অনুভূতিরা_শব্দহীন লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী দ্বাদশ পর্ব

0
239

#অনুভূতিরা_শব্দহীন
লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী

দ্বাদশ পর্ব

রাত প্রায় এগারোটা, আহনাফ মাত্রই বাসায় ফিরেছে। দরজা এখনো খোলা, সে নিবরে ভিতরে আসে।

সারাহ্ সোফায় ঘুমাচ্ছে। পুরো ঘর একদম পরিষ্কার, গোছানো, সাজানো। আহনাফ পুরো বাসা ঘুরে ঘুরে দেখে। যত জায়গায় নকল ফুল ছিল, সেসব জায়গায় এখন তাজা সতেজ ফুল। আহনাফ ফুলদানির ভিতরে উঁকি দিয়ে দেখে পানি দেয়া। সে হাসে।

ডাইনিং টেবিলের কাপড়টা সরিয়ে পুরো জায়গা মুছে ঝকঝকে করে ফেলেছে। টেবিলের ঠিক মাঝে আরেকটা ফুলদানি। রঙবেরঙের কিছু ফুল রাখা সেখানে। আহনাফ ভুল না করলে এই ফুলগুলোর নাম ক্যালিস্টেফাস।

“এখানে কোথায় পেল এগুলো?”
প্রশ্ন জাগে আহনাফের মনে।

বেডরুমে গিয়ে আরেকদফা অবাক হয় আহনাফ। সেলফ, টেবিল, বিছানা, ড্রেসিংটেবিল সবকিছু গোছানো। রুমে মিষ্টি একটা ঘ্রাণ। এরকম ঘ্রাণের কোনো পারফিউম ঘরে আছে বলে ওর জানা নেই। এতো কাজ একজন একা হাতে কিভাবে করলো?

আহনাফ তড়িঘড়ি করে এসে ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে গরম বসায়। এতো কাজ করে না খেয়েই ঘুমিয়েছে সারাহ্।

রুটি বানানো ছিল, আহনাফ সেগুলো সেঁ°কে নেয়। টেবিলে খাবার রেখে সারাহ্-র কাছে যায়। ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়েছে, ডাক দিলে খারাপ লাগবে জেনেও আহনাফ ডাকে।

“ঐশী।”
“হুম।”

ঘুমের ঘোরে মিনমিনিয়ে বলে সারাহ্। আহনাফ হাসে। ছোট শিশুর মতো ব্যবহার ওর।

“ঐশী।”

সারাহ্ চোখ খুলে আহনাফকে দেখে লাফিয়ে উঠে। ঘড়িতে দেখে সাড়ে এগারোটা বেজে গেছে।

“হায় আল্লাহ্, আমি এতোক্ষণ ঘুমিয়েছি?”

আহনাফ শান্তভাবে বলল,
“খাবার রেডি, খাবে আসো।”

সারাহ্ তাকিয়ে আছে আহনাফের দিকে। যে রাগ নিয়ে বিকেলে বেরিয়েছিল সেই রাগটা নেই। সারাহ্ দাঁড়িয়ে আহনাফকে জড়িয়ে ধরে। আচমকা এমন ঘটনায় বি°ব্র°ত হয় আহনাফ। সারাহ্ যে ওর বুকেই মাথা রেখেছে। আহনাফ ওকে স্পর্শ করে না, হাত পিছনে নিয়ে নেয়।

সারাহ্ বলে,
“সরি, তাহসিনাকে নিয়ে এসব বলা আমার ঠিক হয়নি।”
“ঠিক আছে, ছাড়ো।”

সারাহ্ সরে দাঁড়ায়। অতি আবেগে জড়িয়ে ধরেছে ঠিকই কিন্তু এখন আবারো ভ°য় লাগছে তার। দৃষ্টি মেলাতে পারলো না সে। চুপচাপ খেতে বসে পড়লো।
______________________________________

ইমতিয়াজ বাসায় এসেছে। দরজা খুলতেই বিড়ালটা এসে হাজির। পায়ের কাছে ঘুরে ফিরে গা ঘে°ষ°তে থাকে। ইমতিয়াজ তাকে কোলে নেয়।

