উধয়রনী #লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ ||পর্ব-০৪||

0
479

#উধয়রনী
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
||পর্ব-০৪||

০৭।
ফোন বাজতেই কপালে ভাঁজ পড়লো আহির। আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসলো বিছানা ছেড়ে। ড্রেসিং টেবিলের পাশে ফোনটা রাখা। কিছুক্ষণ ফোনের দিকে তাকিয়ে ফ্যানের দিকে তাকালো। ধীর গতিতে ফ্যান ঘুরছে। গরমে ঘেমে একাকার আহি। বিছানা ছেড়ে উঠেই ওয়াশরুমে গিয়ে মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে এলো। তারপর তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে ফোনের কাছে এলো সে৷ বাবার কল দেখে ঠোঁটে হালকা হাসি ফুটে উঠলো আহির। ফিরতি কল দিলো সেই নম্বরে৷ কিছুক্ষণ রিং হওয়ার পর ওপাশ থেকে অপরিচিত কন্ঠের স্বর ভেসে এলো। আহি ভ্রূ কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
“এটা তো রিজওয়ান কবিরের নম্বর, তাই না?”

“জ্বি, স্যার এখন ব্যস্ত আছেন। আমি উনার ম্যানেজার বলছি।”

“বাবাকে একটু দেওয়া যাবে। আমি উনার মেয়ে ওয়াসিকা কবির।”

“জ্বি, স্যার এখন কথা বলতে পারবেন না। আপনার জন্য স্যার মেসেজ দিয়েছেন।”

“কি মেসেজ?”

“স্যার আপনার সাথে দেখা করতে পারছেন না। উনি জরুরি কাজে আজই সিলেট যাচ্ছেন। স্যার আপনাকে একাই চট্টগ্রাম যেতে বলেছেন।”

আহি নিঃশ্চুপ দাঁড়িয়ে রইলো। তার ঠোঁটের হাসি মুহূর্তেই মিলিয়ে গেলো।
কাঁপা কন্ঠে বললো, “আচ্ছা।”
এরপর কল কেটে দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। বুকে হাত দিয়ে নিজের অস্থিরতা কমানোর চেষ্টা করলো আহি। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। অশ্রুগুলো গাল বেয়ে গড়িয়েই পড়লো। সে মিনমিনিয়ে বলতে লাগলো,
“কারো কি আমার জন্য একটুও সময় নেই?”

পাশ ফিরতেই আহির নজর পড়লো বাদামী মলাটের সেই ডায়েরীটির দিকে। আহি ঠোঁটে শুকনো হাসি টেনে ডায়েরীটা হাতে নিলো। তারপর সেটা বুকের সাথে জড়িয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিয়ে ধীর গতিতে ঘূর্ণনরত ফ্যানটির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।

…………………..

দিনটি ছিল শুক্রবার। চারুশিল্পে ক্লাস শেষ হতেই আফিফ ব্যাগ কাঁধে নিয়ে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। আহি আফিফের ব্যস্ততা দেখে হুড়োহুড়ি করে উঠে দাঁড়ালো। ব্যাগে খাতা ঢুকানোর সময়টাও যেন পেলো না। খাতা-পেন্সিল হাতে নিয়েই বেরিয়ে পড়লো আহি। আফিফ সিঁড়ি বেয়ে তরতর করে নেমে পড়লো। আহিও আফিফের পিছু নিয়েছে। কেন পিছু নিয়েছে তা আহি নিজেও জানে না। আফিফ দ্রুতপদে গেট দিয়ে বেরিয়ে পড়লো। আহিও কিছুটা দূরত্ব রেখে আফিফের পিছু পিছু হাঁটছে।
ব্যস্ত রাস্তা, তবে আজ যান চলাচল হালকা। ছুটির দিন, তাই হয়তো। আজ জুমার দিন। মসজিদে তাড়াতাড়ি আযান দিচ্ছে। আফিফ হয়তো তাই এতো দ্রুত গতিতে হাঁটছে। ভাবতেই আহির ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠলো। আফিফ কি তাহলে নামাজ পড়বে? কিন্তু আহি তো নামাজ পড়ে না। সেই ছোট বয়সে মায়ের কাছে নামাজ শিখেছিল সে। কিন্তু এখন আর পড়া হয় না। সারাদিন সে এটা-সেটা নিয়েই ব্যস্ত থাকে। মা প্রতিদিন নামাজের সময় হলে বলে যান। কিন্তু আহি মায়ের কথা শুনে না। বকাঝকা করলে আহির বাবা রিজওয়ান কবির মেয়েকে আস্কারা দিয়ে বলেন, মেয়ে এখনো ছোট। বড় হলে পড়বে। যদিও রিজওয়ান কবির নিজেও জুমার দিন ছাড়া মসজিদে দূরে থাক, বাসায়ও নামাজ পড়েন না। বাবার শিক্ষাটায় বোধহয় আহি পেয়েছে।

