ছো কেন মা?কি বলেছিলে এত ঝামেলার মাঝে আমার মনে আছে নাকি?”
” কু ত্তা র বাচ্চা তোকে জন্ম দেওয়াই ভুল হইছে।গা /ধা ই *ত *রের জাত।”
” আহ কি বলেছিলে সেটা বলো।”
” তোকে আমি বলেছিলাম এবার ঈশার পাশে পাশে থাকবি মেয়েটাকে তোর প্রতি দূর্বল করার চেষ্টা করবি আর তুই এখানে কি করছিস হা রা ম জা দা”
” আমি ভুলেই গেছিলাম এবার থেকে আর ভুল হবে না মা।”
অয়ন মায়ের আদেশ পেয়ে খুঁজতে থাকলো ঈশাকে যে করে হোক পাখি শি কা র করতেই হবে।
.
ছেলের পক্ষের লোক চলে আসতে সবার মাঝে হইচই পড়ে যায়।সেই পক্ষের সব ছেলেরা বাসন্তী রাঙা পাঞ্জাবি পরেছে আর মেয়েরা বাসন্তী রাঙা শাড়ি।ভীড়ের মাঝে ঈশানের চোখ খুঁজছিলো ঈশাকে কিছুটা সময় পর পেয়েও গেলো অনু ঈশা দুজন একসাথে দাঁড়িয়ে ছিলো।রাসেল ঈশানের কাধ চাঁপড়ে বলে,
” ঈশা অনু চেনা যাচ্ছে না দুইজনকে এক লাগছে।পা থেকে মাথা পর্যন্ত সবটা এক সাজ।”
” চোখের মাথা খেয়ে আবার আমার বউকে তোর বউ ভেবে বসিস না খবরদার।”
” তোবা তোবা এই কাজ ভুলেও করা যাবে না।অনু আমায় গিলে খাবে।”
” আমি কি ছেড়ে দেবো?কাঁদা জলে তোর মাথা গেড়ে দেবো।”
” আমি জানি আমার বউ, বন্ধু দুজনেই ডেঞ্জারাস আর আমি বলির পাঠা।”
মাহমুদার সঙ্গে দেখা হয়ে গেলো ঈশার দুজনের কিছুটা সময় ব্যয় করলো।শ্রেয়া এবং নাজিমের ফটোশুট চলছিলো নাদিম বাচ্চা ছেলেটা কিছুক্ষণ পরপর গোলাপ ফুল এনে ঈশার হাতে দিয়ে বলে,’আই লাবু মাই ঈশা’ ঈশা তার ফুল নিয়ে খিলখিলিয়ে হাসতে থাকে।ঈশান দূর থেকে তাকে পরখ করছিলো।এখনো একে অপরের মুখোমুখি হয়নি।ছেলেপক্ষের কিছু ছেলে দুষ্টু প্রকৃতির তারা কিছুক্ষণ পরপর মেয়ে পক্ষের দলে এসে এটা ওটা বলে মজার ছলে ঝগড়া করার চেষ্টা করছে।মেয়ে পক্ষের হয়ে ঈশাও এটা ওটা বলে তাদের সাথে তর্ক বির্তক করছে বিয়ে বাড়িতে এসব স্বাভাবিক হলেও ঈশানের কাছে এই বিষয়টা বড্ড বিরক্ত লাগলো।
প্রথম ধাপে শ্রেয়া এবং নাজিমকে হলুদ লাগানো শুরু করেছে বাড়ির মুরব্বিরা।ঈশান ইশারায় ঈশাকে ডাকতে ঈশা পূর্ণ দৃষ্টি রাখলো ঈশানের দিকে হাত ইশারায় বুঝিয়ে দিলো তাকে সুন্দর লাগছে।ঈশার কাছে প্রশংসা পেয়ে মাথা নুইয়ে হাসলো ঈশান এবং এগিয়ে এলো ঈশার কাছে।
” মেডাম আমার প্রচন্ড হিংসে হচ্ছে আমার মানুষটাকে আমি চোখের তৃষ্ণা মিটিয়ে দেখতে পাচ্ছি না।”
” বারণ করলো কে?দেখতে থাকুন।”
” এভাবে আমার তেষ্টা মিটবে না যে।”
ঈশা ঘুরে তাকালো ঈশানের দিকে,
” এভাবে বলছেন কেন আমার কি লজ্জা লাগে না?”
