অবাধ্য_বাঁধনে #পলি_আনান [পর্ব সংখ্যা ৪০খ]

1
375

#অবাধ্য_বাঁধনে
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ৪০খ]
______________________
” আপনার ছেলে আমার মেয়ের জীবন শেষ করেছে আর এখন আপনি করছেন।আমাদের কথা দিয়েছিলেন ভাইয়া সেই কথা রাখতে বাধ্য আপনি।”

” কথা দিয়েছিলাম তবে ভুল বিষয়ে দিয়েছিলাম এখন ফিরিয়ে নিচ্ছি।”

” ভাইয়া আমার মেয়ের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন আপনারা।একজন মায়ের অভিশাপ কখনো বিফলে যায় না।”

” তোমার মেয়ের জীবন কী ধ্বংস করেছি আমরা?তুমি বিয়ে করেছিলে রাস্তার একটা ছেলেকে যার ছিল না কোন বংশ পরিচয় আর না ছিল বাড়ি ঘর।আব্বা আম্মা ত্যাজ্য করেছিল তোমায়।বাচ্চাটা বড় না হতে বাবা হারালো সেই ভাসমান জীবন থেকে কূলে এনেছিলাম আমি।একটা সুন্দর জীবনে যতটু প্রয়োজন সবটা দিয়েছি আর এখন বলছো তোমাদের ধ্বংস করেছি?তবে বেরিয়ে যাও এক্ষুনি বেরিয়ে যাও।অনেক তো হলো ভুল বোঝাবুঝির নাটক এবার আমি আমার স্ত্রী সন্তান নিয়ে সুখী হতে চাই।”

লিপি চমকে গেলেন।আড় চোখে তাকালেন তার ভাইয়ের দিকে।হঠাৎ কি কারণে আবিদ শাহরিয়ারের এত পরিবর্তন জানা নেই তার।এভাবে যদি চলতে থাকে তবে এতদিনে যাবৎ পরিকল্পিত ঘটনা গুলো একে একে ভেস্তে যাবে।

” ভাইয়া খোঁটা দিয়ে দিলেন!এভাবে যে বলতে পারবেন কোনদিন আশা করিনি।”

” আমিও আশা করিনি ত… ”

আবিদ শাহরিয়ার থেমে গেলেন।আজ ছোট ছেলের বিয়ে এই মুহূর্তে কোন ঝামেলা চান না তিনি।সবকিছু সুষ্ঠ ভাবে সম্পূর্ণ হোক দেশ ছেড়ে যা করার করা যাবে।বাড়ির নতুন বউদের সামনে সম্মান হানি করার কোন মানে নেই।

১০৬.
বিয়ে নিয়ে অনুদের পরিবারের বড়দের কোন আগ্রহ নেই বললেই চলে।সবার আচরণে প্রতিবার গলা ধরে আসছে মেয়েটার।কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছে ক্ষণে, সে তো ভাবেনি এমন কিছু হবে পরিবার তাকে এক নিমিষে পর করে দিল!ঈশা বার বার সান্ত্বনার বানী গাইছে ‘সবটা ঠিক হয়ে যাবে’ আদৌ কি ঠিক হবে?যতটুকু পারা যায় ঈশা তার সর্বোচ্চটা দিয়ে অনুকে সাহায্য করে গেছে।মেয়েটার মন খারাপের সঙ্গী হলো ঈশা। আজকের পর এই সম্পর্কের নতুন নাম হবে একে অপরের জা হবে।পার্লার থেকে ফিরে চুপচাপ বসে আছে অনু বর যাত্রী এসেছে বলে সবাই বেরিয়ে গেছে।

বর বেশে উপস্থিত রাসেল তার শুভ্র মুখশ্রীতে মিশে আছে লজ্জার হাসি।ঈশান তার পাশে দাঁড়িয়ে ভ্রু নাচিয়ে তাকিয়ে আছে ঈশার পানে।মেয়েটা আজ আবার গেটে দাঁড়িয়েছে ঈশান নিশ্চয়ই বউয়ের প্রতি গলে গিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে বসবে ভাবতেই পেটে মোচড় দিলো রাসেলের।

” আপনারা এখানে কেন দাঁড়িয়েছেন?আমাদের মুক্ত হস্তের দান গ্রহণ করার জন্য?”