আফিফ রাস্তার ওপাড়ে। আহি অন্য পাড়ে। সমান্তরাল রাস্তা। যেন কখনোই মিলিত হবে না এই পথ। মাথা নিচু করে হাঁটছে আফিফ। গরমে ঘেমে গেছে সে। পরণের নীল শার্টটা ঘামে ভিজে গায়ের সাথে সেঁটে আছে। কাঁধের একপাশে কালো ব্যাগ। হাতে একটা ধূসর বেল্টের ঘড়ি। পায়ে মলিন স্যান্ডেল। আহি দূর থেকে মুখস্থ করে নিচ্ছে আফিফের প্রতিটি পদচিহ্ন। পাশের একটা মসজিদে ঢুকে পড়লো আফিফ। আহি এপাশ-ওপাশ তাকালো। এভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আফিফের অপেক্ষা করা সম্ভব নয়। তাই সে রাস্তা পার হয়ে মসজিদের কাছে আসতেই দেখলো অনেকে নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে ঢুকছে। এভাবে দাঁড়িয়ে থাকাটা ভীষণ বেখাপ্পা লাগছে তার। তাই সে মসজিদের সামনে থেকেই একটা রিকশা নিয়ে বাসায় চলে এলো। বাসায় এসেই নিজের ঘরে চলে গেলো আহি।

(***)

মিসেস সালমা ফাওজিয়া মেয়েকে দুপুরের খাবারের জন্য ডাকতে এসেই দেখলেন আহির ঘরের দরজা খোলা। মিসেস সালমা এমন ঘটনায় ভীষণ অবাক হলেন। কারণ আহি সবসময় দরজা বন্ধ করে রাখে। মিসেস সালমা দরজা হালকা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে উঁকি দিতেই চমকে উঠলেন। দেখলেন মেয়ে জায়নামাজ বিছিয়ে মোনাজাত ধরে রেখেছে। রাতারাতি আহির এমন পরিবর্তন ভীষণ অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে তার কাছে। আহির মোনাজাত শেষ হতেই তিনি ধীর কন্ঠে বললেন,
“ভেতরে আসবো, আহি?”

আহি মায়ের দিকে তাকিয়ে এক গাল হেসে বলল,
“আসো মা।”

মিসেস সালমা ফাওজিয়া একনজর পুরো ঘরের দিকে চোখ বুলিয়ে নিলেন। তারপর বললেন,
“তুমি আজ হঠাৎ নামাজে বসেছো!”

আহি মুচকি হেসে বলল,
“আজ থেকে আমি নামাজ বাদ দেবো না, মা। আমি যা চাই, আল্লাহর কাছেই চাইবো।”

“বেশ তো! কিন্তু তোমার ঘরে নামাজ পড়লে তো নামাজ হবে না।”

“কেন?”