“কিরে ক্ষুধা লাগেনি? আমি তো খেয়ে আসছি, আয় তোকে খাবার দেই।”

ক্যাটফুড খেতে দিয়ে ইমতিয়াজ বিছানা ঝে°ড়ে ঘুমানোর উপযুক্ত করতে ব্যস্ত হয়। এমনসময় ফোন বেজে উঠলো। মৃত্তিকার নাম্বার দেখে প্রথমদফা রেখে দিলেও দ্বিতীয় দফায় রিসিভ করে।

“জি, মৃত্তিকা।”

মৃত্তিকা একটু চুপ থেকে বলে,
“কি করছেন?”
“ঘুমাবো।”

ধ°ম°কের সুরে ইমতিয়াজের ঠা ঠা কথায় মৃত্তিকা ভ°য় পায় না। উলটো প্রশ্ন করে সে,
“আমাকে নিয়ে খুব চিন্তা হচ্ছিল? এই যে আজকে ক্ষ°তটা নিয়ে বারবার জিজ্ঞাসা করছিলেন?”

ইমতিয়াজ জবাব দেয় না। কলও কাটে না, ফোনটা লাউডস্পিকার চালু করে পাশে দেখে দেয়। নিজের কাজ করতে থাকে সে।

মৃত্তিকা বলে,
“জানেন, কাল বাবা আমাকে কি বলেছে? (একটু থেমে) বলেছে, আমি যদি উনার কাছে না যাই তবে উনি আমাকে উনার মতো একা করে দিবে। আমি তো এমনিতেই একা, আর কত একা করবে?”

ইমতিয়াজ কাজ থামিয়ে এসে ফোন হাতে নিয়ে বলে,
“আপনি কেন বলেছিলেন এ°ক্সি°ডে°ন্টটার পেছনে আপনার বাবার হাত আছে?”
“মনে হয়, তাই বলেছি।”
“কোনো প্রুভ?”

মৃত্তিকা একটু ভেবে বলে,
“না, উনি বারবার আমাকে একা করে দিবে বলে। উনার একাকিত্বটা আমি বুঝি না বলে, তাই মনে হয়েছে।”

ইমতিয়াজ থেমে যায়। যদি সত্যি মৃত্তিকার মায়ের মৃ°ত্যুর জন্য ওর বাবা দায়ী হয়, তবে তো উনি আরো তিনটা মৃ°ত্যুর জন্য দায়ী। তাহসিনা, তাহমিনা আর সেই অনাগত নিষ্পাপ শিশুটার। ইমতিয়াজ চোখ বন্ধ করে ফেলে, আপাতত আর কিছু ভাবার জন্য সে প্রস্তুত নয়।

বিড়ালটা মেও মেও করে ওর কাছে আসে। মৃত্তিকা অপরপাশ থেকে বলল,
“আপনার বাসায় বিড়াল আছে?”

ইমতিয়াজ চোখ খুলে নিজের অবস্থা সামলে নিয়ে বলে,
“হ্যাঁ, আছে।”
“নাম কি?”

ইমতিয়াজ বিড়ালকে কোলে নিয়ে বলে,
“মিউকো, সারাদিন মিউ মিউ করে তো তাই।”

মৃত্তিকা শব্দ করে হেসে দেয়। বলল,
“আমার নামে বিড়াল পুষছেন?”
“সমস্যা কোনো?”
“না তো।”
“হলেও আমার তাতে কিছু আসে-যায় না।”

“আপনার কি করে আসবে-যাবে? আমার মনের খবর কি আর আপনি জানেন? এ হৃদয়ের খবর ওই সর্বশক্তিশালী রব ছাড়া কেউ জানে না।”
মৃত্তিকা মনে মনে ভাবতে থাকে। মুখ ফুটে একথা বলা হয়ে উঠে না।

ইমতিয়াজ বলল,
“রাখছি?”