ঈশানের কথায় ঠোঁট বাঁকালো ঈশা।হাতের কাচিটা ঘুরিয়ে বলে,

” কথা সামলে বলুন ভাইয়া।আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি আপনার ভাইকে সাদরে গ্রহণ করতে, বরণ করতে আর আপনি কিসব বলছেন।”

” ভাইয়া!ভাইয়াটা কে?”

” কেন আপনি?”

” আমি তোমার ভাইয়া হই?এই ফা জি ল মেয়ে এসব কী বলো?”

” এতকিছু শুনতে চাই না।আমাদের একটা দাবি আছে।”

” শুনতে চাই না তোমাদের দাবি।শুরুতেই মন মে রে দিয়েছো।”

” আরে শুনুন।”

” না শুনবো না।”

” ঈশান বাড়াবাড়ি করছেন।আমার সাথে রাগারাগি করলে কিন্তু আপনাদের গেটেই ঢুকতে দিব না।”

” কি করবে জান?বলো কি করবে?”

ঈশান কথা বলতে বলতে এগিয়ে এলো ঈশার কাছে।ঈশা দু’কদম পিছিয়ে যেতেই লাল ফিতার নিচ দিয়ে ঢুকে পড়লো ঈশান তার পিছু পিছু প্রবেশ করলো ছেলে পক্ষের সকলে।মেয়েপক্ষের সবাই স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে অপরদিকে ছেলেদের আনন্দ উল্লাসের মিছিল চলছে।রেগে গিয়ে ঈশানের গায়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করলো ঈশা তার হাত টেনে ধরলো ঈশান মেয়েটা এতটাই ক্ষেপে গেছে যে তার দু’চোখ ইতোমধ্যে জলে ঝাপসা হয়ে গেছে।

” আপনি এটা ভালো করলেন না ঈশান।আমায় আপনি দুঃখ দিলেন।”

” রাগ করে না জান।এই রে কেঁদে ফেলছে তুমি কান্না করলে আমার ভালো লাগবে?কত টাকা চাই বলো? আমার সব তোমার যা লাগবে দিয়ে দেবে।”

” আপনার টাকা আমার চাই না আমি তো রাসেল ভাইয়ের টাকা নিতে চেয়েছি।অনুর বিয়ের গেট ধরা আমার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল।”

” আমরা অনুকে আবার বিয়ে দেব তুমি আবার গেট ধরবে।”

” কি বললেন আপনি”

” না না কিছু না।আমি গেলাম।”
.
অবশেষে বিয়েটা পরিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হলো।ঈশাদের বাড়ি ফেরা হলো সন্ধ্যার পর।অনুর সাথে সাথে ঈশাও শ্বশুর বাড়ি ফিরে এসেছে।

হঠাৎ মেয়ে চলে আসায় ঘরটা বড্ড ফাঁকা লাগছে মুজাহিদ হাসানের ঈশাকে এতবার ফোন করার পরেও ধরছে না তাই বাধ্য হয়ে ফোন করলো ঈশানকে।মুজাহিদ হাসানের ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নড়েচড়ে বসলো ঈশান।গম্ভীর্য ভাবটা কাটিয়ে একটু হাস্যরসে বলে,

” আসসালামু আলাইকুম ফাদার ইন ল ভালো আছেন?”

” আমার মেয়ে কোথায়?”

” এমন ভাবে বলছেন আমি যেন আপনার মেয়েকে কি ড ন্যা প করেছি।সালামটা নিয়ে একটু ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করে কি মেয়ের কথা জানা যেত না?”

” তুমি কী লন্ডনে আছো?নাকি ইতালিতে আছো?তোমাকে দু’ঘন্টা আগেও আমি দেখেছি।আমার মেয়ে কোথায় সেটা বলো তখন থেকে ফোন করেই যাচ্ছি সে ফোন তুলছে না।”

” আপনার কাছে একটা বিচার আছে।ভালো হয়েছে ফোন দিয়েছেন না হলে আমি নিজেই দিতাম।”

” কী বিচার?”