“এখানে এতো ছবি ঝুলছে! তুমি লাইব্রেরী রুমে গিয়ে নামাজ পড়ো। ওখানে একপাশে নামাজের ব্যবস্থা আছে।”

“মা, আমি নিরিবিলিতে নামাজ পড়বো। আল্লাহর সাথে আমি কিছু সিক্রেট কথা বলবো। ওখানে তো যে-কেউ এসে পড়বে।”

“তুমি যখন নামাজ পড়বে, তখন লাইব্রেরি রুম বন্ধ করে পড়তে পারবে। কেউ তোমাকে বিরক্ত করতে আসবে না।”

“আচ্ছা।”

সালমা ফাওজিয়া মেয়েকে বুকে জড়িয়ে আহির মাথায় চুমু খেলেন। আর আহির ঠোঁটে প্রশান্তির হাসি। সে মনে মনে বলল,
“এআর, এখন তুমি আমার হবেই হবে। আমি আল্লাহর কাছে তোমাকে চেয়ে নিচ্ছি।”

……………………

আহির গাল বেয়ে অশ্রুকণা গড়িয়ে বালিশের উপর আছড়ে পড়লো। কান্নাভেজা কন্ঠে সে বলল,
“আমি সেদিন থেকে তোমাকে চেয়েছি, এআর। একটা রাত, একটা দিনও বাদ যায় নি, যেদিন আল্লাহর কাছে তোমাকে চাই নি। তাহলে তোমাকে কেন পেলাম না আমি? এআর, খুব ইচ্ছে হয় তোমার হাত ধরে হাঁটতে। খুব ইচ্ছে হয় তোমাকে জড়িয়ে ধরতে। তুমি কেন আমার হলে না, এআর?”

আহি শব্দ করে কেঁদে উঠলো। ডায়েরীটা বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে পাশ ফিরে বালিশে মুখ গুঁজলো। হঠাৎ আহির ফোনটা বেজে উঠলো। চোখ মুছে ফোন হাতে নিতেই দেখলো রাদের কল। আহি বোতল থেকে অল্প কিছুটা পানি খেয়ে গলা ভিজিয়ে নিয়ে কল রিসিভ করলো। ওপাশ থেকে রাদ জিজ্ঞেস করলো,
“দুপুরে খেয়েছিস?”

আহি নিঃশব্দে হাসলো। রাদ বলল,
“এই মুহূর্তে আমার কলটা করা খুব দরকার ছিল।”

আহি মুচকি হেসে বলল,
“তুই না থাকলে আমাকে হয়তো অনেক আগেই পৃথিবীর মায়া ছাড়তে হতো।”

“আউল-ফাউল কথা বলিস না। আমি আসছি ঢাকা।”

“তুই!”

“হ্যাঁ, আমি। বাসে উঠেছি। রাতে পৌঁছাবো। তোর হোটেলের ঠিকানা দে৷ আমার সাথেই চট্টগ্রাম যাবি। এমন সুন্দরী মেয়েকে আমি কি ঢাকা শহরে একা ছাড়বো না-কি?”

“বাবাদের মতো কথা বলছিস। বাবাও যদি তোর মতো করে ভাবতো!”

“এখন খেয়ে নে। এরপর কড়া এক কাপ চা খাবি। চা খেলে মাথায় যে পোকাটা ঘুরাঘুরি করছে, সে অন্তত কিছু সময়ের জন্য বের হবে।”

(***)

মধ্যাহ্নের শেষভাগ। আহি হোটেল রুম থেকে বেরিয়ে আশেপাশে হাঁটছে। রাস্তার পাশে খাবারের দোকানগুলো ভীষণ অপরিচ্ছন্ন মনে হচ্ছে তার। কিন্তু ক্ষিধেও পেয়েছে খুব। তাই একটা রেঁস্তোরায় ঢুকে পড়লো। অনুন্নত রেঁস্তোরা, একটা চাপা দুর্গন্ধ নাকে এসে ঠেকছে। মধ্যাহ্নের সময়, তাই রেঁস্তোরায় তেমন ভীড় নেই। যারা আছে, তারা চা-সিঙ্গারা খাচ্ছে। একটা আট-দশ বছর বয়সী ছেলে আহির কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো,
“কি খাইবেন, আফা?”