মৃত্তিকা তাড়াহুড়ো করে বলে,
“একটু শুনুন।”
“জি।”

মৃত্তিকা আর কিছু বলতে পারে না। কলটা কেটে দেয়। ইমতিয়াজের কপাল কুঁচকে যায়। মেয়েটা যে তাকে পছন্দ করতে শুরু করেছে তা সে বুঝতে পারে, কিন্তু সে প্রশ্রয় দিবে না।
______________________________________

পরদিন,
আজ ভার্সিটিতে যাবে না তানজিম আর সামিহা। দুজনে কিছুক্ষণ ঘুরেফিরে আবারো চলে এসেছে তানজিমের বাসায়। সেদিনের পর থেকে একদিন পর পরই তানজিমের বাসায় আসে সামিহা। মমতাজ বেগমও ওকে খুবই পছন্দ করে। ও আসলে অনেক কথা শুনেন উনি, কথাও বলেন।

তানজিম বেল বাজালো। মৃত্তিকা এসে দরজা খুলে দেয়। সামিহাকে দেখে আলতো হেসে বলে,
“ভিতরে আসো।”

সামিহা ভিতরে আসতে আসতে তানজিমকে বলে,
“উনি কে?”
“মিউকোপু।”
“কি পু?”
কপাল কুঁচকে তানজিমকে বলে সামিহা।

মৃত্তিকা কথাটা শুনেছে। শব্দ করে হেসে দেয় সে৷ সামিহা সোফায় বসলে মৃত্তিকা ওর পাশে গিয়ে বসে বলে,
“আমি মৃত্তিকা, তানজিমের কাজিন।”
“ওহ।”

ছোট করে উত্তর দিয়ে সামিহা একটু এলোমেলো করে বলল,
“আগে দেখিনি? কোথা থেকে এসেছেন?”

কথা শেষে বোকাবনে গেল সে। তানজিম জিভে কা°ম°ড় দিয়ে ভিতরে চলে গেছে। এই মেয়ে উল্টাপাল্টা কথা প্রায়ই বলে।

মৃত্তিকা একটু হেসে বলল,
“আমি রোমে ছিলাম, তাই দেখোনি।”

সামিহা ঠোঁট উলটে বলে,
“রুমে থাকতেই পারেন, বারান্দায় থাকবেন নাকি?”

মৃত্তিকা এবারে হো হো করে হেসে উঠে। সামিহা বেশ মজার মানুষ। মৃত্তিকার ভালো লাগে ওকে।

“রুম না রোম, ইতালির রোম।”

মৃত্তিকা কথায় সামিহা দুচোখ খিঁ°চে বন্ধ করে। নিজের বোকামির জন্য রাগ হয় ওর, সাথে লজ্জাও পায়।

“বসো, আমি চা দেই।”
মৃত্তিকা উঠে গিয়ে চা বসায়।

সামিহা নিজের মাথায় নিজেই চ°ড় দিয়ে বলে,
“একটা কথা বুঝে তো বলবি। মেয়ে না তুই, আস্ত ছাগল।”

মৃত্তিকা এখনো হেসে যাচ্ছে। কি কিউট একটা মেয়ে। বাচ্চাবাচ্চা ভাব আর চেহারায় যুবতী বয়সের ছাপ।

তানজিম এসে রান্নাঘরে উঁকি দিয়ে বলল,
“আপু, আমাকেও চা দিও।”

মৃত্তিকা ওকে ডেকে বলল,
“মেয়েটা কে রে?”
“আমার ক্লাসমেট।”
“সব ক্লাসমেট কে কি বাসায় আনিস?”
“আরে না।”
মুখের সামনে হাত নেড়ে বলল তানজিম।

মৃত্তিকা মুচকি হাসলো।
“আচ্ছা যা, আমি চা আনছি।”

সামিহা ততক্ষণে মমতাজ বেগমের রুমে চলে গেছে। উনার সাথে এটা সেটা নিয়ে কথা বলা শুরু করেছে সামিহা। মৃত্তিকা চা নিয়ে গেল।

সামিহা ওকে দেখে বলল,
“আপু চলো কোথাও হাঁটতে যাই। তোমার সময় হবে?”

মৃত্তিকা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিয়ে বলল,
“হ্যাঁ হবে, কোথায় যাবে?”
“এই আশেপাশেই।”

মৃত্তিকা একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল,
“এখানে আশেপাশে তেমন কোনো হাঁটার জায়গা নেই। দুই একটা শপিংমল থাকতে পারে। (একটু ভেবে) আর কাছে মেবি রমনা আছে, তবে ওখানে ভীড় থাকে।”

সামিহা একটু চুপসে গেছে। মৃত্তিকা বলল,
“আমরা হাঁটতে না গিয়ে, মেট্রোরেলে করে কোথাও ঘুরে আসি?”

