ইয়াসমিন_রিমা #অসম_প্রেম #পর্ব_২৭

0
349

#ইয়াসমিন_রিমা
#অসম_প্রেম
#পর্ব_২৭

আদিত্য রেগে আগুন হয়ে আছে।আজ ও হিংস্র বাঘের মত হয়ে গেছে। চলে যাব তখন হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে একটা রুমে দরজা লাগিয়ে দিল।

দু হাত দিয়ে কাঁধ চেপে ধরে।দেয়ালের সাথে চেপে ধরে।রেগে বললতে লাগলো।

, তুমি কোথায় ছিলে। চিৎকার করে বলছে। কেন করলে এমন আমার সাথে।আমি তোমায় কত খুঁজেছি।দু হাত দিয়ে গাল চেপে ধরে। চোখ ছলছল করছে। অসহায় এর মত তাকিয়ে আছে।দেখলে সত্যি মায়া লাগে।😥তুমি আমায় না বলে কোথায় চলে গেছিলে। চিৎকার করে। আমি তোমায় ভালোবাসি প্রেমা। কেন করলে এমন। তুমি যেমন ছিলে তেমনি মেনে নিয়েছি। তুমি আমার স্ত্রী।

জোরে ধাক্কা দিতেই ছিটকে সরে গেল। একটুর জন্য পড়ে যায় নি।তাও নিজেকে সামলে নিয়েছে।

, আমি কারোর স্ত্রী নই। চিৎকার করে। আমাকে ছোঁয়ার আগে আমার পারমিশন নিতে হবে। আঙ্গুল উঁচিয়ে। খবরদার আর এক বার করলে এর পরিনতি এত ভয়ঙ্কর হবে যা জীবনে কল্পনাও করতে পারবে না। আমার যেমন ভালো রুপ দেখেছ তেমনি আমার খারাপ রুপটাও ভয়ংকর।

চলে যাব তখন আবার চেপে ধরল।

এবার জোরে কশিয়ে একটা চর দিলাম।

,আমি তোমার বড় হয়ই।কলাট ধরে।তাও ৮ বছরের বড়।বড় দের কিভাবে রেসপেক্ট করতে হয় জান না।

, আমি শুধু তোমাকেই ভালবাসি। আমার তাতে কিছু জায় আসে না। তুমি কে কি কেমন।কিচ্ছু না।

, Don’t mess 🔥with Prema . আঙুল উঁচিয়ে।এই ভুলের মাশুল দিতে হবে তোকে।সব কিছু ঝলছে যাবে।

চলে যাব দরজা খুলে বের হলাম। পিছন পিছন আদিত্য আসলো।

,,

আদিত্যর পরিবারের সবাই ভাবছে কি থেকে কি হয়ে গেল।

আলিশা,প্রেমা এত বড় লোক। কিন্তু কিভাবে।

, আয়না বেগম মামী,ও আমাদের থেকে এত কিছু লুকিয়েছে। আমাদের সব অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করেছে।

,অর্নব, ভাবতেই পারছি না আপু। ভাবী এমন করবে। ভাবী আমাদের সব কিছু জানে তাও কিছু বললো না।

, আসরাফুল শেহ্জাহান, ঠিক বলছিস ।প্রেমা আবার এর জন্য আমাদের উপর কোনো প্রতিশোধ নিবে না ত। একটু আগে দেখলি না। কেমন ভংঙ্গিতে তাকাচ্ছিল আর কথা বলছিল।

,আলিশা,সব কিছুর মাঝেও একটা ভয় থেকেই জায় আদির কি হবে।প্রেমা যাই করুক না কেন সব আঁচ আগে আদির উপর আসবে।

, আয়না বেগম,এত গুলো দিন আদি কি ডিপ্রেশনে ছিল।ও প্রেমাকে কত খুঁজছে।তা শুধু আমরাই জানি। কিন্তু প্রেমা।

,অর্নব,হ্যা মা । শুধু আমরাই জানি দাভাই ভাবী কে কতটা ভালোবেসেছে ।দাভাই এর কি হবে।যদি ভাবী আর কোনো দিন ।দাভাই এর জীবনে ফিরে না আসে। অন্যমনস্ক হয়ে।

,আলিশা কেঁদেই দিল ভাইয়ের জন্য। জানি না আমার ভাই টার কি হবে।ও ছোট থেকে একরোখা সহজে মুখ ফুটে কিছু বলবে না। ছোট থেকে অনেক কষ্ট চেপে ধরে আছে।
জানি না কিছু জানি না। কেঁদে।

, আয়না বেগম, আমার মনে হয় প্রেমার সাথে আমরা কথা বলি ।তার পর ওর বাবা-মা কে জানাবো।তারা তো এখন অবধি কিছু জানে না।

, আসরাফুল শেহ্জাহান, ঠিক বলেছ।আদির কষ্ট আর সহ্য হচ্ছে না।

,অর্নব,হ্যা আমি ভাবীর সাথে একবার কথা বলে দেখি।

,আলিশা,যদি প্রেমা না মানে তখন।আর ওদের কিন্তু বয়সের ব্যবধান অনেক। আদিত্যর থেকে ৮ বছরের বড়।