আহি ছেলেটিকে ভালোভাবে পরখ করে বলল,
“ভাত হবে?”

“না আফা। শেষ হইয়া গেছে।”

“এখন কী পাওয়া যাবে?”

“সিঙ্গারা, সমুচা, চিকেন রোল….”

আহি ছেলেটিকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
“এসব ছাড়া আর কিছু নেই?”

“ফরোটা আর ভাজি আছে। কিন্তু সময় লাগবো।”

“ওটাই নিয়ে আসো।”

“ফরোটা কইডা আনবো আফা?”

“দুইটা।”

আহি খাবার অর্ডার করে পাশ ফিরে তাকাতেই অন্যমনস্ক হয়ে পড়লো। পাশের টেবিলে চার-পাঁচটা ওয়ান টাইম কাপ রাখা। আহি কাপগুলোর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। মুহূর্তেই তার চোখের সামনে ভেসে উঠলো সেই দিনটি।

…………………….

চারুশিল্প থেকে বের হয়ে প্রতিদিনের মতো আজও আহি আফিফের পিছু নিয়েছে। রোদের উত্তাপ আজ স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা কম। মৃদু সমীকরণে নির্মল বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছে। আফিফ রাস্তার পাশে টংয়ের দোকানে গিয়ে দাঁড়ালো। আহিও কিছুটা দূরত্ব রেখে দাঁড়ালো। আফিফ অন্যদিকে ফিরে দাঁড়িয়ে আছে। হালকা হাওয়ায় আফিফের কপালের সামনে লেপ্টে থাকা চুলগুলো দুলছে। আহির মন চায়ছে চুলগুলো আলতো হাতে স্পর্শ করতে আর যত্নের সাথে গুছিয়ে দিতে। টংয়ের দোকানদার একটা প্লাস্টিকের কাপ আফিফের দিকে এগিয়ে দিতেই সে টাকা এগিয়ে দিলো। এরপর সে পাশে থাকা ছোট একটা বেঞ্চে বসে চা খাওয়ায় মনোযোগ দিলো। আফিফ জানতেই পারলো না, তার চা খাওয়ার দৃশ্যটি কেউ মুগ্ধ চোখে দেখছিলো।

চা খাওয়া শেষ হতেই আফিফ কাপটি বেঞ্চের উপর রেখে চলে গেলো। আর আহি সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে সেই কাপটি উঠিয়ে নিলো। এরপর বাসায় এসে টেবিলের উপর কাপটি রেখেই ডায়েরী খুলে লিখতে বসলো।

“ক্লান্ত মুখ। নাকের ডগায় জমে ছিল বিন্দু বিন্দু ঘাম। হালকা হাওয়া তোমার ঘর্মাক্ত কপালটি শুকিয়ে দিয়ে গেলো। আর তোমার ঘামে লেপ্টে থাকা চুলগুলোও মুক্ত হলো। তুমি চায়ের কাপ হাতে নিয়ে একটা ভাঙা বেঞ্চে বসলে। কাপে চুমুক দিতেই তোমার চোখ দু’টো ছলছল করে উঠলো। চা নিশ্চিত গরম ছিল। কিন্তু তোমার কপালে একটুও ভাঁজ পড়লো না। শুধু চোখ দু’টোই সাড়া দিয়েছিল। আজ কেন যেন মনে হলো তুমি শুধু ক্লান্ত নও। বড্ড ক্লান্ত। তোমার মনে কি ভীষণ কষ্ট, এআর? আমাকে ভাগ দিবে সেই কষ্টের? আমি তোমার কষ্ট নিয়ে নেবো। দেখবে তুমি খুব সুখী হবে। অনেক সুখী হবে। কারণ তোমার জন্য আমি আছি।”