” আপনার মেয়ে আমার সাথে কথা বলছে না।জেদ দেখিয়ে বসে আছে, প্লিজ ফাদার কিছু একটা করুন।প্রায় ছয় ঘন্টা সে আমার সাথে কথা বলছে না।বিশ্বাস করবেন না আপনি আমি এখনি দুই কেজি কমে গেছি দেখুন আমার চোখটা দেবে গেছে,গালটা ভেঙ্গে গেছে, হৃদটা শুকিয়ে আছে।”

” কি করেছো ঈশার সাথে?সে রেগে আছে কেন?”

” অনুর বিয়ের গেটে টাকা তুলতে গেছিলো তখন একটু গন্ডোগোল হয় আর টাকা তুলতে পারেনি সে।ঈশাকে আমি বলেছি আমার সব তো তোমার টাকা যত লাগে নাও কিন্তু আপনার মেয়ে এখনো রেগে আছে।ওইতো ফাদার আপনার মেয়ে আমাকে ভেংচি কেটেছে।আমি স্পষ্ট ভাষায় বলছি, এসব আমি মানতে পারবো না।আমার অনাগত সন্তানরা এসব মানবে না।আপনার নাতি-নাতনীরা তাদের মায়ের এসব কিছুতেই বরদাস্ত করবে না।”

” আরে এখানে নাতি-নাতনী এলো কোথা থেকে?

” দেখুন ফাদার ইন ল আমার সোজাসাপটা হিসেব আপনি যদি আপনার মেয়েকে না মানাতে পারেন আমি আপনাকে আজ সারারাত বিরক্ত করবো,বাড়িতে ঢিল ছুড়বো।মাদার ইন ল’কে আপনার ব্যপারে উলটা পালটা বলে যুদ্ধ ঘোষণা করিয়ে ছাড়বো।”

” তুমি বেশি কথা বলো।ঈশাকে ফোনটা দাও।”

ঈশান দ্রুত উঠে গিয়ে ঈশাকে ফোন দিলো।স্কিনে মুজাহিদ হাসানের নাম্বারটা দেখে চুপচাপ ফোন হাতে তুললো ঈশা।

” বলো বাবা, তুমি ঠিক আছো?”

” জামাই কি বলছে তুমি নাকি তার সাথে কথা বলছো না।”

” ইচ্ছে হলে বলবো।তোমায় আবার বিচারো দিয়েছে!”

” না বিচার দেয়নি মা বরং হু ম কি দিয়েছে।থাক রেগে থেকো না কথা বলো।বেচারা নাকি শুকিয়ে যাচ্ছে দেখা গেলো শুকাতে শুকাতে উড়ে যাবে সৌরজগতে।”

১০৭.
রাত বাড়লো সেই সাথে সকলের ব্যস্ততা ধীরে ধীরে কমলো।দুই দিন পর বৌভাত অনুষ্ঠান হবে তাই তো আজ আর তেমন চাপ নেই।ঈশা,ঈশান,রুমা, শ্রেয়া,রেদোয়ান দাঁড়িয়ে আছে রাসেলের কক্ষের সামনে।আর রাসেল জানে তাকে এখন কি করতে হবে এরা ভদ্র ভাবে ডা কা তি করতে নেমেছে।

” প্রিয় দেওরজি ‘টাকা ঢালুন আর দরজা খুলুন’ এই শ্লোগানে আজ আমরা মাঠে নেমেছি।”

ঈশার কথায় কিঞ্চিৎ হাসলো রাসেল।গা ঝেরে হেঁয়ালি স্বরে বলে,

” আমার কাছে কোন টাকা নেই।কয়েক দিন আগে ঈশান আমার টাকা মে রে দিয়েছে।আপাতত আমি গরিব ফকির ফতুর।”

রাসেল গা ঝারা দিয়ে কথাটি বলে ঈশানের দিকে তাকালো।ঈশান গালে হাত বুলিয়ে বলে,

” এই রাসেল তুই কি আজ রাতটার জন্য সিরিয়াস না?তোর মনে কি কোন ভয় ডর নাই?তুই চিনস না আমারে?”