“সেটা করা যেতে পারে।”

সামিহা খুশি মনে রাজি হলো। মৃত্তিকা বলল, “ঠিক আছে আমি তৈরি হয়ে নিচ্ছি।”

তিনজনের সাথে মমতাজ বেগম বের হলেন। আজ অনেকদিন পর হাসপাতাল ছাড়া অন্যকিছুর উদ্দেশ্যে বের হলেন উনি।

বাইরে এসে ওরা রিকশা নিলো। কাওরানবাজার মেট্রোরেল স্টেশন থেকে ওরা যাত্রা শুরু করবে।

মৃত্তিকা আর মমতাজ বেগম এক রিকশায় উঠলো, তানজিম-সামিহা অন্যটায়।

মমতাজ বেগম বললেন,
“তোমার বাবা জানে তুমি ঢাকায়?”

মৃত্তিকা মাথা নেড়ে বলল,
“না, উনি এমনিতেই আমার জীবনটা ন°র°ক করে দিয়েছেন। এখন আর খারাপ কিছু হোক আমি চাই না।”

মমতাজ বেগম আর কোনো কথা বললেন না। নজর ঘুরিয়ে দ্রুত চলা রিকশার চাকায় চোখ রাখলেন।
______________________________________

ক্লাস শেষ করে আহনাফ টিচার্স রুমে যাচ্ছে। ফার্স্ট ইয়ারের বি সেকশনে ক্লাস নিচ্ছে সারাহ্। শুধু ক্লাস না একপ্রকার চেঁ°চা°মে°চি করছে সে। ক্লাসের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সারাহ্-কে ব°কাব°কি করতে দেখে আহনাফ দাঁড়ায়।

ব°কাব°কির কারণ আবিষ্কার হয় এক ছেলে সারাহ্-র ওড়নায় টা°ন দিয়েছে। আহনাফ ছেলেটাকে একবার দেখে কপাল কুঁচকে প্রস্থান করে।

একটু পরে সারাহ্ও বেরিয়ে আসে। রাগে এখনো শরীর জ্ব°লছে ওর।

“অ°সভ্য ছেলে, টিচারের সাথে কেমন ব্যবহার করতে হয় তা জানে না। থা°ব°ড়া দিয়ে গাল লাল করে ফেলতে ইচ্ছা করে।”

বিড়বিড়িয়ে কথা বলতে বলতে হাঁটতে থাকে সারাহ্। ম্যাডামদের টিচার্স রুমে ঢুকার সময় সারাহ্ দেখে পাশ থেকে শার্টের হাতা গু°টাতে গু°টাতে আহনাফ কোথাও যাচ্ছে। ওকে দেখে মনে হচ্ছে না যে ক্লাসে যাচ্ছে।

“আহনাফ?”

সারাহ্-র ডাকে ওর দিকে র°ক্ত°চ°ক্ষু নিক্ষেপ করে আহনাফ। সারাহ্ একটু ঘা°ব°ড়ে যায়। তবুও সে টিচার্স রুমে চলে যায়।

আহনাফ বি সেকশনে গিয়ে সকলের উদ্দেশ্যে বলে,
“সবাই দাঁড়াও।”

সকলে একটু আতিপাতি করে হলেও দাঁড়ায়। আহনাফ প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে সকলের মুখ দেখতে দেখতে বলে,
“ম্যাডামদের ওড়না টা°ন দিতে ভালো লাগে?”

কয়েকজন মাথানিচু করে ফেলে। প্রথম বেঞ্চ থেকে একটা কলম নিয়ে বলে,
“উত্তর দাও।”

“উনার বউ বলে খুব গায়ে লাগছে?”