ঈশান স্মিত হাসলো।আসরে রাসেল অনুকে দেখা যাচ্ছে না নিশ্চয়ই তারা চিপাচাপায় লুকিয়ে পড়েছে।নাজিমের কাজিনদের মাঝে একজন এগিয়ে এলো ঈশার কাছে পাশে ঈশানকে দেখে ভাবলো সুযোগ বুঝে কথার ফাঁকে ফাঁকে ঈশার সাথে ভাব বিনিময় করবে।ছেলেটা এগিয়ে এসে ঈশানের উদ্দেশ্যে বললো,
” তোমাকে খুঁজছিলাম ঈশান।”
” হঠাৎ আমাকে কেন?”
” নাজিমকে হলুদ ছোঁয়াবে না?”
” আগে দুইপক্ষের বড়দের শেষ হোক তারপর।”
” ওকে।হ্যালো মিস আপনি ঈশা?”
ছেলেটার কথায় ঈশা মুচকি হাসে মাথা দুলিয়ে বলে,
” হুম আমি ঈশা।”
” আপনাকে বেশ সুন্দর লাগছে অন্যরকম সুন্দর।”
ছেলেটার গলার স্বর পালটে এলো ঈশান বুঝতে পারলো ছেলেটা ঈশার সাথে ভাব জমাতে এসেছে।বুকের ভেতরটায় মুহূর্তে মুষড়ে উঠলো মেজাজটা সহসা বিগড়ে গেলো।তবে এখন রাগ দেখালে অনুষ্ঠানে প্রভাব পড়বে তাই ঠান্ডা মাথায় ঈশান বলে,
” রং নাম্বারে ডায়াল করেছো ব্রো।”
” মানে?”
” মানে যার সাথে ভাব করতে চাইছো সেই মানুষটা আমার।’আমার’ শব্দটার মানে বুঝো?”
ঈশা সরে দাঁড়ালো ঈশানের এমন অধিকার বোধ দেখে তার ভেতরটা ধুকপুক করছে।
ছেলেটা লজ্জায় পড়লো ঈশানকে সরি বলে সরে গেলো সেখান থেকে।পুরোটা অনুষ্ঠানে ঈশান ঈশার পিছু ছাড়লো না তার অস্থির লাগছে এই বুঝি ঈশার মন অন্যদিকে চলে যাবে।এই বুঝি ঈশা তার ভালোবাসার বাঁধন ছেড়ে উড়ে যাবে।ঈশা সবার সাথেই টুকটাক মজা করছিলো তার পরিবারের কাজিন ভাইদের সাথে যখনি কথা বলতে চায় ঈশান রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তার দিকে।এই বিষয়টা মোটেও ভালো লাগেনা ঈশার এতটা জেরা করার কি আছে।
” ঈশান আপনি এমন করছেন কেন?আমার মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে আমি জেল গারোদের কয়দি আর আপনি পুলিশ।”
” ভুল বলনি তুমি তো কয়দি।আমার মনের জেলে বন্দি থাকা কয়দি।”
” সবার কথা বাদ দিলাম আমার কাজিনদের আমি ভাইয়ের নজরে দেখি ওনারা সবাই আমাকে বোনের চোখে দেখেন এসব ব্যপারে আপনার সন্দেহ কিন্তু আমি মোটেও সহ্য করবো না।”
” এই কাজিন গুলো কুমিরের মতো ডুবে থাকে আর শিকারকে সুযোগ মতো পেলে এক ছোবলে মুখে তুলে।”
” ব্যস আমি আর কোন কথা শুনবো না আমার আপন ভাই নেই ওরাই আমার ভাই।”
ঈশা যখন বড়াই করে কথাগুলো বলছিলো তখনি তার সব বিশ্বাসের কাঁচ ভেঙে দেয় মামতো ভাই অয়ন।হঠাৎ কোথা থেকে এসে ঈশার কোমড় জড়িয়ে ধরে ছেলেটা। অয়নের আঙুল ছুঁয়ে যায় ঈশার অনাবৃত কোমড়ে।ঈশান তাকিয়ে রইলো সেদিকে।
” ঈশু শ্রেয়াকে হলুদ লাগাবে না চলো না।আমি আর তুমি একসাথে বসবো।”
ঈশানের চাহনি কঠর হয়।দাঁত চেপে তাকিয়ে রইলো ঈশার দিকে ঈশা নিজেও তাজ্জব বনে গেছে।অয়নের ছোঁয়া মোটেও স্বাভাবিক ছিলো না।
#চলবে__