তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ৩১

0
440

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ৩১

.
🍁
জরিনার এমন কথাটা শুনেই আমি চমকে উঠে তার মানে জরিনা জানে পৃপ্তীলয় কোথায় আছে, মানে পৃপ্তীলয় কি সেটা জরিনা জানে। আমি উত্তেজিত হয়ে জরিনা খালার সামনে দাঁড়িয়ে দ্রুততা সঙ্গে বলি…..

.

—” খালা আপনি যানেন তাহলে পৃপ্তীলয় কি সেটা তাই না।

.

আমাকে এতটা উত্তেজিত হয়ে কথাটা খালাকে বলতে দেখে মূহুর্তেই জরিনা কপাল কুচকে এলো, তিনি আমার দিকে সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলে….

.

—” হহ আপামনি যানি, ক্যান আপনে যানেন না পিতালয় কি হেইটা। বাড়ির বেগ জানে এইটা কি আপনে ক্যান জানেন না…..

.

জরিনার সন্দেহ দৃষ্টি দেখে মূহুর্তেই আমি চুপ করে যায়, কারণ আমি পৃপ্তীয়ল কি সেটাই জানি না, আর এই বিষয়টা যদি আমি জরিনাকে খুলে বলি তাহলে খালা গিয়ে বাড়ির সবাইকে জানিয়ে দিবে। আর খালার জানানোর সাথে সাথে আমি আমার কাজে সফল হতে পারবো না কোনো কালেই যেটা আমি কোন দিন চাইনা, তাই আমি আমার উদ্দেশ্য লক্ষ পূর্ণের জন্য খালা দিকে তাকিয়ে জোর পূর্বক একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে নিজের উক্তির থেকে বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা বলে ওঠি……

.

—” কে বললো আমি জানি না পৃপ্তীলয় কি সেটা, আমি অবশ্যয় জানি, কিন্তু এখন খালা হয়েছে কি আমার না একটু পৃপ্তীলয় দেখতে মন চাচ্ছে, সাথে একটু কাজও ছিল পৃপ্তীলয়ে তাই আরকি।

.

—” কি কন আপামনি আফনে এখন পিতালয় দেখবেন, হেইটা তো সম্ভব না কারণ আম্মুজান আমারে না বাড়ির বেগরে(সবাইরে) মানা করছে পিতালয়ে কাছেও না যাইতে। আর আফনারে তো আরও আগে যাইতে মানা করছে পিতালয়ে কাছে হহ ।

.

জরিনার খালার এমন কথায় সিওর হলাম যে পৃপ্তীলয় কোনো জায়গার নাম নয় এটা কোনো বস্তু নাম হতে পারে সাথে পৃপ্তীলয় নামক বস্তুটা এই মূহুর্তে আমাদের আছে। আর সেটা কাছে আমাকে না যেতে বিশেষ ভাবে না করেছে আমার আম্মু। আর আমাকে সেটাই খুজে বেড় করতে হবে যে কেন না করেছে, কি এমন আছে ঐটাতে। তাই আমি জানার তাগিদ নিয়ে জরিনা খালাকে নিজের কথা জালে ফাঁসাতে বলি…..

.

—” তুমি তো খালা আম্মু চিনো আমাকে সবকিছুর জন্য না না না আর শুধু না ইই করে থাকে।, মায়া এটা করবি না, মায়া ওটা ধরবি না, মায়া ওখানে যাস না, মায়া এটা করিস না, মায়া, মায়া, মায়া, উফফফ। এতটা চাপ কি নেওয়া যায় বলো, আমার জন্য আমার আম্মু বিশাল একটা রুলস বেঁধে রেখেছে সেটা তুমি ভালো করেই জানো তাই না। তুমি বলো এখন কি আর আমাদের আম্মু বারণ শুনার মতো সময় আছে নাকি….

.

আমার এমন কথায় জরিনা খালা অবুঝের মতো করে তাল পাক বানিয়ে চিন্তা সুরে বলে উঠে……

.

—” ক্যান আপামনি সময় নেই বুঝি…..

.

জরিনা খালাকে অবুঝের মতো প্রশ্ন করতে দেখে মূহুর্তে আমি থমথমে খেয়ে যায় পরে কথাটা ঘুরিয়ে বলি….