দুজন ছেলের ফিসফিসানি আহনাফ শুনে। কলমটা ছেলেটার দিকে ছুঁ°ড়ে ফেলে বলে,
“বের হয়ে এখানে আসো।”

ছেলেটা প্র°তি°বাদ না করে বের হয়ে গিয়ে সামনে দাঁড়ায়। আরেকটা ছেলেকে বলে,
“তোমাদের কেমিস্ট্রির সারাহ্ ম্যাডামকে ডেকে আনো।”

ছেলেটি কথামতো বেরিয়ে যায়। ফিজিক্সের সূত্রের মতো এই স্যারও যে পেঁ°চিয়ে ধরে তা সবাই জানে।

টিচার্স রুমে গিয়ে ছেলেটি বলে,
“সারাহ্ ম্যাম, আপনাকে ফিজিক্স স্যার ডাকছে।”
“আমাকে?”

সারাহ্ একটু বি°ব্র°ত হয়। ফিজিক্স স্যার মানে আহনাফ ডাকছে, তাও একটা ছেলেকে দিয়ে ডেকে পাঠিয়েছে।

সারাহ্ তড়িঘড়ি করে উঠে যায়। ক্লাসের কাছে গিয়ে থেমে যায় সে। সেকশন দেখে বুঝেছে ক্লাসে ওর সাথে যা হয়েছে তা আহনাফ জানে।

সারাহ্ গিয়ে একবার উঁকি দেয়।
“স্যার?”

আহনাফ ওকে দেখে মাথা নাড়ে। বলে,
“আসেন, ম্যাডাম।”

সারাহ্ ভিতরে এসে আহনাফের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলে,
“আহনাফ, কি হচ্ছে এসব?”
“স্যার বলুন।”
“জি।”
সারাহ্ মাথা নাড়ে।

আহনাফ ছেলেটিকে ইশারা করে বলে,
“এই ছেলে?”
“হুম।”
সারাহ্ মাথা নেড়ে জবাব দেয়।

এরমধ্যে বায়োলজির স্যার মেহেদী হাসান ক্লাসে এসে উপস্থিত হয়। আহনাফ উনাকে বলে,
“আসসালামু আলাইকুম স্যার।”
“ওয়া আলাইকুমুস সালাম, কি ব্যাপার স্যার?”

মেহেদী পুরো ক্লাসে চোখ বুলায়। আহনাফ বলে,
“সুন্দরী ম্যাডামের উপর ছাত্ররা ক্রা°শ খাচ্ছে। তাই ম্যাডাম বিচার করাতে আনলো আর কি।”

সারাহ্-র কপাল কুঁচকে গেল। ঠিক কখন আহনাফকে ও বিচারের জন্য এনেছে মাথায় আসলো না ওর।

“ওহ, এই ছেলে?”

মেহেদীর ডাকে ছেলেটি আড়চোখে তাকালো। আহনাফ বলে,
“ক্লাস নেন স্যার। আমি ওকে নিয়ে প্রিন্সিপালের কাছে যাচ্ছি। এইটুকু ছেলে এতো সাহস কোথায় পায় আমিও দেখবো।”

ক্লাস থেকে ছেলেটিকে নিয়ে বেরিয়ে আসে আহনাফ, সারাহ্ও পিছনে আসে। আহনাফ সারাহ্-কে বলে,
“আপনি যেতে পারেন।”
“আহনাফ?”
“স্যার।”

সারাহ্ একটু বড় নিশ্বাস ফেলে বলে,
“ওকে স্যার। দেখেন, এসব করে শুধু শুধু ছেলেটার উপর চাপ তৈরি করছেন।”

আহনাফ ভ্রূ উঁচিয়ে তাকায়। সারাহ্ আবারো বলে,
“যা ব°কার আমি ব°কেছি, এখন আর বাড়াবাড়ির প্রয়োজন নেই।”
“আমি কি আপনার কথায় চলবো, মিসেস সারাহ্ আহনাফ ফয়েজ?”

সারাহ্ কপাল কুঁচকে ফেললো। মুখের হাসিটা আসতে নিয়েও বাধা পেল। মিসেস সারাহ্ আহনাফ ফয়েজ, নামটা মন্দ নয়।

আহনাফ ছেলেটিকে নিয়ে চলে গেল। সারাহ্ মুখ টি°পে হেসে নিজে নিজেই বলল,
“ফিজিক্সের ফয়েজ স্যার, আমার মিস্টার।”

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here