,অর্নব,এক মিনিট আপু।৮ বছর। ভাবী এত দিন বিয়ে কেন করেনি। নাকি এমন কোনো পাস্ট আছে। সত্যি কিছু ত আছেই।যার জন্য ভাবী এই ৩৪ বছর অবধি কেউ নেই তার জীবনে কিন্তু কেন।

,আলিশা, ঠিক বলেছিস। আমাদের সেই সত্যি জানতে হবে।

, আয়না বেগম, হুম। দেখ সামনে কি হয়। আমার ভয় হয় রে।যদি আদির জীবনে‌ কোনো দিন ফিরে না আসে তখন 😳।

একটু পরেই আংটি বদল শুরু হবে। সিয়ান ও সারিনার। অনেকের সাথে দেখা হলো মন্ত্রী মিনিষ্টার। কিছু বিষয়ে কথা হলো।হ্যানসেফ করা হলো। সবার মাঝে আমিও একজন গন্যমান্য ব্যক্তি।

দূর থেকে আদিত্য দেখছে আর জ্বলছে।

আমি পুরো জীবনটাই গোলমেলে। ছেলেদের জালাতনে অতিষ্ঠ।

,,
একজন এমপি আছে। তার নাম প্রান্তিক শাহারিয়ার। বয়স ৪০ ।তিনি আমাকে বিয়ে করার জন্য পাগল। খুব পছন্দ করে। তার পরিবারের সবাই তাদের বাড়ির একজন বলে মেনে নিয়েছে। সবাই মনে করে তাদের বাড়ির ছোট বউ ।প্রান্তিকের বড় দুই ভাই আছে তাদের দুজনের দুজন করে দুই মেয়ে আছে ।তারা সবাই কলেজে পড়ে।তারা ছোট মা বলে ডাকে। আমার বিরক্ত লাগে। তারা ও এসেছে।দূর থেকে দেখে। ছোট মা বলে দৌড়ে আসে।

আজ আদিত্য হিংস্র পশুর রুপ নিয়েছে।আজ ও প্রেমাকে কোনো মতেই ছাড়বে না।খালি একবার আনুষ্ঠান শেষ হোক। তার অপেক্ষায়। হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে রাগ কন্ট্রল করছে।খালি নজরে নজরে রাখছে।আজ যা হোক একটা কিছু করেই ছাড়বে। অনেক কষ্ট পেয়েছি আর নয়। নিজের জিনিস নিজের কাছেই রাখবে।

হুট করেই জরিয়ে ধরেছে।

, ছোট মা। কেমন আছ তুমি আমাদের বাড়িতে যাবে না।

, ধমক দিয়ে,কি শুরু করেছ।ছাড় আমাকে। আমি বলেছি না আমাকে কখনো ছোট মা ডাকবে না।

, তুমি সব সময় এমন কর কেন।চাচ্চু চায় ত তুমি আমাদের ছোট মা হও।

পাশ থেকে। প্রান্তিকের ভাইয়ের বউ এরা।
, কেমন আছ প্রেমা।
, ভালো।

, ওদের বোকছ কেন।কি হয় বলো।যদি আমার দেবর কে বিয়ে করলে। আমরা কত বার তোমার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছি। কিন্তু তোমার তরফ থেকে শুরু না এসেছে। আমার দেবর তো তোমাকে চোখে হারায়।

, দেখুন। আপনার দেবরের সাথে আমার শুধু রাজনৈতিক সম্পর্ক। আমি প্রান্তিককে হাজার বার বলেছি এইসব ফালতু বিষয় না তুলতে।

,প্রেমা বোন প্লিজ।

,না মানে না।হাত উপরে তুলে।আমার এইসব পছন্দ নয়।আর কখনো এই বিষয়ে কথা না বললেই খুশি হব। আসছি।

নিজের উপর রাগে হচ্ছে আমার জীবনটা এত প্যারাময় কেন। মেজাজটা খারাপ করে দিয়েছে।কত জন যে জালায়। ওহ্ গড।

এখন অনুষ্ঠান শুরু হবে। সবাই হই হুল্লোড় করে দিয়েছে।আংটি বদল হয়ে গেল। সারিনার সাথে সাইফের।

আদিত্য বসে আছে আমার পাশে। আমি চেয়ারে বসে আছি। পাশের পাজি ভাই বোন গুলো জালাচ্ছে। পেছন থেকে কেউ একজন চোখ হাত দিয়ে বন্ধ করে রাখলো।

, বলতো কে আমি।সোনা।জান পাখি।

আদিত্য রেগে আগুন হয়ে আছে।দাত কামরে নিজের সব রাগ কন্ট্রল করছে।এর মধ্যে আর একজন ঝুঁকেছে। পেছন থেকে। ওর নিজের বিয়ে করা বউ কে আবার আদরে সোহাগে সোনা জান পাখি ডাকা হচ্ছে। পাবলিক প্লেসে তাই কিছু করতে পারছে না। নিজেদের মান সম্মান খোয়াতে হবে।যাদের নতুন করে ফিরে পেয়েছে তারা অসম্মানিত হোক তা চায় না।কে হতে পারে এই লোকটা।ছারবে না ও কাউকে। নিজের স্ত্রীকে নিজের করেই ছাড়বে।

চলবে,

সকল আপডেট পেতে পেজটি লাইক করে রাখুন।কপি করা নিষেধ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here