.

—” আছে তো থাকবে না কেন সময়, আসলে আমি বলতে চাইছি যে, আমি এখন বড় হয়ে গেছি না, আর কয়েক দিন পর তো আমার বিয়ে হবে রুদ্রের সাথে। তাই বলছি এখন আর আমার আম্মুর বারণ শুনার মতো আগের সময়টা নেই, আমি আর কয়েক দিন পর রুদ্রের বাসায় চলে যাবো আর এখন যদি তুমি আমাকে ঐ পৃপ্তীলয়টা এনে না দাও তো আমি আর তোমার সাথে কথা বলবো না। (অভিমান সুরে)

.

—” আইচ্ছা…

.

জরিনা খালাকে আচ্ছা বলতে দেখে মূহুর্তে খুশিতে চকচক করে উঠে আমার ফেস, আর সেই খুশি হওয়া ভাবটা নিয়ে খালাকে বলে উঠি…..

.

—” তার মানে তুমি আমাকে এনে দিবে পৃপ্তীলয়টা…..

.

আমার কথাটা শেষ করার সাথে সাথে খালা বলে উঠে….

.

—” না আপামনি, আমি অন্যডা বুঝাইছি আফনারে, আফনে আমার লগে আর কথা কইয়েন না হেইটা…..

.

—” তুমি আমাকে এখনই পর করে দিচ্ছো খালা, তোমরা সব কয়টাই সার্থপর কেউ আপন না আমার। তাই আমি ঠিক করেছি, আমি আর কখনোই এই সার্থপরদের বাড়িতে আসবো না হুহহহ…. (ইমোশনাল হওয়া ভাব নিয়ে)

.

—” ক্যান আপামনি আফনে কই যাইবেন…. (কপাল কুচকে)

.

—” অনেকককক দূরে ( ইমোশনাল হয়ে)

.

—” তাইলে কি আমি আফনার লাগি খাবার বানাইয়া রাখমো লগে নিইয়া যাওয়ার লাগি…..

.

জরিনার এমন উল্টো পাল্টা কথা শুনে মূহুর্তে রাগটা বাড়ছে আমার, কিন্তু এই মূহুর্তে খালা রাগ দেখালে আমি কখনোই পৃপ্তীলয় পযন্ত পৌঁছাতে পারবো না, কারণ একমাত্র খালাই আমার লাস্ট ভরশা ঐ পৃপ্তীলয় পযন্ত পৌঁছানোর,, তাই খালাকে ইমোশনাল ভাবে আরও দুর্বল করার জন্য খালা সামনে শব্দ করে ন্যাকা কান্না জোরে দেয় এ্যাঁ এ্যাঁ করে….

.

আমার এমন কান্নায় মূহুর্তে জরিনার খালার মনটা নরম হয়ে আসে আর এই নরম হওয়া মন নিয়ে আমাকে শান্তনা করার জন্য নিজের একহাতে আমাকে জরিয়ে নিয়ে আমার পিঠের ওপর নিজের অন্য হাত বুলাতে বুলাতে দ্রুত বলে উঠে……

.

—” কাঁনদে না আপামনি আমি আফনার জন্য চুরি করে পিতালয়টা আইন্না দিতাছি, আফনি এখানে থাইকেন…

.

খালা এমন কথা মূহুর্তে আমার ন্যাকা কান্না বন্ধ করে দিয়ে খুশিতে লাফিয়ে উঠে জরিনা খালা ধরে বলে উঠে…..

.

—” সত্যি খালা এনে দিবা,, কিন্তু আম্মু যাতে না জানে এটা সম্পর্কে….

.

—” আইচ্ছা কেও জানবো না, আমি লইয়া আইতাছি পিতালয়টা চুরি করে এখনি…..

.

কথা গুলো বলেই জরিনা খালা দ্রুতত আমার রুমে থেকে বের হয়ে যায় পৃপ্তীলয়টা নিয়ে আসতে। আর খালা বেড় হতেই আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিছানা ওপর পা ঝুলিয়ে বসে পরি অধীর আগ্রহে সাথে পৃপ্তীলয় সেটা কি দেখার জন্য দরজার দিকে তাকিয়ে থেকে……

.