” হুমকি দিচ্ছিস লাভ নাই।প্রয়োজনে আজ বাইরে ঘুমাবো তারপরেও তোদের একটা টাকাও দেব না।”

রাসেলের দৃঢ়তার কাছে সকলে ঝিমিয়ে গেল।টাকা উসুল করার কোন আশার আলোই তো পাওয়া যাচ্ছে না।হেরে যাওয়া সৈন্যর ন্যায় মাথা ঝুকলো ঈশান।

” ঠিক আছে দিতে হবে না।এই দরজা থেকে সরো সবাই।”

ঈশানের নির্দেশে একে একে সবাই সরে দাঁড়ালো দরজা থেকে। সবার পাংশুটে মুখখানী দেখে রাজ্য জয়ের হাসি হাসলো ছেলেটা।বীর বেশে প্রবেশ করলো নিজের কক্ষে।সকলের মুখের উপর ধাম করে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে কোমড়ে হাত ঠেকিয়ে হাসলো রাসেল।লাল ফুলের গালিচা পেরিয়ে বিছানায় বসলো এবং হাস্যজ্বল চোখে তাকালো লাল ওড়নায় ঢেকে থাকা প্র‍েয়সীর পানে মেয়েটা লজ্জায় নিংড়ে আছে।রাসেল এমনটা তো আশা করেনি ধূর্ত অনু কি না লজ্জা পাচ্ছে আশ্চর্য!তবুও মনে মনে খুশি সে বউ যদি লজ্জা না পায় তবে কীসের বউ?

” অনু গো, ও আমার অনুরূপী।”

আদুরে সুরে অনুকে ডাকলো রাসেল মেয়েটা আচমকা নড়েচড়ে উঠেছে।রাসেল এবার ঘুরে বসলো ধীরে ধীরে সরিয়ে দিলো অনুর মুখে ঢেকে থাকা লাল ওড়নাটা।সিলেবাসের বাইরে প্রশ্নে এলে যেমন চমকে যায় তেমনি চমকে গিয়ে বিকট চিৎকার করে উঠলো রাসেল।এক লাফে বিছানা থেকে নেমে তাকিয়ে থাকে বউয়ের পানে।

” নাজমুল তুই!”

আবেগের দুনিয়া থেকে ছিটকে পড়লো রাসেল।শাড়ি পরা অনুর পরিবর্তে বন্ধু নাজমুলকে দেখে কলিজাটা মোচড় দিয়ে উঠলো সেই সাথে হতবাক চাহনিতে তাকিয়ে রইলো নির্নিমেষ।নাজমুল শাড়ির কুচি ধরে দ্রুত বিছানা থেকে নেমে দরজা খুললো।নাটকীয় ভঙ্গিমায় শাড়ির আঁচল বুকে টেনে ভেংচি কেটে তাকালো রাসেলের পানে।সবার মুখে হাসির ঝলক।তবে সবাই মিলে রাসেলকে বোকা বানালো!ঈশান ভাব নিয়ে এগিয়ে এলো রাসেলের সম্মুখে।

” কেমন দিলাম বন্ধু?”

” ঈশান তুই আমার সাথে এমনটা করতে পারলি?”

” আমি সব পারি।”

ঈশান এগিয়ে গেলো, ড্রেসিং টেবিলের উপরে থাকা ছোট্ট স্পাই ক্যামেরাটি হাতে তুলে নিলো।রাসেলের কাছে এগিয়ে এসে বলে,

” সব রেকড হয়েছে তুই যদি টাকা না দিস আগামীকাল সবাই দেখবে তোর স্পেশাল বাসর।”

” তুই বন্ধু নাকি শত্রু?”

” আমি স্বার্থ বাদী।তোর বউ আমাদের আমানতে আছে।তবে আমাদের একটা শর্ত আছে।”

” কি শর্ত?”