কলম উঠিয়ে নিলো আহি। টেবিলের উপর রাখা প্লাস্টিকের কাপটির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। এরপর একটা পেন্সিল হাতে নিয়ে লেখার পাশেই আজকের দৃশ্যটা স্কেচ করতে লাগলো।

একটা ছেলে কাঠের ভেঙে বসে প্লাস্টিকের কাপ হাতে নিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। পাশে টংয়ের দোকান। আর দূরে দাঁড়িয়ে একটা মেয়ে সেই ছেলেটির দিকে তাকিয়ে আছে।

স্কেচ শেষ করেই ডায়েরীটা আলমারিতে তুলে রাখলো আহি। আর কাপটাও ওভাবেই প্লাস্টিক পেপারে মুড়িয়ে একটা তালা দেওয়া বাক্সে রেখে দিলো। এই বাক্সটিতে আহি সবসময় তালা ঝুলিয়ে রাখে। খুব প্রয়োজন হলেই সে বাক্সটি খুলবে।

……………………

খাবার আসতেই আহির ঘোর কাটলো। তার চোখে অশ্রু ভীড় করেছে। আট-দশ বছর বয়সী সেই বাচ্চা ছেলেটা কি বুঝলো কে জানে? সে হুট করেই জিজ্ঞেস করে বসলো,
“আফা কারো কতা মনে ফরছে নি?”

আহি হালকা হেসে বলল,
“না, তো। ঝাঁঝালো একটা গন্ধ নাকে লেগেছে। পাশেই তো রান্নাঘর তাই হয়তো।”

“আফা, আমি ওইখান থেইক্কা দেখতাছিলাম আপনারে। আগে কারো সাথে আইছিলেন মনে অয়।”

রেঁস্তোরার মালিক পাশেই ছিলেন। তিনি হয়তো ছেলেটার কথাগুলো শুনে ফেলেছিলেন। তিনি ধমকের সুরে বললেন,
“ওই মিন্টু, ওই টেবিলে চা দিয়া আয়। উনাদের এতোক্ষণ বসায় রাখছোস কেন?”

আহি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। দোকানের মালিককে নীরবে ধন্যবাদ দিয়ে তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে টাকা দিয়ে বেরিয়ে পড়ল। হাঁটতে হাঁটতেই ভাবতে লাগলো,
“এআর সত্যিই কি তুমি তোমার সব কষ্ট আমাকে দিয়ে সুখী হয়েছো? দেখো না, আমি এমন একটা মিনিট যায় না, যখন তোমাকে নিয়ে ভাবি না। তুমি আমার রক্তের সাথে মিশে গেছো। প্রতিটা নিঃশ্বাসের সাথে তোমাকে হারানোর দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। এমন কোনো স্থান নেই, চেনা-অচেনা যেখানে তোমাকে আমি অনুভব করি না। এভাবে কাউকে ভালোবাসা কি খুব দরকার ছিল? তুমি কি কখনো আমার মতো করে ভালোবাসতে পারতে? পৃথিবীর কেউ কি কখনো এমন উন্মাদের মতো কাউকে ভালোবেসেছিল? এমন কেউ যদি থাকতো, আমি তার কাছে গিয়ে মুক্তির পথ খুঁজতাম। কার ভালো লাগে কষ্ট পেতে? কার ভালো লাগে চোখ ভেজাতে? শুনেছি কাঁদতে কাঁদতে না-কি চোখ শুকিয়ে যায়। কে বলেছে এই কথা? আমার চোখ তো আজও তোমার স্মৃতিতেই ভিজে উঠে। আমার অশ্রু বিরামহীন ভাবে গড়িয়ে পড়ছে। আর হৃদয়টা হয়ে যাচ্ছে বিরান মরুভূমি।”

চলবে-

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here