একঘন্টা যাবত বসে আছি নিজের রুমে মধ্যে, অপেক্ষার অবসান কিছুতে যেন পার হচ্ছে না। জরিনা খালা পৃপ্তীলয়টা আনতে গেছে প্রায় এক ঘন্টা সময় পার হতে চলছে কিন্তু এখনো আসার নাম পযন্ত নেই, আমার অস্থিরতাটা যেন ক্রমাগত বেড়েই চলেছে পৃপ্তীলয় জন্য, আর সেই সাথে খালা কখন আসবে সেটাও জানি না আমি কি করবো কিছু ভেবে পারছি না এই মূহুর্তে । আমার তুমুল অস্থিরতার সাথে উঠে দাঁড়িয়ে পরি জরিনা খালা কোথায় আছে সেটা দেখার জন্য, কারণ এতটা সময় উনি কি করছে কোথায় আছে সেটা দেখতে হবে আমার। আমি উঠে দাঁড়িয়ে কিছুটা পথ এগিয়ে যেতেই হঠাৎ করে জরিনা খালা দ্রুততা সঙ্গে হুমড়ি খেয়ে আমার রুমে ডুকে দরজা আটকিয়ে দিয়ে বড় বড় নিশ্বাস ফেলতে ফেলতে পরে পিছন ঘুরে আমার দিকে তাকায়।

.

খালাকে এই মূহুর্তে আমার রুমে দেখে যতটা না খুশি হয় তার চেয়ে বেশি কপাল কুচকে এলো আমার, কার উনার হাতে আমি এই মূহুর্তে কোনো কিছুই দেখতে পারছি না বলে। আমাকে কপাল কুচকে খালা দিকে তাকাতে দেখে জরিনা খালা আমার দিকে তাকিয়ে থেকে হাফাতে হাফাতে চিন্তিত সুরেবলে উঠে…….

.

—” আপামনি আম্মাজানে চখে পাকি দিয়ে এইডা চুরি করতে আমার তো জান যায়গা যায়গা অবস্থা আল্লাহ। আইচ্ছা আপামনি আমি বুঝজা ফারি না এই বইটার ভিতরে এমনবা কি আছে যেইডা আম্মাজান বেগরে(সবাইরে) এইটা ধরতে কড়া ভাবে নিষিদ করছে হুহ….

.

জরিনা খালা কথাটা বলেই নিজের শাড়ির আঁচল ভিতর থেকে একটা কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় একটা কিছু বেড় করে আমার সামনে তুলে ধরে। , আর এটাই হয়তো পৃপ্তীলয় হবে খুব সম্ভবত, আর খালা কথা অনুযায়ী এটা একটা বই যার মধ্যে আমার সকল প্রশ্নের উত্তর রয়েছে। যেটার কথা রিদ খানও আমাকে বলেছিল।, আমি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সেই দিকে তাকিয়ে থাকতেই খালা আমাকে সেটি হাতে দিয়ে ধরিয়ে দিয়ে আবারও দ্রুততা সঙ্গে আম্মু ডাকে চলে যায় বাহিরের দিকে। আর আমি তখনও কাপড়ে মোড়ানো বইটি দিকে তাকিয়ে থাকি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে এটা ভেবে যে, কি আছে এটার মধ্যে যে সবাই আমাকে এই বইটা অবধি পৌঁছাতে দিচ্ছে না। সবদিক থেকে বাঁধা প্রদান করছে, আমি বইটা হাতে নিয়ে বিছানার উপর বসে পরি কৌতুহল নিয়ে বইটি পড়ার জন্য। পরে বইটি উপর থেকে কাপড়টা সরিয়ে নিতেই চোখে পড়ল খুবই চমৎকার একটা সাদা ডাইরি যার ওপর থেকে হাতে ডিজাইন করে অ্যাঁট করা, আর সেই সাথে তার ওপর বড় বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে পৃপ্তীলয়…….

.

(কাল থেকে পৃপ্তীলয়ে রহস্য ধাপে ধাপে উন্মোচন করা হবে)

.

.

চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here