” আমরা সবাই মিলে দুই দিনের ট্যুর দিব সব খরচ তোর।”

” যাহ দিলাম সব খরচ।কবুল বলে বউ এনেছি সেই বউ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছিস তোরা।”

” উলে বাবুতা ইমোশনাল কথা বার্তা বলে লাভ নাই।যাহ আর ডিস্টার্ব করবো না তোর বউ তোর কাছে দিয়ে যাচ্ছি।”

নাজমুল টেনে টুনে শাড়িটা খুলে ছুড়ে ফেললো রাসেলের গায়ে।বেচারা রাসেল অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো তার দিকে।

১০৮.
আবিদ শাহরিয়ার যেমন ঠান্ডা মাথার লোক তেমনি রেগে গেলে তার রাগের মাথায় নেওয়া একেকটি সিদ্ধান্ত কতদূর গিয়ে গড়ায় তার ইয়াত্তা নেই।লিজা এবং তার মার কোন খরচ বহন করবেন না আবিদ শাহরিয়ার যদি লিজা ঈশাদের বাড়ি গিয়ে সত্যটা প্রকাশ না করে।তিনি দুজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন এত বছর যাবৎ ঠকিয়ে আসার জন্য একটা না একটা শাস্তি তাদের প্রাপ্যই।
লিজা কি করবে ভেবে পেল না এই মুহূর্তে মামার কথা শোনা ছাড়া আর কোন পথ বাকি নেই।

ভয়ে ধুকপুক ধুকপুক ধ্বনি তুলছে লিজার বুকে।ঈশাদের ফ্লাটে এসে তিন চারবার ডোর বেল বাজানোর পরেও দরজা খুললো না কেউ।এদিকে লিপিকে মিথ্যা বলে এসেছে সে সবকিছুর সমাধান দরকার।তবে লিপি যদি জানতে পারে লিজা সবাইকে সত্যটা প্রকাশ করছে এই মেয়েকে যে তিনি আস্ত রাখবে না তা আর বলতে বাকি নেই।বেশ কিছুক্ষণ যাবৎ অপেক্ষার পর দরজা খুললেন সুলতানা লিজাকে দেখতে পেয়ে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন তিনি।

” তুমি!”

” আন্টি ভেতরে আসবো?”

” আসো।তোমার আম্মু আসেনি?”

” না আসেনি।আমি একাই এসেছি একটি দরকারে।”

” হঠাৎ কি দরকার?”

লিজা ঝটপট বসে পড়লো সোফায়।তাকে বসতে দেখে মুখোমুখি বসলেন সুলতানা নিজেও।সাহস সঞ্চয় করে একে একে সব সত্যিটা প্রকাশ করলো লিজা তার কথায় কোন মিথ্যা ছিল না জটিলতা ছিল না লিপির ষড়যন্ত্র নিজের জীবনের প্রতিটি পর্যায় পর্যায়ক্রমে বর্ণনা দিল সে।সুলতানা ছিলেন নিশ্চুপ নির্বাক। নিরিবিলি পরিবেশে কিছুটা সময় পর আচমকা চপেটাঘাতের শব্দ হলো।লিজা গালে হাত বুলিয়ে অবিশ্বাস্য চোখে তাকিয়ে রইলো সুলতানার দিকে।চড়টা একটু বেশি জোরে পড়ে গেল না!

” বের’হ রাস্তার মেয়ে বের’হ বলছি।”

” আন্টি..”

” কে আন্টি?বের’হ তুই।আমার কিন্তু ভীষণ রাগ হচ্ছে বেরিয়ে যেতে বলেছি।”

” আপনি আমাকে মা র লে ন কোন সাহসে?”

” তুই যাবি না?তুই তর্ক করিস।আবার আমার সাহসের কথা জানতে চাস!দাড়া তোর জন্য গরম খুন্তিটা নিয়ে আসি।”

সুলতানা ভীষণ ক্ষেপে গেলেন তিনি সত্যি সত্যি রান্নাঘর থেকে খুন্তিটা নিয়ে এলেন লিজার সামনে।এই মহিলাকে এই মুহূর্তে মোটেও বিশ্বাস করতে পারছে না লিজা আর তাই তো হাতের পার্সটা নিয়ে কোন মতে বেঁচে ফিরেছে সে।
#চলবে__

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here